যানজট
ঢাকার যানজট সমস্যা নয়, চ্যালেঞ্জ: ডিএনসিসি মেয়র
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ঢাকার যানজট মূলত সমস্যা নয়, এটি রীতিমতো একটি চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিনই ঢাকায় মানুষ আসছে। এদের নিয়ন্ত্রণ রীতিমতো একটি চ্যালেঞ্জ, তাই দরকার সমন্বিত ব্যবস্থাপনা।
আরও পড়ুন: ৩০দিনের বিশেষ মশা নিধন কর্মসূচি পরিচালনা করা হবে: ডিএনসিসি মেয়র
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ ২০২৩) স্থানীয় সময় দুপুরে ওয়াশিংটন ডিসির বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে দু’দিনের ট্রান্সপোর্টেশন সামিটের প্রথমদিন শেষে এসব কথা বলেন ডিএনসিসি মেয়র।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য মেগা সিটির গণপরিবহন ব্যবস্থার সংকট উত্তরণের উপায় ও জ্বালানি সাশ্রয়ী আগামীর পরিবহন ব্যবস্থা চালু করা। ঢাকায় মেট্রোরেল চালু হয়েছে, বাস রুটে র্যাশনালাইজেশনের মাধ্যমে সিটি বাস সার্ভিসকে নিয়মের মধ্যে আনার চেষ্টা চলছে।
মেয়র আতিক বলেন, পরবর্তী ধাপে ঢাকার রাস্তায় জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব ইলেকট্রিক বাস নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া মেট্রোরেলের স্টেশন কেন্দ্রিক করিডোর ব্যবস্থাপনার জন্য ডিএনসিসিকে প্রায় এক হাজার ৬০০ কোটি টাকার ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ঢাকা শহরের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে জনসংখ্যার ঘনত্ব। ঢাকার জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে চার হাজার ৯০০। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঢাকা শহরে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার মানুষ প্রবেশ করছে। যা নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর।
মেয়র বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতায় প্রায় দেড় কোটি মানুষের জন্য মাত্র সাত শতাংশ রাস্তা রয়েছে। যেখানে দরকার ন্যূনতম ২৫ শতাংশ। ঢাকার রাস্তায় যানবাহনের গড় গতি ঘণ্টায় মাত্র ছয় কিলোমিটার, ফলে উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাচ্ছে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় বাসের তুলনায় ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ৩৩ গুণ বেশি। আমি কিছু স্বল্পমেয়াদি এবং মধ্য মেয়াদি পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা ঢাকার বাস রুট রেশনালাইজেশনে ২৪টি রুটে ২২টি কোম্পানির বাস পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়েছি এবং ইতোমধ্যে তিনটি রুট চলমান। শিগগিরই আরও দুইটি রুট চালু হবে।
তিনি আরও বলেন, স্বল্পমেয়াদী কর্ম পরিকল্পনায় আরও রয়েছে স্কুল বাস চালু, অ্যাপভিত্তিক রাস্তায় কার পার্কিং ইত্যাদি। মিড টার্ম অ্যাকশনের মধ্যে আছে আইসিএম প্রোজেক্ট, ডেডিকেটেড বাস বে তৈরি।
এছাড়াও সম্মেলন থেকে অন্তর্ভুক্তিমূলক গণপরিবহন ব্যবস্থাপনার জন্য পথচারীবান্ধব ফুটপাত, প্রতিটি সড়কে আলাদা সাইকেল লেন করাসহ বেশকিছু সুপারিশ উঠে আসে।
আরও পড়ুন: আগামী বর্ষায় ১৫ মিনিটে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত হবে: ডিএসসিসি মেয়র
মেয়র হানিফ উড়ালসেতুর নিচে সৌন্দর্যবর্ধন নিশ্চিত করা হবে: ডিএসসিসি মেয়র
ট্রাফিক সতর্কতা: ঢাকাবাসীদের আগামীকাল থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত বিমানবন্দর-উত্তরা রুট পরিহার করার অনুরোধ
ঢাকা বাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ রাজধানীর যাত্রীদের বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রবিবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত খিলক্ষেত থেকে বিমানবন্দর হয়ে উত্তরা রুট ব্যবহার না করার জন্য অনুরোধ করেছে।
বিআরটি প্রকল্পের উন্নয়ন কাজের কারণে ঢাকা বিমানবন্দর-উত্তরা রুটে যানজট পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কায় এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
বিআরটির প্রকল্প পরিচালক এএসএম ইলিয়াস শাহ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ও ২৭ নভেম্বর ঢাকা বিমানবন্দর এলাকায় বিআরটি প্রকল্পের জন্য বিশেষ সড়ক উন্নয়ন কাজ পরিচালনা করা হবে।
এ পরিস্থিতিতে ঢাকা বিমানবন্দর-উত্তরা রুটে সরকারি-বেসরকারি যানবাহন চলাচল এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ট্রাফিক সতর্কতা: খিলক্ষেত-উত্তরা-গাজীপুর রুট এড়াতে ঢাকাবাসীদের অনুরোধ ডিএমপির
খুলনা মহানগরীর ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি ব্যবস্থা অকার্যকর
দীর্ঘ ট্রাফিক জ্যামে সময় কাজে লাগানোর উপায়
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: জলাবদ্ধতা, যানজটে চরম ভোগান্তিতে রাজধানীবাসী
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে প্রবল বর্ষণের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে যাত্রীরা যানজটের কবলে পড়ে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক ইউএনবিকে জানান, মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সোমবার রাতে সিত্রাং দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানলে রাজধানীসহ বাংলাদেশের প্রায় সমস্ত অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ের সম্মুখীন হয়। এছাড়া গাছ উপড়ে পড়ে, মানুষ নিহত এবং বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন বিচ্ছিন্ন হয়।
সকালে সিটি করপোরেশনের কর্মীদের ঢাকার মহাসড়কগুলো থেকে উপড়ে পড়া গাছগুলোকে সরাতে দেখা গেছে।
জলাবদ্ধতার কারণে যানবাহন চলাচল শ্লথ হওয়ায় সকালে অফিসগামীসহ অন্যান্যরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকা পড়েন।
সরেজমিনে দেখা যায় উত্তরখান, দক্ষিণখান, ভাটারা, মোহাম্মদপুর, বাড্ডা, আজিমপুর, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, জুরাইনসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তা-ঘাট বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে।
খিলক্ষেত থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা রয়েছে এবং বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের চলমান কাজ কেবল যাতায়াতে দুর্ভোগ বাড়িয়েছে।
সকালে বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলায় টঙ্গীর নিকটবর্তী আবদুল্লাহপুর এলাকায় চলাচল অত্যন্ত ধীর হওয়ায় হোটেল লে মেরিডিয়ান থেকে ঢাকা বিমানবন্দর সড়ক পর্যন্ত দীর্ঘ সারিতে বাস ও ব্যক্তিগত যানবাহনগুলো আটকে থাকে।
এদিকে, বাংলাদেশ নৌবাহিনী সদর দপ্তরের সামনের রাস্তা সকালে জলাবদ্ধ ছিল- যা ফ্লাইওভার দিয়ে খিলক্ষেত এলাকা থেকে বনানী অভিমুখী যাত্রীদের জন্য আরেকটি দীর্ঘ সারি তৈরি করেছিল।
র্যাডিসন ব্লু হোটেলের দিকে কুড়িল ফ্লাইওভার নামার অংশও পানির নিচে ছিল এবং বনানীর দিকে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি করে।
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার ট্রাফিক (ঢাকা উত্তর) আবু রায়হান মো. সালেহ ইউএনবিকে বলেন, গতকালের টানা বৃষ্টিতে নৌবাহিনী সদর দপ্তরের সামনের সড়কসহ বেশ কয়েকটি স্থানে জলাবদ্ধতা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার সকাল থেকে উত্তরা-মহাখালী পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটে লোকজন আটকে ছিল। তবে মিরপুর এলাকায় যান চলাচল নির্বিঘ্ন ছিল।’
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: রাজধানীতে বৃষ্টিতে জীবনযাত্রা ব্যাহত
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, কর্তৃপক্ষ রাস্তা থেকে ৪৭টি পড়ে যাওয়া গাছ সরিয়ে নিয়েছে।
এছাড়া মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৭টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের গুদাম পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের সময় সারাদেশে ৩২৯টি গাছ উপড়ে গেছে এবং ৩৪টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সোমবার মধ্যরাতে ভোলার কাছে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে এবং বৃষ্টিপাত শুরু করে দ্রুত দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সিত্রাং এখন ঢাকা-কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় স্থল নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশ বিরোধীদের পক্ষে
রাজধানীতে গায়ে আগুন দিয়ে রিকশাচালকের আত্মহত্যা!
আবদুল্লাহপুর থেকে মহাখালী পর্যন্ত যানজটে অফিসগামীরা
রাজধানীতে অফিসগামীরা ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং পরবর্তী প্রভাবের কারণে দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন। মঙ্গলবার সকালে আবদুল্লাহপুর থেকে মহাখালী পর্যন্ত বেশ কিছু জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা যায় এবং টঙ্গীতে চলমান বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প দুর্ভোগের মাত্রা আরও বাড়িয়েছে।
বিআরটি প্রকল্প এলাকার কারণে আবদুল্লাহপুর এলাকা থেকে যানবাহন খুব ধীরগতিতে চলাচল করায় হোটেল লে মেরিডিয়ান থেকে বিমানবন্দর সড়ক পর্যন্ত দীর্ঘ বাস, ব্যক্তিগত যানবাহনের সারির কারণে আটকা পড়তে হয় নগরবাসীদের।
এদিকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদর দপ্তরের সামনের সড়কে জলাবদ্ধতার কারণে ফ্লাইওভার দিয়ে খিলক্ষেত এলাকা থেকে বনানীগামী মানুষদের আরেকটি যানজটে পড়তে হচ্ছে।
অন্যদিকে কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে নেমে রেডিসন ব্লু হোটেলের দিকে যেতেও জলাবদ্ধতা দেখা গেছে এবং ফ্লাইওভার থেকে বনানীর দিকে আরেকটি যানজট পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।
ঢাকার উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) আবু রায়হান মো. সালেহ ইউএনবিকে বলেন, গতকালের অবিরাম বৃষ্টির কারণে নৌবাহিনী সদর দপ্তরের সামনের সড়কসহ বেশ কয়েকটি স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সকাল থেকে উত্তরা থেকে মহাখালী পর্যন্ত মানুষের ঢল নামে। তবে মিরপুর এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক।’
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সোমবার মধ্যরাতে ভোলার নিকটে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করলেও বৃষ্টিপাতের কারণে দ্রুত দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর অনুসারে, সিত্রাং খুব দ্রুত উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয় ও বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে এবং বর্তমানে ঢাকা-কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও তৎসংলগ্ন এলাকায় স্থল নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে।
সিত্রাং দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত করা শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে উপড়ে যাওয়া গাছ ও এর ডালপালার আঘাতে মানুষ মারা যায়। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয় এবং অবিরাম বৃষ্টির কারণে শহর এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় প্রায় সমগ্র বাংলাদেশ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হয়।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সোমবার ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হয়েছে।
এদিকে, রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জের অনেক এলাকা অন্ধকারে নিমজ্জিত। যেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটার কারণ হিসেবে কর্তৃপক্ষ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংকে দায়ী করেছে।
দৌলতদিয়ায় ৩ কিমি. দীর্ঘ যানজট
কয়েক দিনের টানা ছুটি, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে নদী পাড়ের অপেক্ষায় রয়েছে কয়েকশ’ গাড়ি। দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ক্যানাল ঘাট ছাড়িয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গাড়ির যাত্রীরা দুই-তিন ঘন্টার বেশি ধরে আটকে রয়েছেন।
রবিবার বিকালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুপুর থেকে দৌলতদিয়া প্রান্তে ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা ঢাকামুখী যাত্রীবাহী পরিবহনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের গাড়ির চাপ বাড়ে। সেই সঙ্গে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ফরিদপুরের আটরশিগামী গাড়ি ফিরতে থাকায় বাড়তি চাপ তৈরি হয়। এসব গাড়ি মিলে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ক্যানাল ঘাট ছাড়িয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার লম্বা গাড়ির লাইন তৈরি হয়।
এছাড়া শারদীয় দূর্গাপূজা সহ সাপ্তাহিক ছুটিতে থাকা অনেকে কর্মস্থলের দিকে ছুটছে। ওই সব মানুষবাহী গাড়ির চাপও রয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পর এই প্রথম যানবাহনের এতবড় লম্বা লাইন তৈরী হয়েছে।
কয়েক দিনের টানা ছুটি, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে নদী পাড়ের অপেক্ষায় রয়েছে কয়েকশ’ গাড়ি। দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ক্যানাল ঘাট ছাড়িয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গাড়ির যাত্রীরা দুই-তিন ঘন্টার বেশি ধরে আটকে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীর উত্তরা থেকে মহাখালী পর্যন্ত যানজট, যাত্রী দুর্ভোগ চরমে
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ১৬টি ফেরির মধ্যে বর্তমানে চলাচল করছে মাত্র ১০টি ফেরি। এরমধ্যে ৫টি রো রো (বড়), ৪টি ইউটিলিটি (ছোট) এবং ১টি কেটাইপ ফেরি চালু রয়েছে। অবশিষ্ট ফেরি পাটুরিয়ার ভাসমান কারখানা মধুমতিতে রাখা হয়েছে। এছাড়া দৌলতদিয়া প্রান্তে ৭টি ঘাটের মধ্যে বর্তমানে সচল রয়েছে ৪টি ঘাট। এরমধ্যে পানির নাব্যত কমতে থাকায় ৭নম্বর ঘাটের একটি পকেট বন্ধ রয়েছে। পন্টুনের সংস্কার কাজ চলায় রবিবার সকাল থেকে পকেটটি বন্ধ রাখা হয়েছে। ৬ নম্বর ঘাটটি ইউটিলিটি (ছোট) ফেরির জন্য। সবচেয়ে ব্যস্ততম এবং বড় ৫ নম্বর ঘাট নদী ভাঙনের কবলে পড়ায় ৬ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। ৪নম্বর ঘাট শুধুমাত্র ভিআইপি ফেরির জন্য সচল থাকে। ৩নম্বর ঘাটটি গতকাল শনিবার সারাদিন একটি পকেট যান্ত্রিক সমস্যায় বন্ধ ছিল, বর্তমানে সচল রয়েছে। বাকি ১ এবং ২ নম্বর ফেরি ঘাট ২০১৯ সালে ভাঙনে বিলীন হয়। পরে সংস্কার করলেও ঘাট দুটি চালু হয়নি।
দৌলতদিয়া ঘাট পরিবহন শ্রমিক মো. রানা শেখ বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি সংখ্যা বেশি থাকলেও গাড়ির স্বল্পতায় সবকটি ফেরি চালু করা হয়না। শনিবার সাপ্তাহিক ও ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটিতে অধিকাংশ কর্মজীবী মানুষ গ্রামের বাড়ির দিকে ছুটছে। আবার পূজাসহ সাপ্তাহিক ছুটি কাটিয়ে কেউ কর্মস্থলের দিকে ছুটতে থাকায় শনিবার রাত থেকে দৌলতদিয়া এবং পাটুরিয়া ঘাটে গাড়ির চাপ পড়ে। এরপর সবকটি ফেরি চালু না করায় দৌলতদিয়া প্রান্তে গাড়ির লম্বা লাইন তৈরি হয়েছে।
ফরিদপুরের আটরশি ফেরত আলামিন শেখ নামের এক বাসযাত্রী বলেন, গতকাল শনিবার রাতে তারা গাজীপুর থেকে তিনটি বাস বোঝাই করে আটরশিতে যান ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করতে। রাত শেষে সকালে মিছিল ও দোয়া অনুষ্ঠান শেষে দুপুরের পর রওনা করেন। তাদের মতো এরকম শতাধিক আটরশি ফেরত গাড়ি দুই ঘন্টার বেশি লম্বা লাইনে আটকা রয়েছে।
আরও পড়ুন: নতুন অফিস সময়: সকালেই রাজধানীতে তীব্র যানজট
কুষ্টিয়া থেকে আসা লালন পরিবহনের ঘাট তত্বাবধায়ক ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, রবিবার দুপুর থেকে দৌলতদিয়া প্রান্তে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে। অনেকে রয়েছেন যারা সাপ্তাহিক ছুটি শেষে নিজ গন্তব্যে ফিরছেন। অনেকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি কাটাতে ছুটছেন। এছাড়া ফরিদপুরের আটরশি ফেরত অনেক গাড়ি আসায় বাড়তি চাপ দেখা দিয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পর প্রথম ঘাট থেকে প্রায় দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার যানবাহনের লাইন তৈরি হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় মিলে ১৬টি ফেরি রয়েছে। যানবাহনের চাপ না থাকায় মাত্র ১০টি ফেরি চালু রেখে বাকিগুলো পাটুরিয়ার ভাসমান কারখানায় বসিয়ে রাখা হয়। রবিবার দুপুর থেকে ছুটি ও ঈদে মিলাদুন্নবীর কারণে চাপ বাড়তে থাকায় গাড়ির লম্বা তৈরি হয়েছে। প্রয়োজনে আমরা বসিয়ে রাখা ফেরিগুলো নামাতে পারি।
আরও পড়ুন: সড়ক দুর্ঘটনার জেরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিমি দীর্ঘ যানজট
রাজধানীতে যানজট দিন দিন বাড়ছেই, নেই কোনো প্রতিকার
রাজধানীতে যানজট দিন দিন বাড়ছেই। যানজট এখন একটি আতঙ্কের নাম। রাস্তায় বের হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে কত সময় লাগবে তা কারোর জানা নেই। এর নেই কোনো প্রতিকার, নগরবাসী অতিষ্ট হয়ে পড়ছে এই যানজটের ভোগান্তিতে।
ঢাকার কয়েকটি স্থানে প্রতিদিন তীব্র যানজট তৈরি হচ্ছে।
বনানী থেকে বিমানবন্দর- উত্তরা রোড
বনানী থেকে বিমানবন্দর- উত্তরা রোড, দুই পাশেই হঠাৎ যানজট তৈরি হয়। যার ফলে এই সড়কের যাত্রীদের প্রায়ই ফ্লাইট মিস করতে হয়। বিমানবন্দর এলাকায় যানজটেই শুধু বসে থাকতে হয় দেড় থেকে দুই ঘন্টা। যানজট তৈরি হলে পল্টন বা মতিঝিল আসতে সময় লাগে দুই থেকে তিন ঘন্টা।
উত্তরা থেকে পল্টন- মতিঝিল
বিমানবন্দর এলাকার জন্য উত্তরা থেকে পল্টন- মতিঝিল বা এদিকে প্রতিদিন যাতায়াতকারীদের জন্য খুবই কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে তারা গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না। হাতে অতিরিক্ত দেড় থেকে দুই ঘন্টা সময় নিয়ে প্রতিদিন ঘর থেকে বের হতে হয়।
উত্তরা থেকে সচিবালয় প্রতিদিন অফিস করেন রায়হান। তিনি ইউএনবিকে জানান, উত্তরা থেকে সচিবালয় পর্যন্ত আসতে সময় লাগে প্রায় দুই ঘন্টা। হয়ত সৌভাগ্যক্রমে কখনও রাস্তা ফাঁকা থাকলে দেড় ঘন্টায় আসা যায়। তবে এটি খুবই কম। যদি হঠাৎ কোনো যানজট তৈরি হয়, তখন অনেক সময় দুই/তিন ঘন্টার বেশি সময় লাগে আসতে। বেশি যানজট হয় বিমানবন্দর, বনানী, ও তেজগাঁও এলাকায়।
তেজগাঁও-ফার্মগেট-ধানমন্ডি-শাহবাগ
তেজগাঁও-ফার্মগেট-ধানমন্ডি-শাহবাগ প্রতিদিন এই এলাকায় যানজট লেগেই থাকে। এসব এলাকায় ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয় যাত্রীদের।
আরও পড়ুন: রাজধানীর উত্তরা থেকে মহাখালী পর্যন্ত যানজট, যাত্রী দুর্ভোগ চরমে
গুলশান-বনানী-বাড্ডা-কুড়িল
গুলশান-বনানী-বাড্ডা-কুড়িল এলাকায় তীব্র যানজট লেগেই থাকে।
গুলিস্থান-নবাবপুর-জিপিও-পল্টন-মতিঝিল
গুলিস্থান-নবাবপুর-জিপিও-পল্টন-মতিঝিল এলাকায় রাস্তা ফাঁকা পাওয়া কঠিন। এই এলাকায় যানজট প্রতিদিনের সঙ্গী।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে পল্টন অফিস করেন ফেরদৌস। তিনি ইউএনবিকে বলেন, দেড়-দুই ঘন্টা সময় লাগে যদি বেশি সকালে বের হতে পারি। আর যদি ১০টার পর বের হই, তাহলে সময় লাগে দুই ঘন্টা। কখনো অস্বাভাবিক যানজট তৈরি হলে আড়াই-তিনঘন্টা সময় লেগে যায় পল্টন পৌঁছাতে। এই রোডে বেশি যানজট হয় বাড্ডা, মৌচাক ও পল্টন মোড়ে।
মিরপুরে বসবাসকারী মুন্না ইউএনবিকে বলেন, মিরপুর থেকে মতিঝিল আসতে সময় লাগে দুই ঘন্টা। আর যদি প্রায় সময় এখন যানজট বেশি হয় ফলে আসতে সময় লাগে আড়াই ঘন্টার বেশি। এই রোডে যানজট বেশি থাকে ফার্মগেট ও শাহবাগ এলাকায়।
ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, ট্রাফিক আইন মেনে চললে এবং শৃঙ্খলা মেনে গাড়ি চালালে অনেক সময় যানজট কম হয়। রাস্তায় বিশৃঙ্খল ও এলোমেলোভাবে গাড়ি চালালে, যেখানে-সেখানে গাড়ি থামিয়ে রাখলে, যত্রতত্র থামিয়ে যাত্রী উঠানোর জন্যই যানজট বৃদ্ধি পায়। সে জন্য আমাদের মাইন্ডসেট করতে হবে।
আরও পড়ুন: সড়ক দুর্ঘটনার জেরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিমি দীর্ঘ যানজট
অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, ঢাকা সিটির অনেক জায়গায় উন্নয়নমূলক কাজ চলমান রয়েছে, ফলে সে কারণেও যানজট তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে বিমানবন্দর এলাকায় রাস্তার কাজের জন্য সম্প্রতি সময়ে বেশি যানজট তৈরি হচ্ছে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে যানজট কমিয়ে আনতে হলে শুধু ট্রাফিক পুলিশ কিছুই করতে পারবে না। সেজন্য সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন যানজট নিরসনে স্কুলের বাচ্চাদের যাতায়াতের জন্য স্কুলবাস পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই বিষয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে স্কুলে আসা যাবেনা। স্কুলে যাতায়াতের জন্য ঢাকা উত্তর সিটির ব্যবস্থাপনায় স্কুলবাস চালু করা হবে। এখন পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্কুলবাস সেবা চালু হবে।
তিনি আরও বলেন, অনেক স্কুলে একজন শিক্ষার্থীর জন্য একটি গাড়ি ব্যবহার করা হয়, এরকম অসংখ্য গাড়ি রাস্তায় চলাচল করে। স্কুলবাস চালু হলে প্রাইভেট গাড়ি ব্যবহার অনেক কমে যাবে। ছেলে-মেয়েরা স্কুল বাসে একসঙ্গে যাওয়া-আসা করলে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হবে এবং সামাজিক বন্ধনও সুদৃঢ় হবে।
মেয়র আরও বলেন, সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ অভিভাবকদের আস্থা অর্জন করতে পারলে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার প্রবণতা কমবে। নগরীর যানজট কমাতে এটি অনেক সহায়ক হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ ইউএনবিকে বলেন, যানজট নিরসনে আমরা সমন্বিত পদক্ষেপ নিচ্ছি। বিভিন্ন রাস্তায় চলমান উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বর্তমানে একটু বেশি যানজট হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে দুই সিটি মিলে উদ্যোগ নিয়েছি একটি কোম্পানির অধীনে গণপরিবহন নিয়ে আসার। তাহলে রাস্তায় অসুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ কমে আসবে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও ট্রাফিক ব্যবস্থা আরও কিভাবে উন্নয়ন করা যায় সে বিষয়ে আমাদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ৩০ কিলোমিটার যানজট, ভোগান্তি
রাজধানীর উত্তরা থেকে মহাখালী পর্যন্ত যানজট, যাত্রী দুর্ভোগ চরমে
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে হওয়া বিরামহীন বৃষ্টির কারণে মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরা থেকে মহাখালী পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে ঢাকার টঙ্গী, উত্তরা, বিমানবন্দর, মহাখালী, বিজয় সরণি, বাংলামোটরসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে যানজটের সৃষ্টি হয়। সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহন আটকে থাকতে দেখা গেছে।
উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ট্রাফিক) নাফিজ কামাল শৈবাল বলেন, টঙ্গীর মুন্নু গেট থেকে মিলগেট পর্যন্ত এক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট দেখা গেছে এবং রাস্তার জরাজীর্ণ অবস্থার কারণে বেশ কিছু যানবাহন সাবধানে চলাচল করছে। বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের চলমান কাজের কারণে সড়কে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর)আবু সালেহ মো. রায়হান বলেন, এই যানজটের প্রভাব ঢাকার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ছড়িয়ে পড়ে, এতে করে যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
শরিফুল ইসলাম নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী জানান, যানজটের কারণে উত্তরা থেকে মৌচাক পৌঁছাতে তার চার ঘণ্টা লেগেছে।
আরও পড়ুন: সারাদেশে ভারী বর্ষণ হতে পারে: আবহাওয়া অধিদপ্তর
তিনি বলে, ‘বৃষ্টিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহন আটকে থাকে।’
অফিসগামী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণযাত্রীরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন। কারণ যানজটের কারণে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় অপেক্ষা করতে হয়েছে।
এছাড়া রাস্তা মেরামতের কাজ ও মেট্রোরেল প্রকল্পও নগরবাসীর যাতায়াতে দুর্ভোগ বাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন জানান, আজ সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে এবং সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস আরও জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।
এছাড়া ঢাকা বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি ও বিজলী চমকানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ৩০ কিলোমিটার যানজট, ভোগান্তি
বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের দুর্ভোগ
সিলেটে বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ চা-শ্রমিকদের, দীর্ঘ যানজট
ন্যূনতম ৩০০ টাকা মজুরি করার দাবিতে আবারও আন্দোলনে নেমেছে সিলেটের চা-শ্রমিকরা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে তারা সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ-মিছিল ও সমাবেশ করেন।
রবিবার সকাল ১১টা থেকে সিলেট ভ্যালির চা-শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন এবং দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিতে থাকেন তারা। এসময় সড়কের দুইপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে সৃষ্টি হয় যানজটের।
পরে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরীর আশ্বাসে ২৪ ঘণ্টার জন্য সড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করে লাক্কাতুরা চা বাগানের দুর্গা মণ্ডপের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে আগামীকাল সোমবার থেকে ফের সড়ক অবরোধ করবেন বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন:টানা তৃতীয় দিনের মতো পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
এদিকে আন্দোলন শুরুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন চা-শ্রমিকের সন্তান ও আন্দোলনকারী দেবাশীষ গোয়ালা। তিনি জানান, চা-বাগান মালিকরা আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছেন। ১২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করে আমাদের দয়া দেখাচ্ছেন তারা। কিন্তু আমরা কারও দয়া চাই না। আমরা আমাদের ন্যায্য দাবি চাই। বর্তমান যুগে কোথাও এই মজুরি নাই। এছাড়া যেখানে শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়ন হয় নাই, সেখানে প্রত্যাহার নয় প্রত্যাখ্যান হওয়া জরুরি। তাই আমরা আমাদের দাবিতে অনড় অবস্থায় আবারও মাঠে নেমেছি।
প্রসঙ্গত, এর আগে চলতি বছরের জুন মাসে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিকপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের বৈঠক হয়। সেখানে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব দেন শ্রমিক নেতারা। কিন্তু মালিকপক্ষ ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা মজুরির প্রস্তাব দেয়। যে কারণে শ্রমিক নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর আরও এক মাস পার হয়ে যায়। মালিকপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।
এর প্রতিবাদে ৯-১২ আগস্ট পর্যন্ত টানা চার দিন প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে ধর্মঘট পালন করেন চা-শ্রমিকরা। তারপরও মালিকপক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো কথা না বলায় ১৩ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের সব চা-বাগানে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেন শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন:গাজীপুরে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, পুলিশের লাঠিচার্জ
সাভারে ঈদ বোনাসের দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
সড়ক দুর্ঘটনার জেরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিমি দীর্ঘ যানজট
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নুরিতলা এলাকায় একটি পণ্য বোঝাই লরি উল্টে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এসময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার ক্যান্টনমেন্ট থেকে দাউদকান্দির গৌরীপুর পর্যন্ত অন্তত ৩৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েন বাস, অ্যাম্বুলেন্স ও প্রাইভেট কার যাত্রীরা।
দুর্ঘটনার কারণে দুই লেনের গাড়ি এক লেনে চলা শুরু করে। তাই সড়কে এ যানজট তৈরি হয় বলে জানা গেছে। লরিটি সাড়াতে ৫ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। যানজট দুপুরের দিকে কমতে থাকে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ৩০ কিলোমিটার যানজট
চান্দিনার মাধাইয়া এলাকা থেকে রিকশা করে গৌরিপুর এলাকায় এসেছেন কাউছার আহমেদ নামের একজন স্থানীয় বাসিন্দা।
তিনি জানান, মাধাইয়ার আগে চান্দিনা নুরীতলা এলাকায় একটা লরি রাস্তার মাঝ বরাবর উল্টে পড়েছিল। একারণে এত লম্বা যানজট লেগেছে।
কুমিল্লা থেকে ঢাকাগামী সবুজ ছোটন নামের এক শিক্ষার্থী জানান, কুমিল্লা থেকে সকাল ৯ টায় রওনা হয়েছেন। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে এসে গাড়ি থেমে যায়। দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি সোনারগাঁও পৌঁছেছেন।
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক মো. সালাউদ্দিন জানান, ইলিয়টগঞ্জের দুর্ঘটনার কারণে যানজট লেগেছে। আমাদের এ দিকটায় তেমন যানজট নেই, কিন্তু দুই লেনেই গাড়ি ধীর গতিতে চলছে।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ প্রেমধন মজুমদার বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত লরি উদ্ধার করা হয়েছে। যানজট কমিয়ে আনার বিষয়ে পুলিশ কাজ করছে।
হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজয়নের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ভোর রাতে চান্দিনা উপজেলার নুরীতলা এলাকায় সড়কে একটি লরি উল্টে পড়ে যায়। এতে দুই লেনের গাড়ি এক লেনে চলা শুরু করে। যে কারণে এ যানজট তৈরি হয়েছে। এ লরি সরাতে পাঁচ ঘণ্টার মতো সময় লেগে যায়। দুপুরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ৩০ কিলোমিটার যানজট, ভোগান্তি
বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের দুর্ভোগ
রাজধানীতে পাইকারি ও খুচরা কাঁচাবাজার নির্ধারিত স্থানে বসাতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানীতে জনদুর্ভোগ ও যানজট কমাতে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে পাইকারি ও খুচরা কাঁচাবাজার বসাতে হবে।
মানুষের চলাচলের রাস্তা দখল করে কেউ দোকান বসালে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারের কাঁচাবাজার স্থানান্তরের লক্ষ্যে গাবতলী কাঁচাবাজার এলাকা পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, কারওয়ানবাজার অনেক আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখান থেকে সারা ঢাকা শহরের খুচরা বাজারগুলোতে পণ্য ডিস্ট্রিবিউশন হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যারা শাক-সবজি-মাছসহ অন্যান্য পণ্য কারওয়ান বাজারে নিয়ে আসেন তাদের জন্য যেমন কষ্টকর হয়। ঢাকা অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় আবার খুচরা বাজারে পৌঁছাতে অনেক যানজট ও সমস্যা হয়। কারওয়ানবাজার থেকে ঢাকার ভিন্ন পয়েন্টে সুবিধাজনক স্থানে কিভাবে স্থানান্তর করা যায় সেটা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। সকলের প্রচেষ্টায় এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য থাকবে যে সকল ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে চলে আসবেন তারা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং মানুষেরও ভোগান্তি না হয়। তা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কাউকে হঠাৎ করে চলে যেতে বললে সে চলে যাবে না। আরে গেলে কোথায় যাবে। কিন্তু তাদের জন্য জায়গা দেয়া ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেয়া হয় তাহলে তারা অবশ্যই যাবে। কাঁচাবাজার তিনতলা বা পাঁচতলা করা যৌক্তিক না। কিন্তু এখানে এধরনের ভবন করার কারণ ওপরে ইলেক্ট্রিকসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি করা হয়। পরিকল্পিত এবং দৃষ্টিনন্দন ঢাকা গড়া-ই আমাদের মূল লক্ষ্য।
মো. তাজুল ইসলাম জানান, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় পাইকারি ও খুচরা কাঁচাবাজার এক জায়গায় হওয়া উচিত নয়। এতে করে একদিকে যেমন জনদুর্ভোগ তৈরি হবে অন্যদিকে যানজটও সৃষ্টি হবে। আমরা চাই পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলো একটি নির্দিষ্ট জায়গায় হোক। পাইকারি কাঁচাবাজারগুলো শহরের বাইরে হলেই বেশি ভালো হবে। মন্ত্রণালয়, ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র, কাউন্সিলরসহ সংশ্লিষ্ট সকলে মিলে এলক্ষ্যে কাজ করছে। সবাইকে নিয়ে বসে করণীয় ঠিক করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যত্রতত্র পাইকারি খুচরা বাজার না রেখে কোন এলাকায় কতটি বাজার লাগবে মেয়র এবং কাউন্সিলর বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে বাস্তবায়ন করবে। জায়গা চিহ্নিত করে যদি নতুন করে আরও কাঁচা বাজার প্রয়োজন হলে তা করা হবে।
পরিদর্শনকালে স্থানীয় সরকার বিভাগ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং কাউন্সিলর অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীর প্রত্যেক বাসা-বাড়িতে সেপটিক ট্যাংক থাকতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
পানির অপচয় রোধে রিসাইক্লিং করার উদ্যোগ নিতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী