হত্যাকাণ্ড
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ১৫তম বার্ষিকী রবিবার
রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ১৫তম বার্ষিকী আগামীকাল রবিবার।
২০০৯ সালের এই দিন ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জনকে হত্যা করা হয়েছিল।
দিবসটি উপলক্ষে সকাল ৯টায় রাজধানীর বনানীর সামরিক কবরস্থানে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।
আরও পড়ুন: পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের এক যুগ: নানা কর্মসূচিতে শহীদদের স্মরণ
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তিন দিনব্যাপী 'বিডিআর সপ্তাহ' চলাকালে পিলখানা সদর দপ্তরের দরবার হলে বাংলাদেশ রাইফেলসের (বর্তমানে বিজিবি) কয়েকশ সদস্য সশস্ত্র বিদ্রোহ করে। তারা ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করে।
পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন সরকার ও বিডিআর বিদ্রোহীদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও গ্রেনেড জমা দেওয়ার মধ্য দিয়ে বিদ্রোহের সমাপ্তি ঘটে।
আরও পড়ুন: পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদদের প্রতি জাতির শ্রদ্ধা নিবেদন
ওই ঘটনায় মোট ৫৮টি মামলা হয়, এর মধ্যে একটি হত্যা ও লুটপাটের অভিযোগে আর বাকিগুলো বিদ্রোহের অভিযোগে।
এই হত্যা মামলায় ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৪২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া দেশের সবচেয়ে বড় হত্যাকাণ্ডের এ মামলায় ২৭৭ জন আসামি খালাস পেয়েছে।
সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ২৬২ জন বিদ্রোহীকে তিন মাস থেকে ১৯ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে এবং প্রয়াত বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
অন্যদিকে বিদ্রোহের ৫৭টি মামলায় ৫ হাজার ৯২৬ জন বিডিআর জওয়ানকে চার মাস থেকে সাত বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: পিলখানার শহীদদের প্রতি জাতির শ্রদ্ধা নিবেদন
বিএসএফের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে লালমনিরহাটে মিছিল ও সমাবেশ
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে 'প্রতীকী লাশ' নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এক ব্যক্তি ও তার সহযোগীরা।
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় বাসিন্দা হানিফ বাংলাদেশির নেতৃত্বে মিছিলটি উপজেলা পরিষদ মোড় থেকে শুরু হয়ে পাটগ্রাম উপজেলা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
আরও পড়ুন: অক্টোবরে হত্যাকাণ্ডের শিকার ২২২ জন: বিএইচআরসি
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার হানিফ বাংলাদেশির নেতৃত্বে মিছিলে অংশ নেন- সাদিকুল ইসলাম ও নুরুন্নবী মিয়া, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার এনইউ আহমেদ, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার সৌরভ হোসেন বেলাল ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আরিফ হোসেন।
শোভাযাত্রা শেষে এক সমাবেশে হানিফ বাংলাদেশি অভিযোগ করেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমার বাংলাদেশের ওপর আগ্রাসন চালাচ্ছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সীমান্তে বহু বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করেছে।
তাছাড়া মিয়ানমার ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে নির্যাতনের পর বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। তিনি বলেন, সম্প্রতি মিয়ানমারের মর্টার শেলের আঘাতে বাংলাদেশে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
কেন চোরাকারবারিদের হত্যা করে ধরা হচ্ছে না এবং বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না- এমন প্রশ্ন রেখে হানিফ বাংলাদেশি বলেন, সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যার পর দেশগুলো গরু চোরাকারবারি হিসেবে চালিয়ে দেয়।
১৭ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের টেকনাফে প্রতীকী লাশ নিয়ে প্রথম শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
পরে দেশের সীমান্তবর্তী জেলা-উপজেলায় এ ধরনের শোভাযাত্রা করার ঘোষণা দেন তারা।
আরও পড়ুন: সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে বিএসএফ: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ডিজিএফআই কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডে জড়িত ২ আরসা কমান্ডার গ্রেপ্তার
ডিজিএফআই কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডে জড়িত ২ আরসা কমান্ডার গ্রেপ্তার
মিয়ানমারের রাখাইনকেন্দ্রিক সন্ত্রাসী গ্রুপ আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) দুই কমান্ডারকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংলগ্ন গহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: নাটোরে ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ১
র্যাব-১৫-এর আইন ও গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সালাম চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আবু সালাম চৌধুরী জানান, গোপন সংবাদ পেয়ে র্যাব উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংলগ্ন গহীন পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে আরসার দুই শীর্ষ কমান্ডারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি অস্ত্র ও গুলি জব্দ করা হয়। সেই সঙ্গে অভিযানে আরসার একটি টর্চার সেলের সন্ধান মিলেছে।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে একজন হলেন- আরসার অন্যতম শীর্ষ কমান্ডার, ওলামা বডি ও টর্চার সেলের প্রধান ওসমান ওরফে সালমান। গ্রেপ্তার হওয়া অন্যজনের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেনি র্যাব।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ওসমান গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ডসহ রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ, গ্রেপ্তার ১: র্যাব
সমাবেশের ৩ দিন আগেই বিএনপির ১২শ’ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার : রিজভী
মানিকগঞ্জে ঘুমন্ত বড়ভাইকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ ছোটভাইয়ের বিরুদ্ধে
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে ঘুমন্ত বড়ভাইকে ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছোটভাইয়ের বিরুদ্ধে। এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ছোটভাই পলাতক রয়েছে। রবিবার রাত ১২টার দিকে উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের ভাকুম ফকিরপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত বড়ভাই আবু রায়হান (২৭) ও হত্যাকারী ছোটভাই রোমান (২৪) একই গ্রামের শাহজাহান ফকিরের ছেলে।
পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাহজাহান ফকিরের তিন ছেলে আবু রায়হান, রোমান ও জামান (১৮)।
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রায় এক বছর আগে রোমান প্রেম করে বিয়ে করে। পরিবারের কেউ তা মেনে নেয়নি। এ ছাড়া টাকা-পয়সা নিয়ে ওই পরিবারে বিরোধ চলছিল। মা-বাবা একঘরে ও পাশেই অন্য একটি ঘরে একই খাটে ঘুমান তিন ভাই। প্রতিদিনের মতো রবিবার রাত ৯টার দিকে খাবার খেয়ে তিন ভাই ঘুমাতে যান। বড়ভাই রায়হান ও ছোটভাই জামান শুয়ে পড়লেও রোমান চেয়ারে বসেছিলেন। রাত ১২টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় রায়হানকে ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে রোমান পালিয়ে যায়। এ সময় বড়ভাই রায়হানের গোংগানির শব্দে ঘুম ভেঙে যায় ছোটভাই জামানের। তখন তার মা-বাবাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন তিনি। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় স্বজনরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরেই রায়হান খুন হয়েছেন। তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্ত রোমানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: নাটোরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, স্বামী পলাতক
২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার অভিযোগ করেছেন, ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা হত্যার সঠিক তদন্ত হয়নি।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি এই ঘটনার যেভাবে তদন্ত হওয়া উচিত ছিল এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধী ও মূল হোতাদের বের করে আনার জন্য যেভাবে তদন্ত প্রক্রিয়া চালানো উচিত ছিল, দুর্ভাগ্যবশত তা হয়নি।’
এ ঘটনার ১৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে বনানী সেনা কবরস্থানে স্থাপিত স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত করেছে, কিন্তু জাতি এখনো সেই তদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পায়নি।
বিএনপি নেতা বলেন, বিদ্রোহ ও পরবর্তী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন যে একই ঘটনার সঙ্গে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা আরেকটি মামলার বিচার এখনও শেষ হয়নি।
আরও পড়ুন: বিডিআর বিদ্রোহে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা ষড়যন্ত্রের ফল: বিএনপি
তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) অনেক সৈনিক যারা নিজেকে নির্দোষ দাবি করে, তারা এখনও কারাগারে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
ফখরুল বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমি কারাগারে ছিলাম। সেখানে দেখলাম, এই মামলায় আসামি করা অনেক প্রাক্তন বিডিআর সদস্য ১৩/১৪ বছর ধরে অমানবিক জীবনযাপন করছেন। তাদের পরিবার ও ভবিষ্যৎ ধ্বংস হয়ে গেছে।’
তিনি সরকারের কাছে বিস্ফোরক মামলার বিচার সম্পন্ন করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান, যাতে যারা নির্দোষ তারা তাদের পরিবার নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে।
২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে তৎকালীন বিডিআর এর একটি বিদ্রোহী দল পিলখানা সদর দপ্তরে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করে।
৫ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে ঢাকার একটি আদালত এ মামলায় ১৫০ বিডিআর সদস্য ও দুই বেসামরিক নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্ট ১৫২ আসামির মধ্যে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করে।
পিলখানা সদর দপ্তরে সেনা কর্মকর্তাদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর, সরকার বিদ্রোহ-বিধ্বস্ত আধাসামরিক বাহিনী বিডিআরের নাম পরিবর্তন করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রাখে এবং এর লোগো ও ইউনিফর্ম পরিবর্তন করে।
ফখরুল সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে কবরস্থানে গিয়ে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং নিহত সেনা কর্মকর্তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।
বিএনপির এই নেতা নিহত সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে তাদেরকে তিনি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জাতির সম্পদ হিসেবে বর্ণনা করেন।
বিদ্রোহে নিহত তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ ভূঁইয়ার সঙ্গে তার স্ত্রীসহ তিনি কথা বলেন।
আরও পড়ুন: পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে বিএনপির প্রশ্ন রাজনৈতিক: কাদের
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিরা এখনো চিহ্নিত হয়নি: বিএনপি
জেলহত্যা দিবস: বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার প্রতি বৃহস্পতিবার শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে নিহত জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামান স্মরণে দিবসটি পালন করা হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসভবনে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হত্যার মাত্র তিন মাস পর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
দিবসটি পালনে প্রধানমন্ত্রী ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
আরও পড়ুন: জেলহত্যা দিবসে চার জাতীয় নেতাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ
অক্টোবরে হত্যাকাণ্ডের শিকার ২২২ জন: বিএইচআরসি
বাংলাদেশে গত অক্টোবর মাসে ২২২ জন মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটির অক্টোবর মাসের প্রস্তুত করা প্রতিবেদনের আলোকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন (বিএইচআরসি) বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে বিএইচআরসি’র ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান এবং ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন প্রতিবেদনটি সম্পন্ন করেছে।
বিএইচআরসি’র জরিপ অনুযায়ী অক্টোবরে মোট ২২২ জন মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
আরও পড়ুন: জুলাই মাসে দেশে ২৬১ জন খুন হয়েছেন: বিএইচআরসি
এছাড়া সরকারি হিসাব মোতাবেক করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে আরও ৬১ জনের। চলতি বছরের অক্টোবর মাসে করোনা ভাইরাসে প্রতিদিন গড়ে প্রায় দুইজনের মৃত্যু এবং হত্যাকাণ্ড ঘটেছে প্রায় ৭টি করে।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের অধিক দায়িত্ববান হওয়ার বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দেয়া হয় প্রতিবেদনে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গতিশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড কমিয়ে শুন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব বলেও উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশের গণতন্ত্র ব্যবস্থাপনাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং মানবাধিকার সম্মত সমাজ প্রতিষ্ঠায় সর্বস্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথাও উঠে আসে প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগের জরিপে দেখা যায়, গেল অক্টোবর মাসে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ২৬১ জন মানুষ। এরমধ্যে পারিবারিক সহিংসতায় ১৬ জন, সামাজিক সহিংসতায় পাঁচজন, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে পাঁচজন, চিকিৎসা অবহেলায় পাঁচজন, অপহরণের শিকার হয়ে মৃত্যু তিনজনের, গুপ্ত হত্যার শিকার হয়েছেন ৩১ জন এবং রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের। এছাড়া ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে আরও ছয়জনকে।
এছাড়া বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১০৩ জন এবং আত্মহত্যা করেছেন ১৬ জন মানুষ।
আরও পড়ুন: মার্চে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬৬ জন, আর করোনায় ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে: বিএইচআরসি
সামাজিক দূরত্ব: কাঁচাবাজারের সময় বাড়ানোর দাবি বিএইচআরসি’র
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার গঠনের পর হত্যাকাণ্ড চালাতে জঙ্গিদের ভাড়া করে: জয়
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার গঠনের পরপরই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের হত্যা, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ ও ধর্ষণ করতে শুরু করে।
সজীব ওয়াজেদ তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্টে লিখেন, এমনকি উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠনগুলোকে অর্থ ও তালিকা দিয়ে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে তারা।
পোস্টে তিনি লিখেন, ‘তারেক রহমানের নির্দেশনায় বিএনপির ৮ জন নেতার মাধ্যমে জঙ্গিদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতো খালেদা জিয়ার সরকার।‘
সজীব ওয়াজেদের পোস্টে বলা হয়, এমনকি মন্ত্রীদের চাপের কারণে পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্যও বাধ্য হয়েছিল জঙ্গিদের সহযোগিতা করতে।
এতে বলা হয়, পুলিশের হাত দিয়ে জঙ্গিদের কাছে নিরাপদে অর্থ পাঠাতো বিএনপি সরকারের নেতারা। এমনকি কখনো পুলিশ এই জেএমবি জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করলেও সরকারের চাপে ছেড়ে দিতে বাধ্য হতো, অথবা আদালত থেকে তাদের জামিন দেয়ার জন্য বিশেষ নির্দেশ আসতো সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে।
আরও পড়ুন: রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ: জড়ো হচ্ছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী
পায়রা সমুদ্রবন্দরে রিজার্ভের টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে ব্যাখ্যা করুন: সরকারের উদ্দেশে ফখরুল
রংপুরে বিএনপির চতুর্থ বিভাগীয় সমাবেশ শনিবার
র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড উল্লেখযোগ্য কমেছে: পিটার হাস
গত ডিসেম্বরে র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে উল্লেখ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, ‘এটি একটি ভালো লক্ষণ।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ এবং জার্মান থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ফ্রেডরিখ এবার্ট স্টিফটাং আয়োজিত ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দল, শিক্ষাবিদ ও সাবেক কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞায় থেকে যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য মানানসই নয়: বিএনপি
হাস বলেন, র্যাব এবং এর সাত সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য তাদের শাস্তি দেয়া নয় বরং আচরণ পরিবর্তন করে তাদের জবাবদিহি করা।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, সহিংসতা থাকলে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
তিনি বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের ওপর জোর দেন এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাণিজ্য, শ্রম অধিকার, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতি এবং ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলসহ বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
রপ্তানিমুখী শিল্পে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শ্রম অধিকারের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এখনও উদ্বেগ রয়েছে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের (সিজিএস) নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।
আরও পড়ুন: মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পেছনে ১০০ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প: আইজিপি
সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়াই আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে প্রেমিকসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন
কুষ্টিয়ায় বৃষ্টি খাতুন (৩০) নামে এক নারীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় তার প্রেমিকসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে সাজাপ্রাপ্ত তিনজনকেই ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কচুবাড়িয়া গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ ওরফে মঞ্জু, একই গ্রামের আবু মণ্ডলের ছেলে হেলাল উদ্দিন ও মৃত হাসেম আলীর ছেলে আশরাফুল আলম। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অপর ৯ আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছেন আদালত।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক হত্যাকাণ্ড: আরেক যুবক গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়া জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ২০১২ সালের পয়লা জুলাই সকালে খালার বাড়িতে বেড়াতে যান বৃষ্টি খাতুন। পরেরদিন ২ জুলাই বিকালে খালার বাড়ি থেকে ফেরার পথে বৃষ্টি নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পরদিন ৩ জুলাই সকালে মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া গ্রামের মিরপুর-দৌলতপুর সড়কের পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত শাহাবুদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৃষ্টি খাতুনের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের এক পর্যায়ে বৃষ্টির কাছ থেকে টাকা ধার নেন শাহাবুদ্দিন। এরপর বৃষ্টি টাকা ফেরত চাইলে তাকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন শাহাবুদ্দিন এবং তার বন্ধু আশরাফুল ও হেলাল।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ওই দিনই নিহতের বাবা আমিন বিশ্বাস আসামিদের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ২৪ আগস্ট তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৯ জনকে খালাস প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: পিস্তল-গুলিসহ কুষ্টিয়ায় ছাত্রদল নেতা আটক