আইনজীবী
পরীমণির মাদক মামলা চলবে, আবেদন খারিজ
চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম পরীমণির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত (সুরভী) আবেদন করলে এ আদেশ দেন।
আবেদনে আইনজীবী বলেন, মামলার বিচারকাজ শেষ করার জন্য নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেছে। সুতরাং, মামলাটি বাতিল করা উচিত। কারণ আদালত নির্ধারিত ১৩৫ কার্যদিবসের মধ্যে এটি নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাহবুবুল আলম বলেছেন যে যদিও আইনে বলা রয়েছে ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে মামলা শেষ করতে হবে। তবে এটা বাধ্যতামূলক নয়।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত মামলার কার্যক্রম বাতিলের আবেদন খারিজের আদেশ দেন।
আদালত মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ১৫ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
পরীমণির অনুপস্থিতিতে তার আইনজীবীরা হাজিরা দেন। সেসময় পরীমণির ম্যানেজার আশরাফুল ইসলাম দিপু ও খালু কবীর হাওলাদারও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পরীমণির অভিমান কি ঘুচল?
৪ আগস্ট পরীমণিকে তার বনানীর বাসায় র্যাবের অভিযানের পর আটক করা হয়। পরদিন তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
২০২১ সালের ৩১ আগস্ট ঢাকার একটি আদালত মাদক মামলায় পরীমণিকে জামিন দেন। পরেরদিন তিনি কারাগার থেকে বের হন।
৪ অক্টোবর পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আরও পড়ুন: মিমের স্ট্যাটাসের উত্তর দিয়ে স্ক্রিনশট শেয়ার করলেন পরীমণি
১৫ নভেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ আসামিদের বিরুদ্ধে পুলিশের করা অভিযোগ আমলে নেন।
২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ-১০ এর বিচারক নজরুল ইসলাম এ মামলায় পরীমণিসহ তিনজনকে আসামি করেন।
৩০ জানুয়ারি পরীমণি মামলা ও পরবর্তী অভিযোগ বাতিলের জন্য হাইকোর্টে আপিল করেন।
আরও পড়ুন: ছেলের ছবি প্রকাশ্যে আনলেন পরীমণি, জানালেন নাম
শর্ত সাপেক্ষে নর্থ সাউথের সাবেক ২ ট্রাস্টির হাইকোর্টে জামিন
ক্যাম্পাসের জন্য জমি কেনার নামে প্রায় ৩০৪ কোটি টাকা পাচারের মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্ট্রিজের সাবেক দুই সদস্যকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, এনএসইউ’র ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক সদস্য এম এ কাশেম এবং রেহানা রহমানকে এই শর্তে জামিন দেয়া হয়েছিল যে অনুমতি ছাড়া দেশত্যাগ কিংবা এনএসইউ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবেন না।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান এবং আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক ও সৈয়দ আহমেদ রাজা।
আরও পড়ুন: অবৈধ ইটভাটা ধ্বংসের নির্দেশ বাস্তবায়ন হয়নি, পরিবেশের ডিজিসহ ৫ ডিসিকে হাইকোর্টে তলব
চলতি বছরের ২ আগস্ট হাইকোর্ট এই মামলায় কেন দুই এনএসইউ ট্রাস্টি বোর্ড সদস্যকে জামিন দেয়া হবে না তার ব্যাখ্যা চেয়ে একটি রুল জারি করেছে।
এর আগে এ বছরের ২২ মে আদালত এই মামলায় তাদের আগাম জামিনের আবেদন নাকচ করে এনএসইউ’র চার ট্রাস্টিকে গ্রেপ্তারের জন্য শাহবাগ পুলিশকে নির্দেশ দেয়।
এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বেনজীর আহমেদ ও মোহাম্মদ শাহজাহান।
গত ৫ মে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসের জমি কেনার নামে ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলা করে দুদক।
অপর আসামি হলেন- আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মোহাম্মাদ হিলালী।
এই মামলাটি করেন দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।
মামলায় বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন উপেক্ষা করে ট্রাস্টি বোর্ডের কয়েকজন সদস্যের সম্মতিতে এনএসইউ’র ক্যাম্পাস উন্নয়নের নামে ৯০৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমেল জমি ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা বেশি দেখিয়ে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের হীন উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে তারা প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা প্রদান করেন। পরে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন এবং পরে নিজেরা উক্ত এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। অবৈধ ও অপরাধলব্ধ আয়ের অবস্থান গোপনের জন্য উক্ত অর্থ হস্তান্তর ও স্থানান্তর মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধও সংঘটন করেন।
এ ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ড পরিচালনায় তারা জালিয়াতি করেছে এবং কমিশন আদান-প্রদানের মাধ্যমে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে।
আরও পড়ুন: ‘বন্ধ’ করা অবৈধ ইটভাটার তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
৪ জেলায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ
অপ্রীতিকর ঘটনার জেরে চট্টগ্রাম আদালতে তালা
চট্টগ্রাম আদালতে আইনজীবীর সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনার জেরে প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতের পেশকারসহ সকল স্টাফদের তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে আদালতে দায়িত্বরত পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) সাইফুদ্দিন পারভেজের অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে রবিবার (৬ নভেম্বর) সকালে আদালতের এজলাসে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ করে আইনজীবীরা।
আদালতের সংশিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) বিকালে আইনজীবী মনজুর আলম একটি মামলার নথি দেখার জন্য প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে গেলে পেশকার পারভেজ তার কাছে টাকা দাবি করে। আইনজীবী মঞ্জুর টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পেশকার পারভেজসহ আদালতের কর্মচারীরা আইনজীবীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে এবং আইনজীবীদের নিয়ে বিভিন্ন কটুক্তিমূলক কথা বলে, এতে আইনজীবী মনজুর প্রতিবাদ করলে উভয় পক্ষ কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে পেশকার-পিয়নরা আইনজীবী মঞ্জুর ওপর হামলা করলে তিনি আহত হয়।
এ ঘটনা জানাজানি হলে সাধারণ আইনজীবীরা ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম আদালত ভবন উড়িয়ে দেয়ার টার্গেট ছিল জঙ্গিদের: র্যাব
শুক্রবার ও শনিবার আদালত বন্ধ থাকার পর রবিবার সকাল ১০টায় বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঘটনার প্রতিবাদে প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতের সামনে অবস্থান নেন এবং আদালতের এজলাসে তালা ঝুলিয়ে দেন।
খবর পেয়ে ছুটে আসেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোহাম্মদ হাশেম ও সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়া উদ্দীন, জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীসহ আইনজীবী নেতারা।
উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঞার নজরে আনেন।
চট্টগ্রাম বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ বিষয়টি আমলে নিয়ে তাৎক্ষণিক পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) সাইফুদ্দিন পারভেজসহ ওই আদালতে দায়িত্বে থাকা সংশিষ্ট সবাইকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন।
জানতে চাইলে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ হাশেম বলেন, প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা আদালতের এজলাসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে, পরে সমিতির নেতারা মধ্যস্থতায় চট্টগ্রাম বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঞার তাৎক্ষণিক নির্দেশে বেঞ্চ সহকারীসহ সংশ্লিষ্ট সকল স্টাফের প্রত্যাহার ও বিভাগীয় মামলার ঘোষণায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
জাগ্রত আইনজীবী পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট টি. আর খান বলেন, চট্টগ্রাম আদালতের পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) সেরেস্তাদার, উমেদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের হাতে আইনজীবীরা প্রতিনিয়ত হয়রানি হচ্ছে, কোন নথি দেখতে গেলে হাজিরা, সময়ের দরখাস্ত দিলে, বেইল বন্ড জমা দিলে, মহামান্য হাইকোর্ট এর বেইল কনফার্ম করতে গেলে আইনজীবীদের কাছ থেকে টাকা দাবি করা হয়।
টাকা না দিলে করা হয় হয়রানি, শুনতে হয় কটুক্তি সহ নানা অপমানজনক কথা, এসব আর চলতে দেয়া যায় না।
আরও পড়ুন: ৯১ লাখ টাকা আত্মসাত: চট্টগ্রাম আদালতে প্রতারক সাহেদ
চট্টগ্রাম আদালতের মালখানা থেকে নথি চুরির ঘটনায় মামলা দায়ের
বগুড়ায় দুর্বৃত্তের হামলায় শিক্ষানবীশ আইনজীবীর মৃত্যু
বগুড়া শহরের কলোনী চকফরিদ এলাকায় জজ আদালতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের চাইনিজ কুড়ালের আঘাতে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন শিক্ষানবীশ আইনজীবী আব্দুল বারী ওরফে চানের (৪০) মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়।
নিহত আব্দুল বারী চাঁন ওই এলাকার মৃত কবেজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি বগুড়া জজ আদালতে শিক্ষানবীশ আইনজীবী হিসেবে কাজ করতেন।
আরও পড়ুন: কারাগারে দগ্ধ হয়ে আইনজীবীর মৃত্যুর ঘটনায় বিচারিক তদন্তের নির্দেশ
জানা যায়, গত ১ নভেম্বর আব্দুল বারী আদালতে যাওয়ার জন্য সকালে বাসা থেকে বের হন। বাসা থেকে প্রায় ৩০০ গজ যাওয়ার পর তিন জন হামলা চালায় তার ওপর। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আব্দুল বারীকে কুপিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। চারদিন পর সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় জমিজমার বিরোধের জেরে আব্দুল বারীর ওপর হামলা চালানোর অভিযোগে সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার বাদী আব্দুল বারীর স্ত্রী রুনা আক্তার।
বগুড়া সদর থানার ছিলিমপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) রকিবুর হাসান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, শজিমেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে তিনি মারা যান। লাশ শজিমেক হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।
বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বাবু কুমার সাহা বলেন, হামলার ঘটনায় ওই দিন রাতে একটি মামলা হয়েছে। হামলার কারণ হিসেবে জমিজমার বিরোধকে উল্লেখ করেছেন তিনি।
তিনি জানান, মামলায় পাঁচ জনের নামসহ মোট আট জনকে আসামি করা হয়েছে।
তবে হামলার চারদিন পেরিয়ে গেলেও এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করতে পারেনি পুলিশ।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় ট্রাকচাপায় আইনজীবীর মৃত্যু
কুমিল্লার আদালতে মামলার শুনানিকালে আইনজীবীর মৃত্যু
বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণ: খুলনার বার সমিতির সভাপতিসহ ৩ আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব
খুলনা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিচারক (বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা জজ) নির্মলেন্দু দাশের সঙ্গে অসদাচরণের মাধ্যমে আদালত অবমাননার অভিযোগে খুলনা জেলা আইনজীবী (বার) সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলামসহ তিন আইনজীবীকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বতপ্রণোদিত হয়ে আদালত অবমাননার রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী ২২ নভেম্বর তাদের সশরীরে হাজির হয়ে আদালত অবমাননার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
বার সভাপতি ছাড়া তলব আদেশ প্রাপ্ত অপর দুই আইনজীবী হলেন- শেখ নাজমুল হোসেন ও শেখ আশরাফ আলী পাপ্পু।
এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
গত ২২ সেপ্টেম্বর বিচারক নির্মলেন্দু দাশের সঙ্গে অসদাচরণের ঘটনায় খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলামসহ তিন আইনজীবীর বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেয়া হয়। প্রধান বিচারপতি বরাবর চিঠিটি উপস্থাপন করেন রেজিস্ট্রার জেনারেল। এরপর গত ২৫ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি বিষয়টি বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে উপস্থাপন করতে বলেন। সে অনুসারে নির্দিষ্ট বেঞ্চে অভিযোগ উপস্থাপন হলে আজ হাইকোর্টের এই বেঞ্চ আদালত অবমাননার রুল জারি করে তিন আইনজীবীতে তলব করেন।
রেজিস্ট্রার জেনারেলের নথিতে বলা হয়, খুলনা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিচারক (বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা জজ) নির্মলেন্দু দাশ এক পত্রের মাধ্যমে জানিয়েছেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর একটি মামলার রায়ের জন্য দিন ঠিক করা ছিল। তবে বাদীপক্ষের আইনজীবী শেখ আশরাফ আলী পাপ্পু মামলাটি রায় হতে প্রত্যাহার করে যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য সময় আবেদন করেন। তিনি মৌখিকভাবে ‘এই মোকদ্দমায় বারের সভাপতি সাহেব আবার জেরা করবেন, আমরা একটা সময়ের দরখাস্ত দেবো’ উল্লেখ করে এজলাস ত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন: ৩ আসামিকে অব্যাহতির আদেশ বাতিল হাইকোর্টের
পরে অন্য মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম শেখ আশরাফ আলী পাপ্পু, শেখ নাজমুল হোসেনসহ একাধিক আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে আদালত কক্ষে প্রবেশ করেন এবং বিচারকের সামনে দাঁড়িয়ে গুঞ্জন করতে থাকেন। তখন বিচারক বলেন, ‘আপনারা বসেন’। কিন্তু তারা সে কথায় কর্ণপাত না করে নিজেদের মতো গুঞ্জন করতে থাকেন। এর মাঝে খুলনা বারের সাধারণ সম্পাদক জেরারত অ্যাডভোকেট পিযুষ কান্তি দত্তকে (অন্য একটি মামলায় পিযুষ কান্তি সাক্ষীকে জেরা করছিলেন) জোরের সঙ্গে বলেন, ‘জেরা শেষ করেন’। পিযুষ কান্তির জেরা শেষ হলে বার সভাপতি সাইফুল ইসলাম কৈফিয়ত তলবের সুরে আদালতকে বলেন, ‘আমরা একটা মোকদ্দমায় উভয়পক্ষ সময়ের দরখাস্ত করেছিলাম, আপনি সেই দরখাস্ত নামঞ্জুর করেছেন। এরপর জিপি সাহেব হাতে লেখা দরখাস্ত দিয়েছেন। তারপর সাক্ষী হয়েছে। পরে আমরা সময়ের দরখাস্ত দিলে নেয়া হয়নি। কেন নেয়া হয়নি এবং সময়ের দরখাস্ত কেন নামঞ্জুর করলেন, আমাকে বলতে হবে।
তখন বিচারক নির্মলেন্দু দাশ বলেন, ‘সভাপতি সাহেব আপনি এভাবে আমার কাছে জানতে চাইতে পারেন?’ জবাবে উনি বলেন, ‘কিভাবে পারি। কোনভাবে জানবো, বলেন।’ বিচারক বলেন, ‘আপনি আমার কাছে সময়ের আবেদন করছেন। আমি নামঞ্জুর করছি। আদেশে কারণ দেখে নেবেন। কিন্তু আপনি আমার কাছে এখন কৈফিয়ত তলব করলে তো হবে না।’ তখন তিনি (উক্ত আইনজীবী) বলেন, ‘কৈফিয়ত চাচ্ছি তো। কারণ আপনি যখন টাকা নিয়ে, ঘুষ নিয়ে অবৈধভাবে সিদ্ধান্ত দেন, সেটার তো জবাব আমরা চাই না।’
এক পর্যায়ে বিচারককে উদ্দেশ্য করে বার সভাপতি বলেন, ‘আমরা কোর্ট বয়কট করবো। আমরা মিডিয়ার সামনে প্রমাণ করবো আপনি দুর্নীতিবাজ। আপনার বিরুদ্ধে যা যা করা দরকার আমরা করবো। আপনার যা করার আছে, আপনি করেন...।’
নথিতে আরও বলা হয়, আইনজীবী নাজমুল হোসেনও অশ্রাব্য ভাষায় একটি গালি দেন। অ্যাডভোকেট পাপ্পুও গালাগালি করেন। সভাপতির সঙ্গে থাকা অন্য আইনজীবীরাও অকথ্য ভাষা ব্যবহার করেন এবং গালাগালি করেন। তারপর তিনিসহ তার সঙ্গে আসা অন্য আইনজীবীদের নিয়ে বের হয়ে যান। পাবলিককেও বের করে নিয়ে যান। বের হওয়ার সময় আদালতের দরজায় ধমধম করে বাড়ি দিয়ে যান।
নথিতে বলা হয়, একটি বিচারিক বিষয়ে বারের সভাপতি তার সঙ্গীদের নিয়ে যে আচরণ করেছেন তাতে একজন বিচারক হিসেবে তিনি হতাশ, অপমানিত হয়েছেন এবং বিচার বিভাগের মর্যাদার ওপর তারা আঘাত হেনেছেন ও চরমভাবে আদালত অবমাননা করেছেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি: হাইকোর্টে জামিন পেলেন রাজবাড়ীর স্মৃতি
ডিএমপিতে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধের বিধান কেন সংবিধান পরিপন্থী নয়: হাইকোর্ট
আয়কর আইনজীবীদের একটি শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকা দরকার: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে আয়কর আইনজীবীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই আয়কর আইনজীবীদের একটি শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক সংস্থা (রেগুলেটরি বডি) থাকা দরকার। যাতে যে কেউ আয়কর আইনজীবী সমিতির সদস্য হতে না পারে। এসময় তিনি আয়কর আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থার স্ট্যান্ডার্ড (মান) বাড়ানোর পরামর্শ দেন।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ আয়কর আইনজীবী সমিতির নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সৎ ও দক্ষ আয়কর আইনজীবীগণ দেশের রাজস্ব বাড়াতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। আয়কর খাতে নিয়োজিত সকল আইনজীবী সৎ ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলে দেশের রাজস্ব আহরণ যেমন বাড়বে, তেমনি আইন পেশার মর্যাদা ও গুরুত্ব বাড়বে। এতে জনগণের মধ্যে আয়কর দেয়ার ভীতিও দূর হবে। এসময় তিনি পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ আয়কর আইনজীবী সমিতির লাইব্রেরিতে উন্নতমানের বই-পুস্তক দেয়ার আশ্বাস দেন।
বৈঠকে আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ আইনমন্ত্রীর কাছে পেশাগত বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা কামনা করেন।
তারা আয়কর অধ্যাদেশে বাংলদেশ বার কাউন্সিলের আদলে ট্যাক্স কাউন্সিল গঠনের বিধান যুক্ত করার অনুরোধ জানান।
এছাড়া আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনালে একজন বিচার বিভাগীয় সদস্য (জেলা জজ) ও একজন প্রাকটিশনার্স আয়কর আইনজীবীর নাম অন্তর্ভুক্তকরণ, চট্টগ্রামে আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনালের ২টি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ স্থাপনে আইনমন্ত্রীর সহযোগিতা চান।
এসব বিষয়ে আইনমন্ত্রী এনবিআর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেন।
বৈঠকে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলম সারওয়ার, বাংলাদেশ আয়কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. সোহবার উদ্দিন, মহাসচিব মো. খোরসেদ আলম, সাবেক সভাপতি সৈয়দ ইকবাল মোস্তফা ও এ কে এম আজিজুর রহমান, ঢাকা আয়কর আইনজীবী এসোসিয়েশনের সভাপতি আবু আমজাদ, সাবেক সভাপতি এ কে এম আজিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. জাকারিয়া খান ও সাবেক সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. মামুনুর রশিদ অংশ নেন।
‘১৯৭৫ সালে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছিল’
মানবাধিকার কর্মী এবং আইনজীবী জেড আই খান পান্না ১৯৭৫ সালকে এমন একটি সময় হিসাবে বর্ণনা করেছেন যখন জাতি মানবাধিকারের ওপর চরম আক্রমণের প্রত্যক্ষদর্শী হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেছেন, পরবর্তী ক্ষতিপূরণ অধ্যাদেশটি সবচেয়ে খারাপ ছিল।
শনিবার মানবাধিকার বিষয়ক আলোচনায় বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি বলেন, ‘মানবাধিকারের ওপর মূল আক্রমণ হয়েছিল ১৯৭৫ সালে এবং ক্ষতিপূরণ অধ্যাদেশের মতো খারাপ কিছু হতে পারে না।’
রাজধানীর বনানীতে ঢাকা গ্যালারিতে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: আইজিপিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রত্যাখান ঢাকার
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাত্র ৪১ দিন পর খন্দকার মোশতাক আহমেদ একটি ক্ষতিপূরণ অধ্যাদেশ জারি করেন। যিনি সামরিক আইন জারি করে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পরপরই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেছিলেন।
১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর খুনিদের এবং যারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকালে সামরিক আইন ঘোষণার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে যে কোনও আইনি বা অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ করতে অধ্যাদেশটি জারি করেছিল।
পান্না ১৯৭৫ পরবর্তী উন্নয়ন এবং কীভাবে জনগণকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল তার বর্ণনাও দিয়েছেন।
তিনি ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে ‘আয়নাঘর’ এর অস্তিত্ব দাবি করেছিলেন এবং তিনি এর অন্যতম শিকার ছিলেন। ‘অনেক ভুক্তভোগী রয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি কয়েকটি নাম উল্লেখ করে তাদের ওপর নির্যাতনের নৃশংস প্রকৃতির কথা তুলে ধরেন।
পান্না বর্তমান পরিস্থিতিও তুলে ধরে বলেন, কিছু ব্যর্থতা আছে। ‘আমি বলব প্রবণতা এড়াতে, সীমাবদ্ধতা নয়।’
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি হলো কোনো তৃতীয় পক্ষ বা দেশের অংশগ্রহণ ছাড়াই অন্যতম সেরা চুক্তি।এর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতিত্ব দেন এই অধিকারকর্মী।
গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ব ইতিহাসে বাংলাদেশ একটি অনন্য জাতি।
এই অধিকারকর্মী আরও বলেন, বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর এমন দেশ কেউ দেখাতে পারবে না, যে দেশে ৯ মাসে ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছে। আপনি বিশ্বের ইতিহাসে দেখাতে পারবেন না। বাংলাদেশ একটি অনন্য দেশ।তিনি বলেন, এটি প্রচলিত যুদ্ধ নয়, এটি একটি জনযুদ্ধ।
এডিটরস গিল্ডের সভাপতি ও একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান, মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত প্রমুখ।
আরও পড়ুন: আসকের সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদনে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে
মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা আজ প্রমাণিত: যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে বিএনপি
২ মাসের মধ্যে চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ গঠিত হবে:তথ্যমন্ত্রী
স্থানীয় আইনজীবীদের দাবি অনুযায়ী দুই মাসের মধ্যে চট্টগ্রামে একটি হাইকোর্ট সার্কিট বেঞ্চ গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মন্ত্রী বলেন, এখানে হাইকোর্ট সার্কিট বেঞ্চ গঠনের বিষয়ে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় ড. হাছান বলেন, আইনজীবীরা সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে এবং সমাজকে সঠিক খাতে প্রবাহিত করার ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে। আইনজীবীরা হচ্ছেন সমাজের স্বাভাবিক নেতা। সে কারণে তাদের পক্ষে রাজনীতি করা সহজ।
পড়ুন: চট্টগ্রামে পুলিশ পরিদর্শক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও আইনজীবী হতে চেয়েছিলেন। তিনি আইন বিভাগের ছাত্র ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার বাবাও চাইতেন তিনি আইনজীবী হোন। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী যারা পড়েছেন তারা জানেন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে বহিস্কার করার কারণে তিনি আইনজীবী হতে পারেন নাই।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের প্রথম যে পার্লামেন্ট, ৭০ এর নির্বাচনের যে পার্লামেন্ট এবং দেশ স্বাধীন হবার আগে পূর্ব পাকিস্তানের যে আইনসভা ছিল, পাকিস্তানের যে আইনসভা ছিল, ভারতবর্ষে বাংলার যে আইনসভা ছিল সেদিকে যদি তাকাই, সেখানে মেজরিটি ছিল আইনজীবী।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রাম বার অ্যাসোসিয়েশনের অনেক সদস্য ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে ভূমিকা রেখেছে। সেই বিবেচনায় চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি বাংলাদেশের জেলা বারগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বার।
পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরের প্রত্যেক গেইটে স্ক্যানার বসানো হবে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
মন্ত্রী আরও বলেন, চট্টগ্রাম বার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের যত জেলা বার আছে সবচেয়ে বেশি সমৃদ্ধ বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, যদি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অতীত সদস্যদের কথা চিন্তা করেন, তারা এই দেশের স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রাম, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, সেই বিবেচনা যদি করেন, যারা নেতৃত্ব দিয়েছে অনেকেই চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সদস্য ছিলেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বার অ্যাসোসিয়েশনের অনেক সদস্য ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে ভূমিকা রেখেছে।
চট্টগ্রাম মহানগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মোহাম্মদ হাশেমের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এরশাদুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এ. এম আমিন উদ্দিন অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমদ ভুঞা, মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছা, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য এ. এস. এম বদরুল আনোয়ার, সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির, সাধারণ সম্পাদক আবদুন নুর দুলাল, চিফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রবিউল আলম ভুঁইয়া, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি শফিক উল্লাহ, সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজ উদ্দিন হায়দার, সাবেক সভাপতি এনামুল হক প্রমুখ।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কা, নিহত ১১
বগুড়ায় ট্রাকচাপায় আইনজীবীর মৃত্যু
বগুড়ার কাহালুতে ট্রাকচাপায় এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন। শনিবার সকাল ৮টার দিকে বগুড়া-সান্তাহার সড়কের উপজেলার রহিমা ফিলিং স্টেশনের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আইনজীবী মাহবুবুর রহমান ফারুক (৬৮) দুপচাঁচিয়া উপজেলার খিয়াল মধ্যপাড়ার আইস প্রামাণিকের ছেলে। তিনি বগুড়ার আদালতে কর্মরত ছিলেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় ট্রাক্টর খাদে পড়ে চালকসহ নিহত ৩
কাহালু ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ওয়্যার হাউস ইন্সপেক্টর রুবেল রানা জানান, শনিবার সকাল ৮টার দিকে ফারুক মোটরসাইকেল উপজেলার রহিমা ফিলিং স্টেশন থেকে তেল নেন। এরপর মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় ওঠার সময় স্পিড ব্রেকারের কাছে মোটরসাইকেলের গতি কমালে পেছন থেকে আসা একটি বালুবাহী ট্রাক তার মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয় এবং এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা জানান, দুর্ঘটনার পর পরই চালক ও তার সহকারী ট্রাক রেখে পালিয়ে যায়। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে। পরে পুলিশ পৌঁছে ট্রাকটি জব্দ করে ও লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় বাবা-ছেলে নিহত
সাবেক এপিপি ও বগুড়া বার সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান ফারুকের মৃত্যুতে বার সমিতির সভাপতি ও পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল মতিন এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছেদ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
আদালতের সিল ও স্বাক্ষর জাল: আইনজীবীর সহকারীসহ ২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের জাল সিল ও বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে রি-কল সরবরাহ করায় দুজনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন বিচারক।
অভিযুক্তরা হলেন, পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামের খোকন খান এবং আইনজীবী আহাদ আলী খানের সহকারী বরিশাল সদর উপজেলা শায়েস্তাবাদের মোল্লা বাড়ির বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম তপন।
বরিশাল অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করলে বিচারক মাসুম বিল্লাহ তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
আরও পড়ুন: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারি
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারি চার্চিল।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু শামীম আজাদ বাদী হয়ে সোমবার এই অভিযোগ করেন।
অভিযোগে বিচারক উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের মামলায় প্রধান আসামি খোকনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ওই সময় থেকে খোকন পলাতক ছিল। সর্বশেষ ২০১৮ সালে আসামিকে গ্রেপ্তার করতে নাজিরপুর থানায় তাগিদ দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: বরিশালে শেবাচিম হাসপাতাল থেকে ভুয়া চিকিৎসক আটক
২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর পিরোজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে অবহিত করা হয় একই বছরের ২৫ আগস্ট আসামি খোকন বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে আত্মসমর্পন করে জামিন নিয়েছে। ওই পত্রের সঙ্গে জামিনের কাগজ রি-কলের কপি দেয়া হয়।
তাতে দেখা যায় রি-কলে ট্রাইব্যুনালের গোল সিল জাল তৈরি করা হয়েছে। সেখানে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্থলে নারী ও শিশু দমন ট্রাইবুনাল লেখা রয়েছে। বিচারকের স্বাক্ষর জাল করা হয়। যার সঙ্গে অভিযোগকারী বিচারকের স্বাক্ষরের কোন মিল নেই। এমনকি রি-কলের হাতের লেখা তৎকালীন বেঞ্চ সহকারী গোলাম রসুলের নয়।
উক্ত জামিননামা পর্যালোচনায় অভিযোগকারী দেখতে পান আইনজীবীর সহকারী তপন ও আসামি খোকন যোগসাজসে জাল রি-কল তৈরি করেছে। এরপর পুনরায় আসামি খোকনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ওই নির্দেশ পাওয়ার পর এ বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি খোকনকে গ্রেপ্তার করে তার কাছ থেকে জাল রি-কলের মূলকপি জব্দ করা হয়। এ সময় খোকন জানায় ওই রিকল আইনজীবী আহাদ আলী খানের সহকারি তপন দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতির মৃত্যু