সিনেমা
‘হাওয়া’ ও ‘শনিবার বিকেল’ নিয়ে শিল্পীদের প্রতিবাদ
একদিকে বাংলা সিনেমায় যেমন সুদিন চলছে,অন্যদিকে সিনেমাকে মামলার বেড়াজালে আটকে দেয়া হচ্ছে। কিছুদিন আগেই ‘হাওয়া’ সিনেমাটি বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও মোস্তফার সরয়ার ফারুকী নির্মিত ‘শনিবার বিকেল’কে সেন্সস বোর্ডে আটকে আছে গত তিন বছর।
সিনেমার এমন অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোচ্চার হয়েছছেন অনেক তারকা। এমনকি অভিনয় শিল্পী ‘হোক প্রতিবাদ’ শিরোনামে একটি লিখিত প্রতিবাদ করেছে।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে চিলচ্চিত্রের শিল্পী, নির্মাতা ও কলাকুশলীদের ‘গল্প বলার স্বাধীনতা চাই’- শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নির্মাতা ও শিল্পী কলাকুশলীদের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা উপস্থাপনা করেন পরিচালক নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু।
এই সংবাদ সম্মেলনের আরও উপস্থিত ছিলেন- মোরশেদুল ইসলাম, মেজবাউর রহমান সুমন, কামার আহমেদ সাইমন, অমিতাভ রেজা, পিপলু আর খান, নুরুল আলম আতিক, তারিক আনাম খান, চঞ্চল চৌধুরী, শম্পা রেজা, আফসানা মিমি, জয়া আহসান, আফরান নিশো, ইরেশ যাকের, আজমেরী হক বাঁধন ছাড়াও অনেকে।
চলচ্চিত্র পরিচালক নাসির উদ্দিন ইউসুফ বলেন, “বাংলা চলচ্চিত্র বিকাশের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক একটা পরিবর্তন ঘটেছে সাম্প্রতিক সময়ে। এমন সময় ‘হাওয়া’র বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করা হলো। ‘শনিবার বিকেলে’ মুক্তি পাচ্ছে না দুই বছর ধরে। তরুণরা নতুন সহস্রাব্দের চলচ্চিত্র নির্মাণ করছে।”
আরও পড়ুন: হাওয়ার প্রদর্শনী বন্ধে আইনি নোটিশ
সংবাদ সম্মেলনে জয়া আহসান বলেন, “প্রাণ-প্রকৃতি নিয়ে আমার নিজের একটা খাঁটি আবেগ আছে। সেই জায়গা থেকে প্রাণ-প্রকৃতি নিয়ে আমি আরও বেশি কথা বলবো। তাই বলে কি চলচ্চিত্র বন্ধ করতে হবে! বন উজাড় হচ্ছে, দিনের পর দিন পশুপাখির সঙ্গে অমানবিক আচরণ করছে এগুলোর বেলায় বনবিভাগ বা প্রশাসন কোথায়! চলচ্চিত্রের বেলায় প্রশাসনের এই চাপ কেনো? চলচ্চিত্রের উপর অদৃশ্য চাপ বন্ধ করতে হবে। সব চরিত্র যদি নিয়ম মেনে চলতে থাকে তাহলে তো কোনো ফিকশনই তৈরি হবে না। আমরা কি তাহলে চলচ্চিত্র নির্মাণ করব না।”
দাবি আদায়ে প্রাথমিক কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে সংবাদ সম্মেলন থেকে।
জানানো হয়, আগামী সেপ্টেম্বরে একটি গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করা হবে। সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলোতে স্মারকলিপি দেয়া হবে।
পাঁচ দফা দাবি হলো-
১. ‘হাওয়া’ চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে করা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
২. ‘শনিবার বিকেলে’ চলচ্চিত্র কেন সেন্সর ছাড়পত্র পেল না তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাই।
৩. বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড বাতিল করতে হবে ও প্রস্তাবিত চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইনের ক্ষেত্রে সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে একটি আধুনিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন প্রণয়ন করতে হবে।
৪. প্রস্তাবিত ওটিটি নীতিমালার ক্ষেত্রে সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে একটি আধুনিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ওটিটি নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
৫. চলচ্চিত্র বা কনটেন্টবিষয়ক কোনো মামলা দায়ের করার আগে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের (যেমন- খসড়া ওটিটি নীতিমালায় প্ল্যাটফর্মগুলোতে আলাদা কমিশন বোর্ড তৈরির প্রস্তাব আছে এ জাতীয় কোনো কর্তৃপক্ষের) সঙ্গে আলোচনা করে নিতে হবে।
আরও পড়ুন: ফিল্মমেকিংয়ের চেয়ে বড় কোনো অপরাধ তো আর নাই: ফারুকী
‘হাওয়া’ এপিঠ ওপিঠে এরফান মৃধা শিবলু
আমার জীবনটাই সিনেমা: রায়হান রাফী
সময়টা এখন পরিচালক রায়হান রাফীর। ঈদের প্রায় দুই মাস পরেও এখনও পুরোদমে চলছে তার ‘পরান’' সিনেমাটি।এরইমধ্যে নতুন আরেক খবর দিলেন এই নির্মাতা। তবে এবার বড়পর্দায় নয়, ওটিটি প্ল্যাটফর্মে আসছে তার নতুন চমক।
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পাবে রায়হান রাফীর পরিচালনায় ওয়েবফিল্ম ‘নিঃশ্বাস’।
২০ আগস্ট রাতে চরকির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এই সিনেমার একটি টিজার প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা গেছে হালের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণকে।
এ বিষয়ে পরিচালক রায়হান রাফী বলেন, ‘আমি আসলে খুব ভাগ্যবান। সেই সঙ্গে খুব খুশি যে আমার সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে চলছে, আবার ওটিটিতেও আসবে। চরকি আমার জন্য একটা সিনেমা হল। যারা হলে যেতে পারেন না, তারা দেশ-বিদেশ থেকে চরকি দেখেন। ‘নিঃশ্বাস’ এখন পর্যন্ত আমার করা সবচেয়ে এক্সপেরিমেন্টাল কাজ। আমার সব ছবি থেকে এই ছবির মেকিং, স্টাইল, জনরা সব কিছুই আলাদা।’
এক বছরেই ওটিটি ও হল মিলিয়ে এতগুলো সিনেমা কিভাবে বানাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি আসলে সিনেমার মধ্যেই থাকি। সিনেমার মধ্যে খাই, ঘুমাই। গল্পের মধ্যে থাকি। আমার জীবনটাই সিনেমা। আমি যখন থেকে সিনেমাতে কাজ শুরু করেছি তখন থেকে এক সপ্তাহের জন্যও ব্রেক নেইনি। আমি কাজের মধ্যে থাকতেই পছন্দ করি। এ জন্যই বোধহয় দর্শককে এত এত সিনেমা দিতে পারছি।’
রাফীর সিনেমার আয়োজন সব সময় একটু ভিন্ন থাকে। তার সিনেমায় একটা অন্যরকম ভাষা থাকে। এমন কাজ করতে কতটুক শ্রম প্রয়োজন জানতে চাইলে রাফী বলেন, ‘আমি আসলে দর্শককে ঠকাতে চাই না। দর্শক তো নিজের সময়, টাকা সব দিয়ে সিনেমাটা দেখেন। তাদেরকে ঠকালে তো আমাদের ওপর থেকে বিশ্বাস উঠে যাবে। জানি না ‘নিঃশ্বাস’-এর টিজার দেখে দর্শক কতটুক বুঝতে পেরেছে, এই সিনেমার অনেক বড় একটা সেট বানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে সিনিয়র-জুনিয়র মিলিয়ে ৫০-৬০জন আর্টিস্ট কাজ করেছেন।’
আরও পড়ুন: ‘শুল্কপক্ষ’ শেষ পর্যন্ত দর্শককে আটকে রাখবে: সুনেরাহ
অনন্ত জলিলের বিরুদ্ধে মামলা করবেন ‘দিন: দ্য ডে’র পরিচালক
২৫০ বছর ধরে ‘কারাগার’-এ চঞ্চল চৌধুরী
সিনেমা বা ওটিটির পর্দা, দুই অঙ্গনেই তরুপের তাস এখন চঞ্চল চৌধুরী। ‘আয়নাবাজি’র পর ‘হাওয়া’ নিয়ে বড়পর্দার মধ্যমণি এখন তিনি। এই সিনেমার আলোচনা যখন চলমান এরমধ্যে নতুন অবয়ব নিয়ে সামনে এলেন তিনি।
ভারতের ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘হইচই’ এর পর্দায় ১৯ আগস্ট মুক্তি পাবে চঞ্চল চৌধুরীর নতুন ওয়েব সিরিজ ‘কারাগার’। নির্মাতা সৈয়দ আহমেদ শাওকীর পরিচালনায় এই সিরিজে রহস্যময় এক কয়েদীর চরিত্রে দেখা যাবে চঞ্চলকে।
‘কারাগার’ সিরিজে চঞ্চল চৌধুরীর লুক প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই আলোচনা শুরু। এরপরই প্রকাশ পেল ট্রেলার। ‘তাকদীর’ এর পর এই সিরিজ দিয়েও নতুন এক রহস্যের গল্প বলবেন পরিচালক। সেটি ট্রেলারে ইতোমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে।
ট্রেলারে দেখা যায়, আকাশনগর সেন্ট্রাল জেলে ৩২৫ জন কয়েদী। একদিন হেড-কাউন্টের সময় দেখা গেল একজন অতিরিক্ত কয়েদী। তাকে পাওয়া গেল ৫০ বছর ধরে বন্ধ এক সেলে। কিন্তু সেখানে ব্যক্তিটি কীভাবে এলো!
আরও পড়ুন: ‘হাওয়া’য় মেতেছে দর্শক
পরবর্তীতে জানা যায় ২৫০ বছর ধরে জেলখানায় বন্দি তিনি। খুন করেছেন মীরজাফরকে। বর্তমান নিয়ে সবজান্তা এই কয়েদীর তথ্যে বিস্মিত হন সকলে।
‘কারাগার’ প্রসঙ্গে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিটা কাজের ভিন্নতা থাকে। তবে চ্যালেঞ্জের জায়গা থেকে কারাগার আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম একটি সিরিজ। এখানে চরিত্রটি আমাকে ভীষণ টেনেছে। ক্যারেক্টার ফুটিয়ে তোলার জন্য সবকিছু নিখুঁত করার চেষ্টা ছিল। মূল কথা, আমি চ্যালেঞ্জটা নিতে চেয়েছি। ওজন কমানো, মেকআপের পেছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় করা, কস্টিউম; সব কিছু ঠিকঠাক রাখার জন্য বেশ পরিশ্রম হয়েছে। এখন দর্শকরা কীভাবে নেবেন সেটি মুক্তির পর বোঝা যাবে।’
অন্যদিকে পরিচালক শাওকী বলেন, ‘কারাগার নিয়ে প্রায় প্রায় দেড় বছর আগে কাজ শুরু করি। এখন পর্যন্ত আমাদের সবচেয়ে বড় স্ক্রিপ্টের কাজ এটা। এতে রহস্য আছে, ইতিহাস ও নাটকীয়তা আছে। সিরিজটির সঙ্গে থাকা সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। সবার পরিশ্রমে কাজটি সুন্দরভাবে হয়েছে।’
‘কারাগার’-এ আরও অভিনয় করেছেন আফজাল হোসেন, ইন্তেখাব দিনার, বিজরী বরকতউল্লাহ্, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, তাসনিয়া ফারিণ, এফ এস নাঈম, শতাব্দী ওয়াদুদসহ অনেকে।
আরও পড়ুন: ‘হাওয়া’ এপিঠ ওপিঠে এরফান মৃধা শিবলু
অ্যামাজন প্রাইমে বাংলাদেশের সিনেমা
‘হাওয়া’ এপিঠ ওপিঠে এরফান মৃধা শিবলু
সাম্প্রতিক বাংলা সিনেমার জোয়ারকে আরও উত্তাল করে দিয়েছে ‘হাওয়া’। মুক্তির আগে থেকেই এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যার শুরু হয় সিনেমার 'সাদা সাদা কালা কালা' গানটি দিয়ে।
মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ২৯ জুলাই মুক্তি পাওয়া ‘হাওয়া’ সিনেমার এই গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন এরফান মৃধা শিবলু। যদিও তা ছিল পুরোটাই কাকতালীয়। 'সাদা সাদা কালা কালা' গানের কারিগর হাশিম মাহমুদ। ইউএনবির সঙ্গে শিবলুর সাক্ষাতকারের প্রসঙ্গে শুরু হলো এই মানুষকে নিয়েই।
আরও পড়ুন: অনেকবার বাধার মুখে পড়েছি কিন্তু হাল ছাড়িনি: বান্নাহ
শিবলু বলেন, 'সাদা সাদা কালা কালা' এখন গণমানুষের কাছে জনপ্রিয় হলেও এটি কিন্তু অনেক আগেই এক কনসার্টে গেয়েছেন। তখন আমি অল্প বয়সী। টিএসসির এক কনসার্টে হাশেম ভাই কোনো ধরনের বাদ্যযন্ত্র ছাড়া গানটি গেয়েছিলেন। হাশিম ভাইকে আমি চিনি অনেক দিন। বিখ্যাত হওয়ার মানসিকতা তার কখনও ছিল না। তার ইচ্ছা প্রকৃতির মধ্যে ঘুরে বেড়ানো, মানুষের সঙ্গে মেশা। খুবই সরল মানুষ হাশিম ভাই।
গানটি সিনেমায় যুক্ত করার যেই পরিকল্পনা করেছিলেন পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন, তার শুরু থেকে শেষ অবদি ছিলেন এরফান মৃধা শিবলু। যেহেতু সিনেমার গল্প সমুদ্র ও জেলেদের নিয়ে গড়ে উঠেছে, তাই এক ফিশিং বোটে তিন দিনের জন্য গভীর সমুদ্রে পরিচালক সুমনের সঙ্গে যান শিবলু। দেখেন ৫০ ফুট একটি নৌকায় ২০-২৫ জন জেলে থাকেন। সেখানেই মাইজ ভাণ্ডারির একটি নৌকা ছিল, তাতে হারমোনিয়াম দেখতে পান তারা। যেখান থেকে একটি গানের পরিকল্পনা আসে নির্মাতার মাথায়। সেখান থেকেই নির্বাচিত হয় হাশিম মাহমুদের গানটি।
'সাদা সাদা কালা কালা' গানটি হাশিম মাহমুদের কণ্ঠেই রেকর্ড করা কথা ছিল শুরুতে। কিন্তু তার অসুস্থতার কারণে শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। গানটি পরবর্তীতে তৈরি প্রসঙ্গে শিবলু বলেন, গানটি নির্বাচনের পর সুমন ভাই সঙ্গীতায়োজনের দায়িত্ব দেন ইমন চৌধুরীকে। আর এর সঙ্গে বলেন দেন যে গানটিতে যেন খমক ছাড়া আর কোনো বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার না করা হয়। সেই চিন্তা থেকে ইমন যুক্ত করেন মাছ ধরার ট্রলারে অনেক ধরনের জিনিসপত্র। তেলের ড্রাম, প্লাস্টিক বল, মগ, বাঁশ, লাঠি ও টিনের অনেক কিছু দিয়ে সাউন্ড তৈরি করে গানে ব্যবহার করা হয়েছে। আর এর অন্যতম কারিগর মিঠুন চাকরা।
আরও পড়ুন: বিয়ে করলেন চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা
'সাদা সাদা কালা কালা' দিয়ে অনেকদিন পর সিনেমার কোনো গান এতটা আলোচনায় এসেছে। তবে অনেকের ধারণা এর পেছনে সিনেমাটির প্রচারণা ধরন। কিন্তু এমনটা একদম মনে করেন না এরফান মৃধা শিবলু।
শিবলু বলেন, আমি শুরুতে বলেছি এই গান দিয়ে বহু বছর আগে টিএসসির কনসার্টে মানুষের মন জয় করেছেন। আসলে গানটিই এমন। এছাড়া হাশিম ভাইয়ের লেখা এই গানের কথা-সুর খুবই সরল। এছাড়া গানটির সঙ্গীতায়োজনও ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা। রিদম এতটাই সহজ যে, কোনো বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই কণ্ঠে তুলে ফেলতে পারেন।
'সাদা সাদা কালা কালা' গাওয়ার পাশাপাশি সিনেমায় গানটির দৃশ্যে ছিলেন এরফান মৃধা শিবলু। তবে একটি বিষয় হয়তো অনেকের অজানা, পুরো সিনেমার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পেছনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: মুক্তির আগেই আলোচনায় ‘হাওয়া’
গানটি প্রসঙ্গে শেষ কথা বলতে গিয়ে শিবলু আবারও বলেন হাশিম মাহমুদকে নিয়ে। জানান, গানের এই গুণী কারিগরকে আবারও ফিরে পেতে চান তারা। তাকে সুস্থ করে তুলতে নিজেদের উদ্যোগও রয়েছে। এমন একজন উজ্জ্বল নক্ষত্রের আলোয় আরও আলোকিত হওয়া যে এখনও বাকি।
‘হাওয়া’য় মেতেছে দর্শক
গত কয়েক বছর সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে যে হতাশার বাতাস বইছিল তা অনেকটা কেটে যায় এ বছর রোজার ঈদের মধ্য দিয়ে। অনেকদিন পর বাংলা সিনেমা নিয়ে দর্শকদের মধ্যে আগ্রহ ফিরে আসে। কোরবানি ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘পরান’ দিয়ে উন্মাদনা বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
ঈদের রেশ কাটতেই দর্শক মেতে ওঠে মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ‘হাওয়া’ নিয়ে। বাংলা সিনেমা নিয়ে দর্শকদের মধ্যে এমন উন্মাদনা চোখে পড়ল বহু বছর পর। সারা দেশের ২৪টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ‘হাওয়া’। আর প্রথম দিনেই সব শো হাউজফুল।
মুক্তির প্রথম দিন সিনেমা হলে ঘুরছেন ‘হাওয়া’র কলাকুশলিরা। দুপুরে শো দেখতে স্টার সিনেপ্লেক্সে উপস্থিত হয় চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, সুমন আনোয়ার, নাসির উদ্দিন, সোহেল রানা মন্ডল সহ সংশ্লিষ্ট অনেকে।
দেশব্যাপী এমন উন্মাদনার জন্য দর্শকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান চঞ্চল চৌধুরী।
তিনি গণমাধ্যমে বলেন, ‘এই সফলতা পুরোটা দর্শকদের ভালোবাসা। সারাদেশের সিনেমা হলগুলোতে হাউজফুলের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এটা আসলে চিন্তাতেও ছিলা না। প্রথম দিনই আমাদের সময়টাকে এতো সুন্দর করে দিয়েছেন।’
চঞ্চল আরও বলেন, ‘কাজটি করতে আমরা কতটা কষ্ট করেছি সিনেমাটি দেখলে দর্শক বুঝবেন। সেই কষ্টের কাজটি দর্শক স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসে দেখছেন। এর চাইতে বড় কোনো পাওয়া আর হয় না। বাংলা সিনেমার পাশে এভাবে দর্শক থাকলে আমরা আরও এগিয়ে যাব।’
চঞ্চল চৌধুরী ছাড়াও সিনেমাটি নিয়ে নিজেদের উচ্ছ্বাসের কথা সাংবাদিকদের জানান ‘হাওয়া’ টিমের অনেকে।
আরও পড়ুন: মুক্তির আগেই আলোচনায় ‘হাওয়া’
সত্য ঘটনা অবলম্বে ‘তনয়া’
সত্য ঘটনা অবলম্বে ‘তনয়া’
বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে ইমরাউল রাফাত নির্মাণ করেছেন চরকি ফ্লিক ‘তনয়া’। ২১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) রাত ৮টায় মুক্তি পাবে কনটেন্টটি। তনয়া মূলত একটি মেয়ের সমাজ বাস্তবতার ভয়ংকর প্রভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করে যাওয়ার গল্প। নাম চরিত্রে দেখা যাবে মাখনুন সুলতানা মাহিমাকে।
‘তনয়া’ নিয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে মাখনুন সুলতানা মাহিমা বলেন, ‘প্রথমে তনয়া-র গল্প শুনেই আমি খুব অবাক হয়েছি এটা ভেবে যে, এটা একটা সত্যি ঘটনা। একটা মেয়ের জীবনে এরকম অঘটন ঘটে গেছে। বর্তমানে কোনো ঘটনা ঘটলে আমরা খুব সহজেই জাজ করে ফেলি। কিন্তু সেই ঘটনার সত্যটা আমরা কেউ যাচাই করতে যাই না।’
পরিচালক ইমরাউল রাফাত বলেন, ‘তনয়া-র গল্পটা একটা আড্ডায় শোনা। পরিচিত একজনের কাছ থেকে। হঠাৎ করেই আমি পুরো গল্পটা শুনতে আগ্রহী হই। আমরা নরমালি যে ফরম্যাটে যাই, একটা গল্প লিখে রাখা, কোথাও প্রোপজাল হিসেবে জমা দেয়া; এই গল্পের ক্ষেত্রে তেমন কিছুই হয়নি। গল্পটা মাথাতেই ছিল।’
ইমরাউল রাফাত আরও বলেন, ‘ঘটনাচক্রে চরকির সঙ্গে গল্পটা নিয়ে আলোচনা হয়। সেই সঙ্গে সত্য ঘটনা নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার জন্য সব সময় ভালো। কারণ জীবনঘনিষ্ঠ অনেক কিছু পাওয়া যায়। বাবু ভাই ও মাহিমাসহ যারা অভিনয় করেছেন, সবাই দুর্দান্ত কাজ করেছেন। সেই সঙ্গে আমার টিমের সবাই অনেক চেষ্টা করেছেন কনটেন্টটি ভালোভাবে শেষ করার। সেক্ষেত্রে তনয়া আমার খুব কাছের একটা প্রডাকশন।’
‘তনয়া’-তে আরও অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, এস এস জায়ান, শামীমা নাজনীনসহ আর অনেককেই।
আরও পড়ুন: মুক্তির আগেই আলোচনায় ‘হাওয়া’
যুক্তরাষ্ট্রে শাকিব খানের প্রথম সিনেমা মুক্তি
কলকাতার সিনেমায় সিয়াম, আগস্টে শুটিং
প্রথমবার কলকাতার সিনেমায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন সিয়াম আহমেদ। এখনও নাম ঠিক না হওয়া সিনেমাটির নির্মাতা সায়ন্তন ঘোষাল। এতে আরও অভিনয় করবেন প্রসেনজিৎ, শ্রাবন্তী ও আয়ুষী। জানা যায় আগস্ট থেকে লন্ডনে শুটিং শুরু হবে।সিনেমার গল্প প্রসঙ্গে ইউএনবিকে সিয়াম আহমেদ বলেন, ‘গল্প নিয়ে এখনও বিস্তারিত বলার অনুমতি নেই। এটি পরিচালক ভালো বলতে পারবেন। তিনিই আমাদের জানাবেন। আমি যেটুকু বলতে পারব সেটি জানাচ্ছি। এটি পারিবারিক গল্পের একটি সিনেমা। দুটি জেনারেশনের গল্প তুলে ধরা হয়েছে। যেটি শুধু কলকাতা নয়, বাংলাদেশের দর্শকরাও সম্পৃক্ত হতে পারবে।’সিনেমাটির সঙ্গে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে সিয়াম আরও বলেন, ‘গত দেড় বছর ধরে প্রযোজকের সঙ্গে সিনেমাটি নিয়ে টিমের সবার আলাপ হচ্ছে। কিন্তু গল্প নির্বাচনের বিষয়ে আমরা এক হতে পারছিলাম না। অবশেষে এমন একটি গল্প নির্বাচন হয়েছে সেটি সবার পছন্দ হয়েছে।’উল্লেখ্য, নেটফ্লিক্সের ‘লিটল থিংস’খ্যাত অভিনেত্রী মিথিলা পালকারের বিপরীতে বলিউডের একটি সিনেমায় অভিনয় করবেন সিয়াম আহমেদ। ‘ইন দ্য রিং’ শিরোনামে সিনেমাটি পরিচালনা করবেন যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্র নির্মাতা অলকা রঘুরাম।
আরও পড়ুন: ফের শাকিব-পূজা জুটি
অর্ধশতাধিক প্রেক্ষাগৃহে আদর-বুবলীর ‘তালাশ’
ফের শাকিব-পূজা জুটি
চিত্রনায়কের পাশাপাশি প্রযোজক হিসেবেও সফল শাকিব খান। তার এসকে ফিল্মস থেকে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলোর ব্যবসার খাতা তাই বলে। সম্প্রতি এই তারকা পেয়েছেন সরকারি অনুদান ৬৫ লাখ টাকা, সিনেমার নাম ‘মায়া’।
শাকিব খান প্রযোজিত ও অভিনীত ‘মায়া’ সিনেমার পরিচালক হিমেল আশরাফ। গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন ফেরারী ফরহাদ। এতে শাকিবের বিপরীতে নায়িক চরিত্রে কে থাকবেন তা নিয়ে এতদিন চলছিল যত জল্পনা-কল্পনা ছিল। অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চিত্রনায়ক নিজেই গণমাধ্যমে হাঁড়ির খবর জানালেন।
আরও পড়ুন: ওমর সানিকে পিস্তল দেখিয়ে হুমকির অভিযোগ অস্বীকার জায়েদ খানের
‘মায়া’তে শাকিবের সঙ্গে আবারও জুটি বাঁধবেন পূজা চেরি।
এই প্রসঙ্গে শাকিব খান বলেন, ‘সিনেমাটি বেশ বড় পরিসরে নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে। কিন্তু সরকারি অনুদানের টাকা দিয়ে পুরোটা করা সম্ভব হবে না। এর বাজেট প্রায় কোটি টাকা। এতে নায়িকার চরিত্রে থাকছেন পূজা চেরি।’
চলতি বছরের শেষ দিকে শুরু হবে ‘মায়া’র শুটিং। তবে এর আগে সিনেমার নামও পরিবর্তন হতে পারে বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন: প্রথমবার মিউজিক ভিডিওর মডেল হলেন ছোট পর্দার সারিকা
এর আগে গত রোজার ঈদে শাকিব-পূজা জুটির প্রথম সিনেমা ‘গলুই’মুক্তি পেয়েছিল। যা বেশ সাড়া ফেলে। শাকিবের বিপরীতে প্রশংসিত হয়েছে পূজা। সেই সফলতা ধারাবাহিকতায় আবারও তাদের রসায়ন পর্দায় দেখতে পাবে দর্শক।
‘মিশন এক্সট্রিম-২’র ফার্স্টলুক প্রকাশ
বহুল প্রতীক্ষিত ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমার দ্বিতীয় পর্ব ‘ব্ল্যাক ওয়ার’-এর ফার্স্টলুক পোস্টার প্রকাশ পেল। যেখানে দেখা গেছে, অরিফিন শুভ, সাদিয়া নাবিলা ও সুমিত সেনগুপ্তকে।চলতি বছর রোজার ঈদে ‘ব্ল্যাক ওয়ার’ মুক্তির কথা ছিল। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি চিন্তা করে এর মুক্তির সময় পেছানো হয়। তবে এখনও নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি।এ প্রসঙ্গে সিনেমাটির অন্যতম প্রযোজক ও পরিচালক সানী সানোয়ার বলেন, ‘সবকিছু চিন্তা করে গত ঈদে ‘ব্ল্যাক ওয়ার’ মুক্তি দিইনি। তবে এটি চলতি বছরই মুক্তি পাবে। আর ঈদুল আযহার উপহার হিসেবে দর্শকদের জন্য ফার্স্টলুক পোস্টার প্রকাশ করলাম। আশা করছি, পুরো সিনেমা দেখার জন্য দর্শকদের বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না।’‘মিশন এক্সট্রিম’র দুটি পর্বই সানী সানোয়ারের সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন ফয়সাল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘প্রথম পর্বের সাফল্যের পর আমরা ‘মিশন এক্সট্রিম’র দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হচ্ছি, এটা সত্যি আনন্দের। খুব শিগগিরই আমরা মুক্তির তারিখ ঘোষণা করব।’
আরও পড়ুন: নতুন ছবি ‘এই মুহূর্তে’: এক সিনেমা, তিন পরিচালক‘ব্ল্যাক ওয়ারে’-এ প্রথম পর্বের গল্পের সমাপ্তি ঘটবে বলে জানিয়েছেন পরিচালকদ্বয়। ‘মিশন এক্সট্রিম’র দুই পর্বেই কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন আরিফিন শুভ। ‘ব্ল্যাক ওয়ার’-এ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন- তাসকিন রহমান, জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী, সাদিয়া নাবিলা, সুমিত সেনগুপ্ত, রাইসুল ইসলাম আসাদ, ফজলুর রহমান বাবু, মিশা সওদাগর, শতাব্দী ওয়াদুদ, মনোজ প্রামাণিক, ইরেশ যাকের, মাজনুন মিজান, সুদীপ বিশ্বাস, সৈয়দ আরেফ, রাশেদ খান অপু, দীপু ইমাম, এহসানুর রহমান, ইমরান শওদাগর প্রমুখ।উল্লেখ্য, এর আগে ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর মুক্তি পায় ‘মিশন এক্সট্রিম’র প্রথম পর্ব। বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বহু দেশে একযোগে সিনেমাটি মুক্তি দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: জেকে ১৯৭১: মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত ইংরেজি ভাষার প্রথম বাংলাদেশি চলচ্চিত্র
ঢাকাই সিনেমায় সুবাতাস বইছে
এবার উত্তর আমেরিকায় মুক্তি পাবে ‘গলুই’
আমেরিকা প্রবাসী বাঙালিদের ঈদুল আযহার উদযাপনের সঙ্গী হতে যাচ্ছে ‘গলুই’৷ আগামী ৮ জুলাই থেকে উত্তর আমেরিকায় ২৪টি স্টেটের ৫৮টি সিটিতে ১০০ এর অধিক সিনেমা হলে চলবে গলুই’। সিনেমাটি পরিবেশনায় রয়েছে বায়োস্কোপ ফিল্মস।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বায়োস্কোপ ফিল্মসের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছবির প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু, পরিচালক এসএ হক অলিক এবং বায়োস্কোপ ফিল্মসের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন নিপু বড়ুয়া।
এই প্রসঙ্গে ইউএনবিকে নিপু বড়ুয়া বলেন, 'এটা খুবই আশার কথা যে আমাদের সিনেমা আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তির পথে এখন এগোচ্ছে। এতে ইন্ডাস্ট্রিতে যেমন ভালো সিনেমার সংখ্যা বাড়বে, তেমনি প্রযোজকরাও লগ্নি করতে আগ্রহী হবেন। বায়োস্কোপ ফিল্মস এর এমন উদ্যোগ সামনে আরও বাড়বে।'
সরকারি অনুদানের গলুই সিনেমাটি গত রোজার ঈদে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। এই সিনেমায় প্রথমবারের মতো জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন শাকিব খান ও পূজা চেরী৷ এছাড়া আরও অভিনয় করেছেন আলি রাজ, আজিজুল হাকিমসহ আরও অনেকে।
আরও পড়ুন: মানবাধিকার প্রেক্ষাপটে প্রশংসিত ‘জানা গানা মানা’
বন্যার্তদের সাহায্যের আহ্বান তারকাদের