চিকিৎসা
দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু নেই, আক্রান্ত ১
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হয়নি।
একই সময়ে নতুন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ১ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৭৪ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু নেই, আক্রান্ত ১২
এরমধ্যে ৩৪ জন ঢাকার মধ্যে এবং ৪০ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৪৫৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এর মধ্যে ঢাকায় ২১৬ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ২৩৯ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ৩৭৬ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ১৮০ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি ১৯৬ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
এছাড়া চলতি বছরে ডেঙ্গুতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু নেই, আক্রান্ত ১৬
ডেঙ্গুতে মৃত্যু ২, আক্রান্ত ১৪
দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসায় ডেঙ্গু রোগীদের মৃত্যু বাড়ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন,দেরি করে চিকিৎসা নিতে আসার কারণে দেশে বেশি ডেঙ্গু রোগী মারা গেছেন।
তিনি বলেন, রোগীরা হাসপাতালে দেরি করে আসছে। দেখা যাচ্ছে রোগী যখন ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে তখন অনেকে মনে করছেন সর্দি জ্বর হচ্ছে। সেটা ভেবে অনেক কালক্ষেপণ করা হচ্ছে, এতে রোগী সিরিয়াস হয়ে যাচ্ছে। হেমোরেজিক একটা ভাইরাসে আছে ডেঙ্গুর যা ইন্টারনাল ব্লেডিং করে, সেটা শুরু হলে রোগীকে বাঁচানো কষ্ট হয়ে যায়। দেরি করে আসার কারণে অনেক রোগী মারা গেছে। ভর্তি হওয়ার তিনদিনের মধ্যে রোগী মারা গেছে ৭২ শতাংশ। যারা দীর্ঘসময় থাকতে পেরেছে তারা কিন্তু বেঁচে গেছে। যারা আসার তিনদিনের মধ্যে মারা গেছেন তারা সিরিয়াস কন্ডিশনে আসছে। তিনি আরও বলেন, জ্বর হলে পরীক্ষাটা দ্রুত পরীক্ষার ব্যপারে সচেতন হতে হবে। ডেঙ্গু হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন।
সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে নেপাল ও সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগী ও মৃত্যুর হারও বেড়েছিলো। আমরা লক্ষ্য করেছি আশেপাশের দেশগুলোর মধ্যে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ দেশগুলোতে ডেঙ্গু বেড়ে গিয়েছিলো। এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার ডেঙ্গু রোগী পেয়েছি। তার মধ্যে ৩৬ হাজারই ঢাকায়,তাও সিটি করপোরেশন এরিয়ায়।
আরও পড়ুন: বিদেশফেরত কর্মীদের এইচআইভি পরীক্ষা করতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, সিটি করপোরেশেই সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী। সিটি করপোরেশনে লোকও বেশি বাস করে। এখানে অনেক ড্রেনেজ সিস্টেম আছে। অনেক রকমের পানি জমে আছে, সেটাও বেশি। ঘরবাড়িও বেশি, যেখানে আবর্জনা ও পানি জমে থাকে, কনস্ট্রাকশন অনেক বেশি। সব জায়গায় স্প্রে করা প্রয়োজন। স্প্রে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা করে থাকে। এ বছর দেখা গেলো তারপরও মশা অনেক বেড়েছিলো। এতে রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। আমরা বারিধারা থাকি সেখানেও অনেক মশা। সার্বক্ষণিক স্প্রে করলেও দেখি মশা দূর হয় না। সেজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গুর জন্য যে চিকিৎসা ব্যবস্থা আমাদের নেয়ার কথা অর্থাৎ হাসপাতালের ব্যবস্থা রাখা, আমরা কিন্তু সেই ব্যবস্থা রেখেছিলাম। হাসপাতাল ডেঙ্গু রোগীতে ভরা ছিলো। প্রত্যেক দিন প্রায় এক হাজার রোগী আমরা পেতাম। সেই এক হাজার রোগীকে আমাদের রাখতে হয়েছে, চিকিৎসা দিতে হয়েছে। কেউই বিনা চিকিৎসায় হাসপাতাল থেকে যায়নি।
জাহিদ মালেক বলেন, আশার বিষয় হলো রোগীর সংখ্যা কমে আসছে। আগে এক হাজার রোগী প্রতিদিন আমরা পেয়েছি, আজ চারশ'রোগী ভর্তি হয়েছে। তাতে অর্ধেরকেরও বেশি কমেছে। মৃত্যুর হারও কমেছে। গতকাল তিনজন মারা গেছে। তার আগে কয়েকদিন কোন মৃত্যু হয়নি। গ্রামে কিন্তু এতো মশা নেই, ঢাকা শহরে এটা বেশি। তাই ঢাকা শহর অন্যান্য সিটি করপোরেশন গুলোতে যদি বেশি নজরদারি করা হয় তাহলে হয়ত আগামিতে ডেঙ্গুর সংখ্যা কমবে।
তিনি বলেন, স্প্রে হয়ত যে পরিমাণ দরকার ছিলো সে পরিমাণ দেয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু তারা যথেষ্ট চেষ্টা করেছে, সেজন্যই ডেঙ্গু কমে এসেছে। আশা করি সামনে ভালো ওষুধ যথা সময়ে দেয়া হবে।
জাহিদ মালেক বলেন, স্প্রে যথেষ্ট করার পরও যখন মশা এতো বাড়ে তখন অনেক সময় মনে হয় এই ওষুধটা মশার জন্য কার্যকর হয়নি। বা মানুষের শরীরে যেভাবে অ্যান্টিবডি ডেভলপ করেছে, মশারও তেমন অ্যান্টিবডি ডেভলপ করেছে। ডেঙ্গুতে মৃত্যুর কারণ মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে।
আরও পড়ুন: প্রতিবছর ১৩ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ভেজাল খাবারে দেশ ভরে গেছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্ট্রোক চিকিৎসা সেবায় রুপান্তর নিয়ে আন্তর্জাতিক সায়েন্টেফিক সেমিনার
দক্ষ, অভিজ্ঞ, মেধাবী বাংলাদেশিরা ছড়িয়ে আছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। এদের অনেকেই যে যার ক্ষেত্রে কাজ করছেন সুনামের সঙ্গে। এমনই কিছু বাংলাদেশের চিকিৎসক গেল ২০২০ সালের জুলাই মাসে গড়ে তোলেন প্ল্যানেটরি হেলথ অ্যাকাডেমিয়া- পিএইচ এ নামে একটি সংগঠন।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, অষ্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশের দেড়শ’র বেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, গবেষক যাদের লক্ষ্য দেশের চিকিৎসক- স্বাস্থ্য গবেষকদের সঙ্গে বিদেশে থাকা বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকদের সেতুবন্ধন তৈরি করা। যে সেতুবন্ধনে ভাবনা, অভিজ্ঞতা বিনিময় করা যাবে- কমিয়ে আনা যাবে জানা-বোঝার দূরত্ব।
একইসঙ্গে বাংলাদেশের তরুণ চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত হবার সুযোগও তৈরি হবে। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে পিএইচএ এরইমধ্যে দুই বছরেরও বেশি সময়ে অনেকখানি এগিয়েছে।
সময়ের সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির যেমন হচ্ছে তেমনি বাড়ছে নানারকম অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর সংখ্যাও।
গত শুক্রবার গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে প্ল্যানেটরি হেলথ অ্যাকাডেমিয়া আয়োজন করে সায়েন্টেফিক কনফারেন্সের পিএইচ চেয়ারপার্সন ড. তাসবিরুল ইসলামের উদ্বোধনী বক্তব্য দিয়ে শুরু হওয়া দিনব্যাপী কনফারেন্সে বিভিন্ন বিষয়ে তিনটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: স্তন ক্যান্সার সচেতনতায় গোলাপি সড়ক শোভাযাত্রা ও সেমিনার
জানা গেছে,শুক্রবার, ১১ নভেম্বর গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে সায়েন্টেফিক কনফারেন্সে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। বিশেষ অতিথি জাতীয় নিউরোসায়েন্সে হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট এর পরিচালক ও বাংলাদেশ কলেজ অফ ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস-বিসিপিএস এর সভাপতি ড. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক ড. এ কে এম আমিরুল মোরশেদ, সোসাইটি অফ নিউরোলজিস্ট এর সভাপতি অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ কোরেশি, এম এ জি ওসমানি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ড. মইনুল হক উপস্থিত ছিলেন।
ড. তাসবিরুল ইসলাম বলেন, পিএইচএ সব সময় চায় সমসাময়িক উদ্ভাবন ও অভিজ্ঞতা দেশের চিকিৎসকদের সঙ্গে আদান- প্রদান করতে।
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য গবেষণার সঙ্গে তরুণ ও মেধাবীদের সংযোগও ঘটাতে সংগঠনটির নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন তিনি। বিশেষ করোনা মহামারিতে পিএইচএ দূরে বসেও বাংলাদেশের চিকিৎসকদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার অভিজ্ঞতাও বলেন ড. তাসরির।
তিনি বলেন, স্ট্রোকের ভয়াবহ পরিণাম ও বাড়তে থাকা রোগীর সংখ্যা উদ্বেগ জাগাচ্ছে সব মহলে,একইভাবে স্ট্রোক চিকিৎসাতেও রুপান্তর ঘটানোর সুযোগ আছে। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে কিভাবে সম্পৃক্ত করা যায়।
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন- সচেতনতার কোন বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন: রোগীর প্রেসক্রিপশনে ওষুধের নাম ইংরেজি বড় অক্ষরে লিখতে হবে: বিএসএমএমইউ উপাচার্য
কনফারেন্সে নিউরোলজির প্রায় দেড়শ’ চিকিৎসক দেশের ও বিদেশের ১৬ জন বিশেষজ্ঞের বিভিন্ন সেশনে অংশ নেন। সবকটি সেশন শেষে অতিথি ও প্যানেলিস্টদের মাঝে প্রশ্নোত্তর পর্বও অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম সেশনে ন্যাশনাল হেলথ সিস্টেম,এনএইচএস যুক্তরাজ্যের হেমাটোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ড. আমিন ইসলাম স্ট্রোকে দ্রুত চিকিৎসার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন। চারটি বাস্তব উদাহরণে তিনি দেখান কিভাবে প্রাথমিক অবস্থাতেই সঠিক চিকিৎসা রোগীর জীবন বাঁচিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথম চার ঘন্টা অত্যন্ত নাজুক। যত সময় যেতে থাকে স্ট্রোক রোগীর নিউরন ক্ষতিগ্রস্থ হতে থাকে।
অন্যান্য সেশনে বক্তা হিসেবে ছিলেন, যুক্তরাজ্যের দি রয়্যাল লন্ডন হসপিটাল,বারটস হেলথ এনএইচএস ট্রাস্ট এর কনসালটেন্ট ড. অলিভার স্পুনার, যুক্তরাজ্যের স্ট্রোক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ড. ডেভিড হারগ্রোভ, যুক্তরাজ্যের কেন্টের স্ট্রোককেয়ার বিশেষজ্ঞ ড. সাইদুর রহমানসহ অন্যরা।
প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য একটি রোগ। প্রতিকারওযোগ্য বটে। স্ট্রোকের রোগীকে দ্রুত চিকিৎসা দেয়া গেলে পুরোপুরি সুস্থ করে তোলা সম্ভব।
বিশেষ অতিথি ড. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে স্ট্রোক মৃত্যুর অন্যতম কারণ। তাই এর আধুনিক চিকিৎসা জানা থাকা জরুরি হয়ে পড়েছে।’ ভবিষ্যতের যেন বহু মানুষ স্ট্রোকে পঙ্গুত্ব বরণ করে দেশের জন্য বোঝা না হয় তাই বৈশ্বিক স্ট্রোক চিকিৎসা গাইডলাইন ও প্রটোকল এখানেও প্রয়োগ করার ওপর জোর দেন তিনি।
অধ্যাপক ড.কোরেশী বলেন, ‘গেল কয়েক বছরে স্ট্রোকের চিকিৎসায় অসামান্য অগ্রগতি হয়েছে। উন্নত বিশ্বে রোগীর চিকিৎসা শুরু হয় বাড়িতেই। সেখানে জনসাধারণ স্ট্রোকের লক্ষণগুলো জানেন ও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেন। এতে বহু মানুষ যেমন প্রাণে বেঁচে যান। পঙ্গুত্বের হাত থেকেও রক্ষা পান’।
স্ট্রোক নিয়ে সায়েন্টেফিক কনফারেন্সের সায়েন্টেফিক সহযোগী হিসেবে ছিল ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস ও ইউনাইটেড হাসপাতাল।
আরও পড়ুন: মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের নিয়মিত উদ্বেগ মূল্যায়ন করা উচিত: বিশেষজ্ঞ দল
ডিএনসিসির কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে: মেয়র আতিক
ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, অসময়ে বৃষ্টি ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। তাই ডিএনসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, এটি সকলের জন্য উন্মুক্ত। এখানে করোনা রোগী ও ডেঙ্গু রোগীদের আলাদা জোনে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এই হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেডের ব্যবস্থা আছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসুন।
আরও পড়ুন: ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বন্ধ করে সরকারকে সহযোগিতার আহ্বান মেয়র আতিকের
বৃহস্পতিবার দুপুরে চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা প্রদানের জন্য মহাখালীতে ডিএনসিসির কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল পরিবর্দশনে এসে ডিএনসিসি মেয়র এ কথা বলেন।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, করোনা মহামারির সময়ে মানুষকে চিকিৎসা দিতে আমরা ডিএনসিসির মার্কেটকে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে রুপান্তর করি। মার্কেট থেকে আমরা দুইশ’ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আহরণ করতে পারতাম। টাকার দিকে না তাকিয়ে মানুষের সেবার দিকে গুরুত্ব দিয়ে ২৫৮টি দোকানের বরাদ্দ বাতিল করে দেই। আমরা এক হাজার বেড সম্পন্ন হাসপাতালটি নির্মাণ করি। এখানে ২১২টি আইসিও বেড রয়েছে। করোনা রোগীর সংখ্যা এখন অনেক কম। আমরা এই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেয়া শুরু করেছি।
মেয়র বলেন, ‘জনগণের চিকিৎসা সেবা বাড়াতে ডিএনসিসি এলাকায় ৫৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে। ডিএনসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালকে জেনারেল হাসপাতালে রুপান্তর করা হবে। ৫৪টি ক্লিনিকে জনসাধারণ প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করবে। উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন হলে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ডিএনসসি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন: ডিএনসিসি মেয়র আতিককে কিরগিজিস্তানের সম্মাননা
তিনি আরও বলেন, ‘এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) এর সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। তারা ৫৪টি ক্লিনিক নির্মাণে অর্থায়ন করতে রাজী হয়েছে। প্রকল্প প্রনয়ণ করে দ্রুত এগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।’
মেয়র বলেন, 'ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনগণের সচেতনতা সবেচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আমরা সিটি করপোরেশন থেকে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছি। অভিযান পরিচালনা করছি। দেখা যাচ্ছে কিছু কিছু বাড়িতে বা নির্মাণাধীন ভবনে লার্ভা পাওয়ায় জরিমানা করে আসার কিছুদিন পর অভিযান চালালে আবারও লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে। এখন থেকে আর ছাড় নেই।’
কোন ভবনে দ্বিতীয়বার অভিযানে লার্ভা পেলে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সচেতন করতে এবং অন্যান্য সমস্যা জানতে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভা শুরু করেছেন বলেও জানান ডিএনসিসি মেয়র।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘ডেঙ্গু পুরপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে সচেতনতা কার্যক্রম ও অভিযান চলমান থাকবে।'
আরও পড়ুন: তৃতীয়বারের মতো করোনায় আক্রান্ত মেয়র আতিক
মন্ত্রণালয় ডেঙ্গুর চিকিৎসা দিতে পারবে কিন্তু মশা মারতে পারবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা দিতে পারবে ঠিকই, কিন্তু এডিশ মশা মারতে পারবে না।
রাজধানীর শিশু হাসপাতালে ‘আবুল হোসেন রেসপাইরেটরি ও নিউমোনিয়া রিসার্চ সেন্টার’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন তিনি।
জাহিদ মালেক বলেন, ডেঙ্গু রোগী বেড়ে গেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তার চিকিৎসা দিতে যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। ঢাকা নর্থ সিটি কর্পোরেশন হাসপাতাল, বিএসএমএমইউ’র নতুন হাসপাতাল ইউনিট এবং লালকুঠি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের স্বাস্থ্যখাতে এখন সুবাতাস বইছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যখাতের পক্ষ থেকে এডিশ মশা নিধনে নিজেদের বাসা বাড়িতে পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধি করতে ও মশার কামড় থেকে বাঁচাতে পরামর্শমূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। কিন্তু মশা মারার কাজ তো স্বাস্থ্যখাতের নয়। মশা মারার গুরুত্ব তুলে ধরে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার প্রতিনিধিদেরকে তাগিদ দেয়া হয়েছে। এখন মশা কমলে ডেঙ্গু রোগীও কমে যাবে; হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপও কমে যাবে।’
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের সভাপতি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ)-এর সভাপতি ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ কে এম আমিরুল মোর্শেদ, অর্থদাতা আবুল হোসেন, অর্থদাতা অধ্যাপক রুহুল আমীন, ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. জাহাঙ্গীরসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
উল্লেখ্য, রিসার্স সেন্টারটি করতে অর্থদাতা আবুল হোসেন এক কোটি টাকা এবং বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. রুহুল আমীন ২০ লাখ টাকা সরকারের কোষাগারে অর্থ অনুদান প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ফি নির্ধারণ করবে সরকার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করলে লাইসেন্স বাতিল: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
‘ আলাদা হওয়া অণুকে একত্রিত’ করার উপায় উদ্ভাবনের জন্য নোবেল পেলেন তিন বিজ্ঞানী
এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার তিন বিজ্ঞানীকে সমান অংশে দেয়া হয়েছে। নোবেল প্রাপ্তরা হলেন- ক্যারোলিন আর. বার্টোজি, মর্টেন মেলডাল এবং কে. ব্যারি শার্পলেস।
ওষুধ প্রস্তুতে ব্যবহার করা যেতে পারে এমন ' আলাদা হওয়া অনুগুলোকে একত্রিত করার' উপায় প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য তাদেরকে পুরস্কার দেয়ার জন্য মনোনীত করা হয়েছে।
বুধবার রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সের সেক্রেটারি জেনারেল হ্যান্স এলেগ্রেন সুইডেনের স্টকহোমের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটে বিজয়ীদের ঘোষণা করেন।
তাদের কাজটি ‘ক্লিক কেমিস্ট্রি’ এবং ‘বায়োর্থোগোনাল প্রতিক্রিয়া’ হিসেবে পরিচিত। ক্যান্সারের ওষুধ তৈরি ও ডিএনএ মানচিত্র তৈরি করতে এবং নির্দিষ্ট সামগ্রী তৈরির উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহৃত হয়।
নোবেল বিজয়ী বার্তোজি ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের, মেলডাল ডেনমার্কের কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং শার্পলেস ক্যালিফোর্নিয়ার স্ক্রিপস রিসার্চের সঙ্গে যুক্ত।
আরও পড়ুন: পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেলেন ৩ বিজ্ঞানী
শার্পলেস এর আগে ২০২১ সালে নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন। তিনিই পঞ্চম ব্যক্তি যিনি দু’বার পুরস্কার পেলেন।
গত বছর পুরস্কারটি দেয়া হয়েছিল বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন লিস্ট এবং ডেভিড ডব্লিউসিকে। নোবেল কমিটি বলেছে, ম্যাকমিলানের অণু তৈরির উদ্ভাবন এবং পরিবেশগতভাবে পরিচ্ছন্ন উপায় খুঁজে বের করার জন্য ‘ইতোমধ্যেই মানবজাতির প্রচুর উপকার হচ্ছে।’
মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার মূল চালিকাশক্তি নিয়ান্ডারথাল ডিএনএর গোপন রহস্য উন্মোচনের জন্য এ সপ্তাহে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন সুইডিশ বিজ্ঞানী সভান্তে পাবো।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯: ২০২০ সালের নোবেল পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান বাতিল
এছাড়া মঙ্গলবার পদার্থবিজ্ঞানে যৌথভাবে পুরস্কার জিতেছেন তিন বিজ্ঞানী। ফরাসী অ্যালেইন অ্যাসপেক্ট, আমেরিকান জন এফ. ক্লাজার এবং অস্ট্রিয়ান অ্যান্টন জেইলিংগার। তারা দেখিয়েছেন যে ক্ষুদ্র কণাগুলো আলাদা হয়ে গেলেও একে অপরের সঙ্গে একটি
সংযোগ বজায় রাখতে পারে।এটি একটি ঘটনা যা ‘অনুমিত পরিমাণ জড়িয়ে ফেলা’ নামে পরিচিত। যা বিশেষ কম্পিউটিং এবং তথ্য নিরাপদ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার সাহিত্যের মাধ্যমে নোবেল পুরস্কার প্রদান শুরু হয়েছে। আগামী শুক্রবার ২০২২ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করা হবে এবং সোমবার অর্থনীতির পুরস্কার ঘোষণা করা হবে।
পুরস্কারগুলোর একটিতে নগদ পুরস্কার রয়েছে ১০ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার (প্রায় ৯ লাখ মার্কিন ডলার)। যা আগামী ১০ ডিসেম্বরে বিজয়ীদের কাছে হস্তান্তর করা হবে৷ ১৮৯৫ সালে পুরস্কারের নির্মাতা সুইডিশ উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেলের রেখে যাওয়া একটি উইল থেকে পুরস্কারের অর্থ আসে৷
আরও পড়ুন: আজ থেকে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা শুরু
চিকিৎসা না পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খোলা মাঠেই সন্তান প্রসব!
চিকিৎসা না পেয়ে রংপুরের কাউনিয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খোলা মাঠে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক নারী। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে এ ঘটনা ঘটে।
পরে মা ও নবজাতক শিশুকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: রংপুরে বাস-অ্যাম্বুলেন্স সংঘর্ষে নবজাতকসহ নিহত ৩
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাহেদ সাব্বির আহমেদ জানান, পীরগাছার অন্নদানগর চালনিরপাড় গ্রামের রিতু আক্তারের (২০) প্রসব ব্যথা উঠলে বাড়িতে সন্তান জন্মের জন্য চেষ্টা করেন পরিবারের লোকজন।
কিন্ত বাড়িতে না হওয়ায় শুক্রবার বেলা ১২ টার দিকে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন তারা।
চিকিৎসক ও নার্সরা ওই নারীকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। ওই নারীর গর্ভে সন্তানের অবস্থান উল্টো থাকার বিষয়টি স্বজনদের জানান তারা।
পরে রোগীর স্বজনরা তাকে রংপুরে মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু রোগীর স্বজনরা হাসপাতালের মাঠে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করার এক পর্যায়ে বেলা দেড়টার দিকে ওই নারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খোলা মাঠেই ছেলে সন্তান জন্ম দেন।
পরে নার্সরা ওয়ার্ড থেকে নেমে এসে মা ও সদ্য জন্ম হওয়া শিশুকে ওয়ার্ডে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
তবে রোগীর স্বজনরা জানান, হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্স তাদের বলেন যে এই রোগীর ডেলিভারি এখানে হবে না। রংপুরে নিয়ে যেতে হবে। বাধ্য হয়ে রোগীকে রংপুর নিয়ে যেতে অ্যাম্বুলেন্স খুঁজতে থাকেন। কিন্তু হাসপাতালের খোলা মাঠে সন্তান প্রসব হয়।
হাসপাতালে আসা অনেকেই চিকিৎসক ও নার্সের অবহেলাকে দায়ী করে বলেন, চিকিৎসক ও নার্সরা চেষ্টা করলে খোলা মাঠে সন্তান জন্মের ঘটনা ঘটতো না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কর্মকর্তা ডা. মীর হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি শোনার পরপরই ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। মা ও শিশু হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন এবং তারা দুইজনেই সুস্থ্য আছেন।
এ ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলা নয়, অদক্ষতাকে দায়ী করে নার্সদের কোনো গাফিলতি থাকলে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান ডা. মীর হোসেন।
আরও পড়ুন: রংপুরে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ: ২ হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা
রংপুরে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৯, আহত ৫০
খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানো হবে: আইনমন্ত্রী
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। রবিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ইউএনবিকে বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর এখন এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’
খালেদা জিয়া বাসায় থেকে চিকিৎসা নিবেন এবং এই সময়ের মধ্যে তাকে বিদেশে যেতে দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
সম্প্রতি খালেদার নিঃশর্ত মুক্তি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে তার পরিবার। খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও অনুমতি চেয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর দাবি পরিবারের
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সময় ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে গুলশানে তার বাসভবনে থাকবেন এবং দেশত্যাগ করতে পারবেন না এই শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়াকে ছয়মাসের জন্য মুক্তি দিয়েছিল।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের’ দুর্নীতির মামলায় ঢাকার একটি বিশেষ আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠান। এরপর তিনি আরও একটি মামলায় দণ্ডিত হন।
কারাগার থেকে মুক্তির পর ৭৭ বছর বয়সী বিএনপি প্রধান তার গুলশানের বাসভবন থাকছেন। এরপর বেশ কয়েকবার তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের একটি বিশেষ দল তার চিকিৎসার দেখভাল করছেন।
আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে ফিরোজায় খালেদা জিয়া
সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া
বিদেশে চিকিৎসার বিকল্প হবে ‘সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল’: প্রধানমন্ত্রী
বিদেশে চিকিৎসার বিকল্প হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নবনির্মিত সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে বুধবার ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে হাসপাতালটির উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সাধারণ মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে চিকিৎসকদের আরও বড় পরিসরে আত্মনিয়োগ করতে বলেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের সাধারণ ও দরিদ্র জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে আরও ব্যাপকভাবে আত্মনিয়োগ করার জন্য আমি চিকিৎসকদের অনুরোধ করতে চাই। আপনাকে গ্রামে যেতে হবে এবং গ্রামীণ মানুষের যত্ন নিতে হবে। তাদের সাথে আপনাদের ভালো ব্যবহার করতে হবে।’
মনপুরায় হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে শিশু মৃত্যুর অভিযোগ
ভোলার দ্বীপ উপজেলা মনপুরায় চিকিৎসা না পেয়ে এক শিশুর মৃত্যু হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে মনপুরা ৫০ শয্যা হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুটির নাম মো. আবদুল্লাহ।
শিশুটির চাচা মাওলানা রিয়াজ গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘শুক্রবার রাত ৮ টায় ভাতিজা আবদুল্লাহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে ডা. আশিকুর রহমানকে দেখান। তিনি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে যাবতীয় ওষুধের প্রেসক্রিপশন করে হাসপাতালে ভর্তি করে দেন এবং ক্যানোলা পুশ করে দ্রুত ওষুধ প্রয়োগ করতে বলেন। প্রথমে শিশুটিকে নিয়ে ইমারজেন্সি রুমে দায়িত্বরত কেউ না থাকায় সেখানে আধা ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। পরে শিশুটিকে হাসপাতালের দোতলার দায়িত্বরত নার্সদের রুমে নিয়ে গেলে এই ঘটনা ঘটে। দেড় ঘন্টা ধরেও দায়িত্বরত নার্সরা ওই শিশুর হাতে ক্যানোলা পড়াতে পারেননি। পরে ভাতিজার মৃত্যু হয়।’
আরও পড়ুন:চিকিৎসকের অবহেলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগএ ব্যাপারে মনপুরা উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তৈয়বুর রহমান অনুপস্থিত থাকায় ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আশিকুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, জ্বর ও ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় শিশুটির শরীরে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় ক্যানোলা পড়াতে পারেনি নার্সরা। এতে ওষুধ প্রয়োগ করতে না পারায় শিশুটির মৃত্যু হয়।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তৈয়বুর রহমান মোবাইলে জানান, ওই শিশুটির অবস্থা গুরুতর ছিলো। হাসপাতালের নার্স একাধিকবার চেষ্টা করেন তাকে ক্যানোলা পুশ করার জন্য। কিন্তু ভেইন শুকিয়ে যাওয়ায় তাকে ক্যানুলা পড়াতে পারেনি।
মনপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদ আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, শিশু মৃত্যু নিয়ে শুক্রবার রাতে হাসপাতালে গণ্ডগোল শুরু হলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি আরও বলেন, মৃত শিশুটি তার পরিবারের সদস্যরা নিয়ে গেছেন। তবে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি।
আরও পড়ুন:মোটরসাইকেলে পিকআপের ধাক্কা, মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে শিশুর মৃত্যু
ফুলবাড়ীতে তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণ, প্রতিবেশী আটক