বিশেষ সংবাদ
রাসায়নিক গুদাম: পুরান ঢাকার মানুষ বাস করছে বোমার ওপর
ঐতিহ্যবাহী খাবার, শতাব্দী পুরনো স্থাপনা আর সরু অলিগলির জন্য পরিচিত পুরাতন ঢাকায় মানুষ এই শত শত রাসায়নিক গুদামের রূপে 'বোমা' নিয়ে বাস করছে।
শীঘ্রই দেশে ‘করোনাভাইরাস ধ্বংসকারী’ নাকের স্প্রে বাজার আসছে
মহামারি করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য যখন একটি প্রতিযোগিতা চলছে তখনই এই ভাইরাসকে ধ্বংস করার সক্ষমতা আছে এমন একটি নাকের স্প্রে তৈরি করার দাবি করছে বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিকেল মেজারমেন্টস-বিআরআইসিএম।
এটির নাম রাখা হয়েছে ‘বঙ্গোসেইফ ওরো নেইজল স্প্রে’।
আরও পড়ুন: করোনাকালে অনলাইনে প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরামর্শ ‘সহজ হেলথে’
বিআরআইসিএমের মহাপরিচালক ড. মালা খান ইউএনবিকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস ধ্বংস করার সক্ষমতা আছে এমন একটি নাকের স্প্রে তৈরি করার কাজ করছি আমরা।’
তিনি বলেন, এই স্প্রে তৈরি করার বিষয়ে আমরা এখন বিস্তারিত জানাতে চাই না। আমরা পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়ে বাজারে আসতে চাচ্ছি।
মালা খান বলেন, নাকের এই স্প্রে গত ২৪ মার্চে বিএমআরসি থেকে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের অনুমতি পেয়েছি আমরা। এখন ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে। খুব শিগগিরই ক্লিনিকাল ট্রায়ালের কাজ শেষ করব আমরা।
নাকের এই স্প্রে কবে নাগাদ বাজারে আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা একদম প্রস্তুতি নিয়ে বাজারে আসতে চাই। এখন বিস্তারিত বলতে চাই না। কবে বাজারে আসবে সেই তারিখ এখনও নির্ধারণ হয়নি। তবে খুব শিগগিরই বাজারে আসবে।’
মহাপরিচালক বলেন, করোনাকালীন সময়ে মানুষের কথা চিন্তা করে করোনা রোধে কি করা যায় তা আমরা অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করে আসছি। আমরা আশা করছি, এই স্প্রেটি মানুষের অনেক কাজে আসবে।
আরও পড়ুন: করোনার ১ম ডোজের টিকাদান সোমবার থেকে স্থগিত
স্প্রেটির মূল্য সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি তৈরি করতে বা উৎপাদন খরচ কত টাকা হয় তা বুঝে মূল্য নির্ধারণ করা হবে। তবে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই থাকবে।
‘বঙ্গোসেইফ ওরো নেইজল স্প্রে বাজারজাতকরণে কোন মুনাফা করার উদ্দেশ্য আমাদের নেই। মানুষের উপকারে আসবে চিন্তা করেই এটি তৈরি করা হচ্ছে,’ বলেন মহাপরিচালক।
কি পরিমাণ স্প্রে উৎপাদন করার সক্ষমতা আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী আমরা প্রোডাকশন করতে পারব ইনশাআল্লাহ।’
বিআরআইসিএম থেকে জানা যায়, করোনাভাইরাস নাক, কান, গহ্বর ও শ্বাসনালীতে অবস্থান করে। যদি এই স্প্রেটি নাক, কান ও গহ্বরে দেয়া হয় তাহলে করোনাভাইরাস ধ্বংস করার সক্ষমতা রয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিরাও এই স্প্রে ব্যবহার করে সুফল পাবেন।
বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি
দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আবারও বেড়েছে বলে রবিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, এক দিনে মহামারি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১০১ জন মারা গেছেন। এনিয়ে মোট মৃত্যু ১১ হাজার ৫৩ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: করোনায় একদিনে আবারও শতাধিক মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ২৯২২
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৯২২ জনের শরীরে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে মোট শনাক্ত ৭ লাখ ৪৫ হাজার ৩২২ জনে পৌঁছেছে।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
বাংলাদেশ বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দিন দিন পরিস্থিতি অবনতির দিকেই যাচ্ছে। আগামী জুন মাসের আগে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দল বাংলাদেশ কমো মডেলিং গ্রুপ।
বাংলাদেশ ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত দলটি গাণিতিক মডেলিং ব্যবহার করে করোনার পূর্বাভাস জানার চেষ্টা করেন। গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে আগামী মে মাসের শেষ নাগাদ করোনা পরিস্থিতি বর্তমান অবস্থাতেই থাকবে। তবে জুন মাস থেকে পরিস্থিতি উন্নতি হবার সম্ভাবনা রয়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি : ফের চালু হল ‘সিএমপি বিদ্যানন্দ ফিল্ড হাসপাতাল’
তবে স্থানীয় কিছু বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ের দিকে যাচ্ছে। তাদের মতে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার লকডাউন কার্যকর করার আগেই অনেক মানুষ রাজধানী ছেড়ে নিজ জেলায় চলে যায়। এর ফলে ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতেও এখন দ্রুত করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে।
রানা প্লাজা ধস : ৮ বছরে কেমন আছেন ঠাকুরগাঁওয়ের ৩ পরিবার
ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার বলিদ্বারা গ্রামের বাসিন্দা মাসুদা। রানা প্লাজা ধসে স্বামী আলতাফ (৩৫) মারা যান। সে সময় মাসুদা নিজেও আহত হয়েছিলেন। গত ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের আট বছর পূর্তি। এত বছরেও সেই দুঃসহ স্মৃতি ভুলতে পারেননি।
এছাড়াও একই গ্রামের শিল্পী আক্তার (২৩) ও আঞ্জু বেগম (২৬) নামে আরও দুই নারী পোশাককর্মী নিহত হন। ভুক্তভোগী এই সব পরিবারের সাথে কথা বললে উঠে আসে সে ভয়াবহ দুঃসহ দিনটির কথা।
মাসুদা বলেন, ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের দিন। সেদিনের কথা কীভাবে ভুলি! বলতে বলতেই ছুটে গেলেন ঘরে। হাতে তুলে নিলেন আলতাফের একটি ছবি। ততক্ষণে আলতাফের ছেলে মাসুদ রানা (১৮) এসেছেন সেখানে। এই ছেলের কথাই এরপর মাসুদা বলতে লাগলেন। জন্মের পর থেকেই ছেলের হৃদরোগ ধরা পড়ে। তাই ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসের দিকে দুজনেই স্থানীয় একজনের সহায়তায় সাভারের রানা প্লাজায় পোশাক কারখানায় কাজ নেন। ছেলে-মেয়েকে দাদা-দাদির কাছে রেখে তারা সাভারে যান। স্বামী-স্ত্রী মিলে মাসে ১২-১৪ হাজার টাকা আয় করতেন। খরচ শেষে বাকিটা পাঠাতেন বাড়িতে। স্বামী আলতাফ হোসেন রানা প্লাজার সপ্তম তলায় আর মাসুদা কাজ করতেন তৃতীয় তলায়।
আরও পড়ুন: রানা প্লাজা দুর্ঘটনার ৮ বছর
তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টায় ভবনধস হয়। বেলা একটার দিকে উদ্ধার হন মাসুদা। বুকে আঘাত পাওয়া মাসুদাকে নিয়ে যাওয়া হয় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু স্বামীর চিন্তায় অস্থির হয়ে দুই ঘণ্টা পর হাসপাতাল ছেড়ে আবারও ধ্বংসস্তূপের সামনে আসেন মাসুদা। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছিলেন না স্বামীকে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে অজ্ঞান হয়ে যান আহত মাসুদা। স্থানীয় লোকজন তাকে ধরে তার ভাড়া বাসায় দিয়ে আসেন। সেখানে রাত ৮টার দিকে মাসুদার মুঠোফোনে ধসে পড়া ভবনের ভেতরে আটকে পড়া একজন শ্রমিকের কল আসে। তিনি মাসুদাকে বলেন, হাতে-পায়ে বিম চাপা অবস্থায় আটকে আছেন আলতাফ। সেখান থেকে তিনি শুধু বারবারই মাসুদার নাম বলছেন। আটকে পড়া ওই শ্রমিক মাসুদাকে অনুরোধ করেন, তাকে ও আলতাফকে উদ্ধারের জন্য। সেদিন ধ্বংসস্তূপে ছুটে গিয়ে এক সেনা সদস্যের সহায়তায় ধসে পড়া ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়েছিলেন মাসুদা। স্বামীর অবস্থান জেনে ডাকাডাকি শুরু করেন। একসময় স্বামীও সাড়া দেন। আলতাফ তখন কেঁদে বলেন, ‘হাত-পা কাটপার হলেও কাটো। মুই ভিক্ষা করি খাইম। তাও ছাওয়ালাক তো দেখতে পাম।’ কাছে গিয়ে মাসুদা স্বামীর মুখে-মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। উদ্ধারকর্মীরা মাসুদাকে বারবার বের হয়ে যেতে তাড়া দিচ্ছিলেন। তখন আলতাফ তাকে বলেছিলেন, তাঁর মুখে একটু পানি দিয়ে যেতে। মাসুদা মুখে পানি দিয়ে উদ্ধারের আশ্বাসে এরপর উদ্ধারকর্মীদের তাগাদায় ফিরে আসেন মাসুদা। ২৫ এপ্রিল মারা যান আলতাফ। ২৬ এপ্রিল তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিজেকে সামলে নিয়ে মাসুদা বলেন, ছেলেটার আর লেখাপড়া হলো না। সংসারের কষ্ট দেখে নিজেও রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করেছেন। আর মেয়েটাকে পড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মাসুদা জানান, আলতাফের লাশ নেয়ার সময় ২০ হাজার টাকা আর পরে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এক লাখ টাকা পেয়েছে পরিবারটি।
এই গ্রামেরই শিল্পী আকতার ও আঞ্জু আক্তারের বাড়ি। তাদের পরিবারের সদস্যরাও দুঃসহ দিনটির কথা ভুলতে পারেননি।
শিল্পীর মা শেফালি বেগম বলেন, কারখানার কাজের ফাঁকে ডিগ্রি পড়ছিলেন শিল্পী। এলাকার একজন পরিচিত রানা প্লাজা ধসে পড়ার খবর জানিয়েছিল। শুনেই ঢাকার গাড়িতে চড়ে বসেন শিল্পীর বাবা। অনেক খোঁজাখুঁজির পর মেয়েকে না পেয়ে আবার ফিরে আসেন তিনি। রানা প্লাজা ধসের ১৬ দিন পর গ্রামের একজন তাকে মুঠোফোনে জানান, শিল্পীর মোবাইল নম্বর খোলা আছে। তখনই মেয়ের নম্বরে ফোন দেন তিনি। একজন নারী ফোন ধরেন।
এ সময় কথা কেড়ে নিয়ে শিল্পীর বাবা ফাইজুল ইসলাম বলেন, হামি বললাম, শিল্পী, তুই কই? ওপার থেকে নারীকণ্ঠ বলে, “আমি শিল্পী না। শিল্পীর লাশ মিলেছে। পরে অধরচন্দ্র বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে শিল্পীর লাশ বুঝিয়ে দেয়া হয়।’
ফাইজুল বলেন, তত দিনে শিল্পী প্রায় কঙ্কাল হয়ে গেছে। লম্বা লম্বা চুল ও পায়ের আংটি দেখে চিনতে পেরেছি। মেয়েটা এতই লক্ষ্মী ছিল, তাকে কিছুতেই ভুলতে পারি না।
আরও পড়ুন: রানা প্লাজার মালিক রানার জামিন স্থগিত, বাতিল প্রশ্নে রুল
শিল্পীর মা শেফালী বলেন, মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় সরকার এক লাখ টাকা দিয়েছে। তাই দিয়ে ছেলের জন্য কিছু জমি বন্ধক নিয়েছেন।
এদিকে বিয়ের কয়েক বছর পর বনাবানি না হওয়ায় স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় আঞ্জু বেগমের। ছেলে মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাদের বাবার বাড়িতে রেখে পোষাক কারখানায় কাজ করতে যান তিনি। প্রতি মাসে বেতনের একটা অংশ পাঠাতেন। সে টাকাতেই চলতো সংসার। রানা প্লাজার ধসের দিনই আঞ্জুও মারা যান।
তার বোন বুলি বেগম বলেন, আঞ্জুর মারা যাওয়ার পর থেকে সংসারে অভাবে নেমে আসে। অভাবের কথা ভেবে আঞ্জুর মেয়ে মৌসুমী (১৫) পোষাক কারখানায় কাজ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ চলে গেছেন।
ছেলে রাজু বলে, মায়ের মুখ খানি মনে রাখতে বার বার মায়ের ছবিটা দেখি।
এই পরিবারটিও দাফনের জন্য ২০ হাজার, পরে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এক লাখ টাকা পেয়েছেন বলে জানান আঞ্জুর বাবা আব্দুল মান্নান।
তিনি বলেন, মোর কুনো ব্যাটা নাই। আঞ্জুই আমার কাছত ব্যাটা আছিল।
২৮ এপ্রিলের পর লকডাউন শিথিল করতে পারে সরকার
মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতরের দুই সপ্তাহ আগে ২৮ এপ্রিল থেকে লকডাউনে চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করা হবে।
তবে, এখনও কোনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়নি এবং এই বিধি-নিষেধগুলো কী পরিমাণে শিথিল হবে তা এখনই পরিষ্কার নয়।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ইউএনবিকে বলেন, 'এই সিদ্ধান্ত ২৮ এপ্রিল নেয়া হবে।'
তিনি বলেন, 'এমনকি যদি বিধি-নিষেধগুলো শিথিল করা হয়, তবে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে বজায় রাখতে হবে এবং সরকার ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ নীতিটির কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করবে।'
আরও পড়ুন: লকডাউন: ২৫ এপ্রিল থেকে খুলবে দোকান শপিংমল
প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ বলেন, ২৫ এপ্রিল থেকে দোকান ও শপিংমলগুলো পুনরায় চালু হওয়ার পর স্বাস্থ্য নির্দেশিকা নিশ্চিত করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরে দুরুত্ব বজায় রাখি তাহলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমানো সম্ভব। ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিধি-নিষেধ মানলে অনেকটা উপকৃত ফলাফল পাবো আমরা। সে জন্য স্বাস্থ্যবিধির ওপর জোর দেয়া হবে।
গণপরিবহনের নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি
শিথিল লকডাউন কেমন হবে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ জানান, এখানে অনেক বাধা থাকবে না। 'বিদ্যমান বিধি-নিষেধ সীমিত থাকবে। প্রতিদিনের জন্য কিছু গাইডলাইন থাকবে।'
অফিস পরিচালনার বিষয়ে ২৮ এপ্রিলের মধ্যেই একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।
ফরহাদ জানান, তারা গণপরিবহনের চলাচল নিয়ে আলোচনা করছেন। 'এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে, একবার পুনরায় চালু হলে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করা আমরা নিশ্চিত করব।'
গণপরিবহনে মাস্ক পরা এবং যথাযথ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো স্বাস্থ্যবিধি প্রায়শই উপেক্ষা করা হয়।
আরও পড়ুন: লকডাউন: ঢাকার রাস্তায় প্রাইভেট কারের চলাচল বৃদ্ধি
যদিও লকডাউন চলাকালীন গণপরিবহন চলাচল বন্ধ ছিল, তবুও সরকার প্রথম ধাপের লকডাউনের তৃতীয় দিন ৭ এপ্রিল সিটি করপোরেশন অঞ্চলে এর কার্যক্রম পরিচালনা করার অনুমতি দেয়।
২৫ এপ্রিল থেকে পুনরায় খুলছে দোকানপাট
কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে দোকান ও শপিংমলগুলো বন্ধ ছিল।
তবে, দোকানদার ও ব্যবসায়ীরা আবার ব্যবসা চালু করার দাবিতে রাস্তায় বিক্ষোভ করেন। তাদের যুক্তি দেখায়, গত বছর লকডাউনের সময় তাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ঈদ-উল-ফিতর সাধারণত ব্যবসায়ের ব্যস্ততম সময়। কিন্তু, কোভিডের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে গত বছরের ঈদ উদযাপিত হয়। এতে ব্যবসায়ে বড় ক্ষতি হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের যুক্তি গত বছরের অবস্থার পুনরাবৃত্তি তাদের জন্য ক্ষতিকর হবে। তাই, সরকার তাদের দাবি মেনে নিয়ে এপ্রিল ৯ থেকে ১৩ এপ্রিল সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করার অনুমতি দেয়।
আরও পড়ুন: লকডাউন ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি, প্রজ্ঞাপন জারি
শুক্রবার, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ একটি নোটিশ জারি করেছে যেখানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার শর্তে ২৫ এপ্রিল (সকাল ১০টা থেকে ৫টা) শপিংমলগুলো খোলা রাখার অনুমতি দেয়া হয়।
সবচেয়ে মারাত্মক মাস
করোনাভাইরাস সংক্রমণ এবং মৃত্যু আকস্মিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সরকার প্রথমে ১৮-দফা নির্দেশনা জারি করে। এই পরিস্থিতি এপ্রিলের শুরু থেকে এক সপ্তাহব্যাপী লকডাউন আরোপ করতে সরকারকে বাধ্য করে। তবে এই লকডাউন প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জন করতে ব্যর্থ হওয়ায় সরকার ১১ এপ্রিল থেকে ‘কঠোর লকডাউন’ আরোপ করেছে এবং ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়েছে।
শুধু এপ্রিলেই করোনাতে আক্রান্ত হন ১ লাখ ২৪ হাজার ৯৩৫ জন এবং মারা যান ১ হাজার ৮২৩ জন। এপ্রিলের এই প্রথম ২৩ দিনের মৃত্যুর সংখ্যাই গত তিন মাস জানুয়ারি (৫৬৮), ফেব্রুয়ারি (২৮১) এবং মার্চের (৬৩৮) মোট মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে বেশি।
আরও পড়ুন: ঈদে শিথিল হতে পারে লকডাউন: কাদের
১৬ এপ্রিল থেকে ১৯ এপ্রিলের মধ্যে দেশে করোনায় প্রতিদিন ১০০ জন মারা গেছেন। পরবর্তী তিন দিনে মৃতের সংখ্যা ৯০-এরও বেশি ছিল।
এই মাসে করোনাভাইরাসে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা সাত হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন আগামী জুন নাগাদ দেশের কোভিড-১৯ পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে।
সংস্কারের পর কেমন রূপে ফিরবে টিএসসি?
টিএসসি নামে অধিক পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬১ সালে। এবছর ঢাবির শতবর্ষপূর্তী উপলক্ষে টিএসসির মূল স্থাপনা ঠিক রেখে নতুনভাবে সংস্কার করা হবে।
ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গণপূর্ত অধিদপ্তরের তৈরি নতুন নকশার প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে। যদিও এর কাজ শুরু হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের পর।
উল্লেখ্য, এর আগে গণপূর্ত অধিদপ্তর পুরো টিএসসি ভেঙে নতুনভাবে করার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু এই নিয়ে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিলে সেই পরিকল্পনা বাদ দেয়া হয়।
এরপর কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় গণপূর্ত অধিদপ্তর মূল স্থাপনা ঠিক রেখে সংস্কারের নতুন নকশা তৈরি করে, যা উভয় পক্ষের বেশ কয়েকটি সভার মাধ্যমে গৃহীত হয়।
গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী ঢাকা মেডিকেল কলেজ, টিএসসি এবং শাহবাগের পাবলিক লাইব্রেরি সংস্কারের পরিকল্পনার কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমরা টিএসসিকে আধুনিক ভাবে তৈরি করতে চাই।’
দেখতে কেমন হবে নতুন টিএসসি ভবন?
নতুন খসড়া নকশা অনুযায়ী, টিএসসির মূল স্থাপনা ঠিক রেখে পূর্বের সুইমিং পুলের জায়গা দশতলা নতুন একটি ভবন তৈরি করা হবে।
টিএসসির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সৈয়দ আলী আকবর ইউএনবিকে বলেন, ‘বর্তমান স্থাপনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে নতুন স্থাপনাটি তৈরি করা হবে। টিএসসি-ভিত্তিক সংগঠনগুলো জন্য আধুনিক প্রযুক্তিসহ আলাদা রুমের ব্যবস্থা, রিহার্সালের জন্য আলাদা জায়গা, ইনডোর খেলার সুবিধা, আলাদা ক্যাফেটেরিয়া, দু’টি অডিটোরিয়াম, ব্যায়ামাগার, শিক্ষকদের লাউঞ্জ, দুই-তলা গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থাসহ আরও নানান উন্নত সুবিধা এই ভবনটিতে রাখা হচ্ছে।’
তিনি জানান, নতুন ভবনের প্রবেশ গেইট হবে টিএসসির পশ্চিম দিক দিয়ে। এছাড়া নির্মাণ কাজ শুরু হবে টিএসসির পেছন দিক থেকে, যেখানে পুরনো সুইমিং পুলের অবস্থান।
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল শাখা এই নতুন নকশা বা কাজের সাথে জড়িত নয়। প্রধানমন্ত্রী যেমন নির্দেশনা দিবেন, সেইভাবে কাজ করবে গণপূর্ত অধিদপ্তর।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রধান স্থপতি মীর মনজুরুর রহমান বলেন, ‘ঢাবির চাহিদামতো আমরা নতুন নির্মিতব্য এই ভবনে সকল সুবিধা যোগ করেছি। দু’টি সম্মেলন কক্ষ, লেকচার হলসহ অন্যান্য সুবিধা সম্বলিত নতুন ভবনের নকশায় সন্তুষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।’
তিনি জানান, পুরনো স্থাপনাটুকুতে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ করা হবে।
এর আগে গত বছরের ১৮ অক্টোবর টিএসসি পরিচালক ঢাবির প্রকৌশল বিভাগের কাছে চাহিদাপত্র জমা দেন, যা পরবর্তীতে গণপূর্ত অধিদপ্তরে পাঠানো হয়।
ঢাবির উপ-উপাচর্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ ইউএনবিকে বলেন, ‘নতুন নকশা অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য। গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে এই নকশা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। তার অনুমতি পাওয়ার পরপর ই কাজ শুরু করা হবে।’
নতুন ভবন সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন মাহির কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক-সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের কেন্দ হলে টিএসসি। যখন এটি তৈরি করা হয়েছিল তখন শিক্ষার্থী ছিল বর্তমানের তুলনায় অনেক কম। বর্তমানে নতুন ভবন তৈরির পরিকল্পনাটি একটি মহৎ উদ্যোগ।’
তবে টিএসসি বর্তমান সৌন্দর্য্য অক্ষুন্ন রাখার ব্যাপারে ঢাবি কর্তৃপক্ষকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান মাহি।
আরও পড়ুন: টিএসসি সম্প্রসারণ: শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মতামত চেয়েছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী এবং সমাজতান্ত্রিক বাম ছাত্র জোটের সভাপতি সালমান সিদিক্কি বলেন, ‘টিএসসিতে আধুনিক সুযোগ সুবিধার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা আধুনিকায়নের বিপক্ষে না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে খেয়াল রাখতে হবে যেন ঢাবির ইতিহাস এবং সৌন্দর্য বিনষ্ট না হয়।’
এই বাম ছাত্র নেতা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক সমস্যাসহ আরও বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। কর্তৃপক্ষের উচিৎ আগে সেসকল বিষয় নিয়ে কাজ করা।
এক নজরে টিএসসি
টিএসসিকে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং আধুনিক স্থাপত্যশিল্পের অন্যতম নিদর্শন হিসেবে বিবেচনা করা।
গ্রিক স্থপতি কনস্ট্যান্টিন ডক্সিয়াডেস ষাটের দশকের শুরুতে টিএসসির নকশা করেছিলেন। পরবর্তীতে ষাটের দশকের শেষ দিকে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের তথাকথিত উন্নয়নের দশকের (১৯৫৮-৬৮) অংশ হিসেবে এর নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়।
ডক্সিয়াডিস টিএসসির নকশা করার ক্ষেত্রে এ দেশের সংস্কৃতি ও আবহাওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখেছিলেন। গম্বুজ আকৃতির এই টিএসসি কমপ্লেক্স সারা ঢাকা শহরের মধ্যেই এক অন্যন্য স্থাপনা হিসেবে বিবেচিত হয়। এখানেই প্রতিদিন হাজার হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
এর আগেও বেশ কয়েকবার টিএসসির সংস্কার কাজের উদ্যোগ নেয়া হলেও সমালোচনার কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে মূল স্থাপনা ঠিক রেখে টিএসসি সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণ প্রকল্প এখনও আলোর মুখ দেখতে পায়নি।
যশোরাঞ্চলে বোরো ধানের মিষ্টি গন্ধে মাতোয়ারা কৃষক-কৃষাণি
গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমেও বোরোর সোনালি ধানের মিষ্টি গন্ধে মাতোয়ারা যশোরের জনপদ। এ অঞ্চলের কৃষাণ-কৃষাণি আনন্দের সাথে ধান কাটা ও মাড়াই শুরু করেছেন।
এ পর্যন্ত মাত্র ১০ শতাংশ ধান কাটার কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে ৮০ ভাগ ধান কাটা শেষ হবে। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।
যশোর অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ হওয়ায় এ বছর যশোর অঞ্চলের ইরি-বোরো ফলনেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে আগাম জাতের বোরো ধান কাটার উদ্বোধন করলেন কৃষিমন্ত্রী
যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর গ্রামের কৃষক বাবলু বলেন, দেড় বিঘা জমিতে চিকন জাতের (২৮) হাইব্রিড ধান আবাদ করেছিলাম। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। ধান কাটা হয়েছে। এখন বাড়িতে আনার অপেক্ষা। কাঠায় দেড় মণ করে ধান পাবেন বলে তিনি জানান।
একই গ্রামের মোক্তার হোসেন জানান, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ বছর বোরোর ফলন বেশ ভালো হয়েছে। তিনি প্রায় এক একর জমিতে চিকন জাতের (২৮) হাইব্রিড ধান চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু করেছেন। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সব ধান ঘরে চলে আসবে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: হাওরে ৯৯ ও সারা দেশে ৩৯ শতাংশ বোরো ধান কাটা শেষ
জুনের আগে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে না: বিশেষজ্ঞ মতামত
বাংলাদেশ বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দিন দিন পরিস্থিতি অবনতির দিকেই যাচ্ছে। আগামী জুন মাসের আগে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দল বাংলাদেশ কমো মডেলিং গ্রুপ।
বাংলাদেশ ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত দলটি গাণিতিক মডেলিং ব্যবহার করে করোনার পূর্বাভাস জানার চেষ্টা করেন। গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে আগামী মে মাসের শেষ নাগাদ করোনা পরিস্থিতি বর্তমান অবস্থাতেই থাকবে। তবে জুন মাস থেকে পরিস্থিতি উন্নতি হবার সম্ভাবনা রয়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
তবে স্থানীয় কিছু বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ের দিকে যাচ্ছে। তাদের মতে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার লকডাউন কার্যকর করার আগেই অনেক মানুষ রাজধানী ছেড়ে নিজ জেলায় চলে যায়। এর ফলে ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতেও এখন দ্রুত করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে।
আরও পড়ুন: করোনায় ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত কমলেও মৃত্যু বেড়েছে
বাংলাদেশ কমো মডেলিং গ্রুপের সদস্য ড. আবু জামিল ফয়সাল ইউএনবিকে বলেন, “আমাদের পূর্বানুমান অনুযায়ী আগামী মে মাস পর্যন্ত বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতির ঊর্ধ্বগতি বজায় থাকবে। আমাদের মতে, বাংলাদেশ করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আগামী এক মাস ঊর্ধ্বগতি বজায় থাকবে এবং এর দুই সপ্তাহ পর হতে ধীরে ধীরে সংক্রমণ সংখ্যা হ্রাস পাবে।”
ড. ফয়সাল বলেন, মে মাসের আগে হঠাৎ করেই সংক্রমণের হার কমার সম্ভাবনা নেই। তবে করোনায় মৃত্যুর হার নিয়ে বলতে পারছেন না তারা। কেননা, হঠাৎ করেই মৃত্যু সংখ্যা বাড়ছে-কমছে এবং হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। তবে তিনি বলেন, “আমার ব্যক্তিগত অনুমান অনুযায়ী আগামী মে মাসের মধ্যে মৃত্যু সংখ্যা ১২,০০০ ছাড়াবে।”
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যবিধি না মানলে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসবে না: মন্ত্রী
তিনি জানান, সরকারের কাছে তারা এই গবেষণার তথ্য সরবরাহ করেছেন এবং এই তথ্য বিশ্লেষণে কাজ করে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশের আট বিভাগের যৌথ গণস্বাস্থ্য পরামর্শক কমিটির সদস্য ড ফয়সাল বলেন, করোনার এই সংক্রমণ চক্র ভাঙতে কার্যকরী এবং সমন্তির পদক্ষেপ নেয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। শতভাগ মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ প্রতিদিন টেস্ট বৃদ্ধি করা, সঠিক আইসোলেশন এবং কন্টাক্ট ট্রেসিং এর প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন এই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
করোন প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মিরজাদি সেবরিনা ফ্লোরা বলেন, কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর ভাইরাস সংক্রমণের গতি নির্ভর করে। “করোনা নিয়ন্ত্রণে আমরা বর্তমানে যে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি তা যদি মেনে চলতে পারি, তবে আশা করা যায় করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”
তিনি বলেন, করোনায় মৃত্যু সংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু মৃত্যুহার বৃদ্ধি পায়নি। বর্তমান দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগে মৃত্যু হার ছিল ১.৫২ শতাংশ এবং বর্তমানে মৃত্যুহার ১.৪৩ শতাংশে নেমে এসেছে। তার মতে, সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে।
আরও পড়ুন: লকডাউনে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তার দাবি অটোরিকশা, হালকা যানবাহনের কর্মীদের
ফ্লোরা বলেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়া মৃত্যু সংখ্যা কমানোর আর কোনো উপায় নেই। সংক্রমণ রোধে সচেতনতা ও আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
করোনা পরীক্ষা বৃদ্ধি জরুরি
হেল্থ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান এবং গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এম এইচ চৌধুরি (লেনিন) বলেন, অনেক করোনা আক্রান্ত রোগীই শনাক্ত হচ্ছেন না। এসব রোগী নিজের আশপাশে সকলের অজান্তেই করোনা ছড়িয়ে যাচ্ছেন। এ জন্য তিনি করোনা পরীক্ষা সংখ্যা কমে যাওয়াকেই দায়ী করছেন।
তিনি বলেন, “যখন প্রতিদিন গড়ে ৩৩ হাজার করোনা পরীক্ষা হয়েছে, তখন দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৭ হাজার। কিন্তু এখন করোনা পরীক্ষার সংখ্যা ২৫ হাজারের নিচে চলে আসায় গড়ে শনাক্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪ হাজারে। প্রতিদিনই করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে, কিন্তু পর্যাপ্ত পরীক্ষার অভাবে আমরা তা শনাক্ত করতে পারছি না।”
ড. লেনিন মনে করেন দ্রুত শনাক্ত এবং আইসোলেশন নিশ্চিত করার মাধ্যমেই করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের উপদেষ্টা ড. মুজেহারুল হক বলেন, করোন মোকাবিলায় দ্রুত শনাক্ত ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। আইসিইউ-তে চেল যাওয়া রোগীকে বাঁচানো খুব কষ্টসাধ্য বিষয় হিসেবে দেখছেন এই বিশেষজ্ঞ।
অধিক মৃত্যুর কারণ
ড. লেনিনে মতে বর্তমানে সংক্রমণ ছড়ানো করোনার ভ্যারিয়েন্টগুলো দ্রুত পরিবর্তনশীল এবং অত্যন্ত প্রাণঘাতী। তাই গতবছরের তুলনায় এই বছর করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেশি বলে মনে করছেন তিনি।
তিনি বলেন, বর্তমানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া দক্ষিণ আফ্রিকার ভাইরাস টাইপটিতে আক্রান্ত রোগীদের অবস্থা খুব দ্রুত অবনতি হয়। তাদেরকে সঠিক সময়ে অক্সিজেন সরবরাহ করা না গেলে, তাদের অবস্থা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়।
এই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে, অসুস্থ হবার পরও করোনা পরীক্ষা করতে রোগীদের অবহেলাকে অধিক মৃত্যুর অন্যতম কারণ। এছাড়া অতিরিক্ত অসুস্থ না হলে রোগীরা ডাক্তারের পরামর্শও নেন না। অবশ্য ড. লেনিন জানান, গতবছরে করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত অধিকাংশ ওষুধই বর্তমান করোনা ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে সুফল দিচ্ছে না।
মৃত্যু নিয়ন্ত্রণে করণীয় কী ?
করোনায় মৃত্যু নিয়ন্ত্রণে ড. লেনিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, মাস্ক ব্যবহার করা এবং করোনা সংক্রমণের সন্দেহ হলেই টেস্ট করার পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “করোনা পরীক্ষার পর কেউ আক্রান্ত হিসেবে ধরা পড়লে সাথে সাথেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিৎ। এক্ষেত্রে চিকিৎসক যদি হাসপাতালে ভর্তি হবার কথা বলেন, তাহলে কোনো অবস্থাতেই বিলম্ব করা যাবে না।”
করোনায় মৃত্যু নিয়ন্ত্রণ ও সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিতের লক্ষ্যে, সরকারকে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিতসহ প্রয়োজনে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের আহ্বান জানান এই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
‘কে-নাইন’: ঢাকা বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় অন্যন্য এক বাহিনী
ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিত বিমানবন্দরের দায়িত্ব এখন নিরাপদ হাতেই রয়েছে। দেশের প্রধান এবং ব্যস্ততম এই বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য অবশ্যই ধন্যবাদ দেয়া যায় এখানকার প্রশিক্ষিত কুকুর বাহিনীকে (ডগ স্কোয়াড)।
এই স্কোয়াডের দক্ষ কুকুরগুলোর অধিকাংশই জার্মান শেফার্ডর প্রজাতির কুকুর। এটি মূলত জার্মান শেফার্ড এবং ল্যাব্রাডর রিট্রিভার শংকর একটি জাত।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত এয়ার্পোট আর্মড পুলিশ (এএপি) নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য নিজস্ব ডগ স্কোয়াড গঠন করে। আর এই বাহিনীর নাম দেয়া হয়েছে ‘কে-নাইন’।
আরও পড়ুন: শাহজালাল বিমানবন্দরে ১০ হাজার ইয়াবাসহ আটক এক
২০১৭ সালে যুক্তরাজ্য থেকে মাত্র চারটি কুকুর আমদানি করে এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শুরু হয় এই বাহিনীর পথচলা। এর আগে এএপি-কে অন্যান্য বাহিনী ডগ স্কোয়াডের ওপর নির্ভর করতে হতো। ২০১৮ সালে কে-নাইন ফোর্সে শক্তি বাড়ায় আরও চার কুকুর সদস্য। ২০১৯ সালে আরও পাঁচটি কুকুর আনা হলেও এখনো সেগুলোকে কে-নাইনে যুক্ত করা হয়নি।
কে-নাইন সদস্যদের প্রাথমিক দায়িত্ব হল মাদক-বিস্ফোরক খুঁজে বের করা, ক্রাইম সিনে প্রমাণ খোঁজা এবং পুলিশের নির্দিষ্টভাবে টার্গেট করা ব্যক্তিকে আক্রমণ করা। কুকুরগুলোকে অবশ্য বিভিন্নরকম শব্দ সংকেত ও ইশারা মনে রাখারও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
কে-নাইন ডগ স্কোয়াড সম্পর্কে এএপির অ্যাডিশনাল সুপারিসটেনডেন্ট (অপারেশন এবং মিডিয়া) আলমগীর হোসেন ইউএনবিকে জানান, প্রথম দুই ব্যাচের আটটি কুকুরকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে মাদক এবং বিস্ফোরক দ্রব্য খুঁজের বের করার জন্য।
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যেই কে-নাইনের আটটি কুকুরই বিস্ফোরক শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। আমরা অন্য পাঁচটি কুকুরকে এখন মাদক শনাক্তের প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ হল বিমানবন্দর এবং দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’
তিনি জানান, কে-নাইনের কুকুরগুলোকে গত দুই বছর ধরেই প্রশিক্ষণের ওপর রাখা হয়েছে। চলমান এই প্রশিক্ষ কার্যক্রমে সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশের আমেরিকান দূতাবাস।
আরও পড়ুন: বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আপস নয়: প্রতিমন্ত্রী
ঝিনাইদহের ফুলের রাজ্যে আবার করোনার থাবা
তিন বিঘা জমিতে গাঁদা আর দুই বিঘা জমিতে রজনী গন্ধা ফুলের চাষ করেছিলেন হোসেন আলী। প্রায় ১ লাখের বেশি টাকা খরচ করার পর খেতে সবে মাত্র ফুল উঠা শুরু করেছিল। সপ্তাহে গড় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার ফুল বিক্রিও করছিলেন। এভাবেই আরও তিন মাস ফুল বিক্রি করা যেত কিন্তু করোনাকালীন লকডাউনে সব বন্ধ হয়ে গেছে।
রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে এনবিআর
বর্তমান অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে মোট লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৪১ শতাংশ রাজস্ব সংগ্রহ করতে পেরেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। করোনা মহামারির এই চরম প্রতিকূলতার মধ্যেই রাজস্ব আয়ের লক্ষমাত্রা পূরণে আঞ্চলিক কার্যালয় সমূহেকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছে এনবিআর।
বর্তমান পরিস্থিতি কথায় মাথায় রেখে সকলকে লক্ষমাত্রা পূরণে কাজ করতে এবং বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগযোগ করতে আঞ্চলিক অফিসগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ: আইএমএফ
২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাজেটে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট হতে রাজস্ব বোর্ডের মোট আয় ধরা হয়েছিল ১ কোটি ২৭ লাখ ৭৪৭ কোটি টাকা। কিন্তু এ বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ভ্যাট আদায় হয়েছে মাত্র ৫৩ হাজার ৮১ কোটি টাকা, যা মোট লক্ষমাত্রার মাত্র ৪১.৫৫ শতাংশ।
কাজে ধীরগতি
আমদানি খাত থেকে ৪৫ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্র নির্ধারণ করা হলেও এবছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত মাত্র ১৯ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা আদায় করা সম্ভব হয়েছে। শুধু জানুয়ারি মাসেই সংগ্রহ করা হয় ২ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: শুল্ক আদায় প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন করবে এনবিআর
গত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ১৭ হাজার ৮১৪ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে পেরেছিল এনবিআর এবং ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের সংগ্রহ ছিল ২ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা।
মাসিক হিসেবে বর্তমান অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি ১০.৩২ শতাংশ এবং প্রথম সাত মাসের হিসেবে প্রবৃদ্ধি ১০.৩৫ শতাংশ।
অপরদিকে আঞ্চলিক কার্যালয়গুলো থেকে ভ্যাট সংগ্রহের লক্ষমাত্রা ছিল ৮২ হাজার ১৯২ কোটি। কিন্তু এবছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এনবিআর মাত্র ৩৩ হাজার ৪২২ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। কেবল জানুয়ারি মাসেই ৫ হজার ৫৬৬ কোটি টাকার ভ্যাট আদায় করা হয়।
গত অর্থবছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ৩৪ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা এবং শুধু জানুয়ারি মাসেই ৫ হাজার ৭১ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছিল।
আরও পড়ুন: করের আওতা বাড়াতে এনবিআরের সর্বাত্মক চেষ্টা
আঞ্চলিক কার্যালয়গুলো হিসেবে, মাসিক রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি ৯.৭৬ শতাংশ এবং প্রথম সাত মাসের হিসেবে রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়েছে ২.১২ শতাংশ।
রাজস্ব আয়ে করোনা আঘাত
এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকতা ইউএনবিকে বলেন, করোনা মহামারির মধ্যে লক্ষমাত্রা ঠিক রেখে রাজস্ব আদায় খুব একট সহজ কাজ না।
তিনি বলেন, ‘আমরা সকলেই বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে অবগত আছি এবং পরিস্থিতি যেকোনো সময় ভালো বা খারাপ হতে পারে। কিন্তু লক্ষমাত্রা অর্জনে আমাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে এবং কাজ এগিয়ে নিতে হবে।’
বড় কোম্পানিগুলোর সাথে যোগযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমেই রাজস্ব আদায়ের একটা বড় অংশ পূরণ করা সম্ভব হবে। কারণ বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেই মোট রাজস্বের একটা বড় অংশ আদায় হয়ে থাকে।
রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষমাত্রা
সরকারি দাপ্তরিক নথি অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ৯.৬ শতাংশ এবং ৯.৯ শতাংশ। রাজস্ব প্রবৃদ্ধির ধারাবাহি উন্নতি দেখে ধারণা করা হয়েছিল ২০১৯-২০ অর্থবছরের রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি হবে ১৬.১ শতাংশ। কিন্তু ২০২০ সালের জুন মাসে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকীর পরিকল্পনার শেষে দেখা যায় রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হার ছিল ১২.৭ শতাংশ।
২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে এনবিআর ভুক্ত আয় ধরা হয় ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা এবং এনবিআর বহির্ভূত আয় ধরা হয় ১৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া শুল্কহীন আয় নির্ধারণ করা হয় ৩৩ হাজার কোটি টাকা।
এনবিআর এর মোট আয়ের মধ্যে, ১ লাখ ৩ হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা আদায় হবে আয়কর, মুনাফা এবং মূলধন কর এর মাধ্যমে। এছাড়া ভ্যাট থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা, সম্পূরকশুল্ক থেকে ৫৭ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা, আমদানি শুল্ক থেকে ৩৭ হাজার ৮০৭ কোটি টাকা, রপ্তানি শুল্ক থেকে ৫৫ কোটি টাকা এবং আবগারি শুল্ক থেকে ১ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করবে রাজস্ব বোর্ড।