কৃষি
সিরাজগঞ্জে কাঁচা মরিচের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
সিরাজগঞ্জের যমুনার চরাঞ্চলসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে এবার কাঁচা মরিচ চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। সেইসঙ্গে বাজার মূল্য ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
বিশেষ করে যমুনার চরাঞ্চলে উৎপাদিত মরিচ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৪৫৬ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষাবাদ করা হয়েছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলে এ লাভজনক মরিচের চাষ বেশি হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২০৫ মেট্রিক টন। ফলন ভাল হওয়ায় ও দাম ভালো পাওয়ায় এ মরিচ চাষাবাদে ঝুঁকে পড়েছে কৃষকেরা।
যমুনা নদীর তীরবর্তী কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী, শাহজাদপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলে এ মরিচ চাষাবাদ বেশি হয়েছে।
চরাঞ্চলের কৃষকেরা বলছেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরবর্তীতে চরাঞ্চলগুলোতে মরিচের চাষ শুরু করা হয়। পলিমাটির উর্বরতার কারণে কম খরচে মরিচ চাষাবাদে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ফলন ভালো হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ধরলার বুকে নতুন স্বপ্ন জাগিয়েছে পটল চাষ
তারা জানান, ঈদকে সামনে রেখে এ মরিচ উত্তোলনে নারী-পুরুষেরা ব্যস্ত সময় পার করছে এবং খেত থেকেই ব্যবসায়ীরা ট্রাকে করে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি এ মরিচ কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছে। আর বর্তমানে স্থানীয় হাট-বাজারে এ মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায় এবং এ কাঁচা মরিচের দাম ওঠা-নামা করলেও লোকসান নেই কৃষকের। চরাঞ্চলের হাটবারের দিনগুলোতে কৃষক ও ব্যবসায়ীর অবস্থান জমজমাট। দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসিও ফুটেছে।
বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মরিচ ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও মরিচের ব্যবসা করতে চরাঞ্চলে এসেছেন তারা। মরিচের বাজার মূল্য এখন ভালো থাকায় কৃষকের পাশাপাশি তারাও লাভবান হচ্ছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সুত্রধর বলেন, সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের পরামর্শে জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এবার ১ হাজার ৪৫৬ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষাবাদ করা হয়েছে। এ চাষাবাদ চরাঞ্চলে বেশি হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২০৫ মেট্রিক টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মরিচ চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। মরিচের বাজার মূল্য ভালো থাকায় কৃষকের মুখেও হাসি ফুটেছে।
আগামীতে এ লাভজনক চাষাবাদে কৃষকেরা ঝুঁকে পড়বে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে দুর্গম চরাঞ্চলে তরমুজ চাষ, ভাগ্য পরিবর্তনের আশা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে
এগ্রি-টেক স্টার্টআপ ফসল ১০ লাখ ডলারের প্রাক-বীজ বিনিয়োগ নিশ্চিত করেছে
এগ্রি-টেক স্টার্টআপ ফসল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে যে এটি কৃষকদের বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত করতে এবং সাপ্লাই চেইন কার্যকর করার লক্ষ্যে প্রাক-বীজ তহবিলে ১০ লাখ ডলার সংগ্রহ করেছে।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এটি সাউথ এশিয়া টেক পার্টনারস (এসওএসভি) এবং ফুডপান্ডার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আম্বারিন রেজা এবং ফুডপান্ডার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জুবায়ের সিদ্দিকীর মতো বিনিয়োগকারীদের থেকে তহবিল গঠন করেছে।
ফসল সাপ্লাই চেইনের একাধিক স্তরের মধ্যস্বত্বভোগীদের নির্মূল করতে কাজ করছে এবং কৃষকদের সরাসরি বাজারে প্রবেশাধিকার এবং নিবেদিত ফসল কৃষক কেন্দ্রের মাধ্যমে ঝামেলামুক্ত লেনদেন প্রদান করছে।
২০২০ সালে সাকিব হোসেন এবং মামুনুর রশিদের প্রতিষ্ঠিত ফসল সাপ্লাই চেইন কার্যকর করার জন্য প্রযুক্তি তৈরি করতে এবং কৃষক থেকে খুচরা বিক্রেতাদের মধ্যে নির্বিঘ্ন লেনদেনের জন্য অটোমেশন নিয়ে আসার জন্য সাম্প্রতিক বিনিয়োগগুলো ব্যবহার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন: তরুণরাই বাংলাদেশে ‘স্মার্ট এগ্রিকালচারের’ নেতৃত্ব দেবে: কৃষিমন্ত্রী
তরুণরাই বাংলাদেশে ‘স্মার্ট এগ্রিকালচারের’ নেতৃত্ব দেবে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, তরুণ প্রজন্ম বাংলাদেশে স্মার্ট এগ্রিকালচারের ধারণার আবির্ভাব ও গ্রহণে নেতৃত্ব দেবে।
তিনি দেশের জিডিপিতে (১২%) কৃষির অবদান তুলে ধরে বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তার জন্য আমাদের আরও উৎপাদনশীলতা প্রয়োজন। স্মার্ট কৃষি সময়ের প্রয়োজন এবং এর জন্য আমাদের একটি যান্ত্রিক চাষপদ্ধতিতে যেতে হবে।’
বুধবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে 'ট্রান্সফরমিং কনভেনশনাল এগ্রিকালচার টু স্মার্ট এগ্রিকালচার' (প্রচলিত কৃষিকে স্মার্ট কৃষিতে রূপান্তর) শীর্ষক সেমিনারে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সরকার প্রয়োজনীয় সব ধরনের নীতি সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অপচয় কমাতে বহুমুখী কোল্ড স্টোরেজ ব্যবস্থারও আহ্বান জানান তিনি। পরে তিনি পণ্যের বৈচিত্র্য, পানির দক্ষ ব্যবহার এবং জলবায়ু প্রতিরোধী ফসল উৎপাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় আগামী বছর দেড় থেকে ২ লাখ টন আলু রপ্তানি হবে: কৃষিমন্ত্রী
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামির সাত্তার বলেছেন, কৃষকদের উৎপাদনশীলতা, স্থায়িত্ব ও মুনাফা বাড়াতে আধুনিক প্রযুক্তি ও শিক্ষায় বিনিয়োগ অপরিহার্য।
তার মতে, এগুলো বাংলাদেশকে স্মার্ট এগ্রিকালচারের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি, আমাদের কৃষকদের প্রযুক্তি গ্রহণ এবং উন্নত প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষি ব্যবস্থাপনার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়াও অপরিহার্য।’
ডিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে এবং ১৪৫টিরও বেশি দেশে প্রায় ৭০০ রকমের পণ্য রপ্তানি করেছে।
সাত্তার তার বক্তব্যে কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, যা জিডিপির প্রায় শূন্য দশমিক ২২ শতাংশ অবদান রাখে, বর্তমানে সীমিত মূল্য সংযোজন দক্ষতা, বৈচিত্র্যের অভাব, গুণমান নিশ্চিতকরণ, স্যানিটারি ও ফাইটোস্যানিটারি কমপ্লায়েন্স ইস্যুতে কম সচেতনতার মতো চ্যালেঞ্জগুলোর কথা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: তাপপ্রবাহ থেকে ফসল রক্ষায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নির্দেশিকা
তিনি বলেন, ‘তদুপরি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে আমাদের ন্যানো-প্রযুক্তি, বায়ো-ইনফরমেটিক্স, মেশিন, ইন্টারনেট অব থিংস এবং নতুন কৃষি প্রযুক্তি শিখতে হবে।’
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. শামসুল আরেফিন বলেন, খাদ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশকে স্মার্ট এগ্রিকালচারের দিকে যেতে হবে এবং এই ধারণার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হলে আমাদের স্মার্ট টেকনোলজির দিকে যেতে হবে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশই এখন স্মার্ট টেকনোলজি, ন্যানোটেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বিভিন্ন আশীর্বাদ ব্যবহার করছে। অতএব, প্রতিযোগিতা করার জন্য আমরা অন্যদের থেকে পিছিয়ে থাকতে পারি না।
তিনি স্মার্ট কৃষিকে পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেসরকারি খাতের প্রতি আহ্বান জানান। এ ক্ষেত্রে সরকার বেসরকারি খাতকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেবে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। আইসিটি বিভাগের সচিব মো. শামসুল আরেফিন এবং ডব্লিউএফপি’র কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ও বাংলাদেশে এফএও’র ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ডমেনিকো স্কাল্পেলি যথাক্রমে বিশেষ অতিথি ও সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: বহুমুখী সমবায়ের মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
কুড়িগ্রামে ধরলার বুকে নতুন স্বপ্ন জাগিয়েছে পটল চাষ
কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর বুকে পটলের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে দামও মিলছে আশানুরুপ। কিন্তু রোগবালাইয়ের আশঙ্কায় কীটনাশক ব্যবহার করলেও সরকারি কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের তদারকি না থাকায় হতাশ হয়েছেন কৃষকরা।
অন্যদিকে জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, যেকোনো ধরণের পরামর্শ দিতে প্রস্তুত তাদের লোকজন।
কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের উত্তর ও দক্ষিণ নওয়াবশ গ্রামজুড়ে ধরলা নদীর বুকে প্রায় ৬০ একর জমিকে পটল চাষ করেছে প্রায় শতাধিক কৃষক। ফলনও হয়েছে আশানুরুপ।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে চাষ হচ্ছে ওষুধি ও পুষ্টিগুণের বিদেশি ফসল চিয়া সিড
কিন্তু হঠাৎ করে বৃষ্টি আর প্রচন্ড খরার কারণে পটলের পাতা লালবর্ণ হয়ে পচে যাচ্ছে। কীটনাশক প্রয়োগ করেও আশঙ্কা থাকা কৃষক কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতির কারণে ক্ষুদ্ধ ও হতাশ।
এছাড়া এ বছর চড়া সুদে ঋণ নিয়ে পটল চাষ করে পোকার আক্রমণে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছে তারা।
খামারবাড়ীর দেয়া তথ্যে চলতি খরিপ মৌসুমে চার হাজার ৫১০ হেক্টর সবজির মধ্যে ৩৯০ হেক্টর জমিতে পটলের আবাদ হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। শীত মৌসুম চলে যাওয়ার পর বাকী মৌসুম জুড়ে পটল বিক্রি করতে পারবে চাষীরা। বাজারে চাহিদাও প্রচুর।
তাপপ্রবাহ থেকে ফসল রক্ষায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নির্দেশিকা
সারাদেশে চলমান মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহের মধ্যে ফসল ও ফল রক্ষায় নির্দেশনা দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এটি আট দিন (১০ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল) অব্যাহত থাকতে পারে।
নির্দেশিকা
তাপপ্রবাহের ক্ষয়ক্ষতি থেকে ধান রক্ষার জন্য ধানের শীষে দানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত বোরো ধানখেতে ২-৩ ইঞ্চি পানি সংরক্ষণের পরামর্শ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
আম গাছের গোড়ায় পর্যাপ্ত সেচের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি প্রয়োজনে শাখা-প্রশাখায় পানি স্প্রে করার জন্যও কৃষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় আগামী বছর দেড় থেকে ২ লাখ টন আলু রপ্তানি হবে: কৃষিমন্ত্রী
গরম থেকে শাকসবজি বাঁচাতে কৃষকদের মাটির ধরন অনুযায়ী আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দুই থেকে তিনটি সেচের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছে অধিদপ্তরটি।
এছাড়া, তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে ফল ও শাক-সবজির চারা রক্ষার জন্য মালচিং ও সেচ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে সারাদেশে তাপপ্রবাহ চলছে এবং তাপমাত্রা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহী বিভাগের ডিমলায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর অনুসারে, রবিবার ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা বেড়ে সোমবার হয় ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: আগামী বছরগুলোতে দেশে সারের দাম বাড়বে না: কৃষিমন্ত্রী
কুড়িগ্রামে দুর্গম চরাঞ্চলে তরমুজ চাষ, ভাগ্য পরিবর্তনের আশা
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের দুর্গম চরাঞ্চলে শুরু হয়েছে তরমুজের চাষ। গত বছর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে তরমুজ চাষ শুরু হলেও এবার এগিয়ে এসেছেন অনেক কৃষক। ফলনও হয়েছে আশানুরূপ।
এ বছর আগাম বন্যা না হলে দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন কৃষকরা। তবে বাজার বিপণনে সরকার এগিয়ে আসলে এবং আর্থিক ব্যাংকগুলো সহজ কিস্তিতে ঋণ ব্যবস্থা করলে চরের বালু মাটিতে ফলবে সোনা; পাল্টে যাবে চরাঞ্চলের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা – এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সবাই।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় ১৬টি নদ-নদীতে রয়েছে প্রায় সাড়ে চার শতাধিক চর। আবাদযোগ্য জমি রয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে ৩৬৮টি চরে ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ শুরু করেছে কৃষকরা। এ সব চরাঞ্চলে ভুট্টা, তরমুজ, মিষ্টি কুমড়া, শসা ও মরিচ চাষ করা হয়েছে।
গত বছর জেলার উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চর বাগুয়া গ্রামে ৫০ একর জমিতে তরমুজ আবাদ করা হয়। আগাম বন্যায় ৪০ একর ফসল নিমজ্জিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপরও দমিয়ে যাননি কৃষকরা। এ বছর চরে ৩৪ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ করা হয়েছে। তরমুজ উত্তোলনও শুরু করেছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফলনও হয়েছে আশানুরূপ। ফলে গত বছরের ক্ষতি কাটিয়ে এবার ভালো লাভের আশা করছেন তারা।
তবে চরে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা হল বাজার বিপণন ব্যবস্থাপনা। এছাড়াও আর্থিক ব্যাংকগুলো সাধারণ কৃষককে ঋণ প্রদান না করায় ইচ্ছে থাকা সত্বেও অনেক কৃষক এসব ফসল চাষাবাদ করতে না পেরে জমি ফেলে রেখেছেন।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে
বাগুয়া চরের দছিম উদ্দিন বলেন, ‘এই চরে তিনজন উদ্যোক্তা কৃষক ৪০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। ব্যাংক থেকে বড় অংকের ঋণ পাওয়ায় তারা ব্যাপক আকারে চাষ করার সুযোগ পেয়েছেন। তাদের চাষাবাদ দেখে এখানকার অনেক কৃষক আগ্রহী হয়ে উঠলেও অর্থনৈতিক কারণে তারা এগিয়ে আসতে পারছে না।’
তরমুজ চাষি আব্দুর সবুর জানান, গতবছর পরীক্ষামূলকভাবে তরমুজ চাষ করলেও আগাম বন্যায় তরমুজ খেত ভেসে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। এ বছর আগাম ১৪ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। এতে আমার ছয় থেকে সাত লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি ২০ হাজার তরমুজ উঠাতে পারব। এতে আমার ছয় থেকে সাত লাখ টাকা বাড়তি আয় হবে। তবে বড় সমস্যার জায়গা হলো তরমুজ বিপণন। পাইকাররা এখানে এসে কমমূল্যে তরমুজ কিনে নিয়ে যায়। আমরা শহরে নিয়ে গিয়ে তরমুজ বিক্রি করতে পারলে আরও বেশি লাভবান হতাম। এতে আরও কৃষক তরমুজ চাষে এগিয়ে আসতো।
এই কৃষক আরও জানান, পৌষ মাসের শুরুতে তরমুজের বীজ বপন করতে হবে। চার মাস পর চৈত্র মাসের মাঝামাঝি সময়ে তরমুজ উত্তোলন করা যায়। তরমুজ চাষে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। বালু জমিতে ১০ ইঞ্চি বাই ১০ ইঞ্চি স্কোয়ারে দেড় ফুট গর্ত করে গর্তের মধ্যে কিছু দোআঁশ মাটি, গোবর সার ও ডিএসপি দিতে হয়। প্রতি গর্তে ৪০ গ্রাম দিলেই হবে। এভাবে এক সপ্তাহ রাখার পর একটি গর্তে তিনটি করে বীজ বপন করা হয়। এছাড়াও নিয়মিতভাবে পোকামাকড় ও ইঁদুরের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পরিচর্চা ও কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে হাতিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মাস্টার জানান, বর্তমানে চরাঞ্চলে স্থানীয় উদ্যোক্তারা বিভিন্ন কৃষিজ পণ্য চাষাবাদে আগহী হয়ে উঠেছে। অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে বাকি কৃষকরা এগিয়ে আসতে পারছে। এক্ষেত্রে আর্থিক ব্যাংক, জিও ও এনজিওরা এগিয়ে আসলে চরের পতিত জমিতে সোনা ফলানো সম্ভব।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শষ্য) মো. আজিজুল ইসলাম জানান, গত বছর থেকে এ জেলায় তরমুজের আবাদ শুরু হয়েছে। এ বছর ২২ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। বিপণনে কৃষকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এজন্য চরাঞ্চলে কালেকশন সেন্টার করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে রমজান উপলক্ষে বাজারে আগাম তরমুজ, দাম আকাশচুম্বী
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে
চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৫১ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। গেলো আমন মৌসুমে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা বোরো ধান আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
চাষীরা উফশী ও হাইব্রিড জাতের বোরোর আবাদ করেছেন। এখন জেলা জুড়ে ফসলের মাঠে মাঠে শুধু সবুজের সমারোহ। বাতাসে দোল খাচ্ছে ধান গাছের সবুজ পাতা। ইতোমধ্যে কিছু কিছু জমিতে ধানের শীষ আসতে শুরু করেছে। চলতি মৌসুমে অনুকূল আবহাওয়া, সেচ, সার সংকট না থাকাও পোকামাকড়ের তেমন উপদ্রব না হওয়ায় এবং শেষ পর্যন্ত সবকিছু অনুকূলে থাকলে এবার বোরোর ভালো ফলন আশা করছেন কৃষকরা।
সদর উপজেলার আতাহার এলাকার চাষী মুঞ্জুর আলী বলেন, এবার তিনি আট বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। এ বছর বীজ ও সারের কোনো সংকট হয়নি। তবে কীটনাশকের দাম বেড়েছে। জমিতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার এখন পর্যন্ত রোগবালাই অনেক কম। আবহাওয়া ভালো আছে, তাপমাত্রা ভালো আছে। শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে আশা করা যায় ভলো ফলন হবে।
আরও পড়ুন: আমনে আবাদ লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
আতাহার এলাকার আরেক বেরো চাষী আকবর আলী বলেন, গেলো আমনে দর মোটামুটি ভালো পেয়েছিলাম। এ কারণে এবার সাত বিঘা জমিতে বোরা চাষ করেছি। এবার বিদ্যুতের সমস্যা না থাকায় সেচের কোনো সমস্যা হয়নি। পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমনভাবে নাই। কীটনাশক ও বালাইনাশক স্প্রে করেছি। তবে কীটনাশক ও বালাইনাশকের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এতে খরচ বেড়েছে। এখন ধানের অবস্থা খুব ভালো। কিছু কিছু জমিতে ধান গাছে শীষ আসতে শুরু করেছে। আশা করা যায় এক সপ্তাহের মধ্যে এ এলাকার সব জমিতে পুরোপুরি শীষ ফুটে যাবে।
দক্ষিণশহর এলাকার চাষী আবেদ আলী বলেন, এবার তিনি দুই বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত ধান গাছের অবস্থা ভালো আছে। জমিতে এসে ধান গাছ দেখে মন জুড়িয়ে যাচ্ছে। পোকামাকড় তুলনামূলকভাবে এবার অনেক কম। দুই বার কীটনাশক ও বালাইনাশক স্প্রে করেছি। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো আছে। বর্তমানে জমিতে শীষ ফুটতে শুরু করেছে। শেষ পর্যন্ত এরকম আবহাওয়া ভালো থাকলে আশা করা যায় ভালো ফলন পাব।
নাচোল উপজেলার নেজমপুর এলাকার চাষী সেরাজুল ইসলাম জানান, তিনি তার তিন বিঘা জমিতে বোরা চাষ করেছেন। বর্তমানে শীষ আসতে শুরু করেছে। ধান গাছের চেহারা বেশ ভালো আছে। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা নেই। এমনটি শেষ পর্যন্ত থাকলে ভালো ফলন আশা করছেন তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকারজানান, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৫১ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৫১ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৪০৫ হেক্টর বেশি। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে এবার জেলায় দুই লাখ ৩৫ হাজার ৬০৬ মেট্রিক টন বোরো চাল উৎপাদিত হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।
আরও পড়ুন: খরা: খুলনায় আমনের আবাদ নিয়ে শঙ্কা
আগামী বছরগুলোতে দেশে সারের দাম বাড়বে না: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, অতীতের মতো আগামী বছরগুলোতে দেশে সারের দাম বাড়বে না।
সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সারবিষয়ক জাতীয় সমন্বয় ও পরামর্শক কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান।
এসময় তিনি জানিয়েছেন, কৃষক যাতে পর্যাপ্ত সার পায়, সেজন্য আমরা চাহিদা নির্ধারণ করেছি। মার্চে ইউরিয়া সারের চাহিদা বেশি ছিল, তবুও আমরা একটু কমিয়ে চাহিদা নির্ধারণ করেছি।
এছাড়া, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ইউরিয়া সারের চাহিদা ২৭ লাখ টন। ডিএপি লাগে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টন।
এটির দাম কমানোর জন্য চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ লাখ টন। টিএসপি সাড়ে সাত লাখ টন ও এমওপির চাহিদা ধরা হয়েছে ৯ লাখ টন।
আরও পড়ুন: জাপানে আম রপ্তানি শুরু হবে শিগগিরই: কৃষিমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে সার নিয়ে কোনো সংকট সৃষ্টি হতে দেব না। সার নিয়ে যাতে কৃষকদের ভোগান্তি পোহাতে না হয় তা দেখা হবে। কারণ সার নিয়ে কৃষকদের ভোগান্তি হলে আমাদের উৎপাদন কমে যাবে।
সারের মজুতের পরিমাণের বিষয়ে নিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, চার লাখ টন ইউরিয়া সার মজুত রয়েছে। এছাড়া টিএসপি সার রয়েছে দুই লাখ টন, ডিএপি সার আড়াই লাখ টন এবং এমওপি সার সোয়া দুই লাখ টন। গত বছরের তুলনায় সব সারের পরিমাণই কিছুটা কম রয়েছে।
করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে বিশ্ববাজারে সার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা আগে প্রতি টন পটাশিয়াম সার ২৫০ ডলারে কিনতাম। সেই সার আমরা এক হাজার ২০০ ডলারেও কিনেছি। এখনও তা ৭০০ ডলার থেকে ৮০০ ডলারে কিনতে হয়। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম কমে আসছে। কিন্তু যেভাবে কমছে, তাতে আগের অবস্থায় সারের দাম যাচ্ছে না।
গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত থাকলে খুবই কম পরিমাণ সার বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, শাহজালাল সার কারখানা হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) সক্ষমতা অনেক বেড়েছে।
আপনারা জানেন, গত দু-তিন বছরে ঠিকমতো গ্যাসের সরবরাহ হচ্ছে না। যার কারণে মাঝে মাঝে সার কারখানাগুলো বন্ধ রাখতে হয়।
তিনি বলেন, একটি সার কারখানা বন্ধ করে আবার নতুন করে চালু করতে গেলে যে প্রেসার উৎপাদন করতে হয়, তাতে পাঁচ থেকে সাত কোটি টাকা খরচ হয়ে যায়। বেশিদিন বন্ধ থাকলে কারখানা অচল হয়ে যায়।
এই পরিস্থিতি মাথায় রেখে বিসিআইসি উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। যদিও প্রয়োজনীয় সার উৎপাদন সম্ভব হয়নি।
তবে যতটা সম্ভব স্থানীয়ভাবে ইউরিয়া সার উৎপাদন করতে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করার কথা জানিয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে আমরা অনুরোধ করবো, তারা যাতে সার কারখানাগুলো সচল রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ রাখে।
এছাড়া গ্যাসের দাম বাংলাদেশে কম হওয়াতে স্থানীয়ভাবে সার উৎপাদন খরচও বেশি না। তা সত্ত্বেও যদি একেবারে আন্তর্জাতিক দামে যদি বিসিআইসি মন্ত্রণালয়কে দেয়, তাতেও দাম আমাদের অনেক কম পড়বে।
আরও পড়ুন: বিএনপির চতুর্থ বিপর্যয়ের সময় এসে গেছে: কৃষিমন্ত্রী
জেল দিয়ে কী কোনদিন কারো রাজনীতি বন্ধ করা যাবে: প্রশ্ন কৃষিমন্ত্রীর
ঠাকুরগাঁওয়ে রমজান উপলক্ষে বাজারে আগাম তরমুজ, দাম আকাশচুম্বী
ঠাকুরগাঁওয়ে রমজান উপলক্ষে বাজারে আগাম তরমুজ উঠেছে। তবে মৌসুমি এ ফলের দাম অনেক বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ তা কিনতে পারছেন না।
পৌর শহরের কালিবাড়ি, কোট চত্বর, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, সত্যপীর ব্রিজ, গোধূলি বাজার, মন্দিরপাড়া, ঠাকুরগাঁও রোড যুব সংসদ মাঠসহ বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা যায় তরমুজের অস্থায়ী বাজার।
পৌর শহরের বিভিন্ন বাজারে তরমুজের বাজারদর ছিল কেজি প্রতি প্রায় ৫০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত। এখন দাম কিছুটা কমে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু ক্রেতাকে কিনতে হচ্ছে কেজি দরে গোটা তরমুজ।
আরও পড়ুন: খুলনায় ৮০০ কোটি টাকার তরমুজ বাণিজ্যের সম্ভাবনা
জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলায় উৎপাদনকৃত তরমুজ এখনও বাজারে ওঠেনি। ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রমজানকে টার্গেট করে তরমুজ ঠাকুরগাঁওয়ে এনে বিক্রি করছেন। প্রতিটি তরমুজ ১০ থেকে ১৫ কেজি বা এর চেয়েও বেশি ওজনের। ফলে প্রতি ১০ কেজির তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। এই দামে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা কিনতে পারছেননা। আর তাই বাজারে তরমুজের বেচা-কেনাও কম।
লক্ষ্য পূরণের জন্য চলছে কৃষি ঋণ বিতরণ
লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কৃষি ঋণ বিতরণ চলছে। চলতি অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রার ৬৮ দশমিক ১৫ শতাংশ কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ ঋণের হালনাগাদ তথ্যে জানা যায়, ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রায় ২১ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা কৃষি খাতে বিতরণ করা হয়েছে।
হালনাগাদ তথ্যে জানা যায়, ১২টি ব্যাংক ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার ১০০ শতাংশ অর্জন করেছে।
তবে পিছিয়ে রয়েছে ১৪টি ব্যাংক। ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশও বিতরণ করতে পারেনি এসব ব্যাংক।
যেসব ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার ১০০ শতাংশের বেশি বিতরণ করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে ব্যাংক আল-ফালাহ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অফ সিলন, হাবিব ব্যাংক, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, সীমান্ত ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক এনএ, এইচএসবিসি ও উরি ব্যাংক।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে পতিত জমিতে সবজি চাষে সাফল্য
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৮ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা এবং বিদেশি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১২ হাজার ৪৩৪ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট কৃষি ঋণ বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে, ফলে ঋণ আদায়ের হার প্রায় ৪১ শতাংশ।
খেলাপি হয়েছে ৩ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা, যা ঋণের ৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী খাদ্য নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কৃষি উৎপাদনের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকও সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
কৃষিঋণ বিতরণ বাড়াতে ব্যাংকগুলোকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং তা সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সার ও বীজের দাম বাড়বে না: কৃষিমন্ত্রী
বরগুনায় বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা