লিওনেল মেসি
আল-হিলালে লিওনেল মেসি, সত্যি না-কি কেবলই গুঞ্জন?
অনেক দিন ধরেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল আর্জেন্টিনার ফুটবল সুপারস্টার লিওনেল মেসির পরবর্তী গন্তব্য নাকি সৌদির ক্লাব আল-হিলালে। তবে এবারে সকল জল্পনাকল্পনায় যেন পানিই ঢেলে দিলেন মেসির বাবা ও এজেন্ট হোর্হে মেসি। প্রিয় তারকার ভবিষ্যৎ নিয়ে যেন আরও গভীর অনিশ্চয়তায় ডুবে গেলেন মেসি ভক্তরা।
পিএসজি ছেড়ে মেসির আল-হিলালে যোগ দেওয়া নিয়ে গুঞ্জনের সূত্রপাত ঘটে ফরাসি সংবাদমাধ্যম এএফপি’র খবর থেকে।
এএফপি জানায়, সৌদি আরবের সঙ্গে এই ‘ভিনগ্রহের ফুটবলারের’ চুক্তিটি রীতিমতো ‘ডান ডিল’।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, সৌদির জনপ্রিয় এই ক্লাবটিতে পরবর্তী দুই বছরের জন্য নাম লেখানোর মাধ্যমে বছরে ২০০ মিলিয়ন ডলার পকেটে পুরবেন মেসি!
তবে এসব তথ্য উড়িয়ে দিয়ে হোর্হে মেসি সম্প্রতি জানিয়েছেন, তার ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: ফিফার বর্ষসেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসি
তিনি বলেন, ‘আগামী বছরের জন্য এখনও কোনো ক্লাবের সঙ্গে কোনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি। মৌসুম শেষ হলে আমরা ভেবে দেখব সামনে কী কী পথ আছে, তারপর সিদ্ধান্ত নেব।’
নিজ বিবৃতিতে হোর্হে মেসি জানান, ‘পিএসজি’র সঙ্গে মেসি’র চুক্তি শেষ হতে যাচ্ছে এই মৌসুমের শেষেই। আর এরই মধ্যে আল-হিলাল ছাড়াও এই ৩৫ বছর বয়সী ফুটবল তারকার সম্ভাব্য গন্তব্যের তালিকায় রয়েছে ইন্টার মায়ামি, ম্যানচেস্টার সিটি; এমনকি তার সাবেক ক্লাব বার্সেলোনার নামও।’
স্বাভাবিকভাবেই মেসির আল-হিলালে যাওয়ার খবরটি অনেকের মনে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। অর্থের প্রাচুর্য্য যতই থাকুক, ইউরোপিয়ান ফুটবলের গতানুগতিক ‘পাওয়ারহাউজ ক্লাব’ কোনোদিক থেকেই নয় এই সৌদি দলটি।
অন্যদিকে, আল-হিলালের সঙ্গে মেসির সম্ভাব্য সম্পৃক্ততার পক্ষে বা বিপক্ষে নিশ্চিত হওয়ার মত কোনো তথ্যও মিলছে না।
কারো কারো মতে, এবারে একেবারেই নতুন কোনো চ্যালেঞ্জ খুঁজছেন মেসি। ফুটবলার হিসেবে যা কিছু জেতা সম্ভব, তার প্রায় সবই জিতে নিয়েছেন মেসি, আর তাই হয়তো এবার পুরোপুরি নতুন পরিবেশে, নতুন ভক্তদের সামনে নিজেকে তুলে ধরার ইচ্ছে জেগেছে এলএমটেনের মনে!
আরেকটি কারণ হতে পারে, মেসিকে যে বিশাল অঙ্কের প্রস্তাব আল-হিলাল দিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে, তা সঠিক হয়ে থাকলে কেবল মেসি কেন, যেকোনো খেলোয়াড়েরই প্রলুব্ধ হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু হবে না!
কারণটা যাই হোক, মেসির যোগদান ক্লাব হিসেবে আল-হিলালের জন্য সৃষ্টি করতে পারে এক নতুন অধ্যায়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়দের একজন লিওনেল মেসি, তার আগমন ক্লাবটির ইতিহাসকে নিঃসন্দেহে সমৃদ্ধ করবে, পাশাপাশি আকৃষ্ট করবে অনেক নতুন ভক্ত।
তাছাড়া, আপাতত সৌদিরই আরেক ক্লাব আল নাসের-এ খেলছেন মেসির সমকালীন আরেক সেরা ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
তবে কি আরবের মাটিতেই দেখা যাবে এই দুই মহারথীর পরবর্তী দ্বৈরথ?
আরও জানতে ভিজিট করুন পারিম্যাচ নিউজ।
আরও পড়ুন: লিওনেল মেসি: দরিদ্রতা, রোগ আর প্রতিকূলতা জয় করে আজ মহানায়ক
ফিফার বর্ষসেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসি
কিলিয়ান এমবাপ্পেকে পেছনে ফেলে সোমবার ফিফার বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতলেন লিওনেল মেসি।
টানা দ্বিতীয়বারের মতো বর্ষসেরা নারী খেলোয়াড় হয়েছেন স্পেনের অ্যালেক্সিয়া পুতেলাস।
কাতারে ফ্রান্সের বিপক্ষে মহাকাব্যিক ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ শিরোপা এনে দেয়ায় মেসি এমবাপ্পে ও করিম বেনজেমার বিপক্ষে সেরা খেলোয়াড়ের ভোট জিতে ১৪ বছরের মধ্যে সপ্তমবারের মতো ফিফার বর্ষসেরার পুরস্কার অর্জন করেন।
রেকর্ড পঞ্চম প্রচেষ্টায় বিশ্বকাপ জেতেন তিনি।
মেসি বলেন, ‘বছরটি আমার জন্য ‘পাগলাটে’ বছর ছিল। এত দিন লড়াই করে আমি আমার (বিশ্বকাপ) স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। শেষ পর্যন্ত যা ঘটেছে তা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সুন্দর বিষয়। এই অর্জন প্রতিটি খেলোয়াড়ের স্বপ্ন, তবে খুব কম জনই তা অর্জন করতে পারে। তাই আমি ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ।’
আরও পড়ুন: জুনে ঢাকা সফরে আসছে মেসিরা
জাতীয় দলের অধিনায়ক ও কোচদের একটি বৈশ্বিক প্যানেল, ফিফার ২১১টি সদস্য দেশের প্রতিটিতে নির্বাচিত সাংবাদিক এবং অনলাইনে ভক্তদের সমন্বয়ে চূড়ান্তভাবে তিনজন খেলোয়াড়কে নির্বাচিত করা হয়।
৩৫ বছর বয়সী মেসি ফিফার কাছ থেকে তার প্রথম সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার প্রত্যাশী এমবাপ্পেকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের জন্য ফিফা প্রদত্ত গোল্ডেন বল ট্রফি জয়লাভ করেন। সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে গোল্ডেন বুট নিজের দখলে নেন এমবাপ্পে।
ফিফা অ্যাওয়ার্ডস ভোটে মেসির পয়েন্ট ৫২, এমবাপ্পের ৪৪ এবং বেনজেমার ৩৪।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ জয়, আর্জেন্টিনার হয়ে আরও খেলতে চান মেসি
বিশ্বকাপ জয়, আর্জেন্টিনার হয়ে আরও খেলতে চান মেসি
লিওনেল মেসি বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের পর আর্জেন্টিনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন না।
রবিবার লুসেইল স্টেডিয়ামে ফাইনালে আর্জেন্টিনা ফ্রান্সকে পেনাল্টিতে ৪-২ গোলে পরাজিত করার ফলে ফুটবলের সর্বোচ্চ ট্রফি অর্জন তাকে তার ক্যারিয়ারে উচ্চতাকে আরও বাড়িয়েছে।
ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে ৩-৩ ব্যবধানে শেষ হয় মেসি দুবার গোল করে এবং শুটআউটে তার পেনাল্টিতে রূপান্তর করে।
৩৫ বছর বয়সে এটি সম্ভবত ফুটবলের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টে তার শেষ উপস্থিতি। তবে ম্যাচ জয়ের পরে নিশ্চিত করেছেন যে তিনি আরও খেলতে চান।
মেসি বলেছেন, ‘অবশ্যই আমি এটি দিয়ে আমার ক্যারিয়ার শেষ করতে চেয়েছিলাম, (আমি) এর বেশি কিছু চাইতে পারি না।’ ‘এভাবে আমার ক্যারিয়ার শেষ করা চিত্তাকর্ষক। এর পরে, আর কী? আমার একটি কোপা আমেরিকা, একটি বিশ্বকাপ আছে। প্রায় শেষের দিকে।
‘আমি ফুটবল ভালবাসি, আমি যা করি। আমি জাতীয় দল, গ্রুপের অংশ হতে উপভোগ করি। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য আমি আরও কয়েকটি ম্যাচ উপভোগ করতে চাই।’
সাতবার বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের ব্যালন ডি’অর পুরস্কার জিতেছেন মেসি।
আরও পড়ুন: এমবাপ্পে বিশ্বকাপের মহাকাব্যে চমক, শেষ পর্যন্ত হার
প্রাক্তন ক্লাব বার্সেলোনার হয়ে চারবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগও জিতেছেন, তবে বিশ্বকাপই খেলার সবচেয়ে বড় পুরস্কার।
আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি বলেন, ‘যদি সে খেলা চালিয়ে যেতে চায়, তাহলে সে আমাদের সঙ্গে থাকতে পারে, সে আমাদের সঙ্গে থাকতে চায় কিনা সে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার তার বেশি।’ ‘তাকে কোচ করাটা অনেক আনন্দের, সে তার দলে যা কিছু প্রেরণ করে তা অতুলনীয়। এটা এমন কিছু যা আমি আগে কখনো দেখিনি।’
মেসি পেনাল্টি স্পট থেকে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে রাখেন এবং অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার গোলে ভূমিকা রাখেন যা ৩৬ মিনিট পরে ২-০ গোলে এগিয়ে যায়।
এমবাপ্পে ৯৭ সেকেন্ডের ব্যবধানে দু’টি গোল করে খেলাকে অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যান।
১০৮তম মিনিটে মেসি আর্জেন্টিনাকে সামনে ফিরিয়ে আনেন, কিন্তু ১১৮তম মিনিটে প্যারিস সেন্ট-জার্মেই তারকা এমবাপ্পের পেনাল্টিটি ৫৬ বছরের মধ্যে বিশ্বকাপের ফাইনালে প্রথম হ্যাটট্রিক সম্পূর্ণ করেছিলেন।
মেসি বলেছিলেন, ‘কেবল পাগলামিতে এইভাবে এটি বাস্তবে পরিণত হয়েছে। আমি এজন্য অনেক প্রার্থনা করেছি। আমি জানতাম যে ঈশ্বর আমার জন্য এই উপহারটি আনবেন, আমার অনুভূতি ছিল যে এটি (বিশ্বকাপ) ছিল।’ ‘এতে এত সময় লেগেছিল, কিন্তু এখানেই। আমরা অনেক কষ্ট পেয়েছি, কিন্তু আমরা এটি করতে পেরেছি।’
আরও পড়ুন: মেসির ভাগ্য পূরণ, তৃতীয় বিশ্বকাপ জিতল আর্জেন্টিনা
কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২: স্বপ্নের শিরোপা জয়ী মেসির আর্জেন্টিনা
মেসির ভাগ্য পূরণ, তৃতীয় বিশ্বকাপ জিতল আর্জেন্টিনা
লিওনেল মেসির এক প্রজন্মের ক্যারিয়ারের সমাপ্তি। আর্জেন্টিনা সুপারস্টার অবশেষে হলেন বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন।
কিলিয়ান এমবাপ্পে ৫৬ বছরের মধ্যে ফাইনালে প্রথম হ্যাটট্রিক করলেও মেসি দু’টি গোল এবং তারপরে আরেকটি শ্যুটআউটে গোল করেন।
এখন আর কোনো বিতর্ক নেই। মেসি নিশ্চিতভাবে ফুটবলের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়দের মধ্যে রয়েছেন, পেলের সঙ্গে – ব্রাজিল থেকে রেকর্ড তিনবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন - এবং দিয়েগো ম্যারাডোনা, প্রয়াত আর্জেন্টিনা গ্রেট, যার সঙ্গে মেসির তুলনা করা হত।
ম্যারাডোনা ১৯৮৬ সালে যা করেছিলেন তা অর্জন করলেন মেসি এবং আর্জেন্টিনার হয়ে একটি বিশ্বকাপ জয় করলেন। মশালটি একদিন এমবাপ্পের কাছে চলে যাবে, যার শেষ সময়ের করা গোলগুলো টুর্নামেন্টের ৯২ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে নাটকীয় ফাইনালগুলোর একটিকে আলোকিত করেছিল এবং ১৯৬৬ সাল থেকে তাকে ফাইনালে হ্যাটট্রিকের প্রথম স্কোরার বানিয়েছিল, তবে এখনও নয়।
‘চল যাই, আর্জেন্টিনা!’ ম্যাচ-পরবর্তী উদযাপনে মাঠে মাইক্রোফোনে গর্জন করেন মেসি।
আরও পড়ুন: কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২: স্বপ্নের শিরোপা জয়ী মেসির আর্জেন্টিনা
কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২: মেসি-ডি মারিয়ার জোড়া গোলে ২-০ তে এগিয়ে আর্জেন্টিনা
লিওনেল মেসি ম্যাচের ২৩ তম পেনাল্টিতে গোল করে ফ্রান্সের বিপক্ষে আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন। বিশ্বকাপে এটি মেসির ১২তম গোল। এরমধ্য দিয়ে মেসি আসরের সর্বোচ্চ ছয় গোল করে গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে এগিয়ে গেছেন।
এরপর খেলার ৩৬ মিনিটে অসাধারণ একটি গোল করে ফ্রান্সের বিপক্ষে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে নেন ডি মারিয়া।
আরও পড়ুন: রোমাঞ্চকর সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পর্দা নামছে কাতার বিশ্বকাপের
গ্রুপ পর্বের শেষ রাউন্ডে পোল্যান্ডের বিপক্ষে পায়ে চোট পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো আজ খেলতে নেমেছেন ডি মারিয়া।
ফ্রান্সের মতো আর্জেন্টিনাও এবার তৃতীয় বিশ্বকাপ প্রত্যাশী। এবছর আর্জেন্টিনা শিরোপা জিতলে তাদের ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটবে।
১৯৮৬ সালে মেক্সিকোতে ম্যারাডোনার স্ট্রিং অব ভার্চুওসো পারফরম্যান্স তাকে চিরকালের জন্য আর্জেন্টিনার একজন নায়ক এবং ফুটবল বিশ্বে একজন আইকন করে তুলেছে।
আরও পড়ুন: কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২: আর্জেন্টিনা ও ফান্সের শিরোপার লড়াই
আর্জেন্টিনা বনাম ফ্রান্স ফিফা বিশ্বকাপ ফাইনাল ২০২২: শীর্ষ তারকা খেলোয়াড় কারা
লিওনেল মেসি: দরিদ্রতা, রোগ আর প্রতিকূলতা জয় করে আজ মহানায়ক
১৩ বছর বয়সী মেসি একটা ইউজ ন্যাপকিনে বার্সেলোনার সঙ্গে তার প্রথম কন্ট্রাক্ট সাইন করেন। কারণ তিনি এতটাই উৎসাহিত ছিলেন যে তিনি চেয়েছিলেন ডিনারটা শেষ হওয়ার আগেই যেন তাকে সাইন করিয়ে নেয়া হয়। যে কারণে স্পোর্টিং ডিরেক্টর কার্লস রেসজ্যাগ তখনই সেস্টুর্যান্ট এর ওয়েটারকে ডাক দেন।
তার কাছ থেকে একটা ন্যাপকিন নিয়ে তাতে একটা কন্ট্রাক্ট লিখে ফেলেন। যে ন্যাপকিনটা এখন মেসির উকিলের অফিসে ঝোলানো রয়েছে। যেটাকে বর্তমানে মোস্ট সেলিব্রেটেড পেপার ন্যাপকিন হিসেবে গণ্য করা হয়। ইতিহাস রচনার সূচনাটা হয়েছিল টিস্যু পেপারে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তির মাধ্যমে। কে জানত, ওই টিস্যু পেপারের মাধ্যমে হওয়া এক চুক্তি একদিন ফুটবল ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়ে থাকবে।
ভিনগ্রহের প্লেয়ার বা রেকর্ড এর বরপুত্র যে নামেই ডাকুন না কেন, বর্তমান বিশ্বের সবথেকে বিধ্বংসী ও ট্যালেন্টেড ফুটবলার – লিওনেল আন্দ্রেস মেসি। ত্রিশ বছর বয়সেই মেসি যে পরিমাণ এবং যে মাপের রেকর্ড এর মালিক তা কেবল ভিনগ্রহের কারও পক্ষেই সম্ভব।
নিজের শেষ বিশ্বকাপে শিরোপার অন্যতম দাবিদার হিসেবে বিশ্বকাপ খেলতে নেমে শুরুতেই বড় হোঁচট। সৌদি আরবের বিপক্ষে অঘটনের হারের পর গ্রুপপর্বেই বিদায়ের শঙ্কা জেঁকে বসেছিল। সেখান থেকে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে একের পর এক বাঁচা-মরার লড়াই পেরিয়ে, এখন সোনালি ট্রফিটা থেকে নিঃশ্বাস দূরত্বে মেসির আর্জেন্টিনা।
আমাদের মধ্যে খুব কম মানুষই হয়তো এটা জানেন যে মাত্র ১১ বছর বয়সে মেসির গ্রোথ হরমোন ডেফিসিয়েন্সি রোগ ধরা পড়ে। লোকাল পাওয়ার হাউস, রিভার প্লেট তার প্রগ্রেস এর প্রতি ইন্টারেস্টেড ছিল। কিন্তু তারা তার চিকিৎসার জন্য প্রতিমাসে জরুরি ৯০০ ডলার খরচ করতে রাজি ছিল না। কার্লস রেসজ্যাগ যিনি সেই সময় এফ সি বার্সেলোনার স্পোটিং ডিরেক্টর ছিলেন। সৌভাগ্যবশত মেসির ট্যালেন্ট সম্পর্কে তিনি অবগত হন। কারণ ওয়েস্টার্ন ক্যাটালোনিয়া লিডাতে তার কয়েকজন আত্মীয় ছিলেন। যার ফলে মেসি ওতার বাবা এফ সি বার্সেলোনা টিমের সঙ্গে একটা ট্রায়াল অ্যারেঞ্জ করতে সফল হন।
আরও পড়ুন: মেসি-আলভারেজ জাদুতে ৩-০ গোলে ফাইনালে আর্জেন্টিনা
এক সাক্ষাতকারে মেসি বলেন, “টাকা আমার কাছে কোনদিনই অনুপ্রেরণাদায়ক ছিল না। টাকা আমাকে কোনদিনই অনুপ্রেরণা যোগায় না। আমাকে আরও ভালো খেলতে কোনোভাবেই উৎসাহিত করে না। আমি শুধুমাত্র আমার পায়ে একটা ফুটবল থাকলেই খুশি। আমার অনুপ্রেরণা আসে খেলাটা থেকে, যে খেলাটাকে আমি এতটা ভালবাসি। যদি আমি একজন প্রফেশনাল ফুটবলার নাও হতাম, তাও আমি কোন কিছু ছাড়াই সারা জীবন ফুটবল খেলে যেতাম।”
মেসি অন্যান্য গ্রেট ফুটবলারদের মত অতটা লম্বাও নন, অতটা স্বাস্থ্যও ভালো না। কিন্তু তবুও লিও মেসি সারাবিশ্বের সামনে একটা জলজ্যান্ত উদাহরণ হিসেবে গিয়ে এসেছেন। প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, শুধুমাত্র স্বাস্থ্য শরীরই না সেটা ছাড়াও যেটা অনেক বেশি জরুরি তা হল অদম্য মানসিক শক্তি।
মেসিকে অনেক কিছু স্যাক্রিফাইস করতে হয়েছিল যখন মেসি আর্জেন্টিনা ছেড়ে, পরিবার ছেড়ে একটা নতুন জীবন শুরু করার উদ্দেশ্যে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু মেসি যা কিছু করেছিলেন শুধুমাত্র ফুটবলের জন্য। মেসির স্বপ্নকে পূরণ করতে।
এই কারণেই আমি অত বেশি পার্টি বা অন্যান্য মজার জিনিস গুলো করে বেড়াই না। এখনো পর্যন্ত তার সব থেকে বেশি আবেগপ্রবণ সাক্ষাৎকারে বার্সেলোনার সেই ছোট তারকাটি বলেছিলেন, যে ঠিক কতটা কষ্ট সহ্য করেও তিনি তার পরিবারকে ছেড়ে, সমস্ত বন্ধুদেরকে ছেড়ে, সমস্ত ইনভাইটেশনকে না করে সে বিদেশ চলে এসেছিল একটা নতুন জীবন শুরু করতে।
এত ছোট বয়সেও তিনি এত বড় একটা ডিসিশন নিয়েছিল। কারণ একদম ছোটবেলা থেকেই তার লক্ষ্য সম্পূর্ণ পরিষ্কার ছিল। সে সব দিনই চেয়েছিল একজন মহান ফুটবলার হতে। আর অন্য কোনো কিছুই তার কাছে তার জীবনে কোনদিনই এর থেকে বেশি মূল্যবান ছিল না।
আরও পড়ুন: লিওনেল মেসি: দুনিয়া কাঁপানো ফুটবলার হয়ে উঠার সচিত্র গল্প
বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড মেসির দখলে
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গোল করার মাধ্যমে ফুটবল বিশ্বকাপে ১১ গোল হলো লিওনেল মেসির। এর মাধ্যমে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে ছাড়িয়ে আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড নিজের দখলে নিলেন তিনি। বিশ্বকাপে বাতিস্তুতার গোল ১০টি।
তাছাড়া ফুটবল বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ (২৫টি) খেলার রেকর্ডেও জার্মানির লোথার ম্যাথিউসের পাশে নাম লিখিয়েছেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামার মধ্য দিয়ে মেসি ছাড়িয়ে গেছেন জার্মানির মিরোস্লাভ ক্লোসাকে। ক্লোসা বিশ্বকাপে খেলেছেন ২৪ ম্যাচ।
সাত ব্যালন ডি’অর জয়
লিওনেল মেসি তার ক্যারিয়ারে ব্যালন ডি’অর জিতেছেন সাতবার। ব্যালন ডি’অর জেতার দিক থেকে মেসির চেয়ে এগিয়ে আর কেউ নেই।
সবচেয়ে বেশি গোল্ডেন শু জয়ী
ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি বর্ষসেরা হওয়ার কীর্তি মেসির। এক মৌসুমে ইউরোপে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডটাও তার। ক্যারিয়ারে ছয়বার তিনি জিতেছেন এ ট্রফি। ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯–এই তিন বছর টানা তিনটি গোল্ডেন শু জিতেছিলেন তিনি।
এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ গোল
শেষ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে মেসি খেলে যাচ্ছেন সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা দিয়ে। তবে ২০১২ সালটাকে মেসির জন্য আলাদা করে রাখতেই হবে। সে বছর মেসির গোলের বাঁধ যেন ভেঙেই গিয়েছিল।
এক ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোল
লিওনেল মেসি গত বছর বার্সেলোনা ছেড়ে যোগ দিয়েছেন ফরাসি ক্লাব পিএসজিতে। তবে তার আগে মেসি ১৭ বছর বার্সেলোনার হয়ে যা করেছেন, তা হয়তো কেউ আর করে দেখাতে পারবে না। বার্সেলোনার জার্সি গায়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তিনি করেছেন ৬৭২ গোল। এক ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় তার ধারেকাছে কেউ নেই।
আমরা তাকে নিয়ে অনেক কিছু বলেছি। খবরের কাগজের হেডলাইনে তাকে অবিশ্বাস্য, অতুলনীয়, অদ্বিতীয়, আশ্চর্য থেকে শুরু করে মেসি হলেন ফুটবলের ভগবান। এই অব্দিও বলা হয়েছে। এক্স বাসেলোনা কোচ পেপ গোর্ডেলিও একবার বলেছিলেন, “তার ব্যাপারে কিছু লিখে লাভ নেই। তাকে বর্ণনা করার চেষ্টা করাও বৃথা। শুধু তার খেলাটা দেখুন। আর উপভোগ করুন।”
আরও পড়ুন: বাঁচা-মরার লড়াইয়ে মেক্সিকোর মুখোমুখি মেসির আর্জেন্টিনা
মেসি-আলভারেজ জাদুতে ৩-০ গোলে ফাইনালে আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনা সমর্থকদের একটাই চাওয়া, আর তা হল লিওনেল মেসি এবারের বিশ্বকাপ ট্রফি ঘরে তুলবে। দীর্ঘদিনের জমকালো ক্যারিয়ারে তার বিশ্বকাপ খরা আছে তা মেটানো যে খুব প্রয়োজন, ফুটবল ভক্তরা মোটামুটি সবাই চান। সে যাত্রায় অনেকটাই এগিয়ে তিনি। সেমিফাইনাল ম্যাচে ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে ফাইনালে উঠেছেন মেসিরা।
আর মাত্র একটি ম্যাচ। ফাইনালে জয় মানেই মেসির ১৬ কলা পূর্ণ। না পাওয়ার তালিকা হয়তো সেখানেই থেমে যাবে। তবে ফাইনালে প্রতিপক্ষ কে হবে তা জানার জন্য বুধবার দিবাগত রাতের ফ্রান্স ও মরক্কের ম্যাচের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। যদিও ফাইনাল সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপট, তবুও আর্জেন্টাইনরা যে সর্বোচ্চই দিবেন তাতে আজকের ম্যাচের পর ভক্তদের মাঝে থাকছে না সন্দেহের কোনো অবকাশ।
আরও পড়ুন: ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২: মেসির গোলে মেক্সিকোর বিপক্ষে ২-০ গোলে আর্জেন্টিনার জয়
লুসাইল স্টেডিয়ামে ১৪ তারিখের ম্যাচের তারকা হচ্ছেন লিওনেল মেসি ও হুলিয়ান আলভারেজ। পেনাল্টি থেকে ৩৪ মিনিটে প্রথম গোল করেন মেসি। আলভারেজ যোগ্য প্রমাণই দিয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে। মেসির গোলের একটু পরেই ৩৯ মিনিটে অনেকটা নিজের প্রচেষ্টায় গোল করেন তিনি। ম্যাচের অর্ধেকের আগেই যখন স্কোরে ব্যবধান, তখন আর্জেন্টিনার ভক্তরা অনেকটাই স্বস্তিবোধ করতে শুরু করেন। ৬৯ মিনিটে যখন মেসির পাস থেকে আলভারেজ আরেকটি গোল করলেন এবং ক্রোয়েশিয়া একটিও দিতে পারেনি, তখন ম্যাচ মোটামুটি নিশ্চিত। হয়েছেও তাই। বাঁশি বাজার আগ পর্যন্ত ৩-০। আর্জেন্টিনার জয়। ফাইনালে মেসিরা।
তবে পরিসংখ্যান কিছুটা ভিন্ন বলছে। ১২টি শট নিয়েও গোল করতে পারেনি। তবে আর্জেন্টিনার শট ছিল ৯টি। তবে মেসিদের শট টার্গেটে ছিল সাতটি। আর ক্রোয়েশিয়ার মাত্র দুইটি। বলের দখল, পাস, পাসের নির্ভুলতা – সবকিছুতেই ক্রোয়েশিয়া এগিয়ে থাকলেও জয় মেসিদের।
আরও পড়ুন: লিওনেল মেসি: দুনিয়া কাঁপানো ফুটবলার হয়ে উঠার সচিত্র গল্প
ফিফা বিশ্বকাপ কাতার ২০২২: ট্রাইব্রেকারের ৪-৩ স্কোরে ডাচদের হারিয়ে মেসিরা সেমিফাইনালে
লিওনেল মেসি: দুনিয়া কাঁপানো ফুটবলার হয়ে উঠার সচিত্র গল্প
শুধু আর্জেন্টিনাবাসী নয়, সারাবিশ্বের ফুটপ্রেমীদের কাছের আরাধ্য নাম লিওনেল মেসি। যার জন্মই হয়েছে ফুটবল জাদু দেখানোর জন্য। দুনিয়া কাঁপানো এই ফুটবলারের জীবনগল্প সচিত্রে তুলে ধরা হলো।
লিওনেল মেসির এই সচিত্র জীবনগল্প উঠে এসেছে ওয়েব পোর্টাল এমএসএন-এ।
ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২: মেসির গোলে মেক্সিকোর বিপক্ষে ২-০ গোলে আর্জেন্টিনার জয়
লিওনেল মেসির গুরুত্বপূর্ণ গোলে মেক্সিকোর বিপক্ষে ২-০ স্কোরে আর্জেন্টিনার জয় বিশ্বকাপের সম্ভাবনা এখনও টিকিয়ে রেখেছে।
মেসি যে শুধু গুরুত্বপূর্ণ গোল করেছেন তা-ই নয়, তার পাস থেকেই ম্যাচের শেষ দিকে এনজো ফার্নান্দেসের গোল দলটির জয় নিশ্চিত করে।
লুসাইল স্টেডিয়ামের ম্যাচটি বিশ্বকাপ সম্ভাবনা টিকিয়ে রেখেছে কারণ, এই পর্বের শেষ খেলায় পোল্যান্ডের বিপক্ষে মেসিদের জয় সুযোগ তৈরি করে দিবে পরের পর্বে খেলার। তবে ড্র করলেও কাগজে-কলমে হিসাবে সুযোগ থেকে যাবে তাদের।
সৌদি আরবের সঙ্গে ২-১ গোলে হারের পর এই ম্যাচ ছিল আর্জেন্টিনার ফিরে আসার লড়াই। গ্রুপ-সি তে দলটি এখন দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। বুধবার পোল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে আর্জেন্টাইনরা।
আরও পড়ুন: কেমন হলো ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ দল, কার হাতে উঠবে ট্রফি?
সম্ভবত ৩৫ বছর বয়সী মেসির এটিই শেষ বিশ্বকাপ। অসংখ্য অর্জনের মাঝে শুধু বিশ্বকাপ জয়টিই এখনও ঘরে তুলতে পারেননি তিনি।
মেক্সিকোর বিপক্ষে ৬৪ মিনিটে মেসির শর্ট তার ঝুড়িতে বিশ্বকাপে ৮টি গোল এনে দেয়। এখন পর্যন্ত এই অর্জন রয়েছে আরও দুইজনের। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এবং হরহামেশাই মেসিকে যার সঙ্গে তুলনা করা হয়- ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এবং হরহামেশাই।
পেলে, ম্যারাডোনার বিশ্বকাপ জয়ের ক্লাবে প্রবেশ করতে এবারের বিশ্বকাপ জয় বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। সে যাত্রায় ম্যাচটি সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রেখেছে।
আরও পড়ুন: কাতার বিশ্বকাপ ২০২২: সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে আর্জেন্টিনার পরাজয়
গোলটি করার আগে ম্যাচটি মেসির জন্য বেশ হতাশাজনক ছিল। তিনি যতবার বল পেয়েছেন পাশাপাশি তাকে আটকানো জন্য পেয়েছেন দুইজন ডিফেন্ডার।
আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি সৌদি আরবের খেলার পর দলে আনেন পাঁচ পরিবর্তন। উদ্দেশ্য ছিল দলকে আরও শক্তিশালী করার। কিন্তু এই পরিবর্তন শুরুর দিকে সামান্যই পার্থক্য করতে পেরেছে। ম্যাচের ছন্দ সম্পূর্ণ ফিরে আসে মেসির গোলের পর। এবারের বিশ্বকাপে মেসির এটি দ্বিতীয় এবং আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৯৩ তম গোল।
আরও পড়ুন: বাঁচা-মরার লড়াইয়ে মেক্সিকোর মুখোমুখি মেসির আর্জেন্টিনা
বাঁচা-মরার লড়াইয়ে মেক্সিকোর মুখোমুখি মেসির আর্জেন্টিনা
বিপর্যয়কর উদ্বোধনী ম্যাচের পর ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই এবার আর্জেন্টিনার। জেতার প্রত্যয় নিয়ে শনিবার গ্রুপ সি এর প্রতিপক্ষ মেক্সিকোর বিপক্ষে মাঠে নামবে লিওনেল মেসির দল। কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।
২০১৯ সালের কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের কাছে হেরে যাওয়ার পর থেকে আর্জেন্টিনা টানা ৩৬ ম্যাচে অপরাজিত থেকে দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে রেকর্ড গড়েছিল।
তবে সমস্ত জল্পনা নস্যাৎ করে এবারের কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ- ২০২২ অভিযানের শুরুতেই লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা সৌদি আরবের কাছে লজ্জার হার হারে।
ওই ম্যাচের প্রথমার্ধে পরিস্থিতি আর্জেন্টিনার নিয়ন্ত্রণে আছে বলে মনে হলেও পরপর তিনটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হওয়ায় শেষ পর্যন্ত সৌদি আরবের কাছে ধরাশায়ী হয় এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট হিসেবে গণ্য হওয়া আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয়ার্ধে সৌদি আরবের পরপরই দুটি গোল ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেয় নিমিষেই। এর মধ্য দিয়ে গ্রুপ সি-পর্বের আন্ডারডগরা এমন একটি রেকর্ড করে, যা যুগে যুগে প্রতিধ্বনিত হবে।
আরও পড়ুন: আর্জেন্টিনা বনাম মেক্সিকো লাইভ স্ট্রীমিং: কোথায় কিভাবে দেখবেন ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ কাতার ২০২২
১৯৮৬ সালে তাদের সর্বশেষ বিশ্বকাপ জয়ের পর প্রায় ৪০ বছরের কাছাকাছি এসে জেতার জন্য এবারে আর্জেন্টিনা এমনিতেই চাপের মধ্যে ছিল। বিশেষ করে এবার শতাব্দীর অন্যতম সেরা কিংবদন্তী ফুটবলার মেসির শেষ বিশ্বকাপ।
তাই, স্কালোনিকে অবশ্যই দ্রুত তার সেনাদের জাগাতে হবে, যাতে আজকের ম্যাচে তারা তাদের সেরাটা খেলে মেক্সিকো হারাতে পারে।
পরিসংখ্যান যদিও আর্জেন্টিনার পক্ষে, তবুও মেক্সিকো এখন স্ট্যান্ডিংয়ে আর্জেন্টিনার এক পয়েন্ট ওপরে অবস্থান করছে।
পরিসংখ্যানই যে শেষ কথা না তা ইতোমধ্যে কাতার বিশ্বকাপের হাইভোল্টেজ কয়েকটি ম্যাচে প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্ব এখন দেখার জন্য মুখিয়ে আছে সৌদির কাছে খাওয়া ধাক্কার পর, এবার কি করবে আর্জেন্টিনা।
অন্যদিকে, ২০২২ সালের কাতার ফুটবল বিশ্বকাপের উদ্বোধনী সপ্তাহে বেশ কয়েকটি গোলশূন্য অচলাবস্থার মধ্যে গত মঙ্গলবার মধ্য আমেরিকার প্রতিপক্ষ পোল্যান্ডের সঙ্গে ০-০ ড্র করে টাটা মার্টিনোর মেক্সিকো।
মেক্সিকোর সঙ্গে এ পর্যন্ত মোট ৩০ ম্যাচ খেলেছে আর্জেন্টিনা। এর মধ্যে ১৫ ম্যাচ জিতেছে আর্জেন্টিনা। ৪ ম্যাচ জিতেছে মেক্সিকো ও বাকি ১১ ম্যাচ ড্র হয়েছে। দুই দলের মুখোমুখি হওয়া ৩০ ম্যাচের মধ্যে ৩টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশ্বকাপে।
আর্জেন্টিনা–মেক্সিকো মুখোমুখি হওয়ার ইতিহাসে প্রথম ম্যাচটিই বিশ্বকাপে।
টানা অষ্টম বিশ্বকাপে উপস্থিত হওয়া মেক্সিকানরা তাদের শেষ সাতটি প্রচেষ্টার প্রতিটিতে শেষ ১৬-এ বাদ পড়েছে।
আর্জেন্টিনার সম্ভাব্য লাইনআপ:
ই. মার্টিনেজ, মন্টিয়েল, রোমেরো, লি মার্টিনেজ, তাগলিয়াফিকো; ডি পল, পেরেদেস, ফার্নান্দেজ; মেসি, লা মার্টিনেজ, ডি মারিয়া
মেক্সিকো সম্ভাব্য শুরু লাইনআপ:
গিয়ের্মো ওচোয়া, সানচেজ, মন্টেস, মোরেনো, গ্যালার্দো; হেরেরা, আলভারেজ, গুয়ার্দাদো; লোজানো, মার্টিনো, ভেগা
আরও পড়ুন: কাতার বিশ্বকাপ ২০২২: সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে আর্জেন্টিনার পরাজয়
কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২: প্রথমার্ধে মেসির গোলে ১-০ গোলে এগিয়ে আর্জেন্টিনা