রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশ-জাপানের মধ্যে ৪৪তম ওডিএ ইয়েন ঋণচুক্তি সই
বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান মঙ্গলবার বাংলাদেশে জাপানের ৪৪তম অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসটেন্স (ওডিএ) ইয়েন ঋণের নোট বিনিময়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
৪৪তম জাপানি ইয়েন লোন প্যাকেজের প্রথম কিস্তি হল ৩০ বিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ২০৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
দুই দেশের মধ্যে এই চুক্তির ভিত্তিতে জাইকা বাংলাদেশ অফিসের প্রধান প্রতিনিধি ইশিগুচি তোমোহিদে এবং শরীফা খান প্রাসঙ্গিক ঋণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
আরও পড়ুন: স্পিকারের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি আজকে ৪৪তম জাপানিজ ইয়েন লোন প্যাকেজ সংক্রান্ত নোটের বিনিময়ে স্বাক্ষর করতে পেরে আনন্দিত।’
ঋণ প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে ‘জনগণের আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করার জন্য উন্নয়ন নীতি ঋণ।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের সময়, প্রধানমন্ত্রী কিশিদা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি নতুন বাজেট সহায়তা ঋণ বিবেচনা করার আশ্বাস দেন এবং এর ভিত্তিতে জাপান সরকার মন্ত্রিসভার বৈঠকে দ্রুত ঋণ অনুমোদন করে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা বলেন, ‘আমি আশা করি এটি বাংলাদেশ সরকারকে বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে অবদান রাখবে।’
আরও পড়ুন: কৌশলগত অংশীদারিত্বে বাংলাদেশের সঙ্গে বৃহত্তর সম্পর্ক গড়তে চায় জাপান: রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি
বাংলাদেশ ও জাপান 'বিস্তৃত ও লক্ষ্যভিত্তিক' অংশীদারিত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করছে: রাষ্ট্রদূত
স্পিকারের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে সোমবার (২৬ জুন) তার কার্যালয়েসৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
সাক্ষাৎকালে তারা স্পিকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সাম্প্রতিক জাপান সফর, বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, বাংলাদেশে জাপানের বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়ন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
স্পিকার বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই জাপান বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। ১৯৭৩ সালে জাপান সরকারের আমন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় সফরে যান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের প্রতিনিধিদলের সাম্প্রতিক জাপান সফরটি ছিল খুবই ফলপ্রসূ।
জাপানের হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার ও হাউজ অব কাউন্সিলরসের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতা, ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
জাপানে সংসদের অধিবেশন পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বাংলাদেশ সংসদীয় প্রতিনিধিদলের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ হয়েছে।
জাপানের ন্যাশনাল মিউজিয়াম ফর ইমার্জিং সাইন্স এন্ড ইনোভেশন এবং ওসাকাস্থ একুরিয়াম পরিদর্শন স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে উল্লেখ করেন স্পিকার।
বাংলাদেশের সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সাম্প্রতিক জাপান সফর জাপানের জন্য অত্যন্ত গৌরবের উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, বাংলাদেশ জাপানের অনেক পুরনো বন্ধু।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পর বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকারের নেতৃত্বে সংসদীয় প্রতিনিধিদলের জাপান সফর জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্কের মাইলফলক।
জাপান বাংলাদেশের বিনিয়োগ সহযোগী। ভবিষ্যতে জাপান-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সফর বিনিময় দুদেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে জাপানের বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং তথ্য-প্রযুক্তি, অবকাঠামো উন্নয়ন ইত্যাদি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে কাজ করার জন্য রাষ্ট্রদূতকে আহ্বান জানান স্পিকার।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রশংসা জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের
স্পিকারের সঙ্গে সফররত জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলের সাক্ষাৎ
নুর ইসরায়েলের মোসাদের সঙ্গে ৩ বার সাক্ষাৎ করেছেন: ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এসওয়াই রমজান বৃহস্পতিবার বলেছেন, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে তিনটি বৈঠক করেছেন।
ঢাকায় ফিলিস্তিন দূতাবাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্রদূত এ দাবি করেন।
মোসাদের সঙ্গে এ ধরনের বৈঠক বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে তিনি মনে করেন।
রমজান বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা সূত্রগুলো কাতার, দুবাই ও ভারতে ইসরায়েলিদের সঙ্গে নুরের সাক্ষাতের ছবি পেয়েছে।’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে সিলেটে ভিপি নুরের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দাখিল
রাষ্ট্রদূতের মতে, গত বছর কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপের সময় ফিলিস্তিনি গোয়েন্দা সংস্থা প্রথম বিষয়টি লক্ষ্য করে।
দূত বলেন, নুর যদি মোসাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি অস্বীকার করেন, তা ফিলিস্তিনের জন্য যথেষ্ট।
তিনি বলেন যে তবে তা বাংলাদেশ সরকার বা বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য হুমকি।
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ সরকারকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে বলেছেন।
আরও পড়ুন: ৭ কর্মদিবসে সাবেক ভিপি নুরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে হাজিরের নির্দেশ
চট্টগ্রামে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে জ্বালানি খাতে বিপুল সহযোগিতার সম্ভাবনা রয়েছে: কসমস ডায়ালগে নেপালের রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি বৃহস্পতিবার বলেছেন, তার দেশ দ্বিপক্ষীয় ও উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতায় জ্বালানি খাতে মাইলফলক স্থাপনসহ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ঢাকার সঙ্গে সহযোগিতা করার বিপুল সম্ভাবনা দেখছে।
তিনি বলেন, ‘৪০ মেগাওয়াট পর্যন্ত রপ্তানিসহ ভারতীয় গ্রিডের মাধ্যমে নেপাল থেকে বাংলাদেশে প্রথম ত্রিপক্ষীয় বিদ্যুৎ লেনদেন সহজতর করতে ভারত সরকারের সিদ্ধান্তে আমরা উৎসাহিত হয়েছি। এটি কেবল একটি প্রারম্ভিক ও প্রতীকী পদক্ষেপ। কিন্তু আমাদের দ্বিপক্ষীয় এবং জ্বালানিতে উপ-আঞ্চলিক যৌথ সহযোগিতার জন্য একটি নতুন ড্রাইভ শুরু করতে এটি একটি বিশাল মাইলফলক হবে।’
এছাড়া রাষ্ট্রদূত বলেন, নেপালে ৬৮৩ মেগাওয়াট সানকোশি থ্রি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে যৌথ বিনিয়োগের বিষয়েও আলোচনা চলছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ ভারতের জিএমআর কোম্পানির সঙ্গে আপার কর্নালি থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চুক্তি চূড়ান্ত করতে সচেষ্ট রয়েছে।’
কসমস গ্রুপের জনহিতকর শাখা কসমস ফাউন্ডেশনের চলমান রাষ্ট্রদূতের লেকচার সিরিজের অংশ হিসেবে ‘বাংলাদেশ-নেপাল রিলেশন: প্রগনসিস ফর দ্য ফিউচার’- শীর্ষক কসমস ডায়ালগে মূল বক্তব্য দেওয়ার সময় নেপালের রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
ভারতে বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার এবং যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত এবং কসমস ফাউন্ডেশনের সম্মানিত ইমেরিটাস উপদেষ্টা তারিক এ করিম আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন এবং কসমস ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি মাসুদ খান স্বাগত ও সমাপনী বক্তব্য দেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব সাব্বির আহমেদ চৌধুরী, নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব হরি শর্মা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন এবং ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পারভেজ করিম আব্বাসি প্রমুখ বক্তব্য দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, নেপালের জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনা এবং বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা একটি বহুল আলোচিত বিষয়।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বর্তমানে নেপালের জ্বালানি উদ্বৃত্ত রয়েছে। কিন্তু, আমরা এখন যা উৎপাদন করছি তার মাত্র ৫ শতাংশ অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক। এরমানে, যদি পুরোপুরি ব্যবহার করা যায়, তাহলে নেপালের জলবিদ্যুৎ দক্ষিণ এশিয়ার ক্লিন এনার্জি সলিউশনে অসাধারণ অবদান রাখতে পারে।’
তারিক করিম বলেন, বাংলাদেশ-নেপাল সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে এমন একটি বিষয় সম্পর্কে যদি বলি, তবে তা হলো দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি খাতে সহযোগিতা করা।
আরও পড়ুন: নর্ডিক দেশগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে আরও শক্তিশালী অংশীদারিত্ব করতে আগ্রহী: কসমস ডায়ালগে রাষ্ট্রদূতেরা
তিনি বলেন, এখন নেপাল ও বাংলাদেশ অবশেষে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে একটি নতুন যুগে প্রবেশ করতে চলেছে।
তিনি এটিকে বিশাল ও অত্যন্ত আকর্ষণীয় সম্ভাবনা হিসেবে দেখছেন।
প্রাক্তন কূটনীতিক বলেন, সূচনা হিসেবে যদি ৪০ মেগাওয়াট আসতে শুরু করে, পরবর্তীতে এটি একটি সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিবে।
তিনি এই অঞ্চলে; বিশেষ করে ভুটান, নেপাল এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের জলবিদ্যুতের সম্ভাবনা তুলে ধরেন।
করিম বলেন, দুপক্ষের কাছ থেকে যে পরিমাণ প্রত্যাশা ছিল, সম্পর্ক সেই গতিতে এগোয়নি।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমাদের বুঝতে হবে, আমরা যদি কিছু চাই তবে আমাদের কিছু দিতে হবে। আমরা যদি কিছু অস্বীকার করি, তাহলে আমাদের প্রতিও কিছু অস্বীকার করা হবে।’
মাসুদ খান বলেন, দুই দেশের মধ্যে অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীল খাত হলো জ্বালানি।
তিনি বলেন, ‘নেপাল তার জলবিদ্যুতের সক্ষমতা বাড়াতে এবং বাংলাদেশ তার গ্যাস উৎপাদনকে অপ্টিমাইজ করার সঙ্গে সঙ্গে এটিও বৃদ্ধি পাবে।’
জ্বালানি সহযোগিতার জন্য একটি সচিব-পর্যায়ের যৌথ স্টিয়ারিং কমিটি রয়েছে, যা ২০২২ সালের আগস্টে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
মাসুদ বলেন, জ্বালানি ও বিদ্যুতের বাণিজ্য ত্রিপক্ষীয় হতে হবে, কারণ ভারতের সম্মতি এবং অংশগ্রহণ সম্ভবত অপরিহার্য ও সমালোচনামূলক হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতির জন্য সেই দিকটির ওপর কিছুটা জোর দেওয়া প্রয়োজন।’
সাব্বির আহমেদ চৌধুরী বলেন, দুই দেশকে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে অব্যবহৃত সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে হবে।
তিনি বলেন, ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে নেপাল থেকে বাংলাদেশে ৪০-৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি করা হচ্ছে। ‘এটি বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে সম্পর্কের অগ্রগতির একটি ছোট পদক্ষেপ, তবে আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য একটি বিশাল উদ্যোগ এবং ভবিষ্যতের আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য এর প্রভাব ব্যাপক হবে।’
বাণিজ্য ও বিনিয়োগ
নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে তা স্থিতিশীল পর্যায়ে রয়েছে। ২০২২ সালে এটি প্রায় ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল।
রাষ্ট্রদূত বলেন, নেপাল বাংলাদেশে লাল মসুর ডাল, আদা, এলাচ এবং অন্যান্য কৃষি পণ্য, ফল, গাছপালা এবং উদ্ভিদের অংশ রপ্তানি করে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-নর্ডিক সম্পর্ক নিয়ে কসমস ডায়লগ বৃহস্পতিবার
বাংলাদেশ থেকে প্রধান রপ্তানির মধ্যে রয়েছে খৈল, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক আইটেম, পাট ও বস্ত্র, আলু এবং ফার্মাসিউটিক্যালস।
বাংলাদেশ সরকার ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাংলাবান্ধা ল্যান্ড কাস্টম স্টেশন হয়ে বাংলাদেশে নেপালি সুতার প্রবেশের ওপর দুই দশকের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আমরা এর জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।
আমাদের দেশের প্রধান চেম্বার এফএনসিসিআই ও এফবিসিসিআই-এর নেতৃত্বে বেসরকারি খাতগুলো ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘কিন্তু আমাদের দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা এবং নৈকট্যের পরিপ্রেক্ষিতে, আমরা যা অর্জন করেছি তা সম্ভাবনার কাছাকাছিও নেই।’
তিনি বলেন,অন্যান্য শুল্ক ও চার্জ (ওডিসিস) বাদ বা হ্রাসসহ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংযোগ বাড়ানোর জন্য আমাদের প্রচেষ্টাকে আরও জোরদার করার প্রয়োজন রয়েছে। ‘আমাদের অবশ্যই স্থল শুল্ক স্টেশনে এবং পদ্ধতির মানসম্মতকরণ সুবিধাগুলো আপগ্রেড করার মাধ্যমে অশুল্ক বাধাগুলো সমাধান করতে হবে।
সংযোগ
রাষ্ট্রদূত ভান্ডারি বলেন, জ্বালানি বাণিজ্য বা এই বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পৃক্তা বৃদ্ধির অন্য কোনো দিক সংযোগ ছাড়া সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, ‘সংযোগ ভৌত এবং ডিজিটাল উভয় ক্ষেত্রেই এবং স্থল, আকাশ ও পানিপথের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় আঞ্চলিক এবং উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার মূল।’
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দুটি এয়ারলাইন্স - বিমান বাংলাদেশ ও হিমালয় এয়ারলাইন্স কাঠমান্ডু ও ঢাকার মধ্যে প্রতি সপ্তাহে ১০টি সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে আমাদের দুই দেশের মধ্যে পণ্য ও জনগণের চলাচল বেশি হয়।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘তৃতীয় দেশের সঙ্গে নেপালের বাণিজ্যের জন্য মোংলা ও চট্টগ্রামে বন্দর সুবিধা ব্যবহার করার প্রস্তাবের জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি বলেন, উপ-আঞ্চলিক সংযোগের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে, বিবিআইএন কাঠামোর অধীনে পণ্যবাহী এবং যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচলের বিষয়ে আলোচনা চলছে।
দূত বলেন, পরস্পরের উদ্বেগের সমাধান করে আলোচনার সফল সমাপ্তি করতে পারলে উপ-আঞ্চলিক নির্বিঘ্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে।
ডিজিটাল কানেক্টিভিটির কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এটি একটি উদীয়মান খাত। ‘আইটি খাত নেপাল ও বাংলাদেশ উভয় দেশেই বিকাশ লাভ করছে। আমাদের এই নতুন খাতটি অন্বেষণ করতে হবে, সহযোগিতার প্রসার করতে হবে এবং ডিজিটাল সংযোগ বাড়াতে হবে।’
পর্যটন
ভান্ডারি বলেন, ঐতিহাসিকভাবে পর্যটন এবং জনগণের মধ্যে বিনিময় দুই দেশের মধ্যে একটি শক্তিশালী সংযোগকারী খাত।
তিনি বলেন, ‘নেপালের রাজকীয় পর্বতমালা, সবুজ উপত্যকা, সুন্দর জলপ্রপাত এবং ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান বা বাংলাদেশের উর্বর সমভূমি, চমৎকার সমুদ্র সৈকত, মনোমুগ্ধকর ম্যানগ্রোভ বন এবং সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় আমাদের দু’দেশেরই অনন্য এবং বৈচিত্র্যময় পর্যটন পণ্য রয়েছে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন যে তাদের অবশ্যই হিমালয় ও বঙ্গোপসাগরের মধ্যে, পাহাড় ও সমতলের মধ্যে এবং মার্কেট ও মনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে হবে।
আরও পড়ুন: কসমস-বিআইপিএসএস গোলটেবিল: ইউক্রেন সংঘাতের বিরূপ প্রভাব কাটাতে বাংলাদেশকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে
তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমাদের ধর্মীয় ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান এবং ইকো-ট্যুরিজম ও অ্যাডভেঞ্চার গন্তব্যকে পর্যটন সার্কিটের মাধ্যমে সংযুক্ত করার জন্য অনেক কিছু করা বাকি আছে। আমাদের অবশ্যই উদ্ভাবনের প্রসার করতে হবে, উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে হবে এবং জনগণ ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধন তৈরি করতে হবে।’
জলবায়ু পরিবর্তন প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, নেপাল ও বাংলাদেশ উভয়ই জলবায়ু সংকটের প্রথম সারিতে রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা জলবায়ু কর্মকাণ্ডকে অগ্রাধিকার দিতে পারি এবং কার্বন নিঃসরণ কমাতে নেপাল ও বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এবং ২০৫০ সালের মধ্যে নেট-জিরো নির্গমন পরিস্থিতির বৈশ্বিক লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জলবায়ু-সহনশীল পথ তৈরি করতে পারি।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, তাদের অবশ্যই বৈশ্বিক পর্যায়ে জলবায়ু এজেন্ডাকে শীর্ষে রাখতে হবে, যেমনটি আমরা শার্ম এল-শেখের 'লস ও ড্যামেজ' করেছিলাম। ‘আমাদের কণ্ঠস্বর উত্থাপন চালিয়ে যেতে হবে। জলবায়ু অর্থায়নসহ আমাদের অভিজ্ঞতা এবং সর্বোত্তম অনুশীলনগুলো ভাগ করে নেওয়া এবং আমাদের জনগণকে রক্ষা করার জন্য এবং বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, দুটি দেশই ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) বিভাগ থেকে উন্নয়নশীল হতে প্রস্তুত।
দূত বলেন, অবশ্যই এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল হতে আমাদের উভয় দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন মাইলফলক। তবে সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে আন্তর্জাতিক সমর্থন ব্যবস্থা হারানোর কারণে উভয় দেশ নিশ্চিতভাবে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে। তাই একটি মসৃণ, টেকসই ও অপরিবর্তনীয় উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আমাদের অবশ্যই একসঙ্গে কাজ করতে হবে এবং যেকোনো পুশব্যাকের বিরুদ্ধে ধাক্কা দিতে হবে। বর্তমান প্রস্তুতির সময় অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।’
তার সমাপনী বক্তব্যে মাসুদ খান বলেন, তাদের অবশ্যই তিনটি ক্ষেত্রে পারস্পরিক সুযোগ ও সম্পদ অন্বেষণ এবং কাজে লাগাতে হবে। যেমন থ্রিসি (জলবায়ু, সংস্কৃতি, বাণিজ্য) থেকে পর্যটন থেকে নবায়নযোগ্য, জলবায়ু এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতা থেকে বাণিজ্যিক সহযোগিতা পর্যন্ত।
ভিয়েতনামের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আসার আহ্বান রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের
রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ভিয়েতনামের ব্যবসায়ীদের দেশের ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশের সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার বাংলাদেশে ভিয়েতনামের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত নগুইন মান কুওং বঙ্গভবনে তার কাছে পরিচয়পত্র পেশ করার সময় রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।
ভিয়েতনামের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে সাহাবুদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশও দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের জানান, রাষ্ট্রদূত বঙ্গভবনে পৌঁছালে রাষ্ট্রপতির গার্ড রেজিমেন্টের একটি চৌকস দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।
নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ভিয়েতনামের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ককে দুই দেশের বন্ধুত্বের মাইলফলক হিসেবে বর্ণনা করেন।
আরও পড়ুন: গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ: রাষ্ট্রপতি
তিনি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে দুই দেশের সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের পারস্পরিক সফর বিনিময়ের ওপর জোর দেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ভিয়েতনাম বাংলাদেশ থেকে ওষুধ, তৈরি পোশাক, চামড়া ও সিরামিকসহ বিশ্বমানের পণ্য কিনতে পারে।
প্রেস সচিব বলেন, ভিয়েতনামের নতুন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন এবং এখানে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াতে তার দেশের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে তিনি রাষ্ট্রপতির সহযোগিতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতির সচিব সম্পদ বড়ুয়া ও সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের সময় জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির
দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা জোরদার করুন: দুদকের প্রতি রাষ্ট্রপতি
হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন বাংলাদেশে সম্পন্ন করায় সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী
মক্কা রোড ইনিশিয়েটিভের অধীনে এ বছর বাংলাদেশ থেকে সকল হজযাত্রীদের বিমানে ওঠার আগে বাংলাদেশেই ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে সৌদি সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
মঙ্গলবার তিনি ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এর হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিশেষ সভায় এ ধন্যবাদ জানান।
সভায় সৌদি হজ ও ওমরা বিষয়ক মন্ত্রী ড. তৌফিক বিন ফাউযান আল রাবিয়া সভাপতিত্ব করেন।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, এ বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১ লক্ষ ২২ হাজার হজযাত্রী পবিত্র হজে অংশগ্রহণ করবেন। যাদের সকলের ইমিগ্রেশন বাংলাদেশে সম্পন্ন হচ্ছে। যা হজযাত্রীদের সৌদি আরবে আগমনকে ঝামেলামুক্ত ও নির্বিঘ্ন করেছে। হজ সংক্রান্ত অটোমেশন ও অনলাইন ব্যবস্থাপনা হজ ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।
আরও পড়ুন: ৪১৫ হজযাত্রী নিয়ে ঢাকা ছেড়েছে প্রথম ফ্লাইট
তিনি আরও বলেন, ‘আমি প্রথম কয়েকটি হজ ফ্লাইটে আমাদের হজযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তারা সবাই এই ব্যবস্থায় তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। প্রতি বছর সুন্দরভাবে হজ আয়োজনের জন্য মুসলিম উম্মাহ দুই পবিত্র মসজিদের হেফাজতকারী সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ও ক্রাউন প্রিন্স প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, মক্কায় সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তম সমাবেশ পরিচালনা করা একটি বিশাল দায়িত্ব। সৌদি আরব ভিশন ২০৩০ এর অধীনে হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণ করেছে, যা মানুষের হজ ও ওমরাহকে সহজসাধ্য ও আরামদায়ক করে তুলেছে।
সভার শুরুতে, সৌদি হজ ও উমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী ২০২৩ সালের হজ ব্যবস্থাপনার ওপর একটি ব্রিফিং প্রদান করেন।
রাষ্ট্রদূত পবিত্র হজ ব্যবস্থাপনাকে সফল করতে সৌদি আরবের প্রতি বাংলাদেশের পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করেন ও এর সফলতা কামনা করেন।
ওআইসির বিভিন্ন দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিরা এ সভায় যোগ দেন। সভায় ওআইসির মহাসচিব হিসেন ব্রাহিম তাহা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ১,৫৫০ বাংলাদেশি হজযাত্রী
বিমানের পাঁচটি ফ্লাইট ২০৮৬ হজযাত্রী নিয়ে সৌদি আরব পৌঁছেছে
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ৬ সদস্যের চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মতামত প্রকাশিত হয়েছে, ইউএনবিকে রাষ্ট্রদূত
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য (এমইপি) ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ/ভাইস-প্রেসিডেন্ট জোসেপ বোরেল ফন্টেলেসকে সম্ভববত নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সাধারণ নির্বাচন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এই এমইপিরা হলেন- ইভান শটেফানেক (ইপিপি, স্লোভাক প্রজাতন্ত্র), মাইকেলা সোজড্রোভা (ইপিপি, চেক প্রজাতন্ত্র), আন্দ্রে কোভাতচেভ (ইপিপি, বুলগেরিয়া), কারেন মেলচিওর (রিনিউ, ডেনমার্ক), জাভিয়ের নার্ট (রিনিউ, স্পেন) এবং হেইডি হাউটালা (গ্রিন/ইএফএ, ফিনল্যান্ড)।
ইইউ হাই রিপ্রেজেন্টেটিভের কাছে এক চিঠিতে ছয়জন এমইপিও ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং চলমান সংকটের একটি টেকসই ও গণতান্ত্রিক সমাধান খুঁজে বের করার জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং অন্যান্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের সম্পৃক্ততার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাস অবশ্য এই চিঠিকে এতে স্বাক্ষরকারী ছয় এমইপির মতামত হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আরও পড়ুন: বৃহত্তর বৈশ্বিক স্বার্থে বহুপাক্ষিকতাকে সমুন্নত রাখুন: জি২০ সভায় মোমেন
বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি ইউএনবিকে বলেছেন, ‘আমি শুধু বলব যে এই চিঠিটিতে এতে স্বাক্ষরকারী ৬ জন এমইপির মতামত প্রকাশ করা হয়েছে।’
স্বাক্ষরকারী এমইপিরা জানান, বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতায় দীর্ঘ সময়ের অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জোরালো কারণ রয়েছে ইই’র।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘এভাবে ইইউকে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মানবাধিকার প্রসঙ্গে শুধুমাত্র বারবার সংলাপে সীমাবদ্ধ থেকে নয়, বরং বাস্তব পদক্ষেপও নিতে হবে।’
তারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ও জড়িতদের জন্য ইইএ জোনে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার মতো সম্ভাব্য পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছেন, বা এটা জিএসপিপ্লাস প্রণোদনার নিয়মিত শর্তগুলোর কথাও স্মরণ করিয়ে দেওয়া, যেখানে অংশগ্রাহক হিসেবে বাংলাদেশকে মূল্যায়ন করা হতে পারে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘এ বিষয়ে আমরা ইইউ-বাংলাদেশ যৌথ কমিশন এবং সুশাসন ও মানবাধিকার বিষয়ক বিভিন্ন গোষ্ঠী এবং বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ মিলে এই বিষয়ে (এবং সম্ভবত অন্যান্য আরও কিছুক্ষেত্রে) নেওয়া উদ্যোগের ফলাফল সম্পর্কে আরও জানতে পারলে খুশি হব।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে শক্তিশালী সমর্থন চায় বাংলাদেশ
কোনো দেশ বা সংস্থার কাছ থেকে সংবিধানের বাইরে গিয়ে রাজনৈতিক সংলাপের প্রস্তাব পাইনি: শাহরিয়ার
নতুন ভিসা নীতি শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে সমর্থন করার জন্য: রাষ্ট্রদূত হাস
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, নতুন ঘোষিত ভিসা নীতি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে সমর্থন করার জন্য ‘শুধুমাত্র তাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) সাহায্য করার উপায়’।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, তারা অন্যান্য বিষয়গুলোর মধ্যে নতুন ভিসা নীতি নিয়েও আলোচনা করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, শুধুমাত্র বাংলাদেশি জনগণ, বাংলাদেশ সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশে যারা একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে সমর্থনে তাদের প্রতি সমর্থন জানাতে তারা এটি (ভিসা নীতি) করেছে।
তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের সঙ্গে বৈঠকটি তাদের নিয়মিত বৈঠকের অংশ। ‘আমরা ইউএস-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের সম্পর্ক ক্রমবর্ধমান।’
এর আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে আলোচনা করেন।
আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেছেন, ‘আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি। যারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করে তাদের জন্য ভিসা সীমিত করার নতুন ভিসা নীতি সবার জন্য প্রযোজ্য।’
নতুন ভিসা নীতি: রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাষ্ট্রদূত হাসের সাক্ষাৎ
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বৃহস্পতিবার দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে আলোচনা করেন।
এসময় আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, ‘আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি। যারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করে, তাদের জন্য ভিসা সীমিত করার নতুন ভিসা নীতি সবার জন্য প্রযোজ্য।’
আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই; আমরা অগ্নিসংযোগ, সহিংসতা চাই না: মোমেন
মার্কিন ভিসা নীতি: বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা বিএনপির
বাহামাসের গভর্নর জেনারেলের কাছে প্রথম বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ
কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান অনাবাসিক হাইকমিশনার হিসেবে বাহামাসের রাজধানী নাসাউ-এর গভর্নর জেনারেল স্যার কর্নেলিয়াস অ্যালভিন স্মিথ-এর কাছে ১৮ মে (বৃহস্পতিবার) তার পরিচয়পত্র পেশ করেন।
পরিচয়পত্র প্রদানের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাহামাসের গভর্নর জেনারেল ও নবনিযুক্ত হাইকমিশনার দুই দেশের পারস্পারিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন।
এ সময় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্মানেন্ট সেক্রেটারি, মহাপরিচালক ও গভর্নর জেনারেলের কার্যালয়ের সচিব উপস্থিত ছিলেন।
বাহামাসের গভর্নর জেনারেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কর্তৃক প্রণীত রূপকল্প ২০৪১ সহ অন্যান্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
গভর্নর জেনারেল জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলসহ অন্যান্য বহুপক্ষীয় প্ল্যাটফর্মে পরস্পরকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এবং বাহামাসের দৃষ্টান্তমূলক সহযোগিতার ইতিহাসও তুলে ধরেন।
নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অসামান্য অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করে গভর্নর জেনারেল আগামী আগস্ট ২০২৩-এ নাসাউ-এ অনুষ্ঠিতব্য কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর ওয়েমেন মিনিস্টেরিয়াল বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি প্রেরণের জন্য অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদূতদের জন্য বিকল্প নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হবে: পররাষ্ট্র সচিব
এছাড়া তিনি আগামী ১০ জুলাই বাহামাসের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনের অনুষ্ঠানে হাইকমিশনারকে আমন্ত্রণ জানান। গভর্নর জেনারেলের বক্তব্যের জবাবে হাইকমিশনার বলেন, বাহামাসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার ও সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে প্রথমবারের মত দেশটিতে হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়। বিশেষ করে, তিনি আর্থিক পরিষেবা ও পর্যটনের ক্ষেত্রে সহযোগিতার অপার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।
পরিচয়পত্র পেশের পর হাইকমিশনার বাহামাসের প্রধানমন্ত্রী এইচ. ই. ফিলিপ এডওয়ার্ড ডেভিস এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী এইচ. ই. চেস্টার কুপার-এর সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সম্ভাব্য বিষয় নিয়ে পৃথক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
বাহামাসের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বৈশ্বিক প্রক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
নবনিযুক্ত হাইকমিশনার জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন প্রক্রিয়ার পাশাপাশি কমনওয়েলথ ফোরামে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দেন।
উভয়পক্ষ প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী উন্নত দেশগুলোর দ্বারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত ও শারম আল শেখে অনুষ্ঠিত কপ-২৭ সম্মেলনে ঘোষিত ‘লস এন্ড ড্যামেজ' তহবিল দ্রুত চালু করতে অন্যান্য জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার জন্য অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
হাইকমিশনার জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশে আশ্রিত ১৩ লাখ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য বাহামাসের সমর্থন কামনা করেন।
হাইকমিশনার পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো অন্বেষণ এবং চিহ্নিত করার পাশাপাশি বাণিজ্য ও আর্থিক খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য দুই দেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারকের খসড়া বাহামাসের প্রধানমন্ত্রীকে হস্তান্তর করলে তিনি দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সমঝোতা স্মারকটি দ্রুত স্বাক্ষরের বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেন।
এছাড়া, হাইকমিশনার জুলাই ২০২৩-এ অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থার কাউন্সিল নির্বাচনে মহাসচিব পদে বাংলাদেশের প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিতে বাহামাসকে অনুরোধ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে বলে হাইকমিশনারকে আশস্থ করেন ।
উল্লেখ্য, বাহামাসের প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে দেশটির অর্থ মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করছেন।
আরও পড়ুন: বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা চাইলে বাড়তি নিরাপত্তা ফেরত দিতে পারেন, তার জন্য অর্থ দিতে হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী