পরিবেশ রক্ষা
ষষ্ঠ জাতিসংঘ পরিবেশ অধিবেশন: পরিবেশ রক্ষায় সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সমঝোতা স্মারক সইয়ে সম্মত বাংলাদেশ-সৌদি আরব
পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী রক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ ও সৌদি আরব একটি সমঝোতা স্মারক সই করবে।
কেনিয়ার নাইরোবিতে চলমান জাতিসংঘ পরিবেশ অধিবেশনের এক ফাঁকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী সৌদি আরবের পরিবেশ, জলবায়ু ও কৃষিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. ওসামা ইব্রাহিম ফাকিহার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
পরিবেশ রক্ষায় পারস্পরিক প্রতিশ্রুতি স্বীকৃতি জানিয়ে উভয় দেশই সমঝোতাপত্র সইয়ের মাধ্যমে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে একমত হয়।
আরও পড়ুন: পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকেই দায়িত্ব নিতে হবে: মেয়র আতিক
পরিবেশ রক্ষা, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করতে এ সমঝোতা স্মারক সই হবে।
বৈঠক চলাকালে প্রতিমন্ত্রী ফাকিহা পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীকে আগামী ডিসেম্বর- ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ মরুকরণ কনভেনশনে অংশগ্রহণের জন্য আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানান।
তিনি বলেন, এ আমন্ত্রণ বিশ্বব্যাপী পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সহযোগিতার সাক্ষ্য দেয়।
আলোচনায় তারা জ্ঞান বিনিময় কর্মসূচি, কৃষি, ম্যানগ্রোভ সংরক্ষণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, স্মার্ট শহর উন্নয়ন এবং ভূমির অবক্ষয় মোকাবিলার কৌশলসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
তারা পরিবেশগত সমস্যার উদ্ভাবনী সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের যৌথ সংকল্পের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সাবের চৌধুরী এ সময় স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিবেশগত টেকসই এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
অন্য একটি কর্মসূচিতে পরিবেশমন্ত্রী পরিবেশগত প্রতিশ্রুতি কার্যকরী বাস্তবায়নের জন্য বিজ্ঞান নীতি ইন্টারফেস শক্তিশালীকরণ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের সেগমেন্টে বক্তৃতা করেন।
সেখানে তিনি জলবায়ু মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রণীত মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা, ব-দ্বীপ পরিকল্পনা, জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনার বিষয়ে আলোকপাত করেন।
আরও পড়ুন: নর্ডীয় দেশগুলো পরিবেশ রক্ষায় সহযোগিতা জোরদার করবে: পরিবেশমন্ত্রী
ক্ষতি নয়, বরং পরিবেশ রক্ষা করে সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে: ড. হোসেন জিল্লুর রহমান
নর্ডীয় দেশগুলো পরিবেশ রক্ষায় সহযোগিতা জোরদার করবে: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, নর্ডীয় দেশগুলো পরিবেশ সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও টেকসই উন্নয়নে সহযোগিতা জোরদার করবে।
জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য প্রযুক্তি বিনিময়, নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর আহ্বান জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: সুন্দরভাবে বাঁচতে মানুষকে নদী, জলাশয়ের সঙ্গে চলতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সচিবালয়ে পরিবেশ মন্ত্রীর দপ্তরে সুইডেন, নরওয়ে ও ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত যথাক্রমে অ্যালেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ড, এস্পেন রিকটার-সভেন্ডসেন এবং ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলার তার সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় পরিবেশমন্ত্রী বাংলাদেশের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও বন উজাড়ের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি বায়ু, জল ও মাটি দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সমাধানের প্রচারের জন্য দক্ষতা এবং প্রযুক্তি বিনিময়ের আহ্বান জানান।
নর্ডীয় রাষ্ট্রদূতরা বাংলাদেশের পরিবেশগত লক্ষ্যমাত্রা সমর্থন করে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং সহযোগিতার জন্য নতুন পথ অনুসন্ধানে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: জলাভূমি সংরক্ষণের জন্য ম্যাপ তৈরি করা হবে: পরিবেশমন্ত্রী
তারা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের নেতৃত্ব এবং টেকসই উন্নয়ন প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। তারা পরের মাসে নর্ডিক দিবসে পরিবেশমন্ত্রীকেও আমন্ত্রণ জানান।
বৈঠকে পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বের জন্য আরও টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে একযোগে কাজ করার নতুন প্রতিশ্রুতি দেয় উভয় পক্ষ।
পরে জাতিসংঘ প্রকল্প সেবা কার্যালয়ের কান্ট্রি ডিরেক্টর সুধীর মুরালিধরনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল পরিবেশমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশে চলমান জাতিসংঘ প্রকল্প এবং তারা কীভাবে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করতে পারেন সে বিষয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করবে: পরিবেশমন্ত্রী
ক্ষতি নয়, বরং পরিবেশ রক্ষা করে সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে: ড. হোসেন জিল্লুর রহমান
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও ব্র্যাকের চেয়ারপার্সন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, পরিবেশের ক্ষতি করে উন্নয়ন নয়, বরং পরিবেশ রক্ষা করে সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। এই প্রেক্ষাপটে পাহাড় ও সমুদ্রবেষ্টিত কক্সবাজারে পরিবেশ রক্ষার দিকটি আরও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত: রোহিঙ্গারা এখানে আশ্রয় নেওয়ার ফলে পরিবেশে সুরক্ষায় ক্ষেত্রে যে ঝুঁকি দেখা দিয়েছে, তা নিরসনে উদ্যোগ নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচারের এই মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো রোহিঙ্গা শিবিরেও পরিবেশবান্ধব স্থাপনা গড়ার ক্ষেত্রে বড় অণুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।
স্থাপত্যে দুনিয়া-বিখ্যাত পুরস্কার ‘আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার’ জয়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টার পরিদর্শনে মঙ্গলবার গিয়েছেন আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার কমিটির ৫ সদস্য এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও ব্র্যাকের চেয়ারপার্সন ড. হোসেন জিল্লুর রহমানসহ সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কমিউনিটি স্পেস মর্যাদাপূর্ণ আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার পুরস্কার লাভ করে ২০২২ সালে। এর মাধ্যমে স্বীকৃতি দেওয়া হয় রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও হোস্ট কমিউনিটিতে থাকা ৬টি কমিউনিটি স্পেসকে। এর মধ্যে ক্যাম্পে থাকা ৪টি এবং হোস্ট কমিউনিতে থাকা একটি স্থাপনা তৈরি করেছে ব্র্যাক। অন্য স্থাপনাটি তৈরিতে ছিল অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে অবদানের জন্য প্রিন্স রহিম ও আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ককে প্রধানমন্ত্রীর ধন্যবাদ
পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে গাছ লাগানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে শনিবার ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান-২০২১’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গণভবনে চারা রোপণের মাধ্যমে এই অভিযান শুরু করেন তিনি।
এ সময় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে দেশকে রক্ষার জন্য সবুজায়ন বাড়ানোর জন্য দেশের মানুষকে বেশি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। এই দেশটি আমাদের। আমরা যদি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে দেশকে রক্ষা করতে চাই তবে আমাদের এই সবুজ বাংলাকে আরও সবুজ করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী নিজে বৃক্ষরোপণ করে যেখানে যতটুকু জায়গা পাওয়া যায় দেশবাসীকে সেখানে গাছ লাগানোর আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘কমপক্ষে একটি চারা রোপণ করুন। তবে ভালো হয় যদি আপনি তিনটি চারা রোপণ করতে পারেন। আমি চাই আপনি তিনটি চারা একটা ফলজ, একটা বনজ এবং একটা ভেষজ রোপণ করুন।’
আরও পড়ুন: আগামী ১০ বছরে পরিবেশ বিপর্যয় থেকে বাঁচার শেষ সুযোগ: জাতিসংঘ মহাসচিব
অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার উপস্থিত ছিলেন।
‘মুজিববর্ষে অঙ্গীকার করি, সোনার বাংলা সবুজ করি’ প্রতিপাদ্যে এবারের জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান-২০২১ উদযাপন করা হচ্ছে।
‘প্রতিবেশ পুনরুদ্ধার, হোক সবার অঙ্গীকার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ৫ জুন শনিবার বিশ্বব্যাপী পরিবেশ দিবস পালিত হচ্ছে।
পরিবেশ রক্ষায় গাছ লাগান: প্রধানমন্ত্রী
পরিবেশ রক্ষায় ‘মুজিব বর্ষে’ জনগণকে বেশি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।