সৌরবিদ্যুৎ
সৌদি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিপিডিবি’র ১০০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি
সৌদি আরবের এসিডব্লিউএ পাওয়ার বাংলাদেশে এক হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) সঙ্গে একটি নন-বাইন্ডিং সমঝোতা স্মারক সই করেছে।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সৌদি আরবের এসিডব্লিউএ-এর বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে ক্লিন এনার্জি অর্জনে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিভিন্নভাবে প্রসার করছে।
সোমবার ঢাকায় বিদ্যুৎ ভবনে অনুষ্ঠিত চুক্তি সই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন,‘সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করছে।’
আরও পড়ুন: প্রচলিত পাওয়ার টিলারকে সৌরচালিত পাওয়ার টিলারে রূপান্তরের আহ্বান
বিপিডিবি বোর্ডের সচিব মোহাম্মদ সেলিম রেজা ও এসিডব্লিউএ পাওয়ার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের নির্বাহী পরিচালক আয়াদ আল আমরি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
নন-বাইন্ডিং সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, সৌদি এসিডব্লিউএ পাওয়ার প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে এবং বিপিডিবি এক হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য প্রশাসনিক সহায়তা দেবে।
বিপিডিবি চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে, বিপিডিবি ও সৌদি আরবের এসিডব্লিউএ পাওয়ারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান ও বাংলাদেশে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত এসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান।
আরও পড়ুন: সৌরবিদ্যুতের প্রধান প্রতিবন্ধকতা শুল্ক ও জমি: নসরুল হামিদ
বাল্ক বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি খুচরা গ্রাহকদের এই মুহূর্তে প্রভাবিত করবে না: নসরুল হামিদ
সৌরবিদ্যুতের প্রধান প্রতিবন্ধকতা শুল্ক ও জমি: নসরুল হামিদ
জ্বালানি খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন উৎসের সন্ধান এবং আধুনিক প্রযুক্তির আরও ভালো ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেছেন, দেশে সৌরবিদ্যুতের প্রসারের প্রধান প্রতিবন্ধকতা শুল্ক ও জমির প্রাপ্যতা।
বুধবার মন্ত্রণালয়ে তার কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন তিনি।
বৈঠকে তারা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি সংরক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করা জরুরি।
আরও পড়ুন: দেশে পেট্রোলিয়াম জ্বালানির পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে: জ্বালানি বিভাগ
তিনি ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে বলেন, ‘সরকার ক্লিন এনার্জির উন্নয়নে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।’
জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি), জলবায়ু পরিবর্তন, স্থানীয় ও উপ-আঞ্চলিক বিদ্যুৎ ভাগাভাগি, বিদ্যুৎ আমদানি, পারমাণবিক জ্বালানি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সোলার হোম সিস্টেম, স্মার্ট গ্রিড, প্রাথমিক জ্বালানি, নেট মিটারিং সিস্টেম, বৈদ্যুতিক যান, লিথিয়াম ব্যাটারি, অনশোর অ্যান্ড অফশোর পাওয়ার সিস্টেম নিয়ে তারা আলোচনা করেছেন।
এ সময় জ্যেষ্ঠ জলবায়ু ও পরিবেশ উপদেষ্টা আনা ব্যালেন্স ও জলবায়ু পরিবর্তন নীতি ব্যবস্থাপক মারজান নুর উপস্থিত ছিলেন।
খুবিতে স্থাপিত হচ্ছে বৃহত্তর সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল
দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বৃহত্তর পরিসরে ভবনের ছাদে সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল স্থাপিত হচ্ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি)। ইতোমধ্যে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) একটি সম্ভাব্যতা যাচাই রিপোর্ট প্রদান করেছে। এ বিষয়ে নেট মিটারিংয়ের ব্যাপারে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।
এই এমওইউ’র আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ তাজউদ্দীন আহমেদ ভবন ও মাইকেল মধুসূদন দত্ত অতিথি ভবনের ছাদে বছরে ৭৫ কিলোওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষম প্যানেল বসানো হবে।
এ ব্যাপারে স্রেডা কারিগরি সহায়তা দেবে। উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ব্যবহার ছাড়াও জাতীয় গ্রিডে দেয়া হবে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের অর্থ হ্রাস পাবে। একই সাথে প্রকল্পের মেয়াদকালে (২৫ বছর) প্রায় ৭৫০ টন কার্বন নিঃসরণ কমবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, আবাসিক হল ও অন্যান্য বড় স্থাপনার ছাদেও সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের পদক্ষেপ নেয়া হবে।
তিনি জানান, সম্প্রতি স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে গ্রিন এনার্জি উৎপাদনের ওপর যে গুরুত্বারোপ করেছেন এবং ২০৪১ সালের যে অভিলক্ষ্য ঘোষণা করেছেন সে বিষয়টি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সময়ের অনেক আগেই এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যায়ের প্রথমেই এই অভিলক্ষ্য পূরণে সক্ষম হবে বলে তিনি আশা করেন।
আরও পড়ুন: সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন: কাঁটাতারে বাঁধা শিক্ষক-শিক্ষার্থী!
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপ্রধান প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) এস এম মনিরুজ্জামান পলাশ জানান, চলতি অর্থ বছরের মধ্যেই কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এই সৌর প্যানেল বসানোর পর তার ২৫ বছর আয়ুষ্কাল ধরা হয়েছে এবং দশ বছরের মাথায় কেবল একটি ইনভার্টার পরিবর্তন করতে হবে।
তিনি জানান, গ্রিন এনার্জি উৎপাদনের এ বিষয়ে উপাচার্যের একান্ত আগ্রহ ও উদ্যোগে ইতোমধ্যে গত ১৯ ডিসেম্বর ‘নেট মিটারেড রুফটপ সোলার’ শীর্ষক একটি কর্মশালা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এর মাধ্যমে আমরা এ বিষয়ে সম্যক ধারণা পেয়েছি যা এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ইতিবাচকভাবে কাজে আসবে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও প্রযুক্তি খাতে সমন্বিতভাবে কাজ করলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দেয়া সম্ভব
সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন: কাঁটাতারে বাঁধা শিক্ষক-শিক্ষার্থী!
সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের নামে ‘ইন্ট্রাকো সোলার পাওয়ার লিমিটেড’ সাইনবোর্ড লাগিয়ে কাঁটাতারে দিয়ে ঘিরে ফেলায় লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী শৌলমারী ও কালিকাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ঝুকিঁ নিয়ে কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে। শুধু শিক্ষকরাই নন, শিক্ষার্থীসহ শৌলমারী চরে বসবাসকারী মানুষজনও এ অবস্থায় হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এনিয়ে তারা সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন ফল পাচ্ছেন না। এ বিষয়ে তিস্তা চরবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
আরও পড়ুন: মামলা জটিলতায় স্কুল ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ, ঝুঁকিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
সংশ্লিষ্টরা জানান, তিস্তা নদীতে শৌলমারী চরে অবস্থিত কালিকাপুর ও শৌলমারী সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়। ওই বিদ্যায়লের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপজেলা শহর থেকে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। কিন্তু বিদ্যালয়ের যাওয়া একমাত্র রাস্তাটি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের নামে ‘ইন্ট্রাকো সোলার পাওয়ার লিমিটেড’ সাইনবোর্ড লাগিয়ে কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে ফেলেছে। ফলে কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে তাদের।
এছাড়া এই রাস্তা দিয়েই মূলত চরবাসীর যোগাযোগ উপজেলার শহররের সাথে। সরকারিভাবে প্রতিবছরই রাস্তাটি মেরামত করা হয় বলেও জানান স্থানীয়রা। অথচ সেই রাস্তাটিও দখলে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, শৌলমারী চরে শিক্ষার আলো জ্বালানোর দায়িত্বে যেসব শিক্ষক রয়েছেন তাদের প্রায় সবার বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলা সদরের আশপাশে। প্রতিদিন স্কুলে যেতে প্রথমে নৌকা যোগে পরে দীর্ঘ পথ হেটেঁ শৌলমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌঁছতে হয় তাদের। কিন্তু নদীর ঘাট থেকে যে রাস্তাটা সরাসরি গিয়ে স্কুলে ঠেকেছে, সেটি যে কাঁটাতারে ঘিরে ফিলবে বেসরকারি কোন কোম্পানি তা হয়তো জানা ছিল না তাদের। তাই বাধ্য হয়ে কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে স্কুল যাতায়াত করতে হচ্ছে তাদের।
আরও পড়ুন: হাতছানি দিয়ে ডাকছে রূপবতী ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’
শৌলমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইতি মনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ওই রাস্তা দিয়েই স্কুলে যাওয়া আসা করছি। এখন সেই রাস্তাটি বন্ধ হওয়ায় বাধ্য হয়েই কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। একজন নারী শিক্ষক হয়ে ওই কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে যাতায়াত কতটা কষ্টের তা বলে বোঝানো মুশকিল। তাই দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করছি।’
দেশের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রে যুক্ত হলো হুয়াওয়ের স্মার্ট ফটোভোলটাইক
ময়মনসিংহে দেশের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রে হুয়াওয়ে স্মার্ট ফটোভোলটাইক (পিভি) সমাধান ইনস্টল করা হয়েছে। এতে করে দেশের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রে হুয়াওয়ের প্রযুক্তি যুক্ত হলো।
দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদার সমাধান কি সৌরশক্তি?
দেশের জ্বালানি সমস্যার এক ভালো সমাধান হতে পারে সৌরবিদ্যুৎ।