শিল্প
ইউএসআইটিসির শুনানিতে তৈরি পোশাক শিল্পের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন বিজিএমইএ সভাপতি
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিশনের (ইউএসআইটিসি) গণশুনানিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাককে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান।
বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানের পোশাক শিল্পের রপ্তানি প্রতিযোগিতা সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য ইউএসআইটিসি’র গৃহীত একটি নতুন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
ভার্চুয়াল শুনানিতে বিজিএমইএ'র সহ-সভাপতি মিরান আলী, পরিচালক আসিফ আশরাফ ও আবদুল্লাহ হিল রাকিব এবং শ্রম ও আইএলও বিষয়ক বিজিএমইএ’র স্থায়ী কমিটির সভাপতি আ ন ম সাইফুদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নারীদের দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার: সিমিন হোসেন
ইউএসআইটিসির চেয়ারম্যান ডেভিড এস জোহানসন তার সহকর্মীদের নিয়ে গণশুনানি পরিচালনা করেন।
গণশুনানিতে ফারুক হাসান তার উপস্থাপনায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরেন। এসময় কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, সবুজ প্রবৃদ্ধি, শ্রমিক অধিকার এবং শ্রম আইন সংস্কারের মতো ক্ষেত্রগুলোতে শিল্পের অগ্রগতির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বর্তমান পোশাক বাণিজ্যের চিত্রও তুলে ধরেন। বিশেষ করে বিশ্ববাজারে এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ভালো পারফর্ম করা বৈশ্বিক বিপর্যয় মোকাবিলায় যেসব শক্তি ও ফ্যাক্টর অবদান রেখেছে সেগুলোর চিত্রও তুলে ধরেন।
তিনি বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
শ্রমিকদের অধিকার বৃদ্ধিতে বিশেষ করে শ্রম আইন সংশোধনের মাধ্যমে সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরেন শুনানিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ সফিউল্লাহ।
আরও পড়ুন: বিজিএমইএ নির্বাচন-২০২৪: ভোট পড়েছে ৮৯ শতাংশ, গণনা চলছে
স্বর্ণ শোধনাগার শিল্পে ১০ বছরের কর মওকূফ চায় বাজুস
স্বর্ণ শোধনাগার শিল্পের জন্য ১০ বছরের কর মওকূফ এবং সারাদেশে ৪০ হাজার জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) স্থাপনের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
দেশের জুয়েলার্সদের শীর্ষ সংগঠন বাজুস এনবিআরের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ প্রস্তাব দেয়।
বৃহস্পতিবার(২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে এই প্রাক-বাজেট আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে সভায় এনবিআর সদস্য, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বাজুসের সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায়সহ বাজুস নির্বাহী কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১১ দফা রোডম্যাপ
বাজুস স্বর্ণের ওপর ৩ শতাংশ ভ্যাট, অলঙ্কারের ওপর কর অব্যাহতি এবং অপরিশোধিত বা আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণ আমদানিতে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
বাজুসের সাধারণ সম্পাদক ইউএনবিকে বলেন, পর্যটকদের জন্য স্বর্ণের বার আনা বন্ধে তারা স্বর্ণ নীতিমালা সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন।
একই সঙ্গে স্বর্ণ আমদানির করমুক্ত সীমা ১০০ গ্রামের পরিবর্তে ৫০ গ্রাম করার প্রস্তাব করেন তিনি।
ব্যাগেজ নিয়মের সমন্বয় সাধন করে যাত্রীকে ওয়ান টাইম ব্যাগেজ রুলের সুবিধা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাজুস।
এর আগে এনবিআর কর মওকূফ স্বর্ণ ২০০ গ্রাম থেকে কমিয়ে ১০০ গ্রাম করে। এনবিআরের এ সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীরা। কিন্তু স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা এখনও সন্তুষ্ট নয়। তাই তারা আবারও ভ্রমণকারী ও অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য করমুক্ত স্বর্ণ আমদানির সীমা কমাতে চান।
আরও পড়ুন: ১৪ এপ্রিল থেকে বস্তায় চালের জাত ও মূল্য লিখতে হবে: খাদ্য মন্ত্রণালয়
প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চান রুগ্ণ শিল্পের মালিকরা
শিল্প মন্ত্রণালয়ের চিহ্নিত করা রুগ্ণ শিল্পগুলোর জন্য সরকার ঘোষিত এক্সিট সুবিধা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চেয়েছেন এরূপ শিল্পের মালিকরা।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
রুগ্ণ শিল্পের পুনর্বাসন সংক্রান্ত এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় শিল্প মালিকরা বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর রুগ্ণ শিল্পের পুনর্বাসন ও দায়দেনা নিষ্পত্তির জন্য ২০০৯ সালে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করেছিল।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট প্রমাণ করে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকবান্ধব: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
পরবর্তীতে টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কারখানার দায় দেনা অবসায়ন প্রকল্পে সরকার সার্কুলার জারি করেছে, কিন্তু ব্যাংকের অসহযোগিতার কারণে এক্সিট নিতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন তারা।
এসকল শিল্প রুগ্ণ হলেও, ব্যাংকগুলোর মালিকদের খেলাপি দেখিয়ে অর্থঋণ আদালতে মামলা করেছে। এতে নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগও গ্রহণ করতে পারছেননা তারা।
এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চেয়েছেন রুগ্ণ শিল্পের মালিকরা।
কমিটির চেয়ারম্যান ছাদেক উল্ল্যাহ চৌধুরী জানান, রুগ্ণ শিল্পের পুনর্বাসনের জন্য ১৯৯৮ সালে মুন্সেফ কমিটি গঠিত হয়েছিল। রুগ্ণ শিল্প পুনর্বাসনে ১০০ কোটি টাকার তহিবল গঠন করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। পরে এ সংক্রান্ত কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তবে ২০০৮ সালে এফবিসিসিআই’র উদ্যোগে নতুন করে রুগ্ণ শিল্পের ডাটাবেজ তৈরি করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে রুগ্ন শিল্পের এক্সিট সুবিধা বাস্তবায়নসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা নিয়ে সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসার আশ্বাস দেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।
কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ রেজাউল করিম রেজনু বলেন, রুগ্ণ শিল্প ব্যবসার ক্ষেত্রে ওয়ান স্টপ সার্ভিস অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু রুগ্ণ শিল্পগুলোর মালিকরা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও বিমসটেক একসঙ্গে কাজ করবে: প্রধানমন্ত্রী
অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি গ্রামীণ উন্নয়নে গুরুত্ব দিন: একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী
তৈরি পোশাক শিল্পকে অন্য দেশে নিয়ে যেতে চায় সরকার: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পকে অন্য দেশে স্থানান্তরের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকার তৈরি পোশাক খাতকে ধ্বংস করছে।
রবিববার (১২ নভেম্বর) ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।
এ ছাড়া ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি পোশাক শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে শিথিল করা এবং চার শ্রমিককে হত্যা করার জন্য সরকারের সমালোচনা করেন।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনের উদ্যোগ জনগণই বানচাল করবে: রিজভী
তিনি বলেন, ‘সরকার অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য দেশের সবচেয়ে বড় খাত গার্মেন্টস শিল্পকে ধ্বংস করার নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) ১৯৭৪ সালের মতো আবারও দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করতে চান এবং দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে চান।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, সরকারের প্ররোচনায় মালিকরা শনিবার ১৫০টি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে।
বিএনপির এই নেতা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, যে পুলিশ তৈরি পোশাক শ্রমিকদের উপর হামলা চালিয়েছে তারা ১১ হাজার তৈরি পোশাক শ্রমিককে আসামি করে মামলা করেছে।
রিজভী বলেন, ‘জনগণ বিশ্বাস করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৈরি পোশাক ব্যবসা অন্য দেশে স্থানান্তর করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার গ্যারান্টি চান।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের হাতে শুধু বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরাই নয়, পেশাদার গার্মেন্টস শ্রমিকরাও নিরাপদ নয়। এ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে চারজন গার্মেন্টস শ্রমিক নিহত হয়েছেন।’
বিএনপি নেতা বলেন, বিরোধী দলের চলমান আন্দোলন দমনে সরকার আবারও সাদা পোশাকে পুলিশ ব্যবহার করে গুম করতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা কালো গ্লাসে ঢেকে মাইক্রোবাসে করে ‘নাৎসি বাহিনীর’ মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং গণতন্ত্রপন্থী শক্তিকে তুলে নিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এমনকি সাধারণ মানুষও রেহাই পাচ্ছে না। তারা র্যাব-পুলিশের নামে গণতান্ত্রিক শক্তির বাবা-মা, ছেলে, সন্তান, ভাই-বোনসহ আত্মীয়-স্বজনদের তুলে নিয়ে গুম করছে।’
ভোটের অধিকার ফিরে পেতে যারা স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন করছে তাদের বিরোধী না হতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান রিজভী।
তিনি দাবি করেন, রবিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির ৩৬৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ, হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১০ হাজার ৭৭০ জন বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: একতরফা নির্বাচনের লক্ষ্যেই বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ: রিজভী
বাংলাদেশ এখন ‘নিষ্ঠুর একদলীয় শাসনের’ অধীনে: রিজভী
আঞ্চলিক শিল্প মূল্য শৃঙ্খল তৈরির উপর জোর অর্থনীতিবিদদের
বাংলাদেশ-জাপান এবং উত্তর-পূর্ব ভারতকে সংযুক্ত করে একটি আঞ্চলিক শিল্পে মূল্য শৃঙ্খল (ভ্যালু চেইন) তৈরি করতে সরকারি সংস্থা, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ও বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করে একটি ত্রিপক্ষীয় প্ল্যাটফর্ম গঠনের উপর জোর দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
বুধবার(২৭ সেপ্টেম্বর) এক আলোচনায় প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদরা এই পরামর্শ দেন।
তারা বলেন, চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করে এই অঞ্চলটি একটি বড় প্রবৃদ্ধির কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। তারা বলেন, এই অঞ্চলে শিল্প, অবকাঠামো ও জ্বালানি সংযোগ স্থাপনের জন্য ব্যাপক বিনিয়োগ, বাণিজ্য নীতি ও কর সংস্কার, পণ্য সমন্বয় এবং শুল্ক ব্যতীত অন্য বাধা অপসারণ প্রয়োজন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর প্রতিষ্ঠার দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় বাংলাদেশ উত্তর-পূর্ব ভারতের শান্তি ও স্থিতিশীলতায় সহায়তা করেছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ক উন্নয়নে কৌশলগত সহযোগিতা বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: রাষ্ট্রদূত ইয়াও
তিনি বলেন,‘এখন সময় এসেছে আঞ্চলিক শিল্প ও উন্নয়নকে আরও এগিয়ে নেওয়ার।’
মঙ্গলবার(২৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় জাপান দূতাবাস আয়োজিত বাংলাদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারতসহ বঙ্গোপসাগরে আঞ্চলিক সংযোগ উন্নয়ন এবং শিল্পে মূল্য শৃঙ্খল প্রতিষ্ঠার সেমিনারে বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি এবং এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমও বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশে একটি প্রধান বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগকারী হলো জাপান। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বন্দরের সঙ্গে সংযোগকারী সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্থাপনে সহায়তা করছে দেশটি।
জাপান ২০১৪ সাল থেকে বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট (বিআইজি-বি) উদ্যোগের অধীনে ৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অঞ্চলে এবং এর বাইরে শিল্প ও অবকাঠামো ত্বরান্বিত করতে কাজ করছে।
এ ছাড়াও উত্তর-পূর্ব ভারতে পরিকাঠামো ও শিল্প নির্মাণে ভারতকে সহায়তা করছে জাপান।
রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ফর ডেভেলপিং কান্ট্রিজের অধ্যাপক ড. প্রবীর দে বলেন, 'এই অঞ্চলে একটি শিল্প মূল্য শৃঙ্খল এখন খুবই প্রয়োজন।’
যেহেতু এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে অনেকগুলো উপাদান জড়িত থাকবে, তাই আঞ্চলিক শিল্প মূল্য শৃঙ্খল প্রতিষ্ঠায় অগ্রগতির জন্য বাংলাদেশ, ভারত ও জাপানকে একটি ত্রিপক্ষীয় কাঠামোগত সহযোগিতা চুক্তির আওতায় আসার পরামর্শ দেন তিনি।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, যদিও এটি একটি সম্ভাব্য এবং গুরুত্বপূর্ণ ধারণা, কিন্তু এটি এমন কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি যা মোকাবিলা করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, 'প্রকল্পের ব্যয় বেশি হচ্ছে কি না তাও মাথায় রাখতে হবে।
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর ২০২৬ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে উল্লেখ করে ড. দেবপ্রিয় বলেন, বন্দরের চাহিদা মূল্যায়ন করা গুরুত্বপূর্ণ। যদি বন্দরে পর্যাপ্ত পরিমাণে কার্গো আসে তবেই এর সর্বোত্তম ব্যবহার হবে। সেই চাহিদা তৈরির জন্য এখনই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রয়োজনীয় শিল্প স্থাপন করা গুরুত্বপূর্ণ, নেপাল ও ভুটানকে কীভাবে মূল্য শৃঙ্খলে সংযুক্ত করা যায় তাও ভাবতে হবে।
আরও পড়ুন: পারমাণবিক অস্ত্র সম্পূর্ণ নির্মূলে বৈশ্বিক অঙ্গীকার আরও জোরদারের আহ্বান মোমেনের
তিনি বলেন, নেপাল ও ভুটানের সংযোগ ছাড়া মাতারবাড়ী কার্যকর হতে পারে না।
দেবপ্রিয় বলেন, প্রায়শই প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা ভূ-রাজনৈতিক ইস্যুরা মাধ্যমে তৈরি হয়। ভারত একটি ফেডারেল ব্যবস্থা এবং বৈদেশিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক দিল্লির মাধ্যমে নির্ধারণ হয়। এই বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া দরকার বলে জানান তিনি।
অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘জাপান তার শিল্প চীন থেকে বাংলাদেশে স্থানান্তর করবে কি না সেটিও একটি বিষয় হবে।’
ভারতভিত্তিক এশিয়ান কনফ্লুয়েন্সের নির্বাহী পরিচালক সব্যসাচী দত্ত অনলাইনে যুক্ত হয়ে বলেন, জাপান ইতোমধ্যেই উত্তর-পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশে অনেক সংযোগ পরিকাঠামো তৈরি করেছে, তবে আরও অনেক কিছু করা দরকার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মাতারবাড়ী ও চট্টগ্রাম থেকে ত্রিপুরার সাব্রুম ও আগরতলা পর্যন্ত চার লেনের মহাসড়ক ও রেলপথের মধ্যে মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটির উন্নয়নে একটি আমূল পরিবর্তন আনতে পারে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর, কিন্তু কিছু গোষ্ঠী তিক্ততা সৃষ্টির চেষ্টা করছে: মোমেন
বাংলাদেশ ও ভারতের পাশাপাশি জাপানের মধ্যে বাণিজ্যের প্রতিবন্ধকতাগুলোও দূর করার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিস্তৃত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি সই, বিনিয়োগের পরিবেশের উন্নতি, সীমান্তের ওপারে পণ্যের নির্বিঘ্ন চলাচল এবং তৃতীয় দেশের বাণিজ্যকে সহজতর করার কিছু অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা: গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ করেননি স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র
দেশের শিল্প-সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘আমাদের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির হাজার বছরের যে ঐতিহ্য রয়েছে, সেগুলোকে আরও সমৃদ্ধ করতে হবে। এজন্য আমাদের দেশের শিল্পী, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিকর্মীদের আরও বেশি মনযোগী হতে হবে।
শুক্রবার (২১ জুলাই) সিলেটে ‘জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা ২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাস অত্যন্ত সমৃদ্ধ। সিলেট অঞ্চলের অনেক মনীষী আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বিশিষ্টতা দিয়েছেন। বিশেষ করে হাসন রাজার গান, শাহ আব্দুল করিমের গান — ওনাদের সৃষ্টিশীল কর্ম মানুষের মনে চিরস্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। এর কারণ সম্ভবত এসব গুণীজন একাধারে গান রচনা, সুরারোপ, সংগীত চর্চায় আত্মনিবেদিত ছিলেন। সে কারণে তাদের সৃষ্টি অনন্য ও অমর হয়ে আছে।’
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৬ দিনের সফরে যাচ্ছেন ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড
তিনি বলেন, ‘শুধু সিলেট অঞ্চলের নয়, আমাদের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, সাহিত্যিক মীর মোশাররফ হোসেন — এরকম অনেক গুণীজন তাদের অনন্য সৃষ্টি রেখে গেছেন। এদের মতো করে শিল্প-সংস্কৃতির চর্চায় মনোনিবেশ করলে আমাদের সংস্কৃতি আরও সমৃদ্ধ হবে, আরও বৈচিত্র্যময় হবে। আর সেজন্য আজ যারা শিল্পকলার বিভিন্ন শাখায় অবদানের জন্য সম্মাননা পেলেন এবং আগামীতে যারা পাবেন তারা এসব সৃষ্টিশীল কাজে আরও বেশি মনোনিবেশ করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার আমাদের সংস্কৃতি চর্চায় সবধরনের সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। জেলা, উপজেলা পর্যায়ে শিল্পকলার নিয়মিত কর্মকাণ্ড আয়োজনে সরকারি ব্যবস্থাপনা আগের চেয়ে এখন অনেক বাড়ানো হয়েছে।’
গুণীজনদের কাজের সরকারি স্বীকৃতি হিসেবে শিল্পকলা একাডেমির সম্মাননা সংস্কৃতি কর্মীদের উৎসাহিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে ৫ গুণীজনের হাতে ‘জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা ২০২২’ তুলে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।
সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন- লোকসংস্কৃতিতে মিহিরকান্তি চৌধুরী, কণ্ঠসংগীতে পূর্ণিমা দত্ত রায়, নাট্যকলায় চম্পক সরকার, আবৃত্তিতে জ্যোতি ভট্টাচার্য, যন্ত্রসংগীতে (বাঁশি) মো. মিনু মিয়া।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ, সিলেটের চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন খান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সিলেট জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে সিলেটের গুণীজন, শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিলেটের জেলা সংস্কৃতিবিষয়ক কর্মকর্তা অসিত বরণ দাশ গুপ্ত।
আরও পড়ুন: সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুর রহমানের মৃত্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
রোহিঙ্গা নির্যাতনের কথা শুনলেন মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি ও সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী
শিল্পের প্রবৃদ্ধি ছাড়া ৭.৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন অসম্ভব: বিজিএমইএ সভাপতি
বর্তমান সংকটকালীন বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সাম্প্রতিক রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স এবং বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের নিম্নমুখী ধারায় সরকার আগামী অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ঘোষণা দিয়েছে, তা শিল্পের প্রবৃদ্ধি ছাড়া জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষমাত্রা অর্জন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান
শুক্রবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বাজেটের ইতিবাচক দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, এবারের বাজেটের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশের চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, উচ্চতর জিডিপি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা ও রাজস্ব বাড়ানো।
ফারুক বলেন, যেহেতু জিডিপি’র প্রায় ৩৫ দশমকি ৬ শতাংশ আসে শিল্প খাত থেকে, যা ২০৪১ সাল নাগাদ ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। শিল্পের সকল সুযোগ ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো গেলে কাঙ্ক্ষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ তার।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমরা মনেকরি অর্থনীতিকে প্রানবন্ত রাখতে, প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষকে অর্থনৈতিক সুরক্ষা দিয়ে একটি অন্তর্ভূক্তিমূলক অর্থনীতি তৈরি করার জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে যা বর্তমান মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত যৌক্তিক। তবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় পোশাক শ্রমিকদের অন্তভর্‚ক্ত করার বিষয়টির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
প্রস্তাবিত বাজেটে রপ্তানিমুখী শিল্পখাতের জন্য ইতিবাচক প্রস্তাবগুলো তুলে ধরে তিনি বলেন, আমদানি ও রপ্তানিতে ব্যবহৃত কন্টেইনার আমদানিতে করভার কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা। কৃত্রিম আঁশের তৈরি কাটা ফেব্রিক্স এবং নষ্ট টুকরা (এক মিটারের বেশি দীর্ঘ নয়); বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেষ্টিং ইনস্টিটিউশনের নিকট নমুনা হিসেবে বিনামূল্যে সরবরাহকৃত ফেব্রিক্স (তিন বর্গমিটারের নীচের আকৃতির) এবং ট্যাপস অ্যান্ড ব্রেইডসের উৎপাদন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি প্রদান।
ফারুক প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩টি পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের উপর ১৫ শতাংশ মূসক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে সবধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমানো ও এলএনজি ও এলপিজি’র আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি করেন।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেলেও নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহের জায়গাটিতে আমরা এখনও পিছিয়ে আছি। আমাদের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সব ধরনের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
ফারুক বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণায় আমরা রপ্তানিমূখী বস্ত্র ও তৈরি পোশাকখাতের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো দিক নির্দেশনা খুঁজে পাইনি। বিশেষ করে আমরা উৎসে কর কমানোর প্রস্তাব না করে ২০২১-২২ অর্থবছরের যেটি ছিল, অর্থাৎ শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করার জন্য প্রস্তাব করেছিলাম। কারণ এমনিতেই কোভিডের কারণে আমাদের শিল্পে যে ক্ষতি হয়েছে, সেটি পুষিয়ে নিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। বাজেট বক্তব্যে অন্যান্য বছরের মতো রপ্তানিখাতগুলোর জন্য প্রণোদনা বাবদ অর্থ বরাদ্দের কোনো ঘোষণা আসেনি বলেও জানান তিনি।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০২১ সালের আগষ্ট মাসে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে বর্তমানে ৩০ বিলিয়ন ডলারের নীচে নেমে এসেছে। সে সময়টিতে কিন্তু আমাদের রপ্তানি বেড়েছে, রপ্তানি ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩১ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ ঐ এক বছরে রপ্তানি বেড়েছে ১১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার, আর চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে রপ্তানি বেড়েছে ৩ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। যদিও শেষের ২মাসে রপ্তানি কমে এসেছে।
বর্তমান সংকট তুলে ধরে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের ফলে আমাদের পণ্যের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। অনেক কারখানা সক্ষমতার বাইরে চলছে, আগামি মাসগুলোতে আমরা এই অবস্থা উত্তরণের কোন লক্ষণ দেখছি না। এর উপর ১ জুলাই থেকে ব্যাংক সুদের যে ক্যাপ নির্ধারিত ছিল তা তুলে দেয়া হচ্ছে। এর ফলে আমাদের ব্যয় আরও বাড়বে এবং আমরা প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাব।
তিনি বলেন, আমাদের পোশাকের প্রধান দুই বাজার আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোতে ঋণের সুদের হার অনেক বেড়েছে; মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অনেক কমেছে। পোশাক রপ্তানির জন্য ইউরোপের জার্মানি অফিসিয়ালি জানিয়েছে, দেশটি মন্দার কবলে পড়েছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর অবস্থাও ক্রমশ সঙ্গীন হচ্ছে। আশঙ্কার বিষয় হলো- ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের জানুয়ারি-মার্চ মাসের আমদানি তথ্য নেগেটিভ প্রবৃদ্ধি দেখাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের পোশাক আমদানি নভেম্বরে কমেছে ৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ, এবং ডিসেম্বরে কমেছে ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
নভেম্বর-মার্চ সময়ে ইউরোপে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি ভ্যালুতে বেড়েছে ৫ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং ভলিউমে কমেছে ৪ দশমিক ২৬ শতাংশ। অবশ্যই পণ্যের রপ্তানি মূল্য বেড়েছে বলে এমনটি ঘটেছে।
চলমান সংকটময় পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে উৎসে কর ২০২১-২২ অর্থবছরের ন্যায় শূন্য দশমকি ৫০ শতাংশ ধার্য করে আগামী ৫ বছর পর্যন্ত তা কার্যকর করার জন্য পুনরায় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ফারুক।
এছাড়া নগদ সহায়তার উপর আরোপকৃত ১০ শতাংশ কর প্রতাহারের অনুরোধও জানান তিনি। যেহেতু নগদ সহায়তা কোন ব্যবসায়িক আয় নয়, তাই নগদ সহায়তার অর্থকে করের আওতার বাইরে রাখাই যুক্তিসংগত বলে দাবি তার।
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে হাইকমিশনের সহায়তা চায় বিজিএমইএ
করারোপ করা সংক্রান্ত কয়েকটি প্রস্তাবনাও তুলে ধরে তিনি বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পের মূল্যায়নের সময় স্বাভাবিক হারে ৩০ শতাংশ কর আরোপ না করে কর্পোরেট কর হার ১২ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন। তৈরি পোশাক শিল্পের সাব-কন্ট্রাক্ট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক চুক্তির মূল্য পরিশোধের সময় প্রস্তাবিত ধাপ অনুযায়ী উৎসে কর ধার্য করা, উক্ত করকে চূড়ান্ত করদায় হিসেবে গণ্য করা, অন্যথায় মূল্যায়নের সময় কর আরোপকালে কর্পোরেট ট্যাক্স হার ১২ শতাংশ হারে কর ধার্য করা। রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য পরিশোধিত ফি হতে উৎসে আয়কর কর্তনের হার ২০ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ করা।
তিনি বলেন, বিগত চার দশকে আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছলেও আমাদের পণ্যের উপাদান পরিবর্তন তুলনামুলকভাবে কম হয়েছে। বিশ্বে মোট টেক্সটাইল চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশই নন-কটন এবং বৈশ্বিক পোশাক বাণিজ্যের ৫২ শতাংশ পণ্য নন-কটনের। আর আমাদের নন-কটন পোশাকের রপ্তানির হার মাত্র ২৬ শতাংশ। সরকারকে নন-কটন খাতে বিনিয়োগ ও রপ্তানি উৎসাহিত করতে এবং প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখতে নন-কটন পোশাক রপ্তানির উপর ১০ শতাংশ (রপ্তানি মূল্যের) হারে বিশেষ প্রনোদনা প্রদানের অনুরোধ করেন তিনি।
ফারুক বলেন, টেক্সটাইল ও পোশাকখাত থেকে বছরে প্রায় ৫ লাখ টনের মতো ঝুট তৈরি হয়। এগুলো রিসাইকেল করে পুনরায় কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব, যা প্রকারান্তরে আমাদের দেশজ প্রবৃদ্ধি আনবে। তাই, এ খাতে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে রিসাইকেলিং শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রক্রিয়া, পণ্য ও সেবাকে শুল্ক ও ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখার দাবি করেন তিনি।
বন্ড লাইসেন্স নবায়নের মেয়াদ দুই বছরের পরিবর্তে ৩ বছর করার দাবি করেন ফারুক। এছাড়া কাঁচামাল আমদানিতে এইচ. এস. কোড সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের বিষয়টি বিবেচনার জন্যও পুনরায় অনুরোধ করেন ফারুক।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বিশ্বে ব্যবসা সহজীকরণে বাংলাদেশের অবস্থান আরও উন্নত করার জন্য সেবা প্রদানকারী সংস্থা, যেমন কাষ্টমস, বন্দর এর সেবা প্রাপ্তি আরও গতিশীল ও সহজ করা গেলে তা ব্যবসাবান্ধব পরিবেশকে আরও উন্নত করবে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের স্বস্তি দিতে প্রয়োজন নীতি সহায়তা ও নীতি স্থিতিশীলতা। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদে আর্থিক ও রাজস্ব সংক্রান্ত নীতি স্থির করা হলে বিনিয়োগকারীরা স্বস্তির সঙ্গে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
বিশ্ব পোশাক বাজারে বাংলাদেশের শেয়ার মাত্র ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এই শেয়ারটি ১২ শতাংশে এ উন্নীত করা এবং ২০৩০ সাল নাগাদ ১০০ বিরিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তারা কাজ করছেন বলেও জানান ফারুক হাসান।
আরও পড়ুন: এলডিসি উত্তোরণে বাংলাদেশকে সহায়তায় ইইউ’র প্রতি বিজিএমইএ প্রধানের আহ্বান
ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পে ৯০ শতাংশ বিদেশি শিল্পীই ‘অবৈধ অভিবাসী’
মেকআপ আর্টিস্ট ও চুলের স্টাইলিস্ট থেকে শুরু করে নৃত্যশিল্পী ও তরুণ অভিনেতা-অভিনেত্রী; ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের প্রতিটি অঙ্গনেই ভিনদেশি শিল্পিদের আনাগোনা ক্রমেই বাড়তে দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে টেলিকম ও তথ্য প্রযুক্তির মতো সেক্টরের সাধারণ ট্রেন্ড এটি ।
কিন্তু দেশটির চলচ্চিত্র শিল্পী ইউনিয়নের দাবি,সাম্প্রতিক এই ট্রেন্ডের কারণে যোগ্য ভারতীয় নাগরিকরা দেশিয় চলচ্চিত্র শিল্পে কাজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং তাও এমন সময়ে যখন মহামারির দুই বছর পরে বলিউড তার আগের অবস্থানে ফেরার জন্য লড়াই করছে।
আরও পড়ুন: বাণিজ্যিক সিনেমায় অনুদান বন্ধের দাবি: চলচ্চিত্র পরিষদের প্রতিবাদ
দেশটির চলচ্চিত্র শিল্পী ইউনিয়নের তথ্য অনুসারে,ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মরত প্রায় ৯০ শতাংশ বিদেশিদের বৈধ ওয়ার্ক পারমিট নেই। তবে দেশটির পুলিশ সাধারণত এ বিষয়ে কোনো ভূমিকা রাখে না।
ভারতীয় সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি অসংখ্য আঞ্চলিক ভাষার সিনেমা ব্যবসা নিয়ে গঠিত। বাংলার টলিউড থেকে তামিলনাড়ুর কলিউড পর্যন্ত, এই শিল্পে অনেক মানুষ জড়িত। ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্প বছরে ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে।
একজন ইউনিয়ন সদস্য একটি ভারতীয় মিডিয়া আউটলেটকে বলেছেন,‘ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বর্তমানে একটি বড় সমস্যার সম্মুখীন। এখানে ভারতীয় কর্মীদের বিদেশি কর্মীরা পরিবর্তে কাজ করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই বিদেশিদের অনেকেই ভিসার নিয়ম লঙ্ঘন করে ভারতে অবৈধভাবে কাজ করছেন।’
বলিউডও একটি খারাপ সময় পার করছে। ২০২২ সালে এ পর্যন্ত মুক্তি পাওয়া ২০টি বড় বাজেটের ছবির মধ্যে ১৫টি বক্স অফিসে বাজেভাবে ব্যর্থ হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে-কঙ্গনা রানাউতের ধাকদ, অক্ষয় কুমারের রক্ষাবন্ধন এবং আমির খান অভিনীত লাল সিং চাড্ডা।
আরও পড়ুন: মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব: এবার বিশেষ জুরি পুরস্কার পেল ‘আদিম’
ইরানের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা জাফর পানাহি গ্রেপ্তার
পর্যটন শিল্পকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে হবে: প্রতিমন্ত্রী
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী জানান, দেশের পর্যটন শিল্পকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে হবে।
সোমবার দুপুরে গাজীপুরে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ‘সালনা পর্যটন রিসোর্ট এন্ড পিকনিক স্পট’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি জানান, পর্যটনকে নিয়ে আগে সেইভাবে চিন্তা করা হয়নি, আজকে যেভাবে চিন্তা করা হচ্ছে। বর্তমান বিশ্বে কেউ আজকে পিছিয়ে থাকতে চায় না। সবাই এগিয়ে যাচ্ছে পর্যটনে। তাহলে আমরা কেন পিছিয়ে থাকবো? আমরা এগিয়ে যেতে চাই। সেজন্য দরকার আমাদের পর্যটনকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা। দেশি-বিদেশি থেকে শুরু করে বেসরকারি খাতের সবাইকে পর্যটনের বিকাশে এগিয়ে আসতে হবে।
আরও পড়ুন: পর্যটন কেন্দ্রে সবাইকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে: পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী জানান, পর্যটন সম্পর্কে যেকোন কথা বলতে গেলেই এই খাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান সামনে আসবে। তিনি বাংলাদেশকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। সেই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বেসরকারি খাতই সব দেশের পর্যটনকে এগিয়ে নিয়েছে। সরকার শুধু নীতিগত সাপোর্ট দেয়। আমরা আমাদের অংশীজনদের সকল প্রকার নীতিগত সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত। আগামী ডিসেম্বর মাসে পর্যটন মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন সম্পূর্ণ হলে দেশের পর্যটন শিল্পের সামগ্রিক উন্নয়নের দ্বার উন্মোচন হবে। পর্যটন শিল্প বিকশিত হলে দেশের জিডিপিও আরো বাড়বে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন বলেন, শিল্পের বিকাশে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। পর্যটন একটি ব্যাপক সম্ভাবনাময় শিল্প। দেশের পর্যটন এখন এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন সেটি এখন বাস্তবায়ন হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারকে আকাশপথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে যুক্ত করা হচ্ছে: পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. আলি কদরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, বিমান পবিহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুকেশ কুমার সরকার, মো. ওলিউল্লাহ, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহির মো. জাবের ও গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানসহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সালনা রিসোর্ট এন্ড পিকনিক স্পটের নির্মাণ কাজ ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে শেষ হয় চলতি বছরের ৩০ জুন। এখানে রয়েছে আধুনিক ছয়টি কটেজ, রেস্টুরেন্ট, পেস্ট্রি ও কফি কর্ণার, কনফারেন্স হল এবং ২ টি পিকনিক শেড। শিশুদের জন্যও রয়েছে বিনোদন সুবিধা ও রাইড। ৩.১২ একর জমির ওপর এই সালনা রিসোর্টটি গড়ে তোলা হয়েছে। ঢাকা থেকে ৩৩ কিলোমিটার উত্তরে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীতে গাজীপুর জেলার দক্ষিণ সালনাতে এই রিসোর্টটি অবস্থিত।
আরও পড়ুন: ১৫ বছরে এভিয়েশন খাতে প্রবৃদ্ধি হবে তিনগুণ: পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
পোশাক শিল্পের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দায়িত্বশীল হতে হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, তৈরি পোশাক শিল্পের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মালিক শ্রমিক উভয়কেই দায়িত্বশীল হতে হবে।
বুধবার ঢাকায় ব্র্যাক সেন্টারে সিপিডি এবং খ্রিষ্টান এইড বাংলাদেশ যৌথভাবে আয়োজিত ‘রিসেন্ট আরএমজি গ্রোথ হোয়াট লিসনস উই লার্নড এবাউট ডিসেন্ট এমপ্লয়েমেন্ট?’-শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অতিসম্প্রতি আমাদের তৈরি পোশাক খাতের গ্রোথ বেশ ভাল। এ ধারাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। এজন্য আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তৈরি পোশাক খাতের অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের অনেক উন্নতি হয়েছে, কোন কোন ক্ষেত্রে আশানুরূপ উন্নতি হয়নি। এজন্য আরও কাজ করার সুযোগ আছে। এছাড়া একে অপরের প্রতি দোষারোপ না করে আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করতে হবে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা থেকেও এ সব ক্ষেত্রে আরও পরিস্থিতির উন্নতির তাগাদা রয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেনসহ কোন দেশ থেকে খাদ্য আমদানিতে বাধা নেই: বাণিজ্যমন্ত্রী
টিপু মুনশি বলেন, কারখানায় শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় দর-কষাকষির জন্য ট্রেড ইউনিয়ন থাকা দরকার। আমরাও সেটা চাই। তবে এ সকল ট্রেড ইউনিয়নের নেতাদের শিক্ষিত হতে হবে। তাদের শ্রমিক ও মালিকের স্বার্থ বুঝতে হবে। প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখতে হবে, প্রতিষ্ঠানের প্রতি দরদ থাকতে হবে। জাতীয় স্বার্থ দেখতে হবে। শ্রমিকদের স্বার্থ, সুযোগ, সুবিধা দেখার দায়িত্বও কারখানার মালিকের। উভয়ে মিলেমিশে কাজ করলে শোভন বা ডিসেন্ট কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে এবং আমাদের তৈরি পোশাক শিল্প অনেক এগিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতকে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। গ্রিন ফ্যাক্টরি গড়ে তুলতে বিপুল বিনিয়োগ হচ্ছে। ফ্যাক্টরিগুলোকে কর্মবান্ধব করে তুলতে ব্যয় বাড়ছে। কিন্তু সে তুলনায় তৈরি পোশাকের বিক্রয় মূল্য বাড়ছে না বরং কোন কোন ক্ষেত্রে মূল্য কমছে। সে বিষয়গুলোকেও বিবেচনায় নিতে হবে। সরকার ফ্যাক্টরির মালিক এবং শ্রমিকদের ভাল চায় এবং প্রয়োজনীয় সবধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। এ শিল্পের প্রতি কর্মীদের আস্থারও উন্নতি হয়েছে। উভয় পক্ষ মিলে এ সেক্টরের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সরকারের কাছে তুলে ধরলে, এগুলো সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডি'র রিসার্স ডিরেক্টর ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সিপিডি'র চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান (ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে), শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) খালেদ মামুন চৌধুরী, গার্মেন্টস ট্রেড ইউনিয়ন সেন্টারের প্রেসিডেন্ট এডভোকেট মন্টু ঘোষ, বিজিএমইএ'র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শহিদুল্লাহ আজিম, বিকেএমইএ এর নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কারস সলিডারেটি এর নির্বাহী পরিচালক মিসেস কল্পনা আাক্তার, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভ. এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর সিনিয়র ফেলো মিসেস মাহিন সুলতান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন খ্রিষ্টান এইড বাংলাদেশ এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মিসেস নুজহাত জাবিন।
আরও পড়ুন: কমতে পারে ভোজ্যতেলের দাম: বাণিজ্যমন্ত্রী
চাল-গমের দাম নির্ধারণ করে দেবে সরকার: বাণিজ্যমন্ত্রী