রিট
টেলিফোনে আড়ি পাতা বন্ধে রিটের আদেশ রবিবার
টেলিফোনে আড়ি পাতা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী রবিবার আদেশ দেবেন হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট আবেদনটির ওপর শুনানি গ্রহণ শেষে আদেশের এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। বিটিআরসির পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা ই রাকিব।
আরও পড়ুন: মাগুরায় আদালতের আদেশ অমান্য করায় ওসিকে তলব
এর আগে গত ১০ আগস্ট ফোনে আড়ি পাতা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে ফোনালাপ ফাঁসের ২০টি ঘটনা তদন্তের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এ রিট দায়ের করেন।
রিটকারী আইনজীবীরা হলেন- অ্যাডভোকেট রেজওয়ানা ফেরদৌস, উত্তম কুমার বণিক, শাহ নাভিলা কাশফী, ফরহাদ আহমেদ সিদ্দীকী, মোহাম্মদ নওয়াব আলী, মোহাম্মদ ইবরাহিম খলিল, মুস্তাফিজুর রহমান, জি এম মুজাহিদুর রহমান (মুন্না), ইমরুল কায়েস ও একরামুল কবির।
ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আদালত
এর আগে গত ২২ জানুয়ারি টেলিফোনে আড়ি পাতা বন্ধে সাত দিনের মধ্যে পদক্ষেপ জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের এই ১০ আইনজীবী। এতে ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৬টি আড়ি পাতার ঘটনা নোটিশে উল্লেখ করা হয়। তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার সংলাপ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ফোনালাপ, প্রয়াত সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ও রাজশাহী মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার নাজমুল হাসানের ফোনালাপ উল্লেখযোগ্য। এসব আড়ি পাতার ঘটনা বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বহুল প্রচারিত ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
নোটিশে বলা হয়, সার্বজনীন মানবাধিকার সনদপত্র, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী পৃথিবীর সব আধুনিক ব্যব¯’ায় ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার স্বীকৃত ও সংরক্ষিত। এরই ধারাবাহিকতায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৩ অনু”েছদে চিঠিপত্র ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনীয়তা সংরক্ষণ নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এই অধিকার সংবিধান কর্তৃক নিশ্চিত করা হয়েছে। অর্থাৎ সংবিধানের তৃতীয়ভাগে উল্লেখিত মৌলিক অধিকারগুলোর মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংরক্ষণ অন্যতম।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যা: চেম্বার আদালতে ৩ আসামির জামিন স্থগিত
এছাড়াও ২০০১ সালের ১৬ এপ্রিল বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি অ্যাক্ট, ২০০১ প্রণয়ন করা হয়। এই আইনের ধারা ৬ অনুযায়ী টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়। ধারা ৩০(চ) অনুযায়ী টেলিযোগাযোগের একান্ততা রক্ষা নিশ্চিত করা এই কমিশনের দায়িত্ব। কিš‘ লক্ষ্য করা যা”েছ যে, এই ধরনের ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা অহরহ ঘটছে। অথচ বাংলাদেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী কমিশনের দায়িত্ব হল ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংরক্ষণ নিশ্চিত করা। নোটিশের জবাব না পাওয়ায় এ রিট করা হয় বলে জানান আইনজীবী শিশির মনির।
জাপানি মায়ের রিট: ২ মেয়েসহ বাবা ও ফুপুকে ৩১ আগস্ট হাজিরের নির্দেশ
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শরীফ ইমরানের কাছ থেকে ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই মেয়েসন্তানকে ফিরে পেতে জাপানি নারী নাকানো এরিকো’র করা রিটের শুনানি নিয়ে রুলসহ আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত এ আদেশে দুই মেয়েসহ তাদের বাবা শরীফ ইমরান ও তাদের ফুপুকে আগামী ৩১ আগস্ট হাইকোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন।
ওইদিন আদালতে এদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে গুলশান ও আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অবস্থান করা ওই দুই মেয়েকে নিয়ে তাদের বাবা আগামী ৩০ দিন বিদেশ যেতে পারবেন না বলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুনঃ মাগুরায় আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীকে মারধর
দুই মেয়েকে নিজের জিম্মায় পেতে জাপানিজ ওই মায়ের করা রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার রুলসহ এই আদেশ দেন।
নাকানো এরিকো পেশায় জাপানের একজন ডাক্তার। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
শিশির মনিরের তথ্যমতে, জাপানি আইন অনুসারে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো (৪৬) ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক শরীফ ইমরান (৫৮) ২০০৮ সালের ১১ জুলাই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর তাঁরা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। এক যুগের দাম্পত্যজীবনে তাঁদের তিন মেয়েসন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে তাঁদের বয়স যথাক্রমে ১১, ১০ ও ৭ বছর। তিন মেয়ে টোকিওর একটি স্কুলে পড়ছিল। চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। গত ২১ জানুয়ারি ইমরান টোকিওর ওই স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁর এক মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন। তবে এরিকোর সম্মতি না থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ইমরানের আবেদন নাকচ করে।
আরও পড়ুনঃ আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
রিট আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, পরবর্তী সময়ে স্কুলবাসে করে বাড়ি ফেরার পথে বাসস্টপেজ থেকে ইমরান বড় দুই মেয়েকে অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। গত ২৫ জানুয়ারি ইমরান তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছে সন্তানদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। কিন্তু এরিকো তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরিকো ২৮ জানুয়ারি টোকিওর পারিবারিক আদালতে তাঁর সন্তানদের জিম্মার জন্য আদেশ চেয়ে মামলা করেন। আদালত ৭, ১১ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক সাক্ষাতের আদেশ দেন। তবে এই আদেশ ভঙ্গ করে ইমরান শুধু একবার মায়ের সঙ্গে বড় দুই মেয়ের সাক্ষাতের সুযোগ দেন।
এরিকোর আইনজীবীর অভিযোগ, গত ৯ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ইমরান মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ সিনেমা নাটকের দৃশ্যে ধূমপানের ব্যবহার ও প্রদর্শন বন্ধে হাইকোর্টের রুল
গত ৩১ মে টোকিওর পারিবারিক আদালত এরিকোর অনুকূলে বড় দুই মেয়ের জিম্মা হস্তান্তরে আদেশ দেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে এরিকো এত দিন বাংলাদেশ আসতে পারেননি বলে জানান আইনজীবী শিশির মনির। তিনি বলেন, ছোট মেয়েকে মায়ের কাছে রেখে ১৮ জুলাই শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে আসেন এরিকো। তবে ইমরান শ্রীলঙ্কা থেকে এরিকোকে ফিরে যেতে বলেন। এরিকো বাংলাদেশে এসে করোনা পরীক্ষা করান। ফলাফল নেগেটিভ আসে। তবে ইমরান এ ফলাফল অবিশ্বাস করে এরিকোর সঙ্গে দুই মেয়ের সাক্ষাৎ দিতে অস্বীকৃতি জানান।
গত ২৭ জুলাই মোবাইল সংযোগ বন্ধ ও চোখ বাঁধা অবস্থায় এরিকোকে তাঁর মেয়েদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেয়া হয়। একই অবস্থায় গাড়িতে তাঁকে পৌঁছে দেয়া হয়। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে দুই মেয়েকে নিজ জিম্মায় চেয়ে হাইকোর্টে রিট (হেবিয়াস কর্পাস) করেন এরিকো।
ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞার রিটের আদেশ মঙ্গলবার
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহারের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ সংক্রান্ত একটি ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় অধ্যক্ষের পদে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করা রিটের ওপর আদেশের জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি গ্রহণ করে এই আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া রাসেল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আরও পড়ুনঃ ভিকারুননিসায় অধ্যক্ষ নিয়োগ স্থগিতের আবেদনে সাড়া দেয়নি চেম্বার বিচারপতি
এর আগে রোববার (৮ আগস্ট) ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এবং অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে অধ্যক্ষ কামরুন নাহারকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখতে অন্তবর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই ছাত্রীর অভিভাবক মোহাম্মদ মোরশেদ আলম রিট দায়ের করেন। রিটে শিক্ষা সচিব ও শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও গর্ভনিং বডির সভাপতিকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া রাসেল বলেন, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার অডিওতে যেসব কথা বলেছেন, তাতে তিনি এই কলেজের অধ্যক্ষ পদে থাকার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন। কারণ তিনি অধ্যক্ষ পদে বহাল থাকলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব পড়বে।
আরও পড়ুনঃ ভিকারুননিসায় নতুন অধ্যক্ষের যোগদানে ‘বাধা নেই’
উল্লেখ্য সম্প্রতি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এবং অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর ফোনালাপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনা হয়। এ দুজনের ৪ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। ওই ফোনালাপের এক পর্যায়ে অধ্যক্ষ কামরুন নাহার মুকুলকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি বালিশের নিচে পিস্তল রাখি। কেউ (কোনো... বাচ্চা) যদি আমার পেছনে লাগে আমি কিন্তু ওর পেছনে লাগব। আমি শুধু ভিকারুননিসা না, আমি তাকে দেশ ছাড়া করব।’
অধ্যক্ষ ও অভিভাবক ফোরাম নেতার সাড়ে ৪ মিনিটের ওই কথোপকথন সর্বত্র আলোচিত হচ্ছে। সেই ফোনালাপে এমন কিছু গালি রয়েছে যা প্রকাশের অযোগ্য। এতে বিব্রত ভিকারুননিসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
ফাঁস হওয়া ওই অডিও ভিকারুননিসার দীর্ঘদিনের সুনাম ও ঐতিহ্যের ওপর আঘাত হেনেছে বলে মন্তব্য করছেন প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সদস্যরা। তারা বলছেন, অধ্যক্ষ কামরুন নাহার চলতি বছরের প্রথম দিন যোগদান করেন। এরপর থেকে তিনি প্রতিষ্ঠানে আসেননি বললেই চলে। কেউ যদি তাকে স্কুলে আসার বিষয়ে অনুরোধ করেন, তিনি (কামরুন নাহার) সবাইকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মন্ত্রী, সচিবালয় এবং সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে তার যোগাযোগ আছে বলে দাবি করেন গভর্নিং বোর্ডের কয়েকজন সদস্য।
সংসদ সদস্য পদ ফিরে পেতে পাপুলের রিট আপিলেও খারিজ
মানব ও অর্থপাচারের দায়ে কুয়েতের আদালতে দণ্ডিত লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের এমপি পদ বাতিল ও আসন শূন্য ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: এমপি পাপুলের সাজা: রায়ের কপি পেয়েছে সরকার
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।
এর আগে গত ৭ জুন পাপুলের এমপি পদ বাতিল ও আসন শূন্য ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট সরাসরি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন :এমপি পাপুলের স্ত্রী-মেয়ের জামিন বাতিল বিষয়ে হাইকোর্টের রুল
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি মানব ও অর্থপাচারের দায়ে কুয়েতের আদালতের রায়ে দণ্ডিত পাপুলের সদস্য পদ বাতিল করা হয়। সংসদ সচিবালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।
আরও পড়ুন: পাপুলের স্ত্রী-মেয়ের জামিন আবেদনে নথি জালিয়াতি তদন্তের নির্দেশ
এদিকে লক্ষ্মীপুর-২ আসন শূন্য ঘোষণা করে আগামী ২১ জুন ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। এরপর পাপুলের এমপি পদ বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন তার বোন নুরুন্নাহার বেগম। রিটে লক্ষ্মীপুর-২ আসন শূন্য ঘোষণার বৈধতাও চ্যালেঞ্জ করা হয়।
গত ২৮ জানুয়ারি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলকে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন কুয়েতের আদালত। পাশাপাশি তাকে ১৯ লাখ কুয়েতি রিয়াল বা ৫৩ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়। গত বছরের ৬ জুন রাতে কুয়েতের বাসা থেকে আটক করা হয় তাকে। আটকের সাড়ে ৭ মাস আর বিচার প্রক্রিয়া শুরুর সাড়ে ৩ মাসের মাথায় দণ্ডিত হন কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গাছ কাটা: রিটের শুনানি পেছাল
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়ে আদালত অবমাননার মামলা এবং গাছ কাটা বন্ধের রিট আবেদনের ওপর শুনানি মূলতবি করেছেন হাইকোর্টের পৃথক দুটি বেঞ্চ।
বৃহস্পতিবার আদালত অবমাননার মামলার শুনানি ২ সপ্তাহ মুলতবি করেছেন বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আর গাছ কাটা বন্ধ চেয়ে ৬টি সংগঠন ও এক ব্যক্তির করা রিট আবেদনের শুনানি ৪ সপ্তাহের জন্য মূলতবি করেছেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট
হাইকোর্টে আদালত অবমাননার মামলার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। আর রিট আবেদনকারীপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল ও অ্যাডভোকেট সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান।
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন হাইকোর্টকে বলেন, রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়ে পরিবেশবাদীসহ সকলের সাথে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বৈঠক করবেন।
আরও পড়ুন: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গাছ না কাটার নির্দেশ হাইকোর্টের
তিনি বলেন, বৈঠকের পরে তারা উদ্যানে গাছ না কাটা এবং ৭ মার্চের ভাষণের আদলে অবকাঠামো নির্মাণসহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’ এজন্য তিনি সময় চেয়ে দুটি মামলার শুনানি মূলতবির আবেদন জানান।
শুনানিকালে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব উভয়পক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, আমরা চাই সেখানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে) গাছও থাকবে। আর হাইকোর্টের আগের রায়ের নির্দেশনা অনুসারে কাজও হবে। আর একটা কথা, অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন যে, সরকার এটা নিয়ে পরিবেশবাদীদের সঙ্গে বসে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সমাধান চান। আমরাও চাই, সমস্যার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি হোক। অন্যথায় যারা সংক্ষুব্ধ তারা যেকোনো সময়ই আদালতে আসতে পারবেন।
আদালত অবমাননার মামলা
‘উদ্যানের ঐতিহাসিক স্থানসমুহ যথাযথভাবে সংরক্ষণে ২০০৯ সালের হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়ন হয়নি। উল্টো সেখানে গাছ কেটে রেস্টুরেন্ট ও দোকান বানাচ্ছে’-এই অভিযোগে সরকারের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আদালত অবমাননার আবেদন করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ, গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী মো. শামিম আখতার এবং প্রধান আর্কিটেক্ট অব বাংলাদেশ মীর মনজুর রহমানের বিরুদ্ধে এই আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়।
বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহোদয় আমাকে জানিয়েছেন যে, এখন গাছ কাটা হচ্ছে না। তিনি পরিবেশবাদীদের সঙ্গে বসতে চান। বসেই সমাধান করতে চান। এজন্য এক মাস সময় চাচ্ছি। এ পর্যন্ত শুনানি মূলতবি রাখা হোক।
এই আবেদনের বিরোধিতা করে মনজিল মোরসেদ বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল যেহেতু বলছেন তাকে মন্ত্রী বলেছেন যে সবাইকে নিয়ে বসতে চান। তাহলে আদালত সময় দিতে পারেন। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে নিশ্চিত করবেন যে আর কোনো গাছ কাটা হবে না।
এ সময় উভয়পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক চলে।
বেশ কিছুক্ষণ এভাবে চলার পর আদালত বলেন, যেহেতু অ্যাটর্নি জেনারেল বলছেন যে তারা বসতে চান। তাহলে আমরা শুনানি দুই সপ্তাহের জন্য মূলতবি রাখছি। যদি এর মধ্যে কোনো গাছ কাটা হয় তখন আপনি (মনজিল মোরসেদ) আদালতে আসতে পারবেন। এরপর আদালত আদেশ দেন।
ছয় সংগঠনের রিটের শুনানি
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মূল নকসার সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ স্থাপনা উচ্ছেদ, উদ্যান সংরক্ষণ এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে মূলরুপে রাখার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করে পরিবেশবাদী ছয়টি সংগঠন ও একজন ব্যক্তি। এ আবেদনের ওপর বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে বেলা একটার দিকে শুনানি শুরু হয়।
শুরুতেই অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে শুনানি একমাস মূলতবি রাখার আবেদন জানান।
তিনি বলেন, মন্ত্রী পরিবেশবাদীদের সঙ্গে বসে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে চান।
সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, এর আগেও মন্ত্রী বলেছিলেন যে আমাদের সঙ্গে ১১ মে বসবেন। কিন্তু বসেননি। সুতরাং এই মুহূর্তে গাছ কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিন এবং রুল জারি করুন।
জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মন্ত্রী মহোদয় নিজেই বলেছেন যে গাছ কাটা বন্ধ আছে। আপাতত গাছ কাটবে না।
এ সময় আদালত রিট আবেদনকারীপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের উদ্বেগ বুঝতে পারছি। যেহেতু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আপনাদের নিয়ে বসতে চাচ্ছেন। আমরাও চাই আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে বিষয়টির সন্তোষজনক সমাধান হোক। আপনারা সামনা-সামনি বসুন। সকলে মিলে সমস্যা চিহ্নিত ও সমাধান করুন। আমরা অ্যাটর্নি জেনারেলের কথা উল্লেখ করে আদেশ দিচ্ছি। চার সপ্তাহ মূলতবি রাখছি।
আদালতে বলেন, আমরা চাই, আগের রায়ের নির্দেশনার আলোকে সমঝোতার ভিত্তিতে বিষয়টির সন্তোষজনক সমাধান হোক। আর যদি কোনো সমস্যা হয় তবে আদালত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল বাতিল চেয়ে রিট
২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ‘ত্রুটিপূর্ণ’ ফল বাতিল করে নতুন মেধা তালিকা প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
বুধবার ফেরদাওস জাহান মারিয়াসহ ৩২৪ পরীক্ষার্থীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার এ রিট দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: রবিবারের এমবিবিএসের চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষা স্থগিত
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিচালক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে আগামী সপ্তাহে এ রিটের শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী পল্লব।
আরও পড়ুন: মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে রিট খারিজ
এর আগে মঙ্গলবার পরীক্ষার্থীদের পক্ষে এই ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বাতিল চেয়ে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার এ নোটিশ পাঠান। কিন্তু নোটিশের প্রেক্ষিতে কোন সাড়া না পেয়ে এই রিট করা হয়।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যবিধি মেনে এমবিবিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে: মন্ত্রী
রিটে বলা হয়েছে, গত ৪ এপ্রিল প্রকাশিত ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলে অসংখ্য ভুল এবং বড় ধরনের অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর গত ৭ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী একজন পরীক্ষার্থী কোনো মেডিকেল কলেজে ভর্তি থাকা অবস্থায় তিনি যদি দ্বিতীয় বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তবে তার মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৭.৫ নম্বর কর্তন করা হবে। আবার কোনো পরীক্ষার্থী যদি গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকে তাহলে তার ৫ নম্বর কাটা যাবে।
কিন্তু প্রকাশিত ফলে দেখা যায়, অনেক পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রেই এই নিয়মটি পালন করা হয়নি। যেসব পরীক্ষার্থীর ৭.৫ নম্বর কর্তন করার কথা সেখানে মাত্র ৫ নম্বর কর্তন করা হয়েছে। ফলে ওইসব ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ২.৫ নম্বর বেশি দিয়ে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। আবার প্রথমবার পরীক্ষায় যেখানে কোনো নম্বর কাটার কথা নয় সেখানে অনেক পরীক্ষার্থীর ৫ নম্বর কর্তন করে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।
এবারের ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত পাঠ্যপুস্তক অনুযায়ী অন্তত দুটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের সঠিক উত্তর ছিল দুটি করে। সেই সঙ্গে অন্তত তিনটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের কোনো সঠিক উত্তর ছিল না।
সংরক্ষিত জেলা ও উপজাতি কোটার আসন পূরণেও ব্যাপক অসঙ্গতি করা হয়েছে। ঢাকা জেলা কোটা আবেদনকারী পরীক্ষার্থীকে দেখানো হয়েছে মেহেরপুর জেলার পরীক্ষার্থী হিসেবে। উপজাতি কোটায় সংরক্ষিত আসনে অসংখ্য সাধারণ ছাত্রছাত্রীকে নির্বাচিত করা হয়েছে।
এসব ত্রুটি ও অসঙ্গতি রেখে মেধা তালিকা প্রণয়ন করার ফলে হাজার হাজার যোগ্য ও মেধাবী পরীক্ষার্থী মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার মুখে পড়েছেন।
এসব কারণে প্রকাশিত ফল বাতিল করে এবং এসব ত্রুটি ও অসঙ্গতি সংশোধন করে নতুন মেধা তালিকা প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করলেও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। বরং ত্রুটিপূর্ণ মেধাতালিকার ভিত্তিতেই মেডিকেল কলেজগুলোতে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে আগামী ২২ মে থেকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর ভর্তি কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে।
রিটে বলা হয়, যে ত্রুটিপূর্ণ মেধা তালিকার ভিত্তিতে মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর অর্থই হলো প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীকে বঞ্চিত করা। তাদের আজীবন লালিত আকাঙ্ক্ষা চিকিৎসাকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত করা। সেই সাথে দেশের সামগ্রিক জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়া, যা বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭, ৩১, ৩২ ও ৪০ এর পরিপন্থী।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট
ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সৌন্দর্য বাড়ানোর নামে গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট করেছেন ছয় সংগঠন ও এক ব্যক্তি।
রবিবার ওই ৬ সংগঠন ও এক ব্যক্তির পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিনহাজুল হক চৌধুরী এ রিট দায়ের করেন।
রিটকারী সংগঠন ও ব্যক্তি হলেন- বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফরমস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), নিজেরা করি, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন।
আরও পড়ুন: বাঁশখালীতে পুলিশের গুলিতে শ্রমিক নিহত: আরও ৫ সংগঠনের রিট
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে আগামী ১৯ মে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে। এর আগে গত ৬ মে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সৌন্দর্য বাড়ানোর নামে গাছ কাটা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ পাঠান তারা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর বরাবর এ নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশের জবাব না পেয়ে এ রিট দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন: চিকিৎসক-পুলিশের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি কাম্য নয়: হাইকোর্ট
এদিকে, আদালতের আদেশ অমান্য করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রেস্টুরেন্ট স্থাপনের জন্য গাছ কাটায় সরকারের এক সচিবসহ তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আদালত অবমাননার আবেদন করেছেন এক আইনজীবী।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এ আবেদন করেছেন।
আরও পড়ুন: লকডাউনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট
তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে ২০০৯ সালে একটি রিট পিটিশন দায়ের করলে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে আদেশ দেন।
আদেশে আদালত এক বা একাধিক কমিটি গঠন করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে সেগুলো সংরক্ষণের নির্দেশ দেন। সেগুলো হলো-
১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ভাষণের স্থান।
১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবর রহমানের ভাষণের স্থান।
১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদে নির্বাচিত সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের স্থান।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের স্থান।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের স্থান।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের স্থান।
১৯৭২ সালের ১৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভাষণের স্থান এবং স্মৃতিফলক/জয় স্থাপনা ও সংরক্ষণ করার নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বিদ্যমান সব ধরনের স্থাপনা অপসারণ করে কমিটির চিহ্নিত স্থানগুলোতে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও বিবেচনাপ্রসূত দৃষ্টিনন্দন ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ ও সংরক্ষণ, তবে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তারিখের আগের কোনো স্থাপনা এবং বিদ্যমান মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত স্মারক, ভাস্কর্য, স্মৃতিফলক বা জয় এই আদেশের আওতাবহির্ভূত হবে। অন্যসব স্থাপনা ব্যতিক্রমহীনভাবে অবিলম্বে অপসারণ করাসহ কয়েকটি নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।
আদালতের রায় উপেক্ষা করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্যে ব্যবসায়িক স্বার্থে রেস্টুরেন্ট/দোকান প্রতিষ্ঠার জন্য পরিবেশ ধ্বংস করে অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। যা রায়ের সম্পূর্ণ পরিপন্থি বলে উল্লেখ করেন মনজিল মোরসেদ।
টিকা-অক্সিজেন নিয়ে রিট করে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করবেন না: হাইকোর্ট
বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের টিকা ও হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ নিয়ে জনস্বার্থে রিট মামলা করে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা না করতে বলেছেন হাইকোর্ট।
ইউনুছ আলী আকন্দকে সতর্ক করল হাইকোর্ট
সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি না হয়েও রিট দায়ের করায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দকে সতর্ক করেছেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, শখের বশে কোনো মামলা (রিট) করবেন না। এ ধরনের রিট করলে খারিজ করে বড় অঙ্কের জরিমানা করা হবে। জরিমানা দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবেন।
রাজধানীতে সম্প্রতি এক নারী ডাক্তারের সাথে এক ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের বাকবিতণ্ডার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে ও লকডাউনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট শুনানির জন্য উপস্থাপন করলে মঙ্গলবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: চিকিৎসক-পুলিশের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি কাম্য নয়: হাইকোর্ট
শুনানির শুরুতে অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ আদালতে চিকিৎসক-পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের বাকবিতণ্ডার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন চেয়ে রিট ও লকডাউনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন।
তখন আদালত বলেন, মিস্টার আকন্দ আপনি শখের বশে মামলা করবেন না। চিকিৎসক-পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের বাকবিতণ্ডার ঘটনায় রিট করার আবেদনের এখতিয়ার (লোকাস স্ট্যান্ডি) আপনার নেই। এটা আগেই বলেছি। এ ধরনের রিট রিজেক্ট করলে বড় অঙ্কের জরিমানা (হেভি কস্ট) দিয়ে রিজেক্ট করব। প্রস্তুত থাকবেন।‘
আরও পড়ুন: চিকিৎসক-পুলিশের বাগবিতণ্ডা: হাইকোর্টের নজরে আনলেন এক আইনজীবী
এর আগে সোমবার লকডাউনে মুভমেন্ট পাস নিয়ে চিকিৎসক-পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের বাকবিতণ্ডার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন এই আইনজীবী। রিটে চিকিৎসককে হয়রানির অভিযোগ এনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মামুনুর রশিদ ও সংশ্লিষ্ট পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। এছাড়া ওইদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়।
আরও পড়ুন: লকডাউনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট
এদিকে গত ২৫ এপ্রিল জরুরি অবস্থা জারি করা ছাড়া লকডাউন দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। দুটি রিটই দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ।
আলোচিত বিষয় নিয়ে রিটকারী আইনজীবী হিসেবে পরিচিত অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ গত বছরের ১২ অক্টোবর ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা নিয়ে ফেসবুকে কটাক্ষ করে স্ট্যাটাস দেওয়ায় গুরুতর আদালত অবমাননা হওয়ায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন আপিল বিভাগ।
এ ঘটনায় তাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সাথে তাকে তিন মাসের জন্য আইনপেশা থেকে বরখাস্ত করেন আদালত। এছাড়া এর আগে রিট করে জরিমানাও গুণেছেন এই আইনজীবী।
প্রাপ্ত বয়স্ক সব নাগরিককে টিকা দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট
মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় স্বল্প, মাঝারি এবং দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে বয়স বিবেচনা না করে প্রাপ্ত বয়স্ক সকল নাগরিককে টিকা দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
সোমবার মানবাধিকার সংস্থা ল' অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন এর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ২১ লাখ টিকা আসছে
রিটে স্বাস্থ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, ক্যাবিনেট সচিব, পরিকল্পনা সচিব, রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার পল্লব বলেন, দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ অতিক্রম করছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনাভাইরাস আরও বেশি আগ্রাসী। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং শত শত মানুষ মারা যাচ্ছেন। হাসপাতালগুলো এরইমধ্যে করোনাভাইরাস রোগীতে টইটম্বুর। ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনাভাইরাসের রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। করোনাভাইরাস প্রতিনিয়তই তার রূপ পাল্টে নতুন নতুন রূপে আবির্ভূত হচ্ছে। বিভিন্ন স্টাডি ও গবেষণার রিপোর্ট থেকে প্রতীয়মান হয় যে করোনাভাইরাস শিগগিরই নির্মূল হচ্ছে না বরং এটি আগামী ১০ থেকে ১৫ বছর স্থায়ী হতে পারে। তাই দীর্ঘমেয়াদে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রয়োজন জাতীয় পর্যায়ে সমন্বিত পরিকল্পনা।
আরও পড়ুন: টিকার মজুদ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসের নতুন নতুন বিধ্বংসী উপকরণ মোকাবিলা করতে গিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাবে অসংখ্য রোগী প্রতিদিন মারা যাচ্ছে। টিকার অপ্রতুলতা, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও হাসপাতালের স্বল্পতা বিষয়টিকে আরও মারাত্মক করে তুলেছে। সে দেশের উচ্চ আদালত ভিক্ষা করে হলেও অক্সিজেন আমদানির জন্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন। বাংলাদেশে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য সরকারকে এখনই স্বল্প, মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: অন্যান্য দেশ থেকেও করোনার টিকা আনার উদ্যোগ সরকারের
তিনি বলেন, করোনা চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় পথ্য, ওষুধ, অক্সিজেন এবং ১৮ বছর বয়সী সব নাগরিকের জন্য পর্যাপ্ত টিকা ক্রয় করে তা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে রিটে।
রিটে বলা হয়, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং জীবন ধারণের অধিকার প্রত্যেকটি মানুষের সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার। বর্তমানে ৪০ বছরের ঊর্ধ্বে নাগরিকদের টিকা দেয়া হচ্ছে যা জনগণের মৌলিক অধিকারের সাথে বৈষম্যমূলক। সবাইকে মরণঘাতী ভাইরাসের টিকা দেয়া সরকারের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব এবং প্রত্যেক নাগরিকের এই টিকা পাওয়ার অধিকার একটি মৌলিক অধিকার।
রিট আবেদনটি মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানির জন্য উত্থাপন করা হবে বলেও জানান এই রিটকারী আইনজীবী।