বাংলাদেশ
রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে সহায়তা করুন: জাতিসংঘের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইস তার সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
পরে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে মিয়ানমারের ১০ লাখেরও বেশি নাগরিক; রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশের জন্য বিশাল একটি বোঝা।
তিনি বলেন, 'তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়াটা অনিশ্চিত, তাই ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য আমি জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, মিয়ানমারের নাগরিকদের উন্নত জীবনযাপনের জন্য দ্বীপটি সুসংগঠিত ও উন্নত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালের একুশে পদক প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, এখানে একটি সাইক্লোন শেল্টার, সীমিত আকারে কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষার সুযোগ রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, কক্সবাজারের উখিয়ার ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ইতোমধ্যে স্থানীয় জনগণকে ছাড়িয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'তারা বাংলাদেশের স্থানীয় জনগণের জীবন ও জীবিকার জন্য সমস্যা সৃষ্টি করেছে। রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ মানব ও মাদক পাচার, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও জঙ্গি তৎপরতার মতো বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত।’
তিনি আরও বলেন,, 'এ অবস্থায় যেহেতু তাদের দেশে ফেরার সুযোগ অনিশ্চিত, তাই তারা ভাসানচর দ্বীপে স্থানান্তরিত হলে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে, যেখানে তারা বসবাসের জন্য উন্নত পরিবেশ পাবে।’
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে ভিড় কমাতে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নিয়েছে।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা কর্তৃক সংঘটিত হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচতে রোহিঙ্গারা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: আ.লীগ জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে আর বিএনপি বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে: প্রধানমন্ত্রী
মানবতাবিরোধী অপরাধ ত্রিশালের ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় ময়মনসিংহের ত্রিশালের পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্যরা হলেন বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির মধ্যে কারাগারে আছেন- ডা. খন্দকার গোলাম সাব্বির আহমদ, হরমুজ আলী ও আব্দুস সাত্তার। পলাতক আছেন ফখরুজ্জামান ও খন্দকার গোলাম রব্বানী। পলাতক দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন, রেজিয়া সুলতানা চমন ও ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল।
আরও পড়ুন: প্রেমিকসহ স্ত্রীকে খুন, স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড
আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার, মিজানুল ইসলাম ও গাজী এম এইচ তামিম।
২০১৫ সালের ১৯ মে জাতীয় পাটির এমপি হান্নানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলাটি করেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন। মামলায় জাতীয় পার্টির তৎকালীন সংসদ সদস্য এম এ হান্নান ছাড়াও জামায়াত নেতা ফখরুজ্জামান ও গোলাম রব্বানীকে আসামি করা হয়।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান ২০১৫ সালের ২৮ জুলাই থেকে ২০১৬ সালের ১১ জুলাই পর্যন্ত তদন্ত কাজ সম্পন্ন করেন। তদন্তে আরও পাঁচজনের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় এ মামলার আসামি করা হয় মোট আটজনকে।
আসামিরা হচ্ছেন-এম এ হান্নান, এম এ হান্নানের ছেলে রফিক সাজ্জাদ, ডা. খন্দকার গোলাম সাব্বির আহমদ, মিজানুর রহমান মিন্টু, মো. হরমুজ আলী, ফখরুজ্জামান, আব্দুস সাত্তার ও খন্দকার গোলাম রব্বানী।
একই বছরের ১ অক্টোবর প্রসিকিউশনের আবেদনক্রমে এ মামলার আট আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে ওইদিনই ঢাকায় গ্রেপ্তার হন এম এ হান্নান ও তার ছেলে রফিক সাজ্জাদ। ময়মনসিংহ সদর ও ত্রিশালে গ্রেপ্তার হন বাকি তিনজন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে উপজাতি তরুণীকে ধর্ষণ, মুদি দোকানিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
এর মধ্যে কারাবন্দী থাকা অবস্থায় এম এ হান্নান ও তার ছেলে রফিক সাজ্জাদ এবং অপর এক আসামি মিজানুর রহমান মন্টু মারা গেছেন। বাকি জীবিত পাঁচজনের মধ্যে তিনজন কারাগারে বাকি দুইজন পলাতক রয়েছেন।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, গুম, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ২১ এপ্রিল থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ত্রিশাল উপজেলায় তারা অপরাধগুলো সংঘটিত করেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। ২০১৬ সালের ১১ জুলাই হান্নানসহ আটজনের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন তদন্ত সংস্থা।
এ মামলায় ২০১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর এমপি হান্নানসহ আটজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২০১৯ সালের ২৭ মে এ মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। বিচার শেষে ২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল। আর ১৬ ফেব্রুয়ারি রায়ের জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
আরও পড়ুন: রংপুরে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে যুবকের ১১ বছর কারাদণ্ড
অনলাইন প্লাটফর্মে ফারাজ সিনেমাটি প্রদর্শন ও প্রচার বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের
গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারিতে জঙ্গি হামলা নিয়ে ভারতে নির্মিত ফারাজ সিনেমাটি অনলাইন প্লাটফর্মে প্রদর্শন ও প্রচার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার হলি আর্টিসানের ঘটনায় নিহত অবিন্তা কবিরের মা রুবা আহমেদের করা রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জমান ও বিচারপতি মো. বিচারপতি মো. ইকবাল কবীরের হাইকোর্ট বেঞ্চে রুলসহ এই নির্দেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও আইনজীবী আহসানুল করিম। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আরও পড়ুন: ইবিতে ছাত্রীকে শারীরিক নির্যাতন: ৩ সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে বৈবাহিক অবস্থা লিখতে বাধ্য করা যাবে না: হাইকোর্ট
২০২৩ সালের একুশে পদক প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে ‘একুশে পদক ২০২৩’ প্রদান করেছেন।
সোমবার ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক তুলে দেন।
অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে খালেদা মঞ্জুর-ই খুদা, মুক্তিযোদ্ধা একেএম শামসুল হক (মরণোত্তর) এবং হাজী মোহাম্মদ মজিবর রহমান ভাষা আন্দোলনে তাদের ভূমিকার জন্য পুরস্কার পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: একুশে পদক পাচ্ছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনসহ ২টি প্রতিষ্ঠান ও ১৯ ব্যক্তিত্ব
অভিনয়ে অবদানের জন্য মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পেয়েছেন মাসুদ আলী খান এবং শিমুল ইউসুফ। সঙ্গীতের জন্য মনোরঞ্জন ঘোষাল, গাজী আবদুল হাকিম এবং ফজল-ই-খুদা (মরণোত্তর)। আবৃত্তির জন্য জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় ও শিল্পকলার (কলা) জন্য নওয়াজিশ আলী খান এবং ছবি আঁকার জন্য কনক চানপা চাকমা।
এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে মমতাজ উদ্দিন (মরণোত্তর), সাংবাদিকতায় মো. শাহ আলমগীর (মরণোত্তর), গবেষণায় ডা. মো. আব্দুল মজিদ, শিক্ষায় অধ্যাপক ডা. মাজহারুল ইসলাম (মরণোত্তর), সমাজসেবায় সাইদুল হক, রাজনীতিতে অ্যাডভোকেট ড. মঞ্জুরুল ইসলাম (মরণোত্তর) ও আখতার উদ্দিন মিয়া (মরণোত্তর) এবং ভাষা ও সাহিত্যে ড. মনিরুজ্জামান।
শিক্ষা ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এবং সমাজসেবায় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন পুরস্কার পেয়েছে।
প্রত্যেক পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি একটি স্বর্ণপদক, একটি পদকের রেপ্লিকা, একটি সম্মাননা সনদ এবং চার লাখ টাকার চেক পেয়েছেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এটি সঞ্চালনা করেন এবং পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন।
স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব মো. আবুল মনসুর।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে প্রবর্তিত হয় একুশে পদক।
আরও পড়ুন: একুশে পদকপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী গোলাম মোস্তফা মারা গেছেন
নেতাকর্মীদের লাগাম টানতে ১০ দফা নির্দেশনা ঢাবি ছাত্রলীগের
ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র ফ্রন্ট বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ধারাবাহিক অপ্রীতিকর ঘটনার পর শৃঙ্খলা ফেরাতে আপাত প্রচেষ্টায় ঢাবি ইউনিটের নেতাকর্মীদের জন্য দশটি নির্দেশনা জারি করেছে।
নির্দেশনায় ছাত্রলীগের বাইরের কোনো গ্রুপের কর্মকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত না করা অন্তর্ভুক্ত; মোটরবাইক শোডাউনে জড়িত না হওয়া; উচ্চস্বরে, উচ্ছৃঙ্খলভাবে আচরণ না করা; ক্যাম্পাসের সকল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়া; শিক্ষার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং হলের শিক্ষার পরিবেশকে ব্যাহত করে এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত না হওয়া; হলের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়া; চারপাশ পরিষ্কার রাখতে ব্যানার ও ফেস্টুন ব্যবহার না করা; অন্যান্য ছাত্র সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বাস কমিটিসহ প্রগতিশীল ও অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা; গণমাধ্যকর্মীদের সঙ্গে সহযোগিতা করা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ইত্যাদি সহ অপকর্ম ও অপরাধের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করা এবং সংগঠনের নিয়ম লঙ্ঘন করে এমন কোনো কাজে জড়িত না হওয়া।
আরও পড়ুন: পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে ঢাবি ছাত্রলীগের দুই নেতা আটক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানবীর হাসান সৈকতের সই করা একটি আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
সাম্প্রতিক ঘটনার আলোকে অনেক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করতে বাধ্য হয়েছে ছাত্রলীগ।
আরও পড়ুন: ঢাবি ছাত্রলীগের নেতার বিরুদ্ধে দম্পতির শ্লীলতাহানির অভিযোগ
বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা ক্রয়: বিদ্যমান চুক্তি পর্যালোচনা করবে কমিটি
বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহারের জন্য কয়লা আমদানিতে সরকারি, বেসরকারি ও যৌথ উদ্যোগের বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর মধ্যে সই করা বিদ্যমান চুক্তিগুলো বিশ্লেষণ করতে একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করেছে সরকার।কমিটির নেতৃত্বে রয়েছে বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যুৎ বিভাগের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘৯ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি ২৩ জানুয়ারি গঠিত হয়েছিল। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত
বিদ্যুৎ সচিব ছাড়াও কমিটিতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান, বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (সমন্বয়), প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা রয়েছেন; বিপিডিবির প্রধান প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ উৎপাদন), বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিদ্যুৎ বিভাগের উপসচিব (উন্নয়ন), যারা কমিটির সদস্য সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করবেন।
বিদ্যুৎ বিভাগ এ বিষয়ে অবহিত করে অভ্যন্তরীণ অফিস আদেশ জারি করেছে।
সরকারি সূত্র জানায়, কয়লাভিত্তিক ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডা প্ল্যান্ট থেকে এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির জন্য আদানি পাওয়ারের সঙ্গে সই করা ‘ত্রুটিপূর্ণ চুক্তির’ কারণে বাংলাদেশ প্রতি মাসে ৭০০ কোটি টাকা এবং বার্ষিক আট হাজার ৪০০ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে জানুয়ারিতে ইউএনবির একটি প্রতিবেদনের পর পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, বিপিডিবি’র একজন কর্মকর্তা বলেছেন, কয়লার মূল্য ‘পাস-থ্রু’ হবে যার অর্থ বাংলাদেশকে কয়লা আমদানির জন্য বাজার মূল্য পরিশোধ করতে হবে, কোনো মূল্যসীমা বা ছাড়ের বিধান ছাড়াই।
আরও পড়ুন: গণশুনানি ছাড়াই গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের জন্য সংসদে বিল পেশ
আদানি পাওয়ার সম্প্রতি বিপিডিবি বরাবর ডিমান্ড নোট ইস্যু করার জন্য একটি অনুরোধ পাঠিয়েছে, যেখানে কয়লার দাম প্রতি মেট্রিক টন ৪০০ ডলার উদ্ধৃত করা হয়েছে যা বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার থেকে অনেক বেশি। বিপিডিবি কর্মকর্তারা মনে করেন যে এটি বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজারের আলোকে দেয়া উচিত।
বিপিডিবি কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমাদের দৃষ্টিতে, তারা যে কয়লার মূল্য উদ্ধৃত করেছে প্রতি মেট্রিকটন ৪০০ মার্কিন ডলার তা খুবই বেশি।এটি ২৫০ মার্কিন ডলারের কম হওয়া উচিত। যা আমাদের অন্যান্য তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে কয়লা আমদানির জন্য পরিশোধ করছি।’
ঝাড়খন্ডের এক হজার ৬০০ মেগাওয়াট প্ল্যান্টের জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত কয়লা আমদানির জন্য এলসি (ভারতে) খোলার বিষয়ে প্রাপ্ত অনুরোধের পরে বিদ্যমান পিপিএ সংশোধন করতে আদানি গ্রুপকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে বিপিডিবি ।
প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল আদানি প্ল্যান্টে সাম্প্রতিক সফরের কথা উল্লেখ করে বিপিডিবি ২৩ জানুয়ারি চিঠিটি পাঠিয়েছে। সফরকালে ‘আলোচনার সময় আপনার পক্ষও মতামত দিয়েছে যে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতিতে কয়লা সমন্বয় বা পরিবর্তন করে কয়লার দামের এই অসঙ্গতি কমাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা তৈরি করা হবে।’
অফিসিয়াল সূত্র জানিয়েছে যে পর্যালোচনা কমিটির শর্তাবলীতে উল্লেখ করেছে যে এটি প্রয়োজনীয় সুপারিশ করার জন্য আইপিপিগুলোর সঙ্গে কয়লা সরবরাহ চুক্তি (সিএসএ)
এবং বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) এর কয়লা মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করবে এবং কয়লা মূল্য সূচকও কয়লা সরবরাহকারী দেশ পর্যালোচনা করবে।
আরও পড়ুন: কেন আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বেশি দামে বিদ্যুত নেয়া হচ্ছে, প্রশ্ন এমপি চুন্নুর
ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা মারা গেছেন
সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা মারা গেছেন। রবিবার রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব আক্কাস আলী খান জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টা ২৫ মিনিটে স্কয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন হুদা।
হুদা তার স্ত্রী সিগমা হুদা, দুই মেয়ে এবং অনেক আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন।
ঢাকা-১ আসনের চারবারের সংসদ সদস্য, আইনজীবী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির শাসনামলে তথ্যমন্ত্রী (১৯৯১-১৯৯৬) এবং যোগাযোগমন্ত্রী (২০০১-২০০৬) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
২০১২ সালে হুদা বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন এবং বিএনএফ নামে একটি নতুন দল গঠন করেন।
২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা
অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদের প্রবেশ রোধে অভিযান পরিচালনা করা হবে: মোজাম্মেল হক
অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করা অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করতে অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে প্রচুর অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ আসছে। অবৈধ অস্ত্র অভিযান চালিয়ে ধরা হবে। যে এরিয়াতে চোরাকারবারী থাকবে, শুধু সেখানেই অভিযান চালানো হবে। শুধু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই অভিযান চালানো হবে।’
রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ সভা শেষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ: মোজাম্মেল হক
এসময় তিনি বলেন, অনেকে বন্দুকের জাল লাইসেন্স বানিয়ে নিয়েছে। এসব ফেক লাইসেন্স যাচাই বাছাই করা হবে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যেসব এনজিও কাজ করছে, তাদের বিষয়টি দেখা হবে। তাদের স্টাফদের বেতন দেয়ার বাইরে অর্থ দিয়ে কি করছে। অভিযোগ রয়েছে উগ্রপন্থী ও টেররিস্টদের অর্থায়ণ করা হচ্ছে। উগ্রবাদীদের অর্থায়ন করার বিষয়টি সঠিক কি না দেখা হবে।
মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা এ দেশ থেকে যেতে চায় না। এজন্য তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি ক্যাম্পে যে মারামারি-হানাহানি সৃষ্টি হয় সেসব বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হতে হবে। এজন্য এমটিএমসির সদস্যদের মিটিংয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন এনজিও কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তারা কত টাকা পেলো তার স্টেটমেন্ট দিতে হবে। একই সঙ্গে কত টাকা রোহিঙ্গাদের জন্য ব্যয় করে এবং কত টাকা কর্মকর্তাদের জন্য ব্যয় হয় সে হিসেব দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য কতো টাকা আসলো সেটা বিভিন্ন পত্রপত্রিকাতে দেখি। সেখানে একজন রোহিঙ্গা ১২ ডলার করে পায়। এরপর কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা বাদে কিছু খরচ করে কিনা। কারণ অভিযোগ আছে তারা উগ্রবাদীদের অর্থায়ন করে। সেটা পরিস্কার হওয়ার জন্য এটা লাগবে। আইনানুগভাবে যেটা সম্ভব তাদের হিসেব পত্র জানতে চাওয়া।
আরও পড়ুন: তামাক নিয়ন্ত্রণে আইন শক্তিশালী করতে পদক্ষেপ নেবে সরকার: মোজাম্মেল হক
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যারা ফান্ডিং করে তাদের কাছে হিসাব চাওয়ার এখতিয়ার আমার নেই। আমাদের সচেতনার জন্য আমরা তাদেরকে জানিয়েছি যে, যেসকল টাকা দেয়া হয় তার সঠিক ব্যবহার হলে সবাই উপকৃত হবে। যে ফান্ড আসে সেটা ১২ লাখ দিয়ে ভাগ দিলে বেরিয়ে যায়। এরমধ্য থেকে ২৫ শতাংশ তাদের (এনজিওগুলোর) বিভিন্ন ব্যয় রয়েছে সেটা বাদ দেন, তাহলেতো মূল কতো টাকা দেয়া হচ্ছে তা বেরিয়ে যাবে। বাকি ৭৫ ভাগ টাকা রোহিঙ্গাদের কাজে ব্যয় হয় কিনা সেটা তদন্ত করে দেয়ার জন্য হিসাব চাওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে আমরা ব্যর্থ। আইনশৃঙ্খলা কমিটি বার বার চেষ্টা করেছে। যারা এগুলো নিয়ন্ত্রণ করে ফেসবুক ও ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নানা চ্যানেলকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে তারা তেমন কোন সাড়া দেয় না। তার প্রধান কারণ হিসেবে আমরা ধরেছি, তাদের কোন হেড অফিস না থাকাতে আমরা তাদের নিয়ন্ত্রণ সেভাবে করতে পারি না।
তিনি বলেন, তাই আমরা চাই এইসকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর অফিস বাংলাদেশে স্থাপিত হোক। যাতে আমরা প্রচলিত আইনের মধ্যে থেকে মিথ্যাচার নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।
তিনি বলেন, আমাদের পাশের দেশ ভারতে এসব চ্যানেলের অফিস আছে, সেখানে কোন অন্যায় হলে জবাবদিহি করতে হয়। অথচ আমাদের দেশে ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে মিথ্যাচার করছে। তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। যদি তাদের অফিস থাকতো তাহলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা যেতো। কিন্তু সেটা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমরা চাই এইসকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর অফিস বাংলাদেশে স্থাপিত হোক।
মাদক গোটা জাতির জন্য শঙ্কার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাদক কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ইতোমধ্যে মাদক ব্যবসায়ী, সেবনকারী ও পাচারকারীদের তালিকা করে তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছেন। সেসকল তালিকা ক্রস চেক করা হবে। তারপর আমরা একটি স্থায়ী তালিকা করবো। সব সংস্থা আলাদা আলাদা তালিকা করবে, পরে সমন্বয় করা হবে। তবে এই তালিকা প্রকাশ করা যাবে না।
২১ ফেব্রুয়ারির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করা হয়। এখানে রাষ্ট্রীয় শিষ্টাচার অনুসারে বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য সেফটি সিকিউরিটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের নিরাপত্তার জন্য কমিশনারকে বলা হয়েছে। তারা যাকে সুন্দরভাবে শহীদবেদিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে পারেন। এসময় যেন অতিরিক্ত ভিড় না হয়।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া কখনো মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেন না:মোজাম্মেল হক
মন্ত্রী বলেন, দেশে এখন আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক আছে। এজন্য আমরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছি। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আত্মরক্ষার জন্য মারমুখী হয়ে থাকবে বলে আমাদের জানিয়েছেন। এরপ্রেক্ষিতে আমরা বলেছি এগুলোর প্রমাণসহ জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে। এবিষয়ে তাদেরকে সচেতন করে দেয়া হয়েছে। তারা যাতে এমন কোন কিছু না করে যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।
যশোরে শিক্ষিকার নাক ফাটানো সেই ট্রেনপরিচালক বরখাস্ত
যশোরে লাথি মেরে শিক্ষিকার নাক ফাটানো সেই ট্রেনপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নওয়াপাড়া রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মো. মাসুদ রানা।
তিনি জানান, একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের পর রেলওয়ে পাকশী কর্তৃপক্ষ ভুক্তভোগী শিক্ষিকার অভিযোগ পেয়ে ট্রেনের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে। তাছাড়া তাকে ট্রেনের সব প্রকার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। শিক্ষিকার অভিযোগ আমলে নিয়ে অচিরেই বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: খুলনায় বগী লাইনচ্যুত, ২ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
উল্লেখ্য, শুক্রবার সকালে নওয়াপাড়া রেলস্টেশনে বেনাপোলগামী ট্রেনপরিচালকের লাথিতে নাক ফেটে আহত হন স্কাউটে অংশ নিতে যাওয়া এক স্কুলশিক্ষিকা। তাছাড়া ওই পরিচালকের লাঠির আঘাতে ইরিন জাহান লিজা নামে এক স্কুলছাত্রীও আহত হয়।
এ দৃশ্য দেখে ট্রেনযাত্রীরা হতভম্ব ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
জানা যায়, ঝিকরগাছায় অনুষ্ঠেয় স্কাউটের পুষ্প ক্যাম্পে অংশ নিতে যাওয়া এক স্কুলশিক্ষিকা তার স্কুলের দুই শিক্ষার্থীকে নিয়ে বেনাপোলগামী ট্রেনে যেতে চান। প্রচণ্ড ভিড়ে ট্রেনে উঠতে না পেরে ওই স্কুলশিক্ষিকা শিক্ষার্থী দুজনকে ট্রেনের মাঝ বরাবর থাকা ট্রেনপরিচালকের (গার্ড) রুমের সামনে গিয়ে তাদের উঠাতে অনুরোধ করেন। ট্রেন ছাড়ার মুহূর্তে বারবার অনুরোধের একপর্যায়ে ট্রেনের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন ক্ষিপ্ত হয়ে ওই স্কুলশিক্ষিকার মুখে লাথি মারেন এবং লাঠি দিয়ে এক ছাত্রীকে বেধড়ক পেটান। ট্রেনপরিচালকের লাথিতে শিক্ষিকার নাক দিয়ে রক্ত বের হয়। তা ছাড়া লাঠির আঘাতে স্কুলছাত্রী ইরিন জামান লিজাও আহত হয়।
বিষয়টি সম্পর্কে নওয়াপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশনমাস্টার মো. মাসুদ রানা জানান, ঘটনার দিনে তিনি স্টেশনে ছিলেন না। শনিবার তিনি ভুক্তভোগী শিক্ষিকাকে ফোন করে দুঃখ প্রকাশ করেন।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অচিরেই বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে যমুনা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন বিকল, ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের ট্রেন চলাচল বন্ধ
ফেনীতে ট্রেনে কাটা পড়ে রিকশাচালকের মৃত্যু
রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে মোংলায় আরও এক জাহাজ
বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছেছে আরও একটি জাহাজ।
রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় বন্দরের ফেয়ারওয়েতে ভারত-বাংলাদেশ নৌ প্রটোকলভুক্ত ‘এপিজে কাইস’ জাহাজে করে এই কয়লা আসে।
জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট টগি শিপিংয়ের খুলনার ব্যবস্থাপক মো. রিয়াজুল এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর নির্মাণসামগ্রী নিয়ে মোংলায় ভিড়েছে প্রথম জাহাজ
তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা নিয়ে জাহাজটি ১৬ ফেব্রুয়ারি মোংলা বন্দরে আসার কথা থাকলেও শিডিউল জটিলতার কারণে দুদিন পর রবিবার মোংলা বন্দরের ফেয়ারওয়ে বয়ায় জাহাজটি নোঙর করে। বিকালে ছোট লাইটার জাহাজে খালাস প্রক্রিয়া শুরু করা হবে এবং এই কয়লা রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে পৌঁছানো হবে।
আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আরও ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরও একটি জাহাজ মোংলা বন্দরে আসবে বলেও জানান তিনি।
মোংলা বন্দরের হারবার সূত্র জানায়, এপিজে কাইস জাহাজটি ভারত-বাংলাদেশ প্রটোকলের বাল্ক কার্গো। এই কার্গোটি বিশেষভাবে শস্য, কয়লা এবং সিমেন্টের মত পণ্য পরিবহনের জন্য তৈরি করা।
এতে পণ্য বোঝাইয়ের জটিলতায় পরিবর্তিত, পণ্যসম্ভার জাহাজে তোলা এবং খালাস করতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগে।
এদিকে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হওয়ার ১০ বছর পর গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়।
কিন্তু কয়লার অভাবে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রেটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। মূলত ডলার সংকটে এলসি খুলতে না পারায় কয়লা আমদানিতে জটিলতা দেখা দেয়।
এর জেরে কয়লার অভাব দেখা দেয়। পরে এই সমস্যার সমাধান হলে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ৩০ হাজার টন কয়লা নিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে এইটি জাহাজ মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছায়।
উল্লেখ, বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বিনিয়োগে ২০১০ সালে সুন্দরবনের অদুরে বাগেরহাটের রামপালে কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়।
২০১২ সালে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসি লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়।
সেই চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) কোম্পানি গঠিত হয়।
বাংলাদেশ-ভারত যৌথ মালিকানাধীন রামপাল কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৩২০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিট গত বছরের আগস্টে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের মালামাল নিয়ে আরও একটি জাহাজ মোংলা বন্দরে
রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লাবোঝাই জাহাজ নদীর চরে আটকা