চট্টগ্রামে কলেজ ছাত্রীকে জোর করে তুলে নিয়ে হোটেল কক্ষে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় কসবা থানার সাবেক (বরখাস্ত) পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মিজানুর রহমান ওরফে ওসি মিজানের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আগামী ১০ মে এ মামলার রায়ের জন্য সময় ধার্য করা হয়েছে।
রবিবার চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক ফেরদৌস আরা জামিন বাতিল ও মামলার রায়ের এ তারিখ ঘোষণা করেন।
ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালত ইতোমধ্যে এই মামলায় ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন। ‘আজ আদালতে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে মামলার রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেন। এ সময় আসামি জামিন পুনর্বহালের আবেদন করেন। পরে আদালত তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’
আরও পড়ুন: নাটোরে কাঠ ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের অভিযোগে ওসিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
উল্লেখ্য ২০১১ সালের ১২ জুলাই নগরীর ফয়’স লেক এলাকা থেকে ইস্পাহানি স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রী ও তার বন্ধুকে তুলে নিয়ে ঘুরতে গেলে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানার তৎকালীন ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে গাড়িতে তুলে নগরীর চকবাজারে একটি হোটেলে নিয়ে যায়। সেখানে ছেলে মেয়ে দুজনকে আলাদা কক্ষে আটকে রেখে মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে মেয়েটি বাথরুমের কাঁচ ভেঙ্গে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরে হোটেলের লোকজন তাকে উদ্ধার করে।। এ ঘটনায় ওই বছরের ১৬ জুলাই মেয়েটির বাবা হুমায়ন কবির বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় ওসি মিজান সহ তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। বাকি দু’আসামী হোটেলের কর্মচারী।
আদালত সূত্রে জানা যায়, হুমায়ন কবিরের দায়ের করা দুটি মামলার মধ্যে একটি ছিল নারী নির্যাতন দমন আইনের ৭/৯ (৪)-খ ধারায়। আরেকটি মামলা ছিল, জোরপূর্বক মেয়েটিকে তুলে নিয়ে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে খালি স্ট্যাম্পে সাক্ষর করানোর অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪২০, ১৭০ ও ৩৮৬ ধারায় দায়ের করা।
প্রথম মামলায় ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে ওসি মিজান সহ তিন আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। ঘটনার পর প্রায় সাড়ে তিনমাস পলাতক থাকা ওসি মিজানুর রহমান ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে হাজির হলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠান। হাইকোর্টের আদেশে ২০১২ সালের জুলাই মাসে তিনি জামিনে মুক্তি পান। ওসি মিজানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠার পরই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ: ওসি ও এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন