রাজনীতি
অযথা দ্রব্যমূল্য বাড়ালে কঠোর ব্যবস্থা: তথ্যমন্ত্রী
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর অজুহাতে অযথা পণ্যের দাম বা পরিবহন ভাড়া বাড়ানো হলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ডা. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, ‘জ্বালানির সাম্প্রতিক দাম বৃদ্ধিকে সুবিধা হিসেবে নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তাদের মুনাফা বাড়াতে পণ্যের দাম ও পরিবহন খরচ বাড়িয়েছে। এটি (অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি) কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের সরকার এগুলো মনিটরিং করছে এবং আশা করি ব্যবসায়ী সংগঠন ও নেতারা এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখবেন। প্রয়োজনে সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’
বুধবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম জোটের ডাকা হরতাল (হরতাল) প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, বিশ্বজুড়েই উচ্চ মূল্যস্ফীতি রয়েছে।
এ সময় গণতান্ত্রিক বাম জোটের হরতাল কর্মসূচির লাভ যেন বিএনপি নিজের ঘরে না তুলতে পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে বাম নেতাদের অনুরোধ করেছেন তিনি।
এই আওয়ামী নেতা বলেন, ‘বাম ভাইয়েরা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি। এ কারণে আমি তাদের সম্মান করি। কিন্তু বাম ভাইরা হরতাল ডেকেছেন, যে কেউ প্রতিবাদ করতে পারেন। গণতান্ত্রিক নিয়ম মেনে যে কেউ প্রতিবাদ করতে পারেন। কিন্তু বাম ভাইদের আমি বিনীত অনুরোধ করবো তাদের কর্মকান্ডে যেন স্বাধীনতা বিরোধী, জঙ্গিগোষ্ঠি এবং দেশবিরোধী অপশক্তি বিএনপিসহ যেন অন্যরা লাভবান না হয়। তাদের হাতে যেন দেশটা চলে না যায়, সেভাবেই তারা তাদের কর্মকাণ্ড করবেন এটাই আমার অনুরোধ।
আরও পড়ুন: বাম জোটের হরতালে বিএনপির সমর্থন
জ্বালানি তেলের দাম কমানোসহ কয়েকটি দাবিতে আগামী ২৫ আগস্ট দেশজুড়ে অর্ধদিবস হরতাল ডেকেছে গণতান্ত্রিক বাম জোট। মঙ্গলবার শাহবাগে এক সমাবেশ থেকে এ কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যেসব গুমের কথা বলে কিছুদিন পরে দেখা যায় তাদের খুঁজে পাওয়া যায়। বিএনপি যে গুমের তথ্য প্রকাশ করে এগুলো যে সঠিক নয় এতে সেটিই প্রমাণ হয়। বাংলাদেশে যারা অগ্নি সন্ত্রাস করেছে, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে আমি মনে করি যে আজকের দিনের দাবি হচ্ছে যে, ২০১৩-১৪ সালে যারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বা সরকারকে টেনে হিঁচড়ে নামানোর জন্য যেভাবে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে, এগুলোর দ্রুত বিচার হওয়া প্রয়োজন।
ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, অগ্নিবোমা মানুষের ওপর নিক্ষেপ করেছে তাদেরকে মদদ দিয়েছে যেসব বিএনপি নেতারা তাদের দ্রুত বিচার হওয়া প্রয়োজন। দ্রুত বিচার না হলে ন্যায় প্রতিষ্ঠা হবে না, এটাই আজকের দাবি হওয়া উচিৎ।’
আরও পড়ুন: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সু-সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ছাড় দেয়া হবে না: আইনমন্ত্রী
সাজাপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামিদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত তৎপর। এই মামলার সাজাপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামিদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সাজাপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় চেষ্টা করছে সরকার। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন কর্মসূচির অংশ হিসেবে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বুধবার দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে সরকারি শিশু পরিবারের দেড় শতাধিক অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত শিশুর মাঝে খাবার পরিবেশন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের উদ্যোগে ২০১৬ সাল থেকে প্রতি বছর আগস্ট মাসের একদিন দুপুরে তেজগাঁও সরকারি শিশু পরিবারে এভাবে খাবার পরিবেশন করে আসছে আইন মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলক: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, সকলেই জানেন একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার কতদিন পর শুরু হয়েছে। আবার বিচার করতে গিয়ে জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়েছে। সেকারণে অধস্তন আদালতে বিচার শেষ হতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। এটি এখন উচ্চ আদালতে আছে। খুব শিগগিরই এই মামলার আপিল শুনানি শুরু করা হবে। এ ব্যাপারে এটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা হয়েছে।
আনিসুল হক আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার সবসময় আইনের শাসনে বিশ্বাসী। তাঁর সরকারের সময় যেহেতু বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার হয়েছে, তাই সব হত্যা মামলারই বিচার হবে। ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার মামলার ব্যাপারে তিনি বলেন, সব মামলার বিচারই পর্যায়ক্রমে শেষ করা হবে।
অনুষ্ঠানে আইন সচিব মো. গোলাম সারোয়ার এবং তেজগাঁও সরকারি শিশু পরিবার ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন। এ সময় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উভয় বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজতে কমিশনের রূপরেখা প্রস্তুত: আইনমন্ত্রী
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জাতিসংঘের তদন্ত করার এখতিয়ার নেই: কাদের
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে তদন্ত করার এখতিয়ার জাতিসংঘের নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘কথিত গণহত্যার বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের কাছে বিএনপি যে অভিযোগ করেছে তা তদন্ত করার কোনো এখতিয়ার জাতিসংঘের নেই।’
২০০৫ সালে বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলে সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলার ১৭তম বার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে আজ সারাদেশে বিক্ষোভ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে সারাদেশে ৫০০ টিরও বেশি স্থানে সিরিজ বোমা হামলা হয়।
পড়ুন: বাম জোটের হরতালে বিএনপির সমর্থন
সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলার ১৭ বছর
বাম জোটের হরতালে বিএনপির সমর্থন
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী, জ্বালানি ও সারের পাশাপাশি পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ২৫ আগস্ট সারাদেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের (এলডিএ) ডাকা অর্ধদিবস হরতালে সমর্থন জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
বুধবার রাজধানীর বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশানে কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ঘোষণা দেন।
অস্বাভাবিক জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম লাগামহীন বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিএনপি বাম দলগুলোর হরতালকে সমর্থন করবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি ন্যায্য দাবি আদায়ে যে কোনো দলের আন্দোলনকে আমরা সমর্থন করি।’
এর আগে ১৬ আগস্ট বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর জোট এলডিএ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, জ্বালানি ও সারের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ২৫ আগস্ট দেশব্যাপী অর্ধদিবস হরতাল ডাকে।
গত ৫ আগস্ট সরকার ডিজেল, অকটেন ও পেট্রোলের দাম যথাক্রমে ৪২.৫ শতাংশ, ৫১.৭ শতাংশ এবং ৫১ শতাংশ বাড়িয়েছে।
বর্তমানে ডিজেল প্রতি লিটার ১১৪ টাকা, অকটেন প্রতি লিটার ১৩৫ টাকা ও পেট্রোল প্রতি লিটার ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর ফলে সারা দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে গেছে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঊর্ধ্বগতি এবং দীর্ঘদিন ধরে লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে গত ৯ আগস্ট বিএনপি নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ে আজ বুধবার এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে দলটি। আগামী ১৯ আগস্ট রাজধানীতে জ্বালানি খাত নিয়ে একটি সেমিনারের আয়োজন করবে দলটি।
এছাড়া ২২ আগস্ট থেকে মহানগর ও তাদের সকল ওয়ার্ড, জেলা ও উপজেলায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
‘বেহেশতে আছি’ মন্তব্যের ফের ব্যাখ্যা দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
‘বেহেশতে আছি’ মন্তব্যের ফের ব্যাখ্যা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, তিনি সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশকে বেহেশত বলেননি। কথার কথা বলেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন যে তার ‘বেহেশত’ শব্দটি ‘সত্যিকারের অর্থে’ ব্যবহার করা হয়নি, এটি শুধুমাত্র বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করার জন্য বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি তো ট্রু সেন্সে বেহেশত বলি নাই, কথার কথা বলেছি, আর আপনারা সবাই মিলে আমাকে ধরলেন, আপনারা আমাকে খেয়ে ফেললেন। আফটার অল আমি একজন পাবলিক ফিগার। আমি খোলামেলা মানুষ, শিক্ষক মানুষ, যেটা মনে করি সেটাই বলে ফেলি।’
রবিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেটের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
অন্যান্য দেশের সঙ্গে পরিস্থিতির তুলনা করে সিলেটে শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ অন্যান্য দেশের তুলনায় সুখী জীবনযাপন করছে এবং ‘বেহেশতে বসবাস করছে’।
তিনি বলেন, একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। দাবি করছে যে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে। ‘এটা ভিত্তিহীন’।
মোমেন অবশ্য স্বীকার করেছেন যে বৈশ্বিক মন্দার কারণে বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।
আরও পড়ুন: জ্ঞান অর্জন করা কঠিন কিন্তু এর ফল মিষ্টি: ড. মোমেন
দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বে এক নম্বর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা সারাবিশ্বে তুলে ধরতে বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মুহিবুল্লাহ হত্যায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ঢাকায় পৌঁছেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেট
চারদিনের সফরে রবিবার সকালে ঢাকায় পৌঁছেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেট।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সকাল ১০টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ব্যাচলেটকে স্বাগত জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেছেন, ব্যাচলেট সকাল ৯টায় পৌঁছানোর কথা ছিল, কিন্তু ফ্লাইটটি বিলম্বিত হয়।
ব্যাচলেট দুই দফায় (২০০৬-২০১০ এবং ২০১৪-২০১৮) চিলির নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ছিলেন। বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার দেখা করার কথা রয়েছে।
রবিবার ব্যাচলেট পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ছাড়াও সরকারের মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্য, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, যুব প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং শিক্ষাবিদদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
তিনি ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
ব্যাচলেট বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে বক্তৃতা দেবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাতীয় প্রেক্ষাপট, বিশেষ করে মহামারী এবং অন্যান্য ক্রমবর্ধমান সংকটের মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষণাবেক্ষণ এবং রোহিঙ্গা সংকট এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের মতো প্রতিবন্ধকতাগুলো যথাযথভাবে বিবেচনা করার ক্ষেত্রে তার এই সফরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।
পড়ুন: জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান আসছেন রবিবার
বাংলাদেশি টাকা জমার বিষয়ে সুইস ব্যাংকে তথ্য চেয়েছে ঢাকা: মোমেন
জ্বালানি সংকটের পেছনে রয়েছে দুর্নীতি, লুটপাট, আত্মঘাতী চুক্তি: বিএনপি
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বর্তমান সংকটের জন্য সরকারের ‘ব্যাপক দুর্নীতি, আত্মঘাতী চুক্তি এবং ভ্রান্ত পরিকল্পনা’কে দায়ী করেছে বিএনপি।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি ও ব্যাপক লুটপাটের মূল্য এখন সাধারণ মানুষকে দিতে হচ্ছে। দুই-তিনজনের জন্য লোডশেডিং। শহরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এবং গ্রামাঞ্চলে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা বিদুৎ থাকছে না। জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। তিনি সম্মেলনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সব কালো আইন ও বিধিবিধান বাতিল, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের চুক্তি বাতিল এবং অনুসন্ধানসহ ১২ দফা পদক্ষেপ তুলে ধরেন। তাদের দল ক্ষমতায় এলে বঙ্গোপসাগর থেকে গ্যাস, পেট্রোলিয়াম ও অন্যান্য খনিজ সংগ্রহ করবে বলেও তিনি জানান।
ফখরুল বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি যখন মানুষকে ভীষণভাবে আঘাত করছে, তখন লোডশেডিং সেই কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিচ্ছে। মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে। কারণ তাদের পিঠ দেয়ালের ঠেকে গেছে।’
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি সব ক্ষেত্রে বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট এবং পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি মোকাবিলায় ব্যর্থতার দায়ভার কাঁধে তুলে সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান।
অন্যথায়, তাদের দল সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে নামবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন এই বিএনপি নেতা।
ফখরুল বলেন, ১৯টি রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট অপ্রয়োজনীয়ভাবে এখনও চালু রয়েছে, যদিও সেগুলো চালু হওয়ার ২/৩ বছর পর বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও ক্যাপাসিটি চার্জে মোটা অংকের টাকা পাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘সরকারকে এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়াই ক্যাপাসিটি চার্জে ৯০ হাজার কোটি টাকা দিতে হয়েছে। ক্যাপাসিটি চার্জ অযৌক্তিক, অনৈতিক এবং জনস্বার্থের পরিপন্থী। এটাও একটা অপরাধ।’
তিনি বলেন, দেশের মোট বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাত্র ৪৩ শতাংশ এখন ব্যবহার হচ্ছে। বাকি ৫৭ শতাংশ নিষ্ক্রিয় বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়াই ভাড়া হিসেবে টাকা পাচ্ছে।
ফখরুল বলেন, অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতার মধ্যে আরও নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে যা কেবল নিষ্ক্রিয় বিদ্যুৎকেন্দ্রের খরচ আরও বাড়িয়ে দেবে।
ফখরুল বলেন, ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়া হচ্ছে। ‘বর্তমানে ভারত থেকে এক হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়। এর জন্য, গত তিন অর্থ বছরে প্রায় পাঁচ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ভারতীয় আদানি গ্রুপ বাংলাদেশে এক হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ‘বাংলাদেশের প্রায় ৬০ শতাংশ ওভার ক্যাপাসিটি থাকা অবস্থায় ভারত থেকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ আমদানি করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।’
বিএনপি নেতা বলেন, এই বিদ্যুতের আমদানির প্রায় ৪০ শতাংশ যায় ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে। ‘বাংলাদেশকে ২৫ বছরে আদানি গ্রুপকে এক লাখ কোটি টাকার বেশি ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে, যা তিনটি পদ্মা সেতু, নয়টি কর্ণফুলী টানেল বা দুটি মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য যথেষ্ট।’
তিনি বলেন, আদানি গ্রুপকে তিন বছরে মোট ভাড়া দেয়া হয়েছে ৫৩ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতিসহ মোট ব্যয় ৩০ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা।
সরকার গ্যাস অনুসন্ধানের সক্ষমতা না বাড়িয়ে আইপিপি’র মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জনগণের ওপর অন্যায়ভাবে বড় বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ফখরুল।
আরও পড়ুন: এটা জনগণের সঙ্গে তামাশা, মোমেনের মন্তব্য নিয়ে বিএনপি
তিনি বলেন, ‘সরকার গত দশ বছরে অফ-শোর গ্যাস অনুসন্ধানের সম্ভাবনাকে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যবহার করেনি।’
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, তাদের দল ক্ষমতায় ফিরলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট সমাধান করবে। ‘আমরা কুইক এনহ্যান্সমেন্ট অব ইলেক্ট্রিসিটি অ্যান্ড এনার্জি সাপ্লাই (স্পেশাল প্রভিশন) অ্যাক্ট এবং কুইক রেন্টাল কোম্পানির সঙ্গে সমস্ত চুক্তিসহ সমস্ত কালো আইন বাতিল করব৷ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও অন্যান্য কাজ স্বচ্ছ প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে করা হবে।’
তিনি বলেন, তাদের দল বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করতেও পদক্ষেপ নেবে।
এছাড়া চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে বলে জানান বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন এবং বিতরণ লাইনগুলি জরুরিভাবে স্থাপন করা হবে।’
ফখরুল বলেন, তারা বাপেক্স এবং অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্থানীয় গ্যাস ও খনিজ অনুসন্ধানে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি: নয়াপল্টনে চলছে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ
ফেনীতে ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের সংঘর্ষের ঘটনায় ২২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কে বিএনপির মিছিলে সংঘর্ষের ঘটনায় ২২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় উল্লেখিত ২৪ আসামিদের মধ্যে সবাই বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী।
শুক্রবার রাতে ফেনী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সিরাজ মিয়া কর্তব্য কাজে বাধা ও বিস্ফোরক আইনে মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ে আরো ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, আসামিদের মধ্যে সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আমান উদ্দিন কায়সার সাব্বির, জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বেলাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক নঈম উল্যাহ চৌধুরী বরাত, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল, সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলাম শিমুল, সাধারণ সম্পাদক এসএম কায়সার এলিন, ছাত্রদলের সভাপতি সালাহউদ্দিন মামুন, সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম মিলন, সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাস্টার নিজাম উদ্দিন, যুগ্ম-আহ্বায়ক ফরিদুল ইসলাম রাহাত ও দিদারুল আলম, পৌর যুগ্ম-আহ্বায়ক নুর ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি কাজী জামশেদুর রহমান ফটিক, যুগ্ম-সম্পাদক কাজী নজরুল ইসলাম দুলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন রিয়াদ, সদর উপজেলা সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম, পৌর আহ্বায় তাজুল ইসলাম পাভেল, সদস্য সচিব ইব্রাহিম হোসেন ইবু রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, পরিবহন খাতে ভাড়া বৃদ্ধি, সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, অসহনীয় লোডশেড়িং ও ভোলায় হত্যার প্রতিবাদে ফেনী জেলা বিএনপির উদ্যোগে শুক্রবার বিকালে ফেনীতে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের ইসলামপুর রোড়স্থ ফেনী জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে বের হয়ে শহরের ট্রাংক রোডে গেলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা হামলা করে। বিএনপির নেতাকর্মীরাও পাল্টা হামলা করে। পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে ধাওয়া করে। এতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে বিএনপির কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। বিএনপি ও ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করতে ১৫ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে।
পড়ুন: বিএনপির পেট্রোলবোমা সন্ত্রাসীরা ফের মাঠে, প্রতিরোধ করতে হবে: তথ্যমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজতে কমিশনের রূপরেখা প্রস্তুত: আইনমন্ত্রী
বিএনপির পেট্রোলবোমা সন্ত্রাসীরা ফের মাঠে, প্রতিরোধ করতে হবে: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপির পেট্রোলবোমা সন্ত্রাসীরা আবারও মাঠে নেমেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, পেট্রোলবোমা সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে হবে এবং তাড়িয়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপির সমাবেশে আমরা কখনও বাধা দিইনি, দেবো না, তারা নিজেরা নিজেরাই মারামারি করে। কিন্তু যদি পেট্রোলবামা বাহিনীদের দেখি, তখন কিন্তু আমরা বসে থাকব না, প্রতিরোধ গড়ে তুলব।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমসাময়িক প্রসঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন।
'তেলের দাম বাড়াতে বিএনপি এখন বর্ষাকালের পুঁটি আর মলা মাছের মতো একটু লাফাচ্ছে, যার কোনো প্রয়োজন নেই' উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, 'ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সমগ্র পৃথিবীতে তেলের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। ৬০ ডলারের তেল ১৭০ ডলারে গিয়েছে। এখন সেটি ১৩৮-৪০ ডলার। দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। আমাদের দেশে দ্বিগুণ নয়, সব মিলিয়ে ৩৮-৪০ শতাংশ বাড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের সমান করেছি। বিশ্ববাজারে তেলের দাম স্থিতিশীলভাবে কমলে আবার দাম সমন্বয় করা হবে।'
আরও পড়ুন: বিএনপির মিছিলের হারিকেন থেকে পেট্রোল বোমার শঙ্কায় জনগণ: তথ্যমন্ত্রী
ড. হাছান বলেন, 'কাগজে দেখলাম বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, সরকার না কি বিদেশিদের চাপে কোনো সমাবেশে বাধা দিচ্ছে না। অথচ আমাদের নেত্রী ক’দিন আগেও বলেছেন, আমরা বিএনপির কোন সমাবেশে বাধা দেব না এবং আমরা দেইনি। কিন্তু গতকাল তারা নিজেরাই মারামারি করে নিজেদের সমাবেশ পন্ড করে দিয়েছে। সমাবেশ ডাকলে যারা নিজেরাই চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি, মারামারি করে সমাবেশ পন্ড করে, সেখানে বাধা দেয়ার দরকার নেই। ভবিষ্যতেও দেখবেন যখনই বিএনপি সমাবেশ ডাকবে তখনই নিজেরা সমাবেশ পণ্ড করে দেবে।'
অতীতের দিকে তাকিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, '২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট বিএনপির সময়ে সারাদেশের ৫০০ জায়গায় বোমা ফাটানো হয়েছিল। আগামী ১৭ আগস্ট সমগ্র বাংলাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির নৈরাজ্য এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সমাবেশ হবে। রাঙ্গুনিয়ার নেতাকর্মীরাও এতে অংশ নেবে।'
আরও পড়ুন: জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান কুশীলব: তথ্যমন্ত্রী
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মন্ত্রী হাছান বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, 'বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সেবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হচ্ছে জিয়াউর রহমান এবং তার পরিবার। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সংরক্ষিত প্রসিডিংয়ে আসামি এবং সাক্ষীরা তাদের জবানবন্দিতে সবিস্তারে বলেছেন কখন কোথায় কিভাবে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে দেখা করেছিল, তিনি কিভাবে ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খোন্দকার মোস্তাক তার অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহচর ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম কুশীলব বলেই জিয়াউর রহমানকে সেনাবাহিনী প্রধান করে। সেই জিয়া বন্দুকের নল উঁচিয়ে ক্ষমতা দখল করে, ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দল গঠন করে এবং সেই ধারাবাহিকতাই বিএনপি বয়ে চলেছে।'
রাঙ্গুনিয়ায় এডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার পৌর অডিটোরিয়ামে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার ও যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, এমরুল করিম রাশেদ, শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।
আরও পড়ুন: বিদেশিদের কাছে নয়, জনগণের কাছে যান: বিএনপিকে তথ্যমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজতে কমিশনের রূপরেখা প্রস্তুত: আইনমন্ত্রী
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যায় জড়িত ষড়যন্ত্রকারীদের খোঁজার বিষয়ে কমিশনের রূপরেখা প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ হয়তো এই কমিশন চালু করা যাবে।
শনিবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
‘এস্টাবলিশ পাইলট প্রসেস টু ক্লাসিফাই কেসেস ইন কনসালটেশন উইথ দ্যা জাজেস অব দ্যা লেবার কোর্টস উইথ আ ভিউ টু এড্রেসিং কেস ব্যাকলগস’ শিরোনামে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কমিশনের অগ্রগতির বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘কমিশন গঠন ও তার কার্যপ্রণালীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোভিড যায় যায় করে যায় না। জনগণ বৈশ্বিক পরিস্থিতি অনুধাবন করছেন। এখন অর্থনৈতিক ব্যাপারেও কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। নিশ্চিয়ই বর্তমান পরিস্থিতিতে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে সেগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো ‘প্রাওটাইজ’ করতে হচ্ছে। সেজন্য হয়তো কমিশনের রূপরেখার ব্যাপারে নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে যে আলাপ আলোচনা করা দরকার সেটা হয়ে ওঠেনি।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, কিছু দিনের মধ্যে এই আলোচনা করতে পারবেন এবং এই বছর শেষ হওয়া নাগাদ কমিশন চালু করতে পারবেন।
তিনি বলেন, ‘উইচ হান্টিং’ বা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে এই কমিশন গঠন করা হবে না। ১৯৭৫ সালের বাংলাদেশের ভবিষ্যতকে বদলে দেয়ার জন্য যে কলঙ্কিত প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছিল, যে নৃসংস হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল তার সঙ্গে কারা কারা জড়িত ছিল, নতুন ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে সেটা জানানোর জন্যই এই কমিশন গঠন করা হবে। এছাড়া কাদের কাদের ব্যাপারে তাদের সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার সেটা জানানোও এই কমিশনের উদ্দেশ্য।
কমিশন কেমন হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমার যে রূপরেখা সেটা যদি উনি (প্রধানমন্ত্রী) একটু পরিবর্তন করতে চান, তার আগে আমি যদি ওটা বলে দিই তাহলে আমার মনে হয় সংসদীয় পদ্ধতির সরকারের যে উদ্দেশ্য ও আদর্শ সেটার ব্যাঘাত হয়।’
আনিসুল হক বলেন, তিনি যে রূপরেখা তৈরি করেছেন সেটা্তেই এগিয়ে যাবেন।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আওয়ামী লীগ সরকার ছাড়া অন্যান্য সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সেই সমস্যাগুলো একটা একটা করে শেষ করতে হচ্ছে। সেজন্য তাদের তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না।
সরকার ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলাকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছে। কারণ এই মামলা ১৪ বছর পর নিম্ন আদালতে নিষ্পত্তি হয়েছে। এখন এটি উচ্চ আদালতে তড়িৎ শুনানি করে এর পরিসমাপ্তি ঘটানো হবে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধ যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে রুল
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. সেলিনা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. ফারুক, অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিষয়ে তদন্ত কমিশন চেয়ে হাইকোর্টে রিট