প্রধানমন্ত্রী
‘পদ্মা সেতু সৌদি কোম্পানিসহ আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের চোখ খুলে দেবে’
ঢাকায় সৌদি রাষ্ট্রদূত সোমবার বলেছেন, বাংলাদেশকে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে পদ্মা সেতু সৌদি কোম্পানিসহ আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের চোখ খুলে দিতে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত এসা ইউসুফ এসা আল দুহাইলান সাংবাদিকদের বলেন, `পদ্মা সেতু নির্মাণে স্ব-অর্থায়নের বৈপ্লবিক পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করি।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অন্যতম উল্লেখযোগ্য অর্জন যা জনগণের স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করেছে।
বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত মেগা প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের ঐতিহাসিক দিনটি সামনে রেখে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার তথা বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু প্রকৃত গেম চেঞ্জার: রাশিয়া
এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত দুহাইলান বলেন, সৌদি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশকে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসাবে দেখছে এবং এ লক্ষ্যে শিগগিরই কিছু দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে একটি অনন্য প্রকল্প এবং এটি বাংলাদেশকে ভবিষ্যতে চিন্তা করতে এবং আরও অবকাঠামো গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। এটি বাংলাদেশকে উচ্চ অবস্থানে নিয়ে যাবে।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সার্বিক নিরাপত্তা পরিবেশের প্রশংসা করেন যা তিনি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই অনুকূল বলে মন্তব্য করেছেন।
সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার প্রমাণ করেছেন যে তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। তার দূরদর্শী ভাবনা দেশের অর্থনীতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
রাষ্ট্রদূত দুহাইলান বলেন, দেশের অর্থনীতিকে ট্র্যাকে রাখার জন্য তার দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা অসাধারণ।
আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু উদ্বোধন নিয়ে কোনো উৎসব করছে না সরকার: তথ্যমন্ত্রী
শত বিপত্তি পেরিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা চীনের
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে মমতাকে পাঠানো হলো ১ টন হাড়িভাঙ্গা আম
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা উপহার হিসাবে এক টন হাড়িভাঙ্গা আম পাঠানো হয়েছে।
সোমবার বেলা ১২টার দিকে বেনাপোল স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি গেট দিয়ে এক টন হাড়িভাঙ্গা আম (২০০ কার্টুন) হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নাভারন সার্কেল পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ণ চন্দ্র পাল, বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার তানভীর আহমেদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা ইসলাম, বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবির তরফদারসহ স্থানীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
আরও পড়ুন: ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর জন্য আম পাঠালেন শেখ হাসিনা
ভারতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পুলিশের ডিআইজি সুকেশ জেল, কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার শেখ মারেফাত তরিকুল ইসলাম, প্রটোকল অ্যাসিস্ট্যান্ট আজিজুল আলম ও মি. এস কে ইমাদ।
কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার শেখ মারেফাত তরিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বি-পক্ষীয় সম্পর্কের যে সোনালী অধ্যায় পার হচ্ছে তারই অংশ হিসাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারও কলকাতার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা উপহার হাড়িভাঙ্গা আম পাঠিয়েছেন। এর মাধ্যমে দু’দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে আমরা আশা করি।
তিনি আরও বলেন, এ শুভেচ্ছা উপহারে দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে অনেক বড় ভূমিকা রাখবে।
বুধবার সংবাদ সম্মেলন করবেন প্রধানমন্ত্রী: পিএমও
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানানো হয়েছে।
পিএমও প্রেস উইং থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সকাল ১১টায় তার কার্যালয়ে (পিএমও) সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তবে সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সংবাদ সম্মেলনের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে দেশের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি এবং ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার উত্তরাঞ্চলের বন্যার ভয়াবহতা পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের মেয়াদ ২ বছর বাড়ল
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব হিসেবে ইহসানুল করিমের মেয়াদ আরও দুই বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে।
রবিবার এ বিষয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়েছে, ইহসানুল করিমের চাকরির চুক্তির মেয়াদ চলতি বছরের ১৮ জুন বা যোগদানের তারিখ থেকে দুই বছর বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: আশরাফুল আলম খোকন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব
রাষ্ট্রপতির সাবেক প্রেস সচিব ইহসানুল করিমকে ২০১৫ সালের ১৫ জুন প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় এবং এরপর ২০১৬ সালের ১৬ জুন ও ২০১৯ সালের ১৮ জুন তিন বছর করে মেয়াদ বাড়ানো হয়।
এর আগে তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক ছিলেন।
পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে দ্রুত সহায়তা করার ক্ষেত্রে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য স্বর্গীয় আশীর্বাদ হিসাবে আসবে।
তিনি বলেন,আগামী ২৫ জুন আমরা পদ্মা সেতু খুলে দেব। আমি মনে করি, উদ্বোধনটি আল্লাহর রহমত হিসাবে আসবে। আমরা দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা, পণ্য পরিবহন, বন্যা মোকাবিলা এবং বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সক্ষম হব। আমরা তাদের সাহায্য করার জন্য একটি বড় সুযোগ পাব।
রবিবার নিজ কার্যালয়ে ২০২১ সালের সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলা জাতীয় ফুটবল দলের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কখা বলেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বানচালের ষড়যন্ত্র নস্যাতে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকুন: প্রধানমন্ত্রী
রাজধানীতে ১৪ দলের সমাবেশ শনিবার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য ও প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে শনিবার রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট।
বিকাল ৩টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ শুরু হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু।
শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাদের অশালীন মন্তব্য ও প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে ক্ষমতাসীন জোটের কেন্দ্রীয় কমিটি এ সমাবেশের আয়োজন করছে।
আরও পড়ুন: আমুই হলেন ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র
১৪ দল সংহত করতে নাসিমের ভূমিকা ছিল অনন্য: তথ্যমন্ত্রী
ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর জন্য আম পাঠালেন শেখ হাসিনা
ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উপহার হিসেবে এক মেট্রিক টন আম্রপালি আম পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আম পাঠানো হয়েছে।
গত বছরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসামের মুখ্যমন্ত্রীদের উপহার হিসেবে আম পাঠিয়েছিলেন।
উন্নত দেশে পরিণত হতে জাপানের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করার রূপকল্প বাস্তবায়নে জাপান ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে জাপান ও জাইকা আমাদের সঙ্গে থাকবে।’
বাংলাদেশ ও জাইকার মধ্যে সহযোগিতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠান উপলক্ষে বৃহস্পতিবার প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: দক্ষিণাঞ্চল আর অবহেলিত থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করার জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই ২০২৬ সালে একটি উন্নয়নশীল দেশে স্নাতক হওয়ার স্বীকৃতি পেয়েছে।
২০১৪ সালে জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, উভয় দেশ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে।
শেখ হাসিনা বলেন, “বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করতে আমরা ‘জাপান-বাংলাদেশ সমন্বিত অংশীদারিত্ব’ চালু করেছি। আমাদের ব্যাপক অংশীদারিত্ব এখন অদূর ভবিষ্যতে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হওয়ার জন্য প্রস্তুত।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও জাপান সেই মূল্যবোধ ও অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে সম্পর্ক বজায় রেখেছে এবং এগিয়ে চলেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি আন্তরিকতা, বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা দীর্ঘস্থায়ী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রধান মানদণ্ড।’
আরও পড়ুন: মেগা প্রকল্প অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় থেকে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধে জাপান ও দেশটির জনগণের অমূল্য সমর্থন ও অবদানের জন্য আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে টোকিওতে তার প্রথম সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও জাপানের সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্বীকার করি যে জাপান আমাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু ও একক বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী।’
দক্ষিণাঞ্চল আর অবহেলিত থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী ২৫ জুন বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর দেশের দক্ষিণাঞ্চল আর অবহেলিত থাকবে না।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আর কোনো সমস্যা হবে না... তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হবে। তারা তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য আরও উন্নত জীবনযাপন করতে সক্ষম হবে।’
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রংপুরে পল্লী জনপদ এবং গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় 'বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বাপার্ড)'-এর পল্লী উন্নয়নের জন্য নবনির্মিত দুটি প্রশিক্ষণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
দক্ষিণাঞ্চল বরাবরই অবহেলিত, তবে পদ্মা সেতু সেখানে শিল্প বিকাশে সহায়তা করবে বলে এটিকে আর উপেক্ষা করা হবে না।
তিনি বলেন, তার সরকার ইতোমধ্যে এলাকাটিকে বিদ্যুৎ নেটওয়ার্কের আওতায় এনেছে এবং সেখানে অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ আরও উন্নত করছে।
‘আমরা, দক্ষিণাঞ্চল বা পদ্মা নদীর তীরবর্তী মানুষ সবসময়ই অবহেলিত এবং দারিদ্র্য আমাদের জীবনের একটি নিয়মিত বৈশিষ্ট্য। কিন্তু এটা (দারিদ্র) আর থাকবে না,’ বলেন তিনি।
আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা দেশের জনগণকে এর জমকালো উদ্বোধন উদযাপন করতে বলেছেন। কারণ শক্তিশালী নদীর ওপর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার ডাবল ডেক রোড-রেল সেতু নির্মাণ একটি বিষয় ছিল। বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, ‘শুধু পদ্মার তীরে নয়, সারা বাংলাদেশেও এটি উদযাপন করুন। আমি চাই উৎসবটি প্রতিটি জেলায় অনুষ্ঠিত হোক। কারণ এটি আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগে অনেকেই মনে করতেন পদ্মা নদীর ওপর পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পারবে না সরকার।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিদ্রুপ করে তিনি আবারও বলেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ হয়ে গেছে এমন একজন ব্যক্তির কারণে, যিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বোচ্চ সুযোগ পেলেও বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।
অনুষ্ঠানে গোপালগঞ্জ থেকে যোগ দেন এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মশিউর রহমান।
কুমিল্লায় বার্ড এবং বগুড়ায় আরডিএ-এর মতো, দুটি নতুন বহুতল ইনস্টিটিউট গ্রামীণ উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে এবং মডেল প্রোগ্রাম তৈরি করবে।
সচিব তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন ও গ্রামীণ উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রকল্পের আওতায় আরও তিনটি বিভাগে আরও তিনটি ইনস্টিটিউট নির্মাণের কাজ চলছে।
আরও পড়ুন: মেগা প্রকল্প অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে না: প্রধানমন্ত্রী
আ’লীগ সব সময় নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করে: প্রধানমন্ত্রী
ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর জোর প্রধানমন্ত্রীর
মেগা প্রকল্প অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে না: প্রধানমন্ত্রী
মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কারণে দেশের অর্থনীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে বিরূপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি সংসদে বলেন, ‘মেগা প্রকল্প নেয়ার আগে যথাযথ আর্থিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাই এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের ফলে বিরূপ প্রভাব পড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’
বুধবার জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের (ময়মনসিংহ-৮) এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অধিকাংশ মেগা প্রকল্প বৈদেশিক ঋণ বা অনুদানে হাতে নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলো তুলনামূলকভাবে খুব কম সুদের হার, দীর্ঘ পরিশোধের মেয়াদ ও ঋণ পরিশোধের বাড়তি সময়ের উল্লেখসহ নেয়া সহজ ঋণ।
তাছাড়া উন্নয়ন সংস্থাগুলোর ঋণ তহবিল ছাড়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের কোনো জটিলতা লক্ষ্য করা যায়নি বলেও জানান শেখ হাসিনা।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও রামপাল ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রকল্পসহ ১৬টি মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করেন।
অন্যান্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- মাতারবাড়ি ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট, এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ ও গ্যাস পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্প, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প ও দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে ঘুনদুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ।
বাকি মেগা প্রকল্পগুলো হলো- পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, ভাঙ্গা জংশন (ফরিদপুর) থেকে পায়রা বন্দর এবং কুয়াকাটা হয়ে বরিশাল পর্যন্ত ব্রড-গেজ রেললাইন নির্মাণ, কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে মাল্টি-লেন সড়ক টানেল প্রকল্প এবং এসএএসইসি ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প।
আরও পড়ুন: আ’লীগ সব সময় নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের সময় বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এবং ব্যাকওয়ার্ড ও ফরোয়ার্ড লিঙ্কেজ শিল্প ও ব্যবসা গড়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, ‘তাই, প্রকৃতপক্ষে প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে বাধাগ্রস্ত হওয়ার পরিবর্তে দেশের অগ্রগতি সরাসরি ত্বরান্বিত হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এছাড়া যেহেতু প্রকল্পগুলো (পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ ও পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্প ব্যতীত) বিদেশি উৎস থেকে অর্থায়ন পাচ্ছে, তাই প্রকল্প সম্পর্কিত আমদানি ব্যয় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর কোনও বিরূপ প্রভাব ফেলবে না।’
তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রয়োজন অনুযায়ী প্রকল্পগুলো হাতে নেয়া হচ্ছে।
অসাধু ব্যক্তিরা অবৈধ মজুদ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে:
ট্রেজারি বেঞ্চের সদস্য একেএম রহমতুল্লাহর (ঢাকা-১১) অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীব্যাপী কোভিড-১৯ ও যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি দেশে অবৈধ মজুদ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: চাল মজুদকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ কমে গেছে। এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধের ফলে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার অবনতি হয়েছে, যার ফলে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।
কিন্তু সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশে পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি ও সরবরাহ অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো কিছু অসাধু ব্যক্তি এই সুযোগ নিয়ে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অবৈধ মজুদ ও মূল্য বৃদ্ধির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, মূল্যবৃদ্ধি, অবৈধ মজুতদারি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের (লক্ষ্মীপুর-২) এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, রাজধানীর যানজট নিরসনে ৮৫ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ সার্কুলার রোড নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন প্রকল্পে পরিবেশের ওপর গুরুত্ব দেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
আইন প্রণয়ন, সার্বজনীন পেনশন প্রকল্পের জন্য কর্তৃপক্ষ গঠন চলছে:
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মো. মামুনুর রশিদ কিরনের (নোয়াখালী-৩) প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প সংক্রান্ত একটি আইন প্রণয়ন ও আইনের অধীনে একটি কর্তৃপক্ষ গঠন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি বলেন, একটি টেকসই ও সংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় এনে দেশের বয়স্ক ব্যক্তিদের আর্থিক অনুমান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার সর্বজনীন পেনশন স্কিম গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে।
রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রাক-কোভিড স্বাভাবিক ধারায় ফিরে আসতে শুরু করেছে:
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তুম আলী ফরাজীর এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রেমিট্যান্সের প্রবাহ কোভিড-পূর্ব পরিস্থিতির স্বাভাবিক ধারায় ফিরে আসতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কিছুটা কমে ১৭ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কম।
তিনি আরও বলেন, ২০১৯-২০, ২০১৮-১৯ এবং ২০১৭-১১৮ অর্থবছরের প্রথম মাসে গড় রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ১৩ দশমিক ৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সুতরাং, দেখা যাচ্ছে চলতি অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে প্রাপ্ত রেমিট্যান্সের পরিমাণ প্রাক-কোভিড তিন অর্থবছরের একই সময়ে প্রাপ্ত রেমিট্যান্সের গড় প্রবাহের তুলনায় ২৮ দশমিক ৯১ শতাংশ বেশি। তাই বলা যায়, রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমেনি, বরং কোভিড-পূর্ব সময়ের স্বাভাবিক ধারায় প্রবাহ ফিরে আসতে শুরু করেছে।