বাংলাদেশ
আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা
সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের জন্য ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট আগামী ৯ জুন ২০২২ সংসদে পেশ করা হবে। জাতীয় বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় দশমিক ৭৭ ট্রিলিয়ন টাকা (৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা) যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৫ দশমিক চার শতাংশ।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) একটি শাখা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সাধারণত সরকারের জন্য রাজস্ব সংগ্রহ করে। আসন্ন বাজেটে চার লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা রাজস্বের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরের বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৪ হাজার কোটি টাকা বেশি এবং জিডিপির ৯ দশমিক ৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন: রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে এনবিআর
সরকার এনবিআরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ালেও, গত কয়েক অর্থবছরে রাজস্ব বোর্ডের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে না পারার হার বাড়ছে। কর্মকর্তাদের প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাব, বন্ধুত্বপূর্ণ রাজস্ব সংগ্রহের পদ্ধতি এবং ব্যাকডেটেড প্রযুক্তি রাজস্ব বোর্ডের জন্য বাধা।
হিসাব অনুযায়ী, বাজেট ঘাটতি দাঁড়াবে ২ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির পাঁচ দশমিক পাঁচ শতাংশ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে সরকার অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এক লাখ ২৮ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা এবং বাজেট ঘাটতি মেটাতে বিদেশ থেকে এক লাখ ১৬ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা ঋণ নেবে।
দেশীয় ঋণের মধ্যে ৯৩ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে এবং ৩৪ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র থেকে ধার করা হবে।
আরও পড়ুন: এ বছরও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হতে পারে এনবিআর
পর্যটন খাতে রাজস্ব বাড়াতে আইন সংশোধিত হচ্ছে
কৃত্রিম সংকট তৈরি না হলে দেশে খাদ্য সংকট হবে না: মন্ত্রী
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বাংলাদেশের মাটিতে সোনা ফলে। কৃষকের ঘরে ধারাবাহিকভাবে এখানে বোরো, আউশ ও আমন ধান ওঠে। কৃত্রিম সংকট তৈরি করা না হলে এদেশে খাদ্য সংকট হবে না।
সোমবার সচিবালয়ে ‘বোরো ২০২২ মৌসুমে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ ও বাজার মনিটরিং সংক্রান্ত অনলাইন মতবিনিময় সভায়’ ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, অবৈধ মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যা করণীয় তার সবই করা হবে। প্রয়োজনে ট্যাক্স কমিয়ে চাল আমদানি করে ভোক্তাকে স্বস্তিতে রাখা হবে। এসময় তিনি ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত প্রফিট না করে ভোক্তাদের প্রতি মানবিক হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বোরো সংগ্রহ সফল খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের দুর্নীতিমুক্ত থেকে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে। জুনের মধ্যে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ সম্পন্ন করতে হবে। যে সকল মিল মালিক চুক্তিবদ্ধ চাল আগে পরিশোধ করবে প্রয়োজনে তাদের আরো বরাদ্দ দেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিভিন্ন কর্পোরেট হাউস বাজার থেকে ধান চাল কেনায় লিপ্ত হয়েছে। তারা কৃত্রিম কোন সংকট তৈরি করছে কি না তা খতিয়ে দেখতে বলেন মন্ত্রী। ভোক্তা যেন আতংকিত না হয় সে জন্য সচেতনতা তৈরি করার পাশাপাশি ধান চালের বাজারে নজরদারি বাড়াতে প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন তিনি।
তিনি বলেন, ধান ও চাল সংগ্রহকালে কোন কৃষক কিংবা মিল মালিক যেন কোনভাবে হয়রানি না হন সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা ময়েশ্চার মিটার দিয়ে কৃষকের ধানের ময়েশ্চার পরীক্ষা করে কৃষককে সহযোগিতা করতে পারেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কৃষকের বাড়িতে গিয়ে ময়েশ্চার পরীক্ষা করে ধানসহ কৃষককে গুদামে পাঠালে তাদের ভোগান্তি কমবে। বেশি ময়েশ্চার বা ভেজা ধান ফেরত নিয়ে গুদাম থেকে মন খারাপ করে ফিরতে হবে না।
মিল মালিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কোয়ালিটির মানদণ্ডে উত্তীর্ণ না হলে সে চাল গুদামে পাঠাবেন না। চালের কোয়ালিটির সাথে কোন আপস হবে না।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো: মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন, খুলনা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জেলা প্রশাসক, কৃষি বিভাগের উপপরিচালক খাদ্য বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ও মিল মালিকরা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
পড়ুন: চাল মজুদকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
উন্নয়ন প্রকল্পে পরিবেশের ওপর গুরুত্ব দেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
স্ত্রীকে হত্যা করে পাহাড়ে আত্মগোপন, অবশেষে স্বামী গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের চন্দনাইশে স্ত্রীকে খুন করে রাঙ্গুনিয়ার পাহাড়ে আত্মগোপন করা এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার সকালে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার এস এস আবদুস সাত্তার (৭০) চন্দনাইশ উপজেলার পশ্চিম এলাহাবাদ বাতুয়ার পাড়া গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে।
জানা যায়, পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী রেজিয়া বেগমকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে দীর্ঘ ২৩ দিন রাঙ্গুনিয়ার প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন রিকশাচালক সাত্তার।
পুলিশ জানায়, গত ৭ মে পারিবারিক তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় স্বামী। গুরুতর আহতাবস্থায় স্ত্রী রেজিয়াকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তার অবস্থা গুরুতর দেখে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠান। চমেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন রাতেই রেজিয়া বেগম মারা যান।
পর দিন মায়ের হত্যার অভিযোগে বাবার বিরুদ্ধে চন্দনাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তাদের মেয়ে কামরুন নাহার রুমা।
সোমবার সকালে আসামির অবস্থান নিশ্চিত হয়ে রাঙ্গুনিয়ার প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেপ্তারের বিষয়ে নিশ্চিত করে চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, স্ত্রী হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া রিকশাচালক স্বামী এস এস আবদুস সাত্তারকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: হত্যা মামলা: দিনাজপুরে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
খুলনায় স্কুলছাত্র হত্যায় ১৭ আসামির ৭ বছর করে কারাদণ্ড
বাগেরহাটে ধর্ষণ ও ২ শিশু হত্যা মামলায় একজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে দাদিকে ধর্ষণ ও দুই নাতিকে হত্যা মামলায় বাচ্চু মৃধা (৫৮) নামের এক আসামিকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার দুপুরে বাগেরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. নূরে আলম আসামিরা উপস্থিতিতে এই রায় প্রদান করেন।
এছাড়া এই মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি খোকন খানকে বেসকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
সাজাপ্রাপ্ত বাচ্চু মৃধা মোরেলগঞ্জ উপজেলার পায়লাতলা এলাকার মৃত বাকের মৃধার ছেলে। খালাসপ্রাপ্ত খোকন খান একই উপজেলার সমাদ্দারখালী এলাকার মৃত আছমত খানের ছেলে।
হত্যার শিকার মিরাজুল (৯) ও মো. ইমন ওরফে রিয়াজুল ইসলাম (৭) মোরেলগঞ্জ উপজেলার পায়লাতলা গ্রামের লোকমান হোসেন বাবুর ছেলে।
আরও পড়ুন: হত্যা মামলা: দিনাজপুরে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে ১১ সেপ্টম্বর রাতে মোরেলগঞ্জ উপজেলার পায়লাতলা গ্রামের ফরহাদ মৃধার বসত ঘরের বারান্দায় দাদির সঙ্গে মিরাজুল ও রিয়াজুল ঘুমিয়ে ছিল। রাত ১১টার দিকে বাচ্চু মৃধাসহ কয়েকজন এসে তাদের দাদিকে ধর্ষণ করেন। আসামিদের ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে বিষয়টি টের পেয়ে মিরাজুল ও রিয়াজুলের ঘুম ভেঙ্গে যায়। দাদিকে মেরে ফেলছে বলে চিৎকার করে তারা। তখন আসামিরা মিরাজুল ও রিয়াজুলকে মেরে বাড়ির পাশে ডোবায় ফেলে দেয়। তাদের দাদিকেও মারধর করে মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায় হত্যাকারীরা। পরের দিন হত্যার মৃত দুই শিশুর বাবা লোকমান হোসেন বাবু বাদী হয়ে বাচ্চু মৃধাসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে মোরেলগঞ্জ থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে ২০১৫ সালের ১০ জুলাই মোরেলগঞ্জ থানা পুলিশ আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন আদালত। পরবর্তীতে ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও তথ্য প্রমাণের বিরুদ্ধে আদালত এই মামলায় বাচ্চু মৃধাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করেন। আসামি খোকন খানকে খালাস প্রদান করেন।
এদিকে খোকনকে খালাস প্রদানের ফলে আদালতের রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী লোকমান হোসেন বাবু।
তিনি বলেন, বাচ্চুর সাথে খোকনও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল। খোকনকে কেন আদালত খালাস দিল আমি জানি না। খোকনের শাস্তির জন্য উচ্চাদালতে আপিল করার কথা বলেন তিনি।
মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন শেখ মনিরুজ্জামান ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন রনজিৎ কুমার মন্ডল।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রনজিৎ কুমার মন্ডল বলেন, এই রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা এই রায়ে খুশি।
আরও পড়ুন: খুলনায় স্কুলছাত্র হত্যায় ১৭ আসামির ৭ বছর করে কারাদণ্ড
ছোট ভাইকে হত্যার দায়ে বড় ভাইয়ের ৭ বছরের কারাদণ্ড
চাল মজুদকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
ফসল কাটার মৌসুমে চালের দামের ঊর্ধ্বগতি রোধে সোমবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে এই নির্দেশনা দেয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বৈঠকে দেশের ভোজ্যতেল মজুদকারীদের বিরুদ্ধে চালানো সাম্প্রতিক অভিযানের মতো অবৈধ চাল মজুদকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘যদি কেউ অননুমোদিতভাবে ব্যবসা এবং চাল মজুদ করে থাকে তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আনোয়ারুল বলেন, ভরা মৌসুমে কেন চালের দাম বেড়েছে এবং চাল মজুদ করা হচ্ছে কি না এবং কেউ অবৈধভাবে চালের ব্যবসায় জড়িত কি না তা জানতে বাজার সার্ভে করার পর পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এমন তথ্য রয়েছে যে কিছু (ব্যবসায়ী বা কোম্পানি) সমিতির স্মারকলিপি ভেঙে চালের ব্যবসায় জড়িত হতে পারে। তাই, বৈঠকে চালের বাজার জোরালোভাবে পর্যবেক্ষণ ও তদারকি করতে বলা হয়েছে।
চালের দাম বাড়ার পেছনে কারণ জানতে বাণিজ্যমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, বাণিজ্য সচিব, খাদ্য সচিব এবং কৃষি সচিবকে শিগগিরিই মার্কেট সার্ভে পরিচালনার জন্য বৈঠকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন প্রকল্পে পরিবেশের ওপর গুরুত্ব দেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
রেলওয়ে এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠান: প্রধানমন্ত্রী
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার তেল কেনার বিষয়ে নয়াদিল্লির পরামর্শ চায় ঢাকা
ভারত কীভাবে রাশিয়া থেকে তাদের তেল কেনার বিষয়টি পরিচালনা করছেন সে বিষয়ে ভারতের কাছ থেকে পরামর্শ চাওয়ার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, জ্বালানি সমস্যা বাংলাদেশের জন্যও একটি সত্যিকার সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এনার্জির (আমদানি) ওপর নির্ভরশীল। রাশিয়া আমাদের এনার্জি ও গম অফার করেছে। এটি একটি বাস্তব সমস্যা হয়ে উঠেছে। আমরা এতে (শক্তি সংকট) ভীত। আমরা তাদের (ভারত) পরামর্শ চেয়েছি, কীভাবে তারা এটা করছে। এটি একটি বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা।’
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ২৮-২৯ মে গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত দুই দিনের নদী সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারত সরকার রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার বিষয়টির স্বপক্ষে বলেছে (ভারত) এক মাসে রাশিয়া থেকে যা কিনেছে, একদিন বিকালেই ইউরোপ রাশিয়া থেকে থেকে তার চেয়ে অনেক বেশি কিনেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেন ইস্যুতে ভারতকে মস্কো থেকে দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান অব্যাহত থাকার পরও রাশিয়ার কাছ থেকে (ভারতের) তেল কেনা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।
আরও পড়ুন: তিস্তা চুক্তি ১১ বছর ধরে ঝুলে থাকা ‘লজ্জাজনক’: মোমেন
ভারত এমন এক সময়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাড়ানোর জন্য মূল্য ছাড়ের সুযোগ নিয়েছে, যখন বিশ্বব্যাপী তেলের দাম বাড়ছে।
কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে মোমেন বলেন, ‘আপনারা দেখছেন যে তারা আমাদের ওপর বসগিরি করছে এবং আপনারা (সাংবাদিকরাও) তাদের উৎসাহ দিচ্ছেন। প্রতিদিনই তারা নতুন নতুন সমস্যা নিয়ে হাজির হয়। তাদেরকে আমরা উন্নয়ন সহযোগী বলতাম। তারা উন্নয়নের জন্য অর্থ দেয় না কিন্তু পরামর্শ দিতে থাকে।’
মোমেন আরও বলেন,‘উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার জন্য তারা অনেক কিছু সামনে রেখে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য নানা শর্ত যোগ করে। ‘এগুলো গ্রহণযোগ্য নয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় দেশ হওয়ায় বিশ্বের স্থিতিশীলতাকে সব সময় স্বাগত জানায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই আন্তঃনির্ভরশীল।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানির দুই বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে অস্থিতিশীলতা থাকলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
একইসঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা থাকলে বাংলাদেশের রেমিটেন্স অর্জন ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও জানান তিনি।
মোমেন বলেন, ‘তাই আমরা কোনো সমস্যায় পড়তে চাই না। আমরা বিশ্বে শান্তি চাই।’
তিনি বলেন, ‘ধনী দেশগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুদ্ধ শেষ করা সবার জন্য মঙ্গলজনক।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনা করেছেন যে কীভাবে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আঞ্চলিক সংস্থাগুলোকে শক্তিশালী করা যায়।
তিনি অবশ্য বলেন, বাংলাদেশ বহুপাক্ষিকতার দুর্বল হয়ে পড়া দেখতে চায় না। ‘আমরা বহুপাক্ষিকতার একটি বড় সমর্থক।’
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা আসামের মুখ্যমন্ত্রীর
গুয়াহাটিতে শনিবার নদী সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন মোমেন ও জয়শঙ্কর
ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৮ রোগী হাসপাতালে ভর্তি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নতুন ১৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। নতুন আক্রান্ত সবাই ঢাকা বিভাগের।
কন্ট্রোল রুমের তথ্যমতে, এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ৫১ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। এর মধ্যে ঢাকার ৪৭টি সরকরি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৫০ জন ভর্তি আছেন। ঢাকার বাইরে একজন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৩৩৮ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ২৮৭ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এছাড়া এখন পর্যন্ত কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যায়নি।
পড়ুন: দেশে করোনায় আরও ৩৪ শনাক্ত, মৃত্যু এক
তিস্তা চুক্তি ১১ বছর ধরে ঝুলে থাকা ‘লজ্জাজনক’: মোমেন
ভারতের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, এটা ‘দুর্ভাগ্যজনক’ এবং ‘লজ্জাজনক’ যে চুক্তিটি ১১ বছর ধরে ঝুলে আছে।
সোমবার আসামের গুয়াহাটিতে ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে আমরা ১১ বছর ধরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি করতে পারিনি। এটা লজ্জারও, আমরা প্রস্তুত ছিলাম, তারাও প্রস্তুত ছিল, তবুও চুক্তিটি হয়নি। ভবিষ্যতে পানির জন্য একটি বড় হাহাকার তৈরি হবে এবং আমাদের এর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
২৮-২৯ মে গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত নদী সম্মেলনের ফাঁকে এনডিটিভির সঙ্গে কথা বলার সময় মোমেন বলেন, দুটি দেশের ভারতের সঙ্গে অভিন্ন ৫৪টি নদী রয়েছে। এই দুই পক্ষই অভিন্ন নদী সমূহের যৌথ ব্যবস্থাপনায় ভারতের অংশীদার হতে এবং একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। ‘অববাহিকা এলাকার মানুষের কল্যাণের জন্য দুই পক্ষের মানুষেরই যৌথ ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন।’
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘তিস্তা নদী তিস্তা কংশ হিমবাহে উৎপন্ন হয়েছে এবং বাংলাদেশে প্রবেশের আগে সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ১৯৪৭ সাল থেকে তিস্তার ক্যাচমেন্ট এলাকাগুলো ভারতকে বরাদ্দ দেয়ার পর থেকে এটি নিয়ে সংঘাত তৈরি হয়। ২০১১ সালে ভারত তিস্তার পানির ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ শেয়ার করতে সম্মত হয়েছিল এবং ডিসেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে শুষ্ক মৌসুমে ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ পানি ধরে রেখেছিল। তবে,পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কঠোর বিরোধিতার কারণে চুক্তিটি হয়নি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খুব আশাবাদী যে ভারত চুক্তির ব্যাপারে এগিয়ে আসতে রাজি হবে, এমনকি পশ্চিমবঙ্গও সম্মত হবে। এবং আমরা এটি অর্জন করতে পারব।’
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা আসামের মুখ্যমন্ত্রীর
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চলতি বছর আসাম ও বাংলাদেশে একই সময়ে বন্যা হয়। আমাদের পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে, যৌথভাবে বন্যার আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং নদীগুলোর যৌথ ব্যবস্থাপনা উভয় দেশের জন্যই উইন-উইন।’
বেশকিছু গণমাধ্যমের গুঞ্জন উঠেছে, তিস্তা নদীর ওপর ব্যবস্থাপনা বৃদ্ধি ও পুনরুদ্ধার প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে আলোচনা করছে। প্রকল্পটির লক্ষ্য নদী অববাহিকা দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা এবং গ্রীষ্মকালে পানি সংকট মোকাবিলা করা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনও তিস্তা নিয়ে চীনের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আসেনি। চীন প্রাথমিকভাবে যেটি প্রস্তাব করছিল সেটি ছিল একটি ফরাসি প্রকল্প। ১৯৮৯ সালে ফরাসি প্রকৌশলীরা এটি ডিজাইন করেছিলেন। এটি ব্যয়বহুল ছিল, তাই তখন আমরা তহবিল সংগ্রহ করতে পারিনি। এখন চীনারা এর একটি অংশ হিসেবে তিস্তা প্রকল্পকে বাছাই করেছে। কিন্তু আমি মিডিয়া রিপোর্ট থেকে এটি জানতে পেরেছি। তারা এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে এ বিষয়ে প্রস্তাব পাঠায়নি। আমাদের এখন এটি কেমন হবে তা দেখতেই হবে। কারণ ভারত এখনও তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যা সমাধানে আসলে তেমন কিছু করছে না। তাই তারা (চীন) একটি প্রস্তাব নিয়ে এসেছে, এটি (আমাদের জন্য) একটি লাভজনক প্রস্তাবও।’
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের সুবিধার জন্য তিস্তাকে আরও ভালভাবে পরিচালনা করার জন্য একটি প্রযুক্তিগত সমীক্ষা চালানোর জন্য পাওয়ারচিনা বা চায়না পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তবে, তিস্তা একটি অমীমাংসিত ইস্যু। তাই আমাদের জনগণ স্বাভাবিকভাবেই সরকারকে নতুন কোনো প্রস্তাব (সমাধান) ভেবে দেখার জন্য চাপ দেবে। এই কারণেই হতে পারে তিস্তার ওপর চীনা প্রকল্প নিয়ে গণমাধ্যমগুলোতে এত আলোচনা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: গুয়াহাটিতে শনিবার নদী সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন মোমেন ও জয়শঙ্কর
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করতে ইউএনএইচসিআরের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
দেশে করোনায় আরও ৩৪ শনাক্ত, মৃত্যু এক
দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় একজন মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এসময় নতুন শনাক্ত হয়েছে ৩৪ জন। দেশে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ১৩১ জন এবং মোট শনাক্তের সংখ্যা ১৯ লাখ ৫৩ হাজার ৪৮১ জনে পৌঁছেছে।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচ হাজার ৩৭০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এইদিন শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ।
দেশে মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর এক দশমিক ৪৯ শতাংশ।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ১৬৯ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ দুই হাজার ৫২১ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
আরও পড়ুন: দেশে আরও ২৩ জনের করোনা শনাক্ত
দেশে করোনায় শনাক্ত আরও ২৮
পদ্মা সেতু সাহসী জাতি হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার বলেছেন, দেশের নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণে তার সরকারের পদক্ষেপ একটি সাহসী জাতি হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
ঢাকা সেনানিবাসের সেনা সদর দপ্তরে মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে আয়োজিত আর্মি সিলেকশন বোর্ড ২০২২ এ বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের সাহসী সিদ্ধান্ত জাতির আত্মবিশ্বাস এবং মানসিক শক্তিকেও শক্তিশালী করেছে।’
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক বোর্ড সভা না করে এবং দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগে হঠাৎ করে পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়, যা পরবর্তীতে ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে অবশ্যই এগিয়ে যেতে হবে এবং গত এক দশকে অর্জিত অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ধরে রাখতে হবে।
তিনি দেশের অবকাঠামো নির্মাণে সেনা সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দক্ষ, যোগ্য এবং দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের দেয়া হয়েছে যাতে বাহিনী একটি আধুনিক, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
তিনি নির্বাচকদের মনে রাখতে বলেছেন যে নিরপেক্ষ মূল্যায়নের মাধ্যমে দক্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন সম্ভব।
এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে প্রথম রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের কথা স্মরণ করেন যেখানে তিনি সেনা কর্মকর্তাদের সৎ, সাহসী ও শৃঙ্খলাবদ্ধ হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘সুতরাং আপনাকে সর্বদা নিশ্চিত করতে হবে যে পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে জাতির পিতার আদর্শ প্রতিফলিত হয় এবং সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দেশপ্রেমিকদের হাতে তুলে দিতে হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, দৃঢ় নৈতিক সাহস ও নেতৃত্বের অন্যান্য গুণসম্পন্ন সৎ ও অনুগত কর্মকর্তারাই পদোন্নতির দাবিদার।
‘সুতরাং, যে অফিসাররা তাদের সেনাবাহিনীর কর্মজীবনে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সফল হয়েছেন তাদের পদোন্নতি দেয়ার সময় বিবেচনা করতে হবে’, তিনি পরামর্শ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনী শুধু দেশ রক্ষায় জড়িত নয়, এটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশীদার।
তিনি করোনা মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন ও অন্যান্যদের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ ও বিজিবির ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, সবাই মিলে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
তিনি তার বক্তৃতায় পাকিস্তানি শাসনামলে সশস্ত্র বাহিনীতে বাঙালিদের বঞ্চনার কথা তুলে ধরে বলেন, একজন বাঙালি কর্নেল পাকিস্তানের সামরিক চাকরিতে ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘তবে এখন অনেক জেনারেল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কাজ করছেন এবং এটা সম্ভব হয়েছে মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতার কারণে।’
জলবায়ু অভিবাসী এবং অন্যান্য দরিদ্র গৃহহীন লোকদের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার তাদের ঘর দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি তার সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেন যে বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। কারণ সরকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে সমস্ত গৃহহীন মানুষকে বাড়ি দিচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী, সময়ের উপযোগী এবং সক্ষম বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে আধুনিক অস্ত্র ও যুদ্ধ সরঞ্জাম অপরিহার্য।
এ কথা মাথায় রেখেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জনগণের শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য স্বাধীনতার পরপরই বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নীতির আলোকে সেনাবাহিনীকে ফোর্সেস গোল-২০৩০ বাস্তবায়নকারী সর্বাধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন যে তার সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে এবং উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেনাবাহিনীতে অত্যাধুনিক আধুনিক ও যুগোপযোগী যুদ্ধ সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্ত করেছে।
‘সেনাবাহিনীর ক্রমাগত উন্নয়নের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে, তিনি বলেন, সরকার বিভিন্ন ফর্মেশনে তিনটি ব্রিগেড গঠন করেছে, ৫৮টি ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং নয়টি সংস্থা পুনর্গঠিত হয়েছে’, বলেন তিনি ।
পদ্মা সেতুর মাওয়া-জাজিরা প্রান্তে শেখ রাসেল সেনানিবাস নির্মাণ করা হয়েছে এবং মিঠামইন, রাজবাড়ী ও ত্রিশালে নতুন সেনানিবাস নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে।
তিনি পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল ও মেট্রোরেলসহ মেগা প্রকল্পের কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু ২৫ জুন যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে যা জিডিপিতে ১ দশমিক ২ শতাংশ অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: উন্নত ভবিষ্যতের জন্য এশিয়াকে শক্তি একত্রিত করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় জলবায়ু সংকট থেকে মনোযোগ সরানো উচিত নয়: প্রধানমন্ত্রী