চীন
ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে এজেন্ডাগুলোর অগ্রগতির আশা করছে রাশিয়া ও চীন
চলতি সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে উন্নয়নশীল বিশ্বে আরও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্র লাভের দিকে নজর দেবে রাশিয়া ও চীন। এ সময় পশ্চিম-বিরোধী যৌথ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সৌদি আরবকে কাছে টানতে আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে পারে তারা।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রিকস অর্থনৈতিক ব্লকের নেতারা জোহানেসবার্গের স্যান্ডটনে তিন দিনের বৈঠক করবেন। গত দেড় দশকে চীন এই ব্লকে কূটনৈতিক মূলধন বিনিয়োগ করেছে এবং এটা নিয়ে তাদের উচ্চাকাক্ষা রয়েছে তার প্রমাণ ওই বৈঠকে চীনের প্রধানমন্ত্রী শি জিনপিংয়ের উপস্থিতি।
ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। একারণে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ক্ষেত্রে জটিলতা থাকায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন তিনি। এ ছাড়া ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা উপস্থিত থাকবেন।
বুধবার প্রধান শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার সাইডলাইন বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হবে। বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে পশ্চিমা আধিপত্য নিয়ে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের মধ্যেই দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়াতে সাধারণ আহ্বান জানানো হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে রাশিয়া ও চীন সবেচেয়ে বেশি আগ্রহী। দক্ষিণ আফ্রিকায় পুতিনের প্রতিনিধিত্ব করবেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। এ ছাড়া আরও কয়েক ডজন উন্নয়নশীল দেশের নেতা বা প্রতিনিধিরা সাইডলাই বৈঠকে যোগ দেবেন।
ব্রিকস ব্লকের সম্ভাব্য সম্প্রসারণসহ একটি সুনির্দিষ্ট নীতির বিষয়ে আলোচনা করা হবে। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীনের উদীয়মান বাজারভিত্তিক দেশগুলোর সমন্বয়ে ২০০৯ সালে গঠিত হয়েছিল ব্রিকস। পরের বছর সংস্থাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে যুক্ত করেছিল।
দক্ষিণ আফ্রিকার কর্মকর্তারা বলছেন, আরেকটি সম্ভাব্য সম্প্রসারণে ব্রিকসে যোগদানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদনকারী ২০টিরও বেশি দেশের মধ্যে একটি হলো সৌদি আরব। রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক ব্লকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উত্পাদককে অন্তর্ভুক্ত করার যে কোনো পদক্ষেপ স্পষ্টতই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের মনোযোগ আকর্ষণ করবে। অতিরিক্ত শীতল ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশ এবং পারস্য উপসাগরে কিছুটা প্রভাব বিস্তারের জন্য বেইজিংয়ের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ এরই মধ্যে অনেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
আরও পড়ুন: দ. আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ
সৌদি আরবে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত তালমিজ আহমেদ বলেছেন, ‘যদি সৌদি আরব ব্রিকসে প্রবেশ করে তবে এটি এই গ্রুপিংকে অসাধারণ গুরুত্ব দেবে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইতোমধ্যেই উন্নয়নশীল বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির একটি বড় অংশ নিয়ে গঠিত ব্রিকস সম্প্রসারণের নীতিতে একটি চুক্তিও জি-৭ এর ভারসাম্য বজায় রাখতে ব্লকের জন্য রাশিয়ান ও চীনা দৃষ্টিভঙ্গির জন্য একটি নৈতিক বিজয়।
ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং পশ্চিমের সঙ্গে রাশিয়ার স্নায়ুযুদ্ধের মতো স্থবিরতার মধ্যে উভয়ই এক ধরনের জোটকে শক্তিশালী করার জন্য আরও দেশকে যুক্ত করার পক্ষে -- এমনকি এটি শুধুমাত্র প্রতীকী হলেও৷
আর্জেন্টিনা থেকে শুরু করে আলজেরিয়া, মিশর, ইরান, ইন্দোনেশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত পর্যন্ত সব দেশই আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদির সঙ্গে যোগদানের জন্য আবেদন করেছে এবং সম্ভাব্য নতুন সদস্যও হতে পারে।
জোহানেসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকসের অধ্যাপক অ্যালেক্সিস হাবিয়ারেমি বলেছেন, ‘যদি তাদের মধ্যে কয়েকটি দেশকে নেওয়া হয়, তাহলে এটি একটি বৃহত্তর অর্থনৈতিক ব্লকে পরিণত হবে এবং সেখান থেকে শক্তির উৎস তৈরি হবে।’
যদিও ব্রাজিল, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা সম্প্রসারণে কম আগ্রহী এবং বর্তমানে একটি একচেটিয়া উন্নয়নশীল বিশ্ব সংগঠনে তাদের প্রভাব হ্রাস পেয়েছে। যদিও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি এবং পাঁচটি দেশকে প্রথমে নতুন সদস্য হওয়ার যে মানদণ্ড পূরণ করতে হবে তাতে একমত হতে হবে। বেইজিংয়ের চাপের মধ্যে এটি জোহানেসবার্গের এজেন্ডায় রয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় চীনের রাষ্ট্রদূত চেন জিয়াওডং বলেছেন, ‘ব্রিকস সম্প্রসারণ এই মুহূর্তে শীর্ষ আলোচিত বিষয়ে হয়ে দাঁড়িয়েছে৷’ সম্প্রসারণই ব্রিকসের মূল কার্যক্রম বাড়ানোর চাবিকাঠি। আমি বিশ্বাস করি আসন্ন এই বছরের শীর্ষ সম্মেলন একটি নতুন ও দৃঢ় পদক্ষেপের সাক্ষী হবে।’
ব্রিকস থেকে উদ্ভূত যে কোনো রুশ ও চীনা প্রভাবকে বন্ধ করার প্রয়াসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল ও ভারতের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উপর জোর দিয়েছে। শীর্ষ সম্মেলনের আগেই স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘ব্রিকস অ্যাসোসিয়েশনের অনেক নেতৃস্থানীয় সদস্যদের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত আছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ব্রিকস জোটে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত চীন: মুখপাত্র
ইউরোপীয় ইউনিয়নও জোহানেসবার্গের ঘটনাগুলো ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করবে, তবে ইউক্রেনের যুদ্ধের উপর প্রায় একমাত্র মনোযোগ এবং উন্নয়নশীল বিশ্ব থেকে রাশিয়ার আগ্রাসনের জন্য ঐক্যবদ্ধ নিন্দা জানাতে ব্লকের অব্যাহত প্রচেষ্টা এখনও পর্যন্ত অনেকাংশে ব্যর্থ হয়েছে।
শি, লুলা, মোদি ও রামাফোসা একত্রিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপীয় কমিশনের মুখপাত্র পিটার স্ট্যানো বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের এই মুহূর্তটি আন্তর্জাতিক আইন বজায় রাখার জন্য ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছে।
স্ট্যানো বলেছেন, ‘আমরা পুতিনকে তার অবৈধ, অস্থিতিশীল আচরণ বন্ধ করতে তাদের ভূমিকার জন্য অপেক্ষা করছি।’
মূল শীর্ষ সম্মেলনের আগে জুন মাসে কেপটাউনে ব্রিকস পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে যদি কোনো সমাধান হয়ে থাকে, তাহলে যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়া বা পুতিনের প্রকাশ্য সমালোচনা হবে না। স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারের বাইরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রাইটস গ্রুপ এবং ইউক্রেনীয় অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ আফ্রিকার ঘোষিত প্রতিবাদ সম্ভবত একমাত্র নিন্দা জানাবে।
যদ আগের বৈঠকে কোনো সমাধান হয়, এই শীর্ষ সম্মেলন থেকে কিছু সুবিধা পেতে পারে রাশিয়া।
ইউরোপ, রাশিয়া ও ইউরেশিয়া প্রোগ্রামে ওয়াশিংটনভিত্তিক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো মারিয়া স্নেগোভায়া বলেছেন, গত মাসে ইউক্রেনের বাইরে শস্য পাঠানোর অনুমতি দেওয়ার একটি চুক্তি স্থগিত করার পরে পুতিন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আরও বিনামূল্যে রাশিয়ান শস্যের চালান ঘোষণা করতে ব্রিকস সমাবেশ ব্যবহার করতে পারেন। তিনি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি আফ্রিকান দেশের জন্য করেছেন।
স্নেগোভায়া বলেন, ইউক্রেনকে প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার সময় এটি পুতিনকে উন্নয়নশীল বিশ্বের কাছে ‘সদিচ্ছা’ প্রদর্শনের অনুমতি দেবে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন,পুতিন একটি ভিডিও লিঙ্কে উপস্থিত হওয়া সত্ত্বেও শীর্ষ সম্মেলনে ‘সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ’ করবেন এবং একটি বক্তব্য দেবেন।
আরও পড়ুন: ব্রিকসে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি নির্ভর করছে সদস্যদের উপর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জোহানেসবার্গে তিন দিন ধরে নিয়মিতভাবে যা সম্প্রচারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা হলো বর্তমান বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার উপর উন্নয়নশীল বিশ্ব আঁকড়ে ধরা। শীর্ষ সম্মেলনের আগের কয়েক মাস ও সপ্তাহ ধরেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য বিশ্বের মুদ্রা হিসেবে মার্কিন ডলারের আধিপত্যের সমালোচনা চলছে।
পাঁচটি দেশের ভিন্ন ভিন্ন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অগ্রাধিকারের কারণে এবং চীন ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে নীতি বাস্তবায়নে ব্লকের যে অসুবিধা রয়েছে তা নির্দেশ করতে ব্রিকস বিশেষজ্ঞরা সাধারণত ঐক্যবদ্ধ।
চায়না গ্লোবাল সাউথ প্রজেক্টের বিশ্লেষক কোবাস ভ্যান স্টাডেন বলেন, স্থানীয় মুদ্রায় আরও বেশি বাণিজ্যের দিকে মনোনিবেশ করা এমন একটি বিষয় যা তারা সকলেই পিছনে ফেলতে পারে।
তিনি দেখেছেন যে ব্রিকস বিশ্বের কিছু অংশে আঞ্চলিক বাণিজ্যে ডলারের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, ঠিক যেভাবে তিনি এই শীর্ষ সম্মেলনকে সামগ্রিকভাবে দেখেন।
ভ্যান স্ট্যাডেন বলেন, ‘এগুলোর কোনোটিই বড় অস্ত্র নয় যা ডলারকে মোকাবিলা করতে চলেছে। এটা নাটক নয়।’ ‘এটি একটি বড় তরবারির ক্ষত নয়, এটি অনেকগুলো কাগজ কাটার মতো। এটি ডলারকে দমাবে না, তবে এটি অবশ্যই বিশ্বকে আরও জটিল করে তুলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের ডলারকে হারানোর দরকার নেই এবং তাদের জি-৭ কে পরাজিত করার দরকার নেই। তারা বিশেষভাবে যা করতে চায় তা হলো এর একটি বিকল্প উত্থাপন। এটা অনেক দীর্ঘ কাজ।’
আরও পড়ুন: ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন: সাইডলাইন বৈঠকে বসতে পারেন শেখ হাসিনা-মোদি
সপ্তম চীন-দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো শুরু হয়েছে ইউনানে
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের কুনমিংয়ে বুধবার শুরু হয়েছে সপ্তম চীন-দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো।
আরও পড়ুন: ঢাকা-বেইজিং বন্ধুত্বে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ‘আশার সেতু’: চীনা রাষ্ট্রদূত
বিশ্বের ৮৫টি দেশ ও অঞ্চল এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ৩০ হাজারের বেশি প্রদর্শক, প্রতিনিধি এবং অতিথিরা এই প্রদর্শনীতের যোগ দিচ্ছেন। পাঁচ দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীতে অনলাইন ও অফলাইনে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমে অংশ নেবেন তারা।
‘সাধারণ উন্নয়নের জন্য সংহতি ও সমন্বয়’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। এখানে দক্ষিণ এশিয়া প্যাভিলিয়ন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া প্যাভিলিয়ন, সম্পদ-ভিত্তিক অর্থনীতি প্যাভিলিয়ন এবং বন্দর অর্থনীতি প্যাভিলিয়নসহ ১৫টি প্রদর্শনী হল স্থাপন করেছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়: চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও
'শান্তি ও স্থিতাবস্থা' বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি চীন-ভারতের
সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক 'ঠিক দিকেই এগোচ্ছে': ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেছেন, তার দেশ ও সৌদি আরবের মধ্যকার সম্পর্ক ঠিক দিকেই এগোচ্ছে এবং উভয় পক্ষই বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে এগিয়ে নেবে।
বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বৈঠক শেষে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আমির-আব্দুল্লাহিয়ান এ মন্তব্য করেন।
গত মার্চে চীনের মধ্যস্থতায় ২ দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে সম্মত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো সৌদি আরবে সরকারি সফরে আসা ইরানের শীর্ষ এই কূটনীতিক বলেন, সৌদি মন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠক 'ফলপ্রসূ' হয়েছে।
তিনি বলেন, ইরান নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ২ দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তাদের বাস্তবায়নের জন্য একটি প্রযুক্তিগত ও নির্বাহী কমিটি গঠন করবে।
আরও পড়ুন: 'শান্তি ও স্থিতাবস্থা' বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি চীন-ভারতের
আমির-আব্দুল্লাহিয়ান নিশ্চিত করেছেন যে ইরানের প্রেসিডেন্ট শিগগিরই সৌদি আরব সফর করবেন।
তিনি ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০৩০ আয়োজনের জন্য সৌদি আরবের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন।
সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে সৌদি মন্ত্রী বলেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তা বজায় রাখার মূল চাবিকাঠি হচ্ছে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার।
তিনি বলেন, সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় বজায় রাখবে এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন অগ্রগতিকে উৎসাহিত করবে।
সৌদি কর্মকর্তাও ইরানের প্রেসিডেন্টের নির্ধারিত সৌদি আরব সফরকে স্বাগত জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর শপথ
আনোয়ার-উল-হক কাকার পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত
নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়: চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও
বাংলাদেশের নির্বাচনকে অভ্যন্তরীণ বিষয় উল্লেখ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানিয়েছেন, চীন কখনোই অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না।
তিনি বলেন,‘আমাদের নীতি সবসময় একই থাকে। চীন কখনোই অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। আমি নির্বাচনকে বাংলাদেশের বিষয় বলে মনে করি, বাংলাদেশের জনগণ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এটাই আমাদের অবস্থান।’
বুধবার (১৬ আগস্ট) পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, তারা বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা করেছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী যুক্তরাজ্য: প্রধানমন্ত্রীকে সারাহ কুক
গত পাঁচ থেকে দশ বছরের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতায় বিশ্বাসী।
মান্নান বলেন, অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বিবেচনা করে বাংলাদেশ চীনের উন্নয়নের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে পারে। বাংলাদেশেও এর কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ভারতের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস পালন করেছে ভারতীয় হাইকমিশন
এর আগে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্য তাদের প্রত্যাশা জানিয়েছে।
তবে ভারত বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তারা উল্লেখ করেছে বাংলাদেশের নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দেশের জনগণ যেভাবে নির্ধারণ করবে, সেভাবেই নির্বাচন হবে।
সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুরো বিশ্ব এটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে পারে, তবে ভারত সেক্ষেত্রে স্বতন্ত্র। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে।’
ভারত পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকায় তাদের একটি হাই কমিশন রয়েছে। এ মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা আশা করি শান্তি বজায় থাকবে এবং কোনো সহিংসতা হবে না। নির্বাচন তফসিল অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে।’
আরও পড়ুন: ভারতের ভবিষ্যৎ ও নিরাপত্তা বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িত: জ্যেষ্ঠ এমইএ কর্মকর্তা
'শান্তি ও স্থিতাবস্থা' বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি চীন-ভারতের
চীন ও ভারতের মধ্যে বিরোধপূর্ণ সীমান্তে ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দুই দেশের সামরিক কমান্ডাররা। সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বৃদ্ধির পর পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য উভয় পক্ষের এটি সাময়িক প্রচেষ্টা বলে জানিয়েছে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি যৌথ বিবৃতিতে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, রবিবার ও সোমবার সীমান্তের পশ্চিম অংশের দ্য লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলসিএ) নিয়ে সীমারেখা সম্পর্কিত সমস্যাগুলো সমাধানকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের কমান্ডার পর্যায়ের ১৯তম বৈঠকে ‘ইতিবাচক, গঠনমূলক ও তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা’ হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা ‘অতি দ্রুত বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করতে সম্মত হয়েছে তারা। তবে ছাড় দিতে ইচ্ছুক এমন কোনো ইঙ্গিত কোনো পক্ষ থেকেই আসেনি। এ ছাড়া, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংঘর্ষে তাদের উভয় পক্ষের সৈন্যরা যে রক্তপাত ঘটিয়েছে তা এড়াতে আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: হিমাচল, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থান ও খরচ
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘অন্তর্বর্তী সময়ে, উভয় পক্ষ সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সম্মত হয়েছে।’
পশ্চিমে লাদাখ থেকে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অরুণাচল প্রদেশে চীন এবং ভারত নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোকে পৃথক করেছে এলসিএ, যা সম্পূর্ণরূপে নিজেদের বলে দাবি করে চীন। ভারত ও চীন ১৯৬২ সালে তাদের সীমান্তে একটি যুদ্ধে জড়িয়েছিল। তখন থেকে এটির আঞ্চলিক দাবির পরিবর্তে সরাসরি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রগুলোকে বিভক্ত করে।
ভারতের মতে, প্রকৃত সীমানা ৩ হাজার ৪৮৮ কিলোমিটার (২ হাজার ১৬৭ মাইল) দীর্ঘ, কিন্তু চীন সংক্ষিপ্ত একটি চিত্র প্রচার করে।
সব মিলিয়ে চীন অরুণাচল প্রদেশসহ ভারতের উত্তর-পূর্বে প্রায় ৯০ হাজার বর্গ কিলোমিটার (৩৫ হাজার বর্গ মাইল) অঞ্চল দাবি করে। এটি বৌদ্ধ অধ্যুষিত এলাকা।
এদিকে ভারতের দাবি, আকসাই চিন মালভূমিতে তার অঞ্চলের ৩৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার (১৫ হাজার বর্গ মাইল) দখল করেছে চীন। এটিকে লাদাখের অংশ মনে করে ভারত। আর এখানেই বর্তমান দেশ দুটির মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।
চীন এরই মধ্যে ভারতের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ককে দৃঢ় করতে শুরু করে এবং বিতর্কিত কাশ্মীর ইস্যুতে দেশটিকে সমর্থন দেয়।
১৯৬৭ ও ১৯৭৫ সালে ভয়ংকর যুদ্ধের ফলে উভয় পক্ষের আরও বেশি মৃত্যু ঘটে। তারা তখন থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার না করার চুক্তিসহ প্রোটোকল গ্রহণ করেছে, কিন্তু সেই প্রোটোকলগুলো কেউই মানছে না।
আরও পড়ুন: চীন সীমান্তবর্তী লাদাখের সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শন করলেন মোদি
তিন বছর আগে লাদাখ অঞ্চলে সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় এবং ৪ চীনা সেনা নিহত হয়। এতে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় একটি দীর্ঘস্থায়ী স্থবিরতা নেমে আসে। যেখানে উভয় পক্ষ কামান, ট্যাঙক ও যুদ্ধবিমানসহ সামরিক বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্যকে মোতায়েন করেছে।
ভারত ও চীন উভয়ই প্যাংগং সো, গোগরা ও গালওয়ান উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণ তীরের কিছু এলাকা থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করেছে। কিন্তু বহুস্তর নিরাপত্তার অংশ হিসেবে অতিরিক্ত সৈন্যের মোতায়েন রেখেছে।
এপ্রিলে, ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তার চীনের প্রতিপক্ষ জেনারেল লি শংফু -এর সঙ্গে আলোচনার সময় চীনকে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি লঙ্ঘন করে দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্কের ‘সার্বিক ভিত্তি’ নষ্ট করার জন্য দায়ী করেছিলেন।
ভারতের দাবি, বিপুল সংখ্যক চীনের সেনা মোতায়েন, তাদের আগ্রাসী আচরণ এবং একতরফাভাবে সীমান্তের স্থিতাবস্থা পরিবর্তন করার প্রচেষ্টা দেশগুলোর মধ্যে চুক্তি লঙ্ঘন করে।
চীন, ভারত, পাকিস্তান, রাশিয়া, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তান নিয়ে গঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার প্রতিরক্ষা প্রধানদের বৈঠকে যোগ দিতে নয়া দিল্লি সফর করছিলেন জেনারেল লি শংফু।
আরও পড়ুন: লাদাখ থেকে চীনকে সেনা ফিরিয়ে নিতে বলেছে ভারত
চীনে বন্যায় নিহত ২০, নিখোঁজ ২৭
চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের আশেপাশের অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিতে অন্তত ২০ জন নিহত ও ২৭ জন নিখোঁজ হয়েছেন বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে দেশটির সরকার। প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে গেছে, গাছ উপড়ে পড়েছে এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
বেইজিং শহরতলির স্কুল ও অন্যান্য সরকারি ভবন এবং নিকটবর্তী তিয়ানজিন ও ঝুওঝৌ শহরে হাজার হাজার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বন্যার তীব্রতা চীনের রাজধানীকে অবাক করে দিয়েছে। বেইজিংয়ে সাধারণত শুষ্ক গ্রীষ্মকালই দেখা যায়। তাছাড়া এ বছর ছিল রেকর্ড পরিমাণ তাপ।
অন্যান্য অঞ্চল, বিশেষ করে চীনের দক্ষিণাঞ্চলে অস্বাভাবিকভাবে মারাত্মক গ্রীষ্মকালীন বন্যা দেখা দিয়েছে, যার ফলে বহু মানুষ মারা গেছে। এদিকে, দেশের অন্যান্য অংশ খরার সঙ্গে লড়াই করছে।
আরও পড়ুন: চীনে বন্যায় ১১ জন নিহত, ২৭ জন নিখোঁজ
বেইজিংয়ের পশ্চিম প্রান্তের মেনটুগু জেলার রাস্তায় জমে থাকা কাদা পানিতে দুর্ঘটনায় পড়ছে গাড়ি।
বেইজিংয়ে ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং কর্তৃপক্ষ নিখোঁজ ২৭ জনকে খুঁজছে বলে সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে। রাজধানীকে ঘিরে থাকা হেবেই প্রদেশে ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ফিনিক্স টিভি তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, রাজধানীর ফাংশান জেলার প্রায় ৬০ হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সিনহুয়া জানিয়েছে, বেইজিংয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ঝুওঝৌতে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারী বৃষ্টিতে বন্যায় ১৫ জনের মৃত্যু, নয়াদিল্লির স্কুল বন্ধ
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং স্থানীয় সরকারগুলোকে আটকা পড়াদের উদ্ধার এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে 'সর্বাত্মক প্রচেষ্টা' চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
বেইজিংয়ের পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর তিয়ানজিনের সরকার জানিয়েছে, ইয়ংডিং নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে ৩৫ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
হেবেই প্রদেশের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, শনিবার থেকে কোথাও কোথাও ৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। কিছু এলাকায় ঘণ্টায় ৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: ইতালির প্রাণঘাতী বন্যা জলবায়ু বিপর্যয়ের সর্বশেষ চরমতম উদাহরণ
চীনে বন্যায় ১১ জন নিহত, ২৭ জন নিখোঁজ
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রাজধানী বেইজিংয়ের আশেপাশের পাহাড়ে বন্যায় ১১ জন নিহত হয়েছেন এবং ২৭ জন নিখোঁজ রয়েছে।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দেশটির সিসিটিভি চ্যানেল জানিয়েছে, কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টির কারণে কর্তৃপক্ষ ট্রেন স্টেশনগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। দুর্বল সম্প্রদায়ের লোকদের স্কুলের জিমে সরিয়ে নিয়েছে। বাড়িঘর ডুবে গেছে এবং রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে।
মৌসুমী বন্যা প্রতি গ্রীষ্মে চীনের বড় অংশে আঘাত হানে, বিশেষ করে আধা-ক্রান্তীয় দক্ষিণে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে সমাবেশে বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহত, আহত প্রায় ২০০
তবে দেশটির উত্তরাঞ্চলে এই বছর ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার খবর পাওয়া গেছে।
জুলাইয়ের শুরুর দিকে চংকিং-এর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলে বন্যায় কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছিল এবং সুদূর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় লিয়াওনিং প্রদেশে প্রায় ৫ হাজার ৫৯০ জন লোককে সরিয়ে নিতে হয়েছিল।
হুবেই প্রদেশের মধ্যাঞ্চলে বৃষ্টি-ঝড়ে বাসিন্দারা বাড়িতে আটকে পড়ে।
সাম্প্রতিক ইতিহাসে চীনের সবচেয়ে মারাত্মক এবং সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক বন্যা ছিল ১৯৯৮ সালে। সেবার ৪ হাজার ১৫০ জন মারা গিয়েছিল।
২০২১ সালে হেনানের কেন্দ্রীয় প্রদেশে বন্যায় ৩০০ জনেরও বেশি লোক মারা গিয়েছিল। সেই বছরের ২০ জুলাই রেকর্ড বৃষ্টিপাতের ফলে প্রাদেশিক রাজধানী ঝেংঝো প্লাবিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে কারাগারে দাঙ্গায় নিহত ৫
ঝিনজিয়াংয়ে বন্দিশিবির নেই, বিদেশি গণমাধ্যমসহ সবার জন্য উন্মুক্ত: চীন
পশ্চিমা গণমাধ্যমসহ সবার জন্য ঝিনজিয়াং উন্মুক্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন চীনা কর্মকর্তারা। সেখানকার পরিস্থিতি দেখতে আগ্রহী এমন যে কাউকে সাদরে গ্রহণ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
ঝিনজিয়াং পররাষ্ট্র দপ্তরের উপমহাপরিচালক ঝ্যাং হুয়াঝং সাম্প্রতিক সফরের সময় এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনবিকে বলেন, ‘ঝিনজিয়াংয়ের দরজা পশ্চিমা গণমাধ্যমসহ সবার জন্য উন্মুক্ত।’
তিনি বলেন, তারা চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ঝিনজিয়াং সম্পর্কে ‘আরও বিস্তৃত ও বস্তুনিষ্ঠ’ প্রতিবেদন দেখতে চান।
তাদের একটি ‘মুক্ত ও সম্যক’ মনোভাব রয়েছে উল্লেখ করে ঝ্যাং বলেন, ‘এখানে কোনো বন্দিশিবির নেই। এখানে সবাই সশরীরে এসে দেখতে পারেন। আপনারা (বাংলাদেশি গণমাধ্যম প্রতিনিধি দল) আমাদের দৈনন্দিন জীবন দেখেছেন। ‘বন্দিশিবির’ এর মতো শব্দের ব্যবহার করা একেবারেই বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব নয়।’
তিনি বলেন, ঝিনজিয়াংয়ের মানুষ সুখী জীবনযাপন করছে এবং এই অঞ্চল সবার জন্য উন্মুক্ত।
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের কল্যাণে ২ দেশের ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক উন্নয়নে মনোনিবেশ অব্যাহত রাখা উচিত।
চীনা সরকারের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘উভয় দেশ একই ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। বেঁচে থাকার অধিকার, উন্নয়ন ও নিরাপত্তা হলো মূল মানবাধিকার।’
আরও পড়ুন: চীনের ঝিনজিয়াংয়ে 'বন্দিশিবিরের' দাবি ভিত্তিহীন: বাংলাদেশের গণমাধ্যম প্রতিনিধি দলকে অঞ্চলটির বৃহত্তম মসজিদের ইমাম
তিনি বলেন, তারা উন্নয়ন প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে চান এবং জাতীয় স্থিতিশীলতা ও জনগণের কল্যাণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
ঝিনজিয়াং প্রদেশের উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কর্মকর্তারা ১০ সদস্যের বাংলাদেশের গণমাধ্যম প্রতিনিধি দলের কাছে এসব কথা বলেন। এই প্রতিনিধি দলের সপ্তাহব্যাপী সফরের ইতি টানার আগে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় চীনের কর্মকর্তারা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
বাংলাদেশের গণমাধ্যম প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলাপ করেন- ঝিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সংস্কৃতি ও পর্যটন বিভাগের উপমহাপরিচালক ইয়ান নাইমিন, ঝিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সাহিত্য ফেডারেশনের সহসভাপতি উইলিজান ইয়াকুব, ঝিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের নারী ফেডারেশনের সভাপতি আয়নুর মাহসেত, ঝিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের জাতিগতবিষয়ক উপমহাপরিচালক (ধর্মবিষয়ক ব্যুরো) লি জিয়াং, ঝিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য কমিশনের উপমহাপরিচালক ইউ মিপিং, ঝিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সিপিসির ইউনাইটেড ফ্রন্ট ওয়ার্ক ডিপার্টমেন্টের ধর্মবিষয়ক বিভাগের পরিচালক চু জিয়ান, ঝিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের গ্রামীণ পুনরুজ্জীবন ব্যুরোর প্রধান অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপক মা ঝিবিন, ঝিনজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিনিময় ও সহযোগিতা বিভাগের পরিচালক লি জিয়াওডং, শিক্ষার পররাষ্ট্র বিভাগের উপপরিচালক কিন শান এবং ঝিনজিয়াং পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক গু মেই।
কর্মকর্তারা বলেন, বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসী উভয়ের অধিকার রক্ষায় পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ চীন সরকার। একই সঙ্গে ঝিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের জনগণের ধর্মীয় স্বাধীনতা পুরোপুরি নিশ্চিত করা হয়েছে।
তারা বলেন, সরকার প্রণীত আইন ও প্রবিধান জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি সব ধর্মের অনুসারীদের অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়।
আরও পড়ুন: খরচ ও শ্রম কমাতে চীনা বর্ষজীবী ধান চাষ করতে পারে বাংলাদেশ
ঝিনজিয়াং প্রদেশের জনগণের একটি বড় অংশ মুসলিম এবং মিডিয়ার একটি অংশে অভিযোগ রয়েছে যে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার ৮ দেশের সঙ্গে সীমান্তসংলগ্ন এই অঞ্চলে ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর বিধিনিষেধ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ঝ্যাং বলেন, ‘যা সম্পূর্ণ মনগড়া… চীনবিরোধী শক্তিগুলো চীনের অর্জিত বিস্তৃত গণমুখী সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ণ করার জন্য এসব অপপ্রচার করছে।’
লি জিয়াং বলেন, এ অঞ্চলের জনগণ পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকার ভোগ করে থাকে।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, তারা নাগরিকদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে পুরোপুরি সম্মান করেন এবং রক্ষাও করেন। ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য আইন ও বিধি প্রণয়ন করা হয়েছে।
চু জিয়ান বলেন, নীতি নির্ধারণী ফোরামে জাতিগত সংখ্যালঘুদেরও যথেষ্ট প্রতিনিধিত্ব রয়েছে।
ইয়ান নাইমিন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে জাতিগত সংস্কৃতি, শিল্পকলা ও সংগীতের প্রচার করে আসছি। বিদেশি পর্যটকদের জন্য ঝিনজিয়াং ভ্রমণ করা খুব সুবিধাজনক।’
এলিজান ইয়াকুব বলেন, সিপিসি সাহিত্য ও লোককাহিনির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে এবং প্রতি বছর এই উদ্দেশ্যে ১০ মিলিয়ন আরএমবি (ইউয়ান) বরাদ্দ করা হয়।
তিনি বলেন, ‘জাতিগত ঐক্য জোরদার করতে আমরা বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছি। তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের জন্য সংস্কৃতি ও সাহিত্যের উন্নতির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’
আইনুর মাহসেত বলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে কর্তৃপক্ষ নারী ও শিশুদের উন্নয়ন সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেয়।
তিনি বলেন, উইঘুরের স্থানীয় সরকার মা ও শিশুর স্বাস্থ্য কল্যাণে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।সরকারের আইন ও প্রবিধান নারী ও শিশুদের অধিকার সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেয়।
তিনি আরও বলেন, দল ও সরকারের বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী ক্ষেত্র ও ফোরামে বিপুল সংখ্যক নারী অবদান রাখছেন।
বাংলাদেশের গণমাধ্যম প্রতিনিধি দলটিতে ছিলেন- দৈনিক যুগান্তরের প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিম, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের উপসম্পাদক টিটু দাস গুপ্ত, দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের বিশেষ প্রতিবেদক মীর মোস্তাফিজুর রহমান, দ্য ডেইলি স্টারের কূটনৈতিক প্রতিবেদক পরিমল পালমা, ইউএনবির বিশেষ প্রতিবেদক একেএম মঈনুদ্দিন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির বিশেষ প্রতিবেদক নাফিজা দৌলা, এটিএন নিউজের প্রধান প্রতিবেদক আশিকুর রহমান অপু, দৈনিক সমকালের কূটনৈতিক প্রতিবেদক তাসনিম মহসিন মিশু, যমুনা টিভির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আহমেদ রেজা এবং সময় টিভির কূটনৈতিক প্রতিবেদক তাজওয়ার মাহমিদ।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আশা করা হচ্ছে: চীনা কর্মকর্তা
২০২৪ সালের শেষ নাগাদ ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আশা করা হচ্ছে: চীনা কর্মকর্তা
'পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ' শীর্ষক প্রকল্পের পূর্ণ বাস্তবায়নের পর ঢাকা শহর ও তৎসংলগ্ন নারায়ণগঞ্জের বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। যা হবে ডিজিটাল ঢাকা শহরের মূল ভিত্তি। এমনটাই জানিয়েছেন চীনের এক জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তা।
টিবিইএ'র ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট ম্যানেজমেন্টের পরিচালক মা ইউএনবিকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত প্রকল্পের ৭০ শতাংশেরও বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে।’
তিনি বলেন যে ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ পুরো প্রকল্পটি সম্পন্ন করে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) কাছে হস্তান্তর করা হবে।
পরিচালক মা বলেন, টিবিইএ ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি প্রকল্পের অধীনে কাজ করছে। যার অধীনে বেশ কয়েকটি উপপ্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে এই প্রকল্পটি দুই দেশের সরকারের মধ্যে বৃহত্তম বিদ্যুৎ সহযোগিতা প্রকল্প।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জরিমানা করেই দায় সারছে দুই সিটি করপোরেশন
চীনে স্কুলে জিমের ছাদ ধসে ১১ জন নিহত
চীনের হেইলংজিয়াং প্রদেশের কিকিহার শহরে একটি মিডল স্কুলের জিমের ছাদ ধসে ১১ জন নিহত হয়েছে। সোমবার (২৪ জুলাই) কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রবিবার (২৩ জুলাই) বিকালে এই দুর্ঘটনা ঘটার পর থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালানো হয়।
দেশটির সরকারি নিউজ এজেন্সি সিনহুয়া’র তথ্যমতে, স্কুলের ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণ কাজের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শ্রমিকেরা জিমের ছাদে নির্মাণ সামগ্রী জমা করে রাখায় সেগুলো বৃষ্টির পানি শুষে নেয়।
সিনহুয়া জানায়, ৩৪ নম্বর মিডল স্কুলের জিমনেসিয়ামে ১৯ জন ছিলেন। কিন্তু এদের মধ্যে কতজন শিক্ষার্থী ছিল সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
আরও পড়ুন: চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভূমিধসে খনি শ্রমিক আবাসনে নিহত ১৯
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে খনির ছাদ ধসে ৫জন নিহত
চীনে কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৩৮
নির্মাণ ও শিল্প দুর্ঘটনা চীনে নিয়মিত ঘটনা। মূলত কোম্পানিগুলোর নিরাপত্তা বিধি না মানা এবং দুর্নীতি বা স্থানীয় সরকারি সংস্থাগুলোর দায়িত্বহীনতার অভাবের ফলে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে।
এসব সমস্যা বিশেষত দ্বিতীয় ও তৃতীয়-স্তরের শহরগুলোতে তীব্র। যেমন-কিকিহার, যা রাশিয়ার সীমান্তবর্তী হেইলংজিয়াংয়ের চীনা রাস্টবেল্ট প্রদেশে অবস্থিত।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই অঞ্চলে বড় আকারের অর্থনৈতিক পতন এবং বহির্মুখী অভিবাসন ঘটেছে।