আফ্রিকার দেশ সুদানের তেল সমৃদ্ধ আবেই অঞ্চলে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সপ্তাহান্তে সংঘর্ষে ৩৭ জন নিহত হয়েছেন।
রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এই হতাহতের কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
একই অঞ্চলে ভূমির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে ৫২ জনের মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর এই হতাহতের ঘটনা ঘটল।
দক্ষিণ সুদান ও সুদানের দাবি করা অঞ্চল আবেইয়ের তথ্যমন্ত্রী বলিস কোচ বলেন, রুম-আমির, আলাল ও মিজাক কাউন্টিতে দক্ষিণ সুদানের ওয়াররাপ প্রদেশের সশস্ত্র যুবকদের হামলার মধ্য দিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। হামলাকারীরা ইউনিটি প্রদেশের আধ্যাত্মিক নেতা গাই মাচিকের অনুসারী যোদ্ধাদের সমর্থন করেছিল।
কোচ বলেন, লড়াইয়ে শনিবার ১৯ জন নিহত ও ১৮ জন আহত হয়েছে এবং রবিবার চার নারী ও তিন শিশুসহ আরও ১৮ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া এক হাজার গরু নিয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ায় গির্জার বাদকদলের ২৫ গায়ক অপহরণ
এক বিবৃতিতে কোচ বলেন, 'আবেই বিশেষ প্রশাসনিক এলাকা সন্ত্রাসী হামলা, নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের জঘন্য হত্যা, স্থানীয় বাজার ও আবাসিক এলাকা পুড়িয়ে দেওয়ার তীব্র নিন্দা জানায়।’
এই অঞ্চলে জাতিগত সহিংসতা সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওয়ারাপের টুইক ডিঙ্কার উপজাতি সদস্যরা সীমান্তে অবস্থিত আবেইয়ের আনেত এলাকার এনগোক ডিঙ্কা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ভূমির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বে লিপ্ত রয়েছে।
ভূমিকে এই সংঘাতের প্রধান চালক হিসাবে দেখা হলেও কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন যে সশস্ত্র টুইক তরুণদের উসকে দিচ্ছে জাতিগত নিউর আধ্যাত্মিক নেতা মাচিক। আধ্যাত্মিক এই নেতার বিরুদ্ধে আগে থেকেই সংঘাত সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে। এক সপ্তাহ আগে ওই হামলায় জাতিসংঘের দুই শান্তিরক্ষীসহ ৫৩ জন নিহত হওয়ার জন্যও তাকে দায়ী করা হয়।
আরও পড়ুন: মধ্য নাইজেরিয়ায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ১৬০ জন নিহত
স্থানীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাচিক কোনো অন্যায় কাজ করার কথা অস্বীকার করেছেন।
২০০৫ সালে সুদানের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে কয়েক দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটানোর পর থেকে আবেই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। সুদান এবং দক্ষিণ সুদান উভয়ই আবের মালিকানা দাবি করে আসছে। এমনকি ২০১১ সালে সুদান থেকে দক্ষিণ সুদান স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এই অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি অমীমাংসিত রয়েছে।
এই অঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ এনগোক ডিঙ্কা জনগণ দক্ষিণ সুদানের পক্ষে। অন্যদিকে নিজেদের গবাদি পশুর জন্য চারণভূমি খুঁজতে আবেইতে আসা মিসেরিয়া যাযাবররা সুদানের পক্ষে। তবে অঞ্চলটি বর্তমানে দক্ষিণ সুদানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আফ্রিকান ইউনিয়নের একটি প্যানেল আবেইয়ের জন্য একটি গণভোটের প্রস্তাব করেছিল তবে কে ভোট দিতে পারে তা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।
গত মার্চে দক্ষিণ সুদান আবেইতে সেনা মোতায়েনের পর থেকে আন্তঃসাম্প্রদায়িক ও আন্তঃসীমান্ত সংঘর্ষ বেড়েছে।
আরও পড়ুন: আফ্রিকার বিরোধপূর্ণ তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল আবেইতে সংঘর্ষে নিহত ৫২