জীবনের দীর্ঘ সময় পাড়ি দেওয়ার সুন্দর স্বপ্ন নিয়ে জুটি বেঁধেছিলেন তারা। নানা আয়োজনও ছিল তাদের স্বপ্নকে ঘিরে। কিন্তু তাদের যাত্রাপথ মসৃণ হলো না। একটি সড়ক দুর্ঘটনায় যাত্রাপথটি শেষ হয়ে যায় মাত্র ৪০ দিনের মাথায়। সরিয়ে নেয় তাদের নিজ নিজ জন্মস্থানে।
জীবনের নির্মম এই পরিণতির শিকার হন ঢাকার ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত বিমানবাহিনীর সৈনিক ইমরান হোসেন ও তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী নিপা আক্তার।
রাঙামাটির বাহাপানা এলাকার নুরুল ইসলামের একমাত্র ছেলে ইমরান হোসেন চলতি বছরের ৮ মার্চ রাজাপুর উপজেলার সাংগর গ্রামের আ. বারেকের কন্যা নিপা আক্তারের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন।
ঝালকাঠির গাবখান টোল প্লাজায় বুধবারের সড়ক দুর্ঘটনায় এ দম্পতি প্রাণ হারান।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বেলা ১১টায় সংরক্ষণ করা ইমরানের লাশ থানা পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে তার বাবার কাছে বুঝিয়ে দেন। সন্তানের লাশের কঠিন বোঝা নিয়ে বিমান বাহিনীর বিশেষ এম্বুলেন্স করে দাফনের জন্য রাঙামাটি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একইভাবে ইমরানের স্ত্রী নিপার লাশ তার পিত্রালয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় ১৪ জনের মৃত্যু
একই উপজেলার উত্তর সাউথপুর গ্রামের ইমরানের ভায়রা হাসিবুর রহমান, বড় শ্যালিকা নাহিদা আক্তার সোনিয়া এবং তাদের শিশুসন্তান, তাকিয়া (সাড়ে ৪ বছর), তাহমিদেরও (৮ মাস) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। দুর্ঘটনার শিকার প্রাইভেটকারের চালক একই উপজেলার বাদুরতলা গ্রামের ইব্রাহিমেরও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
ঝালকাঠির সদর হাসপাতালে লাশ নিতে আসা বিমান সৈনিক ইমরানের পিতা নুরুল ইসলাম পুত্র শোকে পাথর হয়ে গেছেন।
তিনি জানান, ইমরান তার একমাত্র ছেলে সন্তান। ৪ ভাই-বোনের সবার ছোট ইমরান। তার মৃতুতে মা ও বোনরা পাগল প্রায়। পিতা হিসেবে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এই কষ্ট অত্যন্ত পীড়াদায়ক, যা সহ্য করার মতো নয়।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে ১৪ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ট্রাকচালক ও সহকারী আটক