বাংলাদেশ
বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য আসন্ন বছর খুবই প্রতিশ্রুতিশীল: ডাচ রাষ্ট্রদূত
সাহায্য থেকে বাণিজ্যে স্থানান্তরের কথা মাথায় রেখে বেসরকারি খাতের বৃহত্তর সম্পৃক্ততায় বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্রে আসন্ন বছর ও দশকগুলো ‘খুবই প্রতিশ্রুতিশীল’ বলে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ডাচ রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন।
‘বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস সম্পর্ক: ভবিষ্যতের পূর্বাভাস’ শীর্ষক এক সংলাপে মূল বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশের সামর্থ্য, দুর্বলতা ও সুযোগ চিহ্নিত করেন এবং জয়-জয়ের ভিত্তিতে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সেগুলো মোকাবিলার ওপর জোর দেন।
রাষ্ট্রদূত লিউয়েন বলেন, ‘তাই আমরা আসন্ন বছর ও এমনকি কয়েক দশককে দেখছি বেসরকারি খাতের বৃহত্তর সম্পৃক্ততার সঙ্গে কৃষি-খাদ্য ও পানি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার জন্য অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিশীল।’
কসমস গ্রুপের জনহিতকর শাখা কসমস ফাউন্ডেশন চলমান অ্যাম্বাসেডর লেকচার সিরিজের অংশ হিসেবে এ সংলাপের আয়োজন করেছে।
কসমস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাহার খান সূচনা বক্তব্য দেন।
চবিতে ছাত্রী হেনস্তার প্রতিবাদে রাতভর বিক্ষোভ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় বিচার না করে উল্টো রাত ১০টার মধ্যে হলে ফেরার সময়সীমা বেঁধে দেয়ার প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছে চবির আবাসিক ছাত্রীরা।
বুধবার (২০ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভিসির বাস ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শতাধিক ছাত্রী। এসময় তারা রাত ১০টায় হলে প্রবেশের সিদ্ধান্ত বাতিল ও ক্যাম্পাসে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
তারা চার দফা দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বলে জানান। চার দফা দাবিগুলো হলো-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অকার্যকর যৌন নিপীড়ন সেল সংস্কার করে কার্যকর করা। রাত ১০টার পরে হলে প্রবেশের যেই নির্দেশনা তা বাতিল করা। কার্যদিবসের মধ্যে চলমান সকল হেনস্তা ইস্যুর বিচার করা।
এর আগে গত রবিবার (১৭ জুলাই) দিবাগত রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হল থেকে বোটানিক্যাল গার্ডেনে যাওয়ার রাস্তায় চবির এক শিক্ষার্থীকে হেনস্তার ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী জানান, প্রীতিলতা হলসংলগ্ন এলাকায় বন্ধুর সঙ্গে হাঁটছিলেন তিনি। এ সময় পাঁচ তরুণ তাদের গতিরোধ করে জেরা করতে থাকে। একপর্যায়ে দুজন কোনো কারণ ছাড়াই তাদের মারধর করে। এছাড়া মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে এবং সেটি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাদের মানিব্যাগ ও মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে ওরা চলে যায়।
এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে হাটহাজারী থানায় অজ্ঞাত ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেছে ওই শিক্ষার্থী।
আন্দোলনকারীদের একজন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রী ফারজানা আমিন সোনিয়া বলেন, আমরা চারটা দাবি জানিয়েছি। প্রশাসন আমাদের দাবি মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সাম্প্রতিক ছাত্রী লাঞ্ছিত ঘটনা চার কর্মদিবসের মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরিয়াল বডি প্রদত্যাগ করবেন। আমরা প্রতিশ্রুতি পেয়ে আন্দোলন থেকে সরে এসেছি। এখন বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছি।
এদিকে ছাত্রী হেনস্তাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছে চবি কর্তৃপক্ষ।
চবির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুল হাসান আগামী চার কর্মদিবসের মধ্যে শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের নিয়ে পদত্যাগ করবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। লিখিত প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর আন্দোলন থেকে সরে আসেন ছাত্রীরা।
পড়ুন: নড়াইলে অধ্যক্ষ হেনস্তা: ১ শিক্ষক ও কলেজ পরিচালনা পরিষদকে শোকজ
চবিতে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার দাবিতে শিক্ষার্থীদের রেল অবরোধ
পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলাকে ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক যুগান্তকারী অর্জনে বৃহস্পতিবার পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন ২৬ হাজার ২২৯টি ঘর হস্তান্তরের সময় এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, আমরা খুব আনন্দিত যে দুই জেলার সব উপজেলায়ই এখন সম্পূর্ণরূপে ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষমুক্ত হয়েছে। ‘আমাদের উদ্যোগের ফলে আজ এই সাফল্য অর্জিত হয়েছে’।
এর বাইরে দেশের বিভিন্ন জেলার আরও ৪৩টি উপজেলাও একই মর্যাদা পেয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এটা একটা বড় অর্জন। আমি আশা করি বাংলাদেশের সব জেলা ও উপজেলা একদিন ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষ মুক্ত হবে। ‘দেশের প্রতিটি মানুষের একটি বাড়ি এবং ঠিকানা থাকবে।’
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড়ে ৪ হাজার ৮৫০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন লোক খুঁজে পেয়েছে সরকার এবং তাদের সবার জন্য ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, মাগুরা জেলায় ৬৭৮টি পরিবারের জন্য ঘর তৈরি করা হয়েছে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীন সকলের জন্য আশ্রয় নিশ্চিত করার সরকারের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সবগুলো উপজেলাসহ দেশের ৫২টি উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এই ৫২টি উপজেলায় মোট ১৯ হাজার ৭৮০টি ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে বলে প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
তারা বলেন, দুই জেলা ও ৫২টি উপজেলায় কাউকে ভূমিহীন পাওয়া গেলে দ্রুত তাদের জমিসহ ঘর দেয়া হবে।
ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ভূমিহীন ৫২ উপজেলা হলো ঢাকার নবাবগঞ্জ, মাদারীপুর সদর, শরীয়তপুরের ডামুড্যা, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী, টাঙ্গাইলের গোপালপুর, মানিকগঞ্জের ঘিওর ও সাটুরিয়া, রাজবাড়ীর কালুখালী, ফরিদপুরের নগরকান্দা, নেত্রকোণার মদন, ময়মনসিংহের ভালুকা, নান্দাইল, ফুলপুর ও ফুলবাড়িয়া, জামালপুরের বকশীগঞ্জ, চট্টগ্রামের পটিয়া, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর ও রামগঞ্জ, ফেনীতে ফেনী সদর, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, পঞ্চগড়ের আটোয়ারী, পঞ্চগড় সদর, দেবীগঞ্জ, তেতুলিয়া ও বোদা, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী, নীলফামারীর ডিমলা, নওগাঁর রানীনগর, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি, রাজশাহীর মোহনপুর, চারঘাট ও বাঘা, বগুড়ার নন্দীগ্রাম ও দুপচাঁচিয়া, নাটোরের বাগাতিপাড়া, পাবনার ঈশ্বরদী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু, সাতক্ষীরার তালা, মাগুরায় মাগুরা সদর, শ্রীপুর, মোহাম্মদপুর ও শালিখা, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া ও পটুয়াখালীর দশমিনা।
পড়ুন: আশ্রয়ণ: বাগেরহাটে শেফালীসহ ৪৫ পরিবারের স্বপ্ন পুরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, আশ্রয়ণ-২-এর তৃতীয় প্রকল্পে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে মোট ৬৭ হাজার ৮০০টি ঘর দেয়া হচ্ছে।
এর মধ্যে গত ২৬ এপ্রিল ৩২ হাজার ৯০৪টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে, ২১ জুলাই হস্তান্তর করা হয়েছে ২৬ হাজার ২২৯টি এবং বাকি ৮ হাজার ৬৬৭টি ঘর নির্মাণাধীন রয়েছে।
এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি এবং ২০ জুন প্রথম দুই দফায় দেশে গৃহহীনদের মধ্যে ভূমিসহ এক লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি আধা-পাকা ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে আশ্রয়ণ ঘরের জন্য প্রায় ৪ হাজার ২৯কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।
সরকার সারা দেশে গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণের জন্য প্রায় ৫ হাজার ৫১২ একর খাস জমি উদ্ধার করে। এই জমির আনুমানিক বাজার মূল্য ২ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা।
এছাড়া আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ঘর নির্মাণের জন্য সরকার ১৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯১ দশমিক ৭৯ একর জমি ক্রয় করেছে। আর এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৪৬২টি ভূমিহীন পরিবারকে সংগৃহীত জমিতে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
এই আবাসন প্রকল্প গ্রামীণ অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত করতে অবদান রাখবে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট সত্ত্বেও সরকার আশ্রয়-২ প্রকল্প বাস্তবায়ন চালিয়ে যাবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
পড়ুন: স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে সরকারের ব্যাপক পরিকল্পনা
জনবল সংকটে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আইসিইউ ও এইচডিইউ সেবা বন্ধ
প্রেমের টানে রাজশাহীতে মালয়েশিয়ান তরুণী
প্রেমের টানে রাজশাহীতে ছুটে এসেছেন মালয়েশিয়ান এক তরুণী। ২০ বছর বয়সি স্যান্ডি নামের ওই তরুণী মন দেয়া-নেয়ার পর প্রেমিক জুলফিকারের সাথে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।
জুলফিকার রাজশাহী মহানগরীর বিনোদপুর এলাকার মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে। তার বাড়িতেই এখন বিদেশি বধূ।
স্যান্ডি বিয়ের আগে খ্রিস্টান ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ধর্মান্তরিত হওয়ার পর তার নাম রাখা হয় আলিশা অ্যানি। তিনি মালয়েশিয়ার পাসপোর্ট দপ্তরে কর্মরত।
জুলফিকার বলেন, প্রায় ৮ বছর আগে পড়ালেখার জন্য তিনি মালয়েশিয়ায় যান। ওই সময় পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন চাকরি করতেন। সেখানেই স্যান্ডির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এক সময় তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান ।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়া থেকে উড়ে আসেন স্যান্ডি। ঈদের তিন দিন পর গত ১৪ জুলাই ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এই বিয়ে নিয়ে আমার ভাই-বোন ও মা আত্মীয়-স্বজন সবাই খুশি।
সত্যিকারের ভালোবাসা কোনো বাধা, ধর্ম ও ভাষা মানে না বলে উল্লেখ করে জুলফিকার বলেন, ‘স্যান্ডি খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী ছিলেন। প্রেমের জন্য ধর্মান্তরিত হয়ে পরিবার ছেড়েছেন। ধর্মান্তরিত হওয়ার পর তার নাম রাখা হয়েছে আলিশা অ্যানি। তার ভালোবাসা অবশ্যই আমার কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি।’
আলিশা অ্যানি জানান, বাংলাদেশ এবং রাজশাহী তার ভীষণ ভালো লেগেছে। তার শাশুড়ি তাকে পছন্দ করায় এবং পুত্রবধূ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় তিনি অনেক খুশি এবং আনন্দিত। শাশুড়ির সঙ্গে সংসারে কাজ করতে চান। কিন্তু তার শাশুড়ি ভালোবেসে কিছুই করতে দেন না বলেও জানান মালয়েশিয়ান নববধূ।
আগামী সপ্তাহেই স্বামী জুলফিকারকে নিয়ে তিনি নিজ দেশ মালয়েশিয়ায় ফিরতে চান। সেখানে দুজনই নতুনভাবে নিজ ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চান।
স্যান্ডি বাংলা ভাষা জানেন না। তিনি সবার সাথে কথোপকথনে দোভাষী হিসেবে সাহায্য নিচ্ছেন তাঁর স্বামী জুলফিকারের।
পড়ুন: বিয়ের দাবিতে বাড়িতে প্রেমিকা, যুবকের বিষপানে আত্মহত্যা!
প্রেমের টানে বাংলাদেশে আসা ভারতীয় কিশোরীকে ফেরত
ঢাকার বাতাসের মান আবার ‘অস্বাস্থ্যকর’
গত সপ্তাহে উল্লেখযোগ্য উন্নতির পর বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার বাতাসের মান আবার 'অস্বাস্থ্যকর' অবস্থায় ফিরেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ১৫২ রেকর্ড করা হয়েছে। বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা তৃতীয় স্থানে রয়েছে৷
চিলির সান্তিয়াগো ও ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা যথাক্রমে ১৫৪ ও ১৫৩ নিয়ে প্রথম দুটি স্থানে রয়েছে।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ২০০ হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয় বিশেষ করে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য।
একইভাবে, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোর ‘খারাপ’ বলা হয়, যেখানে ৩০১ থেকে ৪০০ এর স্কোর ‘ঝুঁকিপূর্ণ'বলে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের জন্য কোনো ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা জানায়।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হল, ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দূষিত বাতাসে শ্বাস নেন এবং বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর প্রধানত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে।
পড়ুন: ঢাকার বাতাসের মান ‘গ্রহণযোগ্য’
ঢাকায় আজ কোন এলাকায় কখন লোডশেডিং
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) এবং ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত লোডশেডিং হবে।
ডিপিডিসি (DPDC) এবং ডেসকো (Desco) ওয়েবসাইটে লোডশেডিংয়ের সম্ভাব্য সময়সূচি জানতে পারবেন গ্রাহকরা।
পড়ুন: বুধবার কোন এলাকায় কখন লোডশেডিং, তালিকা প্রকাশ
দেশে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং শুরু
বরিশালে ইউপি সদস্যসহ ২ জনকে কুপিয়ে জখম
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যসহ দুজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার ভাষানচর লঞ্চঘাটে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন-ভাষানচর ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শাহ সুফি শামীম ও তার ভগ্নিপতি নাসির খান। শামীম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও নাসির সাংগঠনিক সম্পাদক।
আরও পড়ুন: বরিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪
আহত ইউপি সদস্যর ভাই মো. রাকিব জানান, শামীমকে ঢাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং নাসির বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কাজীরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুবাইর বলেন, গত পাঁচ বছর একই এলাকার আনিস কুঠিয়াল ও জাফর কাজী পক্ষের সঙ্গে ইউপি সদস্য শাহ সুফি শামীম পক্ষের বিরোধ রয়েছে। এর জেরে কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: বরিশালে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
তিনি বলেন, থানায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে ঘটনাস্থল থেকে একটি মোটরসাইকেল ও দুটি রামদা উদ্ধার করা হয়েছে।
রাকিকের অভিযোগ, প্রতিপক্ষ আনিস, জাফর, মন্টুসহ ১০ থেকে ১২ জন রামদা, দাসহ লাঠিসোটা নিয়ে বুধবার সন্ধ্যার দিকে ভাষানচর লঞ্চ ঘাটে এসে হামলা করে। তারা এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে শামীম ও নাসিরকে জখম করে।
১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা: ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি ১৮ অক্টোবর
প্রায় দেড় যুগ আগে চারদলীয় জোট সরকারের আমলের ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন) এবং আসামিদের আপিল শুনানির জন্য আগামী ১৮ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদন মঞ্জুর করে বুধবার বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে মামলার শুনানির প্রস্তুতির জন্য রাষ্ট্রপক্ষে সময় আবেদন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নির্মল কুমার দাস। পরে বশির আহমেদ বলেন, এ মামলায় বিচারিক আদালত ২০১৪ সালে রায় দেয়ার পর এ মামলার নথি ডেথ রেফারেন্স হিসাবে হাইকোর্টে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে আসামিপক্ষ। পরে এ মামলার পেপারবুক (মামলার যাবতীয় নথি) প্রস্তুত হওয়ার পর এখন শুনানির জন্য কার্যতালিকায় এসেছে।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল মধ্যরাতে চট্টগ্রামের সিইউএফএল জেটিঘাটে খালাসের সময় পুলিশ সদস্যরা আটক করে ১০ ট্রাক সমপরিমাণ অস্ত্র। এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চোরাচালানের ঘটনায় করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় ১৪ জনকে ফাঁসিতে ঝোলানোর রায় দেন আদালত। অস্ত্র আইনের পৃথক দুটি ধারায় ১৪ জনের প্রত্যেককে দেয়া হয় যাবজ্জীবন ও সাত বছর করে দণ্ডাদেশ।
মামলায় (বিশেষ ক্ষমতা আইনে) সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী (মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর), সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া, এনএসআইর সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুর রহিম (গত বছরের ১৫ আগস্ট কারাবন্দি অবস্থায় ঢামেকে মৃত্যুবরণ করেন), ডিজিএফআই’র সাবেক পরিচালক (নিরাপত্তা) উইং কমান্ডার (অবসরপ্রাপ্ত) সাহাবুদ্দিন আহমেদ, এনএসআইর সাবেক উপ-পরিচালক মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) লিয়াকত হোসেন, এনএসআইর সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহসিন উদ্দিন তালুকদার, সিইউএফএল’র সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কেএম এনামুল হক, সাবেক ভারপ্রাপ্ত শিল্পসচিব নুরুল আমিন, চোরাচালানী হিসেবে অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান, অস্ত্র খালাসের জন্য শ্রমিক সরবরাহকারী দীন মোহাম্মদ ও ট্রলার মালিক হাজি আবদুস সোবহানকে ফাঁসিতে ঝোলানোর রায় দেন আদালত। বিচারিক আদালতে রায়ের পর মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়।
সরকারি অফিসে বিদ্যুতের ব্যবহার ২৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত
ভবিষ্যতের জন্য বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সব সরকারি অফিসে বিদ্যুতের ব্যবহার ২৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যৈষ্ঠ সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
আরও পড়ুন: পুলিশ বাহিনীকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের নির্দেশ আইজিপির
সরকারের মিতব্যয়ী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বৈঠকে আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো হলো:
১. সব সরকারি অফিসে ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ ব্যবহার কমানোর জন্য সব মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
২. সংশ্লিষ্ট অফিসের জন্য বরাদ্দ করা জ্বালানির ২০ শতাংশ কম ব্যবহারের জন্য অর্থ বিভাগ একটি গেজেট প্রকাশ করবে।
৩. অনলাইনে সভা আয়োজন করতে হবে এবং জরুরি না হলে সশরীরে সভা এড়িয়ে যেতে হবে।
৪. অত্যাবশ্যক না হলে বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করা।
৫. মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা জোরদার করা এবং খাদ্যসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম স্থিতিশীল রাখতে বাজার মনিটরিং নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়: মঙ্গলবার থেকে দেশে দৈনিক এক ঘণ্টা লোডশেডিং
৬. প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পরিবহনে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার যৌক্তিক করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
৭. জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অর্থবছরের শুরু থেকেই অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
৮. প্রতিটি মন্ত্রণালয় ক্রয় পরিকল্পনা পর্যালোচনা করে রাজস্ব ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নেবে।
বৈঠকে এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যৈষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যৈষ্ঠ সচিব কে এম আলী আজম, অর্থ বিভাগের জ্যৈষ্ঠ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ডেঙ্গু: ৭০ জন হাসপাতালে
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ঢাকার ৪৭টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ৫৬ জন এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ১৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২৪৪ রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে ১৮৮ জন ঢাকার মধ্যে এবং ৫৬ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ২০ জুলাই ২০২২ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৯১০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক হাজার ৬২৯ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ২৮১ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে এক হাজার ৬৬১জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে এক হাজার ৪৩৯ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি ২২২ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ২ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৫১
সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রয়েছে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী