ফেনী
ফেনীতে স্টার লাইন ফুড কারখানায় আগুন
ফেনীর স্টার লাইন ফুড কারখানায় শুক্রবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
ফেনী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচাল পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দী বলেন, দুপুর পৌনে ২টার দিকে ফেনীর কাশিমপুর এলাকায় স্টার লাইন ফুড কারখানায় আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে ঝুটের গোডাউনের আগুন নিয়ন্ত্রণে
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ফেনীতে শিশু হত্যা মামলায় চাচীর যাবজ্জীবন
ফেনীর পশুরামে বক্স মাহমুদ ইউনিয়নে ভাতিজা হত্যা মামলায় চাচী আর্জিনা আক্তারকে (৩৩) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার ফেনী জেলা ও দায়রা জজ ড.বেগম জেবুননেছার আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন হাফেজ আহাম্মদ ও আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুস ছাত্তার।
আরও পড়ুন: চাচা হত্যার দায়ে ৩ ভাতিজার মৃত্যুদণ্ড, ১ জনের যাবজ্জীবন
আদালতের বেঞ্চ সহকারি মো. কামাল উদ্দিন জানান, ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের দক্ষিণ মোহাম্মদপুর গ্রামের জমি থেকে শিশু তরিকুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় শিশুর বাবা মাওলানা আবু বকর বাদী হয়ে পরশুরাম মডেল থানায় অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে ২৩ নভেম্বর পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে চাচি আরজিনা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। একপর্যায় ২৪ নভেম্বর ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তানিয়া ইসলামের আদালতে আসামি আরজিনা আক্তার হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে প্রেমিকের যাবজ্জীবন
২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রিয়াউল জব্বার আরজিনাকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিলে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর চার্জ গঠন হয় এবং ২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি এ মামলার প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণ হয়। এ মামলার ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তা, ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসক ও বাদীসহ ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।
ফেনীতে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
ফেনীতে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি তাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে ফেনীর অতিরিক্ত দায়রা জজ সৈয়দ মো. কায়সার মোশারফ ইউছসুফ এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আবদুল কাদের জাকারিয়া (৪০) ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
নিহত আয়েশা আক্তার মুক্তা ছাগলনাইয়া উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলামের মেয়ে ও আসামি আবদুল কাদের জাকারিয়ার স্ত্রী।
আরও পড়ুন: খুলনায় গৃহবধূ হত্যার দায়ে সাবেক স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্র জানায়, ২০১১ সালের নভেম্বরে ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের আবদুল কাদেরের সঙ্গে ছাগলনাইয়া উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলামের কন্যা আয়েশা আক্তার মুক্তার বিয়ে হয়। বিয়ের দেড় মাস পরে ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি রাতে আসামি আবদুল কাদের স্ত্রী মুক্তাকে মারধর ও গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর প্রচার করে মুক্তা আকস্মিকভাবে অসুস্থ ও সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে জোড়া খুন: ৮ জন খালাস, তিনজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল
এ ঘটনায় মুক্তার মা বাদী হয়ে ফুলগাজী থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেন।
পরে পুলিশ নিহতের স্বামী জাকারিয়াকে গ্রেপ্তার করে। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফুলগাজী থানার পুলিশ পরিদর্শক আবুল মনজুর ২০১২ সালের ২ জুন আবদুল কাদের জাকারিয়াকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। একই বছর ৯ অক্টোবর বিচারকাজ শুরু হয়। আদালত দীর্ঘ শুনানির পর ফেনীর অতিরিক্ত দায়রা জজ সৈয়দ মো. কায়সার মোশারফ ইউছসুফ এই রায় দেন।
পা দিয়ে ছবি আঁকা শিশুর লেখাপড়ার দায়িত্ব নিল সালেহ উদ্দিন-হোসনে আরা ফাউন্ডেশন
জন্মগতভাবে দু’হাত নেই, তবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আটকাতে পারেনি শিশু মোনায়েমকে। প্রবল ইচ্ছাশক্তি দিয়ে ক্লাসের মেধা তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে, পাশাপাশি ছবি এঁকেও জিতেছে একের পর এক পুরস্কার।
শনিবার ‘ফেনী পুলিশ যেমন চাই’ রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী আবদুল্লাহ আল মোনায়েমের পা দিয়ে আঁকা ছবি দেখে তার আজীবন লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন সালেহ উদ্দিন-হোসনে আরা চৌধুরী ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাতা আলাউদ্দিন আহাম্মেদ চৌধুরী নাসিম। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল অফিসার, রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক।
পরে পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন আবদুল্লাহ আল মোনায়েমের আঁকা ছবি অতিথির হাতে তুলে দেন।
আরও পড়ুন: বৌভাতে ৫ লিটার সয়াবিন তেল উপহার!
জানা যায়, দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের এনায়েতনগর গ্রামের কামাল উদ্দিনের ছেলে আবদুল্লাহ আল মোনায়েম ও দাগনভূঞা একাডেমির চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। জন্মের সময় থেকেই তার দুই হাত নেই। কিন্তু মা বিবি কুলসুম ও তার পরিবার দমে যাননি। ছয় বছর বয়সে মোনায়েমকে স্কুলে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকেই দারুণ ফলাফল করতে থাকে।
পড়ালেখার পাশাপাশি সে নিয়মিত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতাতেও অংশ নেয়। তবে, চিত্রাঙ্কনে আগ্রহ দেখে মা তাকে উজ্জীবক আর্ট স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। জেলা ও উপজেলায় সেরা হয়ে এখন জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত হয়েছে প্রতিভাবান এ শিশুটি।
মোনায়েম জানায়, এমন সাফল্যে পরিবারের সবাই খুব খুশি। বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবে এ স্বপ্ন নিয়েই পড়ালেখা চালিয়ে যাবে সে।
মোনায়েমের মা বিবি কুলসুম জানান, গত ৭ মার্চ ও ২৬ মার্চ উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় জেলায় দ্বিতীয়, মাতৃভাষা দিবস ও বিজয় দিবসে উপজেলায় দ্বিতীয়, স্বাস্থ্য বিভাগ আয়োজিত পুষ্টি সপ্তাহে জেলায় দ্বিতীয় হয়েছে মোনায়েম।
আরও পড়ুন: কলাগাছ থেকে সুতা: বান্দরবানে নারীদের সোনালী স্বপ্ন!
দাগনভূঞা ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক কাজী ইফতেখারুল আলম বলেন, মোনায়েমকে দেখে অন্য শিশুরাও উৎসাহ পাবে। সে জীবনে অনেক সফল হবে বলে বিশ্বাস করি। মানুষের ইচ্ছাশক্তি যে অনেকদূর এগিয়ে নিতে পারে, তার উদাহরণ মোনায়েম।
পুরস্কার বিরতণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আলাউদ্দিন আহাম্মেদ চৌধুরী নাসিমের সহধর্মিণী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জাহানারা আরজু ও সালেহ উদ্দিন-হোসনে আরা চৌধুরী ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব জালাল উদ্দিন আহম্মেদ পাপ্পু।
ফেনীতে একজনকে কুপিয়ে হত্যা
ফেনীর পরশুরামে বাজার করে বাড়ি ফেরার পথে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাতে উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের পরশুরাম-ছাগলনাইয়া সড়কে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত মো. জসিম উদ্দিন (৫৫) পরশুরামের বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের সাতকুচিয়া গ্রামের মফিজুর রহমানের ছেলে।
পুলিশ ও পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার খন্ডল বাজার থেকে নিত্যপণ্যের বাজার করে বাড়িতে ফেরার পথে মো. জসিম উদ্দিন খন্ডল বিক্সসের সামনে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরতর জখম করে। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরশুরাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ হোসেন জানান, পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ব্যাপারে নিহতের ছেলে একরাম হোসেন সোহেল বাদি হয়ে পরশুরাম থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে মাদকাসক্ত ছিনতাইকারীরা এ ঘটনা ঘটাতে পারে। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা!
ফেনীতে ১৫ কেজি গাঁজা জব্দ, আটক ২
ফেনীতে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল এলাকা থেকে আটকের সময় তাদের কাছ থেকে ১৫ কেজি গাঁজা জব্দের দাবি করেছে র্যাব।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- কক্সবাজার জেলার বেরমপাড়া এলাকার মো. জুনায়েদ (২০) ও মোছা. ছাব্বুর নাহার (২৫)।
র্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের সহকারী পরিচালক, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. জুনায়েদ জাহেদী জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল রামপুরস্থ ইউসুফ স্টোরের সামনে মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে জুনায়েদ ও ছাব্বুর নাহারকে আটক করেন তারা। এসময় জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি করে লাগেজ ব্যাগের ভিতর থেকে ১৫ কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়।
আরও পড়ুন: বরিশালে শেবাচিম হাসপাতাল থেকে ভুয়া চিকিৎসক আটক
উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের আনুমানিক বাজার মূল্য দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা।
র্যাব আরও জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা দীর্ঘদিন ধরে ফেনীর সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে কক্সবাজার-চট্রগ্রামসহ পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন জায়গার বিক্রি করে আসছে বলে জানিয়েছে।
র্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক, উপ-পরিচালক, স্কোয়াড্রন লীডার আব্দুল্লাহ আল জাবের ইমরান বলেন, জব্দকৃত মাদক ও আটক ব্যক্তিদের ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘অফিস সহায়ক’ পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে এসে আটক ২
ঝাড়ুর হাতে ফুল তুলে দিলেন ডিসি
প্রতিদিন ঝাড়ু হাতে যে মানুষগুলো শহর পরিচ্ছন্ন করেন, সেই মানুষগুলোর হাতে ফুল ও উপহার তুলে দিয়েছেন ফেনী জেলা প্রশাসক (ডিসি), মেয়র ও জেলার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
নারী দিবসের প্রথম প্রহরে ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহায়ের আয়োজনে ও ফেনী পৌরসভার সহযোগিতায় শহরের অর্ধ শতাধিক নারী পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের মাঝে এই উপহার সামগ্রী দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: সহিংসতার সম্মুখীন নারীদের সহায়তা খুবই জরুরি: আইনমন্ত্রী
ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী ও ফেনীর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহায়তায় মঙ্গলবার ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ফেনী পৌর সভার নারী পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নিয়ে এ ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে ৫০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ফুল দিয়ে বিশেষভাবে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এই সময় তাদেরকে ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর পক্ষ থেকে শাড়ি ও কম্বল দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান।
আরও পড়ুন: ইউএনবিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে স্থানীয় সরকার বিভাগ ফেনীর উপ-পরিচালক ড. মন্জুরুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা, ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহায়ের সভাপতি মঞ্জিলা আক্তার মিমি, জেলা প্রশাসকের তনয়া আদিবা মাহমুদ রোদেলা উপস্থিত ছিলেন।
সেতুর অভাবে ৩০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ
ফেনীর দাগনভূঁঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে খরস্রোতা ‘ছোট ফেনী নদী’। নদীর দু’পাশে রয়েছে ১০ থেকে ১৫টি গ্রাম। নদী পাড়ি দিয়ে দুই পাশের প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে চলাচল করতে হয়। নদীতে একটি সেতু নিমার্ণের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসলেও কোনো সুফল পায়নি। সেতুর অভাবে এলাকার কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ জনগণের ভোগান্তির শেষ নেই। তবে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাথে কথা বলে দ্রুত একটি সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন ফেনীর জেলা প্রশাসক।
জানা গেছে, যারা নিয়মিত ছোট ফেনী নদী পারাপার হয়ে জেলা সদরে যাতায়াত করেন, তাদের একমাত্র ভরসা একটি খেয়ানৌকা। বিশেষ করে ইউনিয়নের পূর্বঘোনা গ্রামের জনসাধারণদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গ্রামটির তিনদিক থেকে ঘিরে রেখেছে ছোট ফেনী নদী। এই গ্রামের স্কুল-মাদরাসা ও কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ হাজারও মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন দড়িটানা নৌকা দিয়ে পার হয়ে ফেনী সদর এলাকায় যাতায়াত করতে হয়। নদী পার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষকে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। বর্ষা মৌসুমে এই নদী পার হওয়া অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
পড়ুন: পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে বার্ষিক বরাদ্দ বাড়ানোর পরিকল্পনা সরকারের
স্থানীয় বিরলী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, একটি সেতুর জন্য ভুক্তভোগী মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সেতু নির্মাণের কার্যকর কোনো উদ্যোগই চোখে পড়ছে না। এই অবস্থায় দুটি উপজেলার কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৩০ হাজার মানুষ সেতুর অভাবে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। দাবি জানাতে জানাতে এখন সাধারন মানুষ হতাশ হয়ে গেছে।
রাজাপুর ও পাঁচগাছিয়ার নদী পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আশেপাশের ১০-১৫টি গ্রাম ফেনী সদর ও দাগনভূঁঞা উপজেলার অর্ন্তভুক্ত হলেও এসব গ্রাম তাদের উপজেলা সদর থেকে অন্তত ১৫-২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তাই এসব গ্রামের মানুষ বাজার-খরচ থেকে শুরু করে শিক্ষা-চিকিৎসা সেবাসহ নানা কাজে ও আত্মীয়তার সূত্রে জেলা ও উপজেলা শহরে যেতে হয়। এ অবস্থায় একটি সেতুর অভাবে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। চলাচলকারী লোকজনের মধ্যে অন্তত পাঁচ শতাধিক স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থী রয়েছে।
বিরলী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, তাঁর বিদ্যালয়ের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষার্থীর অধিকাংশই রাজাপুর ঘোনার বাসিন্দা। ওই শিক্ষার্থীদের আশেপাশে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ঝড়-বৃষ্টির মৌসুমে নৌকাডুবির আশংকা থাকায় স্কুলে আসে না।
বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া সুলতানা বলেন, ‘নৌকা পারাপারে আমাদের খুব ভয় হয়। কখনো কখনো নৌকায় উঠতে-নামতে আমাদের বই-খাতা, ড্রেস ভিজে যায়। তাই বাধ্য হয়ে ক্লাস না করে আমরা বাড়ি ফিরে যাই।’
বিরলী দারুল উলুম ইসলামীয়া মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য মনোয়ার হোসেন শিমুল বলেন, এখানে ছোট ফেনী নদীর ওপর কোনো সেতু না থাকায় দিনের বেলায় নৌকা পাওয়া গেলেও রাতে মাঝি থাকে না। এতে রোগীসহ জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগে দুর্ভোগের অন্ত থাকে না স্থানীয় বাসিন্দাদের।
পড়ুন: প্রতিকূলতার মাঝেও শিক্ষা গ্রহণে সাফল্যের পথে উপকূলের নারীরা
পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক লিটন বলেন, ‘এখানে একটি সেতু নির্মাণ হলে জনদুর্ভোগ অনেক কমবে। এ ব্যাপারে ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে দ্রুতযোগযোগ করে সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান বলেন, ‘উন্নয়নের বড় নিয়ামকই হচ্ছে যোগাযোগ। যোগাযোগের ফলে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। ওই এলাকার জনগণ যেটি চাচ্ছেন সেটি অবশ্যই একটি বিবেচনার বিষয়। এ বিষয়ে আমি স্থানীয় সরকার বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সবার সাথে কথা বলবো এবং যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবো।’
পড়ুন: স্বাবলম্বী জমির প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ও জমি দিলেন অন্য গৃহহীনকে
ফেনীতে ট্রেন ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ১
ফেনীতে ট্রেন ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে আবদুল হালিম (৪৫) নামে পিকআপ চালক আবদুল হালিম নিহত হয়েছেন। বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ফেনীর বারাহীপুর রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আবদুল হালিম কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার আলেখাচর এলাকার মমতাজ উদ্দিনের ছেলে।
আহত হাসান কুমিল্লা ব্রাক্ষ্মণপাড়া টাকই গ্রামের বাসিন্দা ও সোহেল রানা ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বাসিন্দা।
ফেনীর বারাহীপুর রেলক্রসিং এলাকার দায়িত্বে থাকা গেটম্যান জীবন জানান, ট্রেন আসার আগেই গেট বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু পিকআপটি দ্রুত গতিতে এসে গেট ভেঙে লাইনের ওপর উঠে যায়। এতে ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।
আরও পড়ুন: মাগুরায় পিকআপ ভ্যান-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ১
ফেনীর জিআরপি পুলিশের ইনচার্জ মো. সাইফুল ইসলাম জানান, দ্রুতগতির একটি পিকআপ রাত ৩টার দিকে বারাহীপুর রেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় গেইট ভেঙ্গে রেললাইনের উপর উঠে যায়। এ সময় চট্টগ্রামমুখী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ধাক্কা দিলে পিকআপটি দুমড়ে-মুচড়ে লাইনের পাশে ছিটকে পড়ে। পিকআপ চালক আবদুল হালিম ও গাড়িতে থাকা দুই ব্যবসায়ী হাসান ও সোহেল রানাকে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসক পিকআপ চালক আবদুল হালিমকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের ইনচার্জ আরও জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: টঙ্গীতে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ২০
বরিশালে ট্রাক্টরের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, কলেজছাত্র নিহত
ফেনীতে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ যুবক নিহত
ফেনীর ফুলগাজীতে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। রবিবার বিকালে ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক মহাসড়কের ফুলগাজীর হাসানপুর এলাকায় এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন।
নিহতরা হলেন সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের আমতলী গ্রামের ফেয়ার আহমদের ছেলে ফয়সাল নাদিম (২০) ও ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের ধলিয়া গ্রামের আবু ইউসুফ ছান্দুর ছেলে আদনান হোসেন অন্তর (১৯)।
আরও পড়ুন: মাগুরায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পথচারী নিহত
আহতরা হলেন, আশিক ও সজীবের বাড়ী ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের আমতলী এলাকায় ও আশিকুর রহমান (১৯), একই গ্রামের আরমান সজীব (১৯) ও ফুলগাজী উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের কামাল্লা গ্রামের শরীফ চৌধুরী (২০)।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ফুলগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন জানান, রবিবার বিকালে দুই বন্ধুকে নিয়ে নাদিম মোটরসাইকেলযোগে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে পরশুরামের মালিপাথর গ্রামে ফিরছিলেন। মোটরসাইকেলটি ফুলগাজীর হাসানপুর নামক স্থানে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
আরও পড়ুন: শেরপুরে পৃথক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২
এতে দুই মোটরসাইকেলে পাঁচ আরোহী গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পথে ফয়সাল নাদিম ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আদনান হোসেন মার যান। গুরুতর আহতরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।