ইউএস-ও-কানাডা
‘সিবিএসকে’ চরম মূল্য দিতে হবে বললেন ট্রাম্প
ইউক্রেন ও গ্রিনল্যান্ড নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় মার্কিন টেলিভিশন নেটওয়ার্ক সিবিএসের ওপর আবার চটেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সিবিএসের সংবাদ সম্পচার ম্যাগাজিন ’৬০ মিনিটসে’ সম্প্রচারিত ওই প্রতিবেদনের জন্য গণমাধ্যমটিকে ‘চরম মূল্য’ দিতে হবে বলে হুশিঁয়ারি দিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সময় রবিবার (১৩ এপ্রিল) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গ্রিনল্যান্ড ইস্যুতে দুইটি প্রতিবেদন সম্প্রচার করে ৬০ মিনিটস ।
প্রতিবেদনটি সম্প্রচারের পরপরই তার সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ওই প্রতিবেদনের তীব্র সমালোচনা করে পোস্ট দেন ট্রাম্প। প্রতিবেদনে তাকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, ‘প্রায় প্রতি সপ্তাহেই ট্রাম্প নামটি অবমাননাকর ও অসম্মানজনকভাবে উপস্থাপন করে এই ৬০ মিনিটস। এবার তো তারা সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এ কাজের জন্য তাদের কড়া মাশুল গুনতে হবে।’
আরও পড়ুন: চীন বাদে সব দেশের ওপর মার্কিন পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত
এ ধরনের বেআইনি ও অবৈধ কার্যকলাপের জন্য তাদের জরিমানা ও শাস্তির আওতায় আনতে ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশনের (এফসিসি) চেয়ারম্যান ব্রেনডান কারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ট্রাম্প বলেন, “৬০ মিনিটস এখন আর কোনো সংবাদ প্রচারের শো নয়। এটি রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য সংবাদ মাধ্যমের ‘লেবাসধারী’। আগে যা করেছে কিংবা এখন যা করছে সবকিছুর জন্যই তাদের জবাবদিহিতা করতে হবে।”
তবে ট্রাম্পের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানায়নি সিসিএস নেটওয়ার্ক।
এর আগে গত বছরের ৩১ অক্টোবর সিবিএসের বিরুদ্ধে ১০ মিলিয়ন ডলারের মামলা করেছিলেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নির্বাচনের প্রচারের সময় তার প্রতিদ্বন্দী কমলা হ্যারিসের বক্তব্য সম্পাদনা করে সম্প্রচার করায় এই মামলা করেছিলেন তিনি।
ট্রাম্পের দাবি, কমলা কে ‘ভালো’ দেখাতে ইচ্ছাকৃতভাবে সম্পাদনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সিসিএস। যদিও ট্রাম্পের এই দাবি নাকচ করে এসেছে নেটওয়ার্কটি।
এই মামলার বিষয়ে একটি সমঝোতায় আসতে ট্রাম্পের আইনজীবী ও নেটওয়ার্কটির কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার কানাঘুষা চলছে। এরই মধ্যে আবার চটে গেলেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুন: এবার জরুরি খাদ্য সহায়তা বন্ধ করল যুক্তরাষ্ট্র
মামলার সুরাহা না হলেও দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রতিনিয়তই ট্রাম্প প্রশাসন সম্পর্কে নানা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে ৬০ মিনিটস নামে প্রোগ্রামটিতে। বিশেষত সাংবাদিক স্কট পেল্লি একের পর এক সংবাদ প্রকাশ করেই যাচ্ছে।
সম্প্রতি ইউক্রেন সফরে যান স্কট। রাশিয়ার হামলায় ৯ শিশু নিহত হয়েছে— এমন একটি জায়গা পরিদর্শন করে সেখানেই ভলোদিমির জেলেনস্কির সাক্ষাৎকার নেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের ওপর তার তীব্র ঘৃণার কথা জানান জেলেনস্কি। এ সময় ইউক্রেনে এসে রাশিয়ার বর্বরতা দেখে যেতেও ট্রাম্পকে আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে, গ্রিনল্যান্ডে গিয়ে রবিবার আরেকটি প্রতিবেদন সম্প্রচার করেন সাংবাদিক জন ওরথহেইম। ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড দখল করা সম্পর্কে দ্বীপটির কয়েকজনের বক্তব্য প্রকাশ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।
৫ ঘণ্টা আগে
প্রথম দফার বৈঠক শেষ, আরও আলোচনায় সম্মত ইরান-যুক্তরাষ্ট্র
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে তেহরান ও যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের মধ্যে প্রথম দফার বৈঠক শেষ হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, এ নিয়ে আগামী সপ্তাহগুলোতে আরও আলোচনার বিষয়ে দুপক্ষ সম্মত হয়েছে।
স্থানীয় সময় শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে এ আলোচনা শুরু হয় বলে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে।
খবরে বলা হয়, ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে হওয়া এই বৈঠক শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে ইরান থেকে প্রকাশিত এসব খবরের সত্যতা নিশ্চিত করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তবে দুই পক্ষের মধ্যে সামনাসামনি কথা হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তাতে আলোচনা যে ভালো হয়েছে, তার ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইরানে ভয়েস অব আমেরিকার সাবেক সাংবাদিকের ১০ বছরের কারাদণ্ড
ওমানের যে স্থানে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট করে কিছু জানানো না হলেও দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এই আলোচনা চলে বলে জানা গেছে। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বৈঠকটি শুরু হয়ে ৫টা ৫০ মিনিটে তা শেষ হয়।
বৈঠক শেষে উইটকফকে বহনকারী গাড়িবহরটি ওমানের রাজধানী মাসকাটে ফিরে আসে। পরে সেটিকে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের দিকে রওনা হতে দেখা যায়।
প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে বৈরী সম্পর্ক টেনে নিয়ে আসার পর দুই দেশের মধ্যে এমন আলোচনা সত্যি আশাব্যঞ্জক। তবে এই আলোচনার ঝুঁকিও রয়েছে।
একদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়ে রেখেছেন, ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হবে। অন্যদিকে, ইরানি কর্মকর্তারাও বারবার পাল্টা সতর্ক করে আসছেন যে, তাদের কাছে প্রায় অস্ত্র-গ্রেড মানের ইউরেনিয়ামের মজুদ রয়েছে, যা দিয়ে তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে।
ওমানে বৈঠক
আজ (শনিবার) বিকালে অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) সাংবাদিকরা একটি গাড়ির বহর দেখেন, যেটি উইটকফকে বহন করছিল বলে ধারণা তাদের। বহরটি ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বেরিয়ে মাসকাটের উপকণ্ঠের দিকে দ্রুত চলে যায়। এরপর সেটি একটি প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে।
এর কয়েক মিনিট পরই ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘায়ি এক্সে লেখেন, ‘পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে।’
‘আলোচনাটি ওমানের মধ্যস্থতায় তাদের পরিকল্পিত স্থানে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা বসে ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থান বিনিময় করবেন।’
এর ঘণ্টাখানেক পর বাঘায়ি ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে হাজির হন এবং আলোচনা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: ইরানে সাময়িক মুক্তি পেল নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মদী
তিনি বলেন, ‘ইরানের উদ্দেশ্য খুবই স্পষ্ট—ইরানের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। কূটনীতির ব্যাপারে আমরা সত্যিকারের ও অকৃত্রিম সুযোগ দিচ্ছি, যাতে সংলাপের মাধ্যমে আমরা একদিকে পরমাণু ইস্যুতে এগিয়ে যেতে পারি, অন্যদিকে আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টিতেও একটি সমাধানের দিকে যেতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেখুন, এটি কেবল শুরু। সুতরাং এই পর্যায়ে উভয় পক্ষই যে কেবল নিজেদের মৌলিক অবস্থানের বিষয়গুলো উপস্থাপন করবে, এটিই স্বাভাবিক। ফলে এই দফায় আলোচনা দীর্ঘ হবে বলে আমরা আশা করছি না।’
এর আগে, ইরানি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আরাগচি। সে সময় তিনি বলেন, ‘যদি উভয় পক্ষের যথেষ্ট সদিচ্ছা থাকে, তাহলে আমরা একটি সময়সূচি নির্ধারণ করব। তবে এ ব্যাপারে এখনই কথা বললে তা বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে।’
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ প্রকাশিত ওই অডিও ক্লিপে তিনি আরও বলেন, ‘এই আলোচনাগুলো যে পরোক্ষভাবে হবে, এখন কেবল সেটিই স্পষ্ট। তাছাড়া পারমাণবিক ইস্যুতে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় ইচ্ছা নিয়েই এগুলো (আলোচনা) পরিচালিত হবে। আর ইরানের জনগণের স্বার্থ রক্ষা এবং সমতার ভিত্তিতে চুক্তিতে পৌঁছানোর কথা মাথায় রেখেই আমরা কাজ করছি।’
তবে ট্রাম্প ও উইটকফ উভয়েই এই আলোচনাকে ‘সরাসরি’ বলে বর্ণনা করেছেন।
ওমান সফরের আগে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে উইটকফ বলেন, ‘আমি মনে করি, আপনাদের (ইরান) কর্মসূচি ভেঙে দেওয়ার মধ্য দিয়ে আমাদের অবস্থান (গ্রহণ) শুরু হয়েছে। আর এটিই আজ আমাদের অবস্থান। তবে এর মানে এই নয় যে, আমরা দুই দেশের মধ্যে সমঝোতার অন্যান্য উপায় খুঁজে পাব না।’
‘আপনারা কোনোভাবেই আপনাদের পারমাণবিক সক্ষমতার অস্ত্রীকরণ করতে পারবেন না—এখানেই আমাদের রেড লাইন,’ বলেন তিনি।
নিষেধাজ্ঞা শিথিল ও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণই প্রধান বিষয়
ইরানের সংকটে থাকা অর্থনীতিকে স্বস্তি দিতে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রস্তাব দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র, তবে ইরান কতটা ছাড় দিতে রাজি হবে—তা এখনও স্পষ্ট নয়।
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী, ইরান ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ উপাদান মজুদ রাখতে পারে। তবে বর্তমানে তেহরানের ইউরেনিয়ামের মজুদ এমন পর্যায়ে আছে যে তারা চাইলে একাধিক পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে। এছাড়া তাদের কাছে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ উপাদানও রয়েছে, যা অস্ত্র-গ্রেড মান থেকে প্রযুক্তিগতভাবে মাত্র কয়েক ধাপ দূরে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, নতুন আলোচনায় ইরান অন্তত ২০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম মজুদ করতে চাইবে। এবং একটি বিষয় তারা কখনোই করবে না; তা হলো, তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করা।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মাস্কের দ্বারস্থ ইরান
এর ফলে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর তথাকথিত লিবিয়া সমাধানের প্রস্তাব ‘তুমি ভেতরে যাও, স্থাপনাগুলো উড়িয়ে দাও, আমেরিকার তত্ত্বাবধায়নে সমস্ত সরঞ্জাম ধ্বংস কর, তাদের তত্ত্বাবধায়নেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর কর’ ধোপে টিকবে না।
লিবিয়ার প্রয়াত স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির পরিণতির কথা তুলে ধরেছেন আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিসহ ইরানি প্রতিনিধিরা। ২০১১ সালের আরব বসন্তের গণজাগরণের সময় বিদ্রোহীদের হাতে নিজের বন্দুকের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন গাদ্দাফি। আর এটিকেই ইরানিরা সতর্কতা হিসেবে দেখেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ভরসার ফল কী হতে পারে।
১ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাহমুদ খলিলকে বের করে দেওয়া যেতে পারে: বিচারক
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদ করায় গ্রেপ্তার হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া যেতে পারে বলে রায় দিয়েছেন লুইজিয়ানার অভিবাসন আদালতের বিচারক জেমি কোমান্স।
গ্রেপ্তারের প্রায় মাসখানেক পরে স্থানীয় সময় শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এই রায় ঘোষণা করেন বিচারক। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন মাহমুদের আইনজীবীরা। আগামী ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত আপিলের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন বিচারক। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই এমন খবর দিয়েছে।
গত বসন্তে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে সংঘটিত বিক্ষোভে জড়িত থাকার কারণে এ বছরের ৮ মার্চ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা। এরপর থেকে লুইজিয়ানার জেনা শহরে একটি অভিবাসী আটককেন্দ্রে ছিলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইহুদিবিদ্বেষী বিক্ষোভ বন্ধের অভিযানের প্রথম শিকার ৩০ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি যুবক। মাহমুদ খলিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের শিক্ষার্থী। যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের গ্রিনকার্ড রয়েছে তার। গ্রেপ্তারের পরই তার গ্রিনকার্ড বাতিলের কথা জানায় ওয়াশিংটন।
আরও পড়ুন: আমি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বন্দি: মাহমুদ খলিল
শুক্রবারের এই রায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ফিলিস্তিন-সমর্থিত গ্রিনকার্ডধারী ও ভিসাধারীদের কণ্ঠরোধ ও দমনপীড়নের পথ প্রশস্ত করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
মাহমুদের আইনজীবী ও আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস-নিউ জার্সির নির্বাহী পরিচালক অমল সিনহা বলেছেন, ‘তাড়াহুড়ো করে দেওয়া আদালতের এই রায় পুরোপুরি ভিত্তিহীন। সরকার পক্ষ নিজেদের সমর্থনে তেমন কোনো প্রমাণই উপস্থাপন করতে পারেনি, আসলে তাদের কাছে কোনো প্রমাণই তো নেই মাহমুদের বিরুদ্ধে।’
এই রায়কে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মতামতের লজ্জাজনক অনুসরণ বলে অভিহিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটসের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ডিয়ালা শামাস।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ১৯৫২ সালের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের উদাহরণ দিয়ে রুবিও বলেছিলেন, ‘মাহমুদের কার্যকলাপ মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, এজন্য তাকে বিতাড়িত করা উচিত।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সেই যুবক এখন বিপাকে
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যকে অগ্রাহ্য করার এখতিয়ার তার নেই বলে জানিয়েছেন বিচারক কোমান্স। তাছাড়া মাহমুদকে বিতাড়িত করতে প্রশাসন তাদের যুক্তি প্রমাণ করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
খলিলের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, লুইজিয়ানার যে আদালতে মাহমুদের মামলার শুনানি হয়েছে, সেখানকার বিচারকরা ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে এই রায় দিয়েছেন।
তারা জানান, ১৯৫২ সালের অভিবাসন আইনের অধীনে নেওয়া সিদ্ধান্তের ‘যুক্তিসংগত কারণ’ সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বিচারকের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। বিচারক সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এদিকে, মাহমুদকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দিতে এই রায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য এই রায়কে উল্লেখযোগ্য বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কারণ গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসে ফিরেই ট্রাম্প অঙ্গীকার করেছিলেন, গত বছর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিপন্থি প্রতিবাদী আন্দোলনে জড়িত কিছু বিদেশি শিক্ষার্থীকে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেবেন। এই আন্দোলনকে তিনি ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে অভিহিত করেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যম জেটো নিউজের এক খবরে জানা যায়, রায় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে খলিল বলেন, ‘এই আদালত ঠিক সেটিই করেছেন, ঠিক যে উদ্দেশ্যে আমার পরিবার থেকে প্রায় এক হাজার মাইল দূরে আমাকে পাঠিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। আমি আশা করি যে দ্রুততার সঙ্গে আমার ঘটনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, একইরকম যেন মাসের পর মাস আটকে থাকা বন্দিদের বিষয়েও আদালত দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি অ্যাক্টিভিস্ট আটক: যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন
ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে গত বসন্তে বিক্ষোভ করায় খলিলের মতো আরও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছেন অভিবাসন কর্মকর্তারা। তাদেরও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মাহমুদকে গ্রেপ্তারের পর তার আইনজীবী কিংবা তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে না জানিয়েই তাকে লুইজিয়ানাতে স্থানান্তর করা হয়, যদিও তার মামলাটি নিউ জার্সির একটি আদালতে বিচারাধীন ছিল।
এর আগে তার গ্রেপ্তারের ঘটনাটি মার্কিন সংবিধানের প্রথম ও পঞ্চম সংশোধনীর আওতায় দেওয়া বাক্স্বাধীনতার সুরক্ষাকে লঙ্ঘন করছে কি না সে বিষয়ে হাবিয়েস পিটিশন করেছিল তার আইনজীবীরা।
শুক্রবারের রায় ঘোষণার পর মাহমুদ খলিলের আইনজীবীরা বলেন, ‘মাহমুদকে বিতাড়ন করা আটকাতে লড়াই এখনও শেষ হয়নি। তার পরিবারের কাছে তাকে ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।’
২ দিন আগে
ফ্লোরিডায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত ৩
দক্ষিণ ফ্লোরিডায় একটি প্রধান মহাসড়কের কাছে একটি ছোট বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৩ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও একজন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে দক্ষিণ ফ্লোরিডায় একটি প্রধান আন্তঃরাজ্য মহাসড়কের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিমানটি বিধ্বস্ত হয় এবং একটি গাড়ি রেললাইনের উপর পড়ে যায়। এতে এসব হতাহত হয় বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
বোকা র্যাটন ফায়ার রেসকিউর সহকারী প্রধান মাইকেল লাসাল জানিয়েছেন, বিমান দুর্ঘটনায় তিনজনই নিহত হয়েছেন। বিমানটি মাটিতে পড়ার পর আগুনের কুণ্ডলির তৈরি হয়। এতে দুর্ঘটনাস্থলের পাশের গাড়িতে থাকা একজন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ২
লাসাল জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর বোকা র্যাটন বিমানবন্দরের কাছে ইন্টারস্টেট ৯৫-এর কাছে বেশ কিছু রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
দুর্ঘটনার শিকার সেসনা ৩১০ বিমানটিতে তিনজন আরোহী ছিলেন বলে জানিয়েছে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন।
সংস্থাটি একটি ই-মেইলে বলেছে, বোকা র্যাটন বিমানবন্দর থেকে টালাহাসির উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর সকাল ১০টা ২০ মিনিটে এটি বিধ্বস্ত হয়।
দমকল কর্মকর্তারা দক্ষিণ ফ্লোরিডা সান সেন্টিনেলকে জানিয়েছে, বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে একটি গাড়িকে রেললাইনের উপরে ধাক্কা দিয়েছে, যার ফলে লাইনটি বন্ধ হয়ে গেছে।
বোকা র্যাটনের মেয়র স্কট সিঙ্গার এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ‘আমরা গভীরভাবে দুঃখিত যে আজ আমাদের একটি বিমান দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এই মুহূর্তে আরও বিস্তারিত জানা যাচ্ছে। আমরা জরুরি উদ্ধারকারী এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত সকলের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি। তদন্ত চলাকালে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ধৈর্যধারণের অনুরোধ করছি এবং সহযোগিতা কামনা করছি।’
আরও পড়ুন: আলাস্কায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত ১০
এনটিএসবি’র নেতৃত্বে ঘটনাটির তদন্ত করছে এফএএ এবং জাতীয় পরিবহন সুরক্ষা বোর্ড।
জানুয়ারিতে ওয়াশিংটনের কাছে মাঝ আকাশে বিমানের সংঘর্ষে ৬৭ জন নিহত হন। ফেব্রুয়ারিতে সিয়াটল বিমানবন্দরে একটি বিমান আরেকটি বিমানকে ধাক্কা দেয়। মার্চ মাসে ডেনভারে অবতরণের পর আমেরিকান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে আগুন ধরে যায়—এতে আহত ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়
২ দিন আগে
চীন বাদে সব দেশের ওপর মার্কিন পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত
চীন ছাড়া বাকি দেশগুলোর ওপর আরোপ করা পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার (১০ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে তার এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
তবে চীনের ওপর শুল্ক ১০৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (৯ এপ্রিল) ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তিনি পাল্টা শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন। এই সময়ে পাল্টা শুল্ক উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে, যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘চীন বিশ্বের বাজারগুলোর প্রতি শ্রদ্ধার যে ঘাটতি দেখিয়েছে, তার ভিত্তিতে আমি যুক্তরাষ্ট্রে চীনের পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ ধার্য করছি। এটা অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
এ প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘আশা করি নিকট ভবিষ্যতে চীন ও অন্যান্য দেশ উপলব্ধি করতে পারবে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণার দিন আর থাকবে না বা গ্রহণযোগ্য হবে না।’
ট্রাম্প লিখেছেন, ‘প্রকৃত অবস্থার ভিত্তিতে ৭৫টির বেশি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এসব প্রতিনিধির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ, অর্থ বিভাগ ও ইউএসটিআর (যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি) রয়েছে।’
‘দেশগুলো বাণিজ্য, বাণিজ্য বাধা, শুল্ক, মুদ্রা কারসাজি ও অশুল্ক বাধা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সমাধানে পৌঁছাতে সমঝোতা আলোচনার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে,’ বলেন তিনি।
৪ দিন আগে
এবার জরুরি খাদ্য সহায়তা বন্ধ করল যুক্তরাষ্ট্র
এবার জরুরি খাদ্য সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তকে ঝুঁকিতে থাকা লাখ লাখ মানুষের জন্য ‘মৃত্যুদণ্ড’ বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘের সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি।
জরুরি খাদ্য সহায়তা হিসেবে মূলত আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং আরও ১১টি দরিদ্র দেশে লাখ লাখ মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) জরুরি কর্মসূচিতে অর্থায়ন করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্ত এসব দেশে দীর্ঘ সময় ধরে চলা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া লাখ লাখ মানুষের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলবে বলে সংস্থাটির এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েডেট প্রেসকে (এপি) জানিয়েছেন।
খাদ্য সহায়তার বৃহত্তম সরবরাহকারী বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সোমবার (৭ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে নতুন কাটছাঁট প্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
দুই মার্কিন কর্মকর্তা, জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা এবং এপির হাতে আসা নথিপত্র থেকে জানা যায়, অপ্রত্যাশিত এই চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট পরিচালিত সর্বশেষ কিছু মানবিক কর্মসূচিকে লক্ষ্য করে নেওয়া হয়েছে।
ডব্লিউএফপি এক্সের ওই পোস্টে বলেছে, ‘নতুন এই সিদ্ধান্তটি চরম ক্ষুধা ও অনাহারে থাকা লাখ লাখ মানুষের জন্য মৃত্যুদণ্ডের সমান হতে পারে।’
সংস্থাটি বলেছে, জীবন রক্ষাকারী কর্মসূচির জন্য ‘অব্যাহত সহায়তার আহ্বান জানাতে’ তারা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং অতীতের অবদানের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দাতাদের ধন্যবাদ জানিয়েছে।
মার্কিন বৈদেশিক সহায়তার ব্যাপক কাটছাঁটের যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেখানে জরুরি খাদ্য কর্মসূচি এবং অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী সহায়তা কাটছাঁট করা হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। তবে সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ
ইলন মাস্কের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সির শীর্ষ লেফটেন্যান্ট জেরেমি লিউইনের নির্দেশে 'যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সুবিধার জন্য' প্রকল্পগুলো বাতিল করা হচ্ছে। ইউএসএআইডি প্রোগ্রামগুলো বাদ দেওয়ার তত্ত্বাবধানের জন্যও নিযুক্ত ছিলেন এই জেরেমি লিউন।
সহায়তা বন্ধের ব্যাপক প্রভাব
মানবিক সহায়তাদানকারী গোষ্ঠীগুলোর মতে, ডব্লিউএফপি কর্মসূচির আকস্মিক সমাপ্তির সিদ্ধান্তটি হুমকির মুখে ফেলেছে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে। বৈশ্বিক বাস্তবতায় এসব জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগই এ ধরনের খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।
যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দাতা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে মানবিক সংকট নিরসনের প্রচেষ্টাকে তাদের কৌশলগত স্বার্থে গণ অভিবাসন, সংঘাত ও চরমপন্থা দমন করে আসছে, যা সম্পদ করায়ত্ত করার জন্য হতে পারে।
ডব্লিউএফপি প্রধান সিন্ডি ম্যাককেইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে বলেছেন, এই কাটছাঁট 'বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে।’
রুবিও গত মাসে কংগ্রেস ও আদালতকে জানিয়েছেন, ইউএসএআইডি চুক্তি কাটছাঁট করা শেষ হয়েছে। এর সঙ্গে বিশ্বব্যাপী প্রায় এক হাজার কর্মসূচি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে এবং আরও পাঁচ হাজারেরও বেশি কমূসূচি বাদ দেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন ইউএসএআইডির বিরুদ্ধে অপচয় এবং উদারপন্থী উদ্দেশ্যকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার অভিযোগ এনেছে।
ইউএসএআইডি এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমে সমস্ত বৈদেশিক সহায়তা স্থগিত করার ফলে আল-হোল শিবিরে পরিষেবাগুলো দ্রুতই বন্ধ হয়ে যায়। ওই শিবিরটিতে হাজার হাজার অভিযুক্ত ইসলামিক স্টেট যোদ্ধা এবং তাদের পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়।
এই কাটছাঁটের সিন্ধান্তের ফলে শিবিরে বিদ্রোহ বা বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে মার্কিন কর্মকর্তারা দ্রুত হস্তক্ষেপ করে পরিষেবা চালু করেছিলেন।
এপির হাতে আসা স্টেট ডিপার্টমেন্টের নথিতে সেভ দ্য চিলড্রেন এবং ইউএন পপুলেশন ফান্ড পরিচালিত দুটি নতুন বাতিল হওয়া চুক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— আল-হোল শিবিরে নারী ও শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য পরিষেবা সরবরাহ। শিবিরে অন্য কোনো পরিষেবা প্রভাবিত হয়েছে কিনা—তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হওয়া যায়নি।
ডব্লিউএফপির প্রধান অর্থদাতা ছিল যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর খাদ্য সংস্থাটিকে অনুদানের ৯৮০ কোটি ডলারের মধ্যে ৪৫০ কোটি ডলার সরবরাহ করেছিল দেশটি।
আরও পড়ুন: চোখে সামনে যা পড়েছে, তা-ই হত্যা করেছি: ইসরায়েলি সেনাদের বিবরণ
৬ দিন আগে
ট্রাম্পের শুল্কারোপ: বাণিজ্যযুদ্ধ এড়াতে কী ভাবছে দেশগুলো?
যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপর বহুল আলোচিত পাল্টা শুল্কারোপ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই পদক্ষেপ বিশ্ব অর্থনীতির বিদ্যমান ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়ে বাণিজ্যযুদ্ধের সূত্রপাত করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে যেকোনো ধরনের বাণিজ্যযুদ্ধ এড়িয়ে চলতে চান বলে অভিমত দিয়েছেন শুল্কের আওতাধীন কয়েকটি দেশের নেতারা। ভিন্নমতও রয়েছে অনেক দেশের। স্থানীয় সময় বুধবার (২ এপ্রিল) হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে শুল্কারোপের ঘোষণা করেন ট্রাম্প। শত্রু-মিত্র পরোয়া না করেই তিনি শুল্কারোপ করেছেন।
নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘যেসব দেশ তাদের পণ্যে শুল্কারোপ করে থাকে, সেসব দেশের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্কারোপ করবেন তিনি, কথা রেখেছেনও।’
আরও পড়ুন: যুদ্ধ পরিকল্পনার চ্যাটগ্রুপে ভুলে সাংবাদিককে যুক্ত করলেন ট্রাম্প কর্মকর্তারা
আবার সমপরিমাণ না করে অর্ধেক শুল্কারোপ করে নিজের উদারতার পরিচয় দিয়েছেন—এমন দাবি তিনি নিজেই করেছেন। যেমন: বাংলাদেশ আমেরিকান পণ্যে ৭৪ শতাংশ শুল্কারোপ করে, জবাবে এবার তিনি বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক বেঁধে দিয়েছেন।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতিতে সব আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্কের একটি ভিত্তিরেখা দেওয়া হয়েছে।
পাল্টা পদক্ষেপ নিয়ে কী ভাবছে দেশগুলো
যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদেশ যুক্তরাজ্যের পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করেছেন ট্রাম্প। জবাবে দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী জোনাথন রেনল্ডস বলেন, ‘ওয়াশিংটন এখনো তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র। দেশটির আরোপিত শুল্কের প্রভাব কমাতে যুক্তরাজ্য একটি বাণিজ্যচুক্তি করতে আগ্রহী।’
রেনল্ডস বলেন, ‘কেউই বাণিজ্যযুদ্ধ চায় না, আমাদের উদ্দেশ্য একটি চুক্তি নিশ্চিত করা।’ তবে বিকল্প পদক্ষেপ নিয়েও প্রস্তুতি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশের স্বার্থ সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় সবকিছুই করবে যুক্তরাজ্য প্রশাসন।’
অনেকটা একই সুরে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আরেক মিত্র জাপান। শুল্কারোপের বিষয়টি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করার কথা জানিয়েছেন জাপানের প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি।
তিনি জানান, ‘প্রতিশোধমূলক কোনো পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র-জাপানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’
এ কারণে টোকিও এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার থেকে বিরত থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই উদ্যোগ না যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য ফলপ্রসূ হবে, না যেসব দেশের ওপর শুল্কারোপ করা হয়েছে তাদের কোনো কাজে আসবে।’
এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, ‘বাণিজ্যযুদ্ধ ঠেকাতে শুল্কারোপের বিষয়ে একটি সমঝোতায় আসতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে তার প্রশাসন।’
এ সময়, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ পশ্চিমাদের দুর্বল করে অন্যান্য বৈশ্বিক শক্তিকে সুবিধা দেবে বলে মত দেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী।
অন্যদিকে, ট্রাম্পের আরোপিত ১০ শতাংশ শুল্কের জবাবে পাল্টা শুল্কারোপের কথা জানিয়েছে ব্রাজিল প্রশাসন। দেশটির পার্লামেন্টে এ সম্পর্কিত একটি বিলও পাশ করা হয়েছে বলে এপির খবরে বলা হয়েছে।
একই পথে হাঁটতে চলেছেন কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী ম্যাক কার্নি। তিনিও পাল্টা শুল্কারোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এছাড়া পাল্টা পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী। তবে কি ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে তা সুষ্পষ্ট করে জানাননি তিনি।
বিশ্ব বাণিজ্যে বড় আঘাত
ট্রাম্পের আকস্মিক এই শুল্কারোপে বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় বড় ধাক্কা লাগবে বলে আশঙ্কা করেছিলেন অনেকে। এরইমধ্যে এই আশঙ্কা বাস্তবে ফলতেও শুরু করেছে। বুধবারের ঘোষণার পরেই বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের শেয়ারবাজারে পতন দেখা গেছে। তেলের দাম বেড়েছে ২ ডলারের বেশি।
এই শুল্কারোপ দীর্ঘায়িত হলে কয়েক দশক ধরে গড়ে ওঠা সাপ্লাই চেইন (সরবরাহ ব্যবস্থা) ভেঙে যেতে পারে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে শিগগিরই যেসব সমস্যা তৈরি হতে যাচ্ছে, তার মধ্যে অন্যতম বিশ্ব বাণিজ্যে মন্দার ঝুঁকি।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফিচ রেটিংসের প্রধান ওলু সোনোলা বলেন, চলতি বছরে বিভিন্ন দেশের পণ্য আমদানিতে গড়ে ২২ শতাংশ শুল্কারোপ করেছেন ট্রাম্প, যা গত বছর ছিল মাত্র ২.৫ শতাংশ।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ শুধু যুক্তরাষ্ট্রেরই নয়; বরং বিশ্ব অর্থনীতির মোড় ঘুরিয়ে দেবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত অনেক দেশেই মন্দায় পড়তে যাচ্ছে বলেও মত দেন তিনি।
এই শুল্ক ধার্য করায় অর্থনৈতিকভাবে সমস্যায় জর্জরিত প্রশান্ত-মহাসাগরীয় দেশগুলোতে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে শঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
নিজ নিজ দেশে অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেই এই অতিরিক্ত শুল্ক যেন ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’। ট্রাম্প প্রশাসন লাওসের ওপর ৪৮ শতাংশ, কম্বোডিয়ার ওপর ৪৯ শতাংশ ও মিয়ানমারের ওপর ৪৪ শতাংশ শুল্কারোপ করেছে।
মিয়ানমারের অর্থনীতি এরইমধ্যে চরম সংকটে, গত সপ্তাহে দেশটিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত অন্তত ৩ হাজারের বেশি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বেশিরভাগ স্থাপনা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ট্রাম্প বলেছিলেন তিনি দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তা করবেন, করেছেন মিয়ানমারের পণ্যে ৪৪ শতাংশ শুল্কারোপ।
ক্ষতি কমাতে কি করতে পারে দেশগুলো
এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বেশিরভাগ পণ্য আমদানি করে থাকে। ট্রাম্পের শুল্কারোপের কারণে নিজ দেশের অর্থনীতির নেতিবাচক প্রভাব এড়াতে গাড়িনির্মাতাসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোতে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বৃহৎ রপ্তানিকারক দেশগুলো।
দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেছেন ট্রাম্প। এতে সেখানকার অর্থনীতিতে কেমন প্রভাব পড়তে পারে, সে সম্পর্কে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হান ডাক সু নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান দক্ষিণ কোরিয়ার বানিজ্যমন্ত্রী। এর ফলে তারা অতিরিক্ত শুল্কের নেতিবাচক প্রভাব কমাতে পারবেন বলে আশা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
ট্রাম্প ক্ষমতায় এসেই চীনা পণ্যে শুল্কারোপ করেই যাচ্ছেন। চুপ হয়ে বসে নেই বেইজিংও। ট্রাম্পের শুল্কের জবাবে তারাও পাল্টা শুল্কারোপ করেছেন। এবারও পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কারোপে ইইউ প্রধানের নিন্দা
পাশাপাশি একতরফাভাবে শুল্কারোপ না করে অংশীদার দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্যিক সমস্যাগুলো সমাধান করতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন।
তবে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে ট্রাম্পের আরোপিত নতুন এই শুল্ক মেক্সিকোর ওপর কি ধরণের প্রভাব ফেলতে পারে, তা পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেনবাম।
তিনি বলেন, ‘কেউ আমাদের ওপর শুল্কারোপ করলেই যে একই কাজ আমাদেরও করতে হবে; এমন কোনো কথা নেই। আমাদের দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে যা কিছু প্রয়োজন, আমরা তাই করবো। এটিই আমাদের উদ্দেশ্য।’
ট্রাম্পের শুল্কারোপ অযৌক্তিক
হোয়াইট হাউস ঠিকঠাকভাবে হিসেব না করেই শুল্কারোপ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।
অষ্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আন্থনি আলবানিজ বলেছেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই শুল্কারোপ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, তবে ক্যানবেরা কোনো পাল্টা পদক্ষেপ নেবে না।’
আলবানিজ বলেন, ‘ট্রাম্প বলেছিলেন তিনি পাল্টা শুল্কারোপ করবেন। অষ্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মুক্তবাণিজ্য চুক্তি রয়েছে, তা সত্ত্বেও তিনি ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করেছেন, এটি হওয়ার কথা ছিল শূন্য। ট্রাম্প যেটি করেছেন, সেটি কোনো বন্ধু আচরণ হতে পারে না।’
সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হলো দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের অষ্ট্রেলিয়ার মালিকানাধীন ছোট্ট দ্বীপ নরফকের ওপর ২৯ শতাংশ শুল্কারোপ করেছেন ট্রাম্প। অঞ্চলটিতে মাত্র দুই হাজার মানুষের বসবাস, অর্থনীতি পর্যটননির্ভর।
দ্বীপটির প্রশাসক জর্জ প্লান্ট জানান, ‘যুক্তরাষ্ট্রে তারা কোনো পণ্য রপ্তানি করেন না। তাই শুল্কারোপের প্রশ্নও ওঠে না। অথচ ট্রাম্প তাদের ওপর ২৯ শতাংশ পাল্টা শুল্কারোপ করেছেন।
নিউজল্যান্ডের বাণিজ্যমন্ত্রী টড ম্যাকক্লেও জানান, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে তারা ২০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেননি। তবে তারা কোনো পাল্টা পদক্ষেপ নেবেন না।
যুক্তরাষ্ট্রের লাভবান হওয়ার আশা ক্ষীণ
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে এই পাল্টা শুল্কারোপ করার দাবি করেছেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রশাসনের জন্য শত শত বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আনতে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে ন্যায্যতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানান।
তবে এই ধরনের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান নীতিগুলোকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে বলে মন্তব্য করেছেন চিলির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিক।
এ বিষয়ে সামাজিক মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো বলেন, ‘ট্রাম্পের এই শুল্কারোপের মাধ্যমে মুক্ত বাণিজ্য নীতির মূলে থাকা নয়া-উদারতাবাদের মৃত্যু ঘটেছে।’
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের শুল্কারোপ কতটা ভোগাবে বাংলাদেশকে?
ট্রাম্পের এই শুল্কারোপ দেশটির অর্থনীতির জন্য খুব কমই ফলপ্রসূ হবে; বরং বাণিজ্যযুদ্ধের শঙ্কা তৈরি করবে— এমনটাই মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ইতালির আন্তর্জাতিক রাজনীতি অধ্যয়ন নামক প্রতিষ্ঠানের প্রধান ম্যাট্টেও ভিল্লা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু শুল্কারোপ করেছে, ইউরোপকেও অবশ্যই এর জবাব দিতে হবে। সম্ভবত ব্রাসেলস আশা করছে, তারা যদি কঠোর কোনো পদক্ষেপ নেন, তাহলে ট্রাম্প বাধ্য হয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন এবং শুল্কারোপ থেকে সরে আসবেন।’
১০ দিন আগে
খাটের নিচে লুকিয়ে থাকা ‘দানব’ ধরিয়ে দিল শিশু
শিশুদের ঘুম পাড়াতে রূপকথার দৈত্য-দানবের গল্প শোনানো হয়। বাস্তব জীবনেও অনেক সময় দানবের দেখা মেলে। যদিও তারা বহু মাথাবিশিষ্ট হাইড্রা কিংবা মানুষ ও ষাঁড়ের সম্মিলিত রূপের মিনোটারের মতো দেখতে নয়। তারা মানুষের মতো হলেও কার্যকলাপে শিশুদের কাছে দানব হিসেবেই পরিচিত করে তোলে তাদের।
এমনই এক ‘দুষ্টু দানব’ লুকিয়ে ছিল একটি শিশুর খাটের নিচে। সেই শিশুটিই ধরিয়ে দিয়েছে ওই দানবকে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস অঙ্গরাজ্যের এক বাসার একটি শিশুর খাটে নিচে লুকিয়ে থাকা সেই ‘দানবকে’ সোপর্দ করা হয়েছে আদালতে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৮ মার্চ) ক্যানসাস কাউন্টির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (শেরিফ) কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে জানানো হয়। একটি শিশুর খাটের নিচ থেকে এক অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বার্টন কাউন্টি শেরিফ অফিস জানিয়েছে, রাজ্যটির গ্রেট বেন্ডের কাছের একটি বাড়িতে গত সোমবার (২৫ মার্চ) এই ঘটনাটি ঘটেছে। গ্রেপ্তারের পর ২৭ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, ‘ওই বাসাটিতে একটি শিশুর দেখাশোনা করতেন এক নারী (বেবিসিটার)। ঘটনার দিন শিশুটি বারবার তার বেবিসিটারকে বলছিল, ‘খাটের নিচে দানব আছে। আতঙ্কিত শিশুটিকে আশ্বস্ত করতে খাটের নিচে উঁকি দিতেই ভয় পেয়ে যান বেবিসিটারও। এক অপিরিচিত ব্যক্তিকে তিনি খাটের নিচে লুকিয়ে থাকতে দেখতে পান।’
আরও পড়ুন: মাকে ধরিয়ে দিতে পুলিশ ডাকল ৪ বছরের শিশু!
এ সময় ওই ব্যক্তি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আটকানোর চেষ্টা করেন বেবিসিটার নারী। তাদের মধ্যে খানিক ধ্বস্তাধ্বস্তিও হয়। এরই এক পর্যায়ে শিশুটি বিছানা থেকে নিচে পড়ে যায়।
শেরিফ অফিসে জানানো হলেও তারা আসার আগেই কোনোরকম সুযোগ পেয়ে পালিয়ে যান ওই ব্যক্তি। অবশ্য পরে পায়ের ছাপ অনুসরণ করে তাকে আটক করেন অঙ্গরাজ্যটির আইন কর্মকর্তারা।
শেরিফ অফিসের তথ্যমতে, গ্রেপ্তার হওয়া ওই ব্যক্তি আগে গ্রেট বেন্ডের কাছাকাছি ওই বাড়িতেই থাকতেন। তবে রাজ্যটির আদালত তাকে বাড়িটি থেকে দূরে থাকার জন্য সুরক্ষা আদেশ দিয়েছিলেন।
অনলাইন আদালতের তথ্য অনুযায়ী, ওই ব্যক্তি অপরাধমূলক হুমকি, পারিবারিক সহিংসতা, সুরক্ষা আদেশ লঙ্ঘনসহ বেশকিছু অভিযোগে কারাগারে ছিলেন। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো দায়ের করা হয়েছিল। তবে ১০ দিন আগে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
তবে পুনরায় গ্রেপ্তারের পর তাকে জামিন না দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন বিচারক। সোমবারের ঘটনার পর তার বিরুদ্ধে শারীরিক আক্রমণ ও শিশুর জীবন ঝুঁকিতে ফেলাসহ বেশকিছু নতুন অভিযোগও যুক্ত করা হয়েছে।
১৬ দিন আগে
যুদ্ধ পরিকল্পনার চ্যাটগ্রুপে ভুলে সাংবাদিককে যুক্ত করলেন ট্রাম্প কর্মকর্তারা
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ওপর হামলার ঘটনায় গোপনীয় সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে আলাপকালে গুরুতর নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সদস্য। যাদের মধ্যে ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পেট হেগসেথ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও জাতীয় গোয়েন্দা পরিচারক তুলসি গ্যাবার্ড রয়েছেন।
হামলা পরিকল্পনা নিয়ে বাণিজ্যিক চ্যাটঅ্যাপ সিগনালে কথা বলছিলেন তারা। তখন ভুল করে দেশটির একজন বিখ্যাত সাংবাদিককেও গ্রুপে যুক্ত করা হয়েছিল। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এমন খবর দিয়েছে।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। তদন্তের আহ্বান জানিয়ে সিনেটে সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার বলেন, ‘বহু বছরের মধ্যে—আমি যতদূর জানি—এটা মার্কিন সামরিক গোয়েন্দা তথ্যের সবচেয়ে মারাত্মক লঙ্ঘনের একটি।’
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের কাছে ‘অবাঞ্ছিত’ হলেও আফসোস নেই ইব্রাহিম রসুলের
স্পর্শকাতর তথ্য নিয়ে আলাপের জন্য সিগনাল ব্যবহারে মার্কিন সরকারের অনুমোদন নেই। সেদিনের এই আলোচনায় ট্রাম্পের উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার, চিফ অব স্টাফ সুসি ওয়াইলস ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিফ উইটকফও ছিলেন।
গেল সোমবার দ্য আটলান্টিক সাময়িকীতে এক লেখায় সম্পাদক জেফরি গোল্ডবার্গ এমন তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি জানতে পারেন যে ‘হুতি পিসি স্মল গ্রুপ’ নামে সিগনাল আলাপে তাকে যুক্ত করা হয়েছে। ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার ১৮ সদস্য এই গ্রুপচ্যাটে ছিলেন।
জেফরি গোল্ডবার্গ বলেন, সিআইয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও বর্তমান আভিযানিক বিস্তারিত তথ্যসহ স্পর্শকাতর উপকরণ প্রতিবেদনে নিজের বিবরণ থেকে বাদ দিয়েছেন তিনি।
জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র ব্রিয়ান হিউগেস এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আটলান্টিক সাময়িকীকে তিনি বলেন, ‘একটি বার্তা প্রবাহ থেকে এমনটি ঘটেছে। কীভাবে অসাবধানতাবশত নম্বরটি যুক্ত হয়েছে, তা আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি।’
তবে এই ঘটনা সম্পর্কে জানতেন না বলে জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আর আমি আটলান্টিক সাময়িকীর খুব একজন বড় ভক্ত না।’
পেট হেগসেথ বলেন, ‘কেউ যুদ্ধ পরিকল্পনা নিয়ে সেখানে বার্তা দেয়নি। এ বিষয়ে আমি এতটুকুই বলতে পারবো।’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সফর শেষে সোমবার হাওয়াইতে অবতরণ করে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
আরও পড়ুন: ভয়েস অফ আমেরিকা বন্ধের ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত অবৈধ, মামলা
জবাবে জেফরি গোল্ডবার্গ বলেন, ‘হেগসেথ সত্যিকথা বলেননি। তিনি মিথ্যা বলেছেন। হেগসেথ যুদ্ধ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলছিলেন।’
পরবর্তীতে হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্ডটসসহ জাতীয় নিরাপত্তা টিমের ওপর সর্বোচ্চ আত্মবিশ্বাস আছে ট্রাম্পের।
২০ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নির্দেশিকা কঠোর করল ইউরোপ
জার্মান নাগরিকসহ বেশ কয়েকজন ইউরোপীয় নাগরিককে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আটকের ঘটনায় দেশটিতে ভ্রমণ নির্দেশিকায় বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ।
জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ভ্রমণকারী জার্মান নাগরিকদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।
একজন মুখপাত্র সরকারি গণমাধ্যম এআরডির তাগেসচাউকে বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের অনুমতি পেতে শুধু ইলেকট্রনিক সিস্টেম ফর ট্রাভেল অথোরাইজেশন (ইএসটিএ) অনুমোদন বা মার্কিন ভিসাই যথেষ্ট নয়। এসব অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও কোনো ব্যক্তিকে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি নাও দেওয়া হতে পারে।’
আরও পড়ুন: আমি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বন্দি: মাহমুদ খলিল
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় তিনজন জার্মান নাগরিককে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন গ্রিন কার্ডধারীও ছিল। পরে তাদের দুইজনকে জার্মানিতে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনার পর যুক্তরাজ্যও তাদের নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ নির্দেশিকায় পরিবর্তন এনেছে। এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হয় এবং যদি কেউ আইন ভঙ্গ করে, তাহলে তাকে আটক বা নির্বাসিত করা হতে পারে। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন অফিস জানিয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় নাগরিকদের সব নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে।’
রয়টার্সের তথ্যানুযায়ী ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর চলতি মাসের শুরুতে নিশ্চিত করেছে যে, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আটক এক ব্রিটিশ নাগরিককে সহায়তা করেছে।
এছাড়াও ফিনল্যান্ডও শুক্রবার একই ধরণের ভ্রমণ নির্দেশিকায় পরিবর্তন এনে বলেছে, যথাযথ বৈধ ভ্রমণ নথি বর্তমান মার্কিন নীতির অধীনে প্রবেশের নিশ্চয়তা নাও দিতে পারে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলোর মধ্যে ভিসা বা ইস্তা আবেদনকারীকে তার লিঙ্গ ও জন্মের সময়ের লিঙ্গ বাধ্যতামূলকভাবে উল্লেখ করতে বলেছে। এক্ষেত্রে কোনো অসঙ্গতি পেলে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি বাতিল করা হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়।
এছাড়া, ফিনিশ কর্তৃপক্ষ ভ্রমণকারীদের সতর্ক করে বলেছে, তারা যেন যুক্তরাষ্ট্রের বড় শহরগুলোতে জনসমাগম এড়িয়ে চলে। কারণ, ওইসব স্থানে রাজনৈতিক বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঝুঁকি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন কর্তৃপক্ষ।
ফিনল্যান্ডের সম্প্রচারমাধ্যম ইয়েলের মতে, এই কঠোর নীতিমালা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির ক্রমবর্ধমান রূপকে তুলে ধরে।
২২ দিন আগে