ব্যবসা-বাণিজ্য
সপ্তাহের শুরুতেই সূচকের বড় পতন দেখল পুঁজিবাজার
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেই বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজার। সূচকের বড় পতন এবং বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় নাজেহাল অবস্থা বিনিয়োগকারীদের।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রবিবার (১৩ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৫ পয়েন্ট, যা চলতি মাসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস-৬ এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০-ও কমেছে ১৫ পয়েন্ট।
আজ লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল নিম্নমুখী। লেনদেন অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে ৭৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দরপতন হয়েছে ২৭০টি কোম্পানির। ৪৮টি কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত আছে।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারমূল্য কমেছে। সবচেয়ে বেহাল দশা ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে। তালিকাভুক্ত ৯৫টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৯টির, ৬৯টিরই দাম কমেছে, আর অপরিবর্তিত আছে ১৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি এবং ৭টি কোম্পানির দর পরিবর্তন না হওয়ার বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫টি কোম্পানি।
আরও পড়ুন: সাপ্তাহিক পুঁজিবাজার: লেনদেনে সুবাতাস বইলেও সূচকে মন্দা
ব্লক মার্কেটে ৩০টি কোম্পানির মোট ৩৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে। এর মধ্যে সানলাইফ ইনস্যুরেন্স সর্বোচ্চ ৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনেও ভাটা পড়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে। সারা দিনে মোট ৪১৪ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যা ছিল ৫৪০ কোটি টাকা।
খাতভিত্তিক দর
ঢাকার পুঁজিবাজারে করুণ দশা ব্যাংক খাতের শেয়ারে। তালিকাভুক্ত ২৬টি ব্যাংকের মধ্যে ৫টির শেয়ারের দরবৃদ্ধি এবং আর পাঁচটির দর অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দর কমেছে ১৬টি ব্যাংকের। এক দিনের লেনদেনে এই খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ১ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
একইভাবে পতনের ছোঁয়া লেগেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও। এই খাতে মাত্র একটি কোম্পানির দাম বেড়েছে, অপরিবর্তিত আছে ৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম এবং দাম কমেছে ১৮টি কোম্পানির।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ইনস্যুরেন্স খাতেও পতনের ধারা বজায় আছে। ১১টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি এবং ৫টির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে তালিকাভুক্ত ৪২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে।
টেলিযোগাযোগ খাতে ৩টি কোম্পানির সবগুলোরই দাম কমেছে। টেক্সটাইল খাতে ৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪১টি কোম্পানির। ওষুধশিল্প খাতে ২৪টি কোম্পানির দাম কমেছে, বেড়েছে ৭টির এবং আইটি খাতে ৮টি কোম্পানির দর কমার বিপরীতে দর বেড়েছে মাত্র একটি কোম্পানির।
সামগ্রিকভাবে পাট, প্রকৌশল, খাদ্য ও সিমেন্ট খাতের প্রবৃদ্ধি হলেও এসব খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির দাম ছিল নিম্নমুখী। বিশেষ করে সিমেন্ট খাতে পতনের দিনেও প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২.৪৭ শতাংশ, কিন্তু তালিকাভুক্ত ৭টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ৪টি কোম্পানিরই।
মূল্যবৃদ্ধিতে শীর্ষে যারা
ঢাকার পুঁজিবাজারে ৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। দিনের শুরুতে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ১২৫ টাকা, যা দিন শেষে শেষে বেড়ে হয়েছে ১৩১.৬০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯০ শতাংশ দর বেড়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ওয়াটা কেমিক্যালস লিমিটেড। দিনের শুরুতে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ছিল ১২৪ টাকা, যা লেনদেন শেষে বেড়ে হয়েছে ১৩৪.৩০ টাকা।
এছাড়া ৮.৭৪ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে হাইডেলবার্গ মেটারিয়ালস। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস ১০ এপ্রিল কোম্পানিটির সর্বশেষ শেয়ারপ্রতি দাম ছিল ২৭৩.৬০ টাকা, যা একদিনের ব্যবধানে বেড়ে ২৯৭.৫০ টাকা হয়েছে।
ওষুধ খাতের আরেক কোম্পানি অ্যাম্বি ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ারের দাম এক দিনে ৭.৪৩ শতাংশ বেড়েছে। ৮৫০.৯০ টাকা প্রতিটি শেয়ারের দাম দিন শেষে বেড়ে হয়েছে ৯১৪.১০ টাকা।
শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় পঞ্চমে থাকা মুন্নু অ্যাগ্রোর দাম বেড়েছে ৬.৯১ শতাংশ। এক দিনের ব্যবধানে ৩২০ টাকার শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ৩৪২.১০ টাকা।
পতনে শীর্ষে যেসব প্রতিষ্ঠান
ডিএসইতে পতনে শীর্ষে থাকা কোম্পানির মধ্যে ৯.৯৪ শতাংশ দাম হারিয়ে প্রথমে উঠে এসেছে আল-হ্বাজ টেক্সটাইল মিলস। ১৪১.৪০ টাকার লেনদেন হওয়া শেয়ারের দাম দিন শেষে কমে হয়েছে ১২৮.৬০ টাকা।
ব্যাংক খাতের মধ্যে ৯.৫৮ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে আছে প্রাইম ব্যাংক। এছাড়া সিরামিক খাতে শাইনপুকুর সিরামিকসের শেয়ারের দাম কমেছে ৮.১৪ শতাংশ।
আর্থিক খাতে ফিনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের দাম কমেছে ৭.৫০ শতাংশ এবং ৫.৯১ শতাংশ দর হারিয়ে পতনের পঞ্চমে আছে এস আলম কোল্ড রোলড স্টিলস।
পতন চট্টগ্রামেও
ঢাকার মতো পতনের মুখে পড়েছে চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৩৮ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ১৯৫টি কোম্পানির মধ্যে ৫৬ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ১১৯টি কোম্পানি। এছাড়া ২০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসইতে। সারা দিনে সিএসইতে মোট ১৫ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা এ মাসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
আরও পড়ুন: পতনের ধাক্কা দিয়ে শুরু পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবস
ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও শীর্ষে আছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। এক দিনে সিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৯.৯৭ শতাংশ।
অন্যদিকে, ১১.১৬ শতাংশ দর হারিয়ে সিএসইতে তলানিতে রয়েছে প্রাইম ব্যাংক। গত কার্যদিবসে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ২৪.২০ টাকা, যা সারা দিনের লেনদেন শেষে কমে ২১.৫০ টাকায় নেমেছে।
২১ ঘণ্টা আগে
সাপ্তাহিক পুঁজিবাজার: লেনদেনে সুবাতাস বইলেও সূচকে মন্দা
ঈদের লম্বা ছুটির পর দেশের পুঁজিবাজারে পতনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় লেনদেন। টানা সূচক কমে সপ্তাহের শেষ দুই দিনে তা কিছুটা বাড়লেও সপ্তাহজুড়ে অস্বস্তিতেই ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। তবে এর মধ্যেও শেয়ার বিক্রিতে মোটেও ভাটা পড়েনি।
সপ্তাহজুড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৩ পয়েন্ট। ছুটি শেষে ৫২১৯ পয়েন্ট নিয়ে শুরু করা সূচক বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ৫২০৫ পয়েন্টে ঠেকেছে।
প্রধান সূচকের পাশাপাশি মধ্যম ও ক্ষুদ্র কোম্পানির এসএমই সূচকেও মুখ থুবড়ে পড়েছে ঢাকার বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসএমইএক্স কমেছে ২৫ পয়েন্ট। গত সপ্তাহে এই খাতে সূচক কমেছে ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
আরও পড়ুন: অবশেষে ঢাকার পুঁজিবাজারে উত্থান, ঈদের পর সর্বোচ্চ লেনদেন
অবশ্য ডিএসইর বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ও ব্লু-চিপ ডিএস-৩০ পতনের ধারা থেকে নিজেদের ঠেকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এই সময়ে ডিএসইএস বেড়েছে ৪ এবং ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমছে। ১৪১টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৩৫টি কোম্পানি। সপ্তাহজুড়ে লেনদেনের পর দাম অপরিবর্তিত আছে মাত্র ১৯টি কোম্পানির।
সূচক হারালেও ঢাকার বাজারে বেড়েছে লেনদেন। সাপ্তাহিক গড় লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে ৪৮৭ কোটি টাকা হয়েছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪০৬ কোটি টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকার বাজারে লেনদেন বেড়েছে ১৯ শতাংশের বেশি।
ঢাকার পুঁজিবাজারে ব্যাংকখাতে তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৩টি ব্যাংকের। এর বিপরীতে দাম কমেছে ৩৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টি কোম্পানির।
সপ্তাহ শেষে এ খাতে সূচক বেড়েছে ৮ পয়েন্ট এবং লেনদেন বেড়েছে ৫ শতাংশ। তবে মোট রিটার্ন কমেছে ১.৭৫ শতাংশ।
অন্যান্য খাতে সবচেয়ে বেশি রিটার্ন এসেছে সিমেন্ট এবং মিউচুয়াল ফান্ড খাতে। সিমেন্ট খাতে সর্বোচ্চ ৬.৯ শতাংশ এবং মিউচুয়াল ফান্ডে ৬.৫৫ শতাংশ রিটার্ন এসেছে।
ডিএসইতে সবচেয়ে কম রিটার্ন এসেছে টেক্সটাইল খাতে। এ খাতে ৪.৭৫ শতাংশ রিটার্ন কম এসেছে। এছাড়া কাগজ শিল্প, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, চামড়া শিল্প, সাধারণ বীমা, টেলিকম ও আইটি খাতেও রিটার্ন ছিল নেতিবাচক।
সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ারে। সারা সপ্তাহে কোম্পানিটির মোট ২৪ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। শেয়ারের দামও বেড়েছে ৫.১০ শতাংশ।
ব্লক মার্কেটে সপ্তাহজুড়ে সবচেয়ে বেশি শেয়ার বিক্রি করেছে ব্যাংক এশিয়া। কোম্পানিটি এক সপ্তাহে মোট ১৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
আরও পড়ুন: সপ্তাহের শেষ দিনে ঢাকার পুঁজিবাজারে উত্থান, চট্টগ্রামে পতন
চট্টগ্রামের হালচাল
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। পুরো সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
সূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনেও ভাটা পড়েছে চট্টগ্রামের বাজারে। ছুটির আগের সপ্তাহে যেখানে চট্টগ্রামের বাজারে মোট লেনদেন হয়েছিল ৫০ কোটি টাকা, গত সপ্তাহে এসে তা কমে হয়েছে ৪৩ কোটি টাকা।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩১৮ কোম্পানির মধ্যে দাম কমেছে ১৬৫টি কোম্পানির। অন্যদিকে দর বেড়েছে ১৩১টি কোম্পানির এবং দাম অপরিবর্তিত ছিল ২২ কোম্পানির।
চট্টগ্রামের বাজারে শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় আছে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ টাকা।
অন্যদিকে, এই বাজারে তলানিতে আছে রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেড। এক সপ্তাহে ‘জেড’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটির দাম কমেছে ১৮.৫১ টাকা।
লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের সাপ্তাহিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, একদিকে ট্রাম্পের শুল্কনীতিতে এশিয়ার শেয়ারবাজারে ধস, অন্যদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পূর্বাভাস—পুরোটাই দেশের পুঁজিবাজারে কম-বেশি প্রভাব ফেলেছে।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বৃদ্ধি
তবে বর্তমানে দেশের অর্থনীতি কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ায় এবং সিংহভাগ দেশের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের শুল্কনীতি প্রশমনের সিদ্ধান্তের পর আগামী সপ্তাহ দেশের পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা নিয়ে আসতে পারে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
১ দিন আগে
বিদেশি বিনিয়োগে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থাকছে না: নাহিয়ান রহমান
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) ব্যবসা উন্নয়ন (বিজনেস ডেভেলপমেন্ট) প্রধান নাহিয়ান রহমান বলেছেন, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এসে যে পাঁচটি সমস্যার কথা বলেন, তার একটি হচ্ছে বাংলাদেশ রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ঝামেলা। সরকার সেগুলো কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। এছাড়া সিদ্ধান্তগুলো অনেক বেশি কেন্দ্রীভূত ও সহজ হওয়ায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতাও থাকছে না।
বিনিয়োগ সম্মেলনের চতুর্থ দিন বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সম্মেলনে এনবিআরের হয়রানি নিয়ে কথা ওঠে। সে বিষয়ে জানতে চাইলে নাহিয়ান বলেন, ‘বিডা থেকে যখন দুই শতাধিক বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কথা বলি, তখন তাদের মূল পাঁচটি সমস্যার একটি ছিল এনবিআরসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে জিনিসপত্র বের করতে যে অনেক সময় লাগে বা ঝামেলায় পড়তে হয়, সেটি।’
‘কীভাবে আমরা এই জিনিসটা আরও সহজ করতে পারি, সেটি এখন আমাদের অগ্রাধিকার এজেন্ডা। আর আমরা এখন গ্রিন চ্যানেল বা অথরাইজড ইকনোমিক অপারেটর চালু করেছি; আমাদের সিঙ্গেল উইন্ডো চালু হয়েছে। সুতরাং এনবিআরের পক্ষ থেকে এই জিনিসগুলো কীভাবে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া যায়, সেই চেষ্টা চলছে।’
সম্মেলনে এদিন তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল অধিবেশনে মূল বক্তব্য রাখেন ইয়ংওয়ান করপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা কিহাক সাং।
বাংলাদেশের চেয়ে ভিয়েতনামে শ্রমিকের ক্ষেত্রে ত্রিশ শতাংশ বেশি খরচ হওয়ার পরও সেখানে তাদের লাভ বেশি হচ্ছে। তাদের মতে, বাংলাদেশের শ্রমিকদের উৎপাদনক্ষমতা কম। এটি নিয়ে আপনারা কী ভাবছেন—প্রশ্নে নাহিয়ান বলেন, ‘কিহাক সাংয়ের অভিযোগটিকে আমরা ভ্যালিড (বৈধ) বলে মনে করি। কিন্তু ভিয়েতনামে যে পণ্য তিনি বানান, সেগুলো মোর ভ্যালু অ্যাডেড গার্মেন্টস ও সিনথেটিক গার্মেন্টস। এজন্য সেখানে খরচ বেশি পড়লেও লাভ পুষিয়ে নিতে পারেন।’
‘আমাদের এখানে তাদের ব্যবসায়ের পুরোনো দিনের কিছু সমস্যা ছিল। সে কারণে সেই সমস্যার সমাধানের আগে নতুন করে সিনথেটিক বা হাইভ্যালু গার্মেন্টসে বিনিয়োগ করতে পারতেন না। কিন্তু কেইপিজেডে নতুন করে একটি সিনথেটিক লাইন খুলেছেন। ওখানে এখন তারা হাইভ্যালু গার্মেন্টস উৎপাদন করছেন। যেটি অবশ্যই লাভজনক হবে।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল চীনের হান্ডার সঙ্গে একটি সমঝোতায় স্বাক্ষর করা হয়েছে। সেখানে তাদের বড় একটি বিনিয়োগ ছিল এই সিনথেটিক গার্মেন্টেসের ওপর। আমরা যদি এভাবে আরও দুয়েকটি হাইভ্যালু অ্যাংকর ইনভেস্টমেন্ট পাই, তখন ভ্যালু অ্যাডেড গার্মেন্টসে আরও বেশি বিনিয়োগ পাওয়া শুরু করব।’
বাংলাদেশের আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে অনেক সময় বিনিয়োগকারীরা পিছিয়ে যান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এবার বিনিয়োগকারীরা এসে দেখেছেন যে, এ বিষয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। আগে ৭০ জনের মতো মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী থাকায় তাদের অনুমোদন পেতে কষ্ট হতো, এখন হাতেগোনা মাত্র কয়েকজন—২৫ থেকে ২৬ জন উপদেষ্টা আছেন। এখন সিদ্ধান্তগুলোও অনেক বেশি সেন্ট্রালাইড (কেন্দ্রীভূত) ও সহজ হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা নিজেরাও তা বলেছেন। তবে আমাদের আরও অনেকদূর যেতে হবে।’
এই সম্মেলনে কতগুলো দেশ থেকে কী পরিমাণ বিনিয়োগ পেলাম—প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত গতকাল আমরা যে কয়েকটি হাইভ্যালু সমঝোতায় সই করেছি, তার মধ্যে হান্ডার ১৫০ মিলিয়ন ডলার, যেটা এই সম্মেলনেই সই হয়েছে। তার আগে গতকাল সকালে জানলাম, ১১০ কোটি টাকার বিনিয়োগ পেয়েছে স্টার্টআপ কোম্পানি শপআপ। কোনো কিছু আসলে একদিনে হয় না, অনেক দিনের কাজের ফল এগুলো।’
কী পরিমাণ বিদেশি এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন—প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সম্মেলনের বিভিন্ন অংশে আমরা ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০’র মতো বিদেশি অংশগ্রহণকারী পেয়েছি। তবে একই কোম্পানি থেকেও দুজন করে এসেছেন।’
এবারের বিনিয়োগ সম্মেলনে বেসরকারি খাতকেও মোবিলাইজ করার চেষ্টা করা হয়েছে জানিয়ে নাহিয়ান রহমান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) দিক থেকেও অনেক তৎপরতা ছিল। আমরা কেবল একটি প্রতিষ্ঠানের দিক থেকে সবকিছু না করে সবাইকে নিয়ে কীভাবে বিনিয়োগের পাইপলাইনটিকে সামনে এগিয়ে নেওয়া যায়, সেটিই ছিল আজকের অন্যতম লক্ষ্য।’
এ সময়ে বিডার নির্বাহী সদস্য শাহ মোহাম্মদ মাহবুব ও প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
৩ দিন আগে
অবশেষে ঢাকার পুঁজিবাজারে উত্থান, ঈদের পর সর্বোচ্চ লেনদেন
টানা তিনদিন পতনের পর সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে। পাশাপাশি ঈদের পর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ঢাকার বাজারে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বুধবার (৯ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসসিএস ২ পয়েন্ট বাড়লেও ব্লু-চিপ ডিএস-৩০ কমেছে ২ পয়েন্ট।
তবে সূচক বাড়লেও ঢাকার বাজারে দাম কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে ১৪৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ১৯৩ কোম্পানি এবং ৫৮ কোম্পানির দর অপরিবর্তিত আছে।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড-তিন ক্যাটাগরিতেই বেশিরভাগ কোম্পানির দাম ছিল নিম্নমুখী।
গতদিন পতনের মধ্যেও মিউচুয়াল ফান্ড ভালো করলেও, এদিন সুবিধা করতে পারেনি এ খাত। ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। দর কমেছে ২৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসই ব্লক মার্কেটে ২৭ কোম্পানির ২২ কোটি ৯৯ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে লাভেলো আইসক্রিম সর্বোচ্চ ৪ কোটি টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
বুধবার ডিএসইতে মোট ৫২৭ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা ঈদের ছুটির পর সর্বোচ্চ। ৪১৫ কোটি টাকা লেনদেন দিয়ে সপ্তাহ শুরু করে চতুর্থ কার্যদিবসে বাজার লেনদেনের প্রবৃদ্ধি ১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
সারাদিনের লেনদেনে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে কনফিডেন্স সিমেন্ট। সকালে শেয়ারপ্রতি ৫০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে হয়েছে ৫৫ টাকা দরে।
অন্যদিকে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে বিচ হ্যাচারি। শেয়ারপ্রতি ৯৮.৮০ টাকায় লেনদেন শুরু করে সারাদিনে দাম কমে সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৮৯ টাকায়।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বৃদ্ধি
চট্টগ্রামে পতন
ডিএসইতে প্রধান সূচক বাড়লেও সুবিধা করতে পারেনি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। লেনদেন শেষে সিএসই'র সার্বিক সূচক কমেছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেয়া ২১৯ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। ৮৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৩১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সূচক হারালেও গতদিনের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে চট্টগ্রামের বাজারে। সিএসইতে ৯ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
৯.৯৬ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে কে&কিউ (KAY&QUE), অন্যদিকে ১০ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে ডেলটা স্পিন।
৫ দিন আগে
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বৃদ্ধি
পুঁজিবাজারে ব্যাংক বিনিয়োগের ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ সিদ্ধান্তে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরকে ধন্যবাদ জানিয়েছে শেয়ারবাজারের স্টক ব্রোকারদের সংগঠন ঢাকা ষ্টক এক্সচেঞ্জ ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)।
বুধবার (৯ এপ্রিল) ডিবিএ থেকে পাঠানো এক বার্তায় সংগঠনটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
সাইফুল বলেন, পুঁজিবাজারে তারল্য প্রবাহ বাড়াতে তফসিলি ব্যাংকের বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বৃদ্ধির অনুরোধ করে ডিবিএর পক্ষ থেকে গত ২৮ জানুয়ারী বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। গভর্নর ডিবিএ'র সুপারিশ বিবেচনায় নিয়ে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে এই বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৬ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছেন। এ সিদ্ধান্তে পুঁজিবাজার আগের থেকে আরও চাঙ্গা হবে।
এই তহবিলের যথাযথ ব্যবহার ও বিনিয়োগ বাজারের তারল্য প্রবাহ বৃ্দ্ধিতে সহায়তা করবে এবং দৈনিক শেয়ার লেনদেনে গতি এনে বাজারকে ইতিবাচক ধারায় নিয়ে যাবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করে ডিবিএ।
আরও পড়ুন: সূচকের উত্থানে চলছে পুঁজিবাজারের প্রথমার্ধ
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, "গভর্নর পুঁজিবাজারের প্রতি সর্বদা সুদৃষ্টি রাখবেন এবং এর উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি।"
এছাড়াও, ডিবিএর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি), বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।
পুঁজিবাজারের সার্বিক স্বার্থে অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসি, ডিএসইসহ বাজার সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে একযোগে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে ডিবিএ।
৫ দিন আগে
এক্সিলেন্স ইন ইনভেস্টমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেল বিকাশ
দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বিদেশি বিনিয়োগ ক্যাটাগরিতে এক্সিলেন্স ইন ইনভেস্টমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ। বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বিকাশসহ আরও তিনটি প্রতিষ্ঠানকে পুরষ্কৃত করা হয়েছে এ সম্মেলনে। এরমধ্যে ইনোভেশন ক্যাটাগরিতে ফেব্রিক লাগবে লিমিটেড, বিদেশি বিনিয়োগ ক্যাটাগরিতে ওয়ালটন ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এই অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সম্মানসূচক নাগরিকত্ব পেলেন ইয়াংওয়ানের চেয়ারম্যান
বিদেশি বিনিয়োগ এনে দেশের অর্থনীতিতে টেকসই প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উদ্ভাবন ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে নিরন্তর কাজ করে যাওয়ার স্বীকৃতিস্বরূপ বিকাশকে এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার থেকে এই সম্মাননা গ্রহণ করেন বিকাশের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ও প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।
ব্র্যাক ব্যাংক, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মানি ইন মোশন এলএলসি, বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের অন্তর্গত ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন, চায়নার আলীবাবা গ্রুপের অ্যান্ট ইন্টারন্যাশনাল ও জাপানের সফটব্যাংক ভিশন ফান্ডের যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান।
২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ন্ত্রিত পেমেন্ট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল আর্থিক সেবা দিয়ে আসছে বিকাশ।
৫ দিন আগে
বাংলাদেশের সম্মানসূচক নাগরিকত্ব পেলেন ইয়াংওয়ানের চেয়ারম্যান
দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাংকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশের শিল্প ও অর্থনীতির বিকাশে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরুপ তাকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর সিটি হোটেলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনে কিহাককে নাগরিকত্ব সনদ তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় কিহাকসহ মোট পাঁচ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
এর আগে, গত শতাব্দীর মাঝামাঝিতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসেছিলেন কিহাক। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত (আরএমজি) ও টেক্সটাইল খাতের বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।
এই খাতগুলোতে প্রথমবারের মতো বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে তাকে অনুসরণ করে অনেক কোরিয়ান বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করেন।
আরও পড়ুন: ফিনল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান
তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে ইয়াংওয়ান করপোরেশনের পাশাপাশি অন্যান্য কোম্পানিও চট্রগ্রাম ইপিজেড, ঢাকা ইপিজেড ও কোরিয়ান ইপিজেডে বিনিয়োগ করে। ফলে দেশের অর্থনীতিতে সুবাতাস বইতে শুরু করে। সক্রিয় হয়ে ওঠে অর্থনৈতিক অঞ্চল বা ইপিজেডগুলো।
এই সম্মাননা পেয়ে কিহাক বলেন, ‘সম্মানসূচক নাগরিকত্ব পেয়ে আমি খুবই সম্মানিত বোধ করছি। এছাড়াও বিনিয়োগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য ফেব্রিক লাগবে কোম্পানি, ওয়াল্টন, বিকাশ ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসকে ‘এক্সিলেন্স ইন ইনভেস্টমেন্ট’ পুরস্কার তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ সময় বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ প্রসঙ্গে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মতামত জানতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা তুলে ধরে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যদূত ব্যারোনেস রোজি, ইন্ডিটেক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অস্কার গার্সিয়া মাসিরাস ও অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মনজুর।
পুরস্কার ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, বাংলাদেশের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যানসহ অনেকে।
৫ দিন আগে
কোনোভাবেই পতন থামছে না পুঁজিবাজারে
ঈদের ছুটির পর নতুন উদ্যোমে লেনদেন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ঘটেছে ঠিক বিপরীত। টানা তিন কার্যদিবসে সূচকের পতন হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসইএস ১ পয়েন্ট বাড়লেও ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৫ পয়েন্ট।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩৯৭ কোম্পানির বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ১৪৯ কোম্পানির শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীত দর কমেছে ১৯৪ কোম্পানির, অপরিবর্তিত আছে ৫৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে বি এবং জেড ক্যাটাগরিতে বেশিরভাগ কোম্পানির দাম কমলেও, দরবৃদ্ধির তালিকায় এগিয়ে আছে এ ক্যাটাগরি। এই ক্যাটাগরিভুক্ত ২১৯ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১০০ কোম্পানির, কমেছে ৯৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনে গতদিন মুখ থুবড়ে পড়লেও ভালো অবস্থানে উঠে এসেছে মিউচুয়াল ফান্ড। ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২৯ কোম্পানির দাম বেড়েছে। দাম কমেছে ৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে ২৭ কোম্পানির ১৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে, যার মধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচক কমলেও টানা তিনদিনই লেনদেন বেড়েছে ডিএসইতে। সারাদিনে মোট ৪৮৩ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৪৬৯ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: উত্থানে শুরু হলেও পতনে শেষ পুঁজিবাজারের লেনদেন
৯.৯৩ শতাংশ দাম বেড়ে দিনের শীর্ষ কোম্পানিতে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ ল্যাম্পস পিএলসি। ১১৯.৩০ টাকায় লেনদেন শুরু করে দিন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম দাঁড়ায় ১৩০.৬০ টাকা। অন্যদিকে ৭.৯৪ শতাংশ দাম হারিয়ে ঢাকার বাজারে তলানিতে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স। ২৫.২০ টাকা শেয়ারপ্রতি লেনদেন শুরু করে দিন শেষে দর নেমেছে ২৩.২০ টাকায়।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও পতন হয়েছে সূচকের। সারাদিনের লেনদেনে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ২৮ পয়েন্ট।
সূচক কমার পাশাপাশি সিএসইতে দর নেমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ২৩৮ কোম্পানির মধ্যে ৯২ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ১১২ কোম্পানি। ৩২ কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
পতনের ধারায় লেনদেনও কমেছে সিএসইতে। সারাদিনে ৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে যা গতদিন ছিল ১০ কোটি ১১ লাখ টাকা।
সিএসইতে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ১০ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে এইচ.আর. টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড।
৫ দিন আগে
উত্থানে শুরু হলেও পতনে শেষ পুঁজিবাজারের লেনদেন
ঈদের পর খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না দেশের পুঁজিবাজার। দ্বিতীয় কার্যদিবসে উত্থান দিয়ে লেনদেন শুরু হলেও শেষমেশ পতন ঠেকাতে পারলো না ঢাকার বাজার। চট্টগ্রামে সূচকের উত্থান হয়েছে যৎসামান্য।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সোমবার (৭ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৮ পয়েন্ট। শরীয়া ভিত্তিক সূচক ডিএসইএস কমেছে ১ পয়েন্ট।
অন্যদিকে বাছাইকৃত ভালো কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৯৮ কোম্পানি, যার মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৯১ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই বেশিরভাগ কোম্পানির দাম ছিল নিম্নমুখী।
প্রথম কার্যদিবসে মিউচুয়াল ফান্ডে ভালো অবস্থানে থাকলেও দ্বিতীয়দিনে এসে মুখ থুবড়ে পড়েছে এ খাত। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৫ কোম্পানির দাম বাড়লেও কমেছে ২২ কোম্পানির শেয়ারের দাম। অপরিবর্তিত আছে ৯ কোম্পানির দাম।
ব্লক মার্কেটে মোট ২৩ কোম্পানির ১৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে রেনেটা পিএলসি সর্বোচ্চ ৭ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচক হারালেও গতদিনের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ডিএসইতে; মোট ৪৬৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা রোববার (৬ এপ্রিল) ছিল ৪১৫ কোটি টাকা।
ডিএসইতে ৮.১৬ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছে মিডাস ফাইন্যান্সিং পিএলসি। অন্যদিকে ৭.৫১ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে এস আলম কোল্ড রোলড স্টিলস লিমিটেড।
আরও পড়ুন: উত্থান দিয়ে শুরু ঢাকা-চট্টগ্রাম পুঁজিবাজারের লেনদেন
চট্টগ্রামে সামান্য উত্থান
ঢাকার বাজারে সূচকের পতন হলেও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ২ পয়েন্ট। সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২১০ কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের।
৮৭ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দরপতন হয়েছে ৯৭ কোম্পানির এবং দাম অপরিবর্তিত আছে ২৬ কোম্পানির শেয়ারের।
গত দিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে চট্টগ্রামের বিপরীতে। সারাদিনে মোট ১০ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে যা রোববার ছিল ১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে শমরিতা হাসপাতাল লিমিটেড। অন্যদিকে ১০ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলস লিমিটেড।
৭ দিন আগে
রেমিট্যান্সে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ, মার্চে ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার
চলতি বছর মার্চে রেমিট্যান্সে বিগত সব রেকর্ড ভাঙবে বাংলাদেশ এমন ধারণা আগেই করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক; হলোও তাই। পুরো মার্চজুড়ে ৩.২৯ বিলিয়ন রেমিট্যান্স এসেছে যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খানের দেয়া তথ্যানুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এ বছর মার্চে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে ৬৪.৭০ শতাংশ। ২০২৪ সালের মার্চে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ১.৯৯ বিলিয়ন ডলার।
মার্চের আগে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ২.৬৪ বিলিয়ন ডলার, যা এতদিন ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ ২.৬৪ বিলিয়ন রেমিট্যান্স এসেছিল।
আরও পড়ুন: মার্চের ১৯ দিনে ২২৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স, নতুন রেকর্ডের সম্ভাবনা
চলতি বছর প্রতি মাসে রেমিট্যান্সের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে, ফেব্রুয়ারির আগে জানুয়ারিতে আসা মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২.১৮ বিলিয়ন ডলার।
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে প্রবাসীরা এবার প্রচুর পরিমাণে অর্থ বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন। শুধু ২৭-৩১ মার্চ এ সময়ের মধ্যেই রেমিট্যান্স এসেছে ৩৪৫ মিলিয়ন ডলার। বৈধ চ্যানেলে অর্থ প্রেরণের কারণেই এবার রেমিট্যান্সে ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ।
৮ দিন আগে