আইনশৃঙ্খলা
র্যাব হেফাজতে সুলতানার মৃত্যু: কথিত সহযোগী আল আমিন গ্রেপ্তার
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার প্রধান আসামি আল আমিনকে বুধবার র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) গ্রেপ্তার করেছে।
বৃহস্পতিবার র্যাব-৩ এর সিনিয়র এএসপি (মিডিয়া) ফারজানা হক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর একটি দল ঢাকার শাহজাহানপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. আল আমিনকে (৩২) গ্রেপ্তার করে।
র্যাব জানায়, গত ২৪ মার্চ র্যাব হেফাজতে মারা যাওয়া নওগাঁ ভূমি অফিসের সহকারী সুলতানা জেসমিনের একজন ‘সহায়ক’ এই আল আমিন।
র্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘আল আমিন ও তার দলের সদস্যরা রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কর্মরত যুগ্ম সচিব মো. এনামুল হকের একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে বেকার যুবকদের সরকারি চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।’
এতে বলা হয়,পরে ওই কর্মকর্তা বিষয়টি জানতে পারলে তিনি আল আমিন ও তার সহযোগী সুলতানা জেসমিনের বিরুদ্ধে রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। সুলতানা জেসমিনকে গত ২৩ মার্চ গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আল আমিন জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন: জেসমিনকে উঠিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে র্যাবের জুরিসডিকশন নিয়ে প্রশ্ন হাইকোর্টের
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মামলা দায়েরের পর থেকে গ্রেপ্তার আসামিকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয় এবং একপর্যায়ে তিনি র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন।
আল আমিনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই চক্রের অন্য সহযোগীদের গ্রেপ্তারে র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
র্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আল আমিন একজন মোবাইল ব্যাংকিং এর এজেন্ট। তিনি উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে জালিয়াতি করে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য একটি গ্রুপের সঙ্গে কাজ করছেন।
আরও পড়ুন: র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না: মোমেন
প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে পাঠালেন আদালত
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. তোফাজ্জল হোসেন জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
এর আগে শামসকে আদালতে হাজির করা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার পরিদর্শক আবু আনসার তাকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন।
জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন শামসুজ্জামানের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে প্রথম আলোর সম্পাদকসহ ৩ জনকে লিগ্যাল নোটিশ
গত ২৯ মার্চ ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংলগ্ন আমবাগান এলাকায় তার বাসা থেকে শামসকে সাদা পোশাকের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা ধরে নিয়ে যায়।
একই দিন দৈনিক প্রথম আলোতে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট প্রতিবেদন’ প্রকাশের অভিযোগে শামসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন এক যুবলীগ নেতা।
আরও পড়ুন: প্রথম আলোর সাংবাদিক শামস আদালতে
চট্টগ্রামে প্রথম আলোর সম্পাদকসহ ৩ জনকে লিগ্যাল নোটিশ
স্বাধীনতা দিবসে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশের অভিযোগে প্রথম আলোর সম্পাদক,নির্বাহী সম্পাদক ও প্রতিবেদককে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন চট্টগ্রামের এক আইনজীবী।
অ্যাডভোকেট মিঠুন বিশ্বাস নামে এই আইনজীবী প্রথম আলোর ঠিকানায় পাঠানো এ নোটিশে সাতদিনের মধ্যে জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানিয়েছেন।
বুধবার (২৯ মার্চ) দেওয়া এই আইনি নোটিশে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ এবং প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে বিবাদী করা হয়।
লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া আইনজীবী মিঠুন বিশ্বাস গণমাধ্যমকে বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবসে এ ধরনের মিথ্যা খবর প্রথম আলো ইচ্ছাকৃতভাবে ছেপেছে। এটা প্রতীয়মান হয়েছে যে তারা পরস্পরের যোগসাজশে ইচ্ছাকৃতভাবে মহান স্বাধীনতা দিবসে অসৎ উদ্দেশ্যে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সচিত্র প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছেন। তাই ডাকযোগে এ আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন: প্রথম আলোর সাংবাদিক শামস আদালতে
ঢাবিতে প্রথম আলোর সাংবাদিক গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর
শর্তসাপেক্ষে জামিন পেলেন ‘শিশু বক্তা’ রফিকুল
ধর্মীয় সমাবেশে রাষ্ট্রবিরোধী বা উসকানিমূলক বক্তব্য না দেয়ার শর্তে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের চারটি মামলায় রফিকুল ইসলাম মাদানী ওরফে শিশু বক্তাকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রফিকুল ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী মোল্লা এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান।
রফিকুল ইসলামের আইনজীবীরা জানান, এই আদেশে রফিকুল ইসলামের মুক্তির পথে সব বাধা দূর হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীসহ ২ জনের বিচার শুরু
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল রাষ্ট্রবিরোধী ও উসকানিমূলক বক্তব্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে রফিকুল ইসলামকে নেত্রকোণার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাবের একটি দল। ২০২১ সালের ৮ এপ্রিল রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে গাজীপুরের গাছা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়।
পরে ওই বছরের ১১ এপ্রিল গাজীপুরের বাসন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা করা হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় রফিকুলইসলামকে হাইকোর্ট থেকে জামিন দেওয়া হয়।
নেত্রকোনা জেলার পশ্চিম বিলাশপুরের সাওতুল হেরা মাদরাসার পরিচালক রফিকুল ইসলাম গাছায় ওয়াজ মাহফিলে ‘উস্কানিমূলক'বক্তব্য দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
তিনি নেত্রকোনার জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের শাখা যুব জমিয়তের সহ-সভাপতি।
আরও পড়ুন: ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
প্রথম আলোর সাংবাদিক শামস আদালতে
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দিকে পুলিশের একটি দল তাকে আদালতে নিয়ে যায়।
বুধবার (২৯ মার্চ) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান এলাকার বাসা থেকে সাদা পোশাকে শামসকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা।
ওই দিনই যুবলীগের এক নেতা দৈনিক প্রথম আলোতে 'মিথ্যা ও বানোয়াট প্রতিবেদন' প্রকাশের অভিযোগে শামসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।
আরও পড়ুন: প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা একটি মামলায় প্রথম আলোর প্রতিবেদককে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে বিরোধী দল বিএনপি শামসের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি একটি 'ভয়াবহ ঘটনা'।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনও প্রথম আলোর সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছে।
এছাড়া প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ১৯ মিনিটে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে এ বিষয়ক একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে প্রথম আলোর সাংবাদিক গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর
প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র প্রথম আলোর সম্পাদকসহ অন্য কর্মীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।
বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ১৯ মিনিটে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়।
যেখানে বলা হয় যে প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে পত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান, প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস, অজ্ঞাতনামা 'সহকারী ক্যামেরাম্যান' সহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে রমনা থানায় ওই দিন রাত দেড়টায় মামলাটি দায়ের করেন আবদুল মালেক (মশিউর মালেক) নামে এক আইনজীবী।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ৩১ ও ৩৫ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বাসা থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের সদস্যরা তুলে নেওয়ার প্রায় ১০ ঘণ্টা পর বুধবার বিকালে পত্রিকাটির সাভার প্রতিনিধি শামসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক একটি মামলা দায়ের করা হয়।
রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা গোলাম কিবরিয়া বাদী হয়ে শামসের বিরুদ্ধে দেশের স্বাধীনতা দিবসে ভুয়া ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন, যেমনটা ইউএনবির গতদিনের (বুধবার) প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা
প্রথম আলো সর্বশেষ মামলার বাদী আবদুল মালেকের সঙ্গে কথা বলতে সক্ষম হয়েছে। যিনি বলেন, ‘মামলাটার আমি এজাহার দায়ের করেছি, হয়েছে (মামলা) কি না, জানি না। হয়েছে কি না, ওরা (পুলিশ) যোগাযোগ করেছে কোথায় কোথায়, পুলিশের ব্যাপার তো, বোঝেন না।’
তবে রমনা থানা পুলিশ পত্রিকাটিকে কোনো তথ্য দিতে রাজি হয়নি। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, রাত সাড়ে ১২টার দিকে গণমাধ্যমটির দুই সাংবাদিক থানায় যান। কিন্তু দেড় ঘণ্টা চেষ্টা করেও থানায় ঢুকতে পারেননি।
তাদের এফআইআরের একটি অনুলিপি সংগ্রহ করতে সকালের ফিরে যেতে বলা হয়।
এ বিষয়ে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: সিআইডি প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে একটি মামলায় গ্রেপ্তার করেছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ওয়াজে রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য না দেওয়ার শর্তে মাদানীকে জামিন
ভবিষ্যতে কোনো ওয়াজ মাহফিলে রাষ্ট্রবিরোধী ও উসকানিমূলক বক্তব্য না দেওয়ার শর্তে ঢাকা ও গাজীপুরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের চার মামলায় রফিকুল ইসলাম মাদানীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে রফিকুল ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী মোল্লা।
আরও পড়ুন: জেসমিনকে উঠিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে র্যাবের জুরিসডিকশন নিয়ে প্রশ্ন হাইকোর্টের
আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান। এই আদেশের ফলে শিশু বক্তা হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলামের কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
এসব মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট বলেন, রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা, তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, চার্জশিট, মামলার এজহার যাচাইবাছাই করে আমরা তাকে জামিন দিতে একমত নই।
তবে রফিকুল ইসলাম মাদানী যদি কোনো ওয়াজ মাহফিল বা সভায় রাষ্ট্র ও সমাজবিরোধী এবং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনবিরোধী, ধর্মীয় সংঘাত সৃষ্টি করে এমন বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান না করার হলফনামা আকারে মুচলেকা দেন, তাহলে আমরা তার জামিন বিবেচনা করতে পারি।
গত বছরের ২৭ জুন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন শর্ত দেন।
হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে হলফনামা কারা কর্তৃপক্ষের কাছে যায়। সম্প্রতি কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে রফিকুল ইসলাম মাদানী হলফনামায় সই করেন।
হলফনামায় তিনি লেখেন, কোনো ওয়াজ মাহফিলে রাষ্ট্র ও সমাজবিরোধী এবং প্রচলিত আইনবিরোধী কোনো বক্তব্য প্রদান করব না। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে ও জনমনে সংঘাতের সৃষ্টি করে এমন বক্তব্য ওয়াজ মাহফিলে দেব না।
পরে বিষয়টি হাইকোর্টকে জানালে তার জামিন মঞ্জুর করা হয়।
রাষ্ট্রবিরোধী ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে ২০২১ সালের ৮ এপ্রিল সৈয়দ আদনান শান্ত নামের এক ব্যক্তি মতিঝিল থানায় রফিকুল ইসলাম মাদানীসহ পাঁচজনকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে একই বছরের ১৯ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
একই অভিযোগে ২০২১ সালের ৮ এপ্রিল রফিকুলের বিরুদ্ধে গাজীপুরের গাছা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন র্যাব-১-এর নায়েব সুবেদার আব্দুল খালেক। ২০২১ সালের ৩০ জুন মাদানীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন র্যাব-১ -এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুল হক।
২০২১ সালের ১১ এপ্রিল মো. মামুন নামের একজন বাদী হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলা করেন। ২০২১ সালের ১১ এপ্রিল গাজীপুরের বাসন থানায় মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন।
তদন্ত শেষে একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. সাখাওয়াত হোসেন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আরও পড়ুন: ইউএনওদের উপজেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক: হাইকোর্ট
ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের কান-মুখ খোলা রাখতে দেয়া নোটিশের কার্যকারিতা হাইকোর্টে স্থগিত
ইউএনওদের উপজেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক: হাইকোর্ট
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) উপজেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ঘোষণা সংক্রান্ত বিধান অবৈধ এবং সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া দুটি রিটের চূড়ান্ত শুনানি করে বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে পৃথক রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি, ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম ও মিনহাদুজ্জামান লিটন।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে মৃত সুলতানার সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তলব হাইকোর্টের
পরে হাসান এম এস আজিম বলেন, উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও আর্থিক শৃঙ্খলা আনয়নসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের বিধানসংবলিত উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারা অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
তিনি বলেন, ৩৩ ধারাকে সংবিধানের ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া ইউএনওরা বিভিন্ন আমন্ত্রণপত্রে উপজেলা পরিষদ না লিখে উপজেলা প্রশাসন লিখে থাকেন- এটাও অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তবে উপজেলা পরিষদ আইনের ২৯ ধারায় উপজেলা পরিষদের যেসব কমিটি রয়েছে সগুলো সেভাবে এবং সরকার যেসব কমিটি করে দেবে সগুলো সেভাবে পরিচালিত হবে।
এছাড়া কমিটির ব্যাপারে আদালত কোনো হস্তক্ষেপ করেননি।
তিনি আরও বলেন, হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে বলেছেন এখন থেকে ইউএনওরা সাচিবিক সহায়তা দেবেন উপজেলা পরিষদকে এবং উপজেলা পরিষদের কাছে জবাবদিহিতা করবেন।
এর আগে উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দুমকি উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খান বীরু, উপজেলা চেয়ারম্যান রিনা পারভীন, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম আহম্মেদ ও ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদা আক্তার বাদী হয়ে এ বিষয়ে রিট করেন।
একই সঙ্গে আইনজীবী মো. মিনহাদুজ্জামান লীটন একটি রিট করেন।
২০২১ সালে এ দু’টি রিটের প্রেক্ষিতে প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। রুলে উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও আর্থিক শৃঙ্খলা আনয়নসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের বিধান সংবলিত উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারা কেন অবৈধ ও সংবিধানের ৭, ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।
এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, স্থানীয় সরকার সচিবসহ ১৫ সচিবকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল। এ রুলের পর চূড়ান্ত শুনানি করে হাইকোর্ট বুধবার রায় দেন।
আরও পড়ুন: জেসমিনকে উঠিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে র্যাবের জুরিসডিকশন নিয়ে প্রশ্ন হাইকোর্টের
রিট দায়েরের পর রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম বলেছিলেন, উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারা চ্যালেঞ্জ করে রিটটি করা হয়েছে। আইনের ৩৩ ধারার (১) উপধারায় বলা হয়েছে—উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন এবং তিনি পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করিবেন।
এছাড়া ৩৩-এর (২) উপধারায় বলা হয়েছে—পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিপালন এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য কার্যাবলি পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সম্পাদন করিবেন।
এই আইনজীবী আরও বলেছিলেন, পরিষদ কোনো সিদ্ধান্ত দিলে তা ইউএনও বাস্তবায়ন না করলে পরিষদের করণীয় কিছু থাকে না। কারণ উপজেলা পরিষদের কাছে ইউএনওর জবাবদিহির বাধ্যবাধকতা আইনে রাখা হয়নি।
স্থানীয় সরকারব্যবস্থার স্বাধীনতাকে এই একটি ধারার মাধ্যমে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই ৩৩ ধারা সংবিধানেরও ৭ ও ৫৯ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি। ৫৯ (১)-এ স্থানীয় শাসন সম্পর্কে বলা হয়েছে—আইনানুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের ওপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের স্থানীয় শাসনের ভার প্রদান করা হইবে।
ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম আরও বলেছিলেন, মাঠ প্রশাসন কোনো চিঠিপত্র লিখলে বা অনুষ্ঠান করলে দাওয়াতপত্র বা ব্যানারে উপজেলা পরিষদ না লিখে লিখছে উপজেলা প্রশাসন। এই উপজেলা প্রশাসন কোথাও উল্লেখ নেই।
এর মাধ্যমে ইউএনওরা স্থানীয় সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার করে থাকেন।
এছাড়া সরকারি কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে যতগুলো কমিটি গঠন করা হয়, তার সবগুলোতে ইউএনওকে চেয়ারম্যান করা হয় এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের করা হয় উপদেষ্টা।
আবার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় উল্লেখ থাকে, ইউএনও ইচ্ছে করলেই আরও সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। এর মধ্য দিয়ে উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রায় নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়।
এমনি অনেক ক্ষেত্রে আয়-ব্যয়ের হিসাবও তাদের দেওয়া হয় না। যা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও স্থানীয় সরকার পদ্ধতির চেতনার পরিপন্থি।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের কান-মুখ খোলা রাখতে দেয়া নোটিশের কার্যকারিতা হাইকোর্টে স্থগিত
তারেক ও জুবাইদার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা: চার্জ শুনানি ৯ এপ্রিল পর্যন্ত মুলতবি
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তাদের হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার শুনানি আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত মূলতবি করেছেন আদালত।
বুধবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আসাদুজ্জামান নতুন এ তারিখ ধার্য করেন।
আরও পড়ুন: তারেক-জোবাইদার গ্রেপ্তারি পরোয়ানার সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই: কাদের
এর আগে ২০২২ সালের ০১ নভেম্বর দুর্নীতি মামলায় তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ঢাকার আদালত।
২৬ জুন হাইকোর্ট বিচারিক আদালতকে মামলাটি যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।
হাইকোর্ট তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাকে চ্যালেঞ্জ করে দম্পতির রিট পিটিশনও খারিজ করেছে।
তারা উভয়েই পলাতক থাকায় এগুলো গ্রহণযোগ্য নয় বলে আদালত রিট আবেদন খারিজ করে দেন।
তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিচার কার্যক্রমের ওপর দেয়া স্থগিতাদেশও প্রত্যাহার করেছেন আদালত।
২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জুবাইদা ও তার মা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে ৪ কোটি ৮১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে কাফরুল থানায় অভিযোগ দায়ের করে দুদক।
একই বছর জুবাইদার আবেদনের শুনানি নিয়ে মামলার বিচার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্ট ২০১৭ সালে এই নিয়ম প্রত্যাখ্যান করে এবং তাকে আট সপ্তাহের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেন।
আরও পড়ুন: তারেক-জোবায়দাকে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ
দুদকের মামলায় তারেক-জোবায়দার সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিল আদালত
চাঁদপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় ২৪ জেলেকে কারাদণ্ড-জরিমানা
চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাটকা শিকার করার অপরাধে ২৬ জেলেকে আটক করা হয়।
আটক জেলেদের মধ্যে ১৬ জনকে এক মাস করে কারাদণ্ড, আটজনকে ৩২ হাজার টাকা জরিমানা এবং দুইজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় শাসন করে অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার রাতে কোস্ট গার্ড চাঁদপুর স্টেশনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকারিয়া হোসেন।
আটক জেলেদের বাড়ি শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায়।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে জাটকা ধরায় ৮ জেলের কারাদণ্ড
রাত সাড়ে ১০টায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান।
তিনি জানান, জাটকা রক্ষায় চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনায় বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় ২৬ জন জেলে আটক এবং এক লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। জব্দ কারেন্ট জাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট-এর নেতৃত্বে অভিযানে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম, ফিল্ড সহকারী মো. জামিউল হোসেন, কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশের সদস্যরা।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাটকা ধরায় ৩৩ জেলে আটক