কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিচালকের (এমডির) গাড়ি থেকে চালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার চরসাদিপুর ইউনিয়নের সাদিপুর পাকারমোড় খেয়াঘাট এলাকা থেকে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।
নিহত মো. সম্রাট (২৬) পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আবু বক্কার সিদ্দিকের ছেলে। তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের রাশিয়ান কোম্পানির পরিচালক ইউরি ফেদারোপের ব্যবহৃত প্রাডো গাড়িটির চালক ছিলেন।
এঘটনায় মামুন নামের তার এক সহকর্মীর স্ত্রীকে আটক করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ।
এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে কুমারখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) দীপংকর দাস জানান, খবর পেয়ে একটি সাদা গাড়ির ভেতর থেকে সম্রাট নামের ওই গাড়ি চালকের বস্তাবন্দী ও পলিথিনে মোড়ানো লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার শরীরের একাধিক স্থানে ক্ষতচিহ্ণ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তাকে হত্যা করে গাড়িসহ এখানে রেখে যাওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে খেয়াঘাট সংলগ্ন সাদিপুর পাকারমোড় এলাকায় পদ্মানদী পাড়ে প্রাডো গাড়িটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয়রা প্রথমে মনে করেন গাড়ি রেখে পদ্মাপার হয়ে কেউ ঘুরতে বা কাজে যেতে পারে। শনিবার সকাল ৬ টার দিকে গাড়ির ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকলে তারা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ গাড়ির ভেতর থেকে বস্তাবন্দী ও পলিথিনে মোড়ানো চালকের লাশ উদ্ধার করে পাবনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
আরও পড়ুন: সাভারে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও গার্মেন্টস শ্রমিকের লাশ উদ্ধার
নিহত যুবকের বাবা আবু বক্কার জানান, গত দু’দিন ধরে তার ছেলে নিখোঁজ ছিল। নিখোঁজের ঘটনায় ২৩ মার্চ ঈশ্বরদী থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি জিডি করা হয়। তার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে তিনি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করেন।
প্রাডো গাড়িটির মালিক মো. আনিসুর রহমান বলেন, স্রমাট তার গাড়িটির চালক ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই গাড়িসহ সম্রাট নিখোঁজ ছিল। পরে পুলিশের মাধ্যমে সম্রাটের নাম্বার ট্রাকিং করে তার সর্বশেষ অবস্থান জানা যায়। পরে সেখানে গেলে বাড়ির মালিক মামুনের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। প্রথমে মামুনের স্ত্রী অস্বীকার করেন। পরে অবশ্য তিনি তার স্বামীসহ সম্রাটকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহসীন হোসাইন বলেন, গাড়িটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের এক রাশিয়ান ব্যবহার করেন। নিহত যুবক ওই গাড়ির চালক ছিলেন। তিনি ধারণা করছেন পরকীয়া প্রেম বা পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দু সরকার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজন নারীকে আটক করা হয়েছে। পরকীয়া,পাওনা টাকাসহ নানাবিদ কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যগুলো যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। এঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা বা অভিযোগ হয়নি বলে তিনি জানান।