খালেদা জিয়া
খালেদা জিয়া ও হাজী সেলিম নির্বাচন করতে পারবেন না: খুরশীদ আলম
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা পরিচালনাকারী সুপ্রিমকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছেন, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী সেলিম আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া কিংবা হাজী সেলিম দুই বছর বা তার বেশি সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাই হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী খালেদা জিয়া কিংবা হাজী সেলিমসহ সাজাপ্রাপ্ত কেউই আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরায় ৫০ জেলে আটক
সোমবার (২৩ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।
এসময় খুরশীদ আলম খান বলেন, হাইকোর্ট গতকালের প্রকাশিত রায়ে বলেছেন যে সাজা কখনও স্থগিত হয় না। উপর্যুক্ত আদালতে সাজা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নাই।
তিনি বলেন, এই রায়ের আলোকে খালেদা জিয়া ও হাজী সেলিমসহ দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিই আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। কারণ তাদের সাজা বাতিল হয়নি। যদি হাইকোর্টের রায় আপিল বিভাগ সংশোধন করেন বা বাতিল করেন, সেটা ভিন্নকথা।
এর আগে রবিবার হাইকোর্ট থেকে প্রকাশিত এক রায়ে বলা হয়, উচ্চ আদালত কর্তৃক সাজা বাতিল না হলে অথবা সাজা ভোগের পর ৫ বছর অতিবাহিত না হলে আপিল বিচারাধীন ও জামিনে থাকা কোন দণ্ডিত ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
প্রকাশিত রায়ে বলা হয়, এই মামলা থেকে জানা যায় যে আবেদনকারীদের বিচারিক আদালতে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং তারা দুর্নীতির জন্য দণ্ডিত হয়েছেন। দুর্নীতির অভিযোগ একটি গুরুতর অপরাধ। একজন ব্যক্তির সততার মূলে আঘাত করে দুর্নীতি।
একজন সংসদ সদস্য হলেন ক্ষমতা, সম্পত্তি ও জনগণের কল্যাণের ট্রাস্টি। তাদের উচ্চ নৈতিক চরিত্রের অধিকারী হতে হবে এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ের সততা থাকতে হবে। এর থেকে কোনো বিচ্যুতি হলে তা সততা ও নৈতিক স্খলন হিসাবে বিবেচিত হয়।
আমরা মনে করি, যে অপরাধের জন্য আবেদনকারীদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, তা তাদের নৈতিক স্খলন।
আরও পড়ুন: তারেক-জোবাইদাকে দোষী সাব্যস্ত করা নিম্ন আদালতের বিচারককে হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি
রায়ের পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়েছে, সংবিধান নিজেই একজন সংসদ সদস্যের পদ সৃষ্টি করেছে ও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির অযোগ্যতাও নির্ধারণ করেছে। দুর্নীতিগ্রস্ত লোক এমপি হিসেবে নির্বাচিত হলেও সে তার দায়িত্ব পালন করতে পারে না। কারণ সেটা তার কোন ভয় ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার শপথের বিপক্ষে চলে যায়।
এই মামলায়, সাক্ষ্য-প্রমাণ যাচাই-বাছাই শেষে বিচারক আবেদনকারীদের দোষী সাব্যস্ত করেছেন। ঐ রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিল করেছেন যা এই আদালতে বিচারাধীন। আপিল বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও, তাদের অবস্থান হলো তারা দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি।
এই আদালত তাদের সাজা স্থগিত করেননি, কিন্তু তারা জামিন পেয়েছেন। জামিন আদেশ দ্বারা, সাজা স্থগিত করা হয়েছে বলে মনে করা হয়, কিন্তু দোষী সাব্যস্ততা বলবৎ থাকে। আবেদনকারীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুবিধার্থে সাজা স্থগিত রেখে সংবিধানের ৬৬(২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই।
আদালত বলেন, উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, যদিও অভিযুক্ত আবেদনকারীদের জামিন দেওয়া হয়েছে, তবে সাজা স্থগিতের প্রশ্ন ওঠেনি। সেই অনুযায়ী, দোষী আবেদনকারীদের সাজা ভোগ করে মুক্তির পর ৫ বছর অতিবাহিত না হলে অথবা উচ্চ আদালত কর্তৃক তাদের সাজা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তারা সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদ নির্বাচনে অংশ গদ্রহণ করতে পারবেন না।
উল্লেখ্য যে, একজন ব্যক্তি যিনি বৈধভাবে সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হলেও পরবর্তীতে দোষী সাব্যস্ত এবং দণ্ডিত, হলে সংবিধানের ৬৭(১)(ঘ) অনুযায়ী তার আসন স্বয়ংক্রিয়ভাবে শূন্য হয়ে যাবে।
এর আগে ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর নিম্ন আদালতে দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত হলে আপিলে বিচারাধীন অবস্থায় কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে রায় দেন হাইকোর্ট।
দুর্নীতির দায়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজা স্থগিত চেয়ে আমান উল্লাহ আমানসহ বিএনপির পাঁচ নেতার আবেদন খারিজ করে এ আদেশ দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের বেঞ্চ ওই রায় দেন।
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর রবিবার ওই পর্যবেক্ষণসহ ৪৪ পৃষ্ঠার ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ: আইজিপি
আড়াই ঘণ্টা পর সিসিইউ থেকে কেবিনে ফিরেছেন খালেদা জিয়া
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর আবারও সিসিইউ থেকে কেবিনে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে তার শারীরিক অবস্থার কারণে শনিবার (১৪ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয় বলে জানান তিনি।
খালেদা জিয়ার ইসিজি, এক্স-রেসহ বেশ কিছু পরীক্ষা করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক বলেন, এসব পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে অল্প সময়ের জন্য ভর্তি করা এটাই প্রথম নয়। কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর, তাকে অতীতে তার কেবিনে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার বর্তমান স্বাস্থ্যের অবস্থা উদ্বেগের বিষয় এবং মেডিকেল বোর্ড তার অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তার স্বাস্থ্যের হঠাৎ কোনো অবনতি চিন্তার কারণ।
আরও পড়ুন: বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দাবিতে বিএনপির প্রতীকী অনশন শুরু
এক প্রশ্নের জবাবে একজন চিকিৎসক উল্লেখ করেন, খালেদা জিয়া শারীরিক দুর্বলতার কারণে অনেক ওষুধ খেতে চাননা। তিনি স্যালাইনে আছেন এবং নিয়মিত ইনজেকশন প্রয়োজন। দুই দিন আগে, তার হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কিছুটা উন্নতি হয়েছিল, কিন্তু তারপর থেকে তা কমে গেছে। তারা ইনসুলিন দিয়ে তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।
ডাক্তার আরও উল্লেখ করেছেন, তারা বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে লিভারের সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন, কিন্তু লিভার ট্রান্সপ্লান্ট ছাড়া স্থায়ী সমাধান অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে। বিভিন্ন মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়া গেছে। বোর্ড প্রতিনিয়ত এসব রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে চিকিত্সা পরিকল্পনা সংশোধন করছে। একাধিক হাসপাতালে বেশ কিছু পরীক্ষা করা হচ্ছে। বোর্ড তার জটিল স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার পাশে আছেন তার পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান সিঁথি।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বর্তমানে কিডনি, শ্বাসকষ্ট, হার্টের সমস্যা এবং লিভারের জটিলতায় ভুগছেন।
৯ আগস্ট রাতে তাকে পুঙ্খানুপুঙ্খ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞ ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার এবং একটি ১৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের নির্দেশনায় তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জীবন বাঁচাতে বাধা অপসারণ করুন: সরকারের প্রতি বিএনপির নীতিনির্ধারকদের আহ্বান
খালেদা জিয়ার জীবন ঝুঁকির মুখে পড়লে সরকারকে ভয়াবহ পরিণামের হুঁশিয়ারি ফখরুলের
বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দাবিতে বিএনপির প্রতীকী অনশন শুরু
কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে তিন ঘণ্টার প্রতীকী অনশন কর্মসূচি শুরু করেছে বিএনপি।
শনিবার সকাল ১১টা ২১ মিনিটে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর্মসূচি শুরু হয়।
দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জীবন বাঁচাতে বাধা অপসারণ করুন: সরকারের প্রতি বিএনপির নীতিনির্ধারকদের আহ্বান
বিএনপি চেয়ারপার্সনের স্থায়ী মুক্তির দাবিতে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা এ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন।
প্রতীকী অনশন দুপুর ২টার দিকে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়া দেশের সব জেলা শহর ও মেট্রোপলিটন শহরে একই ধরনের কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
একই দাবিতে গত সোমবার রাজধানীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেসহ সারাদেশে সমাবেশ করেছে বিএনপি।
আরও পড়ুন: বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে: ওবায়দুল কাদেরের 'ইউরেনিয়াম' মন্তব্য প্রসঙ্গে আব্বাস
গত ৯ আগস্ট থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে মেডিকেল বোর্ড সুপারিশ করে যে, বাংলাদেশে এখন তার চিকিৎসার কোনো বিকল্প না থাকায় তাকে দ্রুত বিদেশে একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি সেন্টারে পাঠানো হোক।
লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট, চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন খালেদা জিয়া।
গত ৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করলেও তা প্রত্যাখ্যান করা হয়।
আরও পড়ুন: আমাদের সর্বোচ্চটা করেছি, প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া: মেডিকেল বোর্ড
খালেদা জিয়ার জীবন বাঁচাতে বাধা অপসারণ করুন: সরকারের প্রতি বিএনপির নীতিনির্ধারকদের আহ্বান
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সব বাধা অপসারণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দলটির স্থায়ী কমিটি।
বুধবার সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, এটা এখন স্পষ্ট, সরকার তার প্রধান প্রতিপক্ষ খালেদা জিয়াকে বিদেশে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে জাতীয় নির্বাচনের আগে তাকে হত্যা করতে চায়।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা নিয়ে চিকিৎসকদের বক্তব্যে দেশের মানুষের মতো বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী, সদস্য ও সমর্থকরা উদ্বিগ্ন।
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটি আমাদের নেত্রীর (খালেদা জিয়া) জীবন বাঁচাতে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব এরকম যেকোনো দেশে পাঠাতে সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে বিদেশে যাওয়ার পথে আরোপিত অমানবিক প্রতিবন্ধকতা অবিলম্বে অপসারণের আহ্বানও জানিয়েছে স্থায়ী কমিটি।’
আরও পড়ুন: আবারও সিসিইউতে খালেদা জিয়া
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের শর্ত, তার বয়স ও অসুস্থতা এবং বিদ্যমান আইনের অযৌক্তিক ও ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে অশালীন, নিষ্ঠুর ও অমানবিক বক্তব্য দিয়ে তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার 'অসুস্থ' প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী স্থায়ী কমিটি।
সোমবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের ফলাফল জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ফখরুল বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটি দৃঢ়ভাবে মনে করে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে যেভাবে ক্যান্টনমেন্টের বাসভবন থেকে অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে, ঠিক তেমনি কোনো অপরাধ না করেও নির্ধারিত রায়ের মাধ্যমে তাকে বিনা চিকিৎসায় এবং ইচ্ছাকৃত পরিত্যক্ত কারাগারে পাঠিয়ে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু থেকে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে নদীতে ফেলে দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য এবং প্রায় ৮০ বছর বয়সী মৃতপ্রায় ব্যক্তির জন্য কান্নাকাটি করার কোনো মানে নেই বলে তার সাম্প্রতিক মন্তব্য প্রমাণ করেছে যে বর্তমান 'দখলদার' সরকার তাকে জীবিত দেখতে চায় না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কোনো সভ্য, মানবিক ও সুস্থ সাধারণ নাগরিক, কোনো দেশের সরকার প্রধানের কথাই বলা হোক না কেন, প্রতিপক্ষকে নিয়ে এমন ‘সন্ত্রাসী’ শব্দ উচ্চারণ করতে পারে না। আমাদের নেত্রীর মৃত্যু চায় এমন সরকার অন্যায়ভাবে তার উন্নত চিকিৎসায় বাধা সৃষ্টি করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সরকারের এই মনোভাব ও আচরণ দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’
খালেদা জিয়াকে তার প্রাপ্য চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করলে যদি খারাপ কিছু ঘটে তাহলে সরকারকে জনগণের রোষের মুখে পড়তে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘বিদেশে চিকিৎসার পথ সুগম করতে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে একের পর এক কর্মসূচি পালন করছেন তারা। খালেদা জিয়ার (বিদেশে) চিকিৎসা নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, তারা (সরকার) তাকে হত্যা করতে চায়। তাকে চিকিৎসার সুযোগ না দেওয়া মানে জাতীয় নির্বাচনের আগে তাকে হত্যা করা।’
তিনি বলেন, সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে আগামী দিনগুলোতে তাদের আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে।
এর আগে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে গঠিত মেডিকেল বোর্ড বাংলাদেশে তার চিকিৎসার কোনো বিকল্প না থাকায় তাকে দ্রুত বিদেশে মাল্টিডিসিপ্লিনারি সেন্টারে পাঠানোর সুপারিশ করেছে।
হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে বোর্ডের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, লিভার সিরোসিসের কারণে পেট ও বুকে পানি জমে যাওয়া, অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ এবং সংক্রমণ রোধে যথাযথ চিকিৎসার অভাবে ৭৮ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
আরও পড়ুন: খালেদাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ক্ষমতা রয়েছে সরকারের: আইন বিশেষজ্ঞরা
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার আবেদন নাকচ আইন মন্ত্রণালয়ের
আমাদের সর্বোচ্চটা করেছি, প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া: মেডিকেল বোর্ড
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে জরুরি লিভার ট্রান্সপ্লান্টের জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছে এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড।
মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ড. শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, লিভার সিরোসিসসহ বেশ কিছু গুরুতর রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি (খালেদা জিয়া) যেকোনো সময় সংকটে পড়তে পারেন।
সোমবার (৯ অক্টোবর) এভারকেয়ার হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ড. এফ এম সিদ্দিক বলেন, লিভার সিরোসিসের জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সনের এই মুহূর্তে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, 'আমরা যা করতে পারি সব করেছি। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য বিদেশের যেকোনো উন্নত প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরও বলেন, 'যথাযথ চিকিৎসার অভাবে' বিএনপি চেয়ারপার্সনের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে।
ড. এফ এম সিদ্দিক বলেন, 'মেডিকেল বোর্ডের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলতে চাই যে, যেকোনো মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি প্রতিষ্ঠানে লিভার ট্রান্সপ্লান্টের জন্য ট্রান্সসাগুলার ইন্ট্রাহেপাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শন্ট (টিআইপিএস) দিয়ে তার চিকিৎসা করার জন্য এখনও সময় আছে।’
আরও পড়ুন: খালেদার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি হয়নি: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, তার পেট ও বুকে পানি জমে যাওয়া এবং অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে (টিআইপিএস) প্রয়োজন।
বোর্ডের আরেক সদস্য উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক ঘন ঘন ব্যবহারের কারণে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় কাজ করছে না।
গত ৯ আগস্ট থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
তিনি লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার তার নিঃশর্ত মুক্তি এবং জীবন বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে 'অ্যাডভান্সড মেডিকেল সেন্টারে' চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেন।
কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছে, তাকে প্রথমে কারাগারে ফিরে যেতে হবে এবং পরে এ বিষয়ে অনুমতি নিতে আদালতে আবেদন করতে হবে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী ইতোমধ্যে মীমাংসিত পিটিশনটি খোলার কোনো সুযোগ নেই। এটি খোলার আর কোনো সুযোগ নেই।
তবে কিছু আইন বিশেষজ্ঞ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবী মনে করেন, সরকার তার বিচক্ষণ ক্ষমতা ব্যবহার করে তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিতে পারে।
গত ৩ অক্টোবর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, বর্তমান 'কাপুরুষোচিত' সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি না দিয়ে 'হত্যা' করতে চায়।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে ছয় মাসের জন্য কারাগার থেকে মুক্তি দেয়। তবে শর্ত দেওয়া হয় যে, তিনি গুলশানের বাসায় অবস্থান করবেন এবং দেশ ত্যাগ করবেন না। পরে সরকার অষ্টমবারের মতো খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ায়।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে খালেদাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান বিএনপির
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে মন্ত্রী-এমপিদের বক্তব্য নিষ্ঠুর: গণতন্ত্র মঞ্চ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা নিয়ে মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের এমপিদের বক্তব্যকে নিষ্ঠুর ও নৃশংস আখ্যায়িত করেছে কয়েকটি বিরোধী দল ও সংগঠনের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গণতন্ত্র মঞ্চ।
গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ না দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
বৈঠকে বলা হয়, চিকিৎসা পাওয়া তার নাগরিক ও মানবাধিকার। খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে রাজনৈতিক দরকষাকষির কোনো সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সংকট: ১৯ জুন মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ করবে গণতন্ত্র মঞ্চ
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার অধিকার কেড়ে নিলে যেকোনো স্বাস্থ্য ঝুঁকির পুরো দায় সরকারকেই নিতে হবে।
সোমবার (২ অক্টোবর) ভাসানী অনুসারী পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু'র সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব গণতন্ত্র মঞ্চের পরবর্তী সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন ও রাষ্ট্রসংস্কর আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন।
এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে করা আবেদন নাকচ করে দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো একটি আবেদন পাওয়ার পর আইন মন্ত্রণালয় এ অভিমত ব্যক্ত করে।
এর আগে শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে আল্টিমেটাম দেন।
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার সাজার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট, চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: একতরফাভাবে আগামী নির্বাচন করতে আরপিও সংশোধন করেছে সরকার: গণতন্ত্র মঞ্চ
১৯-২১ জুলাই চট্টগ্রাম অভিমুখে পদযাত্রা করবে গণতন্ত্র মঞ্চ
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সুযোগ নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সুযোগ নেই।
সোমবার (২ অক্টোবর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান।
আরও পড়ুন: খালেদাকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে যেহেতু আইনি জটিলতা রয়েছে, তাই সেই পত্র আমি আইন মন্ত্রণালয় পাঠিয়ে দিয়েছিলাম তাদের মতামতের জন্য।
তিনি আরও বলেন, যে মতামতটা আসছে সেই মতামত বোধহয় তাদের (খালেদা জিয়ার পরিবার) পক্ষে আসেনি। এটা দেওয়া সম্ভব নয় বলে আইন মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের জানিয়েছে।
তিনি বলেন, এখন আমাদের আর কিছু করণীয় নেই বলে আমি মনে করছি।
সিদ্ধান্ত কি খালেদা জিয়ার পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হবে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ওনারা যদি জানতে চান আমরা অবশ্যই জানিয়ে দেব। তবে এরই মধ্যে উনি জেনে গেছেন।
তিনি বলেন, তাদের কোনো কিছু জানার থাকলে, কথা বলতে পারেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত যেটা সেটা পরিবর্তন হওয়ার সুযোগ এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই।
আরও পড়ুন: ভিসা নীতি আমেরিকার নিজস্ব ব্যাপার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য আদালতের অনুমতি লাগবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকার আন্তরিক: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয়ে যথেষ্ট আন্তরিক।
তিনি বলেন, বরং বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে রাজনীতি করছে।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্কে নতুনভাবে চালুকৃত কেবল-কার (রোপওয়ে) উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: আমরা নির্বাচনের মাঠে সবার সঙ্গে খেলে জিততে চাই, আর বিএনপি চায় পালাতে: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, 'খালেদা জিয়া যতবারই হাসপাতালে গেছে ততবারই বিএনপি বলেছে বিদেশ না পাঠালে খালেদা জিয়ার জীবন সংকটাপন্ন এবং তাকে বাচাঁনো কঠিন হবে। কিন্তু প্রতিবারই আল্লাহর রহমতে তিনি হাসপাতালে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের চিকিৎসা ও সেবায় সুস্থ হযয়ে বাড়ি ফেরত গেছেন। এখনো বেগম খালেদা জিয়া যাতে সর্বোচ্চ চিকিৎসা পান সরকার সেজন্য যা কিছু করা দরকার সেটি করছে।'
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রকল্প পরিচালক ও উপপ্রধান বন সংরক্ষক গোবিন্দ রায়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের ডিএফও আব্দুল্লাহ আল মামুন ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের ট্রেন কারো জন্য অপেক্ষা করবে না, যথাসময়ে নির্বাচন হবে: তথ্যমন্ত্রী
শুধু শমসের-তৈমুর নয় আরও অনেকেই বিএনপি থেকে চলে যাবে: তথ্যমন্ত্রী
রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে খালেদা জিয়াকে নিয়ে মিথ্যা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী: ফখরুল
প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে খালেদা জিয়াকে নিয়ে মিথ্যা বলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকালে ‘শ্রমিক-কর্মচারি’ কনভেনশনে ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
ফখরুল বলেন, ‘শেখ হাসিনা আজ ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে তিনি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলছেন।’
আরও পড়ুন: আবারও সিসিইউতে খালেদা জিয়া
তিনি দাবি করেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির মামলা নেই। তারা যে দুই কোটি ৩৩ লাখ টাকার কথা বলে, তা এখন 8 কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে... এটা ব্যাংকে আছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে, যাতে তিনি রাজনীতি করতে না পারেন।’
এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার গুরুতর শারীরিক অবস্থার জন্য সরকারকে দায়ী করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার তাকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় বন্দি রেখে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ক্ষমতায় থাকার জন্য খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে: ফখরুল
ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার ভয়ঙ্কর দানব, লুটেরা, 'বর্গিদের' মতো সরকার। তারা বিদেশে সম্পদ পাচার করে বাগান তৈরি করছে। আর আমার দেশে মানুষ অসহায় ও ক্ষুধার্ত।’
শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই শ্রমিক শ্রেণী অতীতে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। আমি বিশ্বাস করি, শ্রমিকরাই এবার অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।’
‘ইনশাআল্লাহ, আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। আমরা এই সরকারকে পদত্যাগ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারব।’
মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের সামনের সড়কে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদ যৌথভাবে ‘দ্রব্যমূল্য, মজুরি কমিশন, জাতীয় বেতন স্কেল, ন্যূনতম মজুরি, শ্রম পরিস্থিতি এবং ন্যূনতম মজুরি’ এবং সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করে।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের নেতা আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।
আরও পড়ুন:দেশে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় 'ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রঐক্য' গঠন
ক্ষমতায় থাকার জন্য খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে: ফখরুল
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে সরকারের ক্ষমতায় থাকা কঠিন হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফরখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। কারণ তিনি মুক্ত হলে সরকারের পক্ষে ক্ষমতায় থাকা কঠিন হবে।
তিনি বলেন, বেগম জিয়া কারাগার থেকে বের হলে দেশের গণতন্ত্র মুক্তি পাবে এবং জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে ঢাকার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহার এবং সরকার পতনের একদফা দাবিতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আজীবন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করা খালেদা জিয়াকে আজ ঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে যে আবেদন করা হয়েছে তা সরকার বাস্তবায়ন করবে।’
আরও পড়ুন: আবারও সিসিইউতে খালেদা জিয়া
ফখরুল বলেন, এই ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে সারাদেশের মানুষ যখন জেগে উঠেছে তখন, এই নারী সমাবেশ তাদের আরও সাহস যুগিয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, এই সরকারের দমন-পীড়ন থেকে মা-বোনেরাও রক্ষা পায়নি। সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের নামে তাদের আটকে রাখা হয়েছে। লেখালেখির মাধ্যমে সত্য তুলে ধরার জন্য তাদের পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের দুর্ভোগের কথা জানিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, সরকারের নির্ধারিত মূল্য কেউ মানছে না এবং সব জায়গায় আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট।
সরকার উৎখাতে নারী-পুরুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার ফের ক্ষমতায় এলে দেশের স্বাধীনতা বিলীন হয়ে যাবে।
মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আফরোজা আক্তার রিতা, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, দলের নেত্রী হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচনে চুরি করলে রেহাই নেই: আমীর খসরু
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী: ফখরুল