বৈদেশিক-সম্পর্ক
মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নে ১৫০০ মিলিয়ন ডলার দিলো জাপান
মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভৌত অগ্রগতি ৭৮ দশমিক ৩০ শতাংশে পৌঁছেছে। যেখানে ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত আর্থিক অগ্রগতি ৬৫ দশমিক ১৪ শতাংশ। জাপান প্রকল্পটির জন্য আরও ১৫০০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে এ লক্ষ্যে ৪৪তম জাপানি অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসট্যান্স (ওডিএ) ঋণ প্যাকেজের (২য় ব্যাচ) অধীনে মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপারক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ৭ম ধাপের জন্য নোট বিনিময় ও 'ঋণ চুক্তি' সই হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান বাংলাদেশের পক্ষে ‘এক্সচেঞ্জ অব নোট’ এবং ‘লোন এগ্রিমেন্টে’ সই করেন। বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি ‘এক্সচেঞ্জ অব নোটস’ সই করেছেন এবং জাপানের পক্ষে ‘ঋণ চুক্তি’ সই করেছেন জাইকা বাংলাদেশ অফিস, ঢাকা-এর প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহাইড।
ঢাকার শেরেবাংলা নগরের ইআরডি’র এনইসি-২ সম্মেলন কক্ষে চুক্তি সই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
এই জাপানি ওডিএ ঋণের অধীনে, জাপান সরকার প্রকল্পের জন্য ২ লাখ ১৭ হাজার ৫৫৬ মিলিয়ন জাপানিজ ইয়েন (জেপিওয়াই) বা প্রায় ১৫০০ মিলিয়ন ডলার প্রদান করবে।
এই ঋণের সুদের হার হবে নির্মাণের জন্য ১ দশমিক ৬ শতাংশ, পরামর্শ পরিষেবার জন্য শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ, একটি ফ্রন্ট-এন্ড ফি (এককালীন) শূন্য দশমিক ২ শতাংশ এবং ৩০ বছরের ঋণ পরিশোধের সময়কাল, যার মধ্যে ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ড অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন: জাপানের নিরাপত্তা সহায়তা প্রাপ্ত প্রথম ৪ দেশে থাকছে বাংলাদেশ
কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে ১২০০ মেগাওয়াট (৬০০মেগাওয়াটx ২ ইউনিট) আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা-চালিত পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে এবং স্থিতিশীল বিদ্যুৎ সরবরাহের উন্নতির জন্য এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ৫১ হাজার ৮৫৪ দশমিক ৮৮ কোটি টাকা, যার মধ্যে জিওবি ৬ হাজার ৪০৬ হাজার ১৬ কোটি টাকা, জাইকা ৪৩ হাজার ৯২১ দশমিক ০৩ কোটি টাকা এবং সিপিজিসিবিএল ১ হাজার ৫২৭ দশমিক ৬৯ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়কাল ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
জাপান বাংলাদেশের একক বৃহত্তম দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী। স্বাধীনতার পর থেকে জাপান বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অব্যাহত সহায়তা দিয়ে আসছে।
ওডিএ প্রতিশ্রুতি এখন পর্যন্ত ৩০ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
জাপানি ঋণ ও অনুদান বিদ্যুৎ, সড়ক, সেতু, টেলিযোগাযোগ, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন, গ্রামীণ উন্নয়ন, পরিবেশ ও মানবসম্পদ উন্নয়ন ইত্যাদির মতো বিস্তৃত ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে।
জাপানি সহায়তা উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রেখেছে দেশের সার্বিক উন্নয়ন।
আরও পড়ুন: দেশের বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চায় জাপান: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ-জাপানের মধ্যে ৪৪তম ওডিএ ইয়েন ঋণচুক্তি সই
ভিসা নীতি নিয়ে এডিটরস কাউন্সিলের উদ্বেগ, ব্যাখ্যা দিলেন রাষ্ট্রদূত হাস
বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ওপর মার্কিন ভিসা নীতিমালা প্রয়োগের বিষয়ে সাম্প্রতিক মন্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করে সম্পাদক পরিষদের এক চিঠির জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং 'সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের মত প্রকাশের অধিকার' রক্ষায় তার সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ যেকোনো সরকারের সমালোচনামূলক মতামত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, আমরা আমাদের নীতির যে কোনও বিষয়ে জনসাধারণের স্বার্থের প্রতিফলনকে স্বাগত জানাই।’
সম্প্রতি চ্যানেল টুয়েন্টিফোরকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিমালার আওতায় গণমাধ্যমও আসতে পারে বলে রাষ্ট্রদূতের এমন বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়ে এডিটরস কাউন্সিল, বাংলাদেশের সভাপতি মাহফুজ আনামের চিঠির জবাবে রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর বেসরকারি টিভি চ্যানেল২৪ -এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পিটার হাস বলেন, ‘আমরা নীতিটি যে কারো বিরুদ্ধে ভারসাম্যপূর্ণ উপায়ে প্রয়োগ করছি। তারা হোক সরকারপন্থী, বিরোধী দলে থাকুক না কেন, বা তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যই হোক না কেন, এমনকি তারা বিচার বিভাগে থাকুক বা গণমাধ্যমে থাকুক।’
আরও পড়ুন: অবাধ নির্বাচন আয়োজনে সরকারের অঙ্গীকারের সম্পূরক মার্কিন ভিসা নীতি: প্রধানমন্ত্রীকে আজরা জেয়া
চলতি বছরের ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য ভিসা নীতি ঘোষণা করে এবং ২২ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করে যে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশি ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর পিটার হাসকে লেখা চিঠিতে মাহফুজ আনাম বলেন, গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে উপরোক্ত মন্তব্যে বিষয়ে তার মনে এবং সম্পাদক পরিষদের সদস্যদের মনে কিছু প্রশ্ন উত্থাপিত হওয়ায় তিনি চিঠি লিখছেন।
ই-মেইলে আনাম লিখেছেন, ‘সত্যি বলতে কী, এই মন্তব্য আমাদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে, আমাদের অনুরোধ থাকবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার।’
তিনি বলেন, যেহেতু মার্কিন সরকার এবং রাষ্ট্রদূত ব্যক্তিগতভাবে সবসময় স্বাধীন ও স্বাধীন গণমাধ্যমের অবিচল সমর্থক, তাই এই মন্তব্য তাদের বিচলিত করেছে।
ভিসা বিধিনিষেধ ‘তাদের কর্ম ছাড়া অন্য কিছুর উপর ভিত্তি করে নয়,’ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে আনাম বলেন, গণমাধ্যমের ‘কাজ’ লেখা বা সম্প্রচার করা। তিনি জানতে চেয়েছেন যে একজন সাংবাদিক যা লেখেন বা সম্প্রচার করেন তার উপর ভিত্তি করে ভিসা নিষেধাজ্ঞা হবে কিনা।
যদি তাই হয়, তাহলে এটা কি 'মত প্রকাশের স্বাধীনতা' এবং 'সংবাদপত্রের স্বাধীনতা'র আওতায় পড়ে না?গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে এটি কীভাবে ব্যবহার করা হবে? কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করা হচ্ছে?’- চিঠিতে জানতে চেয়েছেন আনাম।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যম কর্মীরাও ভিসা নীতির মুখোমুখি হতে পারে: হাস
আনাম আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী ব্যক্তিগতভাবে এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যমের জন্য সবসময় অনুপ্রেরণা ও অনুকরণের উৎস হিসেবে কাজ করেছে। সেক্ষেত্রে ভিসা নীতি গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হলে প্রথম সংশোধনীর মূল্যবোধ কীভাবে প্রতিফলিত হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
জবাবে পিটার হাস লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে এবং যারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে কথা বলবে এবং তাদের জন্য মার্কিন ভিসা নীতি প্রয়োগ করবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের।
হাস বলেন, 'গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় এই প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রত্যেককে নিজ নিজ ভূমিকা পালনের সুযোগ দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেনের বক্তব্য স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করার জন্য দায়ী বা জড়িত যে কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই নীতি প্রযোজ্য।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত হাস আরও বলেন, এর মধ্যে যারা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রকাশ থেকে বিরত রাখতে পদক্ষেপ নেয় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণ দল পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র: পিটার হাস
মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞায় গণমাধ্যমের অন্তর্ভুক্তির নিন্দা শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিকদের
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে মার্কিন ভিসা নীতির আওতায় গণমাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের প্রকাশ্য ঘোষণার সমালোচনা করেছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষাবিদ ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক।
তারা এটিকে ‘একজন বিদেশি কূটনীতিকের দ্বারা দেশের মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর নজিরবিহীন আক্রমণ’ বলে অভিহিত করেছেন।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এই বিষয়ক একটি প্রশ্নের জবাবে ‘গণমাধ্যম’র বিষয় উল্লেখ করেননি। অথচ রাষ্ট্রদূত হাস এক টিভি সাক্ষাত্কারে বলেছেন, গণমাধ্যমও নতুন ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় পড়তে পারে।
রাষ্ট্রদূতের গণমাধ্যমকে সম্পৃক্ত করা এই মন্তব্যকে কিছু জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতার অবমাননা’ বলে অভিহিত করেছেন।
খালেদা জিয়ার প্রাক্তন প্রেস কর্মকর্তা মুশফিক ফজল আনসারী ‘স্বাধীন গণমাধ্যমকে’ ‘সরকারের হাতিয়ার’ হিসেবে বর্ণণা করায় তার তীব্র সমালোচনা করেন সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদরা।
তারা আরও বলেছেন, এর উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনের আগে ‘বিরোধীদের পক্ষে’ কাজ করানোর জন্য মিডিয়া আউটলেট মালিকদের ও সাংবাদিকদের আরও বেশি ভয় দেখানো।
সব ধরনের সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ড- একটি বিবৃতিতে জানায়, ‘সাংবাদিকদের উপর ভিসা বিধিনিষেধাজ্ঞা অন্তর্ভুক্তিবিষয়ক রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যকে জনগণের কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার এবং গণমাধ্যমের উপর অদৃশ্য সেন্সরশিপ আরোপ করার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে। যা গণতন্ত্র ও সুশাসনের প্রধান স্তম্ভ মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগের বক্তব্য ও পরের বক্তব্যের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞায় গণমাধ্যম অন্তর্ভুক্ত 'সঠিক সিদ্ধান্ত' নয়: শাহরিয়ার আলম
তিনি বলেন, তখন যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল যে ‘গণমাধ্যমকে বাধা দেওয়া বা ভয় দেখানোর জন্য দায়ী’ অর্থাৎ, গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া ব্যক্তিরা ভিসা বিধিনিষেধের মুখোমুখি হবে। অন্যদিকে, রাষ্ট্রদূত হাসের মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের আগের অবস্থান থেকে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের কথা বলে।
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও তারা আগে বলেছিল গণমাধ্যমের জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের শাস্তি দেওয়া হবে, এখন আমরা তাদের আগের অবস্থান থেকে সম্পূর্ণ ইউ-টার্ন দেখতে পাচ্ছি। এটি বাস্তবায়িত হলে, স্বাধীন সাংবাদিকতার সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে এটি।’
কয়েক দশক ধরে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কাজ করা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রবীণ সাংবাদিক বলেছেন, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র এই বিষয়ে কথা বলার সময় গণমাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করেননি।
তিনি আরও বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি করে। এখন গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের উপর হাসের ঘোষণার সম্ভাব্য প্রভাব দেখা বাকি আছে।’
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তবিউর রহমান প্রধান প্রশ্ন রেখেছেন, ‘একইসঙ্গে আপনারা কীভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিষয়ে অন্যদের পরামর্শ দিতে পারেন এবং গণমাধ্যমকে ভিসা বিধিনিষেধের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন?’
অন্যদিকে, মানবাকারকর্মী সুলতানা কামাল একজন টিভি প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেছেন, ‘একটি দেশের ভিসা বাতিল করার অধিকার আছে। তবে তারা ভিসা দেবে না- এমন একাধিক পূর্ব ঘোষণার পেছনে কী উদ্দেশ্য রয়েছে তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।’
তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘ঘোষণা জারি করার এই ধরনের পদক্ষেপ কি সত্যিই কূটনৈতিক শিষ্টাচারকে সমর্থন করে?’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ঘোষণার পর বিএনপি ও জামায়াতপন্থী বেশ কয়েকজন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট ও নেতা কিছু মিডিয়া আউটলেটের সমালোচনা করেন এবং দলগুলোর সম্পর্কে সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশের জন্যও বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের নামও উল্লেখ করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ও তাদের সমর্থকদের শেয়ার করা ভিডিওগুলোতে তারা ভিসা বিধিনিষেধে গণমাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে এবং বিএনপি বর্জন করেছে এমন বেশ কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের নাম উল্লেখ করেছে।
এ ছাড়াও, জামায়াতে ইসলামের একটি এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্ট ‘বাঁশেরকেল্লা’তে পোস্ট করা একটি টুইটে বলেছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত হাস ‘বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু।’
এই বিশেষ সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টটি সংখ্যালঘু আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ‘ঘৃণাত্মক প্রচারণা’ চালানোর জন্য সংবাদ তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন: কোনো নিষেধাজ্ঞা শেখ হাসিনাকে থামাতে পারবে না: কাদের
মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা: গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ করেননি স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র
মেরিটাইম শিল্পে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব আইএমও-তে প্রশংসিত
লন্ডনে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনার বক্তারা মেরিন একাডেমিতে নারীদের অন্তর্ভুক্ত করা সহ মেরিটাইম শিল্পে নারীদের উৎসাহিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন।
লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও)-তে 'এমপাওয়ারিং উইমেন ইন মেরিটাইম অ্যান্ড ওশান ডিপ্লোম্যাসি'- শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আইএমও-তে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং উইমেন ইন ডিপ্লোম্যাসি নেটওয়ার্ক (ডব্লিউডিএন), লন্ডনের সভাপতির দায়িত্বে নিয়োজিত যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন এবং বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, আইএমও-তে নিয়োজিত স্থায়ী প্রতিনিধি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞসহ ১০০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি এতে অংশ নেন।
বৈশ্বিক সামুদ্রিক শিল্পে নারীদের কম উপস্থিতির কথা তুলে ধরে হাইকমিশনার বলেন, বিশ্বব্যাপী ১ দশমিক ২ মিলিয়ন সনদপ্রাপ্ত নাবিকের মধ্যে নারী মাত্র ১ দশমিক ২৮ শতাংশ।
অন্যদিকে, ক্রুজ শিল্পের শ্রমশক্তির মাত্র ২ শতাংশ নারী।
আরও পড়ুন: আইএমও মহাসচিব পদে প্রার্থীর জয়ে আশাবাদী ঢাকা
হাইকমিশনার তাসনিম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেরিন ইন্ডাস্ট্রিতে নারী ক্যাডেট নিয়োগের দূরদর্শী সিদ্ধান্তের জন্য গর্ব বোধ করেন এবং বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে নেভিগেশন অফিসার, মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এবং এমনকি ক্যাপ্টেনের মতো সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট পদ সহ বিভিন্ন ভূমিকার জন্য বার্ষিক ১০০ জনেরও বেশি মহিলা নাবিক নিয়োগ করা হয়। এই রূপান্তরমূলক প্রচেষ্টাগুলো ঐতিহ্যগতভাবে পুরুষ-প্রধান সামুদ্রিক শিল্পে লিঙ্গ বৈচিত্র্যের প্রচারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে।’
দূত নারী পুরুষের সমতা বাড়াতে ও সামুদ্রিক খাতে মহিলাদের কণ্ঠ জোরদার করতে বিআইএমসিও সহ আইএমও সচিবালয়, আইএমও-এর সহযোগী সদস্য, উইমেনস ইন্টারন্যাশনাল শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিং অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউআইএসটিএ ইন্টারন্যাশনাল), উইমেন ইন মেরিটাইম অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউআইএমএএস) এবং নেতৃস্থানীয় শিপিং শিল্প সমিতিগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় কাজ করার জন্য ডাব্লিউডিএন এর দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী নারী নাবিকসহ নাবিকদের অবদানের ওপর বাংলাদেশ হাইকমিশন, লন্ডন কর্তৃক তৈরি একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয় যা অংশগ্রহণকারীদের বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করে ও প্রশংসিত হয়েছে।
উচ্চ পর্যায়ের এই আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড এক্সটারনাল রিলেশনস ডিভিশনের ডিরেক্টর ডোরোটা লস্ট সিমিনস্কা, যুক্তরাজ্যে মালদ্বীপের হাইকমিশনার ড. ফারাহ ফয়জল, জর্জিয়ার আইএমও-এর রাষ্ট্রদূত এবং জনসংযোগ সোফি কাস্ত্রাভা, অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডার হাইকমিশন কারেন-মাই হিল ওবিই, স্টেট ডিপার্টমেন্ট ফর শিপিং অ্যান্ড মেরিটাইম কেনিয়ার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি রাষ্ট্রদূত ন্যান্সি ডব্লিউ কারিগিথু, আইএমওর মার্শাল আইল্যান্ডের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার এবং কার্গোস অ্যান্ড কন্টেইনার ক্যারেজ অন আইএমও সাবকমিটির চেয়ার মেরিয়ান অ্যাডামস, আইএমওতে আর্জেন্টিনার জনসংযোগ এবং ইউএস জারেড ব্যাংকসের জনসংযোগ ফার্নান্দা মিলিশে, সৌদি আরবের এপিআর হায়াত আল ইয়াবিস এবং এডিটর অব ম্যাগাজিন লন্ডনের সম্পাদক এলিজাবেথ স্টুয়ার্ট।
আরও পড়ুন: আইএমও মহাসচিব পদে প্রার্থীকে কূটনীতিকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল ঢাকা
নিরাপদ সামুদ্রিক শিল্প উদ্যোগে আইএমও-এর সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ
ডিএনসিসি মেয়র জাতিসংঘের স্থানীয়-আঞ্চলিক সরকারের উপদেষ্টা মনোনীত
জাতিসংঘের স্থানীয় ও আঞ্চলিক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
সোমবার(২৫ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সেই করা এক চিঠিতে জাতিসংঘের স্থানীয় ও আঞ্চলিক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে মেয়র আতিকুল ইসলামের মনোনয়নের বিষয়টি জানানো হয়।
আরও পড়ুন: জননিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে কোনো প্রকল্প চলতে দেয়া হবে না: আতিকুল
পরে সম্মতি প্রদান করলে ডিএনসিসি মেয়রকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে চূড়ান্তভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
জাতিসংঘের মহাসচিব তার চিঠিতে উল্লেখ করেন, 'আন্তঃসরকার ও জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়নে স্থানীয় ও আঞ্চলিক সরকারের সম্পৃক্ততা জোরদার করার ক্ষেত্রে এই উপদেষ্টা পরিষদের সময়োপোযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে এবং আধুনিক শহর গড়তে স্থানীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে এই উপদেষ্টা পরিষদ করণীয় বিষয় নির্দিষ্ট করতে ভূমিকা রাখবে।'
আরও পড়ুন: ১০ দিনের মধ্যে সব ভবনের মালিককে কাগজপত্র দিতে হবে: মেয়র আতিকুল
চিঠিতে আরও বলা হয়, 'উপদেষ্টা পরিষদ স্থানীয় ও আঞ্চলিক সরকারের সংশ্লিষ্টতা ও কর্মকাণ্ডসংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ দেবে, সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য আমাদের বৈশ্বিক লক্ষ্য অর্জনের প্রয়োজনীয় বিষয় সংশোধনে ভূমিকা রাখবে।
উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা জাতীয় পর্যায়ে যেসব বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত, জাতীয় লক্ষ্য বাস্তবায়নে স্থানীয় ও আঞ্চলিক সরকারগুলোর ধারাবাহিকভাবে ভূমিকা পালন এবং বৈশ্বিক পদক্ষেপেও অবদান রাখবে।
উল্লেখ, ১৫ সদস্যের এই উপদেষ্টা পরিষদের মধ্যে এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে দুইজন সদস্য মনোনিত হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এবং ফিলিপাইনের মাকাতি শহরের মেয়র অ্যাবি বিনায়। অন্যান্য সদস্যগুলো হলো ইউরোপ থেকে তিন জন, আফ্রিকা মহাদেশ থেকে তিনজন, উত্তর আমেরিকা থেকে দুইজন, ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয় অঞ্চল থেকে তিনজন, মধ্য প্রাচ্য ও মধ্য আফ্রিকা (এমইএনএ) থেকে দুইজন।
আরও পড়ুন: ‘সুস্থ, সচল, আধুনিক’ ঢাকা গড়ার প্রতিশ্রুতি আতিকুলের
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, আশা করা হচ্ছে- বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রসহ দেশে অবস্থানরত সব বিদেশি মিশন ও কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বৃহস্পতিবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র।’
তিনি বলেন, তিনি মার্কিন দূতাবাস বা বাংলাদেশে কর্মরত কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো আলোচনা করবেন না।
আরও পড়ুন: 'অভিন্ন অগ্রাধিকার' নিয়ে আলোচনায় বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
এক প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, ‘আমি বলব যে অবশ্যই আমাদের কূটনৈতিক কর্মীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা আমাদের কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্পর্কিত ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে, প্রতিটি আয়োজক দেশকে অবশ্যই সমস্ত কূটনৈতিক মিশন প্রাঙ্গণের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তার বাধ্যবাধকতা বজায় রাখতে হবে এবং কর্মীদের উপর যে কোনো আক্রমণ প্রতিরোধে সমস্ত কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে।’
গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার আবারও গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ করা থেকে বিরত থাকেন।
তিনি বলেন, ‘আমি নির্দিষ্ট পদক্ষেপ, পূর্বরূপ পদক্ষেপ সম্পর্কে বলছি না।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশসহ সব দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া উচিত: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
মুখপাত্র বলেন, তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে সেক্রেটারির কর্তৃত্বের অধীনে বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নিয়েছে, যারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে দুর্বল করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে আমরা বিশ্বাস করি।
মিলার বলেন, ‘এবং ২৪ মে আমরা যখন এই নীতি ঘোষণা করেছিলাম তখন আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছিলাম যে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ নয়। বরং যে কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হবে যাদেরকে আমরা বিশ্বাস করি- গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করার জন্য দায়ী বা জড়িত।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাই আমরা অন্য ব্যক্তিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার বিকল্পটি বজায় রাখি যদি এবং যখন আমরা বিশ্বাস করি যে এটি উপযুক্ত।’
আরও পড়ুন: অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন প্রধানমন্ত্রীর
যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন। তিনি ১৯৯৭ সালে এই চ্যান্সারি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং ২০০০ সালে নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বুধবার বিকালে দূতাবাসে পৌঁছালে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান ফুলের তোড়া দিয়ে তাকে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রী প্রথমে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্ণারে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে তিনি সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে পথ শিশুদের নিয়ে কেক কাটলেন পলক
পরে তিনি বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
তিনি শহিদ মিনার ও বঙ্গবন্ধু কর্ণারসহ দূতাবাসের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে নৌকা বাইচের আয়োজন করবে বিআইডাব্লিউটিএ
আ. লীগ ক্ষমতায় না থাকলে দেশ আবার অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে: প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি
বাংলাদেশে হালাল মাংস রপ্তানির আগ্রহ প্রকাশ মেক্সিকোর ব্যবসায়ীদের
বাংলাদেশে হালাল মাংস রপ্তানির পাশাপাশি দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেছেন মেক্সিকোর ব্যবসায়ীরা।
মেক্সিকো সিটিতে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং ইবারো আমেরিকানা ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘ অর্থনৈতিক সম্ভাবনা উন্মোচন: বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর সেতুবন্ধন’ শীর্ষক সেমিনারে তারা এই আগ্রহ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কোম্পানি বাংলদেশে বিনিয়োগ করতে চায়: বাণিজ্যমন্ত্রী
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এ ছাড়া, সেমিনারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুর রহিম খান, মেক্সিকান বিজনেস কাউন্সিল ফর ফরেন ট্রেড, ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি-সিওএমসিই’র এশিয়া ও ওশেনিয়া বিভাগের প্রেসিডেন্ট সার্জিও লে লোপেজ, মেক্সিকান প্রজাতন্ত্রের আমদানি ও রপ্তানিকারকদের জাতীয় সমিতি এএনআইইআরএম’র ডিরেক্টর মিসায়েল ড্যানিয়েল রেয়েস এবং মেক্সিকান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের মহাপরিচালক নাথান উলফ লাস্টবেডার সেমিনারে বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের (বিজনেস টু বিজনেস পিপল) মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাংলাদেশে চলমান বিভিন্ন মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রযুক্তিসহ সব খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে।
করোনা মহাসংকটের পর রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের মতো বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতার কথাও তুলে ধরেন টিপু মুনশি।
আরও পড়ুন: দেশের বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চায় জাপান: বাণিজ্যমন্ত্রী
সিওএমসিই ও এএনআইইআরএম’র প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে হালাল মাংস রপ্তানির আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়াতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংযোগ বাড়ানোর কথাও বলেন তারা।
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহ প্রকাশ করে বাণিজ্য বাজারের বৈচিত্র্যের উপর জোর দিতে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানান সিওএমসিই’র মহাপরিচালক নাথান উলফ লাস্টবেডার।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুর রহিম খান বাংলাদেশের অনুকূল বাণিজ্য ল্যান্ডস্কেপ নিয়ে আলোচনা করেন। দেশটির ব্যবসায়ী নেতা ও নীতিনির্ধারকদের কৃষি, ওষুধ, আইসিটি, খেলাধুলা, শিক্ষা ও সংস্কৃতির মতো ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে সুযোগ অন্বেষণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বাণিজ্য সম্পর্কিত গবেষণা ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
ইবারো আমেরিকানা ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড বিভাগের সমন্বয়ক ড. আরিবেল কনটেরাস সুয়ারেজ, মেক্সিকোর অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো তুলে ধরেন।
মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম সেমিনারটি পরিচালনা করেন। রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে সমন্বয়মূলক অংশীদারিত্ব, কৌশলগত বিনিয়োগ, উদ্ভাবনী অনুশীলন, দক্ষতা উন্নয়ন ও বাজার অনুসন্ধানের জন্য উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান।
জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণ নেতাদের আবেগ ও উদ্ভাবন অমূল্য সম্পদ: রাষ্ট্রদূত হাস
জলবায়ু ফ্রন্টে তরুণ নেতাদের প্রশংসা করে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বলেছেন, বিশ্বের সামনে উদ্ভূত জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের প্রতিশ্রুতি সত্যিই প্রশংসনীয় ও অনুপ্রেরণাদায়ক।
তিনি বলেন, ‘সবাইকে অবশ্যই তাদের ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি আপনাদের নিজ নিজ দেশে কমিউনিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে আপনাদের উত্সর্গের জন্য সমস্ত জলবায়ু চ্যাম্পিয়নদের প্রশংসা করি।’
২৬-২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস, একটি যুব-নেতৃত্বাধীন সামাজিক উদ্যোগ জেনল্যাবের সঙ্গে সহযোগিতায়, ক্লাইমেট অ্যাকশন চ্যাম্পিয়ন্স নেটওয়ার্ক (সিএসিএন) বাংলাদেশ কনক্লেইভের আয়োজন করে।
লক্ষ্য ছিল বায়ুর মান উন্নত করায় তরুণ জলবায়ুকর্মীদের সঙ্গে সহযোগিতার সুযোগ নিয়ে আলোচনা করা।
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার ৫০ জন জলবায়ু উদ্যমী তরুণ এই ইভেন্টে যোগ দেয়।
রাষ্ট্রদূত হাস সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি তরুণ প্রতিনিধিদের পরিবেশ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় কাজ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং সীমানা পেরিয়ে কাজ করার মাধ্যমে এই তরুণ নেতারা তাদের সম্প্রদায়কে দেখিয়ে দিচ্ছেন যে ভাগ করা সমৃদ্ধির জন্য তাদের একে অপরের প্রয়োজন।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, ‘আপনাদের আবেগ, উত্সর্গ ও উদ্ভাবনী চিন্তা আমাদের সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলোর একটি মোকাবিলার অমূল্য সম্পদ।’
তিনি বলেন, ‘ইতিবাচক কাজ চালিয়ে যান এবং জেনে রাখুন যে বিশ্ব আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা দেখছে এবং সমর্থন করছে। একইসঙ্গে আমরা সকলের জন্য আরও টেকসই এবং ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব গড়ে তুলতে পারি।’
ক্লাইমেট অ্যাকশন চ্যাম্পিয়নস নেটওয়ার্ক (সিএসিএন) হলো ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের অর্থায়নে আঞ্চলিক একটি উদ্যোগ। যার লক্ষ্য এই অঞ্চলে জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য তরুণ নেতৃত্বকে প্রশিক্ষণ দেয়া ও ক্ষমতায়ন করা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ‘অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ’ নির্বাচনে সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র: পিটার হাস
নারীর ক্ষমতায়নে সামাজিক-অর্থনৈতিক-পরিবেশগত বাধাই প্রধান: জাতিসংঘ
সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ক্রমবর্ধমান পরিবেশগত প্রতিবন্ধকতাই নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা দূরী করার পথে উল্লেখযোগ্য বাধা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গ্উইন লুইস।
তিনি বলেন, সারাদেশে অগ্রগতি সত্ত্বেও সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ক্রমবর্ধমান পরিবেশগত প্রতিবন্ধকতা নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা দূরীকরণের পথে উল্লেখযোগ্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।এটি খুলনা ও বরিশালের নারী ও মেয়েদের কাছ থেকে তারা শুনেছেন।
সম্প্রতি জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমের খুলনা ও বরিশাল বিভাগ সফরের ফলাফল তুলে ধরে তিনি বলেন, 'দেশের ভিশন অর্জনে আরও প্রচেষ্টা প্রয়োজন এবং এই পরিবর্তনে নারীদের সমান অংশীদার হতে হবে।’
আরও পড়ুন: কোনটা এগুচ্ছে, নারীর ক্ষমতায়ন, নাকি পুরুষতান্ত্রিকতা?
জাতিসংঘের দলটি এই অঞ্চলে নারীরা যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় তা অনুসন্ধান করে এবং লিঙ্গ বৈষম্য মোকাবিলা ও নারীর ক্ষমতায়নে প্রচেষ্টার অগ্রগতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
সম্প্রতি বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলে সফর করে বাংলাদেশে কর্মরত জাতিসংঘ ও তাদের উন্নয়ন অংশীদারী সংস্থার একটি যৌথ প্রতিনিধি দল। সফরের পর তারা জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতকল্পে অধিকতর কর্মসূচি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
তারা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে জেন্ডার সমতা অর্জনে বাংলাদেশ উল্লেখ্যযোগ্য সাফল্য অর্জন করলেও, জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপক প্রভাবের কারণে খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের নারীরা অনেক সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন।
ইউএন উইমেন, বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টিটিভ গীতাঞ্জলী সিং বলেন, ‘মিশনের প্রতিটি দিন আমরা নারী ও মেয়েদের কাছে থেকে তাদের সংকল্প ও সাহসিকতার কথা শুনেছি। এখানে দেখছি জেন্ডার নিয়ে নানা পুরোনো রীতি-আচার মেয়েদের রয়ে গেছে। এটি সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বাধাগ্রস্ত করছে। জেন্ডার সমতার জন্য একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরিতে পরিবর্তনের অংশীদার হিসেবে, যুবক, তরুণ ও কিশোরদেরও একইসঙ্গে কাজ করা অত্যন্ত জরুরি।
আইএলও, বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পোটিআইনেন বলেন, ‘বাংলাদেশের নারীরা শ্রমবাজারের চাহিদা মোতাবেক প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে পিছিয়ে আছে। এটি শ্রমবাজারে তাদের কম অংশগ্রহণের জন্য দায়ী।’
আরও পড়ুন: ‘প্লানেট ৫০-৫০’ অর্জনে নারীর ক্ষমতায়নের পূর্ণ বাস্তবায়ন অপরিহার্য: স্পিকার
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সহকারী প্রতিনিধি নুর আহমেদ খোন্দকার বলেন, ‘আগে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীদের কথা শোনা হতো না কিন্তু এখন নারীরা কমিউনিটি-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জলজ চাষ প্রকল্পের মালিকানা গ্রহণ করছেন। পাইকারি বাজার ব্যবস্থাপনাসহ সক্রিয়ভাবে মাছ চাষে অংশ নিচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘নারীদের ক্ষমতায়ন তাদের পারিবারিক অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনছে। সেই সঙ্গে জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবিলায় সাহায্য করছে।’
জাতিসংঘের এ মিশনের মূল বিষয় হলো জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা (জিবিভি) রোধে পদক্ষেপ নেওয়া এবং শিশু ও নারীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
এই প্রসঙ্গে, ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি, শেলডন ইয়েট বলেন, ‘দেশে বাল্যবিবাহের মতো ক্ষতিকর প্রথা প্রতিরোধে শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সহিংসতার মৌলিক কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সামাজিক রীতিনীতি।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর অফিসের তত্ত্বাবধায়নে তিন দিনব্যাপী জেন্ডার সমতা মিশনে জাতিসংঘের ৫টি সংস্থার প্রতিনিধি ও তাদের অংশীদাররা অংশ নেন।
আরও পড়ুন: নারীর ক্ষমতায়ন বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে: রাষ্ট্রদূত