কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামে পিকআপ-ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২জন নিহত, আহত ৫
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে পিকআপ ও ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ইজিবাইকের পাঁচ যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৪জুলাই) সকালে উপজেলার মিলের পাড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সিরাজুল ইসলাম (৪৪) জেলার উলিপুর উপজেলার নাওডাঙ্গা গ্রামের গাফ্ফার আলী মোল্লার ছেলে এবং রহিমা বেগম (৩৫) রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের বাসিন্দা।
এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিস জানায়, উলিপুর রাজারহাট সড়কের মিলের পাড় নাম এলাকায় উলিপুরগামী একটি পিকআপ ও রাজারহাটগামী একটি ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ইজিবাইকটি সড়ক থেকে নিচে দুমড়ে-মুচড়ে পড়ে যায়। ঘটনার পর পিকআপের চালক পালিয়ে যায়। এতে ইজিবাইকের যাত্রী সিরাজুল ইসলাম ও রহিমা বেগম ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
আরও পড়ুন: নাটোরে মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে আম ব্যবসায়ী নিহত
ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লিডার আক্তারুজ্জামান জানান, রাজারহাট ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে আহতদের রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। রাজারহাট থানার পুলিশ হাসপাতালে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করেছে।
রাজারহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহিল জামান জানান, এ ঘটনায় পিকআপভ্যান ও ইজিবাইকটি থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙন, অর্ধশতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলিন
কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর ভাঙনে গত ১৫ দিনে শতবিঘা আবাদি জমি, অর্ধ শতাধিক বাড়িঘর এবং একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে আরও দেড় শতাধিক বাড়িঘর।
ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জিও ব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নিলেও ভাঙন কবলিত মানুষ বসতবাড়ি রক্ষায় স্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে যমুনায় তীব্র ভাঙনে বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে বিলীন
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের বজরা পশ্চিমপাড়া গ্রামের ভাঙন কবলিতদের নিজস্ব জমিজমা না থাকায় নদী তীরবর্তী মানুষ তাদের বাড়িঘর সরিয়ে খোলা আকাশে ফেলে রেখেছে। ঈদের ১০/১২ দিন আগে থেকেই এখানে ভাঙন চলছিল।
জিও ব্যাগ দিয়ে সরকারি স্কুলটি রক্ষার চেষ্টা করা হলেও জিও ব্যাগসহ সেটি নদী গর্ভে চলে গেছে। এসময় ভেঙে গেছে আরও ৪৫ থেকে ৫০টি বসতবাড়ি। সবজি ও পাটখেতসহ শত বিঘা আবাদি জমি নদী গ্রাস করে নিয়েছে। সেই সঙ্গে গাছপালা-পুকুর নদীতে বিলিন হয়ে গেছে।
নদী তীরবর্তী শহিদুর ইসলাম (৫৬) জানান, ভাঙনে বজরা পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি আর রক্ষা করা যায়নি। সেই সঙ্গে ঠিকানা হারিয়েছে অর্ধ শতাধিক পরিবার। আরও দেড় শতাধিক বসতবাড়ি রয়েছে ভাঙনের হুমকীতে। এছাড়াও পিছনে আরও ৬ থেকে ৭শ’ পরিবারও রয়েছে ভাঙন আতঙ্কে।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি কমলেও দেখা দিয়েছে ভাঙন
কুড়িগ্রামের নদীর পানিতে ডুবে বর্গাচাষির মৃত্যু
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে সাঁতরিয়ে শাখা নদীর নালা পার হওয়ার সময় পানিতে ডুবে নুর ইসলাম (৫৫) নামে এক বর্গাচাষির মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (২৮ জুন) ঈদের বাজার করতে গিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা নালা পার হয়ে খেয়াঘাটে যেতে তিনি পানিতে ডুবে নিখোঁজ হন।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাবার ইটের আঘাতে ছেলের মৃত্যু!
পরে স্থানীয়রা খোঁজাখুঁজি করে চার ঘণ্টা পর তার লাশ উদ্ধার করে।
নিহত ব্যক্তি চিলমারী ইউনিয়নের চর শাখাহাতী গ্রামের মৃত. মোহর মিস্ত্রীর ছেলে।
নিহতের স্বজনরা বলছেন, নিজ বাড়ি থেকে রমনা ইউনিয়নের জোড়গাছ বাজারে ঈদের বাজার করতে রওয়ানা দেন। পথিমধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা নালা পার হয়ে চর শাখাহাতী খেয়া ঘাটে যেতে গভীর নালার পানিতে ডুবে নিখোঁজ হন তিনি।
নিখোঁজ ব্যক্তির সঙ্গে বাবলু মিয়া নামে অপর এক ব্যক্তিও নালার প্রান্তে দাঁড়িয়ে তার ডুবে যাওয়া দেখে চিৎকার করলে স্থানীয়রা এগিয়ে এলেও দীর্ঘ চার ঘণ্টা ধরে খোঁজাখুঁজির পর নুর ইসলামের লাশ উদ্ধার করতে সমর্থ হন।
চিলমারী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুরো ঘটনাটি জানতে পারি।
এ ব্যাপারে চিলমারী ফারার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) খবিরুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি আমাদেরকে কেউ জানাননি। এইমাত্র সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পারলাম।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে আম পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু
কুড়িগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বৈদ্যুতিক মিস্ত্রির মৃত্যু
কুড়িগ্রামে সাড়ে ৪ লাখ পরিবার পেল প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার
কুড়িগ্রামের সদরে আসন্ন ঈদ উপলক্ষে কুড়িগ্রামে প্রায় পাঁচ লাখ দুঃস্থ হত দরিদ্র অসহায় মানুষজন পেল প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঈদ উপহার ভিজিএফ এর চাল। ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে ও অসহায় পরিবারগুলোর মুখে হাসি ফোঁটাতে ভিজিএফের এ চাল বরাদ্দ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার সকালে উপজেলার ভোগডাঙা ইউনিয়ন পরিষদে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে চাল বিতরণ শুরু হয়।
জেলার ৯টি উপজেলা, ৩টি পৌরসভার ৭২টি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে এ চাল বিতরণ করা হচ্ছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেদুল হাসান, সদর উপজেলার সরকারি মাধ্যমিক অফিসার ইয়াসিন আলী, ভোগডাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলহাজ্ব সাইদুর রহমান প্রমুখ।
কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অফিসের তথ্য মতে, জেলার ৯টি উপজেলায় ৪ লাখ ৫৭ হাজার ১৭৬টি পরিবার ভিজিএফের চাল পাচ্ছেন। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ৫৭ হাজার ৩১২টি পরিবার। ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় ৫৬ হাজার ১৮৭টি পরিবার।
আরও পড়ুন: আশ্রয়ণ-২: প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার পেল ৩৩ হাজার পরিবার
নাগেশ্বরী উপজেলায় ৮১ হাজার ১৯ টি পরিবার, ফুলবাড়ী ৩৮ হাজার ৬৩২ টি পরিবার, রাজারহাট উপজেলায় ৪৩ হাজার ৬১টি পরিবার, উলিপুর উপজেলায় ৮৩ হাজার ১৫টি পরিবার, চিলমারী উপজেলায় ৩০ হাজার ৩১০টি পরিবার, রৌমারী উপজেলায় ৪৭ হাজার ৯৮৪টি পরিবার, চর রাজিবপুর উপজেলায় ১৯ হাজার ৬৫৬ টি পরিবার সুবিধা পাচ্ছেন।
এছাড়াও কুড়িগ্রাম পৌরসভা এলাকায় ৪ হাজার ৬২১টি পরিবার, নাগেশ্বরী পৌরসভায় ৪ হাজার ৬২১টি ও উলিপুর পৌরসভা এলাকায় ৩ হাজার ৮১টি পরিবার ঈদ উপহার হিসেবে ভিজিএফের ১০ কেজি চাল পাচ্ছেন পরিবারগুলো।
প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার পেয়ে ভোগ ডাঙা ইউনিয়নের মোছা. আছিয়া বেওয়া বলেন, কদিন পরে ঈদ ঘরে চাল নাই খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলাম ঈদে কি খাবো আজ ভিজিএফের চাল পেয়ে চিন্তা দূর হলো খুবই খুশি হয়েছি।
আরেক দিনমজুর মো. হামিদুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টির কারণে কাম কাজ নাই, ঘরে খাবার নাই, বউ বাচ্চাকে নিয়ে কষ্টে ছিলাম। আজ চাল পেয়ে ভালো লাগলো।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ঘর পাচ্ছে রাজশাহীর ১১৪৯ পরিবার
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু বলেন, অসহায় ও দুঃস্থ পরিবারের ঈদ আনন্দ যাতে নিরানন্দে পরিণত না হয় সে লক্ষ্যে বরাবরই কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের অন্যতম জনবহুল দারিদ্র্য জনগোষ্ঠীর কথা চিন্তা করে প্রতি ঈদে বিভিন্ন সহযোগিতার পাশাপাশি ভিজিএফ কার্ডের সুবিধা দেন তিনি।
এরই ধারাবাহিকতায় দেশের প্রতিটি দুঃস্থ ও অসহায় পরিবারের হাতে ঈদ উপহার হিসেবে ১০ কেজি করে ভিজিএফের চাল তুলে দেয়া হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে অনেক খুশি পরিবারগুলো। জেলা প্রশাসনের কঠোর নজরদারির মাধ্যমে উপহারের চাল বিতরণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে ঘরে ঘরে পৌঁছে গেল প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার
কুড়িগ্রামে বন্যায় ১২ হাজার পরিবার পানিবন্দী, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে জেলার ৯ উপজেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১২ হাজার পরিবার।
এতে করে ভোগান্তি বেড়েছে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজনের। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছে চরাঞ্চলের পরিবারগুলো।
বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকায় নতুন জেগে ওঠা চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে ৫ দিনে ধরে পানিতে তলিয়ে থাকায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন তারা। অনেকেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে নৌকা ও উঁচু স্থানে অবস্থান করলেও শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে পড়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: রেকর্ড বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া রংপুরে পানিবন্দী ৫০ হাজার মানুষ
জানা গেছে, উলিপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার পূর্ব বালাডোবা, কালির আলগা, মুসারচর ও সদরের পোড়ার চরসহ ১০টি চরে বসবাসকারী দুই শতাধিক পরিবার ঘর বাড়ি ছেড়ে নৌকা ও উঁচু জায়গায় অবস্থান নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
এই পরিবারগুলোর ঘর বাড়ি তলিয়ে থাকায় ঠিকমতো রান্না করতে পারছেন না তারা। পাশাপাশি পরিবারগুলোর হাতে কোনো কাজ না থাকায় শুকনো খাবার এবং নলকুপ তলিয়ে থাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছেন তারা।
এদিকে নদ-নদীর অববাহিকার গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। জেলার প্রায় ১০০ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
চারণভূমি তলিয়ে থাকায় চরাঞ্চলগুলো গবাদি পশুর খাদ্য নিয়েও বিপাকে পড়েছেন বন্যা কবলিতরা। এছাড়া কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে কুড়িগ্রামের সবকটি নদ-নদীতে পানি বিপদ সীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুপুর ১২টায় দেয়া তথ্যমতে জেলার পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও কুড়িগ্রাম সদরের ধরলার সেতু পয়েন্টে ৩৯ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৫৫ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৬১ সেন্টিমিটার ও কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ৮৯ সেন্টিমিটার বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের পুর্ববালাডোবার চরের আব্দুর রহমান জানান, এই চরে ৪৯টি পরিবারের বসবাস। চরটি নতুন এবং নিচু হওয়ায় এখানকার বেশির ভাগ ঘর বাড়িতে কোমর সমান পানি উঠেছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, বাড়ছে পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ
কুড়িগ্রামে বেড়েই চলেছে নদ-নদীর পানি, বন্যার আশঙ্কা
কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমারসহ প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
বুধবার সকাল ৯টায় দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপদসীমার মাত্র ৩৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের নুনখাওয়া পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বাড়ছে ধরলার পানি তবে কিছুটা কমেছে তিস্তা নদীর পানি।
পানি বাড়ায় নদী অববাহিকার চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে বাড়ির চারপাশে পানি উঠে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে, এসব এলাকায় মানুষ পানিতে তলিয়ে গেছে সবজি, আমনের চারাসহ পাট।
এদিকে মঙ্গলবার রাত থেকে এ জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত
কুড়িগ্রামে ঘাস কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
কুড়িগ্রামে গরুর জন্য ঘাস কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২০ জুন) সকাল ১০টার দিকে রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের নতুন শৌলমারী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত কৃষক আমির হামজা (৫২) ওই গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে বাসার ছাদে বজ্রপাতে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. সোনা মিয়া জানান, কৃষক আমির হামজা বাড়ির পার্শ্ববর্তী জমিতে গরুর খাবারের জন্য ঘাস কাটতে যান। এসময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
পরে স্থানীয়রা ওই কৃষকের লাশ উদ্ধার করে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন।
রৌমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুপ কুমার সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে মৃত কৃষকের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন: খুলনায় বজ্রপাতে ৩ জন নিহত, আহত ৪
কিশোরগঞ্জে হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে যুবক নিহত
কুড়িগ্রামে সৌখিন মাছ শিকারির খোঁচায় ১৬ কেজির বোয়াল!
কুড়িগ্রামে সৌখিন মাছশিকারির খোঁচায় (মাছ ধরার উপকরণ) ধরা পড়েছে ১৬ কেজি ওজনের একটি বোয়াল মাছ। সোমবার কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের গারুহাড়া এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা নদীতে মাছটি ধরা পড়ে।
রবিবার রাতে মাছটি শিকার করেন ওই ইউনিয়নের ছত্রপুর এলাকার কামরুজ্জামান ও আব্দুল হাই নামের দুই ব্যক্তি।
আরও পড়ুন: তিস্তায় ধরা পড়লো ১৭ কেজি ওজনের বোয়াল
স্থানীয়রা জানান, সৌখিন মাছশিকারি কামরুজ্জামান ও আব্দুল হাই রাতে খোঁচা দিয়ে মাছ ধরতে যান গারুহারা এলাকায়। টচ লাইটের আলোয় মাছটি দেখতে পেয়ে খোঁচা দিয়ে আটক করা হয় মাছটিকে। পরে তারা বাড়িতে খবর দিলে বাড়ির লোকজন গিয়ে মাছটিকে নিয়ে আসে। পরে তারা মাছটিকে কেটে ভাগ করে নিয়েছেন।
সৌখিন মাছ শিকারি কামরুজ্জামান ভেজাল বলেন, আমরা মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় মাছ শিকার করতে যাই। রাতে টর্চ লাইট জ্বালিয়ে খোঁচা দিয়ে মাছ ধরি। এর আগে এত বড় মাছ আমি পাইনি। জীবনের প্রথম ১৬ কেজির এ বোয়াল মাছটি ধরতে পারলাম। মাছটি দেখে পরিবারসহ সন্তানরা অনেক খুশি হয়েছে। পাশাপাশি মাছটিকে এক নজর দেখতে ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয়রা।
কুড়িগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় বলেন, এই সময়টা মাছের ডিম দেওয়ার সময়। এ কারণেই বিভিন্ন প্রজাতির মাছ অনেক স্থানে ছোটাছুটি করছে।
তিনি আরও বলেন, বোয়ালমাছ ধরা যাবে, তবে বাঘাআইর মাছ ধরা আইনত নিষিদ্ধ।
আরও পড়ুন: এক বোয়ালের দাম ৪৫ হাজার টাকা
পদ্মায় ধরা পড়ল ১১ কেজির বোয়াল
কুড়িগ্রামে বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যু
কুড়িগ্রামে ঝড়-বৃষ্টির সময় বাড়ির আঙিনায় আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (৯ জুন) সকাল ৭ টার দিকে ভুরুঙ্গামারী উপজেলার জয়মনিরহাট ইউনিয়নের আইকুমারীভাতি গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
নিহত যুবক জুয়েল মন্ডল (৩০) ওই গ্রামের আবেদ আলী মন্ডলের ছেলে।
আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে বজ্রপাতে দুই বন্ধুর মৃত্যু
স্থানীয়রা জানান, ঝড় বৃষ্টির সময় বাড়িতে আম কুড়াতে গিয়ে আকস্মিক বজ্রপাতে মারাত্মক আহত হয় সে। পরে বাড়ির লোকজন ও এলাকাবাসী জুয়েলকে মুমূর্ষু অবস্থায় ভুরুঙ্গামারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভুরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
এ ছাড়া লাশ দাফনের জন্য পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে বজ্রপাতে ৩ জন নিহত
সিলেটের কানাইঘাটে বজ্রপাতে শিশুর মৃত্যু, আহত ১
কুড়িগ্রামে অতিরিক্ত গরমে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ২ শিক্ষার্থী হাসপাতালে
কুড়িগ্রামে ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষা চলাকালে অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে শ্বাসকষ্ট নিয়ে দুই শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বুধবার (৭ জুন) দুপুরে উপজেলার ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর রাবাইতারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
অসুস্থ দুই শিক্ষার্থী হলো- মো. আমিন আলী ছেলে মো. হাসান আলী এবং মো. হাছান-এর মেয়ে মোছা. হেলেনা। তাদের দুই জনের বাড়ি উত্তর রাবাইতারি বটতলা গ্রামে। তারা ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে প্রাথমিক বৃত্তি প্রাপ্তদের তালিকায় অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর নাম!
ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সফিকুল ইসলাম সফিক জানান, বুধবার নবম শ্রেণির ইংরেজি পরীক্ষা চলছিল। কিছু সময় পর বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে ওই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে হেলেনার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
তিনি আরও জানান, এ সময় তাকে পরীক্ষার হল থেকে অফিস কক্ষে নিয়ে এসে সেবা দেওয়া হয়। পরে সে আরও বেশি অসুস্থ হলে তাকে নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এর কিছুক্ষণ পর একই শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী হাসান আলীর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। পরে তার পরিবারের লোকজন তাকেও নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সেখানে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
চিকিৎসক মোহাম্মদ ইফতেখার উল ইসলাম জানিয়েছেন, বর্তমানে তাদের দুইজনের শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, অতিরিক্ত গরমের পাশাপাশি পরীক্ষার চাপ থাকায় মানসিক ও শারীরিকভাবে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমরা সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজ-খবর রাখছি।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে অনশনে অসুস্থ শিক্ষার্থী হাসপাতালে
৯২ শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি,রাবি কর্তৃপক্ষের মামলা