ইলিশ
বেনাপোল বন্দর দিয়ে দুই দিনে ভারতে গেল ১১৮ টন ইলিশ
বেনাপোল বন্দর দিয়ে সরকারের বিশেষ অনুমতির ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশের মধ্যে গত দুই দিনে ১১৭ মেট্রিক টন ৯০০ কেজি ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে।
পূজার আগে পদ্মার ইলিশ পেয়ে ভারতীয়রা খুশি হলেও রপ্তানিতে দেশে ইলিশের সংকট দেখিয়ে দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। বর্তমানে দেশীয় বাজারে কেজিতে ইলিশের দাম বেড়েছে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।
বাণিজ্য সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০ অক্টোবর শুরু হচ্ছে পূজা উৎসব। আর এ পূজা উৎসবে পশ্চিম বাংলার মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রিয় এপারের পদ্মার ইলিশ। সারা বছর ধরে তারা অপেক্ষায় থাকে পূজার সময় বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আসবে, আর তারা অতিথিদের আপ্যায়নে ইলিশ তুলে দিবেন প্লেটে।
তবে ইলিশ আহরণ কমে যাওয়ায় সরকার ২০১২ সাল থেকে দেশের বাইরে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করে। এতে ছয় বছর ধরে ইলিশ ছাড়ায় পূজা পার করে পশ্চিম বাংলার মানুষ। অবশেষে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য আর দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্বের ধারাবাহিকতায় সরকার ২০১৯ সাল থেকে পূজার উপলক্ষে আবারও নির্দিষ্ট হারে ইলিশ রপ্তানি করে আসছে।
এবছর পূজায় ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতিতে গত ২ দিনে ১১৭ মোট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুর্গা পূজার আগে ভারতে ৩৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন
ইলিশের ডিম ছাড়তে সুযোগ করে দিতে হবে: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, ইলিশ মাছের দাম বেশি হলে বুঝতে হবে তার চাহিদা প্রচুর পরিমাণ। আর এ চাহিদা পূরণ করতে হলে মা ইলিশকে ডিম ছাড়তে সুযোগ করে দিতে হবে এবং মাছকে বড় হওয়ার সময় দিতে হবে। তাহলে আমরা মাছ খেতে পারব।
আরও পড়ুন: মূল্যস্ফীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে চাঁদপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠন আয়োজিত ১৫তম জাতীয় ইলিশ উৎসবের সমাপনী দিনে গোল টেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, কৃষি মৌলিক পণ্যসহ ইলিশের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেশন সম্ভব নয়। এর সিন্ডিকেট হলে ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেড়ে যাবে। আমরা কিছু হলেই সিন্ডিকেট বলি। ৩০ থেকে ৩৫ হাজার বাজারে সিন্ডিকেট কীভাবে সম্ভব হবে!
ড. শামসুল আলম বলেন, কৃষকদের সহায়তা করা আওয়ামী লীগের অন্যতম নীতি। ইলিশের দাম ওভাবে বাড়েনি। আসলে সরবরাহ চাহিদার সঙ্গে মিলছে না। আর এজন্যে উৎপাদন বাড়াতে হবে। আসুন ইলিশ মাছকে সংরক্ষণ করে দেশকে আরও উন্নত করি।
আরও পড়ুন: উচ্চশিক্ষার মান এখনো কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন শামসুল আলম, রবিবার শপথ
৪৫.৮০০ টন ইলিশের প্রথম চালান ভারতে পৌঁছেছে
বৃহস্পতিবার যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৪৫ দশমিক ৮০০ টন ইলিশের প্রথম চালান ভারতে প্রবেশ করেছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসে সব আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ইলিশ বহনকারী মোট ১২টি ট্রাক ভারতের পেট্রোপল ল্যান্ডপোর্টে পৌঁছেছে।
রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- মহিমা এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ, সেভেন স্টার ফিশ প্রসেসিং রিপা এন্টারপ্রাইজ এবং প্যাসিফিক সিফুড।
আরও পড়ুন: ৫০৭ টাকা কেজি দরে ভারতে ইলিশ রপ্তানি শুরু
ভারতীয় আমদানিকারক হলো- এসআর ইন্টারন্যাশনাল নাজ ইমপ্লেক্স প্রাইভেট লিমিটেড, বিমল রায় ও বরখা বিকাশ ফিশ এজেন্সি।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এমি এন্টারপ্রাইজ ও গনি অ্যান্ড সন্স চালানটি মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় নথি জমা দিয়েছে। প্রতি কেজি ইলিশের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ ডলার।
বেনাপোল মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, রপ্তানিকারকদের ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ইলিশ রপ্তানি করতে হবে।
এর আগে বুধবার হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ৩ হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৭৯ রপ্তানিকারককে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়। তারা ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ৫০ টন ইলিশ রপ্তানি করতে পারে।
আরও পড়ুন: ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট
গত বছর সরকার ২ হাজার ৯০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিলেও রপ্তানি হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৩০০ টন।
২০১২ সাল থেকে দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করে আসছে বাংলাদেশ।
ভারতে রপ্তানির উদ্দেশে বরিশাল ছেড়েছে ১৯ টন ইলিশের প্রথম চালান
সরকার মাছ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার পর বুধবার সন্ধ্যায় ১৯ টন ইলিশের প্রথম চালান ভারতের উদ্দেশ্যে বরিশাল ছেড়ে গেছে।
আগের দিন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ৩ হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৭৯ রপ্তানিকারককে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়। আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রত্যেকে ৫০ টন ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে।
বরিশাল থেকে পাঁচ রপ্তানিকারক-মাহিমা এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ, মাসফি এন্টারপ্রাইজ, এআর এন্টারপ্রাইজ এবং সি গোল্ডকে ৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে ইলিশ রপ্তানি: চলতি বছর এক কোটি ৩৬ লাখ ডলার আয় বাংলাদেশের
বরিশাল মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক, মহিমা এন্টারপ্রাইজের মালিক নিরব হোসেন টুটুল জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপের অংশ হিসাবে মহিমা এবং তানিশা এন্টারপ্রাইজ বুধবার বরিশাল শহরের তাদের গুদাম থেকে যৌথভাবে ভারতে ১৯টন ইলিশ রপ্তানি করেছে।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ইলিশের প্রথম চালান যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পৌঁছাবে।
সরকারিভাবে ইলিশ রপ্তানির উদ্যোগের প্রশংসা করে মাছ ব্যবসায়ী জহির সিকদার বলেন, রপ্তানির অনুমতি পেলে জাতীয় মাছের চোরাচালান কমবে এবং স্থানীয় বাজারে মাছের প্রাপ্যতাও বাড়বে।
তিনি বলেন, মনিটরিংয়ের অভাবে নিয়মিত যশোর, সাতক্ষীরা ও আগরতলা দিয়ে প্রচুর মাছ ভারতে পাচার হয়।
আরও পড়ুন: দুর্গা পূজার আগে ভারতে ৩ ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন
দুর্গা পূজার আগে ভারতে ৩৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন
দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ৩ হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৭৯ রপ্তানিকারককে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
এতে বলা হয়, আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অনুমোদিত একজন রপ্তানিকারক ৫০ টন ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে।
তবে ইলিশ রপ্তানিতে ৮টি শর্ত দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, রপ্তানির অনুমতিপ্রাপ্ত পণ্যগুলোর একটি ম্যানুয়াল পরিদর্শন করবে শুল্ক কর্তৃপক্ষ, প্রতিটি চালান শেষ হওয়ার পরে সমস্ত রপ্তানি নথি অবশ্যই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে, কেউ অনুমোদিত পরিমাণের বেশি রপ্তানি করতে পারবে না, অনুমতি কোনোভাবেই হস্তান্তরযোগ্য নয় এবং সাবকন্ট্রাক্টিংয়ের মাধ্যমে ইলিশ রপ্তানি করা যাবে না।
আরও পড়ুন: বাণিজ্যিকভাবে ইলিশ রপ্তানির পরিকল্পনা নেই: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
এর আগে দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে ৫ হাজার টন ইলিশের চাহিদার কথা জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরা।
চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর কলকাতার মাছ আমদানিকারকদের সমিতি কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে এই আবেদন জমা দেয়। গত ৪ সেপ্টেম্বর আবেদনটি পায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: ৫০৭ টাকা কেজি দরে ভারতে ইলিশ রপ্তানি শুরু
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত বছর পূজা উৎসব উপলক্ষে ২ হাজার ৯০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে রপ্তানি করা হয়েছিল ১ হাজার ৩০০ টন ইলিশ।
আগের বছরগুলোতেও একই ঘটনা ঘটেছে। অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কম ইলিশ রপ্তানি হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে ইলিশ রপ্তানি: চলতি বছর এক কোটি ৩৬ লাখ ডলার আয় বাংলাদেশের
ইলিশ বিচরণের পরিবেশ আগের মতো নেই: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ বিচরণের পরিবেশ আগের মতো না থাকায় কিছুটা কম পাওয়া যাচ্ছে।
এ ছাড়াও, নদীর নাব্যতা কমে যাওয়া, চর জেগে ওঠা এবং পানিতে দূষণ বেড়ে যাওয়ার মতো কারণও রয়েছে।
আরও পড়ুন: নতুন শিক্ষাবর্ষের বই ছাপাতে কোনো ধরনের সমস্যা নেই: শিক্ষামন্ত্রী
শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে চতুরঙ্গের আয়োজনে ১৫তম ইলিশ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইলিশ মাছ মিঠা পানিতে ডিম ছাড়তে আসে। আবার সাগরে চলে যায়। জাতীয় এই সম্পদ রক্ষায় আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মৎস্য গবেষকরা নানাভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে জাটকা রক্ষার সময় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস এবং মা ইলিশের প্রজননের সময় ২২ দিন প্রশাসন, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, মৎস্য বিভাগ খুবই গুরুত্ব দিয়ে তা বাস্তবায়ন করে। এই সম্পদ রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব।
দীপু মনি আরও বলেন, অনেক বছর ধরে চাঁদপুরে এই ইলিশ উৎসব হয়ে আসছে। এটি শুধুমাত্র ইলিশ উৎসবই নয়। বরং এখানে সাংস্কৃতিক চর্চাও হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইলিশ রক্ষায় নানাভাবে নানা সংগঠন এগিয়ে আসছে। সপ্তাহব্যাপী এই ইলিশ উৎসব যাতে সফল হয়, আমি সেই কামনা করছি।
আরও পড়ুন: শিক্ষা ব্যবস্থাকে সমৃদ্ধ ও রূপান্তরের আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর
২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে, এইচএসসি এপ্রিলে: শিক্ষামন্ত্রী
খুলনায় পুকুরে ধরা পড়ল ২০ ইলিশ
খুলনার ডুমুরিয়ায় পুকুরে জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ২০টি ইলিশ মাছ। প্রতিটি ইলিশের গড় ওজন ৫০০ গ্রাম।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই ইলিশ দেখার জন্য মানুষ ভিড় জমায়। উপজেলার সাহস ইউনিয়নের লতাবুনিয়া গ্রামের স্থানীয় অনিমেষ মণ্ডলের পুকুর পাড়ে।
স্থানীয়রা জানান, লতাবুনিয়া গ্রামের অনিমেষ মণ্ডল বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিকালে মাছ ধরতে পুকুরে নামেন। এরপর জালে একে একে ২০টি তাজা ইলিশ মাছ ধরা পড়ে।
আরও পড়ুন: ভোলায় ২ দিন নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ জেলেরা
খুলনা জেলা মৎস্য অফিসার জয়দেব পাল জানান, বাণিজ্যিকভাবে পুকুরে ইলিশ চাষ করা নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। দ্রুত এ বিষয়ে সুখবর পাওয়ার আশা করতে পারি।
অনিমেষ মণ্ডল বলেন, পুকুরে ইলিশ পাওয়ায় আমরা আনন্দিত। তবে বিষয়টি অবাক করার মতো। এর আগে আমরা কখনো পুকুরে ইলিশ মাছ দেখিনি। পুকুরে কীভাবে ইলিশ এল তা আমাদের জানা নেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা কেউ ইলিশ মাছ পুকুরে চাষ করিনি।
স্থানীয় প্রবীণ জেলে সুকুমার বলেন, নদীর সঙ্গে ওই পুকুরের কোনো সংযোগ নেই। তারপরও ইলিশ পাওয়া গেল। হয়ত বৃষ্টির সঙ্গে নদীর পানিতে থাকা ইলিশের রেণু কোনো না কোনোভাবে পুকুরে প্রবেশ করেছে।
ডুমুরিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, পুকুরে ইলিশ হয়– বিষয়টি এমন নয়। জোয়ারের পানি পুকুরে প্রবেশ করলে তখন নোনা পানির সঙ্গে ইলিশও প্রবেশ করতে পারে। তবে এখন দেশে পুকুরে ইলিশ চাষ নিয়ে গবেষণা চলছে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে সরবরাহ বাড়লেও ইলিশ এখনও সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে
চাঁদপুরে মাছ ঘাটে ইলিশের আমদানি বেড়েছে, দাম কিছুটা নিম্নমুখী
চাঁদপুরে সরবরাহ বাড়লেও ইলিশ এখনও সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে
গত কয়েকদিন (৫/৬) চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছ ঘাটে ইলিশের সরবরাহ অনেক বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার মণ ইলিশ দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাগুলো থেকে এ ঘাটে মাছটি আসছে।
ট্রলার, ট্রাক ও পিকআপে এসব মাছ এখানে আসতে থাকে সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত।
সরবরাহ বেশি হওয়ায় মাছ ঘাট আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে। ঘাটের প্রায় ৪ থেকে ৫ শত দিনমজুর ব্যস্ত সময় পার করছে। এমনটাই জানিয়েছেন নুর ইসলাম, হান্নান, আনিসসহ আরও কয়েকজন। পাশাপাশি বরফ কলগুলোও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ মাছই ৭০০, ৮০০ ও ৯০০ গ্রাম ওজনের।
এখান থেকে মাছগুলো প্যাকেট হয়ে আবার বিভিন্ন স্থানে- ঢাকার কাওরানবাজার, আজমপুর, আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা; গাজীপুরের টঙ্গী; টাঙ্গাইল; কিশোরগঞ্জ; জামালপুর; ময়মনসিংহ; শ্রীমঙ্গল; সিলেটের বাজারগুলোতে সরবরাহ করা হয়ে থাকে ট্রাকে। এখন আর রেলে এসব মাছ পাঠানো হয় না।
প্রতি কেজি ইলিশ ১৫০০ পাইকারি দামে বিক্রি হচ্ছে। এ মাছ আবার শহরের বাজারে খুচরা ১ হাজারর ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। ওদিকে পদ্মার ইলিশ এখনো কম ধরা পড়ছে। ভরা মৌসুমেও প্রতিদিন প্রায় ৪০ মণও পাওয়া যায় না বলে উল্লেখ করেন জেলে ও বিক্রেতারা।
আরও পড়ুন: ইলিশ ধরার ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে রবিবার মধ্যরাতে
ইলিশের চাহিদা পূরণে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
ইলিশ মাছের চাহিদা পূরণে এরই মধ্যে সরকার নানা প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকালে বরিশালের সার্কিট হাউজে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, ইলিশের চাহিদা পূরণ করতে সরকারিভাবে নানা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলেদের আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ নদীর প্রবাহমানতা বাড়াতে এবং গতিশীল করতে ইতোমধ্যে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া মাংসে বাংলাদেশ এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ বলেও জানান প্রাণিসম্পদমন্ত্রী। তিনি বলেন, উৎপাদন বাড়ার কারণে এখন মাংস বিদেশে রপ্তানিও করছে বাংলাদেশ। ফলে এই খাত থেকে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে বাংলাদেশ।
মন্ত্রী আরও বলেন, এই খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আরও পরিকল্পনা রয়েছে। খুব দ্রুত সময়ে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে কাজ করা হবে।
আরও পড়ুন: সমুদ্র সম্পদ নিয়ে গবেষণা ও বিনিয়োগের আহ্বান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর
জীবাণু সংক্রমণে সাফারি পার্কে প্রাণীর মৃত্যু ঘটছে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতায় যেতে চাওয়া রাষ্ট্রদ্রোহিতা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
ভোলায় ২ দিন নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ জেলেরা
ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী অভয়াশ্রমে র্দীঘ দুই মাস ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নদীতে নেমেছেন জেলেরা।
কিন্তু নিষেধাজ্ঞা শেষে হওয়ার পর গত ২ দিন নদীতে জেলেরা কাঙিক্ষত মাছ পাচ্ছে না। ফলে প্রায় খালি হাতেই ফিরছেন তারা।
তবে জেলেদের আশা আগামী পূর্ণিমার পর হয়তো তাদের জালে ধরা পড়বে প্রত্যাশিত পরিমাণের ইলিশ।
আরও পড়ুন: রামগতিতে ৪ হাজার কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, আটক ৯
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশের অভয়াশ্রম হওয়ায় দুই মাসের জন্য ভোলার ইলিশা থেকে চর পিয়াল ৯০ কিলোমিটার মেঘনা নদী ও ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তম ১০০ কিলোমিটার তেতুঁলিয়া নদীতে ইলিশসহ সব ধরণের মাছ আহরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য বিভাগ।
নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ৩০ এপ্রিল রবিবার মধ্যরাত থেকে উৎসব মুখর পরিবেশে নদীতে নেমেছেন ভোলার সাত উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ জেলে। তাদের আশা ছিল দুই মাসের অভিযান শেষে নদীতে প্রচুর মাছ পাবেন।
আর তাতে গত দুই মাসের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন। ফিরে পাবেন স্বচ্ছলতা। কিন্তু জালে আশানুরূপ মাছ ধরা পড়ছেনা।
ভোলার তুলাতুলি মাছ ঘাটের জেলেরা জানান, নদীতে সারাদিন জাল ফেলে দুই-চারটি যা মাছ ধরা পড়েছে তা আকারে ছোট। কোনো কোনো জেলে সামান্য মাছ পেলেও তা বিক্রি করে তেল খরচও উঠছেনা।
এতে তারা হতাশায় পড়েছেন। তবে মাছ কম পড়ায় দাম বেশ চড়া।
অন্যদিকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, নিষেধাজ্ঞার সময় তাদের ব্যবসা বন্ধ থাকায় লোকসান গুণতে হয়েছে। এবার নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা নদীতে গিয়ে প্রচুর পরিমাণ মাছ শিকার করলে জমজমাট হবে তাদের ব্যবসা।
এ ছাড়াও বিগত দুই মাসের লোকসান পুষিয়ে নিবেন তারা। কিন্তু মাছ কম পাওয়ায় তারা হতাশ।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরের জেলেরা ইলিশ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছে
ইলিশা মাছ ঘাটের মৎস্য ব্যাপারী শাহাবুদ্দিন জানান, মঙ্গলবার মাছের পরিমাণ আরও কমে গেছে। এতে তারা বিপাকে রয়েছে। সামান্য মাছ পাওয়া গেলেও তার দাম অনেক বেশি।
এদিকে এক কেজি ওজনের এক হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা ও মাঝারি সাইজের সাত থেকে আট হাজার টাকা দরে।
মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, গত দুই মাসে ভোলার সাত উপজেলায় ৪০৩টি অভিযান পরিচালনা করে ৩৬২জন জেলেকে আটক করা হয়েছে। ৪৬টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২০৩ জন জেলেকে ছয় লাখ ৮৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আটককৃত বাকিরা অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক হওয়ায় তাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
ভোলা সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জামাল হোসাইন জানান, তাদের দুই মাসের অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ফলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া ইলিশ মাছ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে।
তিনি আশা করছেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে গিয়ে জেলেরা প্রচুর মাছ শিকার করে দুই মাসের লোকসান পুষিয়ে আবার ঘুড়ে দাঁড়াবেন।
আরও পড়ুন: ইলিশ ধরার ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে রবিবার মধ্যরাতে