ইউক্রেনকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলায় ইউক্রেন-সমর্থক বিভিন্ন দেশের সরবরাহ করা অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিতে ওইসব দেশের ওপর চাপ বাড়িয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ কূটনীতিকরা।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবার সঙ্গে কথা বলার পর এ কথা জানিয়েছেন ইইউয়ের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল।
ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিলেও এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিছু ইইউ সদস্য রাষ্ট্রও ইউক্রেনকে দেওয়া অস্ত্রের ব্যবহার সীমিত করেছে। এদিকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে বিমানঘাঁটি ও অন্যান্য সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ইউক্রেন, কারণ এসব সামরিক রসদ ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালানোর জন্য ব্যবহার করে রাশিয়া।
জোসেপ বোরেল বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী আমাদের রুশ সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলায় অস্ত্র ব্যবহারের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নিতে হবে।’
আরও পড়ুন: কুরস্কে অভিযান সম্ভাব্য শান্তি আলোচনার সঙ্গে যুক্ত: ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সহযোগী
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনকে যে অস্ত্র সরবরাহ করছি তার পূর্ণ ব্যবহার থাকতে হবে এবং নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করতে হবে, যাতে ইউক্রেনীয়রা সেইসব জায়গাগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে সক্ষম হয় যেখান থেকে রাশিয়া তাদের ওপর বোমা ফেলছে। অন্যথায় এসব অস্ত্র দেওয়ার কোনো মানে নেই।’
ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিক ও অবকাঠামোতে রাশিয়ার হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ইউরোপের একটি দেশকে বোমা মেরে সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে চায়।’
এসময় ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া যদি এই লড়াইয়ে জিতে যায়, তাহলে ইউক্রেন-সমর্থকদের শুধু নিজেদেরই দোষারোপ করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘অংশীদারদের সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ওপরই রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের সাফল্য নির্ভর করছে। তারা সিদ্ধান্ত নিলে ইউক্রেন মাঠ পর্যায়ে সফল হবে। আর যদি তা না নেওয়া হয়, তাহলে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে নয়, নিজেদের ওপর অভিযোগ করবেন।’
কুলেবা জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়ার অভ্যন্তরে কেবল ‘বৈধ সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে’ হামলা চালাতে চায় ইউক্রেন।
‘যদি আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হয়, আর আঘাত হানতে দেওয়া হয়, তাহলে আমরা রাশিয়ার ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করব; স্থলে আমাদের বাহিনীর পরিস্থিতির আরও উন্নতি করতে পারব।’
এসময় ইউক্রেনকে দ্রুত সামরিক সহায়তা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি পূরণে পশ্চিমাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: কুরস্কে হামলার পর ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা অসম্ভব: ল্যাভরভ
তিনি বলেন, ‘এই বিলম্বের জন্য আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি এবং প্রাণের বিনিময়ে এর মূল্য দিতে হচ্ছে।’
বিশেষত প্যাট্রিয়ট বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্রুত সরবরাহের আহ্বান জানিয়ে কুলেবা বলেন, ‘যেসব দেশ কয়েক মাস আগে প্যাট্রিয়ট সিস্টেম সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তাদের তা সরবরাহ করার জোর আহ্বান জানাচ্ছি। সেগুলো গ্রহণ করতে আমরা প্রস্তুত। একটি চূড়ান্ত পদক্ষেপের অভাবে আমরা এই সক্ষমতা থেকে বঞ্চিত রয়েছি।’
গত মাসে ইউক্রেন জানায়, দেশটির আকাশসীমা পুরোপুরি রক্ষা করতে এবং রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে দেশকে রক্ষা করতে তাদের অন্তত ২৫টি প্যাট্রিয়ট বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন।