বৃহস্পতিবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন তাকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডও দিয়েছেন।
উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে গত ২১ নভেম্বর বিচারক রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিল।
মোয়াজ্জেম ফেনীর মাদরাসাছাত্রী মৃত নুসরাত জাহান রাফিকে অবৈধভাবে জিজ্ঞাসাবাদ ও ফোনে তা রেকর্ড করার জন্য দায়েরকৃত মামলায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আবেদন করেন।
নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গত ১৫ এপ্রিল সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
পরে ১৬ জুন রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ১৭ জুলাই সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মাদ আস সামছ জগলুল হোসেন এ মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন ভুক্তভোগী নুসরাতের মা। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
যৌন হয়রানির অভিযোগ করতে যাওয়ার পর সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেমের কক্ষে ফের হয়রানির শিকার হতে হয় নুসরাতকে। ‘নিয়ম না মেনে’ জেরা করতে করতেই নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন ওসি। মৌখিক অভিযোগ নেয়ার সময় দুজন পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না।
গত ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষার আগ মুহূর্তে বান্ধবীকে মারধরের কথা বলে নুসরাতকে মাদরাসার ছাদে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয় দুর্বৃত্তরা। মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানালে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় তারা। ওইদিন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়।
গত ২৪ অক্টোবর ফেনীর একটি ট্রাইব্যুনাল নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ১৬ আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে।