বাংলাদেশ
অনলাইনে ই-টিন সার্টিফিকেট করার পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
টি-আই-এন বা ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বারসহ একজন আয়কর যোগ্য নাগরিক কোন কর অঞ্চলের আওতাভুক্ত তার যাবতীয় তথ্য সম্বলিত নথিপত্রটিকে সংক্ষেপে টিন সার্টিফিকেট বলা হয়। প্রাথমিকভাবে নাগরিকটি কর দেয়ার জন্য উপযুক্ত হয়েছেন কিনা তা যাচাইয়ের জন্য সরকারের নিকট ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করতে হয়। এই রিটার্ন জমা দানের সময় টিন সংখ্যাটির প্রয়োজন হয়। রিটার্নে প্রদানকৃত তথ্যের ভিত্তিতে নাগরিকের উপর কর ধার্য হয়। প্রতি অর্থ বছরে তিনি সেই পরিমাণ কর দিতে বাধ্য থাকেন। অর্থাৎ সামগ্রিক কর ব্যবস্থার মূলে আছে টিন সনদপত্র। বর্তমানে ইন্টারনেট থেকে এর ইলেকট্রনিক সংস্করণও সংগ্রহ করা যায়, যা ই-টিন নামে পরিচিত। এই নিবন্ধটিতে অনলাইনে ই-টিন সার্টিফিকেট করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
কাদের জন্য ই-টিন করা জরুরি
যেহেতু আয়করযোগ্য প্রতিটি ব্যক্তিকেই রিটার্ন জমাদানের জন্য টিন করতে হয়, তাই প্রথমেই জেনে নেয়া জরুরি কাদের জন্য আয়কর দেয়া আবশ্যক।
আয়করযোগ্য ব্যক্তি
অনিবাসী বাংলাদেশীদের যাদের স্থায়ী ভিত্তি আছে, হিন্দু যৌথ পরিবার, ব্যক্তি সংঘ, অংশীদারী ফার্ম এবং আইনত সৃষ্ট কৃত্রিম ব্যক্তি, যাদের আয়কৃত টাকার পরিমাণ ২ লাখ ৫০ হাজারের উপরে। তবে এদের মধ্যে
· মহিলা এবং ৬৫ বছর বা তদুর্ধ্ব বয়সের ব্যক্তিদের আয়ের পরিমাণ ৩ লাখ টাকার উপরে হতে হবে
· প্রতিবন্ধিদের আয়ের পরিমাণ ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকার উপরে হতে হবে
· গেজেট ভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের আয়কৃত টাকার পরিমাণ ৪ লাখ ২৫ হাজারের উপরে হতে হবে|
পড়ুন: বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ
ই-টিন সনদ যাদের জন্য আবশ্যক
· মোটরযানের মালিকানা লাভ করলে
· মূল্য সংযোজন করের অধীনে নিবন্ধিত ক্লাবের সদস্য পদ থাকলে
· ব্যবসা বা পেশা পরিচালনার নিমিত্তে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্ত হলে
· ডাক্তার, দন্ত বিশেষজ্ঞ, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, আইনজীবী, প্রকৌশলী, স্থপতি বা সার্ভেয়ার বা অন্য কোন অনুরূপ পেশাদার সংস্থার সাথে নিবন্ধিত হলে
· আয়কর অনুশীলনকারী বোর্ডের সাথে নিবন্ধিত হলে
· চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ বা ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন বা সংস্থার সদস্যপদের অধিকারি হলে
· পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা সংসদ সদস্যবৃন্দ হলে
· স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সরকারী বা আধা-সরকারি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রণীত দরপত্রে অংশগ্রহণকারি হলে
· কোম্পানি বা কোম্পানির একটি গ্রুপের পরিচালনা পর্ষদের কর্মকর্তা হলে
· ব্যাংক থেকে প্রাইজ বন্ড বা সেভিং সার্টিফিকেট কিংবা ক্রেডিট কার্ডধারী হলে|
পড়ুন: শিশুদের ই-পাসপোর্টের নিয়ম
ই-টিন সার্টিফিকেট থাকার সুবিধা
· এই শংসাপত্রটি থাকলে যে কেউ ব্যাংক থেকে ২ লাখ বা তার বেশী অঙ্কের টাকার সঞ্চয়পত্র তৈরি করতে পারবে
· ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করতে পারবে
· কমার্শিয়াল ব্যাংক অথবা লিজিং কোম্পানি থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে
· সাধারণ বীমার সার্ভেয়ারের লাইসেন্স নিতে পারবে
· কোম্পানি আইন ১৯৯৪-এর আওতায় কোম্পানীর স্পন্সর পরিচালক এবং যে কোন শেয়ারহোল্ডারের সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর পরিচালক হতে পারবে
· আমদানি সংক্রান্ত ব্যবসা ক্ষেত্রে আমদানিপত্র নিবন্ধন করতে পারবে
· আবশ্যিক না হলেও ব্যাংকে সেভিংস ও কারেন্ট একাউন্ট পরিচালনা করতে টিনের প্রয়োজন হয়। তবে এই একাউন্টগুলোতে টিন থাকার সুবিধা হলো- অধিক পরিমাণ লেনদেন করা যায়, সুদের উপর কম ট্যাক্স ধার্য হয় প্রভৃতি।
· ব্যাংকে জমাকৃত অর্থের উপর অর্জিত সুদ বা লাভ থেকে বর্তমানে ১৫ শতাংশ ট্যাক্স ধার্য করা হয়। এখানে টিন থাকলে সেই সুদ বা লাভের উপর ধার্যকৃত ট্যাক্স কমে ১০ শতাংশ হয়।
পড়ুন: জন্ম নিবন্ধন ইংরেজি করার ডিজিটাল পদ্ধতি
অনলাইনে ই-টিন সার্টিফিকেট করার উপায়
ই-টিন করতে যা যা প্রয়োজন
অনলাইনে টিন সার্টিফিকেট করার জন্য শুধু এনআইডি (ন্যাশনাল আইডেন্টিটি) কার্ড সাথে থাকলেই হয়। তবে ব্যবসা বা কোম্পানির ক্ষেত্রে আরো কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়ে। যেমন-
· ম্যামোর্যান্ডাম অফ আর্টিকেল (এমওএ)
· আর্টিকেল অফ অ্যাসোসিয়েশন (এওএ)
· ট্রেড লাইসেন্স
· ইনকর্পোরেশন সার্টিফিকেট|
ধাপে ধাপে ই-টিন সার্টিফিকেট করার ডিজিটাল পদ্ধতি
প্রথম ধাপ:
ই-টিন করার জন্য প্রথমে যেতে হবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এর ওয়েবসাইটে। এই সাইটের অধীনে নিজের একটি অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আগে নিবন্ধন করতে হবে। তার জন্য ক্লিক করতে হবে রেজিস্টার বাটনে। এবার একটি নিবন্ধন ফর্ম পাওয়া যাবে, যেখানে মাঝে কোন স্পেস ছাড়াই ইংরেজি ছোট হাতের অক্ষরে একটি আইডি, পাসওয়ার্ড, নিরাপত্তা প্রশ্নোত্তর, দেশ এবং মোবাইল নাম্বার দিতে হবে।
পড়ুন: বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করার নিয়ম
সবশেষে ক্যাপচা ছবি দেখে ইংরেজি বড় হাতের অক্ষরে ভেরিফিকেশন লেটার লিখার পর রেজিস্টার বাটনে ক্লিক করতে হবে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফর্মে প্রদানকৃত মোবাইল নাম্বারে একটি যাচাইকরণ কোড আসবে। এই কোডটি নির্ভুলভাবে ফর্মের নির্দিষ্ট স্থানে বসিয়ে সক্রিয় বাটনে চাপ দিতে হবে। আর এর মাধ্যমেই নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে এবং সেই সাথে প্রার্থীর অ্যাকাউন্টও সক্রিয়ও হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় ধাপ:
এখন সেই আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাকাউন্টে লগইন করতে হবে। তারপর যে ইন্টারফেসটি আসবে তাতে উল্লেখিত এখানে ক্লিক করুন বোতামে ক্লিক করতে হবে। এরপর যে পেজটি আসবে সেখানে
করদাতার অবস্থা, রেজিস্ট্রেশনের ধরন, আয়ের প্রধান উৎস, আয়ের প্রধান উৎসের অবস্থান, প্রার্থীর অবস্থান নির্বাচন করতে হবে। সব তথ্য সঠিক ভাবে প্রদান করে শেষে গো টু নেক্সট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
এবার প্রার্থীর ব্যক্তিগত তথ্য দেয়ার পালা। এখানে এনআইডি অনুসারে প্রার্থীর নাম, লিঙ্গ, এনআইডি কার্ড নাম্বার, জন্ম তারিখ, পিতা-মাতার নাম, স্ত্রীর নাম, মোবাইল নাম্বার, ইমেল এবং বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা প্রতিটি তথ্য নির্ভুল ভাবে প্রদান করতে হবে। এরপর আবার গো টু নেক্সট-এ যেতে হবে।
এখন এতক্ষণ ধরে প্রদানকৃত যাবতীয় তথ্য এনআইডি কার্ডে প্রার্থীর ছবি সহ একবারে দেখানো হবে। সবকিছু ভালো করে যাচাই করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে। আর এর মাধ্যমে তৈরি হয়ে যাবে ই-টিন সার্টিফিকেট।
পড়ুন: স্মার্ট আইডি কার্ড: জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল থাকলে যেভাবে সংশোধন করবেন
ই-টিন সার্টিফিকেট সংগ্রহ
টিন সার্টিফিকেট দেখুন-এ ক্লিক করে ইলেকট্রনিক টিন সার্টিফিকেটটি দেখা যাবে। এটি এখন বা পরবর্তীতে যে কোন সময় ডাউনলোড করে ফোন বা কম্পিউটারে সংরক্ষণ করা যাবে। এছাড়াও বিভিন্ন কাজে লাগানোর জন্য এটি মুদ্রণ করেও ব্যবহার করা যাবে৷ এমনকি এখান থেকে নিজের বা প্রয়োজনে অন্য কোন ইমেইলেও ই-টিন সনদটি পাঠানো যাবে।
ই-টিন নাম্বার পুনরুদ্ধার করার উপায়
টিন শংসাপত্র হারিয়ে গেলে সাহায্যের জন্য এনবিআর হেল্পলাইন হচ্ছে- ০৯৬১১৭৭৭১১১ বা ৩৩৩। এছাড়া প্রার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ১টি অনুলিপি সহ ট্যাক্স অফিসে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটে নিবন্ধনকৃত অ্যাকাউন্টের আইডি/ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে, প্রথমে ইউজার আইডি তারপর পাসওয়ার্ড পুনরুদ্ধার করতে হবে। এর জন্য ই-টিন সার্টিফিকেট করার সাইটে এ আবার যেতে হবে।
পড়ুন: ট্রেড লাইসেন্স করার পদ্ধতি: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, খরচ ও সময়
সেখানে সরাসরি চলে যেতে হবে ফরগেট পাসওয়ার্ড মেন্যুতে। সেখানে ফরগেট মাই ইউজার নেম বাছাই করে নেক্সট-এ ক্লিক করতে হবে। তারপরের পেজে অ্যাকাউন্ট নিবন্ধনের মুহুর্তে প্রদানকৃত মোবাইল নাম্বারটি দিয়ে ক্যাপচা পূরনের করে নেক্সট-এ ক্লিক করতে হবে। মোবাইল নাম্বার মনে না থাকলে সাম্প্রতিক সময়ে নিজের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারগুলো দিয়ে চেষ্ঠা করা যেতে পারে।
যে মোবাইল নাম্বারটি টিনের জন্য আগে ব্যবহার করা হয়নি সে নাম্বারের ক্ষেত্রে ইউজার আইডি ইনঅ্যাক্টিভ মেসেজ দেখাবে। কাঙ্ক্ষিত মোবাইল নাম্বারটি পাওয়া গেলে তা প্রদানের পর নিরাপত্তা প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পেজ আসবে। এই অংশটি সাধারণত সবারই মনে থাকে, কারণ নিজের ব্যক্তিগত জীবনের সাথে সম্পর্কিত খুব সহজে মনে থাকে এমন তথ্যই সবাই এখানে দিয়ে রাখে।
প্রশ্নের উত্তর সঠিক দেয়ার পর এবার মোবাইল নাম্বার যাচাই করার জন্য প্রার্থীর মোবাইলে ৪ অঙ্কের একটি যাচাইকরণ কোড যাবে। এই কোডটি লিখে মোবাইল নাম্বারটি পুনরায় টাইপ করে সাবমিটে ক্লিক করতে হবে। এর সাথে সাথেই দেখা যাবে টিন অ্যাকাউন্টের ইউজার আইডিটি।
পড়ুন: মোটর ড্রাইভিং লাইসেন্স করার পদ্ধতি: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ
এবার পাসওয়ার্ড বের করার জন্য আবার ফরগেট পাসওয়ার্ড মেন্যুতে যেতে হবে। তারপরের পেজে ফরগেট মাই পাসওয়ার্ড অপশনটি বাছাই করে নেক্সটে যেতে হবে। এবারে সবেমাত্র বের করা ইউজার আইডি দিয়ে ভেরিফিকেশন অক্ষরগুলো লিখে নেক্সটে যাওয়ার সাথে সাথে প্রার্থীর মোবাইলে ৪ অঙ্কের ভেরিফিকেশন কোড যাবে। কোডটি লিখে রিকভার মাই অ্যাকাউন্ট-এ ক্লিক করার পর যে পেজটি আসবে সেখানে কমপক্ষে ৪টি অক্ষর বা সংখ্যা দিয়ে বানিয়ে নেয়া যাবে একটি নতুন পাসওয়ার্ড।
শেষাংশ
অনলাইনে ই-টিন সার্টিফিকেট করার উপায় একদম সহজ এবং ঝামেলামুক্ত, যা ডিজিটাল বাংলাদেশের একটি দারুণ প্রয়াস। টিন গ্রহণকারীদের যে বিষয়টি মনে রাখতে হবে তা হলো- টিন থাকলেই যে আয়কর রিটার্ন দিতে হবে এমনটি নয়। বাংলাদেশে স্থায়ী কোন ভিত্তি নেই এমন অনিবাসি, শুধুমাত্র জমি বিক্রি বা ক্রেডিট কার্ড নেয়ার জন্য টিন নিয়েছেন অথচ করযোগ্য আয় নেই এমন নাগরিকদের টিন থাকা সত্ত্বেও আয়কর রিটার্ন দাখিলের দরকার নেই।
কক্সবাজারে ইউএনএইচসিআর অফিসের সামনে রোহিঙ্গা যুবকের আত্মহত্যার চেষ্টা
পারিবারিক বিরোধ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগে কক্সবাজারে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক কমিশনের (ইউএনএইচসিআর) সাব-অফিসের সামনে পরিবার নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন রোহিঙ্গা যুবক আবুল ওসমান। বুধবার (১৯ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে শহরের হোটেল-মোটেল সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, আবুল ওসমান উখিয়ার কুতুপালং নিবন্ধিত শরণার্থী শিবিরের ই ব্লকের ৪০ নম্বর শেডের বাসিন্দা এহসানুল হকের ছেলে। এসময় তার সাথে ছিলেন তার স্ত্রী, সন্তান ও মা ফাতেমা বেগম।
ভুক্তভোগী রোহিঙ্গা আবুল ওসমানের দাবি, তার সৎ মায়ের সাথে তার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। কিন্তু সৎ মা সাবেরা খাতুনের এনজিও সংস্থা ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে সখ্য থাকায় তিনি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তার অভিযোগ, সৎ মায়ের কথা শুনে ক্যাম্প সিআইসি ও পুলিশ তার পরিবারকে নিয়মিত হয়রানি করছে।
কথিত আরসার নেতাদের হুমকি পেতে হচ্ছে জানিয়ে এ যুবক জানান, নিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে নিরাপত্তা দেয়ার কথা থাকলেও তারা কোনো কিছুই করছে না। বারবার অভিযোগ করার পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এমনকি, নিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে যে সকল সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা তাকে তার কিছুই দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাঝিকে কুপিয়ে হত্যা
রোহিঙ্গা যুবক জানান, তিনি বারবার সৎ মায়ের বিরুদ্ধে বিচার চেয়েছেন। কিন্তু কেউ তার কথা শোনেনি। তাই বিচার চাইতে তিনি ইউএনএইচসিআরের সাব অফিসে এসেছেন। এর বিচার না করলে আত্মহত্যা করার হুমকি দেন তিনি। পরে রাস্তায় শুয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন।
তার মা ফাতেমা বেগম বলেন, ওসমানদের বাবা আরেকটি বিয়ে করেছেন। ওই নারী তার সন্তানদের হত্যার উদ্দেশ্যে বারবার হামলা করে লোকজন নিয়ে। এ নিয়ে বার বার অভিযোগ দেয়ার পরও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এখন পুরো পরিবার শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।
উল্টো অভিযুক্তরা তার ছেলেকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে হেনস্তা করছে ভলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ইউএনএইচসিআর অফিসে কয়েক দফা বলার পরও সমাধান হচ্ছে না বা করছে না তারা।
ইউএনএইচসিআর কার্যালয়ের নিরাপত্তা রক্ষীদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহসিন বলেন, সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আবুল ওসমান ও তার পরিবারের সদস্যরা বের হন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ইউএনএইচসিআর কক্সবাজার কার্যালয়ের লিয়াজোঁ অফিসার ইখতিয়ার উদ্দিন বায়েজীদ বলেন, নিবন্ধিত রোহিঙ্গা পরিবার বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন। তাদের সঙ্গে কথা এক পর্যায়ে তিনি অফিসের সামনের সড়কে বেরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে রোহিঙ্গা শিবিরে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত ২
বাবুল ও ইলিয়াসের বিরুদ্ধে এবার পিবিআই পুলিশ সুপারের মামলা
স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় কারাগারে আটক সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার ও আমেরিকা প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনসহ চারজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), চট্টগ্রাম মেট্রোর প্রধান পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা।
গত সোমবার রাতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের খুলশী থানায় মামলাটি করা হলেও বুধবার রাতে তা জানাজানি হয়।
মামলায় বাবুলের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া ও ছোট ভাই হাবিবুর রহমান লাবুকেও আসামি করা হয়েছে।
গতকাল রাতে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা।
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল মাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচারের অভিযোগে সোমবার তিনি (পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা) মামলাটি করেছেন। মামলায় বাবুল আক্তারসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে।’
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বাবুল আক্তারসহ অন্য আসামিরা মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র করছেন। এর অংশ হিসেবে ইলিয়াস হোসেনকে দিয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে ‘স্ত্রী খুন স্বামী জেলে খুনি পেয়েছে তদন্তের দায়িত্ব’ শিরোনামে ফেসবুক ও ইউটিউবে ডকুমেন্টারি ভিডিও প্রচার করছেন। ভিডিওতে যে বক্তব্য রয়েছে তার মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
পড়ুন: মিতু হত্যা: বাবুলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে পিবিআইয়ের অভিযোগপত্র গ্রহণ
মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুলের করা মামলায় তাকেসহ ৭ জনকে আসামি করে ১৩ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই। ১০ অক্টোবর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে।
আদালতে পিবিআইয়ের অভিযোগপত্র জমা দেয়ার আগে ৩ সেপ্টেম্বর এই মামলার তদন্ত নিয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন ইলিয়াস হোসেন। এরপর ৮ সেপ্টেম্বর হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার ও পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম মেট্রোর প্রধান পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানাসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেন বাবুল। ২৫ সেপ্টেম্বর সেই আবেদন খারিজ করে দেন আদালত।
এর আগে ২৭ সেপ্টেম্বর বাবুল, ইলিয়াস, ওয়াদুদ মিয়া ও লাবুকে আসামি করে ঢাকার ধানমন্ডি থানায় একই অভিযোগে মামলা করেন বনজ কুমার মজুমদার।
২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে নগরের জিইসি মোড় এলাকায় খুন হন তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু।
পড়ুন: চট্টগ্রামে মিতু হত্যা: বাবুলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা
মিতু হত্যা: বাবুলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: বেইজিংয়ের প্রচেষ্টার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইতে পারে ঢাকা
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের উপায় খুঁজে বের করার প্রচেষ্টার বিষয়ে বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার চীনা পক্ষের কাছ থেকে সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের বৃহস্পতিবার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে। যেখানে রোহিঙ্গা ইস্যুটি উত্থাপনের সম্ভাবনা রয়েছে।
চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ত্রিপক্ষীয় প্রক্রিয়ার অধীনে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য একটি চুক্তি সই করে, কিন্তু প্রক্রিয়াটি স্থবির হয়ে আছে।
বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় প্রক্রিয়ার ধারণাটি নিয়ে চার বছর আগে নিউইয়র্কে কয়েকটি বৈঠক হয়েছিল। সেখানে দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য পদক্ষেপ নিতে পটভূমির পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা হয়েছিল।
সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত জিমিং ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তারা মিয়ানমারের পক্ষের সঙ্গে যেসব কথা বলেছেন তার ভিত্তিতে তারা ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ফলাফল’ তুলে ধরতে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন ‘আমি এখনই এটি প্রকাশ করতে যাচ্ছি না।’
মিয়ানমারের আশ্বাস সত্ত্বেও গত পাঁচ বছরে একজনকেও ফেরত নেয়া হয়নি। বাংলাদেশ কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে।
১৩ অক্টোবর চীনের রাষ্ট্রদূত বলেছিলেন যে একটি নির্দিষ্ট দেশের একতরফা প্রচেষ্টা নয় বরং রোহিঙ্গা ইস্যুটির মূল বিষয় হচ্ছে স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে আস্থা তৈরি করা ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়েই চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হওয়ায় আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সহায়তার জন্য চীন কাজ করছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, যদিও মিয়ানমারের বর্তমান অভ্যন্তরীণ অবস্থা এখনও অনিশ্চয়তার সম্মুখীন তবুও ‘চীনের মধ্যস্থতায়’ উভয় পক্ষের মধ্যে যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়নি এবং প্রকৃতপক্ষে মিয়ানমারের বর্তমান কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে।
এমতাবস্থায় তিনি বলেন, চীনের পক্ষ আশা করে যে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার একই দিকে কাজ করতে পারে যাতে প্রত্যাবাসন তাড়াতাড়ি শুরু হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুন ...
১৭ অক্টোবর মোমেন বলেছিলেন যে রোহিঙ্গাদের আদিস্থান ‘রাখাইন রাজ্যে’ তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের ‘প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা উচিৎ’।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের ফেরত পাঠাতে প্রস্তুত। মিয়ানমারের উচিৎ তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা। তাদের এগিয়ে আসা উচিৎ এবং তাদের কাজ করা উচিৎ।’
একইসঙ্গে মোমেন সেইসব দেশগুলোর সমালোচনা করেন, যারা মিয়ানমারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কথা বললেও তাদের সঙ্গে ‘স্বাভাবিক ব্যবসা’ করছে।
মিয়ানমারের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এগুলো গ্রহণযোগ্য নয়। আপনি যদি সত্যিকার অর্থে মানবাধিকারকে মূল্য দেন, তবে আপনাকে এটি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।’
মোমেন বলেন, মিয়ানমার তাদের যাচাই-বাছাই শেষে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে এবং আশ্বস্ত করেছে যে তারা সেখানে শরণার্থীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেবে।
তিনি বলেন, ‘তারা নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি শর্তারোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।’ কিন্তু সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো একজন রোহিঙ্গাও ফিরতে পারেনি।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যেখানে ইচ্ছা আছে, সেখানে সমস্যা সত্ত্বেও উপায় আছে।
আরও পড়ুন: ভাসানচরে পৌঁছেছে আরও ৯৬৩ রোহিঙ্গা
খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ৪০ বস্তা চাল জব্দ, আটক ২
বগুড়ার নন্দীগ্রামে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজি দরের দুই হাজার কেজি ওজনের ৪০ বস্তা চাল জব্দ করা হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের ধুন্দার গ্রামে এ সময় পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে।
আটক দু’জন হলেন- ওই গ্রামের মৃত লোকমান আলীর ছেলে আল-আমিন এবং পশ্চিমপাড়ার মৃত ইসমাইল হোসেনের ছেলে শহিদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে ভিজিএফের ২৯ বস্তা চাল জব্দ
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে আল-আমিন ও শহিদুল খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ৪০ বস্তা (২ হাজার কেজি) চাল ভটভটিতে তুলে নিয়ে অন্যত্র পাচার করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
স্থানীয় লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আমিনুল ইসলামকে জানান। এরপর অমিনুল ইসলাম ও স্থানীয় লোকজন ভটভটি বোঝাই চালসহ ওই দুই জনকে আটক করে থানায় খবর দেয়।
এরপর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সেখানে গিয়ে ভটভটি বোঝাই চালগুলো জব্দ করে ওই দুই জনকে আটক করে থানা হেফাজতে নেন।
এ ঘটনায় ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন।
নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির এ চাল হতদরিদ্র মানুষের কাছ থেকে তাঁরা ক্রয় করে পাচার করছিল। আমরা খবর পেয়ে ভটভটি বোঝাই চাল জব্দসহ ওই দুই জনকে আটক করেছি।
এ ঘটনায় অবৈধভাবে চাল সংগ্রহ করে গুদামজাত পূর্বক কালোবাজারির অপরাধে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া দুই ব্যক্তিকে বগুড়া কোর্ট হাজতে পাঠানো করা হয়।
আরও পড়ুন: ফরিদপুর পূজা মণ্ডপের বরাদ্দকৃত ২০০ বস্তা চাল জব্দ, আটক ১
সুবর্ণচরে পাচারকালে রোহিঙ্গাদের ২ ট্রাক চাল জব্দ, আটক ৩
জয়পুরহাটে প্রতিমা বির্সজনের সময় নদীতে ডুবে ২ এসএসসি ফলপ্রার্থী নিখোঁজ
জয়পুরহাটের সদর উপজেলায় ছোট যমুনা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দিতে গিয়ে এসএসসি ফলপ্রার্থী দুই কিশোর বন্ধু পানি ডুবে নিখোঁজ হয়েছে।
বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে চকশ্যাম এলাকায় নদীর চকশ্যাম ব্রিজের নিকটবর্তী স্থানে এ নিখোঁজের ঘটনাটি ঘটে।
নিখোঁজ তন্ময় (১৬) ও সঞ্জিতের (১৭) বাড়ি জয়পুরহাট শহরের পৌর এলাকার শান্তিনগর মহল্লায়।
নিখোঁজ তন্ময় ও সঞ্জিত এবার এসএসসি (মাধ্যমিক) পরীক্ষা দিয়েছে।
এ দিকে এ নিখোঁজের খবর জানতে পেয়ে জয়পুরহাটের সিভিল ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দ্রæত ঘটনাস্থলে গিয়ে ছোট যমুনা নদীতে নেমে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিখোঁজ শিশুর লাশ উদ্ধার
তাদের পাশাপাশি পুলিশ ও স্থানীয়রাও নিখোঁজ কিশোরদের উদ্ধারে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের একজনকেও উদ্ধার করা সম্ভব হয় নি ।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার দুপুর আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। ওই সময় ছোট যমুনা নদীতে কালি প্রতিমা বিসর্জন দিতে অন্যান্যদের সঙ্গে দুই বন্ধু তন্ময় ও সঞ্জিতও সেখানে যায়। তারা ঢোল বাজাতে বাজাতে হঠাৎ নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়।
জয়পুরহাট সিভিল ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর মহীউদ্দীন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নিখোঁজ দুই কিশোরদের উদ্ধারে রাজশাহী থেকে ডুবুরির দল জয়পুরহাটের পথে রওনা হয়েছে।
খবর পেয়ে জয়পুরহাট সিভিল ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দ্রæত ঘটনাস্থলে গিয়ে ছোট যমুনা নদীতে নেমে নিখোঁজ কিশোরদের খুঁজতে শুরু করে। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় পুলিশ ও স্থানীয় এলাবাসীরাও।
সন্ধ্যা ৭টায় জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যা ৭টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিখোঁজ কিশোরদের কাউকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
তবে এ ব্যাপারে সিভিল ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী বিভাগীয় অফিসকে খবর দেয়া হলে এ উদ্ধার অভিযানে অংশ নিতে রাজশাহী থেকে ডুবুরির দল জয়পুরহাটে রওনা হয়েছে।
রাতের যে কোন সময় তারা জয়পুরহাটের চকশ্যামের ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছাবে।
আরও পড়ুন: সিলেটে নিখোঁজের ৭দিন পর মাদরাসাছাত্র উদ্ধার
সিলেটে একদিনের ব্যবধানে দুই মাদরাসার ছাত্র নিখোঁজ
কৃষিপণ্যের রপ্তানি বাড়াতে ল্যাব আধুনিকায়ন হচ্ছে
কৃষি ও কৃষিজাত পণ্যের ঝুঁকিমুক্ত আমদানি নিশ্চিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক বিধিবিধান অনুসরণপূর্বক বিদেশে কৃষিপণ্যের রপ্তানি কার্যক্রম গতিশীল করতে কাজ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। সেজন্য, উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কার্যক্রমকে আন্তর্জাতিকমানে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে ই-ফাইটোসেনেটারী সার্টিফিকেট পদ্ধতি প্রবর্তন এবং দেশের সকল সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের ল্যাবরেটরি আধুনিকীকরণের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম।
বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটে ‘স্যানিটারি ও ফাইটোস্যানিটারি এবং টেকনিক্যাল ব্যারিয়ার টু ট্রেড’ বিষয়ক পাবলিক কনসাল্টেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিসচিব এসব তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: গ্রামাঞ্চলে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকবে: কৃষিসচিব
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যের উল্লেখ করে সচিব জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের কৃষিভিত্তিক পণ্য রপ্তানি আয় ছিল ২৮৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা মোট পণ্যরপ্তানি আয়ের প্রায় ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
এছাড়াও কৃষি-খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প এখন জিডিপিত প্রায় ১.৭ শতাংশ অবদান রাখছে এবং প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান করেছে। মোট রপ্তানিতে এর অংশ এখন দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩.৫ শতাংশ।
সচিব বলেন, বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষিজাত পণ্যসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা উদ্ঘাটন এবং তা দূর করার জন্য বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট (বিএফটিআই) ‘স্যানিটারি ও ফাইটোস্যানিটারি এবং টেকনিক্যাল ব্যারিয়ার টু ট্রেড শীর্ষক গবেষণা পরিচালনা করছে।
এটি দেশের কৃষি এবং কৃষিজাত পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে বিএফটিআইর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জাফর উদ্দীন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের ডিজি হাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টিভিটি প্রকল্পের পরিচালক মিজানুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং পরিচালক সৈয়দ রফিকুল আমিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: আপাতত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের পরিকল্পনা নেই: কৃষিসচিব
হিলি সীমান্তে আটক পাঁচ, ২৪টি স্বর্ণের বার জব্দ
দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। বুধবার বিকালে আটকের সময় তাদের কাছ থেকে ২৪টি স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন কাস্টমস গোয়েন্দা সুপারিনটেনডেন্ট শোয়েব রায়হান।
আরও পড়ুন: মহেশপুরে একজন আটক, ৪টি স্বর্ণের বার জব্দ
আটক পাঁচজন হলেন- মানিকগঞ্জের মনোরঞ্জন, ফরহাদ, মনিরুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন ও ঢাকার মতিয়ার রহমান।
গোয়েন্দা সুপারিনটেনডেন্ট শোয়েব রায়হান বলেন, ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম শেষে ভারতে যাওয়ার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রথমে দুইজনকে আটক করা হয়। তাদের দেহ তল্লাশি করে ১০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়।
তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আরও তিনজনের দেহ তল্লাশি করে ১৪টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত স্বর্ণের ওজন দুই কেজি চার গ্রাম। যার আনুমানিক মূল্য এক কোটি ৬৮ লাখ কোটি টাকা বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে ১০টি স্বর্ণের বার জব্দ, আটক১
ভারতে পাচারকালে অর্ধ কোটি টাকার ৪টি স্বর্ণের বার জব্দ
তামাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধেও বাঙালি জাতি খালি হাতে ফিরবেনা: ডেপুটি স্পিকার
ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু বলেছেন, বাঙালি জাতি আন্দোলন করে কখনো খালি হাতে ফেরেনি। তাই তামাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধেও তাঁরা খালি হাতে ফিরবে না।
বুধবার ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলের চিত্রা হলে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত ‘মাদক নিয়ন্ত্রণ’ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুল হক টুকু বলেন, তামাকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে শুধু সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগে তামাকের বিরুদ্ধে রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীসহ সবাইকে যার যার অবস্থানে থেকে সাধ্যানুযায়ী ভূমিকা রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে দেশ মাদকমুক্ত হওয়ার প্রসঙ্গে ডেপুটি স্পিকার বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নির্দিষ্ট সময়ের মাঝেই তামাকমুক্ত করতে পারবো। জাতির ভিতর তামাক-বিরোধী ঝড় উঠেছে, এখন শুধু এই কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে হবে। আমরা ২৩ বছর সময় নিয়েছি মুক্তিযুদ্ধকে সংগঠিত করতে বিজয় লাভ করেছি ৯ মাসে।
কাজেই ধৈর্য্য ধারণ করে সঠিক কাজটি করে যেতে হবে।
আরও পড়ুন: সংসদ ভবন এলাকায় স্পিকার-ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন নির্মাণ বৈধ
এছাড়া তিনি আরও বলেন, শুধু আইন করে দেশকে মাদকমুক্ত করা যাবে না, এর সঙ্গে পারিবারিক শিক্ষা, সামাজিক শিক্ষা ও নৈতিকতার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। তামাক-বিরোধী আইন পাশ হওয়া সময়ের ব্যাপার।
ডেপুটি স্পিকার আরও বলেন, করোনার বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা আমরা ব্যয় করেছি, অথচ তামাকের চেয়ে ১৬ গুণ অধিক মরণঘাতী ব্যাধি নিয়ে ব্যক্তি পর্যায়ে আমরা অনেকেই উদাসীন। এটি রোধে আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
তামাক-বিরোধী অবস্থানে নিজের ব্যক্তিগত উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি একবার দলীয় কমিটি গঠনে ডোপ টেস্ট করিয়ে নেগেটিভ রিপোর্টধারীদের নিয়ে কমিটি গঠন করেছি।
এছাড়া চাকরির ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট বাধ্য করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে কাজ করেছি, বর্তমানে বিধানটি চালু রয়েছে। এভাবে যার যেখানে মাদক-বিরোধী কাজ করার সুযোগ আছে সবারই তা করা উচিৎ।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি, সংসদ সদস্য বীরেন শিকদার, সংসদ সদস্য শিরীন আখতার ও সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন।
মতবিনিময় সভায় ড. অরূপরতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে, জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান, অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, ফেরদৌস ওয়াহিদ এবং সমাপনী বক্তব্য দেন সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান তালুকদার। এছাড়া গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ডেপুটি স্পিকার হলেন শামসুল হক টুকু
সাংবাদিক তোয়াব খানের মৃত্যুতে ডেপুটি স্পিকারের শোক
শ্রমিকের দুর্বলতাকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে ব্যবহার করবেন না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘দয়া করে শ্রমিকের দুর্বলতাগুলোকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন না। বরং উদার সমর্থন এবং অর্থায়নের মাধ্যমে সেই দুর্বলতাগুলোকে কাটিয়ে উঠতে সাহায্যের চেষ্টা করুন।’
তিনি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রতি বাংলাদেশকে দুর্ভাগ্যজনক অতীতে টেনে না নিয়ে এর দূরদর্শী প্রচেষ্টায় যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যথায় শুধুমাত্র কিছু ‘স্থায়ী’ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বার্থ এবং কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা করাই হবে বলে মন্তব্য করেছেন।
বুধবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শ্রম অধিকার, শালীন কাজ এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে অগ্রগতি নিয়ে আয়োজিত ‘কাজের মৌলিক নীতি ও অধিকার’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে বিতর্কের চর্চা করতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আইএলও-এর সদস্য রাষ্ট্র হওয়ার ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে বাংলাদেশের। দিবসটি উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইএলও যৌথভাবে সেমিনারটির আয়োজন করে।
মোমেন জানান, তিনি প্রকাশ্যে আইএলও’র সঙ্গে বাংলাদেশের ‘গঠনমূলক সম্পৃক্ততার’ চেতনায় এবং তাদের পারস্পরিক স্বার্থে এই পর্যবেক্ষণগুলো করেছেন।
যে কোনও সময়ে আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের প্রতিক্রিয়া হিসেবে শ্রম ও কর্মসংস্থান খাতে যথাযথ কোর্স-সংশোধনের সুবিধা দেয়ায় বাংলাদেশ সরকারের আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
মোমেন বলেন, ‘তবে আমরা আশা করব আইএলওসহ আমাদের প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক অংশীদাররা স্থানীয় পর্যায়ের জ্ঞান এবং অন্তর্দৃষ্টির মূল্য স্বীকার করবে। সকলের সঙ্গে খাপ খায় এমন একটি মডেল নিবে। একতরফা নির্দেশনামূলক পদ্ধতি গ্রহণ করবে না।
তিনি বলেন, সরকার ইউক্রেনের যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান জীবনযাত্রার ব্যয়-সঙ্কট সমন্বয় করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তরুণ কর্মশক্তির জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে এবং মুদ্রাস্ফীতির চাপের সময় দরিদ্র পরিবারগুলোকে সহায়তা করতে সামাজিক নিরাপত্তার পরিধি প্রসারিত করে।
তিনি বলেছেন, ‘এটি গুরুত্বপূর্ণ যে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সম্ভাব্য বৈশ্বিক মন্দার মুখে কিছু বাস্তবিক নীতি গ্রহণ করে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সুযোগ দিয়েছে।’
আরও পড়ুন: শেখ রাসেলের মতো যেন আর কোন শিশুকে জীবন দিতে না হয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মোমেন ২০০৮-০৯ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের সময় আন্তর্জাতিক নীতির আলোচনায় আইএল’র পুনরুত্থান এবং প্রাসঙ্গিকতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই যে আইএলও তার প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করছে। কারণ আমরা আরও একাধিক সংকটকাল মোকাবিলা করছি।’
সেমিনারে বক্তব্যে আইএলও-এর সহকারি মহাপরিচালক এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক চিহোকো আসাদা-মিয়াকাওয়া বলেন, আইএলও অনুসমর্থিত কনভেনশনের প্রয়োগে সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
আইএলও দক্ষতাভিত্তিক শাসনের পদ্ধতিকে সহযোগিতা করছে এবং আরও আধুনিকীকরণের প্রত্যাশা করছে। আইএলও এই অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, ‘সরকার এবং সামাজিক অংশীদারদের সঙ্গে আমরা সাধারণ লক্ষ্যে পৌঁছাতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’
আইএলও’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সার্বিক লক্ষ্য হলো বাংলাদেশকে এই সংকট থেকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পুনরুদ্ধার অর্জন করা যা সম্পূর্ণ অন্তর্ভুক্তিমূলক, পদ্ধতিগত এবং স্থিতিস্থাপক।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী নীতিগুলোকে শক্তিশালীকরণে জোর দিয়েছিলেন যা সকলের জন্য শালীন কাজে অগ্রাধিকার দেয় এবং বৈষম্যের সমাধান করে।
আসাদা-মিয়াকাওয়া বলেন, এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর অর্থ হবে একটি ব্যাপক সূচির মাধ্যমে অগ্রগতি করা এবং মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, শ্রমিকদের সুরক্ষা, সার্বজনীন সুরক্ষা এবং সামাজিক সংলাপের প্রচার করা।
তিনি সকলের জন্য নিরাপদ কাজকে অগ্রাধিকার দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
আইএলও-এর সঙ্গে ভবিষ্যত সহযোগিতাকে শক্তিশালীকরণ ও পুনঃনির্মাণে আগ্রহের পাঁচটি সুনির্দিষ্ট বিষয় চিহ্নিত করে। মোমেন আশা করেন যে জলবায়ু পরিবর্তন, ডিজিটাইজেশনের কারণে কাজের জগতে দ্রুত পরিবর্তনের জন্য আইএলও ও সরকার সহযোগিতা করবে।
মোমেন বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়ন সংস্থাগুলো প্রায়শই অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার এবং স্বার্থ রক্ষার জন্য মৌখিক পরিষেবা ছাড়া আর কিছুই দেয় না।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আইএলওকে অংশীদার হিসেবে দেখতে চায় এবং স্থানীয় যোগ্যতার ক্ষেত্রে যা হওয়া উচিত তা অগত্যা উপযুক্ত নয়।
অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও শ্রম খাতে কিছু গুরুতর দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে, এমনকি সম্প্রতি ঘটেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে উপযুক্ত কর্মপরিবেশে উৎপাদনশীল কর্মী বাহিনী নিয়োজিত না থাকলে রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন করা তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
সেমিনারে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: খাদ্য-জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী