কোভিড-১৯
বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২১ কোটি ছাড়াল
বিশ্বে মহামারি করোনাভাইরাসের নতুন ডেল্টা ধরনের কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগী ও আক্রান্তদের মৃত্যু সংখ্যা। যুক্তরাষ্ট্রের জনস্ হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ৪৪ লাখ ১৪ হাজার ৮৪০ জন এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২১ কোটি ৮ লাখ ২০ হাজার ৫১৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট ৪৮৬ কোটি ৭০ লাখ ৪ হাজার ৪৭৪ ডোজ করোনার টিকা প্রদান করা হয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৭৬ লাখ ১৩ হাজার ৪৯০ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৬ লাখ ২৭ হাজার ৮৪৩ জন।
আরও পড়ুন: করোনায় মৃত্যু ২৫ হাজার ছাড়াল
অপরদিকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫১১ জনে। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ২ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার ৯৯ জন। মৃত্যুর দিক দিয়ে দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়।
বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে মোট ৩ কোটি ২৩ লাখ ৫৮ হাজার ৮২৯ জনের সংক্রমণ নিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমণের স্থানে অবস্থান করছে। একই সময়ে মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার ৫৮৯ জনে।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ২২১
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, দেশে কয়েকদিন ধরে কমছে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা। গেলো ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৪৫ জনের। এসময় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ৫ হাজার ৯৯৩ জনের।
নতুন মৃত্যুসহ দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ২৩ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ লাখ ৫৩ হাজার ২০৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ হাজার ৮৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।এই সময় শনাক্তের হার শতকরা ১৭.১৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন: অ্যাস্ট্রাজেনেকার আরও প্রায় ৮ লাখ ডোজ টিকা আসছে আজ
এই পর্যন্ত করোনায় দেশে মৃত্যুর হার ১.৭২ শতাংশ। এই পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ১৩ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫৫ জন। দেশে সুস্থতার হার ৯২.৭৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ৫৭ জন, খুলনা বিভাগে ১৫ জন, চট্টগ্রামে ৪৩ জন, রংপুরে ০৭ জন, বরিশালে ০৪ জন, সিলেটে ০৭ জন, রাজশাহীতে ০৫ জন এবং ময়মনসিংহে ০৭ জন মারা গেছেন।
আক্রান্ত ও উপসর্গে বরিশাল বিভাগে ৭ মৃত্যু
বরিশাল বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে করোনায় চার জন ও উপসর্গ নিয়ে তিন জন মারা গেছেন। একই সময়ে নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১৮০ জন।
আরও পড়ুন: করোনায় শেখ মুজিব মেডিকেলে আরও ৫ মৃত্যু
শুক্রবার সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে তিন জন এবং করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি জানান, একই সময় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৮০ জন। এ নিয়ে বিভাগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৩৪০ জনে। আর এ সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়েছে ১ হাজার ৩৮০ জন, এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২৯ হাজার ৬৬৩ জন।
আরও পড়ুন: সিলেটে করোনায় আরও ১২ মৃত্যু, শনাক্ত ৪১৪
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার) সকাল পর্যন্ত শেবাচিমের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে নয়জন ও করোনা ওয়ার্ডে আট জন ভর্তি হয়েছেন।
করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে এখন ১৩৮ জন চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে ৫৪ জন করোনা ওয়ার্ডে এবং ৮৪ জন আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
বিশ্বে করোনায় ৪৪ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু
বিশ্বে মহামারি করোনাভাইরাসের নতুন ডেল্টা ধরনের কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগী ও আক্রান্তদের মৃত্যু সংখ্যা। যুক্তরাষ্ট্রের জনস্ হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ৪৪ লাখ ২ হাজার ২ জন এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২০ কোটি ৯৯ লাখ ৩৪ হাজার ৮৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে।এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট ৪৮২ কোটি ৪৩ লাখ ৭৫ হাজার ৮৭৬ ডোজ করোনার টিকা প্রদান করা হয়েছে।করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৭২ লাখ ৯৩ হাজার ৯৬৯ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৬ লাখ ২৫ হাজার ১৬৬ জন।
আরও পড়ুন: হেফাজতের ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা মুহিবুল্লাহ
অপরদিকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৭২ হাজার ৬৪১ জনে। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ২ কোটি ৪ লাখ ৯৪ হাজার ২১২ জন। মৃত্যুর দিক দিয়ে দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়।বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে মোট ৩ কোটি ২৩ লাখ ২২ হাজার ২৫৮ জনের সংক্রমণ নিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমণের স্থানে অবস্থান করছে। একই সময়ে মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার ৪৯ জনে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ২৭০
বাংলাদেশ পরিস্থিতিবৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, দেশে কয়েকদিন ধরে কমেছে করোনায় মৃতের সংখ্যা। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৫৯ জনের। এসময় শনাক্ত হয়েছে আরও ৬ হাজার ৫৬৬ জনের।নতুন মৃত্যুসহ দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৮৭৮ জন। এযাবৎ আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ লাখ ৪৭ হাজার ২১০ জন।এর আগে বুধবার আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৭২ জনের মৃত্যু এব ৭ হাজার ২৪৮ জন শনাক্ত হয়েছিল।গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ হাজার ২২৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এই সময় শনাক্তের হার ১৭.৬৪ শতাংশ।
আরও পড়ুন: দেশে ফিরেছেন ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার হওয়া ১৩ বাংলাদেশি
এ পর্যন্ত করোনায় দেশে মৃত্যুর হার ১.৭২ শতাংশ। মোট সুস্থ হয়েছে ১৩ লাখ ৩৭ হাজার ১৮১ জন। দেশে সুস্থতার হার ৯২.৪০শতাংশ।গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ৫০ জন, খুলনা বিভাগে ১২ জন, চট্টগ্রামে ৩৮ জন, ,রংপুরে ০৮ জন, বরিশালে ১০ জন, সিলেটে ২৩ জন, রাজশাহীতে ১৩ জন এবং ময়মনসিংহে ০৫ জন মারা গেছেন।
সিলেটে করোনায় আরও ১২ মৃত্যু, শনাক্ত ৪১৪
সিলেট বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে আরও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সিলেটে ১০ জন এবং হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে একজন করে রয়েছেন।
বুধবার সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: করোনা: সিলেট বিভাগে আরও ১৭ মৃত্যু
তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫০ হাজার ৪২ জনের।
এছাড়া একই সময় সুস্থ হয়েছেন ৬৫০ জন। সব মিলিয়ে ৩৮ হাজার ৪৪৫ জন সুস্থ হয়েছেন। নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৩ জন। এ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৫৪১ জন।
আরও পড়ুন: করোনা: রামেক হাসপাতালে ১০ মৃত্যু
কুষ্টিয়ায় করোনায় আরও ৪ জনের মৃত্যু
কুষ্টিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে মৃতের সংখ্যাও ছিল ৪ জন। বুধবার সকাল ৯ টায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মো. মেজবাউল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর পাশাপাশি রোগী ভর্তির চাপও আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে বুধবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত ১৬৬ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১২৮ জন। আর উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৩৮ জন।
এদিকে কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ২৯১টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে নতুন করে ৫৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৯০ শতাংশ।
জেলায় এ পর্যন্ত মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা হচ্ছে ১৬ হাজার ৯৭৭ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ৩১ জন। এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে জেলায় মারা গেছেন ৬৮৫ জন। নতুন করে শনাক্ত হওয়া ৫৫ জনের মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ৩২ জন, কুমারখালী উপজেলায় ১৩ জন, দৌলতপুর ও ভেড়ামারা উপজেলায় কোন আক্রান্ত নেই। মিরপুর উপজেলায় ৯ জন এবং খোকসা উপজেলায় একজন।
এখন পর্যন্ত জেলায় ৯৫ হাজার ৪২ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়া গেছে ৮৯ হাজার ৭৬৮ জনের। বাকিরা নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছেন। বর্তমানে কুষ্টিয়ায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ২৬১ জন। এদের মধ্যে হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ১৮৮ জন। হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ২ হাজার ৭৩ জন।
আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্ত ২০ কোটি ৮৫ লাখ ছাড়িয়েছে
করোনায় আরও ১৯৮ জনের মৃত্যু
করোনা: সিলেট বিভাগে আরও ১৭ মৃত্যু
সিলেট বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ১১ জন এবং ওসমানী হাসপাতালে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে এ বিভাগে ৯১৯ জনের মৃত্যু হলো।
মঙ্গলবার সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।
আর পড়ুন:করোনা ও উপসর্গে নতুন ৮ জনসহ বরিশালে মৃত্যু ৬০৬
এতে বলা হয়, একই সময়ে ১ হাজার ৪৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় বিভাগে ৩৫৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৪ দশমিক ১৯ শতাংশ। এনিয়ে বিভগে মোট করোনা আক্রান্ত হলো ৪৯ হাজার ৬২৮ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৫ জন। নতুনদের নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৫৩৪ জন।
আরও পড়ুন: করোনা: রামেক হাসপাতালে ১০ মৃত্যু
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৭৫৮ জন। সব মিলিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ৩৭ হাজার ৭৯৫ জন। গেল ২৪ ঘণ্টায় অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে এ বিভাগে আরও ৫১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
করোনা ও উপসর্গে নতুন ৮ জনসহ বরিশালে মৃত্যু ৬০৬
বরিশাল বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে আট জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে করোনায় ছয় জন ও উপসর্গ নিয়ে দুই জন মারা গেছেন। একই সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ২৫৫ জন।
মঙ্গলবার সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে দুই জন এবং করোনা ওয়ার্ডে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে বরিশাল বিভাগে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০৬ জনে।
আরও পড়ুন: করোনা: রামেক হাসপাতালে ১০ মৃত্যু
একই সময় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৫৫ জন। এ নিয়ে বিভাগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৫৯৭ জনে। এই সময় ১ হাজার ৯৬ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ২৬ হাজার ২৪২ জন।
এদিকে, শেবাচিম হাসপাতাল পরিচালক কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় শেবাচিমের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে ১৫ জন ও করোনা ওয়ার্ডে ১৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে এখন ১৭০ জন চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে ৬২ জন করোনা ওয়ার্ডে এবং ১০৮ জন আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ১৮৮ জন করোনা পরীক্ষা করান। এর মধ্যে শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
আরও পড়ুন: করোনা: প্রধান শিক্ষক এখন চায়ের দোকানদার
করোনা: রামেক হাসপাতালে ১০ মৃত্যু
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনায় চার জন ও উপসর্গ নিয়ে পাঁচ জন মারা গেছেন । এছাড়াও করোনামুক্ত হয়ে পরবর্তী শারীরিক স্বাস্থ্য জটিলতায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টার মধ্যে করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: করোনায় বরিশাল বিভাগে ৮ মৃত্যু
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে রাজশাহীর তিন জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও পাবনার দুই জন করে এবং নওগাঁর এক জন রয়েছেন। এদের মধ্যে চারজন পুরুষ ও ছয়জন নারী। যাদের মধ্যে চারজনের বয়স ৬১ বছরের ওপরে।
আরও পড়ুন: করোনা: ঠাকুরগাঁওয়ে আক্রান্ত ১২, মৃত্যু ২
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড ইউনিটে নতুন ২৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। একই সময় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ২৩ জন। মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত করোনা ইউনিটের ৫১৩ বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ২৮৯ জন। এদের মধ্যে আইসিইউতে রয়েছে ১৯ জন।
প্রধান শিক্ষক এখন চায়ের দোকানদার
এক সময় শিক্ষার্থীদের কোলাহল তার চারপাশে ঘিরে থাকত। কিন্তু করোনায় স্কুল বন্ধ থাকায় জীবন বাঁচাতে বেছে নিয়েছেন অন্যপথ। তিনি এখন চায়ের দোকানদার। বলছি মানুষ গড়ার কারিগর খায়রুল ইসলাম বাদশা মিয়ার কথা।
জানা গেছে, গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের শিক্ষিত পরিবারের সন্তান খায়রুল ইসলাম বাদশা। সরকারি চাকরি না করে নিজের বাপ-দাদার জমি বিক্রি করে রেজিয়া মার্কেটের পাশে চার শতক জায়গা কেনেন। আশায় বুক বেধে ২০০১ সালে ৮-১০ জন শিক্ষিত ছেলে মেয়েকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে গড়ে তোলেন আহমোদিয়া স্কুল অ্যান্ড কোচিং সেন্টার। ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চলত স্কুলটিতে।
আরও পড়ুন: করোনা মহামারি: মাটি কাটার কাজ করছেন শিক্ষকরা!
গিদারী ইউনিয়নের মহসিন আলী জানান, স্কুলটিতে পড়ালেখার মান ভালো হওয়ায় দূরদুরন্ত থেকে শিশুরা এই স্কুলে পড়তে আসতো। আমার দুই মেয়েও এই স্কুলে কোচিং করত।
কাউন্সিলের বাজারের আরজিনা বেগম জানান, মেয়েকে স্কুলে দিয়ে ভালো নিশ্চিন্তে ছিলেন। পড়ালেখা ভালোই হতো। স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার তিনি মেয়েকে নিয়ে মহা বিপদে পড়েছেন। অতো টাকা দিয়ে প্রাইভেট মাস্টারও রাখতে পারছেন না, মেয়েকে পড়াতেও পারছেন না।
স্কুলের শিক্ষক হামিদা বেগম জানান, স্কুলের আয় দিয়ে ভালোই চলছিল। ১০ জন শিক্ষকসহ সকলের সংসার। কিন্তু করোনা ও লকডাউনের কারণে সরকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। স্কুলের বেতন যা আসতো তাতে কৃষি মজুর স্বামীসহ চার জনের সংসারে অভাব হতো না। কিন্তু এখন তিনি ধার দেনা করে আর স্বামীর সামান্য আয়ে কোন মতো চালিয়ে নিচ্ছেন।
প্রধান শিক্ষক খায়রুল ইসলাম বাদশা মিয়া জানান, আর কতো টানা যায়। করোনা ও লকডাউনে তার স্বপ্নের প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভেঙে যাওয়ায় তার কাছেএক দুঃস্বপ্নের মতো । তিনি রাতে ঘুমাতে পারেন না। কি বলবো, কি ছিলাম আর এখন কি হলাম।
তিনি জানান, করোনায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষক নিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। নিজের জায়গা জমি বিক্রি করে শিক্ষকদের বেতন পরিশোধ করে বন্ধ করে দেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর নিজের পাঁচ ছেলে মেয়ের সংসার চালাতে গিয়ে সংকটে পরেন। এক প্রকার বাধ্য হয়ে বর্তমানে বাদশা মিয়া স্কুল ঘরের দুই পাশের বেড়া খুলে চায়ের দোকান খুলে বসেন। নিজের হাতে চা তৈরি করে খদ্দের মেটান। খদ্দেরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনার তুললেও বাস্তবতা মেনে নিতে তাকে প্রধান শিক্ষক থেকে চায়ের দোকারি হতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাঙ্খিত উৎপাদনের আশায় ফরিদপুরের‘সোনালী আঁশ’ চাষিরা
গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুর রাফিউল আলম বলেন, ‘করোনাকালীন অসংখ্য স্কুল ও কোচিং সেন্টার নিশ্চিহ্ন হয়েছে। এসব স্কুলের শিক্ষকদের আমরা সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি।’
কোভিড-১৯: শিশু-কিশোর এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আপনার করণীয়
কোভিড-১৯ মহামারির দরুণ দৈনন্দিন জীবনের পরিবর্তন আপনার পরিবারের শিশু, কিশোর এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর প্রতিদিনকার করোনা আগ্রাসন এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রার স্থবিরতা অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ অবস্থায় আপনার নিজের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করার পাশাপাশি আপনার প্রিয় মানুষগুলোর মাঝে তা ছড়িয়ে দিতে পারেন। চলুন, কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পরিবারের শিশু, কিশোর এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয় সম্পর্কে জেনে নেই।
করোনাকালে শিশুদের মানসিক বিকাশ
শিশুদের আবেগ প্রকাশের ধরন যে কোন বয়সের মানুষের থেকে আলাদা। কেউ অস্বাভাবিকভাবে নীরব হয়ে উঠে আবার কেউ অতিরিক্ত রাগ এবং চিৎকার করে। তাই পরিবারের বড়দের এক্ষেত্রে ধৈর্য্যের পরিচয় দিতে হবে।
কখনো কখনো খেলাধুলা ও চিত্রাঙ্কনের মত বিভিন্ন সৃজনশীল ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে তাদের মনের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করুন।
শিশুদেরকে নিজেদের বিরক্তিকর অনুভূতি যেমন রাগ, ভয় এবং দুঃখ প্রকাশ করার জন্য ইতিবাচক উপায় খুঁজে পেতে সাহায্য করুন।
আরও পড়ুন: করোনা মহামারি থেকে শিশুকে নিরাপদ রাখবেন কীভাবে?
তাদেরকে যতটা সম্ভব একটি নির্দিষ্ট রুটিনের ভেতর রাখুন। প্রতিটি সময়ে তাদেরকে একটি করে কাজে নিযুক্ত রাখুন।
শিশুদেরকে সহিংসমূলক ঘটনা থেকে দূরে রাখুন। এরকম অভিজ্ঞতা তাদের স্বাভাবিক আচরণের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
তাদের বুঝিয়ে বলুন যে করোনা সংক্রমণের জন্য কাউকে দোষারোপ করা উচিত নয়। কোভিড -১৯ সম্পর্কে খবর দেখা, পড়াশোনা বা আলোচনা করার সময় সংক্রমণ ও মৃত্যুর কথা উপেক্ষা করে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠার ঘটনাগুলোর প্রতি গুরুত্বারোপ করুন। অন্যান্য সৃজনশীল ও মজাদার বিষয়গুলোর প্রতি তাদের আকৃষ্ট করুন।
যদি পরিবারে কেউ অসুস্থ হয় বা কাউকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, অথবা যদি কোন মৃত্যু হয়, তাহলে শিশুরা অতিরিক্ত উদ্বেগ অনুভব করতে পারে। এমতাবস্থায় যতটুকু সম্ভব তাদেরকে সবকিছুর আড়ালে কোন অভিভাবকের সাথে রাখার চেষ্টা করুন। ভয় কাটানোর জন্য তাদের সাথে কথা বলে তাদেরকে সহজ রাখার চেষ্টা করুন।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
শিশু দুর্ব্যবহার করলে বা কোন ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ করলে শান্তভাবে কথা বলুন। দুরন্ত শিশুদের মধ্যে অনেকেই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্রোধ প্রকাশ করে। এক্ষেত্রে যখন তারা শান্ত হয়ে যাবে তখন ধীরে ধীরে জিজ্ঞাসা করুন তারা কেমন অনুভব করছে। সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং শান্ত্বনামূলক উপায়ে বুঝিয়ে বলুন যে তারা যে আচরণ করেছিলো তা ঠিক নয়। নেতিবাচক আচরণের পিছনে কারণ বোঝার চেষ্টা করুন।
পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে তাদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলুন। তাদের খারাপ লাগা সময়গুলোতে তাদেরকেই জিজ্ঞেস করুন পরিবারের বাইরে তাদের পছন্দের কারো সাথে দেখা করবে কিনা।
শিশুদেরকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার নিয়ম সম্পর্কে শেখান। তাদের শরীরের ব্যাপারে যে কোনো অস্বস্তিকর স্পর্শ বা অনিরাপদ অঙ্গভঙ্গির ব্যাপারে তাদের সতর্ক করুন। তাদের অভিযোগগুলো মনযোগ দিয়ে শুনুন।
আপনার শিশু সম্পর্কিত যে কোন বিশেষ প্রয়োজনে কল করুন চাইল্ডলাইন ১০৯৮-তে।
আরও পড়ুন: বর্ষা মৌসুমে যেসব পুষ্টিকর সবজি খেতে পারেন
করোনাকালে কিশোর-কিশোরীদের মানসিক সমর্থন
করোনাভাইরাস সংক্রমণ কিশোর-কিশোরীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করতে পারে। বয়সন্ধিঃকাল জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। এ সময়ে করোনা প্রাদুর্ভাব মানসিক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে যার মানসিক আঘাত সারা জীবনভর থেকে যেতে পারে।
যে কোন হৃদয়বিদারক ঘটনা, মানসিক চাপ কিশোর-কিশোরীদের অতিরিক্ত উদ্বেগের কারণ হতে পারে, যার প্রতিফলন ঘটতে পারে তাদের খাওয়া-দাওয়ায় বা ঘুমের অভ্যাসে। এমনকি পারস্পরিক কথাবার্তার সময় মনোযোগ এবং একাগ্রতার অভাব হতে পারে। এ সময় তাদের অস্থিরতা কাটাতে তাদেরকে সঙ্গ দিন। তাদেরকে মন খুলে কথা বলার জায়গা তৈরি করে দিন।
আরও পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
এই মহামারির সময় মানুষের অসুস্থ হওয়া রোধকল্পে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলোতে কিশোর-কিশোরীদের ভালো রোল মডেল হতে উৎসাহিত করুন। যদি তারা প্রায়ই হাত ধোয়, অন্যদের থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরে থাকে এবং নিজেদের এবং অন্যদের সুরক্ষার জন্য সর্বত্র মাস্ক পরে, তাহলে ছোট বাচ্চারা এমনকি তাদের সমবয়সীরাও তাদেরকে দেখে শিখবে।
কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে, শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকতে এবং প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শিখতে অনুপ্রেরণা দিন। তাদেরকে এই নীতি অনুসরণ করতে সাহায্য করুন যে, এ সময়টি খারাপ নয় বরং ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে তৈরির মোক্ষম সময়। এটি তাদের সুস্থ ও মনোযোগী থাকতে সাহায্য করবে। শুধু তাই নয়, অনলাইন মাধ্যমগুলোতে নতুন কিছু শেখার মাধ্যমে নিজেদের উপার্জন শুরু করতে পারবে। এই করোনা মহামারীর মধ্যে অনেক কিশোর-কিশোরী নিজেদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করছে।
স্মার্টফোন, ভিডিও চ্যাট, সোশ্যাল মিডিয়া, এমনকি ভিডিও গেমের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে সময় কাটানোর ব্যবস্থা করে দিন। স্কুল-কলেজগুলো অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে তাদের সামাজিক এবং মানসিক চাহিদাগুলোকে পরিপূর্ণ করার জন্য শিক্ষনীয় নির্দেশনা দিতে পারে।
আরও পড়ুন: মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষিত থাকার কিছু সহজ ঘরোয়া উপায়
করোনাকালে বয়োজ্যেষ্ঠদের মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষা
বিষণ্নতা এবং গুরুতর উদ্বেগ বার্ধক্যের ক্ষেত্রে কোন স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। বয়স্করা করোনাভাইরাসের প্রতি বেশি সংবেদনশীল। এই ব্যাপারটি তাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা, ভয় ও হতাশা উদ্রেকের মাধ্যমে তাদেরকে চূড়ান্তভাবে বেঁচে থাকার আশা হারিয়ে ফেলার দিকে ধাবিত করতে পারে। তাই এর জন্য তাৎক্ষণিক ক্লিনিকাল চিকিৎসা এবং সামাজিক সহায়তা আবশ্যক।
বর্তমান সংকট সামাজিক দূরত্বের মাধ্যমে বিচ্ছিন্নতা তৈরি করে প্রত্যেকের রুটিনকে বদলে দিচ্ছে। এতে স্বাভাবিক সামাজিক সহায়তা এবং বৃদ্ধ মানুষগুলোর অন্যদের সাথে যোগাযোগ হ্রাস পাচ্ছে। পরিবার এবং প্রতিবেশী এখন যে কোনও নিয়মিত যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসাবে কাজ করতে পারে। এমনকি সামাজিক পরিষেবাগুলোর (যেমন খাবার সরবরাহ কর্মী) সাথে সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দিতে পারেন। আসলে সামাজিক দূরত্ব মানে তো পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে দেয়া নয়।
বার্ধক্যের সময়ে মানুষ বন্ধু বা পরিবারের কারো মৃত্যু, ব্যক্তি স্বাধীনতা ও আর্থিক বিপর্যয় এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলা প্রভৃতি অভিজ্ঞতাগুলোর সম্মুখীন হয়। যদিও অনেকেরই দুঃখ এবং ক্ষতিগুলোকে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা থাকে। তবুও কারো কারো জন্য শোক কাটানোটা জটিল হয়ে উঠতে পারে। এই অভিজ্ঞতাগুলোর সাথে কোভিড-১৯ মহামারির চাপ মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাতে পারে। তাই এ সময় আপনি ছায়া হয়ে তাদের পাশে দাঁড়ান। তাদেরকে শুধু আশা দেয়া নয়, তাদের মধ্যে এই নিশ্চয়তার অনুভূতিটা জাগ্রত রাখুন যে, তাদের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক বা মানসিক সমস্যায় আপনি তাদের সাথে আছেন।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক: করণীয় এবং প্রতিরোধে যে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে
তাদের প্রতিদিন রুটিনে যেন ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখুন। বিশেষ করে খাওয়া, ওষুধ নেয়া, ব্যায়াম করা ইত্যাদির প্রতি জোর দিন। এছাড়া প্রতিবেশীদের সাথে আড্ডাতেও তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করুন। অবশ্যই করোনাভাইরাস নিয়ে ইতিবাচক আলোচনাতে উৎসাহ দিন।
এছাড়া আপনার বন্ধু, প্রতিবেশী এবং আত্মীয়দের মধ্যে যারা বৃদ্ধ তাদের নিয়মিত খোঁজ-খবর নিন।
যেহেতু অনেকে ম্যাসেজ বিনিময় এবং সোশ্যাল মিডিয়া সংযোগে সাবলীল নাও হতে পারে, তাই তাদের সাথে সরাসরি কল বা ভিডিও-চ্যাট করুন।
এই সময়টা তারা কীভাবে পার করছে, তাদের রুটিনে কেমন পরিবর্তন করতে হতে পারে এবং হতাশা মোকাবিলায় তারা কী ধরনের কাজ করছে তা জিজ্ঞাসা করুন।
আরও পড়ুন: কোলেস্টেরল কমানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
কোভিড চলাকালীন তাদেরকে কিছু মজার ক্রিয়াকলাপ চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করতে পারেন। যেমন: দৈনন্দিন হাঁটা, গান শোনা বা বাজানো, প্রিয় গল্পের বই পড়া, হাস্যরস উপভোগ করা, ধাঁধা, খেলা, ছোট ছোট বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম এবং ধ্যান বা প্রার্থনা।
তাদের অভিজ্ঞতা এবং মেধার ভিত্তিতে তাদের কাছ থেকে আপনার জীবনের জন্য বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা নিন। তাদের কাজ থেকে পাওয়া যে কোন সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। সর্বোপরি, তাদের জীবন -যাপনের পদ্ধতিতে কোন জিনিসটি আপনার ভালো লাগে তা ব্যক্ত করুন।
পরিশেষে, কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিশু, কিশোর এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার্থে তাদেরকে স্বাবলম্বী করে তুলতে হবে। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ কাজের ব্যস্ততায় আপনি ঘরের বাইরে থাকলেও তারা নিজেদের ব্যাপারে খেয়াল রাখতে পারবে। এমনকি, এই করোনাকালীন অনিশ্চিত অবস্থায় যখন আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন, তখন তারা আপনার যত্ন নিতে পারবে।
আরও পড়ুন: বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন