বিশ্ব
মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে বন্দুক হামলায় নিহত ৩
মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে সোমবার রাতে বন্দুকধারীর গুলিতে তিনজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। হামলা চালানোর পর হামলাকারী নিজেকে গুলি করেছে।
পুলিশ জানায়, প্রথমে বার্কি হল নামে একটি একাডেমিক ভবনে এবং পরে এমএসইউ ইউনিয়নে গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে।
ক্যাম্পাস পুলিশ বিভাগের অন্তর্বর্তীকালীন উপ-প্রধান ক্রিস রোজম্যান বলেন, ‘ঘটনাটি সত্যিই একটি দুঃস্বপ্ন।’
আরও পড়ুন: ক্যালিফোর্নিয়ার ২টি ফার্মে বন্দুক হামলায় নিহত ৭
ডেট্রয়েট থেকে প্রায় ৯০ মাইল উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ইস্ট ল্যানসিং ক্যাম্পাসে শত শত পুলিশ কর্মকর্তা সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে খুঁজছেন। পুলিশ ব্যক্তিটির বর্ণনা দিতে গিয়ে জানায়, খাটো প্রকৃতির কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিটির গায়ে জিন্সের জ্যাকেট, পায়ে লাল জুতা ও মাথায় বল ক্যাপ দেখা গেছে।
রোজম্যান বলেন, ওই ব্যক্তির বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা আছে কি না তা এখনো জানা যায়নি। তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম প্রকাশ করা হয়নি।
রোজম্যান বলেন, 'এমন অনেক কিছুই আছে যা আমরা এই মুহুর্তে জানি না।
বার্কিতে দুইজন এবং এমএসইউ ইউনিয়নে একজন নিহত হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাত ১০টা ১৫ মিনিট নাগাদ পুলিশ জানায়, বার্কি ও আশেপাশের আবাসিক হলগুলো সুরক্ষিত রয়েছে।
আরও পড়ুন: ক্যালিফোর্নিয়ায় ডান্স ক্লাবে বন্দুক হামলাকারীর আত্মহত্যা
করোনাভাইরাস: বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৭৭ লাখ ছাড়াল
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৭৭ লাখ অতিক্রম করেছে।
সর্বশেষ বৈশ্বিক পরিসংখ্যান অনুসারে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৭৭ লাখ ২৪ হাজার ৪০৭ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৬৭ লাখ ৮৩ হাজার ৩৩৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা ১০ কোটি ৪৭ লাখ ৮৭ হাজার ৫৩ জন এবং মোট মৃত্যুবরণ করেছে ১১ লাখ ৪০ হাজার ২০৯ জন।
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মোট শনাক্ত চার কোটি ৪৬ লাখ ৮৪ হাজার ২০০ জন এবং একই সময়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৩ জনে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় ১ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৯
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
দেশে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় নতুন করে ৯ জনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় ২৯ হাজার ৪৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৬৮৮ জনে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৭৪ লাখ ছাড়াল
দেশের আকাশসীমায় ১০টিরও বেশি মার্কিন বেলুন উড়েছে: চীন
চীন বলেছে, গত এক বছরে ১০টিরও বেশি মার্কিন হাই-অ্যালটিটিউড বেলুন বিনা অনুমতিতে তাদের দেশের আকাশসীমায় উড়েছে। বেইজিং বিশ্বজুড়ে নজরদারি বেলুনগুলোর একটি বহর পরিচালনা করছে বলে ওয়াশিংটনের এমন অভিযোগের পরই চীন এ দাবি করলো।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গুলি করে একটি সন্দেহভাজন চীনা গুপ্তচর বেলুন ধ্বংস করার পরে চীনের পক্ষ থেকে এ দাবি করা হলো।
সন্দেহভাজন চীনা গুপ্তচর বেলুনটি আলাস্কা থেকে দক্ষিণ ক্যারোলিনা অতিক্রম করেছিল। এ ঘটনার মধ্যদিয়ে কয়েক দশকের মধ্যে এই দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে।
সোমবার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন অভিযুক্ত মার্কিন বেলুনগুলো সম্পর্কে জানালেও, এগুলো সম্পর্কে কোনও বিশদ বিবরণ দেননি। এমনকি কীভাবে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছিল বা এগুলোর সঙ্গে মার্কিন সরকারের বা সামরিক বাহিনীর কোনও সম্পর্ক ছিল কিনা তাও জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: বেলুন ইস্যুতে ব্লিঙ্কেনের চীন সফর বাতিল
ওয়াং তার প্রাত্যাহিক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘মার্কিন বেলুনগুলো অন্য দেশের আকাশসীমায় অবৈধভাবে প্রবেশ করা সাধারণ ব্যাপার।’
তিনি বলেন, গত বছর থেকে, মার্কিন গোয়েন্দা বেলুনগুলো চীনের কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ১০ বারের বেশি অবৈধভাবে চীনের আকাশসীমার ওপর দিয়ে উড়েছে।’
ওয়াং বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ‘প্রথমে নিজের কর্মকাণ্ডের বিচার করা এবং সংঘাত সৃষ্টি না করে মনোভাব পরিবর্তন করা।’
চীন বলেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধ্বংস করা বেলুনটি ছিল আবহাওয়া গবেষণার জন্য তৈরি একটি মনুষ্যবিহীন বিমান।
তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এটিকে গুলি করে অতিমাত্রায় প্রতিক্রিয়া দেখানোর অভিযোগ করেছে এবং এই প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার হুমকি দিয়েছে।
ঘটনার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তার বেইজিং সফর বাতিল করেছেন।
এ ঘটনার আগে অনেকেই আশা করেছিলেন যে তাইওয়ান, বাণিজ্য, মানবাধিকার এবং বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা পদক্ষেপের হুমকির বিষয়ে সম্পর্কের তীব্র অবনতি এবার কিছুটা কমবে।
এছাড়াও, সোমবার ফিলিপাইন একটি চীনা উপকূলরক্ষী জাহাজকে একটি সামরিক-গ্রেড লেজার দিয়ে ফিলিপাইনের উপকূলরক্ষী জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করা এবং দক্ষিণ চীন সাগরে কয়েকজন ফিলিপিনো ক্রুকে সাময়িকভাবে অন্ধ করে দেয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছে।
ফিলিপাইন এটিকে ম্যানিলার সার্বভৌম অধিকারের ‘স্পষ্ট’ লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।
ওয়াং বলেন, ফিলিপাইনের একটি উপকূলরক্ষী জাহাজ ৬ ফেব্রুয়ারি অনুমতি ছাড়াই চীনা জলসীমায় অনুপ্রবেশ করেছিল এবং চীনা উপকূলরক্ষী জাহাজগুলো ‘পেশাদারভাবে ও সংযমের সঙ্গে’ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
চীন মৌখিকভাবে তার আশেপাশের সমস্ত কৌশলগত জলপথের মালিকানা দাবি করছে এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যে তার সামুদ্রিক বাহিনী ও দ্বীপ ফাঁড়ি গড়ে তুলছে।
ওয়াং বলেছেন, ‘চীন ও ফিলিপাইন এই বিষয়ে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখছে।’
তবে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ ঘটনা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রশ্নের জবাব দেয়নি।
অন্যদিকে, উত্তেজনা আরও বাড়াতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে রবিবার একটি মার্কিন যুদ্ধবিমান লেক হুরনের ওপর একটি ‘অজ্ঞাত বস্তু’কে লক্ষ্য করে গুলি করে।’
গত বৃহস্পতিবার বাইডেন প্রশাসন আমেরিকান ইউ-২ গুপ্তচর বিমানের ছবির কথা উদ্ধৃত করে বলে, তাদের ধ্বংস করা চীনা বেলুনটি ৪০টিরও বেশি দেশকে লক্ষ্যবস্তু করে গোয়েন্দা সংকেত শনাক্ত এবং তথ্য সংগ্রহ করছিল।
বেলুনকাণ্ডের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছয়টি চীনা সংস্থার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ইউএস হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসও সর্বসম্মতভাবে চীনকে মার্কিন সার্বভৌমত্ব ‘লঙ্ঘন’ এবং ‘গোয়েন্দা অভিযান সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রতারিত করার চেষ্টা করা’র জন্য অভিযুক্ত করেছে।
চীনের মুখপাত্র ওয়াং এই অভিযোগকে ফের প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ‘বস্তুগুলোকে গুলি করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘন ঘন উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা প্রয়োজনের অতিরিক্ত পরিশ্রম ও অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানো।’
আরও পড়ুন: চীনের বেলুন গোয়েন্দা সংকেত সংগ্রহ করতে সক্ষম: যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র সমুদ্রের উপর চীনা বেলুন ধ্বংস করল, ধ্বংসাবশেষ পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ
তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প: ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় বেঁচে যাওয়া হাজারো মানুষ
এক সপ্তাহ আগে তুরস্ক ও সিরিয়ায় আঘাত হানা ভূমিকম্প থেকে বেঁচে যাওয়া কয়েক হাজার মানুষ নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা ও অনিশ্চয়তায় ভুগছেন।
যদিও অনেককে বিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে, তবে অনেকেই এখনও নিজেদের ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িতেই অবস্থান করছেন এবং নিখোঁজ প্রিয়জনের সন্ধান অব্যাহত রেখেছেন।
উদ্ধারকারীরা প্রথম ভূমিকম্পের ১৭৪ ঘন্টা পরে একজন নারীকে জীবিত খুঁজে পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়াল
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ৯ ঘণ্টার ব্যবধানে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক এবং উত্তর সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ ও ৭ দশমিক ৫ মাত্রার দুটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এ ভূমিকম্পে ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। উদ্ধার অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার অশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার ইস্তাম্বুলের আন্তাকিয়া শহরের একটি ধসে পড়া ভবন থেকে উদ্ধারকারীরা নাইদে উমায় নামে এক নারীকে উদ্ধার করেন।
এর আগে, গাজিয়ান্তেপ প্রদেশের ইসলাহিয়ে শহরে একটি পাঁচতলা ভবনের ধ্বংসাবশেষ থেকে ৪০ বছর বয়সী এক নারীকে এবং আদিয়ামান প্রদেশের বেসনিতে ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে উদ্ধার করে।
ভূমিকম্প আঘাত হানার এক সপ্তাহ পরেও, অনেক মানুষ এখনও আশ্রয়হীন অবস্থায় রাস্তায় দিন কাটাচ্ছে। কিছু জীবিত ব্যক্তি এখনও তাদের প্রিয়জনের লাশ উদ্ধারের জন্য ধসে পড়া ভবনের সামনে অপেক্ষা করছেন।
মালটায়া প্রদেশের পোলাট গ্রামে ভূমিকম্পের কেন্দ্র থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার (৬২ মাইল) দূর পর্যন্ত প্রায় কোনও বাড়িই অবশিষ্ট নেই।
বাসিন্দারা ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ি থেকে রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন এবং অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা জেহরা কুরুকাফা বলেছেন, পর্যাপ্ত তাঁবু আসেনি, তাই যা পাওয়া গেছে তাই-ই চারটি পরিবার ভাগ করে নিতে বাধ্য হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চারটি পরিবার খোলা আকাশের নিচে মাটিতে ঘুমাই, কারণ পর্যাপ্ত তাঁবু নেই।’
আদিয়ামান শহরে ২৫ বছর বয়সী মুসা বোজকার্ট তাকে এবং অন্যদের পশ্চিম তুরস্কের আফিয়ন শহরে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন।
বোজকার্ট বলেন, ‘আমরা চলে যাচ্ছি, কিন্তু আমরা সেখানে যাওয়ার পর আমাদের কী হবে তা আমরা জানি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কোন লক্ষ্য নেই। আমার বাবা-চাচা কেউ বেঁচে নেই। আমার আর কি বাকি আছে।’
আদিয়ামানের কৃষক ফুয়াত একিনসি (৫৫) ধ্বংস হওয়া সত্ত্বেও তার বাড়ি ছেড়ে যেতে অনিচ্ছুক।
তিনি বলেন, তার অন্য কোথাও বসবাস করার উপায় নেই এবং তার খেতগুলো দেখাশোনা করা দরকার।
আরও পড়ুন: তুরস্কে আরও একজনকে জীবিত উদ্ধার করল বাংলাদেশ দল, ৯ জনের লাশ পুনরুদ্ধার
তিনি বলেন, ‘যাদের সামর্থ্য আছে তারা চলে যাচ্ছে, কিন্তু আমরা দরিদ্র। সরকার সেখানে গিয়ে এক-দুই মাস বাস করতে বলছে। আমি কিভাবে আমার বাড়ি ছেড়ে যাব? আমার খেত এখানে, এটা আমার বাড়ি, আমি কিভাবে এটা রেখে যাব?’
তুরস্ক জুড়ে স্বেচ্ছাসেবকরা কয়েক লাখ জীবিত মানুষকে সাহায্য করার জন্য একত্র হয়েছে। যার মধ্যে একদল স্বেচ্ছাসেবক শেফ এবং রেস্তোরাঁর মালিকরা ঐতিহ্যবাহী খাবার যেমন- মটরশুটি, চাল ও মসুর ডালের স্যুপ শহরের কেন্দ্রস্থলে আশ্রয় নেয়া মানুষদের জন্য পরিবেশন করছেন।
যদিও স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন।
তবে মেক্সিকো ন্যাশনাল অটোনোমাস ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এডুয়ার্ডো রেইনোসো অ্যাঙ্গুলো বলেছেন, জীবিত মানুষ খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা ‘এখন খুব কম।’
রেইনোসো বলেছেন, ধ্বংসাবশেষে আটকে থাকা লোকদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা পাঁচ দিন পরে কমে যায় এবং ৯ দিন পরে তা শূন্যের কাছাকাছি নেমে আসে, যদিও ব্যতিক্রম কিছু ঘটতেও পারে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের জরুরি পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার অধ্যাপক ডেভিড আলেকজান্ডারও রেইনোসোর সঙ্গে একমত হয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ধ্বংসস্তূপ থেকে মানুষকে জীবিত উদ্ধারের আশা ‘প্রায় শেষ’।
আলেকজান্ডার বলেন, অনেক বিল্ডিং এতটাই বাজেভাবে তৈরি করা হয়েছিল যে সেগুলো খুব ছোট ছোট টুকরোয় ভেঙে পড়েছিল, খুব কম জায়গাই মানুষের বেঁচে থাকার মতো যথেষ্ট জায়গা ছিল।
তিনি বলেন, ‘সাধারণভাবে বলতে গেলে আমরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে খোলা জায়গা খুঁজে পাই, যেখানে আমরা সুড়ঙ্গ করতে পারি। তবে তুরস্ক ও সিরিয়ার এই ছবিগুলোর মধ্যে কয়েকটির দিকে তাকালে আমরা এমন কোনো জায়গা দেখতে পাইনি।’
শীতকালীন তাপমাত্রা দুর্ঘটনাকবলিত মানুষদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আরও কমিয়ে দিয়েছে। এই অঞ্চলের তাপমাত্রা রাতারাতি মাইনাস ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস (২১ ডিগ্রি ফারেনহাইট) এ নেমে গেছে।
ভার্জিনিয়া টেকের ইমার্জেন্সি মেডিসিনের অধ্যাপক ড. স্টেফানি লারেউ বলেছেন, ‘হাইপোথার্মিয়া থেকে শরীরকে বাঁচিয়ে রাখার সাধারণ উপায় হল কাঁপুনি এবং কাঁপুনির জন্য প্রচুর ক্যালোরির প্রয়োজন হয়। ‘সুতরাং জীবিত কেউ যদি এতদিন খাবার না খেয়ে থাকে এবং এতটা শীতল তাপমাত্রার সংস্পর্শে থাকে, তবে তারা হয়তো হাইপোথার্মিয়াতে আরও দ্রুত মারা যাচ্ছে।’
তুরস্কের বিশাল ধ্বংসযজ্ঞের জন্য অনেকেই ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণ কাঠামোকে দায়ী করেছেন এবং কর্তৃপক্ষ ধসে পড়া ভবনের সঙ্গে জড়িত কন্ট্রাক্টরদের শনাক্ত করা শুরু করেছে।
কর্মকর্তারা বলেছেন, ভূমিকম্প অসহনশীল ভবন নির্মাণের জন্য কমপক্ষে ১৩১ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে তুরস্কে ভবন নির্মাণের জন্য নির্মাণ কোড থাকলেও কোডগুলো খুব কমই মানা হয়।
সিরিয়ায় জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল মার্টিন গ্রিফিথস বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সাহায্য প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে।
রবিবার তুর্কি-সিরিয়ান সীমান্ত পরিদর্শন করে গ্রিফিথস বলেন, সিরিয়ানরা ‘আন্তর্জাতিক সাহায্যের সন্ধান করছে, যা আসেনি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার জনগণকে সাহায্য করতে ব্যর্থ হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার এবং আমাদের দায়িত্ব হল এই ব্যর্থতা যত দ্রুত সম্ভব সংশোধন করা।’
হোয়াইট হেলমেট উদ্ধারকারী গ্রুপের মতে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ১৬৬ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়াল, তুরস্কে ঠিকাদার আটক
সিরিয়ায় সামগ্রিক মৃত্যুর সংখ্যা শনিবার তিন হাজার ৫৫৩ জনে পৌঁছেছে। যদিও দেশের সরকার-নিয়ন্ত্রিত অংশগুলোতে মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ৩৮৭ জনের বেশি আপডেট করা হয়নি। রবিবার পর্যন্ত তুরস্কের মৃতের সংখ্যা ছিল ৩১ হাজার ৬৪৩।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়েসাস সতর্ক করে বলেছেন, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে বিপর্যয় আরও বাড়বে। যুদ্ধ, করোনা, কলেরা, অর্থনৈতিক পতন এবং এখন ভূমিকম্পের জটিল সঙ্কট এ অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষকে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’
চীন সফরে যাচ্ছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি চীনে তিন দিনের সফরে রাষ্ট্রীয় যাচ্ছেন। আগামী মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই সফরে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনয়িং রবিবার এ ঘোষণা দিয়ে বলেন, শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে রাইসি এ সফরে আসছেন।
আরও পড়ুন: আবারও চীন সফরে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, রাইসি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করবেন এবং দুই দেশের প্রতিনিধিরা পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ক নথিতে সই করবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এ সফরে চীনা ব্যবসায়ী নেতাদের এবং চীনে ইরানি প্রবাসীদের সঙ্গে বৈঠকও রাইসির সফরসূচির অংশ।
রাইসির সফর আন্তর্জাতিক বিষয়ে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা আধিপত্যের বিরোধিতাকারী দুই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অংশীদারের মধ্যে সম্পর্ককে আরও গভীর করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দুই নেতা গত সেপ্টেম্বরে উজবেকিস্তানের সমরকন্দে বৈঠক করেন, যখন জিনপিং ইরানের প্রতি চীনের সমর্থনের ওপর জোর দিয়েছিলেন।
ডিসেম্বরে তেহরানে চীনা ভাইস প্রিমিয়ার হু চুনহুয়ার সঙ্গে বৈঠকে রাইসি কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
চীন ইরানের তেলের প্রধান ক্রেতা এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে বিনিয়োগের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
২০২১ সালে ইরান ও চীন একটি ২৫ বছরের কৌশলগত সহযোগিতা চুক্তি সই করেছে। যাতে তেল ও খনিসহ শিল্প, পরিবহন এবং কৃষি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় রয়েছে।
উভয় দেশেরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈরি সম্পর্ক রয়েছে এবং রাশিয়ার পাশাপাশি তারা মার্কিন আধিপত্যের বিপরীতে নিজেদের অবস্থান বজায় রেখেছে।
ওয়াশিংটন ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার কাছে শতাধিক হামলাকারী ড্রোন বিক্রির জন্য ইরানকে অভিযুক্ত করেছে। একই সময়ে মস্কো ও বেইজিংয়ের মধ্যকার সম্পর্কও আরও দৃঢ় হয়েছে।
দেশব্যাপী সরকার বিরোধী বিক্ষোভ এবং পশ্চিমাদের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে ইরান শনিবার ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের ৪৪ তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে।
আরও পড়ুন: বেলুন ইস্যুতে ব্লিঙ্কেনের চীন সফর বাতিল
কাশ্মীর: ভারতের ওপর চাপ প্রয়োগে চীন সফরে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
স্পেন: মাদ্রিদে স্বাস্থ্যসেবার দাবিতে রাস্তায় নেমেছে হাজার হাজার মানুষ
স্পেনের মাদ্রিদে রাজধানীর স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবাগুলো আঞ্চলিক সরকারের ব্যবস্থাপনায় দেয়ার বিরুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করছে। এতে মানুষের ব্যাপক উপস্থিতির কারণে এটি সবচেয়ে বড় বিক্ষোভে রূপ নিয়েছে।
রবিবার সড়কে এই বিক্ষোভ করে একটি বার্তা দেশটির নাগরিকরা।
দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের মতে, শহরের কেন্দ্রস্থলে আড়াই লাখেরও বেশি মানুষ সমাবেশ করেছে। আয়োজকরা দাবি করেছেন কয়েক লাখ মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেছে।
প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারীরা স্প্যানিশ ভাষায় ঘরে তৈরি করা ‘স্বাস্থ্যের অধিকার একটি মানবাধিকার। স্বাস্থ্য পরিষেবা রক্ষা করুন’ সহ বিভিন্ন রকম বার্তার প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদে অংশ নেন।
আরও পড়ুন: মাদ্রিদ সম্মেলন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা বৃদ্ধি করেছে: তথ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যকর্মী অ্যাসোসিয়েশনগুলোর নেতৃত্বে বিক্ষোভ হয়। মাদ্রিদ অঞ্চলের রক্ষণশীল নেতৃত্বাধীন সরকারের জনস্বাস্থ্য পরিচর্যা ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলার বিষয়ে বামপন্থী দল, ইউনিয়ন এবং সাধারণ নাগরিকদের সমর্থন ছিল এই আন্দোলনে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই দলগুলো নিয়মিত রাস্তায় নামছে এবং তাদের আন্দোলন জোরদার হচ্ছে।
মাদ্রিদের আঞ্চলিক প্রধান ইসাবেল দিয়াজ আয়ুসো অভিযোগ করেছেন যে বিক্ষোভগুলো স্পেনের বেশিরভাগ অংশে মে মাসের আঞ্চলিক নির্বাচনের আগে বামপন্থী প্রতিদ্বন্দ্বীদের রাজনৈতিক স্বার্থে অনুপ্রাণিত।
স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা দাবি করেন যে দিয়াজ আয়ুসোর প্রশাসন স্প্যানিশ অঞ্চলের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাতে মাথাপিছু সর্বনিম্ন পরিমাণ ব্যয় করে, যদিও এটির মাথাপিছু আয় সর্বোচ্চ। তারা বলে যে মাদ্রিদে স্বাস্থ্যসেবার জন্য ব্যয় করা হয় জনপ্রতি দুই ইউরো, যা একটি বেসরকারি খাতে চলে যায়।
তার প্রশাসনের সমালোচকরা বলছেন যে ডাক্তার এবং নার্সদের অতিরিক্ত কাজ করা রোগীদের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষার সাড়ি তৈরি করে।
স্পেনের একটি মিশ্র স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা রয়েছে। তবে সরকারি খাত বেসরকারি খাতের চেয়ে বড় এবং রাষ্ট্রের একটি মৌলিক স্তম্ভ হিসাবে বিবেচিত হয়। এটি স্পেনে আঞ্চলিকভাবে পরিচালিত হয়।
আরও পড়ুন: স্পেনের প্রধানমন্ত্রী করোনা আক্রান্ত
আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যে ইসরায়েলি কর্মকাণ্ড হুমকি, সতর্ক করলেন আরব নেতারা
জেরুজালেম এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি কর্মকাণ্ড আঞ্চলিক অশান্তিকে আরও খারাপ করতে পারে বলে আরব ও ইসলামিক দেশগুলোর কয়েক ডজন নেতা এবং সিনিয়র কর্মকর্তা সতর্ক করে দিয়েছেন।
রবিবার কায়রোতে একটি বৈঠকে সাম্প্রতিক ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সহিংসতা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে এই সতর্কতা দেন তারা।
আরব লিগ আয়োজিত ওই বৈঠকটিতে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসি, জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসসহ অনেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেরুজালেম এবং প্রতিবেশী ইসরায়েলি-অধিকৃত অঞ্চলে বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধের সবচেয়ে মারাত্মক সময়ের মধ্যে একটি উচ্চ-পর্যায়ের সমাবেশ করল আরব লীগ।
দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আর ইসরায়েলি পক্ষের নিহত হয়েছেন ১০ জন।
বৈঠকে বক্তারা জেরুজালেম এবং পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর বাড়িঘর ধ্বংস ও বসতি সম্প্রসারণের ‘একতরফা পদক্ষেপের’ নিন্দা জানান।
তারা শহরের বিরোধপূর্ণ পবিত্র স্থানটিতে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের পরিদর্শনেরও নিন্দা জানান। এটি ইহুদি এবং মুসলমান উভয়ের কাছেই পবিত্র। এটি প্রায়শই ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি অশান্তির কেন্দ্রস্থল।
ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
কর্মকর্তারা ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদের রক্ষক হিসেবে জর্ডানের ভূমিকার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। মসজিদটি জেরুজালেমের ওল্ড সিটির একটি পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত। ইসরাইলের দাবি অনুযায়ী দাবি অনুযায়ী ইহুদিদের কাছে এটি সবচেয়ে পবিত্র স্থান। তারা এটিকে টেম্পল মাউন্ট হিসাবে উল্লেখ করে। কারণ এটি প্রাচীনকালে ইহুদি উপাসনার স্থান ছিল।
১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে ইসরাইল জায়গাটি দখল করার পর থেকে ইহুদিদের সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেখানে প্রার্থনা করা হয়নি। ইসরায়েল পুরো জেরুজালেমকে তার অবিভক্ত রাজধানী হিসেবে দাবি করে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা তাদের ভবিষ্যত রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে পূর্ব জেরুজালেমকে চায়।
জেরুজালেমকে ‘ফিলিস্তিনি মেরুদন্ড’ বলে অভিহিত করে এল-সিসি পবিত্র স্থানটির বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন করার জন্য ইসরায়েলি পদক্ষেপের মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সতর্ক করে বলেছেন যে তারা ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ভবিষ্যতের আলোচনাকে ‘নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে’।
তিনি বলেছিলেন যে এই ধরনের পদক্ষেপগুলো দীর্ঘকাল ধরে চাওয়া দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে বাধাগ্রস্ত করবে। যা ‘উভয় পক্ষ এবং সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যকে কঠিন এবং গুরুতর পরিস্থিতিরে দিকে নেবে।’
মিশর ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকারী প্রথম আরব দেশ। দেশটির প্রেসিডেন্ট এল সিসি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ‘দুই-রাষ্ট্র সমাধানকে শক্তিশালী করতে এবং শান্তি প্রক্রিয়া পুনরুদ্ধারের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি তৈরির’ আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পশ্চিম তীরে অভিযানের সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে ৩ ফিলিস্তিনির মৃত্যু
বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহও ইসরায়েলকে আল-আকসা মসজিদে তাদের সীমালঙ্ঘন এবং অনুপ্রবেশ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ফিলিস্তিনের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি না হলে মানুষ এই অঞ্চল শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধিতে বসবাস করতে পারে না।
প্যান-আরব সংস্থার সেক্রেটারি-জেনারেল আহমেদ আবুল-গেইতও সতর্ক করেছেন যে আল-আকসা মসজিদকে বিভক্ত করার এবং এর আরব ও ইসলামিক পরিচয় মুছে ফেলার প্রচেষ্টা ‘অন্তহীন অস্থিরতা ও সহিংসতাকে ইন্ধন দেবে।’
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, তার প্রশাসন জাতিসংঘ ও এর সংস্থাগুলোর কাছে যাবে এবং দ্বন্দ্ব নিরসনে একটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান দাবি করবে।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র আমাদের জনগণের বৈধ অধিকার রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক আদালত ও সংস্থার কাছে যাওয়া অব্যাহত রাখবে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শীর্ষ জঙ্গী নিহত
চলমান সহিংসতা এই অঞ্চলটিকে কিনারে নিয়েছে।গত মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন মিশরীয়, ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনি নেতাদের সঙ্গে দেখা করে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানান।
ইসরায়েল পরিচালনা করছে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নতুন উগ্র ডানপন্থী সরকার। নেতানিয়াহুর প্রশাসনের অনেক রাজনীতিবিদ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেন।
কায়রোতে রবিবারের বৈঠকের পর একটি চূড়ান্ত বিবৃতি দেয়া হয়।এতে ‘ইসরায়েলের পদ্ধতিগত নীতির’ নিন্দা করা হয়। তাদের লক্ষ্যকে জেরুজালেমের ‘আরব এবং ইসলামিক সংস্কৃতি এবং পরিচয়’ ‘বিকৃত ও পরিবর্তন’ বলে উল্লেখ করা হয়।
ইসরায়েলের কথিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রতিও আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিটিতে।
আরও পড়ুন: নিহত সাংবাদিকের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় ইসরায়েলি পুলিশের হামলার অভিযোগ
ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়াল, তুরস্কে ঠিকাদার আটক
তুরস্ক ও সিরিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়িয়েছে। তুরস্কে ভূমিকম্পে এত মৃত্যুর জন্য ভবন নির্মাণে নিরাপত্তার মান লঙ্ঘনকে দায়ী করে ১৩৪ জন ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে ভূমিকম্পের ছয় দিন পর রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারি এক গর্ভবতী নারী ও দুটি শিশুসহ আরও জীবিত ব্যক্তিকে ধ্বংস্তুপের নিচ থেকে বের করে এনেছে উদ্ধারকারীরা।
দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক এবং উত্তর সিরিয়ায় গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা রবিবার ৩৩ হাজার ১৭৯ জনে দাঁড়িয়েছে। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আর ধ্বংসস্তুপের নিচে আরও মানুষ চাপা পড়ে আছে। তাই নিহতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে এটি নিশ্চিত। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ভূমিকম্পে আরও ৯২ হাজার ৬০০ জন আহত হয়েছে।
হতাশা ও যন্ত্রণাদায়ক ধীরগতির উদ্ধার প্রচেষ্টা ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে, তাই ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলে লোকেদের ভালোভাবে প্রস্তুত না করার জন্য কাকে দায়ী করা হয়েছে। এর মধ্যে সিরিয়ার একটি এলাকা রয়েছে যা ইতোমধ্যেই বছরের পর বছর গৃহযুদ্ধে ভুগছে।
যদিও তুরস্কে কাগজে-কলমে বর্তমান ভূমিকম্প-ইঞ্জিনিয়ারিং মান পূরণ করে এমন নির্মাণ কোড রয়েছে। কিন্তু সেগুলি খুব কমই প্রয়োগ করা হয়। কেনো হাজার হাজার ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে আর হাজার হাজার বাসিন্দা তার নিচে চাপা পড়েছে, তার উত্তর এখন খোঁজা হচ্ছে।
তুরস্কের বিচারমন্ত্রী বেকির বোজদাগ রবিবার বলেছেন, ১৩৪ জনের বিরুদ্ধে ভূমিকম্প সহ্য করতে ব্যর্থ ভবন নির্মাণে তাদের কথিত দায়িত্বের তদন্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেছেন, তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সাতজনকে আটক করা হয়েছে এবং আরও সাতজনকে দেশ ত্যাগ করতে বাধা দেয়া হয়েছে।
বোজদাগ দায়ী যে কাউকে শাস্তি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং প্রসিকিউটররা নির্মাণে ব্যবহৃত সামগ্রীর প্রমাণের জন্য ভবনের নমুনা সংগ্রহ করা শুরু করেছেন। ভূমিকম্পগুলি শক্তিশালী ছিল। তবে ভুক্তভোগী, বিশেষজ্ঞ এবং তুরস্ক জুড়ে লোকেরা ধ্বংসযজ্ঞের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য খারাপ নির্মাণকে দায়ী করছে।
বেসরকারী ডিএইচএ নিউজ এজেন্সি এবং অন্যান্য মিডিয়া জানিয়েছে, রবিবার ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষ আদিয়ামানে বেশ কয়েকটি ভবন ধ্বংসের জন্য দায়ী দুই ঠিকাদারকে আটক করেছে। এই জুটি জর্জিয়া যাওয়ার পথে ছিল বলে জানা গেছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান সানলিউরফা শহরে বলেছেন, শুধু তুরস্কেই ৮০ হাজার ১০৪ জন আহত হয়েছেন। তবে ভূমিকম্পের ১৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় পরেও ধ্বংসস্তূপ থেকে কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করা হচ্ছে।
তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর পাঁচ দিন ধরে ধসে পড়া বাড়ির ভেতর বেঁচে থাকা পাঁচ সদস্যের একটি পরিবারকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে উদ্ধারকারী দল।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন যে সড়ক ও অন্যান্য অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ব্যাহত হয়। তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাটি ৫০০ কিলোমিটার ব্যাসের, যেখানে তুরস্কের এক কোটি ৩৫ লাখ মানুষের বাসস্থান।
করোনাভাইরাস: বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৭৪ লাখ ছাড়াল
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৭৪ লাখ অতিক্রম করেছে।
সর্বশেষ বৈশ্বিক পরিসংখ্যান অনুসারে, রবিবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৭৪ লাখ ২৫ হাজার ৬০৫ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৬৭ লাখ ৮১ হাজার ৮৭১ জনে দাঁড়িয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা ১০ কোটি ৪৭ লাখ ৬৪ হাজার ২৯৬ জন এবং মোট মৃত্যুবরণ করেছে ১১ লাখ ৪০ হাজার ১৫ জন।
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে রবিবার সকাল পর্যন্ত মোট শনাক্ত চার কোটি ৪৬ লাখ ৮৩ হাজার ৯৯৪ জন এবং একই সময়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৩০ হাজার ৭৫০ জনে।
আরও পড়ুন: করোনা: দেশে মৃত্যু নেই, শনাক্ত ৯
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
দেশে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এসময় নতুন করে ৯ জনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় ২৯ হাজার ৪৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৬৬৪ জনে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ২৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
এ সময়ে শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
এবং শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৪ শতাংশ।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৩০০ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ৮৬১ জনে।
শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৬৪ লাখ ছাড়াল
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়াল
তুরস্ক ও সিরিয়ায় পাঁচ দিনেরও বেশি সময় আগে আঘাত হানা ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়িয়েছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট শনিবার তার দেশে নিহতের সংখ্যা ২৪ হাজার ৬১৭ জন জানিয়েছেন। এদিকে সিরিয়ায় সরকারি ও বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নিহতের সংখ্যা তিন হাজার ৫৫৩ জন ।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান সানলিউরফা শহরে বলেছেন, শুধু তুরস্কেই ৮০ হাজার ১০৪ জন আহত হয়েছেন। তবে ভূমিকম্পের ১৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় পরেও ধ্বংসস্তূপ থেকে কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করা হচ্ছে।
তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর পাঁচ দিন ধরে ধসে পড়া বাড়ির ভেতর বেঁচে থাকা পাঁচ সদস্যের একটি পরিবারকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে উদ্ধারকারী দল।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন যে সড়ক ও অন্যান্য অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ব্যাহত হয়। তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাটি ৫০০ কিলোমিটার ব্যাসের, যেখানে তুরস্কের এক কোটি ৩৫ লাখ মানুষের বাসস্থান।
আরও পড়ুন: একটু উষ্ণতার জন্য লড়ছে তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া মানুষেরা
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্প: ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিতদের উদ্ধারে উল্লাস