মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগে এক নারীকে দোষী সাব্যস্ত করে ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে রায় দিয়েছেন বিচারক। দণ্ডিত অর্থ আদায় করে বাদী আকরামকে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার(২৬ জুলাই) দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা জজ মো. মশিউর রহমান খান
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলো বরগুনা সদর উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের শশাতলা গ্রামের জামাল মল্লিকের স্ত্রী মোছাম্মাৎ রুমা আক্তার (৩০)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আশরাফুল আলম। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ফরিদগঞ্জে শিয়ালের মাংস বিক্রির চেষ্টা, ২ জনের কারাদণ্ড
জানা যায়, দণ্ডপ্রাপ্ত রুমা আক্তার ২০১৭ সালের ১০ মার্চ ওই ট্রাইব্যুনালে একই গ্রামের মৃত নুরু সরদারের ছেলে মো. আকরামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তার স্বামী বাড়িতে প্রায়ই থাকে না। এ সুযোগে আকরাম প্রায়শই রুমা আক্তারকে উত্যক্ত করত।
ঘটনার দিন ২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৭টার সময় একই গ্রামের লুৎফার বাড়ি হতে বিলের মধ্য দিয়ে নিজ বাড়িতে আসতেছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি আসলে আকরাম অসৎ উদ্দেশ্য রুমা আকতারকে ঝাপটে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করে। রুমার সঙ্গে থাকা তার স্বামী জামাল মল্লিক রুমাকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে আকরাম তাকে পিটিয়ে আহত করে।
ট্রাইব্যুনাল মামলাটি বরগুনা থানায় এজাহারভুক্ত করার নির্দেশ দেয়। বরগুনা থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩১ মে চুড়ান্ত প্রতিবেদন (মিথ্যা) দাখিল করেন।
আরও পড়ুন: সাবেক ওসি ফিরোজ কবির দম্পতির কারাদণ্ড
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, আকরাম নির্দোষ এবং বাদী রুমা আকতার মিথ্যা মামলা করেছেন। বাদী রুমা আকতার ওই ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে না রাজি আবেদন করলে তাও ট্রাইব্যুনাল নাকচ করে দেয়।
আসামি আকরাম বলেন, আমার মান সম্মান রুমা আক্তার শেষ করে দিয়েছে। তিনি রুমা আক্তারের বিরুদ্ধ ২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিল ওই ট্রাইব্যুনালে মিথ্যা মামলা করার প্রতিকার চেয়ে মামলা করেন। তিনি তার মামলায় অভিযোগ করেন,‘রুমা আমার চেয়ে বয়সে বড়। তার স্বামীর সঙ্গে আমার জমাজমি নিয়ে বিরোধ থাকার কারণে আমার বিরুদ্ধে রুমা জঘন্য ও মিথ্যা মামলা করেছিল।
রুমা আকতার কোর্ট প্রাঙ্গণে বলেন, আমি প্রথমে হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন এনেছিলাম। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমি আবার হাইকোর্টে আপিল করব।
রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আশরাফুল আলম বলেন, আকরাম ন্যায় বিচার পেয়েছেন। এই ম্যাসেসটি জনগণের কাছে পৌঁছালে এভাবে আর কেউ মিথ্যা মামলা করবে না।