অন্যান্য
চীনে স্কলারশিপ ২০২৫: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিনা খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ
প্রতিবারের ন্যায় ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষেও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিচ্ছে চীন সরকার। দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো মেধাবীদের জন্য স্কলারশিপের ব্যবস্থা রেখেছে। এগুলোর আওতায় টিউশন ফি মওকুফসহ আবাসন, চিকিৎসা সুবিধা এবং মাসিক ভাতারও সুবিধা রয়েছে। এশিয়ার দেশটিতে অধ্যয়নের এমন সুবর্ণ সুযোগ বাংলাদেশি মেধাবীদের জন্যও অফুরন্ত সম্ভাবনার নামান্তর। চলুন, চীনের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি স্কলারশিপের ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেই।
২০২৫ সালে চীনের উচ্চশিক্ষায় শীর্ষ ১০টি স্কলারশিপ
.
সিএসসি স্কলারশিপ (CSC Scholarship)
এই বৃত্তি প্রকল্পটির পূর্ণরূপ Chinese Scholarship Council। এর মাধ্যমে বিদেশি শিক্ষার্থীরা চীনের ২৮০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক, মাস্টার্স এবং পিএইচডি অধ্যয়নের সুযোগ পান। চীনা সরকার এই স্কলারশিপের অধীনে শিক্ষার্থীদের আবাসন ও মৌলিক স্বাস্থ্য বীমা প্রদান করে থাকে। প্রদেয় মাসিক ভাতার পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫০০ চাইনিজ ইউয়ান, যা বাংলাদেশি টাকায় ৫৮ হাজার ৬৪৫ টাকার (১ চাইনিজ ইউয়ান = ১৬ দশমিক ৭৬ বাংলাদেশি টাকা) সমতূল্য।
ইতোমধ্যে যে শিক্ষার্থীরা চীনের কোনও বৃত্তি পেয়েছে তাদের জন্য CSC Scholarship প্রযোজ্য নয়।
এর আবেদনের জন্য নিবন্ধন করতে হবে সিএসসি পোর্টালে-(https://studyinchina.csc.edu.cn/?S8cMF5lUCwGD=1742626962725#/register)। অতঃপর যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ইচ্ছুক সেখানে পৃথকভাবে আবেদন জমা দিতে হবে।
আরো পড়ুন: নিউজিল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
তিয়াঞ্জিন গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ (Tianjin Government Scholarship)
একক ভাবে নান্কাই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীদেরকে দেয়া হয় তিয়াঞ্জিন গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ। স্নাতক, মাস্টার্স ও পিএইচডি লেভেলের জন্য উন্মুক্ত এই প্রকল্পে মাসিক সর্বোচ্চ ২ হাজার ইউয়ান (৩৩ হাজার ৫১১ টাকা) পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
আবেদনের শেষ সময় সাধারণত মে মাসের শেষের দিকে হয়ে থাকে। আবেদনকারীদেরকে https://tju.at0086.cn/StuApplication/Login.aspx লিঙ্কের মাধ্যমে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে। নান্কাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চূড়ান্ত অনুমোদনই শিক্ষার্থীদের Tianjin Government Scholarship প্রাপ্তির প্রধান মাপকাঠি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে- https://sie.tju.edu.cn/en/jxj/tjszfjxj/ লিঙ্কে।
সাংহাই গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ (Shanghai Government Scholarship)
চীনের প্রাদেশিক সরকার কর্তৃক পরিচালিত অনুদানগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে এই সাংহাই গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ। পিএইচডি, মাস্টার্স, এবং নূন্যতম স্নাতকের ক্ষেত্রে প্রদানকৃত এই অনুদান তিনটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত। টাইপ এ (মাস্টার্স বা পিএইচডি), টাইপ বি (স্নাতক), এবং টাইপ সি (দীর্ঘমেয়াদী উচ্চতর অধ্যয়ন, যেমন চীনা ভাষা কোর্স)।
সাংহাই সরকার এগুলোর মধ্যে দুই ক্যাটাগরিতে স্কলারশিপ প্রদান করে। টাইপ এ’তে ফুল ফান্ডিং দেয় (ভর্তি ফি, আবাসন, চিকিৎসা বীমা এবং মাসিক ভাতা প্রদান) এবং টাইপ বি’তে আংশিক ফান্ডিং (শুধুমাত্র টিউশন ফি ও স্বাস্থ্য বীমা।
আরো পড়ুন: জাপানে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
Shanghai Government Scholarship চীনা ভাষা কোর্সের মতো দীর্ঘমেয়াদী কোনও অধ্যয়নের জন্য প্রযোজ্য নয়।
ডিগ্রী বিশেষে স্কলারশিপের মূল্যমান ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ ইউয়ান (৪১ হাজার ৮৮৯ থেকে ৫৮ হাজার ৬৪৫ টাকা) পর্যন্ত।
আবেদনের সাধারণ সময় জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত এবং আবেদনের প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে- https://www.study-shanghai.cn/c.asp?action=AS_SS_Entry।
বেইজিং গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ (Beijing Government Scholarship)
চীনের প্রাদেশিক সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত প্রথম স্কলারশিপ কর্মসূচি হচ্ছে এটি। সরাসরি বেইজিং সরকার থেকে হওয়া এই অর্থায়নের একমাত্র সুবিধাভোগী হচ্ছে পিএইচডি, মাস্টার্স ও স্নাতক শিক্ষার্থীরা।
স্কলারশিপের আওতায় প্রদেয় আর্থিক সহায়তার পরিমাণ সর্বোচ্চ ৪০ হাজার ইউয়ান (৬ লাখ ৭০ হাজার ২২৬ টাকা)। সাধারণত প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে জুনের মধ্যে আবেদন কার্যক্রম শেষ করা হয়।
আরো পড়ুন: সুইডেনে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
Beijing Government Scholarship প্রদানকারী সুনির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকা পাওয়া যাবে- https://english.beijing.gov.cn/studyinginbeijing/choices/-লিঙ্কে। এখান থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের পর তৎসংলগ্ন ওয়েবসাইটেই পাওয়া যাবে আবেদনের প্রক্রিয়া।
হুবেই গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ (Hubei Government Scholarship)
এই স্কলারশিপটিও স্নাতক, মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য। স্নাতক শিক্ষার্থীরা বছরে ১০ হাজার ইউয়ান (১ লাখ ৬৭ হাজার ৫৫৬ টাকা) এবং মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা ১৫ হাজার ইউয়ান (২ লাখ ৫১ হাজার ২৩৫ টাকা)। পিএইচডি শিক্ষার্থীরা পান ২০ হাজার ইউয়ান (৩ লাখ ৩৫ হাজার ১১৩ টাকা)। সাধারণ গবেষণা স্কলারশিপ হিসেবে বিভিন্ন মেয়াদের ভিত্তিতে ৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার ইউয়ান (৮৩ হাজার ৭৭৮ থেকে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ১১৩ টাকা) প্রদান করা হয়ে থাকে।
স্কলারশিপের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হয় প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে। আবেদনের জন্য Hubei Government Scholarship প্রদানকারী বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করার পর সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে যেতে হবে।
আরো পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
সিআইএস স্কলারশিপ (CIS Scholarship)
শিক্ষা খাতে এই সরকারি প্রকল্পটির পূর্ণরূপ Confucius Institute Scholarship। এর আওতাভূক্ত প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে- চীনের বাইরের শিক্ষার্থীদের জন্য পিএইচডি গবেষণা, গবেষণামূলক সফর, আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ, এবং চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি কোর্স। ১৫০টিরও বেশি চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই আর্থিক সুবিধা গ্রহণের ব্যবস্থা রয়েছে।
CIS Scholarship-এ টিউশন ফি, আবাসন ব্যয়, চিকিৎসা বীমা এবং মাসিক ভাতা অন্তর্ভূক্ত। স্নাতক বা চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি কোর্স গ্রহণকারীরা মাসিক ২ হাজার ৫০০ ইউয়ান (৪১ হাজার ৮৮৯ টাকা) পেয়ে থাকেন। মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে মাসিক ৩ হাজার ইউয়ান (৫০ হাজার ২৬৭ টাকা)।
সাধারণত মে এবং নভেম্বর মাসের শুরুর দিকে দুটো পৃথক শিডিউলে আবেদন গ্রহণ করা হয়। অনলাইন আবেদনের সাইট: http://www.chinese.cn/page/#/pcpage/project_detail।
ইউনান প্রোভিন্সিয়াল গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ (Yunnan Provincial Government Scholarship)
বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের অধীনে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই স্কলারশিপ। এর নেপথ্যের প্রতিষ্ঠান হচ্ছে সিএসসি। এই ব্যবস্থায় স্নাতক, মাস্টার্স, ডক্টরেট, প্রশিক্ষণ ও স্বল্পমেয়াদী কোর্সের জন্য আবেদন করা যায়।
আরো পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
ফুল ফান্ডিং-এর এই প্রকল্পে রয়েছে টিউশন ফি মওকুফ, বিনামূল্যে অন-ক্যাম্পাস আবাসন, মাসিক ভাতা এবং চিকিৎসা বীমা ও সুরক্ষা সুবিধা। সাধারণত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলে আবেদন গ্রহণ কর্মসূচী।
Yunnan Provincial Government Scholarship-এ আবেদনের প্ল্যাটফর্ম ইউনান নরমাল ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাই; http://ynnu.at0086.cn/student।
জিঞ্জিয়াং উইঘুর অটোনমাস রেজিন গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ (Xinjiang Uygur Autonomous Region Government Scholarship)
স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সরকার পরিচালিত এই বৃত্তি প্রকল্পে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডির পাশাপাশি চীনা ভাষা কোর্সও বিনা খরচে অধ্যয়ন করা যায়। পূর্ণ অর্থায়নের এই সুবিধায় জীবনযাত্রার ভাতা, আবাসন, চিকিৎসা বীমা ও টিউশন ফি অন্তর্ভূক্ত।
সাধারণত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ থাকে। স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটির অধীনে নির্ধারিত কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো বিষয়ের জন্য এই আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। এই তথ্যসহ স্কলারশিপের যাবতীয় কার্যক্রমের জন্য রয়েছে স্বতন্ত্র স্কলারশিপ ম্যানেজমেন্ট ইন্ফরমেশন সিস্টেম।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, পড়াশোনার খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
এই সিস্টেম (http://studyinchina.csc.edu.cn/#/register) Xinjiang Uygur Autonomous Region Government Scholarship-এর আবেদনের জন্য নিবেদিত প্ল্যাটফর্ম। একই ভাবে আবেদন জমা দিতে হয় জিঞ্জিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (http://xju.at0086.cn/StuApplication/Login.aspx)।
নাঞ্জিং গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ (Nanjing Government Scholarship)
এই সরকারি স্কলারশিপটি বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্নাতক ও মাস্টার্স পর্যায়ে আংশিক ফান্ডিং দেয়। এর পাশাপাশি অন্য কোনো সংস্থার বৃত্তি একত্রে গ্রহণ করার নিয়ম নেই।
Nanjing Government Scholarship শুধুমাত্র নাঞ্জিং ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে দেয়া হয়। স্নাতক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতি একাডেমিক বছরে সরকার থেকে আসে ১০ হাজার ইউয়ান (১ লাখ ৬৭ হাজার ৫৫৬ টাকা)। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অতিরিক্ত সহায়তা হিসেবে আসে ৫ হাজার ইউয়ান (৮৩ হাজার ৭৭৮ টাকা)।
মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি বছর ২০ হাজার ইউয়ান (৩ লাখ ৩৫ হাজার ১১৩ টাকা) করে পান। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শুধু জীবনযাত্রার ব্যয়টা মওকুফ করে।
আরো পড়ুন: ইতালিতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
আবেদন কার্যক্রম অব্যাহত থাকে সাধারণত এপ্রিল মাসের মধ্যভাগ পর্যন্ত। প্রার্থীদের আবেদন গ্রহণ করা হয় https://nuist.17gz.org/member/login.do ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। এ সময় প্রোগ্রাম হিসেবে নির্বাচন করতে হয় ‘চাইনিজ লোকাল গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ’।
ইয়াংঝৌ ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ (Yangzhou University Scholarship)
এই বৃত্তির ম্যাধমে ইয়াংজৌ ইউনিভার্সিটি তাদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া বৈশ্বিক ছাত্রছাত্রীদের পূর্ণ অর্থায়ন নিশ্চিত করে। একাডেমিক ডিগ্রীগুলোর মধ্যে রয়েছে স্নাতক, মাস্টার্স এবং পিএইচডি। এই প্রকল্পের মধ্যে সুবিধা হিসেবে রয়েছে টিউশন ফি মওকুফ, আবাসন ও মাসিক ভাতা।
প্রার্থীদের জানুয়ারি থেকে মে মাসের মাঝামাঝিতেই শেষ করতে হয় যাবতীয় আবেদন প্রক্রিয়া।
Yangzhou University Scholarship-এ স্নাতক পর্যায়ে শুধুমাত্র আবাসনের ব্যয় ও টিউশন ফি মওকুফ করা হয়। মাস্টার্সে টিউশন ও আবাসন ব্যয় ছাড়াও রয়েছে প্রতি মাসে ১ হাজার ৫০০ ইউয়ান (২৫ হাজার ১৩৩ টাকা) করে জীবিকা ভাতা। এটি চলে ১০ মাস পর্যন্ত।
আরো পড়ুন: রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্কলারশিপসহ ও আনুষঙ্গিক খরচ
পিএইচডিতে টিউশন ও আবাসন ব্যয়ের পাশাপাশি গবেষকরা মাসে ২ হাজার ৫০০ ইউয়ান (৪১ হাজার ৮৮৯ টাকা) পর্যন্ত জীবিকা ভাতা পেয়ে থাকেন। এর স্থায়ীত্বকাল ১০ মাস পর্যন্ত।
পূর্ণ আবেদন সম্পন্ন করার জন্য প্রার্থীদের যেতে হবে-https://yzu.at0086.cn/StuApplication/Login.aspx ওয়েবসাইটে।
পরিশিষ্ট
এই ১০টি চায়না স্কলারশিপ চীনের শিক্ষা খাতে দেশটির সরকারের অবদানকে অর্থবহ করে তুলেছে। বৃত্তি প্রকল্পগুলোর প্রত্যেকটিই ব্যাচেলর থেকে শুরু করে পিএইচডি পর্যন্ত সকল পর্যায়ের মেধাবীদের জন্য প্রযোজ্য।
তন্মধ্যে সরাসরি প্রধান সরকারি প্রকল্পভূক্ত হচ্ছে সিএসসি এবং সিআইএস স্কলারশিপ। তিয়াঞ্জিন, শাংহাই, বেইজিং, হুবেই, ইউনান প্রভিন্সিয়াল, জিঞ্জিয়াং উইঘুর অটোনমাস রেজিন এবং নাঞ্জিং গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপগুলো পরিচালিত হয় প্রাদেশিক সরকারের অধীনে। তালিকার একমাত্র বেসরকারি উদ্যোগ হচ্ছে ইয়াংঝৌ ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ।
আরো পড়ুন: লিথুয়ানিয়ায় উচ্চশিক্ষা: ভর্তি, ভিসা, অধ্যয়ন খরচ ও স্কলারশিপসহ নানাবিধ সুবিধা
সর্বসাকূল্যে, এই চাইনিজ স্কলারশিপগুলোর যে কোনওটি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা গ্রহণের পথে উৎকৃষ্ট বাহক।
২৮ দিন আগে
নারীদের জন্য মার্শাল আর্ট: ঢাকার কোথায় শিখবেন কুংফু, জুডো, বা কারাতে
আত্মরক্ষার সক্ষমতা শারীরিক সুরক্ষার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাস ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করে। তাই সমসাময়িক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নারীদের জন্য আত্মরক্ষার কৌশল শেখা অপরিহার্য। এই প্রশিক্ষণ তাদেরকে প্রতিদিন পথেঘাটে চলতে ফিরতে নিরপত্তার ক্ষেত্র তৈরি করবে। ঢাকা শহরের বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে কুংফু, জুডো বা কারাতের মতো মার্শাল আর্ট শেখানো হয়। তন্মধ্যে নারীদের জন্য সুব্যবস্থা থাকা ট্রেনিং স্কুলগুলোর ব্যাপারে চলুন, বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
নারীদের মার্শাল আর্ট ও আত্মরক্ষার কৌশল শেখার জন্য ঢাকার ১০টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
.
কেও ফাইট স্টুডিও (KO Fight Studio)
বিশ্ব কারাতে সংস্থা শিনকিওকুশিঙ্কাই-এর বাংলাদেশ শাখা পরিচালিত হয় কেও (পূর্ণরূপ কারাতে অর্গানাইজেশন) ফাইট স্টুডিও নামে। এখানে জাপানের কিয়োকুশিন কারাতে স্টাইল শেখানো হয়। প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক এবং প্রধান প্রশিক্ষক শিহান আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ হোসাইন একজন ৪র্থ ড্যান (৪র্থ ডিগ্রির ব্ল্যাক বেল্টধারী)।
KO Fight Studio-এর কারিকুলামে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে মাস্টার স্ট্রাইকিং, এস্কেপ ও ডি-এস্কেলেশন দক্ষতা। এগুলোর প্রত্যেকটি বাস্তব জীবনের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কার্যকরভাবে আত্মরক্ষার জন্য সহায়ক।
প্রশিক্ষণের সময়কাল ন্যূনতম ৮ সপ্তাহ, যেখানে প্রতিটি ২ ঘণ্টা করে মোট ১৬টি ক্লাস নেওয়া হয়। ভর্তি ফি ২ হাজার টাকা এবং মাসিক ফি ৪ হাজার টাকা।
ঠিকানা: লেভেল- ৪, ভবন নং- ১৯-২০, রোড- ১১৩/এ, গুলশান (শাহাবুদ্দিন মেডিকেলের পাশে)
যোগাযোগের লিঙ্ক: https://www.facebook.com/KOFSDhaka/
আরো পড়ুন: রাতে বাসে বা গণপরিবহনে নিরাপদে ভ্রমণে কিছু সতর্কতা
চাইনিজ কুংফু ও উশু স্কুল (Chinese Kung Fu and Wushu School)
এই স্কুলের ট্রেনিং-এর মূল উপজীব্য হলো চীনের ঐতিহ্যবাহী উশু এবং কুংফু। স্টাইল দুটির আধুনিক রূপান্তরিত সংস্করণ যেমন সানশু, তাউলু, ও উইং চুন-এর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির পথ চলা শুরু হয় সিফু আব্দুল্লাহ আল মনসুরের হাত ধরে। তিনি মার্শাল আর্টের বিভিন্ন শাখায় পারদর্শী এবং এখানকার প্রধান প্রশিক্ষক।
Chinese Kung Fu and Wushu School-এ স্ট্রাইকিং, গ্র্যাপলিং, অস্ত্রশস্ত্র, এবং হাইব্রিড/মিক্সড মার্শাল আর্টস-এর ওপর তালিম দেওয়া হয়। স্ট্রাইকিং প্রশিক্ষণে রয়েছে বক্সিং, কারাতে, মুয়ে থাই, কেনপোসহ বিভিন্ন যুদ্ধশৈলী। গ্র্যাপলিং শাখায় আছে জুডো, আইকিডো, সুমো, ও রেসলিং-এর মতো কৌশল। তদুপরি, এখানকার প্রশিক্ষণার্থীরা কেন্ডো, ফেন্সিং, ইয়াইডো-সহ বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণও পেয়ে থাকেন।
প্রতিষ্ঠানটি শুধু শারীরিক শক্তি নয়, মানসিক সুস্থতা বজায় রাখা, মনঃসংযোগ বৃদ্ধি ও শৃঙ্খলাবোধ গড়ে তোলার ওপরেও জোর দেয়।
বিশেষ সুবিধা হিসেবে রয়েছে অনলাইন কুংফু লাইভ ক্লাসের ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই প্রশিক্ষণ নিতে পারেন।
প্রধান শাখাঃ ভবন-৫৮, রোড-৫, ব্লক-এফ, আফতাবনগর, বাড্ডা। এছাড়াও ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, বসুন্ধরা ও উত্তরা’তেও এর শাখা আছে।
ফেসবুক পেজ: https://www.facebook.com/wushubd
আরো পড়ুন: বাসা-বাড়িতে ডাকাতি প্রতিরোধে করণীয়
সোবহান কারাতে অ্যাকাডেমি (Sobhan Karate Academy)
এই অ্যাকাডেমিতে ৫ থেকে ৬৫ বছর পর্যন্ত সব বয়সের বয়সী প্রশিক্ষণার্থী রয়েছে। এমনকি এদের মধ্যে ৮০ শতাংশেরও বেশি হচ্ছে নারী।
সোবহান কারাতে অ্যাকাডেমি’র প্রশিক্ষণের কেন্দ্রে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় কারাতে স্টাইল শোতোকান। স্টুডেন্ট ও পেশাদার উভয়ের জন্য ভর্তি ফি ৫ হাজার টাকা। মাসিক ফি স্টুডেন্টদের জন্য ৩ হাজার টাকা, আর পেশাদারদের জন্য ৪ হাজার টাকা।
Sobhan Karate Academy-এর ৯ মাসব্যাপি বিশেষ আত্মরক্ষার কোর্স রয়েছে। এর জন্য ভর্তি ফিসহ পুরো খরচ ৪০ হাজার টাকা। এখানে প্রথম মাসে স্টুডেন্টদেরকে ১০ হাজার টাকা এবং পেশাদারদেরকে ১১ হাজার টাকা প্রদান করতে হয়।
ঠিকানা: রাশিয়ান কালচারাল সেন্টার, হাউজ নং- ৫১০, রোড ৭, ধানমন্ডি
ওয়েবসাইট লিঙ্কঃ https://www.sobhankarateacademy.com/
আরো পড়ুন: ঘরে রান্নার কাজে নিরাপদে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের উপায়
মার্শাল আর্ট বিডি (Martial Art BD)
আন্তর্জাতিক সনদপ্রাপ্ত ও দক্ষ বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পরিচালিত হয় এই প্রতিষ্ঠান। টিমের প্রধান ৪র্থ ড্যান সেন্সি নাজমুন সাহাদাৎ। তিনি জাতীয় কারাতে বিচারক ও রেফারি এবং বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত একজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক।
Martial Art BD-তে সাধারণ মার্শাল আর্টসহ বডি বিল্ডিংও শেখানো হয়। এর ফলে প্রশিক্ষণার্থীরা মল্যযুদ্ধের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে নিজেদের স্বাস্থ্যকে সমুন্নত রাখার কৌশলও রপ্ত করতে পারে।
কোর্সের শিডিউল ও ফি সংক্রান্ত বিস্তারিত আপডেট জানা যাবে তাদের ওয়েবসাইটে।
ওয়েবসাইট লিঙ্ক: https://martialartbd.com/
ঠিকানা: ১৫/জি জিগাতলা, ধানমন্ডি,(সুন্দরবন কুরিয়ার বিল্ডিং)। এছাড়াও লালমাটিয়া ও শনির আখড়াতেও তাদের শাখা রয়েছে।
আরো পড়ুন: শিশুদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে দূরে রাখতে করণীয়
হোর্ড এমএমএ এ্যান্ড মার্শাল আর্ট্স অ্যাকাডেমি (HORDE MMA & Martial Arts Academy)
৪র্থ ড্যান মার্শাল আর্টিস্ট সেন্সি কিম ইয়ানেজ প্রতিষ্ঠা করেন হোর্ড এমএমএ (পূর্ণরূপ মিক্স্ড মার্শাল আর্ট) এ্যান্ড মার্শাল আর্ট অ্যাকাডেমি। বাংলাদেশে এর শাখা রয়েছে ঢাকার উত্তরা ও বনানীতে।
প্রতিষ্ঠানটির বিশেষত্ব হলো কারাতে ও কিকবক্সিং-এর যুগান্তকারী সমন্বয়। প্রতিপক্ষকে কাবু করার বিশ্বখ্যাত গ্রাউন্ড ফাইটিং কৌশল নো-জি সাবমিশন গ্র্যাপলিং এখানে শেখানো হয়।
HORDE MMA & Martial Arts Academy’র ক্লাস সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে। কোর্স ফি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে তাদের ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করতে হবে।
লিঙ্ক: https://www.facebook.com/HordeMMA/
প্রধান শাখার ঠিকানা: বাড়ি-৩৪, সোনারগঞ্জ জনপথ, সেক্টর-১১, উত্তরা, (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে)
আরো পড়ুন: বিশ্বের শীর্ষ ১০ পুলিশ কুকুরের প্রজাতি
মার্শাল আর্ট্স স্টার্স অ্যাকাডেমি (Martial Arts Stars Academy)
জুডো ও কারাতে কেন্দ্রিক এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির প্রতিষ্ঠাকাল ১৯৯২ সাল। এর কারিকুলামে আরও অতিরিক্ত সংযোজন হিসেবে রয়েছে জু-জিৎসু এবং প্রতিরক্ষামূলক নানা অস্ত্রের ব্যবহার।
Martial Arts Stars Academy-এর প্রধান কোচ শমসের আলম একজন জাতীয় রেফারি। বাংলাদেশ জুডো ও কারাতে উভয় ফেডারেশনের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে।
সাধারণত দুটি ব্যাচে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে- একটি শুরু হয় সকাল ৬টা থেকে, আরেকটি বিকেল সাড়ে ৪ টা থেকে।
ঠিকানা: বাড়ি-১৩ রোড-১৪ ব্লক-ডি সেকশন-৬ মিরপুর। অনুশীলনের স্থান: শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়াম, মিরপুর
কোর্স ফি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যের জন্য রয়েছে তাদের ফেসবুক পেজ।
পেজের লিঙ্ক: https://www.facebook.com/p/Martial-Arts-Stars-Academy-100062993752856/
আরো পড়ুন: নারীর নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষায় মোবাইল অ্যাপ
জ্যাকি মার্শাল আর্ট অ্যাকাডেমি (Jacky Martial Art Academy)
১৯৯০ সালে গঠিত হওয়া পুরনো এই অ্যাকাডেমিটির প্রতিষ্ঠাতা কামাল উদ্দিন জ্যাকি। কোরিয়ায় স্বর্ণপদক জয়ী এবং জাপানে কারাতের উচ্চতর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জ্যাকি ৭ম ড্যানের একজন মার্শাল আর্টিস্ট। Jacky Martial Art Academy-এর প্রধান প্রশিক্ষক তিনি নিজে।
এখানে দীর্ঘ দুই বছরব্যাপি ব্ল্যাক বেল্ট কোর্স করানো হয়। এই কোর্সে রয়েছে কারাতে, কুংফু, জুডো, তাইকোয়ান্দো, চেইন স্টিক এবং লং স্টিক। কোর্স ফি প্রতি মাসে এক হাজার টাকা।
শুক্রবার ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মেয়েদের জন্য আলাদা ব্যাচ রয়েছে।
ঠিকানা: চন্দন কোঠা সেন্টার, শহীদ ফারুক সড়ক, নবী নগর, পশ্চিম যাত্রাবাড়ী, ঢাকা
যোগাযোগের লিঙ্ক: https://www.facebook.com/JackyMartialArtAkademy
আরও পড়ুন: ঢাকার বাসরুট খুঁজে পেতে দরকারি কিছু মোবাইল অ্যাপ
বাংলাদেশ ওয়াদোকাই কারাতে দো (Bangladesh Wadokai Karate Do)
দেশের স্বনামধন্য কারাতে স্কুল বাংলাদেশ ওয়াদোকাই কারাতে দো প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৯ সালে। প্রতিষ্ঠাতা সেন্সি আব্দুল শুক্কুর আলী সিকদার নিজে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেন।
গুলিস্তানে ১টি এবং রামপুরা ও বনশ্রী জুড়ে বেশ কয়েকটি শাখা রয়েছে Bangladesh Wadokai Karate Do-এর। গুলিস্তানের জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে প্রশিক্ষণ চলে সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত। বনশ্রী-রামপুরার শাখাগুলোতে ক্লাস হয় সাধারণত বিকেল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত। ভর্তি ও কোর্স ফিসহ কারিকুলাম সংক্রান্ত বিশদ তথ্যের জন্য সরাসরি তাদের ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
ফেসবুক লিঙ্ক: https://www.facebook.com/bangladeshwadokaikaratedo
সশরীরে যোগাযোগের ঠিকানা: ৩৭৭/১, ইস্ট রামপুরা, ডি.আই.টি রোড, রামপুরা।
আরো পড়ুন: মোবাইল ফোন হ্যাকিং প্রতিরোধে করণীয়
রয়েল তায়কোয়ান্দো ডোজ্যাং বাংলাদেশ (Royal Taekwondo Dojang Bangladesh)
বিশ্ব জুড়ে ব্যাপক ভাবে সমাদৃত কোরিয়ান সেল্ফ-ডিফেন্স স্টাইল চাংমু কোয়ান তায়কোয়ান্দো। সারা পৃথিবী ব্যাপি ছড়িয়ে রয়েছে এর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহ। তারই বাংলাদেশ প্রতিনিধি হচ্ছে Royal Taekwondo Dojang Bangladesh।
এখানে সপ্তাহের পাঁচ দিন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলে। শুক্র ও শনিবার ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ক্লাস হয়। যারা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রশিক্ষণ পেতে চান, তাদের জন্য এটি একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান। ভর্তি ও কোর্স সংক্রান্ত যে কোনও তথ্যের জন্য তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করা যাবে।
পেজ লিঙ্ক: https://www.facebook.com/royaltkdbangladesh
ঠিকানা: হাউজ নং- ৭৭/বি, ৭এ ধানমন্ডি।
আরো পড়ুন: পবিত্র রমজান মাসে প্রয়োজনীয় ১০টি মোবাইল অ্যাপস
শোতোকান কারাতে বাংলাদেশ (Shotokan Karate Bangladesh)
আত্মরক্ষার বিশ্ব বিখ্যাত স্টাইলগুলোর মধ্যে জাপানের শোতোকান অন্যতম। বাংলাদেশের কারাতে ক্লাবগুলোতেও রয়েছে এর ব্যাপক চর্চা। জাতীয় কারাতে ফেডারেশন কর্তৃক অনুমোদিত তেমনি একটি প্রতিষ্ঠান এই Shotokan Karate Bangladesh।
এখানে শুক্র, শনি এবং সোম- এই তিন দিন অনুষ্ঠিত হয় প্রশিক্ষণ ক্লাস। সকালের ব্যাচ সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত, আর বিকেলের ব্যাচ বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। প্রশিক্ষণে যুক্ত হতে প্রয়োজনীয় খরচসহ যাবতীয় তথ্যাবলি পাওয়া যাবে তাদের ফেসবুক পেজে।
লিঙ্ক: https://www.facebook.com/shotokankaratebangladesh
ঠিকানা: ৮/সি, পশ্চিম চৌধুরী পাড়া, ঢাকা।
আরো পড়ুন:
শেষাংশ
নারীদের আত্মরক্ষার কৌশল শেখার জন্য ঢাকাস্থ এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো তাদের নিজস্ব স্টাইল অনুসরণ করে।
তন্মধ্যে কেও ফাইট স্টুডিও, সোবহান কারাতে অ্যাকাডেমি, বাংলাদেশ ওয়াদোকাই কারাতে দো ও শোতোকান কারাতে বাংলাদেশ কারাতের প্রতি গুরুত্বারোপ করে। চাইনিজ কুংফু ও উশু স্কুল তাদের ঐতিহ্যবাহী উশু এবং রয়েল তায়কোয়ান্দো ডোজ্যাং বাংলাদেশ স্বতন্ত্র তায়কোয়ান্দোর জন্য সুপরিচিত। কারাতের সাথে কিকবক্সিং-এর সমন্বয় ঘটিয়েছে হোর্ড এমএমএ এ্যান্ড মার্শাল আর্ট্স অ্যাকাডেমি। আর মার্শাল আর্টস স্টার্স অ্যাকাডেমিতে রয়েছে জুডো-কারাতের সংমিশ্রণ। তবে সবগুলোরই পরিমিত সন্নিবেশ মিলবে জ্যাকি মার্শাল আর্ট অ্যাকাডেমি’তে। অপরদিকে মার্শাল আর্ট বিডি’তে রয়েছে আত্মরক্ষার কৌশল রপ্ত করার পাশাপশি বডি বিল্ডিং-এর সুযোগ।
উপরন্তু, এই সবগুলো প্রশিক্ষণই দেহের পাশাপাশি মানসিক সুস্থতার বিকাশেও সহায়ক।
আরো পড়ুন: রেস্তোরাঁ-শপিং মলে প্রবেশের আগে যে বিষয়গুলোতে সাবধান থাকা জরুরি
৩৫ দিন আগে
চট্টগ্রামে ‘হবেকি’ গ্রাফিতি, গাধার পিঠের ‘ভাবুক’ নিয়ে কৌতূহল
২০২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর রাজনৈতিক অভ্যুত্থানের মধ্যে প্রতিরোধ ও সামাজিক ভাবনার মাধ্যম হিসেবে নিজের গুরুত্ব ফিরে পেয়েছে গ্রাফিতি। এরইমধ্যে চট্টগ্রামের সিআরবি এলাকায় একটি নতুন গ্রাফিতি শিল্পকর্ম—যা বিখ্যাত ফরাসি ভাস্কর আগুস্ত রোঁদ্যার ‘দ্য থিঙ্কারের’ বা ভাবুকের প্রতিরূপ—নতুন করে কৌতূহল জাগিয়ে তুলেছে। বিখ্যাত এই ভাস্কর্য জ্ঞান বা দর্শনের রূপক হিসেবে পরিচিত বিশ্বজুড়ে। একই সঙ্গে বুদ্ধিজীবীদেরও প্রতীক দেখা হয় এটিকে।
মজার বিষয় হল, গাধার পিঠে গালে হাত দিয়ে বসে আছেন ভাবুক। ছবির পেছনে রোমান হরফে ‘হবেকি’ (HOBEKI?) লেখা। যা ২০১৭ সালে ঢাকায় সাড়া জাগানো ‘সুবোধ’ গ্রাফিতির কথাই মনে করিয়ে দেয়।
একটু নিবিড় দৃষ্টিতে চোখ রাখলে চট্টগ্রামের সিআরবি রোডের শিরীষতলায় অবস্থিত একটি পরিত্যক্ত ভবন কাঠামোর ২০ ফুট প্রস্থ এবং ১২ ফুট উঁচু চুনকাম করা দেয়ালে আঁকা এই শিল্পকর্মটি সরাসরি রোঁদ্যার বিখ্যাত ভাস্কর্য, দ্য থিঙ্কারকে মনে করিয়ে দেয়।। যা গভীর চিন্তাভাবনার সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত প্রতীক। তবে, গাধার ওপর স্থাপনাটি একটি ব্যঙ্গাত্মক রহস্য যোগ করে কৌতূহলী দর্শক এবং পর্যবেক্ষকদের এটিকে বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা হিসাবে ব্যাখ্যা করতে উৎসাহিত করে।
এই রহস্যময়তা আরও গভীর করে ‘হবেকি’ লোগো। যা ২০১৭ সালে ঢাকার দেয়ালে আবির্ভূত রহস্যময় সুবোধ গ্রাফিতির প্রতিফলন এটি। সুবোধ সিরিজটি একটি সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ হয়ে সবার মনের গভীরে ছড়িয়ে পড়েছিল। এতে লেখা ছিল, ‘ সুবোধ তুই পালিয়ে যা, সময় তোর পক্ষে না’; ‘সুবোধ তুই পালিয়ে যা তোর ভাগ্যে কিছু নেই’; যা এর সূক্ষ্ম রাজনৈতিক অন্তর্নিহিততার কারণে অনেকের কাছে গভীরভাবে অনুরণিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: মরণঘাতী ড্রাগ ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ থেকে বাঁচতে করণীয়
এখন, ‘হোবেকি?’ (হোবেকি?) শিরোনামযুক্ত গ্রাফিতিটি চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হচ্ছে। এই চিন্তা-উদ্দীপক কাজের পিছনে একই বেনামি শিল্পী বা গোষ্ঠীর হাত আছে কিনা তা নিয়ে জল্পনা চলছে। গ্রাফিতি শিল্পীদের রীতি অনুযায়ী এ শিল্পকর্মের স্রষ্টা নিজের নাম গোপন রেখেছেন।
স্থানীয় শিল্পী, সামাজিক ভাষ্যকার এবং শিল্পপ্রেমীরা বিশ্বাস করেন যে নতুন গ্রাফিতিটি বর্তমান সমাজে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকার সমালোচনা হিসেবে কাজ করে। যদিও ‘দ্য থিঙ্কার’ দার্শনিক গভীরতা এবং প্রজ্ঞার প্রতীক, এটিকে একটি গাধার ওপর স্থাপন করার মাধ্যমে—যা প্রায়শই একগুঁয়েমি এবং বুদ্ধিমত্তার ঘাটতির সাথে যুক্ত—মনে হচ্ছে যে বুদ্ধিজীবীরা, তাদের অন্তর্দৃষ্টি থাকা সত্ত্বেও শক্তিহীন বা বিপথগামী হতে পারে, তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরের শক্তির ওপর তারা নির্ভর করে।
৪১ দিন আগে
রাতে বাসে বা গণপরিবহনে নিরাপদে ভ্রমণে কিছু সতর্কতা
সন্ধ্যার পর নিকটস্থ বা দূরপাল্লার গন্তব্যে যাতায়াতের জন্য আপনি বাস বা গণপরিবহন ব্যবহার করেন? রাতে বাস বা গণপরিবহনে ভ্রমণের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
সান্ধ্য বা নৈশ ভ্রমণে যানবাহনে করণীয়-বর্জনীয়
.
পরিকল্পিতভাবে ভ্রমণ করুন
পরিকল্পিতভাবে ভ্রমণ করলে যাত্রা আরামদায়ক ও নিরাপদ হয়। যদি বাস বা ট্রেনের টিকিট বুকিং করার সুযোগ থাকে, তাহলে মাঝামাঝি আসন নিন। রাতের বেলায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে জানালার পাশে বা বাসের খুব পেছনের আসন এড়িয়ে চলাই ভালো।
যদি সম্ভব হয়, পরিচিত কাউকে আপনার যাত্রার তথ্য (গন্তব্য, সম্ভাব্য পৌঁছানোর সময়) জানিয়ে রাখুন।
আরো পড়ুন: বাসা-বাড়িতে ডাকাতি প্রতিরোধে করণীয়
নির্ভরযোগ্য যানবাহন ব্যবহার করুন
নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য নির্ভরযোগ্য বাস বা যানবাহন বেছে নিন। সরকারি বা স্বীকৃত পরিবহন সংস্থার যানবাহন ব্যবহার করুন। বাস বা গাড়ির রুট ও সময়সূচি সম্পর্কে আগেই জেনে নিন।
অ্যাপ-ভিত্তিক রাইড শেয়ারিং পরিষেবা (যেমন Uber, Pathao) ব্যবহার করলে গাড়ির তথ্য যাচাই করুন।
নিজের অবস্থান গোপন রাখুন
বর্তমান যুগে অনেকেই নিজের দৈনন্দিন কার্যকলাপ এবং ব্যক্তিগত তথ্য সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ করে থাকেন। যারা সন্ধ্যার পর বা রাতে ভ্রমণ করেন তাদের জন্য এটি ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। অপরিচিতদের সঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না। যদি সম্ভব হয়, যাত্রাপথের লাইভ লোকেশন পরিবার বা বন্ধুকে শেয়ার করুন।
আরো পড়ুন: রমজানে রোজা রাখার প্রস্তুতি: দেহ ও মনকে সুস্থ রাখতে করণীয়
সতর্ক থাকুন ও চারপাশ পর্যবেক্ষণ করুন
অপরিচিত বা সন্দেহজনক ব্যক্তির সঙ্গে অতিরিক্ত কথা বলা বা ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা এড়িয়ে চলুন। ব্যস্ত থাকলেও মোবাইলে পুরোপুরি মনোযোগ দেবেন না, চারপাশের পরিস্থিতি লক্ষ্য রাখুন। সন্দেহজনক কিছু দেখলে বা অনুভব করলে বাসচালক বা সহযাত্রীদের জানান।
ভিড় এড়িয়ে চলুন
খুব বেশি ভিড় থাকলে বা সন্দেহজনক পরিস্থিতি দেখলে সেই যানবাহনে না ওঠাই ভালো। গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র যেমন মানিব্যাগ, ফোন বা ব্যাগ নিজের কাছেই রাখুন।
আত্মরক্ষায় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে রাখুন
প্রয়োজনে আত্মরক্ষার জন্য ছোটখাটো সরঞ্জাম (যেমন: পেপার স্প্রে, হুইসল, ফোল্ডিং মেটাল সেফটি রড, ইত্যাদি ) সঙ্গে রাখতে পারেন। ফোনের ব্যাটারি ও মোবাইল ডাটা চালু রাখুন, যাতে প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে পারেন।
আরো পড়ুন: পবিত্র ওমরাতে যাওয়ার পূর্বপ্রস্তুতি ও কিছু সাবধানতা
জরুরি নম্বর সংরক্ষণ করুন
স্থানীয় পুলিশ, বাস সার্ভিস হেল্পলাইন ও পরিচিতজনের নম্বর সহজেই পাওয়া যায় এমন জায়গায় রাখুন। বিপদের সময় ৯৯৯ (বাংলাদেশের জরুরি সেবা) তে কল করুন।
যাত্রা পথে অপরিচিত ব্যক্তির দেয়া কিছু খাবেন না
যাত্রাকালে অনেক যাত্রী পার্শ্ববর্তী যাত্রীকে ভদ্রতার খাতিরে বা বন্ধুসুলভভাবে খাদ্য-পানীয় গ্রহণে অনুরোধ করেন। যাত্রীর ছদ্মবেশে অনেক সময় মলম পার্টির লোকেরা খাবারে বিষাক্ত কেমিকাল মিশিয়ে দেয়। এই খাবার গ্রহণের পর যাত্রীরা অচেতন হয়ে পড়লে তারা সর্বস্ব লুটে নেয়। এধরণের পরিস্থিতিতে ঝুঁকি এড়াতে অপরিচিত ব্যক্তির দেয়া কিছু না খাওয়া নিরাপদ।
ভ্রমণের সময় ভারসাম্য বজায় রাখুন
যদি বাস বা যানবাহন চলন্ত অবস্থায় থাকে, তবে হঠাৎ উঠে দাঁড়ানো বা নড়াচড়া করা এড়িয়ে চলুন। হাতল বা সাপোর্ট ধরে রাখুন যাতে হঠাৎ ব্রেক করলে পড়ে না যান। সম্ভব হলে হেলপারকে আপনার গন্তব্যস্থল আগেই জানিয়ে রাখুন, যাতে গাড়ি উক্তস্থানে পৌঁছালে আপনাকে ডেকে নিতে পারে।
আরো পড়ুন: তরুণদের মধ্যে স্ট্রোকের প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে: জানুন কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
মোবাইল ফোন নিরাপদে রাখুন
অনেকেই বাসে বা গণপরিবহনে যাত্রাকালে মোবাইল ফোন বের করে সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রলিং করেন। এ ধরনের অভ্যাস ছিনতাইয়ের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে জানালার পাশে বসলে খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল ফোন বের না করে নিরাপদ। সম্ভব হলে, যাত্রা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফোন বের না করে, নিরাপদে পকেটে বা ব্যাগে রাখুন।
উপসংহার
ব্যক্তিগত বা জরুরি প্রয়োজনে কিংবা পেশাগত কারণে অনেকেই সন্ধ্যার পরে বা রাতের দিকে গণ পরিবহনে যাতায়াত করেন । উপরোল্লিখিত বিষয়গুলোতে সতর্কতা অবলম্বন করলেই রাতের ভ্রমণকে আরও নিরাপদ করা সম্ভব।
আরো পড়ুন: মরণঘাতী ড্রাগ ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ থেকে বাঁচতে করণীয়
৫৫ দিন আগে
নতুন বছরে সঞ্চয় বাড়ানোর কয়েকটি উপায়
বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালেও জনজীবনের ওপর সবচেয়ে বড় চাপ হিসেবে রয়েছে মুদ্রাস্ফীতির ক্রমবর্ধমান নিষ্পেষণ। জীবনযাত্রার ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতি আর্থিক স্থিতিশীলতাকে ক্রমশঃ হুমকিতে ফেলছে। মৌলিক চাহিদা মেটাতেই যেখানে ঋণ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা, সেখানে সঞ্চয়ের প্রসঙ্গটি প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যায়। আবার সঞ্চয় ব্যতীত জীবন আরও অবনতির দিকে ধাবিত হয়।
তবে অর্থনৈতিক অস্থিরতার মাঝেও চরম সংকট মোকাবিলায় মোক্ষম হাতিয়ার হতে পারে অর্থের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। চলুন, আত্মবিশ্বাস ও দূরদর্শিতার সঙ্গে সঞ্চয় বৃদ্ধির কয়েকটি প্রয়োজনীয় উপায় জেনে নেওয়া যাক।
সঞ্চয় বৃদ্ধির ৫টি কার্যকর কৌশল
জীবনের দৈনন্দিন লেনদেনে নিম্নোক্ত পাঁচটি পদ্ধতি অবলম্বনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘমেয়াদী সঞ্চয়ের নির্ভরযোগ্য সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে-
সামঞ্জস্যপূর্ণ বাজেট তৈরি
প্রত্যেকটি ছোট ছোট বিষয়কে বিবেচনায় রেখে একটি বিশদ বাজেট পরিকল্পনা গড়ে দিতে পারে আর্থিক ব্যবস্থাপনার মূল ভিত্তি। এখানে আয়ের উৎসের বিপরীতে ব্যয়ের শ্রেণি বিভাজন হওয়ার কারণে সম্ভাব্য খরচের খাতগুলো স্পষ্টভাবে দৃষ্টিগোচর হয়।
আরো পড়ুন: ই-রিটার্ন: অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন যেভাবে
বাজেটে সঞ্চয়ের জন্য জায়গা রাখার কৌশল হচ্ছে শুধুমাত্র অতি প্রয়োজনীয় ব্যয়ের খাতগুলোকে আমলে নেওয়া। সেই সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত খরচগুলো চিহ্নিত করে রাখা উচিত, যেন সেগুলো থেকে দূরে থাকা যায়।
আকস্মিক জটিলতাগুলোর জন্য আগে থেকেই বিকল্প রাস্তা বের করে রাখা জরুরি। বর্তমান অর্থনৈতিক অস্থিরতার মাঝে এমন সময় আসা খুবই স্বাভাবিক যখন সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোবে না। এই বিষয়গুলোকে ছোট ছোট অংশে বিভক্ত করে সেগুলোর প্রতিটির জন্য একটি বিকল্প নিরাপদ পন্থা বের করে রাখতে হবে। এর জন্যও কিছু জরুরি তহবিল রাখা বাঞ্ছনীয়।
স্প্রেডশিটযুক্ত (এক্সেল) মোবাইল বা কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে এই পদক্ষেপটি সহজেই নেওয়া যায়। এই সফ্টওয়্যার ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এগুলো রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিং প্রযুক্তি সম্পন্ন, অর্থাৎ তাৎক্ষণিক নিজের তৈরি করা বাজেটের ওপর চোখ বুলিয়ে নেওয়া যায়। ফলে শুধু পরিকল্পনাই নয়, সে অনুযায়ী অ্যাকশন প্ল্যানগুলো ঠিকমতো বাস্তবায়িত হচ্ছে কিনা, সেদিকেও খেয়াল রাখা সম্ভব হয়। প্রতিটি ব্যয়ের খাতের জন্য মাসিক আয়ের যে শতাংশ বরাদ্দ ছিল, সেই সীমা অতিক্রম করছে কিনা তা নজরে আসে।
আরো পড়ুন: বাংলাদেশ সরকারের ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করার পদ্ধতি
পুনরাবৃত্তিমূলক খরচ কমানো
প্রয়োজনীয়তার মাত্রার নিরিখে প্রতি মাসের জন্য অবধারিত খরচগুলোর শ্রেণিবিন্যাস করা উচিত। এগুলোর মধ্যে কিছু থাকে যেগুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না, যেমন: বাড়িভাড়া, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির বিল। আবার এর মধ্যে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির বিলও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ব্যবহার কমিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এছাড়া নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস এবং এনার্জি সেভিং যন্ত্রাদি ব্যবহারের মাধ্যমেও খরচ অনেকটা কমে আসে।
পুনরাবৃত্তিমূলক খরচের কিছু খাত রয়েছে যেগুলো মূলত জীবনধারণের সঙ্গে সম্পৃক্ত। যেমন ক্যাবল টিভি ও ইন্টারনেট বিল, ফোন বিল, ওটিটি সাবস্ক্রিপশন এবং জিমের সদস্যতা। সময় ও পরিস্থিতি অনুযায়ী এগুলোর মধ্যে এক বা একাধিক পরিষেবা বাদ দিয়ে খরচ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
বিশেষ করে আজকাল ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন চ্যানেলের অনুষ্ঠান দেখা যায়। সেক্ষেত্রে ক্যাবল টিভি ও ওটিটি বিলের পুরোটাই বাদ দেওয়া যায়। ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ব্যবহার করা হলে ফোনের বিলের ওপর থেকেও চাপ কমে যাবে।
আরো পড়ুন: বন্ডে বিনিয়োগের আগে যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি
তাছাড়া নিতান্তই বাদ দেওয়া সম্ভব না হলে ব্যবহারের মাত্রা কমিয়ে বা দর কষাকষির মাধ্যমে কম খরচের পরিষেবা নেওয়া যেতে পারে।
কৌশলগত বিনিয়োগ
বিনিয়োগ আসলে সঞ্চয়ের কোনো প্রত্যক্ষ উপায় নয়। কিন্তু এই বিচক্ষণ কার্যক্রমটির পথ ধরে আসে সঞ্চয়ের সুযোগ। সঞ্চয়পত্র বা সরকারি বন্ডের মতো তুলনামূলক কম ঝুঁকিপূর্ণ খাতগুলোতে বিনিয়োগ করা হলে সঙ্গতিপূর্ণ রিটার্ন দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীলতা আনে।
ঝুঁকি বেশি থাকা খাতগুলোর মধ্যে স্টক ও মিউচুয়াল ফান্ড বা এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড দিয়ে সর্তকতার সঙ্গে বিনিয়োগ পোর্টফোলিও গড়া যেতে পারে। এগুলো সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতিকে টেক্কা দিতে সহায়তা করে।
আরো পড়ুন: ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেভাবে বিনিয়োগ করবেন
চলতি বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশে। মোটা দাগে বলতে গেলে, এ বছরের শুরু থেকে সঞ্চিত ১০০ টাকা নতুন বছরে গিয়ে হয়ে যাবে ৮৮ টাকা। ফলে ১০০ টাকা দামের কোনোকিছু কিনতে গেলে তার সঙ্গে আরও ১২ টাকা যুক্ত করতে হবে। তাই কমপক্ষে ১৩ শতাংশ রিটার্ন দেওয়া কোনো খাতে বিনিয়োগ করা হলে প্রাপ্ত মুনাফা থেকে লেনদেনের পরও ১ টাকা সঞ্চয় হিসেবে থেকে যাবে।
এভাবে সুচিন্তিত বিনিয়োগ পরোক্ষভাবে সঞ্চয়ের ক্ষেত্র তৈরি করে। এছাড়া সরকারি খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে কর রেয়াতের সুবিধাটিও অর্থ সঞ্চয়ের একটি কার্যকর মাধ্যম।
ডিসকাউন্ট ও ফ্রি অফারে গুরুত্বারোপ
দৈনন্দিন কেনাকাটার সময় মূল্যহ্রাস ও ফ্রি সামগ্রীগুলোতে অগ্রাধিকার দেওয়া টাকা বাঁচানোর সবচেয়ে পুরনো ও সহজ উপায়। ব্র্যান্ড, সাধারণ, খুচরা ও পাইকারি-নির্বিশেষে প্রতিটি বিপণী বছরজুড়ে নানা উপলক্ষে ডিসকাউন্ট, ক্যাশব্যাক বা রিডিমযোগ্য পয়েন্টের ব্যবস্থা রাখে। বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের দৌলতে এগুলো আরও সহজলভ্য হয়ে উঠেছে।
আরো পড়ুন: পুরনো স্বর্ণ বিক্রির সময় যে কারণে দাম কেটে রাখা হয়
ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম থাকার কারণে যাতায়াত খরচ বাঁচিয়ে ঘরে বসেই হ্রাসকৃত মূল্যে কেনাকাটা করা যাচ্ছে। জনপ্রিয় পেমেন্ট গেটওয়েগুলো ব্যবহারেও থাকে মূল্যছাড়ের অফার।
এছাড়া সিজনাল সেলস ও স্টক ক্লিয়ারেন্স ইভেন্টগুলোর প্রতিও নজর রাখা উচিত। সাশ্রয়ী মূল্যে পছন্দের জিনিসটি কেনার জন্য এটি সবচেয়ে আদর্শ উপায়।
সর্বদা সাশ্রয়ী বিকল্প পন্থা অবলম্বন
সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম সহনীয় যতক্ষণ না সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসে, ততক্ষণ অপেক্ষা করা উচিৎ। বিশেষ করে সাধারণ মুদিপণ্যের ব্যাপারে এই পদক্ষেপ নিতে হবে। দাম না কমলে তা পরিহার করতে হবে। মৌসুমি সবজি ও ফলমূলের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা উচিৎ।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষে নগদায়ন বা পুনরায় চালু করার উপায়
যাতায়াতের যানবাহন ব্যবহারের ক্ষেত্রে দর কষাকষি করা উচিত। বর্তমানে উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা সর্বত্র বিদ্যমান। এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে যতটা সম্ভব কম যাতায়াত করে প্রাত্যহিক কর্ম সম্পাদনের চেষ্টা করা উচিত। একটি ছোট ফোন কল বা হোয়াটসঅ্যাপ-মেসেঞ্জারের মাধ্যমে এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা সম্ভব, যার জন্য আগে সশরীরে দেখা করার কোনো বিকল্প ছিল না।
এই কার্যক্রমগুলো প্রতিদিনের যাতায়াত খরচকে অল্প অল্প করে কমিয়ে দেয়। অথচ সপ্তাহ ও মাসের হিসাবে এগুলোই খরচের বোঝাও ওপর বিরাট চাপ সৃষ্টি করে।
এই পন্থাগুলো মূলত জীবনধারণ পরিবর্তনের দিকে ইঙ্গিত করে। পরিমিত বাজেট অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করে সঞ্চয়ের অভ্যাসের জন্য মনকে প্রস্তুত করাও জরুরি।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রে যেভাবে বিনিয়োগ করবেন
২০২৫ সাল আসতে আর বেশি দেরি নেই। প্রত্যেকের আর্থিক জীবনপ্রবাহেও পড়বে নতুন বছরের প্রভাব। তাই এখন থেকেই ব্যয়ের বাজেট প্রণয়ন ও সঞ্চয় বৃদ্ধির বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ।
শেষাংশ
সঞ্চয় বৃদ্ধির উল্লিখিত কৌশলগুলোকে সমন্বয় করা মূলত আর্থিক স্থিতিশীলতারই নামান্তর। বাজেট প্রাথমকিভাবে আর্থিক স্বচ্ছতার ভিত্তি স্থাপন করে। পুনরাবৃত্তিমূলক খরচগুলো কমানো গেলে তা দিন শেষে অতিরিক্ত সঞ্চয়ের জন্যই জায়গা তৈরি করে।
এছাড়া, মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হলো কৌশলগত বিনিয়োগ। ডিসকাউন্ট, ফ্রি অফারের পাশাপাশি যেকোনো কাজে সাশ্রয়ী বিকল্প পন্থা অবলম্বন অনাকাঙ্ক্ষিত চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে ঢাল হিসেবে কাজ করে।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রের সঙ্গে সংযুক্ত ব্যাংক পরিবর্তন করে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরের উপায়
সার্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই পদ্ধতিগুলো বাজেটবান্ধব জীবনধারণের প্রতি তাগিদ দেয় যেখানে থাকবে না ঋণের দুশ্চিন্তা ও অপ্রাপ্তির বিড়ম্বনা।
১১৩ দিন আগে
বাসা-বাড়িতে ডাকাতি প্রতিরোধে করণীয়
মানুষের মৌলিক অধিকারের একটি হলো বাসস্থান। বাসা-বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ অত্যন্ত জরুরি। মূলত একটি বাড়ি কেবল একটি অবকাঠামোই নয়, বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে জীবনের নিরাপত্তা। তাই এই পরম আশ্রয় যখন হুমকির মুখে পড়ে, তখন তা জীবনের অস্তিত্বের জন্যই ক্ষতিকর। বিশেষ করে, ডাকাতির মতো অপরাধগুলোর ক্ষেত্রে সম্পদের ক্ষতি থেকে শুরু করে প্রাণনাশেরও আশঙ্কা থাকে। তাই, এর জন্য প্রয়োজন অগ্রিম সতর্কতা। এই নিবন্ধে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে, যা বাড়ির মালিকদের পাশাপাশি ভাড়াটিয়াদের জন্যও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। চলুন, কৌশলগুলোর ব্যাপারে বিশদ জেনে নেওয়া যাক।
বাসা-বাড়িতে ডাকাতি এড়াতে ১১টি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা
বাসস্থানে চুরি বা ডাকাতির আশংকা কমাতে বাড়ির সদস্যদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। সচেতনতার পাশাপাশি কিছু নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা বাসায় ডাকাতের আক্রমণের সম্ভাবনা হ্রাস করতে পারে।
আগন্তুকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া
বাসা-বাড়ির দরজায় করাঘাত বা কলিং বেলের আওয়াজ শুনে তৎক্ষণাৎ সদর দরজা না খুলে দরজার পীপ হোল দিয়ে আগন্তুককে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অপরিচিত কেউ দরজার ওপাশে থাকলে পরিচয় ও আগমনের কারণ জিজ্ঞাসা করে নিতে হবে। সন্দেহ জনক এক বা একাধিক ব্যক্তি যদি বাসায় ঢোকার চেষ্টা করে তৎক্ষণাৎ নিরাপত্তা রক্ষী বা প্রতিবেশীদের সাহায্য নিতে হবে। প্রয়োজনে নিকটস্থ থানা বা আর্মি ক্যাম্পে ফোন দিতে হবে।
আরো পড়ুন: মোবাইল ফোন বিস্ফোরণ: কারণ ও বাঁচার উপায়
সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন
সাম্প্রতিক দশকগুলোতে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানের জন্য বাংলাদেশে বহুল ব্যবহৃত প্রযুক্তির মধ্যে একটি হলো ক্লোজড-সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরা। মূল প্রবেশদ্বার ও গ্যারেজে ক্রমাগত নজরদারির জন্য এই ক্যামেরাগুলো স্থাপন করা যেতে পারে। অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে ভিডিও ফুটেজ রেকর্ড হয়ে থাকে, ফলে দুষ্কৃতিকারীরা এই ব্যবস্থা যুক্ত স্থাপনাগুলো থেকে দূরে থাকে।
আধুনিক সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোতে হাই-ডেফিনিশন ভিডিও রেকর্ডিং, নাইট ভিশন ও স্মার্টফোনের মাধ্যমে পরিচালনা করার সুবিধা থাকে। এর ফলে, এগুলোর মাধ্যমে রাতের অন্ধকারে তাৎক্ষণিকভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত বা সন্দেহভাজন আনাগোনা তদারক করা সম্ভব হয়। এমনকি, বাড়িতে না থাকলেও দূরবর্তী স্থান থেকে এই নজরদারি অব্যাহত রাখা যায়।
মোশন সেন্সর লাইট এবং সাইরেন অ্যালার্ম স্থাপন
ঘরবাড়ির আঙিনায় এমন কিছু স্থান থাকে যেগুলো পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও তুলনামূলকভাবে অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে। মোশন সেন্সর লাইট লাগানোর ক্ষেত্রে এই স্থানগুলোতে অগ্রাধিকার দেওয়া যেতে পারে। এই উন্নত প্রযুক্তি যেকোনো নড়াচড়া শনাক্ত করে এবং নির্দিষ্ট স্থানটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আলোকিত হয়ে ওঠে। এটি মূলত চোর বা গুপ্ত হামলাকারীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকর।
আরো পড়ুন: নারীর নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষায় মোবাইল অ্যাপ
এটির সঙ্গে যখন সাইরেন অ্যালার্ম যুক্ত করা হয়, তখন দুটো মিলিয়ে একটি শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি হয়। একসঙ্গে কয়েক জোড়া কদমের অনুপ্রবেশ বা দরজায় কষাঘাতের জন্য প্রধান ফটক বা দরজা এই ডিভাইস সংযুক্ত করার উপযুক্ত স্থান হতে পারে। এতে করে অ্যালার্মের শব্দে শুধু বাড়ির ভেতরে থাকা লোকেরাই নয়; আশেপাশের প্রতিবেশীরাও সজাগ হয়ে যাবে। ফলে সংকটাপন্ন পরিবারকে বাঁচাতে তারাও এগিয়ে আসতে পারবে অথবা পুলিশকে জানাতে পারবে।
রাতে ঘুমানোর আগে সব দরজা-জানালা বন্ধ করা
বাড়ির প্রধান প্রবেশদ্বার এবং জানালাগুলো যদি অসাবধানে খোলা রাখা হয়, তবে বাড়িতে প্রবেশের জন্য প্রাথমিক প্রতিবন্ধকতাই থাকে না। চুরি বা ডাকাতি সাধারণত রাতের অন্ধকারে ঘটে এবং এই ধরনের ভুলের কারণে তখন চরম মূল্য দিতে হয়। অনেকেই বাতাস চলাচলের জন্য রাতভর জানালা খোলা রেখেই ঘুমিয়ে পড়েন। এটি বিশেষ করে বিল্ডিংয়ের নিচের ২-৩ তলার বাসাগুলোর জন্য ক্ষতিকর।
অনেক বাসায় বারান্দা বা জানালায় টেকসই গ্রিল থাকে না। তাই, অন্তত প্রধান ফটকে উচ্চমানের ডেডবোল্ট লক অথবা কমপক্ষে দুটি স্তরের তালা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা উচিত। এছাড়া, প্রতিদিন ঘুমানোর আগে প্রত্যেকটি লক ভালোভাবে চেক করে নেওয়া একটি ভালো অভ্যাস।
আরো পড়ুন: স্মার্টফোনে ভূমিকম্প সতর্কতা চালু করবেন যেভাবে
প্রতিটি ব্লক বা মহল্লায় টহলরক্ষীসহ গেট নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ
জানমালের নিরাপত্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয় আমলে নিয়ে শুধু রাতের জন্যই নয়, ২৪ ঘন্টার জন্য অতন্দ্র প্রহরার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি বিল্ডিংয়ে তো থাকবেই, সেই সঙ্গে ব্লক বা মহল্লার প্রধান গেটেও নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ দিতে হবে। টহলের সময় গেটগুলোতে যেন শূন্যস্থান সৃষ্টি না হয় সেজন্য রক্ষীর সংখ্যা বাড়াতে হবে।
এর মধ্য দিয়ে এলাকায় প্রবেশাধিকার নিরীক্ষণের একটি ব্যবস্থা তৈরি হবে। সাধারণত কেবল ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা বা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সেই এই ব্যবস্থা বেশি চোখে পড়ে। কিন্তু নির্জন রাস্তার বাড়িগুলোর ক্ষেত্রেও গার্ড মোতায়েনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
নিকটস্থ থানা ও আর্মি ক্যাম্পের যোগাযোগ নম্বর সংগ্রহে রাখা
পরিস্থিতি একদম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো নিরাপত্তা বাহিনীর যোগাযোগের তথ্যগুলো সংগ্রহে রাখা। এতে দুর্ঘটনা সৃষ্টির আভাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফোন কলের মাধ্যমে তাদের জানানো যায়। নিরাপত্তা হটলাইনের পাশাপাশি নিকটস্থ থানা এবং আর্মি ক্যাম্পের মোবাইল নম্বরও সঙ্গে রাখা আবশ্যক।
খুব বেশি বিপজ্জনক অবস্থার ক্ষেত্রে প্রতিবেশীদেরও এগিয়ে আসা উচিত। এক্ষেত্রে তারা কাউকে বিপদগ্রস্ত দেখার সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে নিরাপত্তা বাহিনীর সাহায্য চাইতে পারে।
আরো পড়ুন:
অ্যাপার্টমেন্টে নতুন আগত ভাড়াটিয়াদের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া
শুধু অ্যাপার্টমেন্টের মালিক বা বাড়িওয়ালাদের জন্যই নয়, নতুন আসা ভাড়াটিয়াদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া পুরাতন ভাড়াটিয়াদেরও দায়িত্ব। কোনো ফ্ল্যাটে নতুন কাউকে সাবলেট দেওয়া হচ্ছে কি না এবং নবাগতদের পেশা নিয়ে সুক্ষ্মভাবে যাচাই করা উচিত।
বাড়ির মালিকরা নতুন ভাড়া নেওয়াদের নিকট থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র এবং পেশাগত পরিচয়পত্রাদি অবশ্যই সংগ্রহ করবেন। অপরদিকে, অন্যান্য ফ্ল্যাটবাসীরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের পাশের ফ্ল্যাটের ব্যাপারে খোঁজ রাখবেন। এভাবে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত গোটা ভবনেই একটি স্বয়ংক্রিয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখা যাবে।
বাড়ির আঙিনা অন্ধকারাচ্ছন্ন না রাখা
দুষ্কৃতিকারীদের ডাকাতি করার ক্ষেত্রে অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং জংলা, ঝোপ-ঝাড়ে আবৃত বাসাগুলো সবচেয়ে বেশি সহায়ক হয়। দুই বাড়ির মাঝের সংকীর্ণ স্থান এবং বাড়ির পেছন ভাগে এমন কিছু অল্প জায়গা থাকে যেগুলোতে দিনের বেলায়ও আলো-আঁধারীর অবস্থা বিরাজ করে। যেসব বাড়িতে বাগান রয়েছে, সেখানে বাগানের সঠিক পরিচর্যা করা না হলে গাছপালা অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে। ফলে মধ্য দুপুরেও বাগান ও বাড়ির আঙিনায় সূর্যালোক পৌঁছাতে পারে না। তাই নিয়মিতভাবে ঝোপ, গাছ ও ঘাস ছাঁটাই করা জরুরি।
আরো পড়ুন: হ্যাকিং প্রতিরোধ: অনলাইন কেনাকাটায় ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সাবধানতা
অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গাগুলোতে অতিরিক্ত লাইট বা মোশন সেন্সর লাইট দেওয়া যায়। দীর্ঘ দিন ধরে বাড়ির কাছাকাছি কোনো ল্যাম্প পোস্টের লাইট অকেজো হয়ে গেলে দ্রুত তা বদলে দিতে হবে।
বাড়ির সীমানা ঘিরে দুর্ভেদ্য কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন
অনুপ্রবেশে প্রাথমিকভাবে যতটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যায় ততই ভালো। বেশ পুরোনো উপায় হলেও বাড়ির সীমানা জুড়ে কাটাতারের বেড়া স্থাপন বাড়ির সার্বিক নিরাপত্তায় অতিরিক্ত স্তর যোগ করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এগুলোতেও এসেছে যথেষ্ট পরিবর্তন। তাই বেড়া নির্বাচনে সূক্ষ্ম স্পাইক বা কোণযুক্ত ধারের মতো বৈশিষ্ট্যগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে তা যেন মানসম্পন্ন এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়।
প্রতিবেশীরা সঙ্ঘবদ্ধভাবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ
যেকোনো প্রতিরোধে সম্মিলিত থাকার কোনো বিকল্প নেই। একের বিপদে অপরজন এগিয়ে আসার মতো তাৎক্ষণিক উদ্যোগ আর কিছুই হতে পারে না। পাশাপাশি দুইটি বাড়ির মালিক বা ভাড়াটিয়া তাদের নিজ নিজ বাড়ির আশেপাশে সন্দেহজনক আনাগোনার দিকে খেয়াল রাখা মানে পরস্পরের দিকেই খেয়াল রাখা। নবাগত ভাড়াটিয়ার ব্যাপারে পরস্পরকে শেয়ার করা হলে পরবর্তী অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যায় একে অপরের বিপদে এগিয়ে যেতে পারে।
এভাবে আগে থেকেই অস্বাভাবিক কার্যকলাপগুলো নিজেদের মধ্যে শেয়ারের মাধ্যমে সতর্ক থাকা যায়। তাছাড়া ভয়াবহ সংকটপ্রবণ মূহুর্তগুলোতে কেবল পুলিশের ওপর নির্ভর না করে নিজেরাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রহরার ব্যবস্থা করা যায়।
আরো পড়ুন: দামি ফ্ল্যাগশিপ ফোন কেনার সুবিধা-অসুবিধা
দীর্ঘ ছুটি কাটানো নিয়ে বাড়ির বাইরে কথা না বলা
বাড়ির বাইরে প্রতিবেশী বা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আড্ডায় অনেকেই নিজের আসন্ন দীর্ঘ ভ্রমণের কথা বলে ফেলেন। এতে করে তিনি যে একটা উল্লেখযোগ্য সময় যাবত বাড়িতে অনুপস্থিত থাকবেন তা বৃহৎ পরিসরে জানাজানি হয়ে যেতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডাকাত বা তাদের সহযোগীরা এলাকার ভেতরেই থাকে। দীর্ঘ সময় ধরে পরিকল্পনা সাজানো হয় নির্দিষ্ট কোনো বাড়িতে ডাকাতির জন্য। এ সময় তারা সাধারণ মানুষের বেফাঁস কথাগুলোর সুযোগ নেয়।
তাই দীর্ঘ ভ্রমণ বা ৬-৭ ঘণ্টার জন্য বাসায় একজনকে রেখে যাওয়ার বিষয়গুলো গোপন রাখা অপরিহার্য। মহল্লার কোনো খাবার হোটেল, টঙের দোকান, পার্ক বা গোলির মোড়ে আড্ডায় এই বিষয়গুলো কোনোভাবেই প্রকাশ করা ঠিক নয়।
পরিশিষ্ট
বাসা-বাড়িতে ডাকাতি প্রতিরোধের এই উপায়গুলো আবাসিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার নামান্তর। এর জন্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে সংঘবদ্ধ ভূমিকার সমন্বয় ঘটানো জরুরি। এ ক্ষেত্রে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং মোশন-সেন্সর লাইট ও অ্যালার্ম স্থাপনের সুদূরপ্রসারি তাৎপর্য রয়েছে। রাতে দরজা-জানালা বন্ধ রাখা, সীমানায় কাটাতারের বেড়া স্থাপন, মহল্লায় প্রহরা বাড়ানো এবং প্রতিরক্ষা বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য সংগ্রহে রাখা সাধারণ সতর্কতা। তবে নতুন ভাড়াটিয়াদের যাচাই করা, দীর্ঘ ভ্রমণের ব্যাপারে ঘরের বাইরে আলাপ না করা, এবং প্রতিবেশীরা সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নেওয়া সক্রিয়তার পরিচয় দেয়।
সর্বসাকূল্যে, প্রত্যেকটি কৌশলকে একীভূত করার মাধ্যমে বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটিয়া উভয় শ্রেণি সমানভাবে উপকৃত হতে পারবেন।
আরো পড়ুন: আইফোন চুরি প্রতিরোধে অ্যাপলের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
১৫৪ দিন আগে
বন্যার সময় বিদ্যুৎ ও গ্যাসজনিত দুর্ঘটনা থেকে সাবধান থাকতে করণীয়
বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে বিপদের মাত্রাকে আরও ভয়াবহ রূপ দিতে পারে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগস্থলগুলো। প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে স্বাভাবিকভাবেই এসব বিষয় দৃষ্টির বাইরে থেকে যায়। আর এই অসতর্কতাই বুমেরাং হয়ে পড়ে ধ্বংযজ্ঞের সময়ে। উপরন্তু, পানি বিদ্যুৎ পরিবহনের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হওয়ায় বন্যার সময়ে রীতিমতো মৃত্যুদূতে পরিণত হয় বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো। সেইসঙ্গে আশঙ্কা তৈরি হয় গ্যাসের লাইনগুলো ভেঙে যাওয়ার। নিদেনপক্ষে অল্প চিড় ধরলেও এই লোহার পাইপগুলো থেকে ঘটতে পারে ভয়ানক বিস্ফোরণ। এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে হলে যথা সম্ভব তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। চলুন, বন্যার সময় বিদ্যুৎ ও গ্যাস-সংক্রান্ত দুর্ঘটনা এড়াতে কার্যকর পদক্ষেপগুলো জেনে নেওয়া যাক।
বন্যার সময় গ্যাস ও বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা এড়াতে করণীয়
.
অবিলম্বে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা
বন্যা দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব গ্যাস ও বিদ্যুতের প্রধান সংযোগগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিত। বিদ্যুতের ক্যাবল বা তার পানির সংস্পর্শে এসে শর্ট সার্কিট হতে পারে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত বন্যায় পানির চাপে গ্যাস পাইপ ভেঙে গ্যাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমতাবস্থায় শুধু একটি স্পার্ক-ই যথেষ্ট ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য। এই বিপদ থেকে বাঁচতে অবিলম্বে সব গ্যাস ভাল্ব ও পাওয়ার সুইচ বন্ধ করে দিতে হবে।
যারা এই সুইচ বা ভাল্বের সঙ্গে অপরিচিত তাদের জন্য উৎকৃষ্ট উপায় হচ্ছে এসব উৎস থেকে অতি দ্রুত নিরাপদ দূরত্বে সরে পড়া। এ সময় সঙ্গে কোনো বিদ্যুৎ বা তাপ পরিবাহী কোনো বস্তু রাখা যাবে না। সম্ভব হলে সহায়তার জন্য পেশাদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বেই যেসব খাবার সংরক্ষণ করা জরুরি
বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ বা উত্তপ্ত বস্তু থেকে দূরে থাকা
বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পরে অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ এবং উত্তপ্ত বস্তুর সান্নিধ্য এড়িয়ে চলতে হবে। পাওয়া অফ করার পরেও অনেক বৈদ্যুতিক যন্ত্রের মধ্যে কিছু চার্জ জমা থাকে। সাধারণ অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ না হলেও পানির সংস্পর্শে সেগুলো হুমকির কারণ হতে পারে।
তাছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন অবস্থায় অধিকাংশ যন্ত্রাংশেরই উত্তাপ কমে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগে। এই সময়েও ঘটতে পারে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা। তাই সর্বাত্মকভাবে এসব সরঞ্জাম থেকে যত দূরে যাওয়া যায় ততই ভালো।
উচ্চ স্থলভাগে অবস্থান নেওয়া
কোমর থেকে গলা পর্যন্ত জলাবদ্ধ এলাকাগুলোতে উঁচু শুকনো জায়গা খুঁজে পাওয়া প্রায় দুঃসাধ্য। এরপরেও নিমজ্জিত বা ভাসমান না থেকে অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থলভাগ খোঁজার চেষ্টা চালানো উচিত। কেননা স্থির পানি যত জায়গা জুড়ে বিস্তৃত থাকে বিদ্যুতের সংস্পর্শে তার পুরোটাই বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে। অতিরিক্ত জলাবদ্ধ জায়গায় পানির নিচে কোথায় কোনো বৈদ্যুতিক চার্জযুক্ত বস্তু আছে কি না তা বোঝা মুশকিল।
আরও পড়ুন: বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগ থেকে সতর্ক থাকার উপায়
এছাড়াও একটু উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিলে বানের পানিতে ভেসে যাওয়া অথবা পানির নিচে ধারালো বা শক্ত কোনো কিছুর সঙ্গে ধাক্কা লাগার আশঙ্কা থেকে বাঁচা যায়। তাই পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটময় হওয়ার পরেও মনকে যথা সম্ভব শান্ত রেখে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নিজের আশেপাশটা ভালোভাবে খেয়াল করতে হবে।
গ্যাস লিক খুঁজে বের করে দ্রুত মেরামত করা
বন্যার সময় তীব্র বেগে প্রবহমান পানির চাপে কিংবা ভারী কোনো জড় বস্তু ভেসে এসে গ্যাস পাইপগুলোতে লেগে চিড় ধরাতে পারে। প্রচণ্ড প্রতিকূল অবস্থায় পুরো পাইপ ভেঙে বা উপড়েও যেতে পারে। এমতাবস্থায় চিড়যুক্ত পাইপগুলো খুঁজে বের করার জন্য ন্যূনতম সুযোগ পাওয়া গেলেও তার সদ্ব্যবহার করা উচিত।
অতঃপর খুঁজে পাওয়ার পর ত্রুটিপূর্ণ পাইপগুলো অবিলম্বে মেরামতের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে সাহায্য নিতে হবে পেশাদারদের। কেননা এর উপর নির্ভর করছে আশেপাশের অনেকগুলো মানুষের জীবন। উন্মুক্ত গ্যাসে সৃষ্ট বিস্ফোরণ ছড়িয়ে যেতে পারে বিশাল জায়গা জুড়ে।
আরো পড়ুন: বন্যাদুর্গতদের সহযোগিতা করার উপায়
ব্যাটারি-চালিত টর্চলাইট ব্যবহার করা
বন্যাকালে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেঘাচ্ছন্ন আকাশের নিচে দিনের আলো পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে। ফলে রাতের মতো দিনেও পথ চলতে প্রয়োজন হয় কৃত্রিম আলোর। এই প্রয়োজন পূরণে মোমবাতি বা হারিকেন ব্যবহার করা যাবে না। কারণ অজানা কোনো জায়গায় গ্যাস লিকের ফলে মারাত্মক ঝুঁকির তৈরি হতে পারে। এখানে উৎকৃষ্ট বিকল্প হচ্ছে ব্যাটারি-চালিত টর্চ বা ফ্ল্যাশলাইট, যেগুলোতে আগুন বা চল বিদ্যুৎ সংযোগ কোনোটারই দরকার হয় না।
পরিশিষ্ট
তাৎক্ষণিকভাবে এসব সতর্কতামূলক পদক্ষেপ বন্যার সময় বিদ্যুৎ বা গ্যাস-সংক্রান্ত দুর্ঘটনা এড়াতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। যত দ্রুত সম্ভব গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগগুলো বন্ধ করা গেলে শর্ট সার্কিট ও গ্যাস লিকের ব্যাপারে আশঙ্কামুক্ত থাকা যায়। বৈদ্যুতিক উপাদান থেকে দূরে থাকা এবং প্লাবিত অবস্থা থেকে যথেষ্ট উঁচু স্থলভাগে অবস্থান নিয়েও ঝুঁকির মাত্রা কমানো যায়। গ্যাস লিকগুলো সম্ভব হলে শিগগিরই খুঁজে বের করে বন্ধ করা উচিত। অন্যথায়, এমন স্থান থেকে দূরে থাকা এবং আকস্মিক বিস্ফোরণ এড়াতে মোমবাতির পরিবর্তে ব্যাটারি-চালিত ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করতে হবে।
আরো পড়ুন: বাসা-বাড়ির রান্নায় সিলিন্ডার গ্যাসের খরচ কমাবেন যেভাবে
২৩৮ দিন আগে
প্রসঙ্গ জেনারেশন জেড: কারা এই জেন জি প্রজন্ম, কী তাদের বৈশিষ্ট্য
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংস্কৃতি ও সভ্যতা বিকাশের মঞ্চে যুগপৎভাবে বদলেছে মানুষের জীবনধারণ ও দৃষ্টিভঙ্গি। পুরোনো জায়গায় নতুনের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রগতিশীলতার প্রাণ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে ঐতিহ্যের ভিত্তি প্রস্তরে। সময়ের এই ধারাকে অব্যাহত রাখার তেমনি এক নিদর্শন জেনারেশন জেড। এই শব্দ যুগল যুগের চাহিদার সঙ্গে সমসাময়িক জীবনধারার সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে মানব সভ্যতার এক বিশাল শ্রেণীকে। চলুন, বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে জেন জি নামের এই প্রজন্ম নিয়ে চিত্তাকর্ষক কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
জেনারেশন জেড কী
১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে এবং ২০১০ এর দশকের প্রথম দিকে জন্মগ্রহণকারীদের বলা হয় জেনারেশন জেড বা সংক্ষেপে জেন জি। আরও সুস্পষ্ট করে বলতে গেলে ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত যারা জন্মগ্রহণ করেছন তারা এই প্রজন্মের অন্তর্ভুক্ত। ২০২৪ সালের হিসেবে সবচেয়ে বড় জেড সদস্যের বয়স ২৭, আর সর্বকনিষ্ঠজনের বয়স ১২ বছর।
এদের পূর্ববর্তী প্রজন্মের ক্যাটাগরি জেনারেশন ওয়াই, যাদেরকে বলা হয় মিলেনিয়াল্স। এদের জন্ম ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে।
প্রজন্ম জেডের আরও একটি নাম হচ্ছে জুমার্স। যার মধ্যে লুকিয়ে আছে জেডের পূর্বসূরীদের নাম। এখানে ‘জেড’ অক্ষরের সঙ্গে মূলত ‘বুমার্স’ শব্দের সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে। বুমার্স হলো বেবি বুমার্সের সংক্ষিপ্ত রূপ, যে প্রজন্মের আগমন ঘটে ১৯৪৬ থেকে ১৯৬৪ সালে। এদের পরে আসে জেনারেশন এক্স। সেই অর্থে বুমারদের বলা যেতে পারে জেন জি’দের প্রপিতামহ। জেন জি-এর উত্তরসূরিরা জেনারেশন আলফা নামে অভিহিত, যাদের জন্মকাল ২০১০ থেকে ২০২৪।
জেড প্রজন্মের অন্যান্য নামের মধ্যে রয়েছে আই বা ইন্টারনেট জেনারেশন, হোমল্যান্ড জেনারেশন, নেট জেন, ডিজিটাল নেটিভস বা নিও-ডিজিটাল নেটিভস, প্লুরালিস্ট জেনারেশন, এবং সেন্টিনিয়াল্স।
ইন্টারনেট এবং পোর্টেবল ডিজিটাল প্রযুক্তির মধ্যে বেড়ে ওঠার কারণে প্রযুক্তিগতভাবে অক্ষর-জ্ঞান না থাকলেও এরা ডিজিটাল নাগরিক হিসেবে অভিহিত হয়। পূর্ববর্তী প্রজন্মের চিন্তা-চেতনা যেখানে নিবদ্ধ ছিল বইয়ের মাঝে, সেখানে এই প্রজন্মের প্রত্যেকেই ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের প্রতি আসক্ত।
আরো পড়ুন: কলকাতায় কেনাকাটার জনপ্রিয় স্থান
প্রজন্ম জেড-এর চমৎকার কিছু বিষয়
সোশ্যাল মিডিয়ার প্রথম প্রজন্ম
১৯৯৭ সালে চালু হয় প্রথম সোশ্যাল মিডিয়া সাইট সিক্স ডিগ্রি। যেখানে ব্যক্তিগত প্রোফাইল তৈরিসহ ছবি আপলোড, শেয়ার এবং বন্ধুত্ব করা যেত। এরই বর্তমান রূপ এখনকার এক্স (যা আগে টুইটার নামে পরিচিত ছিল) এবং ইন্সটাগ্রাম।
এ প্রজন্ম স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের যুগ থেকে ফেসবুক ও ইউটিউবের যুগের রূপান্তরটা দেখেছে। সাক্ষী হয়েছে কাগুজে পত্রিকার উপর নির্ভরতা এবং ধারাবাহিকের নতুন পর্বের জন্য পুরো সপ্তাহ ধরে অপেক্ষার অবসানের। স্ন্যাপ চ্যাট এবং টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোর মতো দ্রুত, আকর্ষণীয় এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ কন্টেন্ট স্বাদ দিচ্ছে তাৎক্ষণিক ইচ্ছে পূরণের। এই মনোভাব পরিচালিত করছে মনোযোগের দ্রুত পরিবর্তনের দিকে। এতে করে দ্রুতগতির জীবনধারায় পাল্টে যাচ্ছে বিনোদন, সামাজিকীকরণ, এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম।
বিশেষত প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ডগুলোর পাশাপাশি নতুন কোম্পানিগুলোও গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য অগ্রসর হচ্ছে তাদের মনস্তাত্ত্বিক নিরীক্ষণে। যোগাযোগ, লেনদেন ও প্রতিক্রিয়া জানানোর কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায় অপরিহার্য পুঁজিতে পরিণত হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। মানুষের আচরণগত পরিবর্তনের সূত্রে সৃষ্ট এই বিপণন ব্যবস্থা পাল্টা অবদান রাখছে সেই আচরণকে বজায় রাখতে।
আরো পড়ুন: সার্কেডিয়ান রিদম বা দেহ ঘড়ি নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতনতা
শিশু, তরুণ ও বৃদ্ধ নির্বিশেষে জেন জি’র প্রত্যেকে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে ভীষণ সচেতন। উদ্বেগজনিত ব্যাধি, বিষন্নতা, বাইপোলার ডিসঅর্ডারের মতো সমস্যাগুলো নিয়ে এতটা খোলামেলা আলোচনায় আগে কখনও দেখা যায়নি। নিদেনপক্ষে পূর্ববর্তী প্রজন্মগুলোতে এসব ব্যাপারে একরকম হীনমন্যতা ও ভয় কাজ করত। এখানে অনেকাংশে ভূমিকা পালন করেছে সামাজিক মাধ্যম এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলো। এগুলো নিয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ এবং তারকাদের উন্মুক্ত কথপোকথোন মানসিক সমস্যা নিয়ে আলোচনাকে স্বাভাবিক করে তুলেছে।
বিষয়টি শুধু আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। জেন জি সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়াতে অভ্যস্ত। এর ধারাবাহিকতায় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বাস্থ্যগত সংস্থানগুলো, অভিজ্ঞ পরামর্শকেন্দ্র, এবং মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন তারই দৃষ্টান্ত। এ ছাড়াও কর্মক্ষেত্রে কাজের সময়সীমা এবং পরিমাণ নির্ধারণের ব্যাপারেও আলাদাভাবে গুরুত্ব পায় কর্মচারীর মানসিক অবস্থা। এই সার্বিক ব্যবস্থার আঙ্গিকে পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেও সমস্যাগুলো জনসমক্ষে উঠে আসে ইতিবাচকভাবে। একই সঙ্গে উত্তরণের জন্য থাকে মানসিক সমর্থন এবং ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুস্থতা নিশ্চিতকরণের প্রচেষ্টা।
আর্থিক বিষয়গুলোর প্রতি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ
যুগ যুগ ধরে বাজারগুলোতে অস্থিরতা, মুদ্রাস্ফীতি, এবং প্রাকৃতিক সম্পদে ঘাটতির মতো নিয়ন্ত্রণহীনতা সাক্ষী হয়েছে জেন জি। এমনি অনিশ্চয়তার ভেতর দিয়ে তারা সংগ্রাম করতে দেখেছে মিলেনিয়াল বাবা-মাদের। আর্থিক বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে বাস্তববাদীতা মূলত এরই ফলাফল। শুধুমাত্র ব্যয়ের চেয়ে সঞ্চয়কে অগ্রাধিকার দেওয়াই নয়, অর্থের সময় মানকে তারা ভীষণভাবে আমলে নেয়। তাছাড়া ২১ শতকের শুরু থেকে মুদ্রাস্ফীতি হারের উত্থান-পতন সতর্ক করে তুলেছে তাদেরকে। এগুলোর বিধ্বংসী প্রভাব তারা দেখেছে ছাত্র ঋণ, বাড়ি ভাড়া, এবং নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যে। তাই তারা সবকিছুর ওপরে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জকে অগ্রাধিকার দেয়। তাছাড়া এদের মধ্যে আশাবাদী জনগোষ্ঠীরা জীবনের কৃতিত্ব হিসেবে আর্থিক স্বাধীনতাকে প্রাধান্য দেয়।
প্রতিনিয়ত বিকশিত প্রযুক্তির কারণে তারা অ্যাপ ও সফ্টওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের ব্যয়, বাজেট কার্যকরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারে। অর্থের সময় মূল্যকে টেক্কা দিতে অল্প বয়স থেকেই দেখা যায় বিনিয়োগের প্রবণতা। সবচেয়ে যুগান্তকারী বিষয় হচ্ছে, পূর্ববর্তী প্রজন্ম যেখানে ঋণের প্রতি দুর্বলতা ছিল, সেখানে জুমাররা ঋণের সুবিধাকে সর্বদা পাশ কাটাতে পছন্দ করেন। এই আর্থিক বিচক্ষণতা এমনকি তাদের ছোট ছোট ব্যয়ের ক্ষেত্রেও পরিলক্ষিত হয়।
আরো পড়ুন: ঢাকার জনপ্রিয় ১০টি বুক ও স্টাডি ক্যাফে: বইপ্রেমীদের স্বর্গরাজ্য
ইন্টারনেট জুড়ে সামাজিক মাধ্যম ও রিভিউ সাইটগুলো যে কোনো কেনাকাটার আগেই পণ্যগুলো নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে গবেষণার প্রয়াস যোগায়। এই প্রয়াস বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি এবং চাকরি খোঁজা পর্যন্ত বিস্তৃত। তারা মূলত আর্থিক স্বচ্ছলতাকে কেন্দ্র করে একটি সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যকে সামনে রেখে তাদের আগ্রহকে পরিচালিত করে। ফলে বাস্তববাদী শিক্ষা, অনলাইন সম্পদের ব্যবহার, বিনিয়োগ এবং উদ্যোক্তা সম্পর্কে জানার জন্য তারা ভিড় জমায় প্রাসঙ্গিক প্ল্যাটফর্মগুলোতে।
২৫৩ দিন আগে
আম্বানিপুত্রের বিয়ের চূড়ান্ত আয়োজন: অভিন্ন ঐতিহ্যে দেশি-বিদেশি তারকা ও বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিরা
ভারতীয় ঐতিহ্যের সব রঙ, দেশ-বিদেশের জনপ্রিয় তারকা আর বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব। অনন্ত আম্বানি ও রাধিকা মার্চেন্টের রাজকীয় বিয়ের চূড়ান্ত আয়োজনে এগুলোর সবই থাকা চাই। শত হলেও এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানির কনিষ্ঠ পুত্রের বিয়ে বলে কথা। বর ও কনের চার হাত এক করার লক্ষ্যে গত ৩ জুলাই থেকে যেন তারই মহড়া চলছে। উৎসবের মধ্যমণি অনন্ত-রাধিকা হলেও এখানে এমন সব তারকা ও ব্যক্তিদের একত্রিত করা হয়েছে, যা শুধুমাত্র আম্বানিদের পক্ষেই করা সম্ভব। চলুন, সেই পরিচিত মুখগুলোর পাশাপাশি চোখ ধাঁধানো এই আয়োজনের বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
২৭৯ দিন আগে
পশু কুরবানির পর ঘর ও আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখবেন যেভাবে
পবিত্র ঈদুল আজহায় বিপুলসংখ্যক পশু কুরবানি হয় দেশজুড়ে। স্বভাবতই এখানে গুরুত্ববহ হয়ে ওঠে কুরবানি-পরবর্তী শহর পরিষ্কারের বিষয়টি। পশু জবাইয়ের পর সঠিকভাবে তার বর্জ্য নিষ্কাশন না হওয়ার দরুণ শহরবাসীকেই পোহাতে হয় হাজারও ভোগান্তি। বিগত বছরগুলোতে মশাবাহিত রোগের উপদ্রব বাড়াতে পরিবেশজনিত এই জটিলতা আশঙ্কাজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া ধর্মীয় দিক থেকেও পরিবেশ আবর্জনামুক্ত রাখা প্রত্যেক কুরবানি পালনকারীর ঈমানি দায়িত্ব। তাই চলুন, পশু কুরবানির পর বাসা ও তার চারপাশ বর্জ্যমুক্ত রাখার কয়েকটি উপায় জেনে নেওয়া যাক।
ঈদুল আজহায় পশু কুরবানির পর বর্জ্য অপসারণের ১০টি উপায়
একটি উপযুক্ত স্থান নির্বাচন
শহর বা গ্রাম নির্বিশেষে একটি নির্দিষ্ট এলাকার লোকজন আলাদাভাবে কুরবানি না দিয়ে কয়েকজন একসঙ্গে হয়ে একটি নির্দিষ্ট স্থানে কুরবানি করা উত্তম। মূলত বসতবাড়ি থেকে যথাসম্ভব দূরে এমন একটি স্থান নির্বাচন করা উচিৎ, যেখান থেকে সহজেই পশুর বর্জ্য নিষ্কাশন করা যায়। এতে করে সিটি করপোরেশন কর্মীরা দ্রুত সময়ে বর্জ্য অপসারণের কাজ করতে পারবে।
এ সময় খেয়াল রাখা উচিৎ, স্থানটি যেন চলাচলের রাস্তার উপরে না হয়। সাধারণত খোলামেলা পরিবেশে পশুর জীবাণু বেশি ছড়াতে পারে না।
যারা সবার সঙ্গে একত্রিত হয়ে নির্দিষ্ট স্থানটিতে কুরবানি দিতে পারছেন না, তারা তাদের পশুর বর্জ্যগুলো নিজ দায়িত্বে কাছাকাছি ডাস্টবিনে ফেলে আসবেন।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহায় ডিপ ফ্রিজ খুঁজছেন? যেসব বিষয় জানা প্রয়োজন
পশুর রক্ত পরিষ্কার
পশু জবাইয়ের পর প্রথম কাজ হচ্ছে পশুর রক্ত সরিয়ে ফেলা। এর জন্য রক্ত সম্পূর্ণ ঝরে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অতঃপর পর্যাপ্ত পানি দিয়ে রক্ত ধুয়ে ফেলতে হবে। রক্ত অপসারণের জন্য কাছাকাছি কোনো ড্রেন ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন রক্তের সঙ্গে কোনো কঠিন বর্জ্য ড্রেনের মুখ বন্ধ করে না দেয়। তরল রক্ত দ্রুত সরিয়ে ফেলার পর রক্তের দাগ ও দুর্গন্ধ দূর করার জন্য জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে।
বর্জ্য খোলা স্থানে না রাখা
পশুর রক্তসহ অন্যান্য কঠিন ও তরল বর্জ্য উন্মুক্ত স্থানে রাখা ঠিক নয়। কেননা এতে রক্ত আর নাড়ি-ভুঁড়ি বাতাসের সংস্পর্শে এসে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুর্গন্ধ ছড়ায়। এগুলো গর্ত করে ভেতরে রেখে মাটিচাপা দিতে হবে, অথবা সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িতে রেখে আসতে হবে। গাড়ি আসার আগ পর্যন্ত কোনো পলিব্যাগে ভরে কাছাকাছি কোনো ডাস্টবিনে যেয়ে ফেলে আসা যেতে পারে।
গর্ত করা
পশুর দেহের উচ্ছিষ্ট ও বর্জ্য নিষ্কাশনের উত্তম পন্থা হলো মাটিতে গর্ত করে পুঁতে ফেলা। অন্যথায় যেখানে-সেখানে ফেলে রাখলে তাতে পচন ধরে মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়াবে। এই পরিবেশ দূষণ পরবর্তীতে নানান রোগের কারণ হতে পারে। তাই কুরবানির আগেই নিকটবর্তী কোনো মাঠ বা পরিত্যক্ত জায়গায় ৩ থেকে ৪ ফুট গর্ত তৈরি করে রাখা উচিৎ।
জবাই পর্ব শেষে পশুর শরীরের যাবতীয় উচ্ছিষ্ট এক করে সেই গর্তে ফেলে তার ওপর ব্লিচিং পাউডার, চুন, বা ফাম-৩০ নামক জীবাণুনাশক ছড়াতে হবে। সবশেষে খড়কুটা ও কাঁটা জাতীয় কিছু ডালপালা দিয়ে আবৃত করে শক্ত করে মাটিচাপা দিতে হবে। এটি এক দিক থেকে বর্জ্য অপসারণের জন্য কার্যকর, অন্যদিকে জৈব সার হিসেবে শস্যক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য উপযোগী। মাটিচাপার দেয়ার পর তার ওপর কিছু মোটা তুষ ছিটিয়ে দিলে পরে কুকুর বা বিড়াল মাটি গর্ত করে ময়লা তুলতে পারবে না।
আরও পড়ুন: ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
৩০৭ দিন আগে