আইনজীবী
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত, বিএফইউজের নির্বাচনে বাধা কাটল
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নির্বাচন দুই মাসের জন্য স্থগিত করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন, তা স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে রবিবার অবকাশকালীন চেম্বার বেঞ্চের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এ আদেশ দেন। এর ফলে তফসিল অনুসারে ২৩ অক্টোবর ওই নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আবেদনকারীর আইনজীবী নূরে আলম উজ্জ্বল।
তফসিল অনুসারে ২৩ অক্টোবর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে ভোটার তালিকায় নিজের নাম না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হাসান ফেরদৌস গত ২৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন। এতে ভোটার তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্তির নির্দেশনা চান তিনি। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল দিয়ে বিএফইউজে নির্বাচন দুই মাসের জন্য স্থগিত করেন।
আরও পড়ুন: বিএফইউজে’র নির্বাচন দুই মাসের জন্য স্থগিত
পরবর্তী সময়ে ওই মামলায় পক্ষভুক্ত হতে ও হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে বিএফইউজে নির্বাচনে মহাসচিব পদপ্রার্থী দীপ আজাদ ৭ অক্টোবর আবেদনটি করেন, যা রবিবার চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন, যিনি অ্যাটর্নি জেনারেলও। তাঁর সঙ্গে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শেখ মো. মোরশেদ (অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল), নূরে আলম উজ্জ্বল ও রাফসান আল আলভি। অন্যদিকে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক, তীর্থ সলিল পাল ও নূরুল করিম।
আরও পড়ুন: করোনায় মৃত সংবাদকর্মীদের জন্য ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি বিএফইউজে-ডিইউজের
আইনজীবীদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে: মন্ত্রী
আইন বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আইনের শাসন যেন ব্যাহত না হয় আইনজীবীদের সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
বুধবার বিকালে কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির স্মৃতিফলক ও ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রবীণদের স্মৃতিফলক দেখে নতুনরা অনুপ্রেরণা পাবে এবং তাদের আদর্শে নিজেকে চালিত করবে।
করোনাভাইরাসের সময় ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল হিসেবে ভার্চুয়াল কোর্টের সেবা পেয়েছে দেশবাসী। এর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান আনিসুল হক।
কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কুমিল্লা সিনিয়র জেলা জজ ও দায়রা জজ মো. আতাবুল্লাহ, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সহিদ উল্লাহ বক্তব্য দেন। এসময় বিচারকসহ কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বিদেশে যেতে চাইলে খালেদাকে কারাগারে ফিরতে হবে: আইনমন্ত্রী
আইসিটি আইনের মামলায় বিএনপিপন্থি ১১ আইনজীবীর আগাম জামিন
কুশিয়ারায় ভাসছিল ‘বিদেশি’র লাশ
সিলেটের বিয়ানীবাজারে কুশিয়ারা নদী থেকে এক ‘বিদেশি’ নাগরিকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তার পরিচয় জানা যায়নি।
বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার শেওলা ইউনিয়নের কাকরদিয়া এলাকা সংলগ্ন নদী থেকে লাশটি উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে হোটেল থেকে নারীর লাশ উদ্ধারপুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যার আগে স্থানীয়রা নদীতে লাশটি ভাসমান অবস্থায় দেখতে পেয়ে বিয়ানীবাজার থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। লাশটির অর্ধগলিত দেহ থেকে বিকট দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। লাশের সঙ্গে একটি স্মার্ট ফোন ও মানিব্যাগ পেয়েছে পুলিশ। মানিব্যাগের ভিতরে একজন ভারতীয় আইনজীবীসহ কয়েকজন ব্যক্তি এবং কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ভিজিটিং কার্ড ও একটি সিম কার্ড পাওয়া গেছে। এই কার্ডগুলো দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে-লাশটি কোনো ভারতীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বী নাগরিকের।বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, লাশের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বাসার ছাদ থেকে ২ বোনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারতিনি বলেন, উদ্ধার করা অজ্ঞাত লাশটি বাংলাদেশি নাগরিকের বলে মনে হচ্ছে না। আমরা ধারণা করছি- লাশটি কোন ভারতীয় নাগরিকের।
আইসিটি আইনের মামলায় বিএনপিপন্থি ১১ আইনজীবীর আগাম জামিন
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. নূরুল হকসহ বিএনপিপন্থি ১১ আইনজীবীকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। রবিবার বিচারপতি মো: মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: সস্ত্রীক কেয়ার চেয়ারম্যানের জামিন, সন্তানদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট এরশাদ হোসাইন রাশেদ। এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহে বিএনপিপন্থি ১১ আইনজীবীর নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের ময়মনসিংহ জেলা শাখার সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম মুহাম্মদ আজাদ।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা: আসামি ভোলার জামিন
মামলায় জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মো. নূরুল হককে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অন্য আসামিরা হলেন- অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ওসমান গনি মল্লিক মাখন, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রশিদ তামান্না, অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, অ্যাডভোকেট আরিফুল ইসলাম সোহাগ, অ্যাডভোকেট রাইসুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট তফাজ্জল হোসেন, অ্যাডভোকেট আহসান উল্লাহ আনার, অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট শামসুন্নাহার।
জাপানি মা ও বাংলাদেশি বাবার মধ্যে সমঝোতার দায়িত্ব আইনজীবীদের
বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফ ও জাপানী মা নাকানো এরিকোর মধ্যে দুই কন্যা শিশুকে নিয়ে বিরোধের বিষয়ে সমঝোতার জন্য উভয়পক্ষকে আরও ১২ দিন সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুই শিশু সন্তানের স্বার্থে তাদের বাবা-মায়ের মধ্যে সমঝোতার উদ্যোগ নেবেন উভয় পক্ষের আইনজীবীরা। এজন্য ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেন,‘ আমরা আশা করি শিশুদের কল্যাণের কথা চিন্তা করে একটি সুন্দর সমাধানে পৌঁছাবে উভয় পক্ষ। এতে বহির্বিশ্বের কাছে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জল হবে।
বিচারপতি এম.ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: জাপানি মাকে নিয়ে অবমাননাকর ভিডিও অপসারণের নির্দেশ
আদেশে সমঝোতায় পৌঁছার জন্য পদক্ষেপ নিতে সিনিয়র আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি শিশু দুটির বাবা ইমরান শরীফের আইনজীবী। ওই সমঝোতা বৈঠকে জাপানি নাগরিক ডা. নাকানো এরিকোর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনিরও উপস্থিত থাকবেন। উভয় পক্ষের আইনজীবীরা শিশু দুটির বাবা-মায়ের মতামত নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছার বিষয়ে আলোচনা করবেন।
এদিকে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে একদিন মা ও পরের দিন বাবা শিশুদের সঙ্গে ঢাকার বাসায় অবস্থান করবেন। শুক্রবার ১৭ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত মা এবং ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত বাবা মেয়েদের সঙ্গে থাকবেন। এভাবে পর্যায়ক্রমে তারা শিশুদের সঙ্গে অবস্থান করবেন বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে দুই কন্যা শিশুকে নিয়ে জাপানে যাবার অনুমতি চেয়ে গতকাল আদালতে একটি আবেদন দিয়েছেন মা নাকানো এরিকো।আবেদনে বলা হয়েছে, এই অনুমতি পেলে গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে মেয়েদের নিয়ে বাংলাদেশে আসবেন মা। মেয়েরা বাবার সাথে সময় কাটাবে। আর বাবার জাপানে যে ঋণ আছে তা মা দেবে এবং বাবার বিরুদ্ধে যে মামলা আছে জাপান সরকার তা তুলে নিতে পদক্ষেপ নেবে মা। তাতেও যদি রাজি না হন, তাহলে তৃতীয় কোনো দেশে বাচ্চাদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন বাবা। সেখানে যাবতীয় খরচ মা বহন করবেন। আইনজীবী শিশির মনির এ আবেদন উপস্থাপন করেন। এছাড়াও তিনি মা ও বাবার জন্য আলাদা সময় নির্ধারণ করে দেয়ার নিবেদন জানান।
তবে ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ এ আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, শিশু দুটিকে একবার জাপানে নিয়ে যেতে পারলে আর তাদের বাংলাদেশে আনা যাবে না। আমাদের আদালতের আদেশ তারা মানবে না। তিনি বলেন, বাচ্চারা বাংলাদেশেই থাকুক। মা যখন খুশী এসে দেখা-সাক্ষাত করতে পারবেন। মা যখন বাংলাদেশে আসবেন তখন প্রয়োজন হলে বাবা বিমানের টিকিট কেটে দেবেন। সব ব্যবস্থাই বাবা করবেন। মা-বাবার জন্য আলাদা সময় নির্ধারণের আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, সমঝোতার স্বার্থে এখন যে অবস্থা আছে সে অবস্থায়ই রাখা হোক। উভয়পক্ষের শুনানিকালে আদালত বলেন, মা-বাবার কারণে আজ বাচ্চা দুটি সমস্যার মধ্যে রয়েছে। তারাই মূল ভিকটিম। তাই এর একটি সমাধান হওয়া দরকার।
আরও পড়ুন: জাপানি মায়ের রিট: ২ মেয়েসহ বাবা ও ফুপুকে ৩১ আগস্ট হাজিরের নির্দেশ
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে জাপানের টোকিওতে এরিকো ও ইমরানের বিয়ে হয়। এরিকো পেশায় চিকিৎসক, ইমরান তড়িৎ প্রকৌশলী। তাঁদের তিন সন্তান। এ বছরের শুরুতে এরিকো বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। এর মধ্যেই ইমরান তাঁর দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। এরপর জাপানের আদালত এরিকোর জিম্মায় সন্তানদের ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
পরে দুই মেয়েকে নিজের জিম্মায় পেতে ঢাকায় এসে গত ১৯ আগস্ট জাপানি নারী রিট করেন। সেদিন রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। আদালত তার আদেশে দুই মেয়েসহ তাদের বাবা ও ফুপুকে ৩১ আগস্ট হাইকোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দেন। ৩১ আগস্ট হাজির হওয়ার পর সবার বক্তব্য শুনে দুই পক্ষের প্রস্তাবের ভিত্তিতে হাইকোর্ট আদেশ দেন। ইমরান শরীফের গুলশানের ভাড়া বাসায় দুই শিশুকে নিয়ে বাবা-মা আপাতত ১৫ দিন একসাথে থাকতে পারবেন বলে ওইদিন আদেশ দেন হাইকোর্ট। সেই সাথে ঢাকার সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালককে এদের পারিবারিক পরিবেশের বিষয়টি দেখভাল করেতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। আর ঢাকা মহানগর পুলিশ এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) দুই শিশু ও তাদের মা-বাবার যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়।
১৬ সেপ্টেম্বর পরবর্তী আদেশের জন্য রেখে হাইকোর্ট সমাধান-সমঝোতার বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখেন। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ফের শুনানি হয়।
পরীমণি জেলে, জামিন নাকচ
বনানী থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দিপুকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে ঢাকার মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডলের আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে দুই দফা রিমান্ড শেষে পরীমণি ও দিপুকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা।
আবেদনে বলা হয়, দুই দফা রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে মামলার বিষয়ে পরীমণি বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত দিয়েছেন। মামলার তদন্তের স্বার্থে তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। মামলার অভিযোগের সঙ্গে তার জড়িত থাকার ব্যাপারে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তদন্ত অব্যাহত আছে। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরীমণিকে জেলহাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন। আসামি জামিনে মুক্তি পেলে মামলার তদন্তে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি পলাতক হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। তাই তাকে কারাগারে আটক রাখার প্রার্থনা করছি।
পরীমণির পক্ষে মজিবুর রহমান, নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী প্রমুখ আইনজীবী জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত পরীমণির জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: পরীমণি চারদিনের রিমান্ডে
মাদক আইনে পরীমণির বিরুদ্ধে মামলা
নায়িকা পরীমণি আটক, মাদক উদ্ধার
মাগুরায় আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীকে মারধর
মাগুরায় আসামিকে জামিন করানোর কারণে বৃহস্পতিবার বিকালে অ্যাডভোকেট জিয়াউর রহমান তিতাস নামে এক আইনজীবীকে আদালত প্রাঙ্গণে পিটিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা।
এবিষয়ে মাগুরা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাশেদ মাহমুদ শাহিন জানান, শহরে তুহীন ও রুবেল নামে দুই সন্ত্রাসী যুবক প্রায়ই মাগুরা আইনজীবী সমিতি ও আদালত এলাকায় আসা মক্কেলদের টাকা পয়সা ছিনতাইসহ নানা রকম অপরাধ কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: আইনজীবীদের ওপর হামলা ও দুর্নীতিগ্রস্তদের প্রত্যাহার দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় বিক্ষোভ
ইতোমধ্যে তাদেরকে আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে তুহিন নামে ওই যুবককে কোনও ধরনের আইনি সহায়তা দেয়া হবে না এই মর্মে আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকালে অ্যাডভোকেট জিয়াউর রহমান তিতাস ও রুবেলের জামিন আবেদন করলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে জনৈক কামরুল ইসলাম আদালত প্রাঙ্গণে অ্যাডভোকেট জিয়াউর রহমানেরর ওপর হামলা চালায়। হামলায় মারাত্মক আহত হলে তাকে দ্রুত মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অ্যাডভোকেট শাহীন এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান তিনি।
আরও পড়ুন:সিলেটে রায়হান হত্যা: আইনজীবী পাননি এসআই আকবর
গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি থাকায় অ্যাডভোকেট জিয়াউর রহমান তিতাসের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মাগুরার পুলিশ সুপার মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় এখনও আমাদের কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অর্থের বিনিময়ে অন্যের সাজা ভোগ করা মিনুকে মুক্তির নির্দেশ
চট্টগ্রামের একটি হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামির পরিবর্তে অর্থের বিনিময়ে সাজাভোগ করা নিরাপরাধ নারী মিনুকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মিনু বর্তমানে চট্টগ্রাম কারাগারে আটক আছেন।
সোমবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে মিনুর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. শিশির মনির। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।
নিরাপরাধ জেল কাটা মিনুর পক্ষে আইনী লড়াই করা আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, 'হাইকোর্টে শুনানিকালে আজ আদালত মিনিুকে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র চট্টগ্রামে পৌঁছলেই কারাগার থেকে মিনু মুক্তি পাবেন'।
এর আগে গতকাল শুনানিকালে অর্থের বিনিময়ে বা যেকোনও কৌশলে মূল আসামি নিজেকে বাঁচিয়ে নিরপরাধ ব্যক্তিকে জেলে রাখার ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
আরও পডুন: কারাভোগের পর ভারতে থেকে ফিরলেন নারীসহ ৩ বাংলাদেশি
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম কারাগারের একটি বালাম বই দেখতে গিয়ে মিনুর সাজা খাটার বিষয়টি উঠে আসে। সেখানে দেখা যায়, একজনের পরিবর্তে যাবজ্জীবন সাজা খাটছেন আরেক নারী। পরবর্তীতে বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন চট্টগ্রামের তরুণ আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. নোমান চৌধুরী বলেন, ‘আদালতে সংরক্ষিত ছবি সংবলিত নথিপত্র দেখে কুলসুম আক্তার কুলসুমী আর মিনু এক নয় বলে নিশ্চিত হন জেল সুপার। যেহেতু ইতোমধ্যে এ মামলার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হয়েছে, তাই মামলার উপ-নথি দ্রুত সময়ের হাইকোর্টে পাঠানো হয়।’
জানা যায়, মোবাইল ফোন নিয়ে বিবাদের জেরে ২০০৬ সালের ৯ জুলাই নগরীর রহমতগঞ্জ এলাকায় পোশাক কারখানার কর্মী কোহিনুর বেগম খুন হন। এ ঘটনায় করা মামলায় ২০০৭ সালের ২৬ অক্টোবর চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার উপজেলার গৌরস্থান মাঝেরপাড়া গ্রামের আনু মিয়ার মেয়ে কুলসুমীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০০৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্তি পান কুলসুমী। পরবর্তীতে এ মামলায় বিচার শেষে ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত এক রায়ে কুলসুমীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও একবছরের কারাদণ্ড দেয়। রায়ের দিন কুলসুমী আদালতে অনুপস্থিত থাকায় তাকে পলাতক দেখিয়ে রায় ঘোষণা করা হয়।
পরবর্তীতে ভাসমান বস্তিতে মিনুকে পায় কুলসুমী। মিনুর স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার পর তিন সন্তান নিয়ে চট্টগ্রামে ভাসমান বস্তিতে থাকতো সে। এ পরিস্থিতিতে মিনু ও তার সন্তানদের ভরণপোষণ দেয়ার প্রস্তাব দেয় কুলসুমী। বিনিময়ে একদিন আদালতে হাজির হতে হবে বলে জানানো হয় মিনুকে। আদালতে হাজির হলে তার জামিনও করিয়ে আনবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।
মিনু কুলসুমীর কথায় রাজি হয়ে কুলসুমী সেজে ২০১৮ সালের ১২ জুন চট্টগ্রাম আদালতে আত্মসমর্পন করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সেই থেকে মিনু কারাবন্দী। এরপর নিম্ন আদালতের সাজার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন কুলসুমী।
পরে গত ২৩ মার্চ মিনুর নথি হাইকোর্টে পাঠানোর আদেশ দেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভুঁঞার আদালত। পরে মামলার নথি হাইকোর্টে এলে এ বিষয়ে শুনানি শুরু হয়।
মিতু হত্যা: বাবুল আক্তার ৫ দিনের রিমান্ডে
চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশের এসপি বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
বুধবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম সরোয়ার জাহানের আদালতে তোলার পর তাকে রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
বাবুলের আইনজীবী আনিসুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার মিতুকে হত্যার অভিযোগ তুলে বাবুল আকতারসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন। এতে বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে মিতুকে হত্যার অভিযোগ আনেন তিনি।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বাবুল আক্তারকে এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই সাথে আগের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া কিলিং মিশনের সদস্য মুসা, কালু, অস্ত্র সরবরাহকারী এহেতাশামুল ভোলা, তার সহযোগী মুনীর, মোটর সাইকেল সরবরাহকারী সাইদুল আলম সিকদার ওরফে সাক্কু, শাহজাহান, আনোয়ার এবং ওয়াসিমকে আসামি হিসাবে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা: বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়েছে পিবিআই
বাবুল আকতারের নির্দেশে মুসা এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার পাশাপাশি কিলিং মিশনের নেতৃত্ব দিলেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এখনো তার খোঁজ পায়নি। আরও দু’জন আগেই পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছিল। পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আকতার চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনের সময় মুসা ছিল তার বিশ্বস্ত সোর্স। মিতু হত্যাকাণ্ডের পর বাবুল আক্তার তাকে ফোন এবং এসএমএস দিয়েছিল বলে নিশ্চিত হয়েছে পিবিআই।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া জানান, আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক এসপি বাবুল আকতারসহ আটজনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে এ মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআইয়ের প্রধান বনজ কুমার মজুমদার ঢাকায় সাংবাদিকদের জানান, মিতু হত্যায় বাবুলের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ জন্য নতুন একটি মামলায় তাকে আসামি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা: বাবুল আক্তারসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদরদপ্তরে অনানুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘মিতু হত্যায় বাবুল আকতারের সংশ্লিষ্টতা মিলেছে। তবে আইন অনুযায়ী পুলিশ চাইলেই মামলার বাদীকে গ্রেপ্তার করতে পারে না। তাই আমরা আজ তদন্তাধীন মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করব।’
ব্রিফিংয়ের পরপরই চট্টগ্রাম আদালতে বাবুল আকতারের করা মামলার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পিবিআই। পিবিআই চট্টগ্রামের উপপরিদর্শক আজমির হোসেন এই তথ্য জানিয়েছেন।
এর পর পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করতে পৌঁছান মিতুর বাবা মোশাররফ।
পিবিআই জানায়, মিতু হত্যায় বাবুলের সম্পৃক্ততার বিষয়ে এরই মধ্যে বাবুলের দুই বন্ধু গাজী আল মামুন ও সাইফুল ইসলাম ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা: বাবুল আক্তার ৫ দিনের রিমান্ডে
থানায় মামলা করতে আসা বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, যে কারণে বাবুল আক্তার চট্টগ্রামে সেই কারণে আমিও চট্টগ্রামে। আমার মেয়ের খুনের সঙ্গে বাবুল আক্তার যে জড়িত সেটা আগেই আমি উত্থাপন করেছিলাম।
মঙ্গলবার রাতে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নেয়ার কথা জানায় পিবিআই। এর আগে দুপুরে চট্টগ্রামের মনসুরাবাদ পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমাসহ পিবিআইয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ের কাছে ওআর নিজাম রোডে নির্মমভাবে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ছুরিকাঘাত ও গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাচঁলাইশ থানায় অজ্ঞাত পরিচয় তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মিতু হত্যাকাণ্ডের পর প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, জঙ্গিরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। কারণ তার স্বামী বাবুল আক্তার চট্টগ্রামে এএসপি থাকাকালে জঙ্গি বিরোধী অপারেশনে পুলিশের প্রথম সারির কর্মকর্তাদের একজন ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে বাবুল আক্তার ও মিতুর পরকীয়ার বিষয়টিও আলোচিত হয় গণমাধ্যমে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন পক্ষের বক্তব্যও নিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
হত্যাকাণ্ডের বছরখানেক পর থেকেই মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন দাবি করে আসছিলেন, বাবুল আক্তারের পরিকল্পনায় ও নির্দেশে তার মেয়ে মিতুকে খুন করা হয়েছে।
মিতু হত্যাকাণ্ডের পর একটি মাজারের খাদেম আবু নছর ওরফে গুন্নু ও শাহজামান ওরফে রবিন নামের আরও এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। পরে তারা জামিনে বেরিয়ে আসেন। হত্যকাণ্ডের ২০ দিন পর তদন্ত ভিন্নখাতে মোড় নেয়।
২০১৬ সালের ২৪ জুন মধ্যরাতে ঢাকার বনশ্রী এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুল আক্তারকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রায় ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাকে। পরে তাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। এরপর নানা গুঞ্জন ডালপালা ছড়ায়।
এসময় পুলিশ জানায়, বাহিনী থেকে পদত্যাগ করেছেন বাবুল আক্তার।
তবে বাবুল আক্তারের দাবি ছিল, তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেননি। ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন তিনি। নানা নাটকীয়তা শেষে ৬ সেপ্টেম্বর বাবুলকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মিতু হত্যার ২১ দিন পর ২৬ জুন গ্রেপ্তার করা হয় ওয়াসিম ও আনোয়ারকে। আদালতে জবানবন্দি দেন তারা। এরপর বেরিয়ে আসে হত্যায় জড়িতদের তথ্য। জবানবন্দিতে তারা জানান মুছার নেতৃত্বে ওয়াসিম, আনোয়ার, মো. রাশেদ, নবী, মো. শাহজাহান ও মো. কালু হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন।
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলে ছিলেন ওয়াসিম, মুছা ও নবী। মাহমুদাকে ছুরিকাঘাত করেন নবী। অস্ত্র সরবরাহ করেন এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা।
তবে কী কারণে, কার নির্দেশে তারা হত্যায় অংশ নিয়েছেন তা নিয়ে কোন তথ্য দেননি। একই বছরের ৪ জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের মধ্যে রাঙ্গুনিয়ায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন নবী ও রাশেদ। মুছা ও কালুকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এক পর্যায়ে মুছাকে ধরিয়ে দিতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ।
২০১৬ সালের ২২ জুন চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে পুলিশ মুছাকে ধরে নিয়ে গেছে বলে দাবি করে আসছেন তার স্ত্রী পান্না আক্তার। এ অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছে পুলিশ।
ইউনুছ আলী আকন্দকে সতর্ক করল হাইকোর্ট
সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি না হয়েও রিট দায়ের করায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দকে সতর্ক করেছেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, শখের বশে কোনো মামলা (রিট) করবেন না। এ ধরনের রিট করলে খারিজ করে বড় অঙ্কের জরিমানা করা হবে। জরিমানা দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবেন।
রাজধানীতে সম্প্রতি এক নারী ডাক্তারের সাথে এক ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের বাকবিতণ্ডার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে ও লকডাউনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট শুনানির জন্য উপস্থাপন করলে মঙ্গলবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: চিকিৎসক-পুলিশের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি কাম্য নয়: হাইকোর্ট
শুনানির শুরুতে অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ আদালতে চিকিৎসক-পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের বাকবিতণ্ডার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন চেয়ে রিট ও লকডাউনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন।
তখন আদালত বলেন, মিস্টার আকন্দ আপনি শখের বশে মামলা করবেন না। চিকিৎসক-পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের বাকবিতণ্ডার ঘটনায় রিট করার আবেদনের এখতিয়ার (লোকাস স্ট্যান্ডি) আপনার নেই। এটা আগেই বলেছি। এ ধরনের রিট রিজেক্ট করলে বড় অঙ্কের জরিমানা (হেভি কস্ট) দিয়ে রিজেক্ট করব। প্রস্তুত থাকবেন।‘
আরও পড়ুন: চিকিৎসক-পুলিশের বাগবিতণ্ডা: হাইকোর্টের নজরে আনলেন এক আইনজীবী
এর আগে সোমবার লকডাউনে মুভমেন্ট পাস নিয়ে চিকিৎসক-পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের বাকবিতণ্ডার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন এই আইনজীবী। রিটে চিকিৎসককে হয়রানির অভিযোগ এনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মামুনুর রশিদ ও সংশ্লিষ্ট পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। এছাড়া ওইদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়।
আরও পড়ুন: লকডাউনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট
এদিকে গত ২৫ এপ্রিল জরুরি অবস্থা জারি করা ছাড়া লকডাউন দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। দুটি রিটই দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ।
আলোচিত বিষয় নিয়ে রিটকারী আইনজীবী হিসেবে পরিচিত অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ গত বছরের ১২ অক্টোবর ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা নিয়ে ফেসবুকে কটাক্ষ করে স্ট্যাটাস দেওয়ায় গুরুতর আদালত অবমাননা হওয়ায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন আপিল বিভাগ।
এ ঘটনায় তাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সাথে তাকে তিন মাসের জন্য আইনপেশা থেকে বরখাস্ত করেন আদালত। এছাড়া এর আগে রিট করে জরিমানাও গুণেছেন এই আইনজীবী।