বিশেষ-সংবাদ
বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে চায় থাইল্যান্ড: রাষ্ট্রদূত
শুধুমাত্র তৈরি পোশাক শিল্পের ওপর নির্ভর না করে দেশের আয়ের উৎসকে বৈচিত্র্যময় করতে পারলে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও টেকসই হবে বলে জানিয়েছে থাইল্যান্ড।
ঢাকায় নিযুক্ত থাই রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি ও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতেও আগ্রহী।
রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর সম্প্রতি বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘তৈরি পোশাকের ডিজাইনের বিষয়ে সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এবং স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলোকে বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতা করার যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে আরএমজি পণ্যের দাম বাড়ানোর কথাও বিবেচনা করা উচিত বাংলাদেশের।’
তিনি বলেন, দুই দেশই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ তার ক্রমবর্ধমান মাথাপিছু আয় দিয়ে ক্রমান্বয়ে দেশ গড়েছে।
তিনি আরও বলেন, মহামারি সত্ত্বেও অব্যাহত জিডিপি প্রবৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ কয়েক বছরের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে।
মাকাওয়াদি বলেন, তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশের সাফল্য মুগ্ধ করার মতো এবং বাংলাদেশকে যথার্থই ‘ওয়ার্ড্রোব অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’ বলা যেতে পারে। নিজেদের এই অসাধারণ কাজের প্রমাণ বিশ্বের কাছে দিয়েছে বাংলাদেশ।
এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত সুমিতমোর বলেন, বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থাইল্যান্ডের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাব্যতার বিষয়ে একটি সমীক্ষা চালাচ্ছে। যদি এ চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় তবে শুল্ক নিয়ে প্রতিবন্ধকতা হ্রাস পাবে এবং বাণিজ্য প্রবাহ বৃদ্ধি করবে।
তিনি আর বলেন, থাইল্যান্ড স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) জন্য শুল্কমুক্ত কোটা ফ্রি (ডিএফকিউএফ) প্রকল্প অনুমোদন করেছে। যার অর্থ বাংলাদেশ শুল্ক ছাড়াই থাইল্যান্ডে সাত হাজার ১৮৭টি কৃষি ও শিল্প পণ্য রপ্তানি করতে পারে।
থাই রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির একটি উপায় হচ্ছে সরাসরি সমুদ্র পরিবহন রুট স্থাপন করা।
আরও পড়ুন: পালাউয়ের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
তিনি বলেন, ‘আমরা গত ডিসেম্বরে চট্টগ্রাম বন্দর এবং রনং বন্দরের মধ্যে সরাসরি উপকূলীয় শিপিং পরিষেবা চালু করার জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি।’
শিপমেন্টগুলো আগে সিঙ্গাপুর বা শ্রীলঙ্কার মাধ্যমে ট্রানজিট করতে হয়, যার জন্য ১২-১৫ দিন সময় লাগে। তবে দুই বন্দরের মধ্যে সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী সময় ও খরচ কমাতে রনং বন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি উপকূলীয় শিপিং রুট স্থাপনের চেষ্টা করছে দুই দেশ। এটি বাস্তবায়িত হলে শিপমেন্টগুলো পরিবহনের সময় অন্তত তিন দিন কমে যাবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, থাইল্যান্ডের একটি স্থল সেতুর মাধ্যমে আন্দামান উপকূলের রনং বন্দরকে থাইল্যান্ড উপসাগরের চুমফোন বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করার একটি প্রকল্প রয়েছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশ মালাক্কা প্রণালী ছাড়াও প্রশান্ত মহাসাগরের দেশগুলোতে পণ্য রপ্তানির বিকল্প পথ পাবে।
বাংলাদেশের প্রতি থাইল্যান্ডের নীতি:
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের প্রতি থাইল্যান্ডের নীতি সব সময়ই বন্ধুত্ব ও সহযোগিতাপূর্ণ ।
তিনি বলেন, গত পাঁচ দশকে দুই দেশ বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং যোগাযোগের মতো বেশ কিছু ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি করেছে।
রাষ্ট্রদূত সুমিতমোর বলেন, বাংলাদেশ আসিয়ানের নিকট প্রতিবেশি এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করতে পারে।
তিনি বলেন, একই সঙ্গে থাইল্যান্ড প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য বিমসটেক, আইওআরএ এবং এসিডির মতো আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক কাঠামোতে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করবে।
বিমসটেক বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কারণ ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে পরবর্তী শীর্ষ সম্মেলন পর্যন্ত থাইল্যান্ড বিমসটেক-এর নতুন চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে বলেও জানান তিনি।
কোভিড পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারে অগ্রাধিকার
রাষ্ট্রদূত অনেকগুলো ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ বলে বর্ণনা করেন। তবে তিনি মনে করেন সম্পর্ক আরও জোরদার করার জন্য এখনও যথেষ্ট ক্ষেত্র বাকি রয়েছে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ সহযোগিতার গতিসহ আমাদের জীবনের প্রায় প্রতিটি দিককে প্রভাবিত করেছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌভাগ্যক্রমে স্বাভাবিক জীবন ও ব্যবসা-বাণিজ্য ধীরে ধীরে আবার শুরু হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন প্রেসিডেন্টের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরির সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক
সবুজ অংশীদারিত্ব
রাষ্ট্রদূত সুমিতমোর বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড একই চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। কারণ বাংলাদেশের অনেক এলাকার মতোই ব্যাংককও সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ২ মিটার উঁচু।
তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব বিবেচনা করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল করার মতো বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করি আমি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, থাইল্যান্ড জাতীয় উন্নয়নের জন্য অন্তর্নিহিত ধারণা হিসেবে বায়ো-সার্কুলার-গ্রিন ইকোনমি বা বিসিজি মডেল গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আরও প্রযুক্তি বান্ধব হওয়ার পরিকল্পনা করছি এবং থাই অর্থনীতিকে আরও মূল্য-ভিত্তিক এবং টেকসই করতে আরও সবুজ হতে চাই।’
এটি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে বাংলাদেশের নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। "সুতরাং আমি মনে করি উভয় পক্ষই সর্বোত্তম অনুশীলন বিনিময় এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি কার্যক্রম সংগঠিত করার জন্য একটি "সবুজ অংশীদারিত্ব" গঠন করতে পারে।"
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন
রাষ্ট্রদূত সুমিতমোর বলেন, থাইল্যান্ড মানবিক সহায়তা প্রদান, বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের প্রত্যাবাসনের সুবিধার্থে এবং রাখাইন রাজ্যে টেকসই উন্নয়নের প্রচারে ভূমিকা পালনের জন্য আসিয়ানকে সমর্থন দিতে থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এই সমস্যার একটি টেকসই সমাধান দেখতে চাই এবং আমরা সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত।’
থাইল্যান্ড ২০১৭ সাল থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের মৌলিক চাহিদা প্রদানের জন্য জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা যেমন ইউএনএইচসিআর, ডব্লিউএফপি এবং ডব্লিউএইচও- এর মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা দিয়েছি।
এবছরও তারা কক্সবাজারের একটি ক্যাম্পে একটি রিসোর্স সেন্টার সংস্কার করতে ইউনিসেফের সঙ্গে সহযোগিতা করছে বলেও জানান রাষ্ট্রদূত।
পর্যটন সম্ভাবনা
রাষ্ট্রদূত বলেন, থাইল্যান্ড বাংলাদেশি পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য। ২০১৯ সালে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার বাংলাদেশি থাইল্যান্ডে গিয়েছিলেন। যার মধ্যে চার হাজার ৩০০ জন চিকিৎসার জন্য যান বাকিরা পর্যটনের উদ্দেশে যান।
তিনি বলেন, ‘তারা থাই অর্থনীতিতে প্রায় ৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন থাই বাত সরবরাহ করেছে।
সুমিতমোর বলেন, ‘থাইল্যান্ডের পর্যটন কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের ভ্রমণকারীদের সঙ্গে ‘পুনরায় যুক্ত হতে’ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। ‘এমনকি তাদের বাংলায় একটি নিউজলেটার এবং ইনস্টাগ্রাম রয়েছে।’
তিনি বলেন, থাইল্যান্ড ও থাইল্যান্ডের জনগণের প্রতি বাংলাদেশিদেরও খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব রয়েছে, যা দূতাবাসের কাজকে অনেক সহজ করে তোলে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এর বিপরীতে ২০১৯ সালে মাত্র চার হাজার ৮০০ জন থাই নাগরিক বাংলাদেশ সফর করেছেন। যাদের বেশিরভাগই কাজের উদ্দেশ্যে এসেছিলেন।
তিনি পরামর্শ দেন, ‘ভারত, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যুক্ত বৌদ্ধ সার্কিটের অংশ হিসেবে আমরা বাংলাদেশে বৌদ্ধ ঐতিহাসিক স্থানগুলোর প্রচারণা শুরু করতে পারি। যাতে (বাংলাদেশের বৌদ্ধ ঐতিহাসিক স্থানগুলোর প্রতি) আরও বেশি তীর্থযাত্রী ও ভ্রমণকারীদের আকৃষ্ট করা যায়।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র কেনার চুক্তি করছে না বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র সচিব
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাশা পূরণে আরও সম্পদ প্রয়োজন: রাষ্ট্রদূত নাওকি
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের জীবিকার সুযোগ বৃদ্ধি করতে ভাসানচরে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা প্রয়োজন। তিনি বলেছেন, ‘উপযুক্ত সুবিধা ও অবকাঠামো’ থাকা সত্ত্বেও রোহিঙ্গারা ‘কিছু চ্যালেঞ্জের’ সম্মুখীন।
ভাসানচরে সাম্প্রতিক সফরের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি ইউএনবিকে বলেন, এটা সত্য যে তারা অনেক নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশ পাচ্ছে। যেটা কি না তাদের জীবনের একটি ইতিবাচক দিক। তবে চরে জীবিকার সুযোগ তৈরি করতে যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকা উচিত।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সম্পদ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। রোহিঙ্গাদের জন্য আরও জীবিকার সুযোগ, শিক্ষা ও দক্ষতা তৈরি করতে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) সহ বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করতে হবে। যাতে তাদের মধ্যে ‘হতাশা’ বৃদ্ধি না পায় যেটা কিনা অস্থিরতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের সহায়ক: জাপান
বাংলাদেশ বলেছে, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক এবং বাংলাদেশ তাদের মানবিক কারণে অস্থায়ী ভিত্তিতে আশ্রয় সহায়তা দিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছে, তারা রোহিঙ্গাদের একত্রিত করতে পারবে না এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোনো স্থায়ী সমাধান খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। টেকসই প্রত্যাবাসনকেই এক্ষেত্রে একমাত্র সমাধান।
অধিকতর জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে বসতি স্থাপনের স্থায়ী সংকেত দিবে কি না জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত নাওকি বলেন, ‘না, আমি তা মনে করি না’।
তিনি বলেন, ‘ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে চায় এবং প্রত্যাবাসনই তাদের লক্ষ্য। তারা বিচার চায়। প্রায় পাঁচ বছর পরও, তারা এখনও তাদের জন্মভূমির দিকে তাকিয়ে আছে। এটা স্পষ্ট যে তারা ফিরে যেতে চায়।’
তাই যতদিন তাদের প্রত্যাবাসনের দৃঢ় সংকল্প থাকবে, ততদিন মিয়ানমারে কোনো ভুল সংকেত পাঠানো যাবে না বলে সতর্ক করেন রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার আগে রোহিঙ্গাদের শিক্ষা, দক্ষতা ও জীবিকার সুযোগ অপরিহার্য বিষয়। যেমনটা মনে হচ্ছে, মিয়ানমারের পরিস্থিতি বিবেচনা করে রোহিঙ্গারা এখানে ‘আরও কয়েক বছর’ থাকতে চলেছে বলে মনে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: জাপানকে বাংলাদেশে কৃষিযন্ত্র তৈরির আহ্বান মন্ত্রীর
সুনামগঞ্জে ঝুঁকিতে বোরো ফসল, আতঙ্কে কৃষক
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর হাওর এলাকার কৃষকরা আশঙ্কা করছেন যে তারা এই বছর বোরো ফসল ঘরে তুলতে পারবেন কি না। ভারতের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সামনের দিনগুলোতে এখানে আরও আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলার বোরো ধান পাকতে শুরু করেছে। সাধারণত, হাওর এলাকার কৃষকরা ৭-১০ দিনের মধ্যে ফসল কাটা শুরু করবেন। তবে হাওরে অকালবন্যার পানি নামতে না নামতেই আরেকটি ঢল আসার আশঙ্কা ফসলের সম্পূর্ণ ক্ষতি করতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং অন্যান্য বৈশ্বিক আবহাওয়া সংস্থাসমূহের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ১০ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশের উত্তর এবং উত্তরপূর্বাঞ্চল, তদসংলগ্ন ভারতের আসাম এবং মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সুরমা, কুশিয়ারা, যাদুকাটার কয়েকটি পয়েন্টের পানি বিপদসীমানা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। ফের আবহাওয়া অধিদপ্তরের এমন পূর্বাভাসে আতঙ্কে দিন-রাত কাটাচ্ছেন হাওরাঞ্চলের কৃষকরা।
গত এক সাপ্তাহের ব্যবধানে উপজেলার নজরখালীর বাঁধ ভেঙে টাংগুয়ার হাওর, এরালিয়াকোনা, গুন্নাকুড়ি হাওরের প্রায় ৭ হাজার হেক্টর বোরো ধান তলিয়ে গেছে। অবশিষ্ট বাঁধ গুলো পাহারা দিচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। বিভিন্ন বাঁধে ধস ও ফাটল দিখা দিচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃক তাহিরপুর উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ফসল রক্ষা বাঁধ মেরামত ও সংস্কার করতে এবছর ৬৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) দ্বারা ৫৩ কিলোমিটার ডুবন্ত ফসল রক্ষা বাঁধ ও ১০টি ক্লোজার মেরামত করা হয়। এতে প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আর এসব বাঁধের কাজ সময় মতো শুরু ও শেষ না হওয়ায় বাঁধ গুলো মজবুত হয়নি। ফলে বাঁধ দুর্বল থাকায় পাউবো’র ৬৮টি বাঁধেই ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় রয়েছেন হাওরপারের কৃষকরা। আর বাঁধের ধসে পড়া ও ফাটলের স্থানে বাঁধ মেরামতের কাজ করছেন স্থানীয় কৃষকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এদিকে মাঘ মাসের শেষের দিকে স্থানীয়রা তাহিরপুর উপজেলার মহালিয়া হাওরের ময়নাখালি বিল সেচে মাছ ধরায় বর্তমানে ঝুঁকিতে রয়েছে ময়নাখালি বাঁধটি।
বাঁধ ভেঙে কৃষকের ক্ষতি হলেও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) নামে প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক দলের নেতারা গরিব কৃষকদের নাম ব্যবহার করে প্রকল্প নিয়ে সরকারি টাকা লুটপাট করে লাভবান হয়েছেন, এমন অভিযোগ এখন হাওরাঞ্চলের সর্বত্রই।
পড়ুন: হাওরে ফসলের ক্ষতির ঘটনায় গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে: পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী
কম খরচে অধিক ফলন: ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন বোয়ালখালীর কৃষকরা
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় বেড়েছে ভুট্টা চাষ। কম খরচে, স্বল্প সময়ে লাভ হওয়ায় কৃষকেরা এখন ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর বোয়ালখালীতে সাত হেক্টরেরও বেশি জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, গত বছর বোয়ালখালীতে ভুট্টা চাষ হয়েছিল ১৮ হেক্টর জমিতে। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ হেক্টরে। চলতি মৌসুমে ৩৫ জন কৃষককে ভুট্টার বীজ ও সার প্রণোদনা হিসেবে দেয়া হয়েছে।
এলাকার কয়েকজন চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে বিকল্প ফসল হিসেবে ভুট্টা চাষ করছেন কৃষকেরা। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় ভুট্টা ও সবজি চাষে আগ্রহ তাদের। বর্ষা আসার আগেই কৃষক ভুট্টা ঘরে তুলতে পারেন। বোরো ধান চাষে সেচ খরচ বেশি, অনেক সময় উৎপাদন খরচই ওঠে না। আর ভুট্টার উৎপাদন খরচ কম, ফলনও বেশি হয়। ভুট্টা ও ভুট্টার খড় গো-খাদ্য হিসেবে চাহিদা রয়েছে উপজেলার বেশিরভাগ ডেইরি খামারে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে রাসায়নিকের বিকল্পে জনপ্রিয় হচ্ছে কেঁচো সার
সারোয়াতলী ইউনিয়নের গরুর খামারি মুহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, বাজারে ভুট্টার মতো উন্নতমানের গো-খাদ্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ। তার চেয়ে ফিডের থেকে ভুট্টা খাওয়ালে গরু তরতাজা থাকে।
উপজেলার আমুচিয়া ইউনিয়নের ভুট্টা চাষি এসএম বাবর বলেন, বাজারের ফিডের চেয়ে ভুট্টা গরুর জন্য অনেক ভালো। এতে গরু সহজে রোগাক্রান্ত হয় না ও শারীরিক গঠন থাকে মজবুত। তাই নিজের খামারের চাহিদা মেটাতে ভুট্টা চাষ করেছেন।
বাঁশের শো-পিস দেশের বাইরে ছড়িয়ে দিতে চান কুমিল্লার শাহ্ জামাল
বাঁশের তৈরি নান্দনিক জিনিসপত্রের জন্য খ্যাতি ছিল কুমিল্লার বুড়িচংয়ের ভারত সীমান্তবর্তী গ্রাম আনন্দপুরে। আর এই কারণে প্রায় দশ বছর আগে এই গ্রামে বিদেশিদের আনাগোনা ছিল। শুধু বিদেশি পর্যটক নয়, বিদেশি সংস্থাগুলোর সঙ্গে আনন্দপুরের যোগাযোগ ছিল।
জানা গেছে, বাঁশের জিনিসপত্র তৈরি শিল্পের সঙ্গে আনন্দপুর ও আশেপাশের গ্রামের প্রায় তিনশতাধিক পরিবার যুক্ত ছিল। বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র বিক্রির ধুম পড়ে যেতো। এসব গ্রামে দূর-দূরান্তের মানুষ ভিড় করতেন। অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ছিলও বেশ। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে আনন্দপুরের সেই আনন্দঘন আবহ ম্লান হয়ে গেছে। পর্যাপ্ত চাহিদা থাকলেও দক্ষ জনশক্তি ও প্রযুক্তির অভাবে এ শিল্পের উৎপাদন কমে গেছে। বর্তমানে মাত্র ১১টি পরিবার এই শিল্পের সাথে যুক্ত আছে।
আরও পড়ুন: ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান, শঙ্কায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
তাদের মধ্যে একজন শাহ্ জামাল। তিনি কুমিল্লা আর্টস অ্যান্ড ক্রাফটসের স্বত্বাধিকারী। তার প্রয়াত বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেমের হাত ধরেই বুড়িচংয়ে এ শিল্প বিস্তার লাভ করে। এই শিল্পকে বাঁচাতে শাহ্ জামাল এখনও সংগ্রাম করছেন। তিনি আবারও আনন্দপুরের বাঁশের শো-পিস ইউরোপ-আমেরিকায় ছড়িয়ে দিতে চান।
কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা মানুষ
গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে কুড়িগ্রামের তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। এসময় ছয়টি বাড়ি ভেঙেছে। হুমকিতে রয়েছে আরও ৭০-৮০টি বাড়ি। অসময়ে তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ।
জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার ৩টি উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে আগ্রাসী তিস্তা নদী। প্রায় ৪০ কিলোমিটার ব্যাপী এই নদীটির ভাঙন কবলিত বাম তীরে মাত্র ৫ কিলোমিটার জায়গা পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাকি ৩৫ কিলোমিটার উন্মুক্ত নদীর অনেক জায়গায় চলছে এখন ভাঙন। গত তিন দিনে বৃষ্টির ফলে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিঘার পর বিঘা বোরো ধান, ফলদ ও কাঠের গাছসহ ভেঙে যাচ্ছে বিল্ডিং বাড়ি। এখন হুমকিতে রয়েছে প্রায় ৭০ থেকে ৮০টি পরিবার।
গত কয়েক বছর ধরে তিস্তার ভয়াবহ আগ্রাসনে রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুরা, মন্দির, ডাংরারহাট, রামহরি, পাড়ামৌলা ও গাবুর হালান গ্রামের একাংশ নিশ্চিহ্ন করে ফেলেছে। মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে আরও গ্রামের পর গ্রাম। বসতভিটা ও জমি হারিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে বুক ফাঁটা কান্নায় ভারি হয়ে আসছে এখানকার আকাশ-বাতাস। নদী ভাঙনের হুমকিতে থাকা মানুষ এখন জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
জেলার রাজারহাট উপজেলার ঘরিয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াসাম মন্ডলপাড়া গ্রামের মৃত শরাফত মাস্টারের ছেলে মোস্তাক আহমেদ (৫৬) হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘গতবার নদী বাড়িভিটা সউগ (সব) খায়া (খেয়ে) গেইল (ফেলছে)। হালের গরু বিক্রি করি নতুন বাড়ি করনু (করছি)। এবারো ভাঙবের নাগছে (লাগছে)। কামলা দিয়া খাং। এই বাড়ী গেইলে (গেলে) করিম কি। মোর পকেটোত বিষ খাওয়ার মত টেকা নাই।’
পড়ুন: নিখোঁজের তিনদিন পর নদী থেকে কৃষকের লাশ উদ্ধার
আমের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘বঙ্গবন্ধু লাইভ ম্যাংগো মিউজিয়াম’
আমের জাত সংরক্ষণ ও আমকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে গড়ে তোলা হচ্ছে দেশের প্রথম ‘বঙ্গবন্ধু লাইভ ম্যাংগ মিউজিয়াম’। জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটে রাজার বাগান নামে পরিচিত আম বাগানটিকে ‘বঙ্গবন্ধু লাইভ ম্যাংগো মিউজিয়াম’ হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এমন উদ্যোগে খুশি স্থানীয় আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রধান অর্থকরী ফসল আম। আমের ফলন ও দরের উপর নির্ভর এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনীতি। গোপালভোগ, ক্ষীরসাপাত, ল্যাংড়া, ফজলি, আম্রপালি, আশ্বিনা, ক্ষুদি ক্ষীরসা, বৃন্দাবনী ও লক্ষ্মণভোগসহ অনেক সুস্বাদু জাতের আম উৎপাদন হয় এ জেলায়। এখানে উৎপাদিত আম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় চালান হওয়ার পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হয়ে থাকে।
আমের জাত সংরক্ষণ ও আমকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় কানসাটে প্রায় ১০০ বিঘা জমির উপর থাকা রাজার বাগান নামে পরিচিত সরকারি আম বাগানটিকে ‘বঙ্গবন্ধু লাইভ ম্যাংগো মিউজিয়াম’ হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি বছরে শেষ হবে লাইভ ম্যাংগো মিউজিয়ামের নির্মাণ কাজ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এরই মধ্যে বাগানটির সীমানা প্রাচীর ও ডাকবাংলো নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। চলছে অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ কাজ।
আম গাছের পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত আব্দুর রহিম বলেন, ছোটবেলা থেকে জেনে আসছি এই বাগানের নাম রাজার বাগান। এই বাগানের কোন পরিচর্যা হতোনা, অবহেলায় পড়ে ছিল দেখার কেউ ছিল না। কিছুদিন থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্যার এটির দেখাশোনা করছেন।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে প্রাচীর দিয়ে বাগানটিকে ঘেরা হয়েছে। এখন বাগানের পরিচর্যা শুরু হয়েছে। আমি পরিচর্যার কাজ করছি। এখন বাগান দেখতে ভালো লাগছে, মানুষজন আসছে। শুনেছি সামনে আরও কাজ হবে। আমাদের খুব ভালো লাগছে।’
পড়ুন: গৃহহীনদের খুশি দেখতে পাওয়া আমার সবচেয়ে বড় আনন্দ: শেখ হাসিনা
আশ্রয়ণ-২: ৫৯ বেদে পরিবারের স্থায়ী ঘর নিয়ে নতুন জীবনের স্বপ্ন
‘আমরা যদি স্থায়ী আশ্রয় পাই, আমরা আমাদের দুই ছেলেকে স্কুলে পাঠাব’- কথাটি বলছিলেন বেদে নারী রঙ্গিলা।
বেদে হলো যাযাবরের মতো একটি নৃ-তাত্ত্বিক সম্প্রদায়। দেশের সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত এবং প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটি এই বেদেরা।
রঙ্গিলা দুই ছেলের মা- আকাশ (৫) ও রবিউল(৩)। তার স্বামী আলাউদ্দিন বানর ও সাপের খেলা দেখায়।
চার সদস্যের এই বেদে পরিবারটি বর্তমানে অন্যান্য বেদে পরিবারের মতো ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বড়বাজার ইউনিয়নের বাদেদিহি গ্রামে একটি ‘ঝুপড়ি ঘরে’ (বেদেদের ছোট ও অস্থায়ী ঐতিহ্যবাহী ঘর) বাস করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে উপহার হিসেবে তার পরিবার দুই ডেসিমেল জমিসহ একটি স্থায়ী বাড়ি পেতে যাচ্ছে বলে জানান রঙ্গিলা।
তার পরিবারের মতো মোট ৫৯টি বেদে পরিবার কালীগঞ্জের বড়বাজার ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের মাজদিয়া বাওড় সংলগ্ন আশ্রয়ণ প্রকল্পে বাড়ি পেতে যাচ্ছে।
এর মধ্যে ৩১টি পরিবার বাদেডিহি গ্রামের এবং ২৮টি পরিবার কালীগঞ্জ পৌরসভার অন্তর্গত কাশিপুর গ্রামের।
আরও পড়ুন: আশ্রয়ণ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে টেকসই ঘর পাবে প্রায় ৬৫,৪৭৪ পরিবার
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান, শঙ্কায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে চলছে পাঠদান। পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকের কার্যালয় ও শিক্ষকদের অফিস রুম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ফলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, ১৯৩৪ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়ে ২০১৮ সালে জাতীয়করণ হয়। বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী স্কুলটির শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৮শ। এটি জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা কেন্দ্র। বিদ্যালয়টিতে ৬০ ও ৮০ এর দশকে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে দুটি ভবন নির্মাণ হয়। কিন্তু গত দুই বছর ভবন দুটিসহ দুটি টিনশেডের আধাপাকা ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকরা।
আরও পড়ুন: নান্দনিক সড়কবাতিতে ঝলমলে রাজশাহী শহর
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণার জন্য ও স্থানীয় সংসদ সদস্য বরাবর নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়ে আবেদনও করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
নান্দনিক সড়কবাতিতে ঝলমলে রাজশাহী শহর
রাজশাহী শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো ইতোমধ্যে চার লেনে উন্নতি করেছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। সড়ক নিমার্ণের পাশাপাশি সৌন্দর্য বাড়াতে পর্যায়ক্রমে নান্দনিক সড়কবাতি স্থাপনের করা হচ্ছে। নগরীর কল্পনা সিনেমা হলের মোড় থেকে তালাইমারী পর্যন্ত আধুনিক দৃষ্টিনন্দন এই বাতিগুলো শহরকে আরও সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছে। সন্ধ্যা নামলেই আলো ঝলমলে হয়ে উঠে রাজশাহী শহর।
এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের গণসংযোগ কর্মকর্তা মাহাফুজ মিশু জানান, ১২৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে কল্পনা সিনেমা হল থেকে তালাইমারী পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ প্রকল্পের আতওায় আধুনিক এই নান্দনিক বাতি বাসানোর হচ্ছে। সড়কের আইল্যান্ডে মোট ১৩০টি আধুনিক দৃষ্টিনন্দন খুঁটি বসানো এবং প্রতিটি খুঁটিতে ১৩টি করে বাতি থাকছে। এছাড়া সড়কের দক্ষিণ পাশে বাঁধে স্থাপন করা হচ্ছে ১৮০টি গার্ডেন লাইট।
আরও পড়ুন: সেতু এখন মরণ ফাঁদ!
তিনি বলেন, গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে শহরে দৃষ্টিনন্দন সড়ক বাতি বসানোর কাজ শুরু হয়। তবে প্রজাপতি সড়ক বাতি সকলের নজর কাড়ে।