একনেক
সিলেটের চার লেন প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
সিলেটের ‘কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়ককে জাতীয় মহাসড়ক মানে চার লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি- একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রকল্পটি অনুমোদন দেন।
মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১২-১৪ অর্থ বছরে প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়কটি নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে পাথরবাহী ট্রাক চলাচল, বিমানবন্দরে যাতায়াতকারীদের সুবিধা ও পর্যটকবাহী যান চলাচলের জন্য সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার দাবি ওঠে সিলেটে। এর প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়। পরের বছর চার লেন সড়কের সঙ্গে দুটি সার্ভিস লেন যুক্ত করে তৈরি করা হয় সংশোধিত প্রস্তাবনা।
আরও পড়ুন: ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প জানুয়ারিতে একনেকে উত্থাপন: মন্ত্রী
২০১৯ সালে শুধুমাত্র চার লেনের প্রস্তাবনা জমা পড়ে মন্ত্রণালয়ে। আওয়ামী লীগ চলতি মেয়াদে সরকার গঠনের পর সিলেট-১ আসনের সাংসদ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পে গতি আনেন।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭২৭ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
সড়কটি সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের ছয় কিলোমিটার কুমারগাঁওয়ে শুরু হয়েছে এবং বাদাঘাট দিয়ে অতিবাহিত হয়ে এয়ারপোর্টের কাছে ওসমানী বিমানবন্দর সড়কের সঙ্গে মিলিত হয়। বাদাঘাট লিংক রোডসহ সড়কটির মোট দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ৭৮০ কিলোমিটার ও প্রস্থ পাঁচ দশমিক ৫০ মিটার। সড়কটির শেষ প্রান্ত থেকে ৮০০ মিটার দূরে সিলেট সড়ক শুরু হয়েছে, যা বড় বড় পাথর কোয়ারির সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম।
আরও পড়ুন: একনেকে ৭৯৬ কোটি টাকার চার প্রকল্প অনুমোদন
ভোলাগঞ্জ হতে পাথর বহনকারী ট্রাকগুলো সিলেট শহরের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করে, তবে নগরীর কেন্দ্রস্থল আম্বরখানা ইন্টারসেকশনে দীর্ঘ যানজটের কবলে পড়ে সময় ও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। সড়কটি চার লেনে উন্নীত হলে পাথরবোঝাই ট্রাকগুলো আম্বরখানার দীর্ঘ যানজট এড়িয়ে বাদাঘাট, কুমারগাঁও দিয়ে জাতীয় মহাসড়কে পৌঁছাবে। এতে সিলেট শহরের যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা কমে আসবে।
চট্টগ্রামসহ অন্যান্য শহরগুলোর জন্যও মেট্রো-রেল প্রকল্প বিবেচনা করবে সরকার
সরকার ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম ও বিমানবন্দর রয়েছে এমন অন্যান্য জেলায় মেট্রো-রেল প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন ও হাতে নেয়ার কথা বিবেচনা করছে।
মঙ্গলবার একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে কার্যত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অন্যান্য বড় শহরের জন্য মেট্রো-রেল প্রকল্পের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
এসময় প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন, অন্যরা এনইসি সম্মেলন কক্ষ থেকে যুক্ত ছিলেন।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন শুধু ঢাকায় নয়, মেট্রোরেল প্রকল্প চট্টগ্রামেও হওয়া উচিত। চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন পর্যন্ত মেট্রো-রেল প্রকল্পের নকশা করুন। পরে বলা হয়, যেখানে বড় বিমানবন্দর রয়েছে সেখানে আমাদের মেট্রো রেলের মতো প্রকল্পের নকশা করতে হবে।
আরও পড়ুন: মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে মেট্রোরেলের আরও ৪ ইঞ্জিন, ৮ কোচ
মন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, ভবিষ্যতে অন্যান্য বড় শহরের জন্য মেট্রো-রেল প্রকল্প স্থাপন করা হবে। পরিকল্পনা কমিশনের অংশ হিসেবে, সিটি কর্পোরেশনকে এই জাতীয় প্রকল্প ডিজাইন করতে উৎসাহিত করা হবে।
মান্নান বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী স্যাটেলাইট সিটি ও টাউন নির্মাণের ওপর জোর দেন।
মন্ত্রী বলেন, তিনটি মেগা প্রকল্প- পদ্মা সেতু, মেট্রো-রেল (এমআরটি-৬) এবং কর্ণফুলী টানেল- এ বছর চালু করা হবে, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, পদ্মা সেতু ২০২২ সালের জুনে, কর্ণফুলী টানেল ২০২২ সালের অক্টোবরে এবং ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি)-৬ ডিসেম্বর ২০২২ সালে চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল অর্থনীতি গড়তে একনেকে ২৫৪২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন
গ্রামে ৫জি সম্প্রসারণসহ একনেকে ১০ প্রকল্পের অনুমোদন
ডিজিটাল অর্থনীতি গড়তে একনেকে ২৫৪২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন
বাংলাদেশকে ডিজিটাল অর্থনীতিতে পরিণত করার লক্ষ্যে দুই হাজার ৫৪১ দশমিক ৬৪ কোটি টাকার বিশাল অঙ্কের ‘এনহ্যান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি (ইডিজিই)’ নামে প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পের দুই হাজার ৫০৭ দশমিক ০৫ কোটি টাকা বিশ্বব্যাংক ও ৩৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা সরকার অর্থায়ন করবে।
মঙ্গলবার একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় আটটি মন্ত্রণালয়ের ১০টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: গ্রামে ৫জি সম্প্রসারণসহ একনেকে ১০ প্রকল্পের অনুমোদন
খরচ বেড়েছে মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মাতারবাড়ি ২*৬০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপারক্রিটিক্যাল কয়লা চালিত বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী অনুমোদন করেছে।
প্রকল্পের ব্যয় ১৫ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে এবং ২০২৩ সালের জুন থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এর সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।
মঙ্গলবার একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে কার্যত একনেকের সাপ্তাহিক বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে বৈঠকে যোগ দেন এবং অন্যরা এনইসি সম্মেলন কক্ষ সভায় যোগ দেন।
আরও পড়ুন: গ্রামে ৫জি সম্প্রসারণসহ একনেকে ১০ প্রকল্পের অনুমোদন
সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বৈঠকে ২৯ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা আনুমানিক ব্যয়সহ ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে (শুধুমাত্র সংশোধিত প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় গণনা করা হয়েছে)।
তিনি বলেন, মোট ব্যয়ের মধ্যে ১১ হাজার তিন কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে আসবে এবং বাকি ১৮ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা ঋণ হিসাবে বিদেশি উৎস থেকে আসবে।
এম এ মান্নান বলেন, অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে সাতটি নতুন এবং তিনটি সংশোধিত প্রকল্প।
মাতারবাড়ি প্রকল্পের মূল অর্থ ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকার বিপরীতে এখন ব্যয় দাঁড়িয়েছে মোট ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা। প্রকল্পের সময়সীমা জুন ২০২৩ থেকে ডিসেম্বর ২০২৬ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: একনেকে আরও ১০ প্রকল্পের অনুমোদন
খুলনা-মোংলা রেললাইনে ৯টি আন্ডারপাস নির্মাণ হচ্ছে
খুলনা-মোংলা রেললাইন স্থাপনের পর বেশ কিছু এলাকায় সড়ক যোগাযোগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বর্তমান সড়ক থেকে প্রায় ১০-১২ ফুট উঁচু দিয়ে রেললাইন যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা। বিশেষ করে সড়কগুলো দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। এজন্য খুলনা ও বাগেরহাটের নয়টি স্থানে আন্ডারপাস নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে প্রকল্প সংশোধন করে আন্ডারপাস নির্মাণের অংশটি সংযোজন করা হয়েছে। আগামী বছরের শুরুতে আন্ডারপাস নির্মাণ শুরু হবে।
খুলনার ভেতরের আন্ডারপাসের স্থানগুলো হচ্ছে-খুলনার বিল ডাকাতিয়ার লতাপাহাড় সড়কে, আড়ংঘাটা পুরাতন সাতক্ষীরা সড়কের ওপর, লবণচরা থানার পেছনে প্রস্তাবিত মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এবং রূপসার জাবুসা বাজার মোড়ে।
বাগেরহাটের ভেতরে কাটাখালি স্টেশনের আগে বালিয়া ভট্টখামার এলাকা, চুলকাঠি বাজারের পাশে পিলজঙ্গ এলাকায়, মহিষ খামারের পাশে, বাঘার কবিরাজ বাড়ি এলাকায় এবং দিগরাজ বাজার থেকে কিছুটা সামনে অন্য পাঁচটি আন্ডারপাস নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্প থেকে জানা গেছে, খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত রেললাইনের দৈর্ঘ্য হবে ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার। রেললাইন রূপসা নদীর ওপর দিয়ে যাবে। এ জন্য রূপসা সড়ক সেতুর অদূরে রেল সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: লোকবল সংকট : বন্ধ হলো নাটোরের আজিমনগর রেলস্টেশন
সূত্রটি জানায়, খুলনা থেকে মোংলার সড়ক পথের দৈর্ঘ্য ৫০ কিলোমিটার। জাতীয় মহাসড়ক (এন-৭) এর পাশ দিয়েই সমান্তরালভাবেই রেললাইন যাচ্ছে। নতুন রেললাইন যেই এলাকায় বসছে, এর মাঝে অসংখ্য গ্রামীণ সড়ক, বাজার এবং মহাসড়ক রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ভূমি থেকে ৩-৪ ফুট উচ্চতায় রেললাইন বসছে। এ জন্য রেললাইন এলাকায় ১০৬টি কালভার্ট ও ৩১টি মাঝারি আকৃতির সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।
তবে কিছু এলাকায় রেললাইন থেকে আগের সড়কগুলো ৪-৫ ফুট নিচু থেকে গেছে। কয়েকটি জায়গায় সড়ক থেকে রেললাইনের উচ্চতা ১০ থেকে ১৪ ফুট পর্যন্ত। এতে রেললাইন অতিক্রম করতে ভোগান্তিতে পড়ছেন স্থানীয়রা। এসব বিষয় মাথায় রেখেই আন্ডারপাসগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে।
খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, রেললাইন থেকে সড়ক ১০-১২ ফুট নিচে হওয়া এবং ভারী যানবাহন চলাচল করায় এই নয়টি স্থানে আন্ডারপাস নির্মাণ করা হবে। সংশোধিত প্রকল্পে বিষয়টি অনুমোদনের পর মাটি পরীক্ষা হয়েছে। নকশা তৈরির কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী বছরের শুরুতেই আন্ডারপাসের কাজ শুরু হবে। আপাতত ৪০ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নকশা তৈরির কাজ শেষ হলে পুরো ব্যয় জানা যাবে।
তিনি বলেন, কয়েকটি এলাকায় আন্ডারপাস বা ওভারপাসের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু প্রকৌশলীরা স্থানগুলো পরিদর্শন করে ওই সব এলাকায় ওভারপাস বা আন্ডারপাস সম্ভব নয় বলে মতামত দিয়েছেন। কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ন্যূনতম ৮-১০ ফুট উচ্চতা না থাকলে রেললাইন মেলানো যাবে না। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বাড়বে। প্রস্তাবিত এলাকায় উচ্চতা কম।
আরও পড়ুন: রেল খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী তুরস্ক
কেমন হবে আমাদের মেট্রোরেল?
উল্লেখ্য, গত ৫ অক্টোবর খুলনা-মোংলা রেল (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়। বর্তমানে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বরে একনেকে অনুমোদন পাওয়া খুলনা-মোংলা ৬৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের প্রথম ব্যয় ছিল ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। প্রথম দফা প্রকল্প সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা। দ্বিতীয় দফায় বর্তমান ব্যয় ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ প্রকল্পে ধীরগতি: ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৭১.৩৮ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় সম্বলিত প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনের অনুমোদন দেয়ার সময় তিনি এই নির্দেশ দেন।
মঙ্গলবার একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের সাপ্তাহিক সভায় এর অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবং একনেকের অন্য সদস্যরা এনইসি ভবন থেকে যুক্ত ছিলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের কাজ শেষ করার জন্য চূড়ান্ত নোটিশ দেয়া হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী অনিয়ম ও বিচ্যুতির অভিযোগে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে পরিকল্পনা কমিশনকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, কলেজের কাজে অনিয়মের অভিযোগের পর আইএমইডি তদন্ত শুরু করে এবং শেষে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়।
মান্নান বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন, এমনকি জড়িতদের মধ্যে কেউ অবসরে গেলেও তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।’
পড়ুন: কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ স্থাপন প্রকল্পে কেন বিলম্ব, জানতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নতুন সময়সীমা অনুযায়ী কাজ শেষ করতে বলেছেন।
এদিকে একনেক সভায় আজ ৬ হাজার ৫৫১ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট নয়টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩ হাজার ৭৫২ কোটি ২৯ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ২৬ কোটি ২২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ ২ হাজার ৭৮২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
নয়টি প্রকল্পের মধ্যে চারটি নতুন, আর পাঁচটি সংশোধিত প্রকল্প।
পড়ুন: গ্রামে ৫জি সম্প্রসারণসহ একনেকে ১০ প্রকল্পের অনুমোদন
বিএনপি আগামী নির্বাচন বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে: প্রধানমন্ত্রী
যুবকদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের বড় প্রকল্প
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মঙ্গলবার ৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় এক কোটি যুবক, নারী, শ্রমিক এবং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে ভবিষ্যতে চাকরির বাজারের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে একটি বড় প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবং একনেকের অন্য সদস্যরা এনইসি ভবন থেকে যুক্ত ছিলেন।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, সভায় মোট আটটি প্রকল্প-ছয়টি নতুন এবং দুটি সংশোধিত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যার মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৫৮৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
মোট ব্যয়ের মধ্যে ৫ হাজার ৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা সরকারি অর্থায়নে বাকি ২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ হিসেবে আসবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে কারিগরি শিক্ষা বিভাগ ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘অ্যাকসিলারেটিং অ্যান্ড স্ট্রেংদেনিং স্কিলস ফর ইকোনমিক ট্রান্সফরমেশন’(এএসএসইটি) প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
আরও পড়ুন: গ্রামে ৫জি সম্প্রসারণসহ একনেকে ১০ প্রকল্পের অনুমোদন
মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৭২০ কোটি টাকা সরকার দিবে এবং বাকি প্রায় ২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা বিশ্বব্যাংকের প্রকল্প সহায়তা হিসাবে আসবে।
মান্নান বলেন, দেশে কর্মীদের মধ্যে দক্ষতার অভাব রয়েছে এবং তা কাটিয়ে উঠতে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
এসময় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীমন্ত্রী ডা. শামসুল আলম বলেন, দেশের ডেমোগ্রাফিক ডেভিডেন্ট সুবিধাকে যথার্থভাবে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে এএসএসইটি অত্যন্ত সময়োপযোগী প্রকল্প বলে প্রধানমন্ত্রী অভিহিত করেছেন।
এএসএসইটি প্রকল্পটি এক কোটিরও বেশি যুবক ও শ্রমিককে ভবিষ্যতের চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলবে।
প্রকল্পটি যুবক, নারী এবং প্রতিবন্ধীসহ সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠীকে দক্ষতা অর্জনে এবং শ্রমবাজারের সাথে সংযুক্ত করতে সহায়তা করবে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে অনাবাসিক ভবন নির্মাণ, ১৫ একর জমি অধিগ্রহণ, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান, সেমিনার, সম্মেলন, আইসিটি এবং কম্পিউটার সরঞ্জাম সংগ্রহ, কারিগরি ও উপবৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রদান এবং মহামারিসম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি।
প্রকল্পটি বাংলাদেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক খাতের আধুনিকীকরণ তৈরিতে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: মাসে এক কোটির বেশি টিকার ব্যবস্থা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশকে বিশ্বের যোগাযোগের কেন্দ্রে পরিণত করতে চাই: প্রধানমন্ত্রী
সাত মাসেও আলোর মুখ দেখেনি ‘সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্প’
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদনের সাত মাসেও সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্পের কোন অগ্রগতি নেই। এখন পর্যন্ত ফাইল চালাচালির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে এর কর্মকাণ্ড। এতে প্রকল্পটির কাজ যথাসময়ে শেষ না হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একনেকের সভায় সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। প্রকল্পটির মেয়াদ রয়েছে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের ডিএফও ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ৩৯টি উপজেলার প্রায় ৩০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। প্রকল্পের আওতায় সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীর সংখ্যা ও আবাসস্থল, রোগ-বালাই ও সংরক্ষিত এলাকার বৈশিষ্ট্য ও প্রতিবেশ নিয়ে জরিপ করা হবে। সুন্দরবনের নদী, খাল, পুকুর ইত্যাদি খনন-পুনঃখননের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে, বনের সম্পদ আহরণকারী ও সুবিধাভোগীদের জন্য প্রচলিত পারমিট সিস্টেম ও পরিচয়পত্র অটোমেশন করা হবে, যার পরিমাণ হবে ৩০ হাজার এবং ইকোট্যুরিজম পরিকল্পনা প্রণয়ন ও ট্যুর গাইডদের প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা হবে।
তিনি জানান, প্রকল্পের আওতায় অফিস ও আবাসিক ভবন, দ্রুতগামী জলযান ক্রয়, ব্যারাক, কাঠের জেটি, পন্টুনসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের কর্মসূচী রয়েছে। এছাড়াও বিশাল এ বনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বনকর্মীদের প্রশিক্ষণ, খুলনাভিত্তিক জিআইএস ল্যাবরেটরি, কম্পিউটার সফটওয়্যার ও সফটওয়্যার লাইসেন্স এবং জিপিএস ট্রাকিং সুবিধার উন্নয়ন করা হবে। রিমোট সেন্সিং এবং জিআইএস প্রয়োগের মাধ্যমে স্মার্ট পেট্রোলিংয়ের তথ্যভান্ডার তৈরি ও এর পরিধি বাড়ানো হবে।
আরও পড়ুন: সাত মাসেও আলোর মুখ দেখেনি ‘সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্প’
তবে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের অন্যতম কাজ হিসেবে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগসহ অন্যান্য দাপ্তরিক কাজগুলো এখনো শুরু করা যায়নি বলে ডিএফও আবু নাসের জানিয়েছেন।
বন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের জন্য মন্ত্রণালয়ে নাম পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে অনুমোদন পাওয়ার পরেই প্রকল্পটির কাজ পর্যায়ক্রমে শুরু হবে। এদিকে প্রকল্প বাস্তবায়নের এ ধীরগতিতে হতাশা প্রকাশ করেছেন সুন্দরবন সংশ্লিষ্টরা।
সুন্দরবন একাডেমির পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির বলেন, সুন্দরবনকে নিয়ে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে অতীতেও এরকম দীর্ঘসূত্রতা দেখা গেছে। শেষ মুহূর্তে তড়িঘড়ি করে কাজ করতে যেয়ে প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন হয় না।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে দক্ষিণাঞ্চলসহ উপকূলীয় অঞ্চলকে সুন্দরবন যেভাবে নিরাপদ রাখে, সে বনের সুরক্ষা ও উন্নয়নে সবসময়ই উদাসীনতা দেখা গেছে সংশ্লিষ্টদের।
আরও পড়ুন: বাঘ সংরক্ষণে সুন্দরবনে মানুষের প্রবেশ বন্ধ করতে হবে: পরিবেশ উপমন্ত্রী
সুন্দরবনে হরিণের মাংস ও মাথাসহ শিকারি আটক
এ ব্যাপারে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের কার্যক্রম ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।’
খুব শিগগিরই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
গ্রামে ৫জি সম্প্রসারণসহ একনেকে ১০ প্রকল্পের অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মঙ্গলবার গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং ৫জি সেবা প্রদানে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ণে ২ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে।
একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের সাপ্তাহিক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবং একনেকের অন্য সদস্যরা এনইসি ভবন থেকে যুক্ত ছিলেন।
সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, ‘আজকের সভায় মোট ১০টি প্রকল্প প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পের মোট আনুমানিক ব্যয় ৭ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এর মধ্যে নয়টি নতুন এবং বাকি একটি সংশোধিত প্রকল্প।
এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৬ হাজার ৬৬০ কোটি ২৯ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ১৩৭ কোটি ৯ লাখ টাকা ও বৈদেশিক ঋণ ১ হাজার ৮৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
ব্যয়ের দিক দিয়ে তিনটি বড় প্রকল্প হলো গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং ৫জি সেবা প্রদানে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন। প্রকল্পটির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা। জামালপুরে মাদারগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: গ্রামীণ পানি সরবরাহসহ ৫ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
অন্যান্য প্রকল্পগুলো হলো ‘পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্প- ৩য় পর্যায়’ প্রকল্পর ব্যয় ধরা হয়েছে ৯২৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। কুড়িগ্রামের ‘দুধকুমার নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন’ প্রকল্পটির জন্য ব্যয় হবে ৬৯২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ‘বাগেরহাট-রামপাল-মংলা জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নয়ন’ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ‘দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে মুক্তিযুদ্ধের অডিও ভিজুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৬২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্ট-ব্রিজিং (অতিরিক্ত অর্থায়ন, এলজিইডি অংশ)’ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। ‘জরাজীর্ণ, অপ্রশস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিদ্যমান বেইলী ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ সেতু প্রতিস্থাপন প্রকল্প (রংপুর জোন)’ বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৮৬১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
এছাড়া ‘উপকূলীয় চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পটি প্রথম সংশোধনের মাধ্যমে ব্যয় বেড়ে হচ্ছে ১৫৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ৯৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি মেয়াদ বেড়ে জুন ২০২৩ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: একনেকে আরও ১০ প্রকল্পের অনুমোদন
অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়নে মন্ত্রিসভায় নীতিমালা অনুমোদন
একনেকে আরও ১০ প্রকল্পের অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহি কমিটি (একনেক) প্রায় ২ হাজার ৫৭৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১০ প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ২ হাজার ১৫০ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ ৪২৫ কোটি টাকা।
বুধবার গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং একনেক-এর চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেরে বাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক-এর সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়নে মন্ত্রিসভায় নীতিমালা অনুমোদন
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দু’টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কে তিনটি আন্ডারপাস এবং পদুয়ার বাজার ইন্টারসেকশনে ইউলুপ নির্মাণ’ প্রকল্প : ‘জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (ময়মনসিংহ জোন) (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বাংলাদেশ চ্যান্সারি ভবন নির্মাণ প্রকল্প; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘ইনস্টিটিউট অব টিস্যু ব্যাংকিং এন্ড বায়োমেটেরিয়াল রিসার্চ-এর সেবা ও গবেষণা সুবিধাদির আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্প; মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘জেলাভিত্তিক মহিলা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ (৬৪ জেলা) (৩য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।
আরও পড়ুনঃ গ্রামীণ পানি সরবরাহসহ ৫ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ শিশু কার্ডিওলজি ও শিশু কার্ডিয়াক সার্জারি ইউনিট স্থাপন’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আয়রণ ব্রিজ পুনঃনির্মাণ/পুনর্বাসন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘পদ্মা বহুমুখী সেতুর ভাটিতে মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং ও টংগিবাড়ী উপজেলাধীন বিভিন্ন স্থানে পদ্মা নদীর বাম তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্প; প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ‘প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণের লক্ষ্যে অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান সৃজনে সহায়ক প্রকল্প’ এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের ‘বিসিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী, ঠাকুরগাঁও’ প্রকল্প।
আরও পড়ুনঃ বিটিসিএলকে টেলিযোগাযোগ সেবা সম্প্রসারণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজি’র মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।