পাকিস্তান
পাকিস্তানে বাংলাদেশ হাইকমিশনে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন
ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদা, উৎসব ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষ্যে দূতাবাস প্রাঙ্গন বর্ণাঢ্য ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে সুসজ্জিত করা হয়।
রবিবার (২৬ মার্চ) সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গনে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী। এসময় সমবেতকন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর হাইকমিশনার সকলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা পর্ব শুরু হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী শহিদ স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
হাইকমিশনার তার বক্তব্যের শুরুতে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহিদ এবং সম্ভ্রমহারা দুই লাখ মা-বোনসহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
সবশেষে হাইকমিশনার সকল ভেদাভেদ ভুলে জাতির পিতার অপূর্ণ স্বপ্ন বাস্তবায়নে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সুখী-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মানের লক্ষ্যে যার যার অবস্থানে থেকে একযোগে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।
আলোচনা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। হাইকমিশনার ও তাঁর সহধর্মিণী সন্ধ্যায় বাংলাদেশ হাউসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে এক ইফতার-ডিনার এর আয়োজন করেন।
ইমরান খানের বাড়িতে পুলিশের অভিযান, গ্রেপ্তার ৬১
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের লাহোরের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এসময় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ইমরান খানের ৬১ জন সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার দেশটির পুলিশ কর্মকর্তারা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিনিয়র পুলিশ অফিসার সুহেল সুখেরা ইমরান খানের বাড়িতে অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
পুলিশ অফিসার সুহেল সুখেরা অবশ্য বলেছেন, পুলিশ ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির সদস্যদের এবং তার বিরোধীদের নির্মিত একটি ব্যারিকেড অপসারণের কাজ করেছে।
তিনি বলেন, তারা কংক্রিটের ব্লক, কাটা গাছ, তাঁবু এবং একটি ট্রাক পার্ক করে ইমরান খানের বাড়ির চারপাশের রাস্তাগুলো অবরোধ করে রেখেছিল।
এ অভিযানের সময় ইমরান খান বাড়িতে ছিলেন না।
প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিদেশ থেকে পাওয়া উপহার বিক্রি এবং তার সম্পদ গোপন করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে হওয়া মামলার শুনানিতে অংশ নিতে তিনি ইসলামাবাদে গিয়েছিলেন। বিচারক এই মামলার শুনানি ৩০ মার্চ পর্যন্ত মুলতবি করেন।
আরও পড়ুন: শাহরুখ ও সালমানের চেয়ে অনেক ভালো অভিনেতা ইমরান খান: পাকিস্তানের রাজনীতিবিদ
সুখেরা বলেন, ইমরান খানের সমর্থকরা লাঠি হাতে পাথর ও মলোটভ ককটেল নিক্ষেপ করে পুলিশকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে এবং খানের বাড়ির ছাদে থাকা এক ব্যক্তি গুলি চালায়। এতে অন্তত তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
সুখেরা আরও বলেন, খানের বাসভবনের প্রধান দরজা ভেঙ্গে তারা পুলিশের ওপর হামলায় ব্যবহৃত অটোমেটেড অস্ত্র, মোলোটভ ককটেল, লোহার রড ও লাঠিসোঁটা খুঁজে পেয়েছে।
সুখেরা জানান যে বিশাল বাসভবনের ভেতরে, পুলিশের ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের আশ্রয় দেয়ার জন্য অবৈধ স্থাপনা তৈরি করা হয়েছিল। যারা কয়েক ডজন পুলিশ অফিসারকে আহত করেছে।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এ বিষয়ে বলেন, পুলিশ খানের বাড়িতে অনুসন্ধান করে বাঙ্কার খুঁজে পেয়েছে, যেখানে আরও অনেক অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুকিয়ে রাখা আছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে খানের সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেছিল এবং তাদের তাড়া করে জামান পার্কের আশেপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যায়।
অন্যদিকে, শনিবার ইমরান খান ও তার আইনজীবী ইসলামাবাদের একটি আদালতে হাজির হন। কারণ একদিন আগেই দেশটির শীর্ষ আদালত খানের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করে, তাকে ইসলামাবাদে চলাফেরা করার সুযোগ দেয় এবং তাকে আটক না করেই দুর্নীতি মামলা পরিচালনার নির্দেশ দেন।
মামলার আগের দুই শুনানিতেই হাজির না হওয়ায় ১৩ মার্চ দ্বিতীয়বার আদালত তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। এরপর থেকে খান লাহোরে তার বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের হাত থেকে রক্ষা করতে তার সমর্থকরা ঢিল ছুঁড়েছে এবং লাঠিচার্জকারী পুলিশের সঙ্গে টানা দুই দিন ধরে সংঘর্ষ করেছে।
শনিবার খানের গাড়িবহর ইসলামাবাদের জেলা আদালতের জুডিশিয়াল কমপ্লেক্সের কাছে পৌঁছালে পুলিশ তাদের কমপ্লেক্সে ঢুকতে বাধা দেয়। এরপরই তার সমর্থকরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে সরকারবিরোধী সমাবেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গুলিবিদ্ধ
বিক্ষুব্ধ খান সমর্থকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়ে মারে এবং পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য কাঁদানে গ্যাসের ক্যানিস্টার ছোঁড়ে।
সানাউল্লাহ বলেন, খানের অনেক সমর্থক সশস্ত্র ছিল।
খানের অ্যাটর্নি বাবর আওয়ান বিশেষ পরিস্থিতিতে ইমরান খানের আদালতে উপস্থিতি থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন করেছিলেন।
শনিবার বিচারিক কমপ্লেক্সের গেটে উপস্থিত হওয়া সত্ত্বেও পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ না করা এবং আদালতে হাজির না হওয়ার জন্য খানের নিন্দা করেছেন আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার।
তিনি অভিযোগ এড়াতে খানকে তার বিক্ষুব্ধ সমর্থকদের ব্যবহার করার অভিযোগ করেন।
তারার মতে, খানের সমর্থকরা ছত্রভঙ্গ হওয়ার সময় বিচারিক কমপ্লেক্সের বাইরে দুটি পুলিশের গাড়ি এবং বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ইমরান খান ইসলামাবাদে যাওয়ার সময় একটি ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন যে পুলিশ লাহোরে তার বাসভবনে ভাঙচুর করেছে, যখন তার স্ত্রী বাড়িতে একা ছিলেন।
তিনি এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দায়ীদের শাস্তির দাবি জানান।
খানের পিটিআই পার্টির সেক্রেটারি-জেনারেল আসাদ উমর পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতির কাছে একটি চিঠিতে বলেছেন, পুলিশ ইমরান খানের লাহোরের বাড়িতে অভিযানের জন্য তার ইসলামাবাদ যাওয়ার অপেক্ষা করেছিল।
তিনি বলেন, ‘দরজা ও দেয়াল গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে’ এবং বাড়ির ৪০ জনেরও বেশি লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত এপ্রিলে সংসদে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন বর্তমান বিরোধীদলীয় নেতা ইমরান খান।
তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিদেশ থেকে পাওয়া উপহার বিক্রি এবং সম্পদ গোপন করার অভিযোগ রয়েছে। যদিও তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন: ইমরান খানকে অযোগ্য ঘোষণা করল পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন
প্রাক্তন ক্রিকেট তারকা থেকে ইসলামপন্থী রাজনীতিবিদে পরিণত হওয়া ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে, এটি তার মধ্যে একটি।
৭০ বছর বয়সী ইমরান খান পার্লামেন্টে আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি দাবি করেছেন যে তার ক্ষমতা থেকে অপসারণ তার উত্তরসূরি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল।
যদিও ওয়াশিংটন ও শাহবাজ শরীফের সরকার উভয়েই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১০ পুলিশ নিহত
পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পুলিশভ্যানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ১০ পুলিশ সদস্য নিহত এবং ১৩ জন আহত হয়েছে। সোমবার বেলুচিস্তান প্রদেশের সিবিআই জেলার একটি সেতুতে এ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।
তবে, তাৎক্ষণিক এ হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি।
তবে এর আগেও একাধিকবার বালুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং স্থানীয় জঙ্গিদের এই ধরনের হামলার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাবুলে শিক্ষাকেন্দ্রে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ১৯: তালেবান
স্থানীয় পুলিশ প্রধান মাহমুদ নোটেনজাই বলেছেন, হামলার সময় পুলিশ সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, হতাহতদের এসআইবিআই প্রাদেশিক কোয়েট্টা থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এই হামলার নিন্দা করেছেন।
তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন এবং আহত পুলিশ সদস্যদের সর্বোত্তম চিকিৎসা দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।
শাহবাজ এই হামলাকে পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করার জন্য শত্রুদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
এছাড়াও তিনি সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী আব্দুল কুদ্দুস বিজেঞ্জোও এ হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন।
তিনি বলেন, যেসব সন্ত্রাসী এই ধরনের আক্রমণ চালাচ্ছে তারা পাকিস্তানের শত্রু।
তিনি আরও বলেছেন, তারা দেশের পুলিশের সংকল্পকে টলাতে পারবে না।
দীর্ঘদিন ধরে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি এবং এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ইসলামাবাদের কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার দাবিতে বিদ্রোহ করছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮৮
পাকিস্তানে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ২০, আহত ৯৬
পারভেজ মোশাররফ: জানা অজানা নানা দিক
পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ (৭৯) দীর্ঘ রোগভোগের পর রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। পাকিস্তানি টিভি চ্যানেল জিও নিউজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পারভেজ মোশাররফ ১৯৯৯ সালে রক্তপাতহীন এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নওয়াজ শরিফকে ক্ষমতাচ্যুত করেন এবং ২০০৮ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন।
ফের ক্ষমতায় আসার পর নওয়াজ শরিফের সরকার মোশাররফকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত করে এবং তাকে পাকিস্তানের একটি বিশেষ আদালত মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন।
এখানে তার জীবন এবং শাসনামলের একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া হলো-
শুরুর জীবন
মোশাররফ ১৯৪৩ সালের ১১ আগস্ট দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ মোশাররফউদ্দিন (সরকারি চাকুরিজীবী ও কূটনীতিক) এবং মা বেগম জারিন মোশাররফ। তার আরও দুই ভাই রয়েছেন। তার ভাই ড. জাভেদ মোশাররফ একজন অর্থনীতিবিদ এবং ড. নাভেদ মোশাররফ একজন অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনাবসানের পর ভারত বিভক্তির পর, তার পরিবার পাকিস্তানে চলে যায়। সরকারি কর্মচারী বাবার চাকরির সুবাদে তিনি সাত বছর তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় কাটিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ মারা গেছেন
১৯৭১ সালের নৃশংসতার জন্য পাকিস্তানকে প্রথমে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ চায় পাকিস্তান ১৯৭১ সালে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর চালানো নৃশংসতার জন্য ‘আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাক।’
তিনি পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার’কে বলেছেন,‘আপনাদেরকে প্রথমে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে ... যদি প্রথমে এটি (প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া) করা হয়, তাহলে আমি আপনাদের হয়ে যুক্তি দিতে পারি। তা না হলে এটা আমার জন্য খুব কঠিন হবে। আমি তা করতে পারি না। এটা শুদ্ধ ও সহজ কথা।’
রবিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার সঙ্গে বৈঠকে যেসব বিষয়ে কথা বলেছেন তা জানিয়ে এ কথা বলেন।
মোমেন বলেন,পাকিস্তান বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে চায়; কিন্তু বাংলাদেশ মনে করিয়ে দিয়েছে যে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া হলো পাকিস্তানের প্রথম কাজ।
এর আগে শনিবার শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন হিনা রব্বানী।
মোমেন শ্রীলঙ্কার ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে সফর করেন। এখানে প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, পাকিস্তানের প্রতিমন্ত্রী তার অনুরোধের সরাসরি কোনও জবাব দেননি, তবে তাদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের কোনো ইস্যু থাকলে তা অবশ্যই অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কাজ দিয়ে শুরু করতে হবে।
তিনি বাণিজ্য সম্পর্ক মোটামুটি ভারসাম্যপূর্ণ করতে পাকিস্তানের প্রতিমন্ত্রীকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
এছাড়া শনিবার মোমেন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য মন্ত্রীদের সঙ্গে কলম্বোর গল ফেস গ্রিন-এ যৌথ বাহিনীর কুচকাওয়াজ, ফ্লাই-বাই এবং প্যারাসুট প্রদর্শনর সমন্বয়ে আয়োজিত ‘স্বাধীনতা প্যারেডে’ অংশ নেন।
আরও পড়ুন: প্রমোদতরি ‘এম ভি গঙ্গা বিলাস’: ষাট গম্বুজ মসজিদ পরিদর্শনে ২৫ বিদেশি পর্যটক
এসময় ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভি মুরালীধরনও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন।
তারা আসন্ন দ্বিপক্ষীয় সফর এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন এবং দুই দেশের জনগণের স্বার্থে ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর জোর দেন।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মন্ত্রীরা বাংলাদেশের অব্যাহত অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের প্রশংসা করেন।
শনিবার সন্ধ্যায় মোমেন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ যেমন- ভারত, নেপাল, ভুটান ,পাকিস্তান ও জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও কমনওয়েলথের মহাসচিব এবং সফররত বিভিন্ন রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মানে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কাকে ধার দেয়া টাকা ফেরত পেতে পারে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পাকিস্তানে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ২০, আহত ৯৬
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারের একটি মসজিদের ভিতরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং ৯৬ জন মুসল্লি আহত হয়েছেন। সোমবার স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পেশোয়ারের একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা সাদ্দিক খান বলেছেন, কেউ তাৎক্ষণিকভাবে বোমা হামলার দায় স্বীকার করেনি।
তবে অতীতে একই ধরনের আত্মঘাতী হামলায় পাকিস্তানি তালেবানদের দায়ী করা হয়েছে।
আশেপাশের পুলিশ অফিসের অনেক পুলিশসহ প্রায় ১৫০ জন মুসল্লি মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন, এসময় হামলাকারী তার আত্মঘাতী জ্যাকেটের বিস্ফোরণ ঘটায়।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা জাফর খান জানান, বিস্ফোরণের প্রভাবে মসজিদের ছাদ ধসে পড়ে এবং এতে অনেকে আহত হয়।
একজন বেঁচে যাওয়া ৩৮ বছর বয়সী পুলিশ অফিসার মীনা গুল জানান, বোমাটি বিস্ফোরণের সময় তিনি মসজিদের ভেতরে ছিলেন।
গুল আরও বলেন, কীভাবে তিনি অক্ষত অবস্থায় বেঁচে গেছেন তা তিনি জানেন না। বোমা বিস্ফোরণের পর তিনি শুধু চিৎকার ও চেঁচামেচি শুনতে পান।
পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধারকারীরা মসজিদের মাঠ থেকে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ফেলার এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা মুসল্লিদের উদ্ধারের চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বোমা হামলায় যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত, আহত ১৫
খান বলেন, আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে গুরুতর অবস্থায় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এক বিবৃতিতে বোমা হামলার নিন্দা করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সম্ভাব্য সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি হামলার পিছনে যারা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও এক টুইটার পোস্টে বোমা হামলার নিন্দা করেছেন এবং এটিকে ‘সন্ত্রাসী আত্মঘাতী হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমার প্রার্থনা ও সমবেদনা নিহতদের পরিবারের সঙ্গে থাকবে।’
ইমরান আরও বলেছেন, ‘সন্ত্রাসবাদের ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবিলায় আমাদের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের উন্নতি করা এবং আমাদের পুলিশ বাহিনীকে যথাযথভাবে প্রস্তূত করা অপরিহার্য।’
পেশোয়ার হল আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী এবং এখানে প্রায়ই জঙ্গি হামলা ঘটে।
পাকিস্তানি তালেবান গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি নামে পরিচিত। তারা পৃথক গোষ্ঠী হলেও আফগান তালেবানের ঘনিষ্ঠ মিত্র। আফগানিস্তানে ২০ বছর যুদ্ধের পর মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্য প্রত্যাহারের পর ২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতা দখল করে তালেবান।
টিটিপি পাকিস্তানে ইসলামী আইনের কঠোর প্রয়োগের জন্য, সরকারি হেফাজতে থাকা তাদের সদস্যদের মুক্তি এবং দেশটির সাবেক উপজাতীয় অঞ্চলে পাকিস্তানি সামরিক উপস্থিতি হ্রাস করার জন্য গত ১৫ বছর ধরে বিদ্রোহ চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তের কাছে মর্টার বিস্ফোরণে নিহত ৪, নিখোঁজ ২০
পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৩ চীনা নাগরিক নিহত
পাকিস্তানে যাত্রীবাহী বাসে আগুন, নিহত ৪০
পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে একটি যাত্রীবাহী বাস পিলারের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সেতু থেকে পড়ে গিয়ে আগুন লেগে ৪০ জন নিহত হয়েছেন।
রবিবার সকালে বেলুচিস্তান প্রদেশের লাসবেলা জেলার বেলা শহরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: মুম্বাই হামলায় জড়িত পাকিস্তানিকে সন্ত্রাসী ঘোষণা জাতিসংঘের
বেলার সহকারী কমিশনার হামজা আনজুম নাদিম জানান, বাসটি বেলুচিস্তান প্রদেশের কোয়েটা থেকে ৪৪ জন যাত্রী নিয়ে পার্শ্ববর্তী সিন্ধু প্রদেশের করাচি যাওয়ার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে নারী ও শিশুসহ ৪০ জনের লাশ এবং আহত অবস্থায় চার যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'অতিরিক্ত গতির কারণে বাসটি সেতুর একটি পিলারের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এরপর সেতু থেকে পড়ে যাওয়ার পরপরই আগুন ধরে যায়।
দুর্ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, পুড়ে যাওয়া বাসটি সেতুর কাছে পড়ে আছে। উদ্ধার হওয়া কিছু লাশ কাছাকাছি সারিবদ্ধভাবে রাখা আছে।
সহকারী কমিশনার জানান, কিছু লাশ এত বেশি পুড়েছে যে, তা চেনার উপায় নেই।
তিনি আরও বলেন, লাশগুলোকে ডিএনএ নমুনার জন্য করাচিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। লাশ শনাক্তের পর নিহতদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
লাসবেলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ও ইধি ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের কর্মীরা উদ্ধার অভিযান চালায় বলেও জানান তিনি।
এ হতাহতের ঘটনায় বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী মীর আবদুল কুদ্দুস বিজেঞ্জো দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা সুবিধা প্রদানের জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
পাকিস্তানে ট্রাফিক দুর্ঘটনা সাধারণত ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের কারণে ঘটে, যার ফলে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ মারা যায়।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে লোডশেডিং: সরকারের পক্ষে অবস্থান পাক জ্বালানি মন্ত্রীর
পাকিস্তানে বোমা হামলায় যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত, আহত ১৫
পাকিস্তানে লোডশেডিং: সরকারের পক্ষে অবস্থান পাক জ্বালানি মন্ত্রীর
পাকিস্তানে বিপর্যয়কারী দিনব্যাপী গ্রিড বিপর্যয়ের জেরে তীব্র গণঅসন্তোষের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ নিয়েছেন দেশটির জ্বালানি মন্ত্রী খুররম দস্তগীর।
মঙ্গলবার রাজধানী ইসলামাবাদে দস্তগীর সাংবাদিকদের বলেন,‘আজ ভোর সোয়া পাঁচটায় বিদ্যুৎ পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।’
তবে গ্রিড বিপর্যয়ের জন্য জ্বালানি মন্ত্রী কোন ক্ষমা প্রার্থনা করেননি কিংবা সরকারের জ্বালানি-সাশ্রয়ী পদক্ষেপের কারণে এই সংকট হয়েছে কিনা- এ বিষয়েও তিনি কোনও আলোকপাত করেননি।
অন্যদিকে তিনি সিস্টেম বুট আপ করার জন্য দেশের প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদের প্রশংসা করেছেন।
আরও পড়ুন: তালেবানদের হাতে বন্দি কর্মকর্তাদের উদ্ধারে পাকিস্তানে অভিযান শুরু
মন্ত্রী জানান, সোমবার প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের গঠিত তিন সদস্যের কমিটি এ বিষয়ে সঠিক তথ্য দেবে।
তিনি বলেন, কমিটিকে ‘আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব’। তারা কিছুদিনের মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত শেষ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তদন্তে দেখা যাবে ঠিক কী কারণে বিভ্রাট হয়েছে।
দস্তগীর আরও ‘আশঙ্কা করছেন’ যে হ্যাকাররা পাকিস্তানি গ্রিডের সিস্টেমগুলোকে হ্যাক করায় বিদ্যুত বিভ্রাট হতে পারে।
তিনি মূলত প্রযুক্তিগত ত্রুটিকে দায়ী করেছেন।
দস্তগীর আরও বলেন যে পাকিস্তানের দু’টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র এখনও বন্ধ থাকায় সম্পূর্ণ বিদ্যুত আসতে সময় লাগতে পারে এবং এই সপ্তাহে কোথাও কোথাও ‘নিয়মিত বিদ্যুত বিভ্রাট’ ঘটতে পারে।
সোমবার প্রায় ১২ ঘণ্টার লোডশেডিংয়ে সারাদেশের মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে। ব্ল্যাকআউটে স্কুল,কারখানা ও দোকানগুলো অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। তীব্র শীতের মধ্যে গ্রিড বিপর্যয় হওয়ায় প্রায় ২২ কোটি মানুষের দেশটির অনেকেই খাবার পানির সংকটে ছিলেন।
শুধুমাত্র দেশটির বড় কয়েকটি হাসপাতাল,সামরিক ও সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিখ্যাত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহে জেনারেটর চালু ছিল।
জানা যায়, বেশিরভাগ বিদ্যুত পুনরুদ্ধার করা হলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশের কিছু অংশে এখনও ব্ল্যাকআউট রয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, সরকারের জ্বালানি-সাশ্রয়ী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রবিবার রাতে কম ব্যবহারের সময় বিদ্যুত বন্ধ করে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
সোমবার ভোরে আবার বিদ্যুত চালু করার সময় সিস্টেমে বিপর্যয় দেখা দেয়।
এ বছরের ব্ল্যাকআউট ২০২১ সালের জানুয়ারির বিশাল ব্ল্যাকআউটের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। পাকিস্তানের সেবারের ব্ল্যাকআউটকে বিদ্যুত উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থায় প্রযুক্তিগত ত্রুটিকে দায়ী করা হয়। পাকিস্তান তার বিদ্যুতের অন্তত ৬০ ভাগ পায় জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে এবং প্রায় ২৭ ভাগ উৎপন্ন হয় জলবিদ্যুৎ থেকে। দেশটির গ্রিডে পারমাণবিক ও সৌরশক্তির অবদান প্রায় ১০ ভাগ।
সোমবার বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ-এর অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী দেশের অর্থনীতির অব্যবস্থাপনার জন্য সরকারের সমালোচনা করেছেন এবং বলেছেন যে এই ব্ল্যাকআউট সরকারের অযোগ্যতার প্রতিফলন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বোমা হামলায় যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত, আহত ১৫
মুম্বাই হামলায় জড়িত পাকিস্তানিকে সন্ত্রাসী ঘোষণা জাতিসংঘের
মুম্বাই হামলায় জড়িত পাকিস্তানিকে সন্ত্রাসী ঘোষণা জাতিসংঘের
মুম্বাইতে ২০০৮ সালের সন্ত্রাসী হামলায় ১৬৬ জনের প্রাণহানির ঘটনায় পাকিস্তানে বন্দি থাকা একজন ভারত-বিরোধী জঙ্গিকে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী হিসাবে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ।
পাকিস্তানি নাগরিক আবদুল রেহান মক্কিকে সন্ত্রাসী ঘোষণার একদিন পর মঙ্গলবার প্রতিবেশী ভারত স্বাগত জানিয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে যে ইসলামিক সম্প্রদায় নিজেই সন্ত্রাসের শিকার এবং পাকিস্তান জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে।
নিষিদ্ধ লস্কর-ই-তৈয়বা গ্রুপের ৬৮ বছর বয়সী মক্কী একজন সিনিয়র ব্যক্তিত্ব। যে গ্রুপ মূলত কাশ্মীরের বিতর্কিত হিমালয় অঞ্চলে সক্রিয়। তাকে ২০১৯ সালে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং সন্ত্রাসে অর্থায়নের অভিযোগে দু’টি পৃথক মামলায় নভেম্বর এবং ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তের কাছে মর্টার বিস্ফোরণে নিহত ৪, নিখোঁজ ২০
মক্কিকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। কিন্তু কর্মকর্তারা বলেছেন যে তিনি এখনও কোনও ব্যাখ্যা না দিয়ে হেফাজতে রয়েছেন। মামলার সঙ্গে জড়িত একাধিক সরকারি কর্মকর্তার মতে, তাকে তার আপিলের জন্য পাঞ্জাবে আটক রাখা হয়েছে।
আল-কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেট চরমপন্থী এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার তত্ত্বাবধানে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কমিটি কাউন্সিলের ১৫ সদস্যের অনুমোদনের পর মক্কিকে নিষেধাজ্ঞার কালো তালিকায় রাখে।
জাতিসংঘের মূল্যায়নের আওতায়, মাক্কির সম্পদ জব্দ করা যেতে পারে এবং তিনি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞারও সম্মুখীন হবেন।
মুম্বাই হামলার পরিকল্পনার জন্য অভিযুক্ত জঙ্গি নেতা হাফিজ সাঈদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় মক্কি। ৭২ বছর বয়সী সাইদ ৩১ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন এবং ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ তাকে সন্ত্রাসী হিসেবে মনোনীত করেছিল।
পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন মুম্বাই হামলার জন্য মক্কির মতো সাঈদকে কখনও অভিযুক্ত করা হয়নি। তিনি লস্কর-ই-তৈয়বা’র প্রতিষ্ঠাতা, যেটিকে মুম্বাইয়ে হামলার জন্য ভারত দায়ী করেছিল।
চীন মক্কিকে যুক্ত করার ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করার পরে সোমবারের জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত এসেছে, যারা ২০১০ সালের নভেম্বর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল।
আরও পড়ুন: ১৯৭১ সালের পরাজয়কে ‘সামরিক ব্যর্থতা’ বললেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রাজধানী নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শ্রী অরিন্দম বাগচি মঙ্গলবার মক্কিকে সন্ত্রাসী হিসেবে মনোনীত হওয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ভারত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য-সহনশীলতার দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসযোগ্য, যাচাইযোগ্য এবং অপরিবর্তনীয় পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চাপ দিতে থাকবে।’
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মমতাজ জাহরা বালোচ বলেছেন, ‘পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের শিকার এবং জাতিসংঘ ও অন্যান্য বহুপক্ষীয় ফোরামসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে।’
বেলুচ এক বিবৃতিতে বলেছেন যে ‘পাকিস্তান সবসময় জাতিসংঘের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী ব্যবস্থার অখণ্ডতা বজায় রাখার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের তালিকাভুক্তির নিয়ম, পদ্ধতি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রক্রিয়াগুলো কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।’
১৯৪৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর পাকিস্তান ও ভারতের তিক্ত সম্পর্কের ইতিহাস রয়েছে। কাশ্মীর নিয়ে তাদের তিনটি যুদ্ধের মধ্যে দু’টিতে লড়াই করেছে। যেটিতে তারা ওই এলাকাকে উভয়েই তাদের সম্পূর্ণরূপে নিজেদের দাবি করেছে।
আরও পড়ুন: তালেবানদের হাতে বন্দি কর্মকর্তাদের উদ্ধারে পাকিস্তানে অভিযান শুরু
তালেবানদের হাতে বন্দি কর্মকর্তাদের উদ্ধারে পাকিস্তানে অভিযান শুরু
পাকিস্তানের বিশেষ বাহিনী একটি প্রত্যন্ত উত্তর-পশ্চিম জেলায় একটি সন্ত্রাসবিরোধী কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে পাকিস্তানি তালেবান জঙ্গিদের একটি গ্রুপের হাতে জিম্মি হওয়া বেশ কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে মুক্ত করতে এই অভিযান শুরু করেছে।
মঙ্গলবার দেশটির নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এই তথ্য জানিয়েছেন।
রবিবার খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নুর কেন্দ্রে বছরের পর বছর ধরে তাদের রক্ষীদের পরাস্ত করে তাদের অস্ত্র ছিনিয়ে নেয় এবং তাদের জিম্মি করার পরে এই অভিযান চালানো হয়।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে যাত্রীবাহী ভ্যান খাদে পড়ে নিহত ২০, আহত ১৩
সোমবার জিম্মিকারীদের হাতে কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জিম্মিকারীদের সঙ্গে আলোচনা করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ৪০ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর ওই এলাকায় মোতায়েন বিশেষ বাহিনী কম্পাউন্ডে হামলা চালায়। তারা বিস্তারিত আর কিছু বলেননি।
মঙ্গলবার বিকাল নাগাদ, দু’টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনার পর কম্পাউন্ডের ভেতর থেকে ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উড়ে যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে(এপি)কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এলাকা জুড়ে থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল।
জিম্মিকারী বা তালেবান যোদ্ধাদের কী হয়েছিল তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়। কোনো সামরিক বা সরকারি মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এর আগে, কর্মকর্তারা বলেছিলেন যে কেন্দ্রটি দখলে নেয়ার সঙ্গে প্রায় ৩০ তালেবান যোদ্ধা জড়িত ছিল। জিম্মিকারীরা জঙ্গি গোষ্ঠীর সাবেক শক্ত ঘাঁটিতে নিরাপদে সরে যাওয়ার দাবি জানিয়েছিল।
আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলে রবিবার কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ হারানো সরকারের নির্লজ্জভাবে অক্ষমতার প্রতিফলন।
পাকিস্তানি তালেবান তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি নামেও পরিচিত। তারা আলাদা কিন্তু আফগান তালেবানদের মিত্র যারা গত বছর প্রতিবেশী আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখল করেছিল কারণ মার্কিন এবং ন্যাটো সৈন্যরা ২০ বছরের যুদ্ধের পর দেশ থেকে তাদের প্রত্যাহারের শেষ সপ্তাহে ছিল।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তের কাছে মর্টার বিস্ফোরণে নিহত ৪, নিখোঁজ ২০
১৯৭১ সালের পরাজয়কে ‘সামরিক ব্যর্থতা’ বললেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী