খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য আরও তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত বিতরণ কোম্পানি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে তাদের নিজ নিজ প্রস্তাব জমা দিয়েছে।
এই বিতরণ সংস্থাগুলো হলো: ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি), ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) এবং ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডব্লিউজেডপিডিসিএল)।
বৃহস্পতিবার বিইআরসি সদস্য (শুল্ক) মোহাম্মদ বজলুর রহমান বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার প্রস্তাব জমা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে, দেশে ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা রয়েছে। নতুন পাইকারি বিদ্যুতের শুল্ক ঘোষণার পর সরকার সকলকে খুচরা বিদ্যুতের শুল্ক বৃদ্ধির বিষয়ে তাদের নিজ নিজ প্রস্তাবনা জমা দিতে বলেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘প্রস্তাবগুলো প্রায় অভিন্ন এবং সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী জমা দেয়া হয়েছে।’
এর আগে মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) খুচরা পর্যায়ে প্রতি কিলোওয়াট ঘন্টা (প্রতি ইউনিট) এক দশমিক ৪৭ টাকা বৃদ্ধি চেয়ে জ্বালানি নিয়ন্ত্রকের কাছে তাদের প্রস্তাব জমা দেয়।
বিপিডিবি খুচরা শুল্ক প্রতি ইউনিট সাত দশমিক ৫৬ টাকা থেকে ১৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ বাড়িয়ে ৯ দশমিক ০৩ টাকা প্রতি ইউনিট করতে চায়।
বাকি দু’টি বিতরণ সংস্থার প্রধানরা - বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) এবং নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি পিএলএস (নেসকো)- রবিবার তাদের নিজ নিজ প্রস্তাবনা বিইআরসিতে জমা দেবেন।
বিআরইবি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা খুচরা বিদ্যুৎ শুল্ক সমন্বয়ের বিষয়ে আমাদের প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছি। আমরা রবিবার তা জমা দেব।’
নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিউল ইসলাম তার কোম্পানির অনুরূপ প্রস্তুতি ও পরিকল্পনার কথা জানান।
পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরদিনের মধ্যেই বিপিডিবি খুচরা বিদ্যুতের শুল্ক সমন্বয়ের প্রস্তাব পেশ করে।
সোমবার বাল্ক বিদ্যুতের শুল্ক ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়িয়ে ছয় দশমিক ২০ টাকা প্রতি কিলোওয়াট ঘন্টায় (প্রতিটি ইউনিট) আগের পাঁচ দশমিক ১৭ টাকা করে যা ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিপিডিবি’র একটি পূর্নবিবেচনা আপিল নিষ্পত্তি করে বিইআরসি।
বিইআরসি আইন-২০০৩ অনুযায়ী শুল্ক সমন্বয়ের বিষয়ে কোনও বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার কাছ থেকে কোনো প্রস্তাব পাওয়ার পর বিইআরসি বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মতামত শোনার জন্য পদ্ধতি অনুসরণ করে একটি গণশুনানি করবে। এরপর শুনানি শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে তার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে।
বাল্ক শুল্ক বৃদ্ধির পর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, এই মুহূর্তে বাল্ক বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি জনসাধারণের ওপর কোনও প্রভাব ফেলবে না।
তবে তিনি বলেন, সরকার গ্রাহকদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে চায়। ‘তাই বিদ্যুতের শুল্ক সমন্বয়ের প্রয়োজন ছিল।’ তিনি আরও বলেছেন, খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির জন্য বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলো বিইআরসিতে জমা দেয়ার জন্য তাদের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিইআরসি ভবিষ্যতে খুচরা গ্রাহকদের ওপর কোন প্রভাব ফেলবে কিনা তা পরীক্ষা করবে।’
২০২০ সালের ১ মার্চ থেকে কার্যকরী হিসাবে খুচরা শুল্ক প্রতি ইউনিট (প্রতি কিলোওয়াট-ঘণ্টা)পাঁচ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৬ দশমিক ৭৭ টাকা থেকে সাত দশমিক ১৩ টাকা করা হয়েছে।