বাংলাদেশ
ঢাকায় পাতাল রেল: নির্মাণ কাজের উদ্বোধন ২৬ জানুয়ারি
আগামী বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) দেশের প্রথম পাতাল রেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক ইউএনবিকে জানান, এমআরটি লাইন-১ এর নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
এছাড়া রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জের এমআরটি লাইন-১ এর ডিপোর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই মেট্রোলাইনের হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশ মাটির নিচ দিয়ে যাবে এবং নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত অংশ উড়ালপথে যাবে।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরের মানুষের চলাচলের জন্য দেশের প্রথম পাতালরেলের ডিপো নির্মাণ করা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চিতলগঞ্জে। এই প্রকল্পটি ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইন-১ বা এমআরটি লাইন-১ নামে পরিচিত।’
আরও পড়ুন: বৈদ্যুতিক ও যান্ত্রিক সিস্টেমের ওপর চলে মেট্রোরেল, বাস্তবায়নে এল অ্যান্ড টি
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূর্বাচলে জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের একটি খালি প্লটে লাইন-১ পাতালরেলের শুভসূচনা করবেন। তিনি একটি ফলক উন্মোচন করবেন। এর মধ্য দিয়ে লাইন-১-এর ডিপোর কাজ শুরু হবে।
এছাড়া পিতলগঞ্জের ডিপো নির্মাণ এলাকায় জায়গার সংকুলান হবে না তাই এখানে করা হবে।
এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী ইউএনবিকে বলেন, মেট্রোরেলের পর এখন পাতালরেলের যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ।
এছাড়া ২৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রথম পাতাল রেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন।
সচিব বলেন, হযরত শাহজাহাল (রহ.) বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার অংশ। এটি মাটির নিচ দিয়ে যাবে। আর নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার রেললাইন উড়ালপথে যাবে।
তিনি বলেন, এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের দুইটি লাইন থাকবে। হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দর থেকে মাটির নিচ দিয়ে কমলাপুর পর্যন্ত এই পাতাল পথে রেলের স্টেশন থাকবে ১২টি।
স্টেশনগুলোর নির্ধারিত জায়গাগুলোর মধ্যে রয়েছে-কমলাপুর, রাজারবাগ, মালিবাগ, রামপুরা, আফতাবনগর, বাড্ডা, উত্তর বাড্ডা, নতুন বাজার, নর্দা, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ ও বিমানবন্দর।
আর এমআরটি লাইন-১ এর অপর অংশ নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত উড়ালপথে। স্টেশন থাকবে ৭টি।
সেগুলোর নির্ধারিত জায়গা হলো-জোয়ার সাহারা, বোয়ালিয়া, মস্তুল, শেখ হাসিনা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, পূর্বাচল সেন্ট্রাল, পূর্বাচল পূর্ব ও পূর্বাচল টার্মিনাল।
এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের দৈর্ঘ্য হবে ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট খরচ হবে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এরমধ্যে ৪০ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। বাকি ১২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা খরচ করবে বাংলাদেশ সরকার।
এছাড়া ২০২৬ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২৫ জানুয়ারি থেকে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মেট্রোরেল চলবে
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব আরও বলেন, এমআরটি লাইন-১ চালু হলে এই রুটে প্রতিদিন আট লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবেন। বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর যেতে সময় লাগবে ২৪ দশমিক ৩০ মিনিট। আর নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল যেতে সময় লাগবে ২০ দশমিক ৩৫ মিনিট।
এমআরটি লাইন-১ এর প্রতিটি পাতাল স্টেশন হবে তিনতলা। টিকিট কাউন্টার ও অন্যান্য সুবিধা থাকবে প্রথম বেজমেন্টে। প্ল্যাটফরম থাকবে দ্বিতীয় বেজমেন্টে। আর উড়াল স্টেশনের টিকিট কাউন্টার এবং প্ল্যাটফরম থাকবে তিনতলায়।
এছাড়া যাত্রীদের চলাচলের জন্য উড়াল ও পাতাল-দুই পথের স্টেশনেই থাকবে লিফট, সিঁড়ি ও এস্কেলেটর সুবিধা।
এদিকে স্টেশনগুলোয় পর্যাপ্ত বাতাস ও অক্সিজেনের প্রবাহ ঠিক রাখতে থাকবে অতিরিক্ত ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, মেট্রোরেলের লাইন-১-এর ডিপো নির্মাণ হবে নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জে। এই কাজের জন্য জাপানের টোকিও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড ও দেশিয় ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করেছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
পুরো প্রকল্পের কাজ ১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে প্যাকেজে সিপি-১-এর আওতায় ডিপো এলাকায় ভূমি উন্নয়ন কাজ শুরু হবে।
আরও জানা যায়, এমআরটি লাইন-১ এর নির্মাণ কাজ তত্ত্বাবধানের জন্য ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়। এটির নির্মাণ কাজ মোট ১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে।
২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর ডিপোর ভূমি উন্নয়ন সংক্রান্ত প্যাকেজ সিপি-১ এর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।
এমআরটি-১-এর ডিপো ও ডিপো এক্সেস করিডোর নির্মাণের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার পিতলগঞ্জ ও ব্রাহ্মণখালী মৌজার ১২ দশমিক ৯৭২৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ১৪০ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে নামজারি সম্পন্ন হয়েছে। ২৮ নভেম্বর পিতলগঞ্জ মৌজায় ৩১ শতাংশ ভূমির দখল নেয়া হয়েছে। শিগগিরই অবশিষ্ট ভূমির দখল নেয়া হবে।
এমআরটি-১ এর রিসিভিং সাব স্টেশন-২ এবং নর্দ্দা, নতুন বাজার ও উত্তর বাড্ডার তিনটি পাতাল স্টেশনের প্রবেশ ও বহির্গমন নির্মাণের জন্য ভুমি অধিগ্রহণের কাজ চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় পাতাল রেল চালুর প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রীর
ঢাকায় জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ১১.০৮ শতাংশ, শহুরে দরিদ্রদের সমস্যাও প্রকট: ক্যাব
দ্য কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) জানিয়েছে, ২০২২ সালে রাজধানীতে (ঢাকা) জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ১১ দশমিক ০৮ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ২০২২ সালে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রায় ১৭টি পণ্য জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিতে সরাসরি ভূমিকা রেখেছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় শহুরে নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য তালিকা ও জীবনযাত্রায় মাছ-মাংসের চাহিদা কমে গেছে।
শনিবার প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ক্যাব এসব তথ্য জানায়।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবির ক্যাবের পক্ষে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে রাজধানীতে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং ২০১৯ সালে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
ড. কবির ফলাফলটি প্রস্তুত করেছেন, যা ঢাকার ১১টি বাজার (ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন) থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল।
দৈনিক মূল্য পর্যবেক্ষণ করে ১৪১টি খাদ্য সামগ্রী, ৪৯টি অ-খাদ্য সামগ্রী এবং ২৫টি পরিষেবা অন্তর্ভুক্ত করে ফলাফল প্রকাশ করেছে।
চাল, আটা, ডাল, বেকারি পণ্য, চিনি, মাছ, ডিম, দেশীয় মুরগি, ভোজ্য তেল, আমদানি করা ফল, চা/কফি, স্থানীয় এবং আমদানি করা দুধ, ধোয়া এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি আইটেম, এবং পরিবহন খরচ ক্যাব মূল্য পর্যবেক্ষণে অন্তর্ভুক্ত ছিল।
মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতা বিশ্লেষণে ক্যাব নীতিগত সুপারিশ প্রস্তাব করেছে। সুপারিশগুলোতে, সংস্থাটি বলেছে যে সরকার দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিতদের ওপর মুদ্রাস্ফীতির চাপ কমাতে ভর্তুকিযুক্ত খাদ্য সহায়তা এবং সামাজিক সুরক্ষার অধীনে সহায়তা বাড়িয়েছে।
কিন্তু সরকারের উচিত ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির চাপ থেকে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ভোক্তাদের রক্ষা করার জন্য শহরাঞ্চলে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলো প্রসারিত করা।
কোভিড-১৯-এর সময় সরকার উল্লেখযোগ্যভাবে ওএমএস কার্যক্রম বাড়িয়েছে, যা এই ভোক্তা গোষ্ঠীকে অর্থনৈতিক মন্দা এবং মুদ্রাস্ফীতিজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা করতে ২০২২ সালে আরও বাড়ানো হয়েছে।
কিন্তু অত্যন্ত উচ্চ চাহিদার বিপরীতে ওএমএসের মাধ্যমে খাদ্য সরবরাহের অপর্যাপ্ততা এবং নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে ওএমএস খাদ্য পণ্যের সুষম বন্টন নিশ্চিত করতে যথাযথ পর্যবেক্ষণের অভাব রয়েছে।
ক্যাব সুপারিশটি খুচরা পর্যায়ে গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোরও বিরোধিতা করে। কারণ গ্যাস ও তেলের বাল্ক মূল্যবৃদ্ধির ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান, সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া, যুগ্ম সম্পাদক ডা. মো. শাহনেওয়াজ চৌধুরী, মো. কাজী আব্দুল হান্নান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ইফতার বিতরণের পরিবর্তে অর্থ প্রদানের আহ্বান ক্যাবের
বার্লিনে জার্মান ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে কৃষিমন্ত্রীর বৈঠক
জার্মানির বার্লিনে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে জার্মান এগ্রিবিজনেস অ্যালায়েন্স এবং দেশটির শীর্ষ কৃষি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বার্লিনের সিটি কিউবে শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় দুপুরে বার্লিনের সিটি কিউবে এ বৈঠক হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের মাটির গুণমান পর্যবেক্ষণে স্যাটেলাইট প্রযুক্তির ব্যবহার, বেটার লাইফ ফার্মিং সেন্টার স্থাপন, বৈশ্বিক উত্তম কৃষি চর্চা কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন (গ্লোবাল গ্যাপ) ও কৃষিপণ্য রপ্তানিতে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের কৃষি উন্নত ও আধুনিক হচ্ছে: বার্লিনে কৃষিমন্ত্রী
জার্মান এগ্রিবিজনেস অ্যালায়েন্স ও অন্যান্য ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এসব বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন এবং শিগগির বাংলাদেশে এসব বিষয়ে পাইলট কর্মসূচি নেবেন বলেও জানান।
জার্মান এগ্রিবিজনেস অ্যালায়েন্সের চেয়ারপারসন জুলিয়া হার্নাল, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এলিনা গামপার্ট, গ্লোবাল গ্যাপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিশ্চিয়ান মুয়েলার, বায়ারক্রপ সায়েন্স ডয়েচল্যান্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিটার মুয়েলারসহ শীর্ষস্থানীয় জার্মান ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
ন্যায়বিচার ছাড়া মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারেনা: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ন্যায়বিচার ছাড়া মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারেনা।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও গতিশীল বিচার বিভাগের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেখানে শোষিত-বঞ্চিত-নির্যাতিত এবং অসহায় মানুষগুলো স্বল্প খরচে দ্রুত ন্যায়বিচার পাবেন।
মন্ত্রী বলেন, বস্তুত ন্যায়বিচার খাদ্য ও বস্ত্রের মতোই জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য উপাদান। কেননা খাদ্য ছাড়া যেমন জীবন বেঁচে থাকতে পারেনা, বস্ত্র ছাড়া যেমন মানুষ জনসম্মুখে বের হতে পারে না, তেমনি ন্যায়বিচার ছাড়া মানুষ সমাজে শান্তিতে বসবাস করতে পারেনা।
শনিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ/সমপর্যায়ের বিচারকদের জন্য আয়োজিত ১০ম ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের বিচারক নিয়োগে নতুন আইন আসছে: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, ন্যায়বিচারের অনুপস্থিতিতে সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, সামাজিক অস্থিরতা বা অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়। আর সমাজ নিয়েই যেহেতু রাষ্ট্র, তাই অস্থিতিশীল সমাজ মানেই অস্থিতিশীল রাষ্ট্র। এরূপ রাষ্ট্রের সঙ্গে বিদেশি রাষ্ট্রসমূহ বন্ধুত্ব বা সম্পর্ক স্থাপন করতে অনীহা দেখায়, তারা বিনিয়োগ করতে ভয় পায়।এছাড়া পরিণতিতে ওই রাষ্ট্র বিশ্ব সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ও উন্নয়ন বিঘ্নিত হয়।
আইনমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সবসময় তৎপর থেকেছেন। এমনকি পাকিস্তানি শাসন আমলে তিনি যেখানেই সুযোগ পেয়েছেন, সেখানেই আইনের শাসন, ন্যায়বিচার ও সুযোগের সমতা নিশ্চিতকরণের বিষয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরে কথা বলেছেন।
মন্ত্রী বলেন, কোন দেশে সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও শক্তিশালী আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে অপরাধকর্মে জড়িত প্রত্যেক অপরাধীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক এবং এসব বিচার যথাসম্ভব দ্রুতগতিতে হওয়া উচিত।
এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার শুরু থেকেই বিচার বিভাগকে সবধরণের সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার ও সুপ্রীম কোর্ট দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির মাধ্যমে দেশের দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত মামলাজট কমানোর বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
যার সুফল ইতোমধ্যেই জনগণ পেতে শুরু করেছে। প্রায়ই খবর পাওয়া যাচ্ছে দেশের অনেক আদালতেই এখন একক সময়ে মামলা দায়েরের সংখ্যার চেয়ে মামলা নিষ্পত্তির হার বেশি হচ্ছে। যা আমাদেরকে আশান্বিত করছে।
তিনি বিশ্বাস করেন, সরকার ও সুপ্রীম কোর্টের বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি বিজ্ঞ বিচারকদের উদ্ভাবনীমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ, বিচারিক কর্মঘন্টার সঠিক প্রয়োগ, কার্যকর মামলা ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, দক্ষ আদালত ব্যবস্থাপনা এবং সর্বোপরি তাদের সুদক্ষ নেতৃত্বের কার্যকর সমন্বয়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগ মামলার বোঝা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারে। বিচার প্রক্রিয়ায় অংশীজনদের সঙ্গে কার্যকর সমন্বয় সাধনের মাধ্যমেও মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব।
এছাড়া তিনি আশা প্রকাশ করেন, এসব ক্ষেত্রে সকল বিচারক তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।
আইনমন্ত্রী একথাও স্মরণ করিয়ে দেন যে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে একটি মামলার অনেকগুলো পক্ষ তৈরি হয়ে যায়। কোন পক্ষ চায়, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হোক। কোন পক্ষ চায়, মামলা নিষ্পত্তির সময় প্রলম্বিত হোক। কেউ কেউ হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করে আদালতের কালক্ষেপন করে থাকেন।এসব বিষয়কে মাথায় নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। দ্রুত গতিতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।এছাড়া ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার মর্মমূলে রয়েছে নিরপেক্ষতার ধারণা।
আনিসুল হক বলেন, আমরা রাষ্ট্রের যে যে দায়িত্বই পালন করি না কেন, প্রত্যেকের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সব সময় সাধারণ জনগণ বিশেষ করে কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী মানুষের কাছে দায়বদ্ধতার বিষয়টি স্মরণ রাখা উচিত। কেননা লাখ লাখ শ্রমিক ও গার্মেন্টস কর্মীর গা ঘামানো পরিশ্রমের বিনিময়েই আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকা রপ্তানি আয় হয়। এক কোটির বেশি প্রবাসী কর্মীর রেমিটেন্স পাঠানোর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ বাড়ে, গ্রামের কৃষক ভাই-বোনদের রোদ-বৃষ্টিতে মাঠে নেমে ফসল ফলানোর ফলেই আমরা শহরে বসে তা খেতে পারি।আবার তাদের করের টাকায় আমাদের বেতন-ভাতা হয়।
বাস্তবতা হলো সমাজে এসব মানুষই বেশি ভোগান্তির শিকার হন ও শোষিত-বঞ্চিত হন। যদিও জাতির পিতা স্বয়ং কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী মানুষের অধিকার আদায়ে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম করে গেছেন। তাই বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদেরকে যাতে আদালতের বারান্দায় বছরের পর বছর জুতার তলা ক্ষয় করতে না হয়, সে বিষয়ে বিচারকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া তারা যাতে সেবা নিতে এসে কোনভাবে অবজ্ঞা বা হয়রানির স্বীকার না হয়, সে বিষয়ে সজাগ থাকা উচিত।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সাওয়ার ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শেখ আশফাকুর রহমান বক্তৃতা করেন।
আরও পড়ুন: মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের সঙ্কট নিরসন
ডেঙ্গুতে মৃত্যু ১, আক্রান্ত ১১
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে ১১ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আক্রান্তদের মধ্যে ৯ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি দুই জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে মৃত্যু ২, আক্রান্ত ১৪
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৭৪ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এরমধ্যে ৩৭ জন ঢাকার মধ্যে এবং ৩৭ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ২১ জানুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৪৬৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এর মধ্যে ঢাকায় ২২৫ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ২৪১ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ৩৮৬ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
এদের মধ্যে ১৮৫ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি ২০১ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
এছাড়া চলতি বছরে ডেঙ্গুতে ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু নেই, আক্রান্ত ১
দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু নেই, আক্রান্ত ১৬
কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা খর্ব করা যাবে না: শাহরিয়ার
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তার সমস্যা মোকাবিলা করা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং কাজ এবং এ ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা খর্ব করা যাবে না।
শনিবার প্রতিমন্ত্রী ক্যাম্পে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেন।
রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ ও ইন্দো-প্যাসিফিক সহযোগিতা: অগ্রাধিকারমূলক সমস্যা এবং উদ্বেগ’- শীর্ষক সিনিয়র পর্যায়ের সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানের জন্য দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় প্রচেষ্টার সমন্বয় করেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের অব্যাহত কূটনৈতিক প্রচেষ্টা রোহিঙ্গা ইস্যুকে বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করেছে।
বাংলাদেশ সেন্টার ফর ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্স এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স আয়োজিত সংলাপটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ সেন্টার ফর ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্সের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর শাহাব এনাম খান।
সেক্রেটারি, মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট (এমএইউ) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হুসাইন এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুগুলো সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি যোগ দেয়ার বিষয় না। এটি কিছু নীতির ওপর নির্ভর করে এবং এ বিষেয়ে কোনও ভুল ধারণা থাকলে তা দূর করা দরকার।
বিশাল মেডিকেল ক্রাইমের শিকার হয়েছি: তসলিমা নাসরিন
প্রবাসে থাকা বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন বলেছেন ভারতে তিনি ‘বিশাল মেডিকেল ক্রাইমের শিকার হয়েছেন’।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই লেখক বলেন, ‘আমি আমার বাড়িতে মেঝেতে পড়ে গিয়েছিলাম এবং আমার সাধারণ ফেমোরাল নেক ফ্র্যাকচারের ইন্টারনাল ফিক্সেশানের জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। ডাক্তাররা ফিক্সেশান করতে চাননি, তারা কোনো ইঙ্গিত ছাড়াই আমার টোটাল হিপ রিপ্লেসমেন্ট করেছেন। আজীবনের জন্য পঙ্গু করে দিয়েছেন।’
তসলিমা আরেকটি পোস্টে লেখেন, ‘আমি আজ আমার এক্সরে রিপোর্ট দেখেছি। এক্সরে রিপোর্টে আমার ফিমারে বা কোথাও কোন ফ্র্যাকচার দেখা যাচ্ছেনা। আমি আমার হাঁটুতে পড়ে যাওয়ার পর আমার হাঁটুর ব্যথার চিকিৎসার জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে এসেছি। আমার কখনো জয়েন্টে ব্যথা বা জয়েন্টের কোনো রোগ হয়নি। কিন্তু আমার সম্পূর্ণ হিপ রিপ্লেসমেন্ট করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: আইসিটি মামলা: লেখিকা তসলিমা নাসরিনসহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
তিনি পোস্টে আরও বলেছেন, ‘আমি বিশাল মেডিকেল ক্রাইমের শিকার হয়েছি। আমি একজন সুস্থ ও ফিট মানুষ ছিলাম। আমার হাঁটুর স্ট্রেনের চিকিৎসার নামে তারা আমার সুস্থ শরীরের অংশ কেটে ফেলেছে; আমার সুস্থ হিপের জয়েন্ট, আমার ফিমার কেটে ফেলেছে। তারা আমাকে সারাজীবনের জন্য পঙ্গু বানিয়ে দিয়েছে।’
তিনি আরেকটি পোস্টে বলেছেন, ডাক্তার তাকে বেশ কয়েকটি বিধিনিষেধ দিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- সাধারণ চেয়ারে বসা, ভারী জিনিস বহন করা এবং পায়ের ওপর পা তুলে বসা।
শুক্রবার আরেকটি ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘লাখ লাখ টাকা দিয়ে হাসপাতাল থেকে পঙ্গুত্ব কিনে বাড়ি ফিরলাম।’
আরও পড়ুন: সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন ফরাসি লেখিকা অ্যানি আর্নাক্স
ঢাকা-বেইজিং সহযোগিতার দ্বার আরও বিস্তৃত: রাষ্ট্রদূত ওয়েন
বাংলাদেশে নবনিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, বিপুল সম্ভাবনা ও প্রতিশ্রুতিশীল ভবিষ্যৎ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার দ্বার এখন আরও বিস্তৃত।
শুক্রবার রাতে ঢাকার একটি হোটেলে চীনা নববর্ষ বসন্ত উৎসব-২০২৩ উদযাপনের সময় তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আসুন আত্মবিশ্বাস ও সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার জন্য হাত মেলাই এবং চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতার দৃঢ় ও স্থিতিশীল উন্নয়নের প্রচার করি।’
আরও পড়ুন: চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর: ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে ৪ চুক্তি-সমঝোতা সই
চীনা দূতাবাস ও অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-চায়না অ্যালামনাই (এবিসিএ) আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
দুই দেশের মধ্যে মানুষের সঙ্গে মানুষের ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-চীন বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কূটনৈতিক সম্পর্কের চেয়ে দুই দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগের ইতিহাস অনেক পুরানো।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চীনা নববর্ষ সম্প্রীতি ও সহযোগিতার উৎসব। চীনা ঐতিহ্যের মধ্যে সম্প্রীতি গভীরভাবে প্রোথিত। এ কারণেই চীনা জনগণ সম্পর্ক বজায় রেখে সর্বদা সম্প্রীতির মূল্য দিয়েছে।’
তিনি বলেন, চীন সরকারের ঘোষিত নতুন নীতির কারণে চীন ভ্রমণ অনেক সহজ হবে এবং ফেব্রুয়ারি থেকে আরও ফ্লাইট চালু হবে।
আরও পড়ুন: কসমস সংলাপ: ঢাকা-বেইজিং সম্পর্কে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রত্যাশা
‘কোয়াডে’ বাংলাদেশ যোগ দিলে ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ক খারাপ হবে
পরিবারের কাছে ফিরল সেই মেয়েটি
অবশেষে পরিবারের সন্ধান পেয়েছে খুলনার রাস্তায় ঘুরতে থাকা মেয়েটি।
শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) তার পরিবারের সদস্যরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে গ্রহণ করেন। এছাড়া এদিনই তারা তাদের গ্রামের বাড়ি ফিরবেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) ফেসবুকে ভাইরাল হয় অচেনা এই মেয়েটির ছবি ও ভিডিও।
মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ওই কিশোরী খুলনায় ঘোরাঘুরি করছিলেন। রাতে কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী মেয়েটিকে রূপসা ট্রাফিক মোড় এলাকা থেকে উদ্ধার করে। পরে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়।
এছাড়া ফেসবুকের মাধ্যমে এ খবর তার পরিবারের সদস্যরা জানতে পেরে মেয়েটিকে তাদের জিম্মায় নেন। তাদের বাড়ি গাজীপুরের শ্রীনগরে।
খুলনার সোনাডাঙ্গা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলী আকবর জানান, `উই আর বাংলাদেশ’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে কেউ একজন কমেন্ট করে মেয়েটির খোঁজ দেয়। পরে গ্রুপের অ্যাডমিন তাকে নগরীর রূপসা ট্রাফিক মোড় এলাকা থেকে উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে খবর পেয়ে খুলনা অক্সিজেন ব্যাংকের স্বেচ্ছাসেবীরা রূপসা থেকে নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। মেয়েটি তখনও প্রলাপ বকছিল। ফেসবুকের মাধ্যমেই ওই কিশোরীর বাবা-মা ও বান্ধবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে সংগঠনটি।
মেয়েটির বান্ধবী জানায়, সোমবার (১৬ জানুয়ারি) গাজীপুরের নিজ বাসা থেকে তার বান্ধবী বের হয়ে যায়। তারপর থেকে কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের চিকিৎসক ডা. অমিত সাহা জানান, মেয়েটি মানসিক ট্রমার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তবে সে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এছাড়া তার শারীরিক অবস্থা ভাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই চিকিৎসক।
মেয়েটির মা-বাবা জানান, আকস্মিকভাবে মেয়েকে হারিয়ে তারা কী করবে বুঝতে পারছিলেন না।
এছাড়া কেন সে ঘর ছাড়ল বা এই অবস্থা হয়েছে কিছুই জানেন না তারা।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় পদ্মা নদীতে নিখোঁজ ২ শিশুর লাশ উদ্ধার
এর আগে, খুলনার সোনাডাঙ্গা এবং শিববাড়ীর মাঝামাঝি সামি হাসপাতালের সামনে এক তরুণীর দেখা মেলে। উদ্ভ্রান্তের মতো তার চলাফেরা। বয়স আনুমানিক ১৬-১৮ বছর হবে। কোনো কথা বলে না। তাকে কেউ চেনেও না। অনেকের চোখে মেয়েটি ‘পাগলি’ ছাড়া আর কিছুই নয়। তাকে ঘিরে উৎসুক কিছু মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে। কারণ মেয়েটিকে দেখে ভালো পরিবারের সন্তান বলেই মনে হয়।
পরে জানা যায়, মেয়েটির নাম ঈশিতা। তার বাড়ি গাজীপুরে। কিন্তু সে খুলনা কীভাবে এলো? মেয়েটির পরিবারের সন্ধান পেতে ফেসবুকভিত্তিক বিভিন্ন গ্রুপ প্রচারণা চালায়। বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে কাজ শুরু করে উই আর বাংলাদেশ-ওয়াব নামের একটি গ্রুপ।
পরে মেয়েটির পরিবারের সন্ধান পেতে মেয়েটির ছবি দিয়ে ফেসবুকে প্রচারণা চালানো হয়। তাকে চিকিৎসা দিতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আনন্দের খবরটি দিয়েছেন ওয়াবের সদস্যরা। তারা অবশেষে মেয়েটিকে তার পরিবারের হাতে তুলে দিতে পেরেছেন।
একটি পোস্টে বলা হয়, ‘গতকাল দুপুর থেকে এখন পর্যন্ত মানে সকাল পর্যন্ত ঘুমাইনি। সেই সঙ্গে বেশ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবকও ঘুমায়নি। গাজীপুর থেকে মেয়েটির বাবা-মা এসেছেন। আমার সঙ্গে প্রত্যেক ৩০-৪০ মিনিট পরপর তাদের কথা হয়েছে। মেয়েটিকে মা-বাবার কাছে হস্তান্তর করতে সক্ষম হয়েছি আমরা, আলহামদুলিল্লাহ। এটাই ভালো কাজের তৃপ্তি। আলো আসবেই, না আসলে সবাই মিলে টেনে আনব ইনশাআল্লাহ।’
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনে বন্যায় ৫১ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ১৯
বুয়েটে ২ দিনব্যাপী 'রোবো কার্নিভাল' শুরু
'বিল্ড রোবট ফর স্মার্ট বাংলাদেশ' স্লোগানকে সামনে রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের রোবট তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করতে দুই দিনব্যাপী 'রোবো কার্নিভাল' শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে ইসিই ভবনে দুই দিনব্যাপী এ কার্নিভাল শুরু হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসাবে ছিলেন বুয়েটের উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার।
দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী ১২৫টি দলে বিভক্ত হয়ে দুই দিনব্যাপী কার্নিভালে অংশ নিচ্ছে।
এছাড়া রোবটিক্সের বিভিন্ন সেগমেন্ট যেমন ধুলো সংগ্রহ রোবট প্রতিযোগিতা, এবং ফায়ার ফাইটার রোবট প্রতিযোগিতা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের শেখাতে এবং অনুপ্রাণিত করার জন্য কার্নিভালের আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ক্যান্সার খুঁজতে দেহের ভিতর সাঁতার কাটবে রোবট
অগ্নিনির্বাপক রোবট এবং ট্র্যাশ কালেক্টর রোবট প্রতিযোগিতা ছাড়াও, একটি প্রকল্প প্রদর্শনী অংশ, রোবোটিক্স সিমুলেশন সফ্টওয়্যারের ওপর একটি কর্মশালা এবং প্রতিযোগীদের জন্য একটি রোবোটিক্স অলিম্পিয়াডের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র তরিকুল ইসলাম তানভীর, যিনি একটি 'ভূমিকম্প ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা' তৈরি করেছেন।
তিনি তার প্রকল্প সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা জানি যে ভূমিকম্প হলে অনেক মানুষ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। আমি যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করেছি। কোনো ভূমিকম্প হলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা কমবে।’
তিনি বলেন, এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভূমিকম্পের কম্পন শনাক্ত করতে পারে। এছাড়া বিদ্যুৎ লাইন এবং জল সরবরাহের লাইনগুলি কেটে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারকারীকে ভূমিকম্প সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য স্বয়ংক্রিয় কল পাঠায়।
তিনি আরও বলেন, এই সিস্টেমটি প্রতিটি আবাসিক বাড়ি এবং শিল্প সেক্টরে ইনস্টল করা যেতে পারে। এছাড়া ডিভাইসটি জেলা সরবরাহ লাইনে ইনস্টল করা থাকে। তবে আলাদাভাবে পৃথক বাড়ি বা শিল্প কারখানায় সিস্টেমটি ইনস্টল করার দরকার নেই।
প্রাথমিক পর্যায়ে, বুয়েটের শিক্ষার্থীরা প্রকল্পগুলির প্রাথমিক পরীক্ষা এবং উপস্থাপনা নেয় এবং পরে বুয়েটের শিক্ষকরা সেই প্রকল্পগুলি মূল্যায়ন করেন।
আরও পড়ুন: অ্যামেকা: বিশ্বের সর্বাধুনিক মানবিক রোবট
টেসলার রোবট ‘অপটিমাস’ দেখালেন ইলন মাস্ক