এই বিষয়েই যা করা দরকার আর যা একেবারেই করা ঠিক নয় তেমন একটি তালিকা বিবিসি বাংলা’র খবরে তুলে ধরা হয়েছে:
ভালো মতন গবেষণা করুণ
আপনার পদে আপনার বেতনটা ঠিক আছে কিনা প্রয়োজনে এই নিয়ে আপনি অন্যদের সাথে আলাপ করে সঠিক তথ্যটা জানুন।
অফিসের সহকর্মী, এডমিনের লোকজন, বিভিন্ন নিয়োগ এজেন্সিসহ আরো নানান তরিকায় জানার চেষ্টা করুন যে, আপনার পদে বেতনটা ঠিক কেমন হয়। ভালো মতো জানা-বোঝার পর এবার আপনি নিজের মূল্য হাঁকান।
অপরিকল্পিতভাবে বেতন বাড়াতে বলবেন না
তিশা ফাইসন এনএইচএস-এ মাস ছয়েক ধরে কাজ করছিলো। তখনি একদিন সে নিজের বেতন বাড়াতে বলবে বলে সিদ্ধান্ত নিলো।
কিন্তু বেতন বাড়াতে বলার পর, ঊর্ধ্বতনেরা যখন জিজ্ঞেস করলো কেন তোমার বেতন বাড়ানো হবে? এই কথার উত্তরে কোনো উত্তর খুঁজে না পেয়ে নিজেকেই খুব অনভিজ্ঞ মনে হচ্ছিলো বলে জানালেন তিশা ফাইসন।
তাই এসব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা এই বলে পরামর্শ দেন যে, আপনার খরচ বেড়েছে, ব্যয় নির্বাহ আর করতে পারছেন না এসব কথা বলবেন না।
সেগুলো না বলে বরং আপনার কাজ আপনার কোম্পানিকে কীভাবে উপকৃত করছে সেটি ব্যাখ্যা করে বেতন বাড়াতে বলুন।
একটা ভালো সময় বেছে নিন
হুটহাট করে বেতন বাড়াতে না বলাই শ্রেয়। এই দাবি জানাবার জন্যেও একটা লাগমসই সময় বেছে নেয়া দরকার।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যখন কোম্পানি একটা বড় সাফল্য পায় এবং যখন প্রতিষ্ঠানের বাজেট প্রণয়ন করতে থাকে সেটাই বেতন বাড়াতে বলার মোক্ষম সময়।
ঘন-ঘন বেতন বাড়াতে বলা ঠিক নয়
যদি মোটে বছরখানেক আগেই আপনার বেতন বেড়ে থাকে তবে নিজের একটু রাশ টেনে ধরুন। ইচ্ছে হলেও খুব ঘন-ঘন বেতন বাড়াতে বলাটা যথার্থ নয়।
ক্যারিয়ার পরামর্শক শারলট গ্রিন মনে করেন, আনুগত্য, বিশ্বস্ততা ও কঠোর পরিশ্রমের ফলেই বেতন বাড়ে।
আপনি সঠিক বেতন কাঠামো পাচ্ছেন তো?
অধিকাংশ কোম্পানিই আজকাল বেতন কাঠামো ঠিক করে নেয়। ফলে, অনেক ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত জায়গা থেকে দর কষাকষির সুযোগ থাকে না।
একই কাজের জন্য ভিন্ন-ভিন্ন কর্মীকে ভিন্ন-ভিন্ন বেতন দিলে তা অসন্তোষ তৈরি করতে পারে।
আপনি যে গ্রেডে আছেন তার চেয়ে বেশি কিছু চান
'বেতনটা আরেকটু বাড়িয়ে দিন' বলাটা সমীচীন নয় বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বেতন যদি বাড়াতেই হয়, তাহলে বরং আপনি বর্তমানে যে গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন তারচেয়ে উপরের গ্রেডের বেতন চাওয়াই শ্রেয়।
আত্মবিশ্বাসী হোন
বেতন নিয়ে দর-কষাকষির সময় আত্মবিশ্বাসী থাকুন। মালিকের চোখে-চোখ রেখে কথা বলুন। নিজের যুক্তি জোরালোভাবে উপস্থাপন করুন।
প্রথমবার বেতন বাড়ানোর কথা বলতে গিয়ে থতমত খেয়ে যাওয়া ফাইসন-ও আত্মবিশ্বাসী থাকবার পরামর্শই দিয়েছেন।
কথা বলার সময় ঘাবড়ে যাবেন না
নিজের বেতন বাড়ানোর বিষয়ে দর কষাকষি করার সময় মোটেও ঘাবড়ে যাবেন না। মালিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে ইতস্তত বা উসখুস করবেন না।
আবার অস্বস্তি কাটানোর জন্য হড়বড় করে অনেক কথা বলারও দরকার নেই।
সঠিক বেতনটাই চান
যা কিছু একটা পরিমাণ বেতন বাড়িয়ে দিতে বলার চেয়ে, একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বেতন বাড়াতে বলাটা বেশি কার্যকর। এমনটিই দেখা গেছে কলাম্বিয়া বিজনেস স্কুলের একটি গবেষণায়।
ফলে, আপনিও নিজের জন্য একটি পরিমাণ নির্ধারণ করে নিন।
অস্পষ্টতা এড়িয়ে চলুন
বেতন বাড়াতে বলার সময় অস্পষ্টভাবে কথা বলা এড়িয়ে চলুন।
স্পষ্টভাবে বলুন ঠিক কত ভাগ বা কত টাকা বেতন বাড়াতে চান। কারণ জানতে চাইলে এর একটি ব্যাখ্যাও তৈরি রাখুন।
ভবিষ্যতের কথা বলুন
একটি অফিসে কাজ মানে তো আর শুধু বেতন নয়। সেখানে আরো নানা বিষয় থাকে। অফিসে কর্মঘণ্টার নমনীয়তা, ছুটির দিন ইত্যাদি বিষয়ও যে অফিসে কাজের আনন্দকে বাড়াতে পারে বা কমাতে পারে তা নিয়েও কথা বলুন।
প্রয়োজনে বেতন বাড়ানোর পাশাপাশি আপনার পদবীতেও পরিবর্তন আনতে বলুন।
হাল ছেড়ে দেবেন না
প্রতিযোগিতার এই বাজার। হয়তো কোনও কারণে মালিক পক্ষ আপনার মেধা, যোগ্যতা, বিশেষত্বকে একবারে মূল্যায়ন করতে নাই পারে। উদ্যম হারাবেন না।
নিজের যোগ্যতা যত বাড়বে, ভালো কোম্পানি ততই উঁচু দামে যোগ্য কর্মীকে নিজেদের দলে টেনে নেবে।