নিখোঁজ
চট্টগ্রামে বন্যায় নিহত ১৬, ক্ষয়ক্ষতি ১৩৫ কোটি টাকার বেশি
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানিতে ডুবে চট্টগ্রামে অন্তত ১৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ সময় ঘর-বাড়ি, ফসলি জমি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সব মিলিয়ে ১৩৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া উপজেলার।
সোমবার রাত থেকে ৩ দিন কার্যত পানির নিচে ছিল এসব এলাকা। টানা ৩ দিন বন্ধ বিদ্যুৎ। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হলেও এখনো অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হয়নি বলে জানান জনপ্রতিনিধিরা।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন সিনিয়র কর্মকর্তা মো. সাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রাথমিক হিসাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৩৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার। গত ৩ দিন আমরা খাবার বরাদ্দ দিয়েছি। আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত আছে মোট ১ হাজার ১৯৩টি।
এদিকে বুধবার থেকে পানি কমতে শুরু করায় বিভিন্ন এলাকায় নৌকা ডুবে ও স্রোতের টানে ডুবে নিখোঁজ হওয় অনেক নারী-পুরুষ-শিশুর লাশ ভেসে উঠে।
বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বন্যায় ৩ উপজেলা ও মহানগরীতে মোট ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় প্রশাসন মৃত্যুর এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর বন্যা পরিস্থিতি ২৪ ঘণ্টায় উন্নতি হতে পারে: এফএফডব্লিউসি
ময়মনসিংহে নিখোঁজের একদিন পর ডোবা থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার
ময়মনসিংহ নগরীর ঘুন্টি এলাকায় নিখোঁজের একদিন পর রেললাইনের পাশের ডোবা এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত ওমর (১০) ঘুন্টি মাঠপাড় এলাকার মিলন মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ঘুন্টি রেললাইনের পাশের ডোবায় লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে পদ্মায় নিখোঁজ দুই শিশুর লাশ উদ্ধার
শিশুটি বুধবার বিকাল থেকে নিখোঁজ ছিল বলে জানায় তার পরিবার।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ধারণা করা হচ্ছে শ্বাসরোধে শিশুটিকে হত্যা করে ডোবায় ফেলা হয়েছে। হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।
আরও পড়ুন: পেকুয়ায় পানিতে ভেসে যাওয়া নিখোঁজ ৩ শিশুর লাশ উদ্ধার
পেকুয়ায় পানিতে ভেসে যাওয়া নিখোঁজ ৩ শিশুর লাশ উদ্ধার
কক্সবাজারের পেকুয়ায় খালের পানিতে পড়ে ভেসে যাওয়া নিখোঁজ দুই ভাই-বোনসহ তিন শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে তাদের লাশগুলো উদ্ধার করা হয়।
এর আগে বুধবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ফেরাসিঙ্গা পাড়ার খালের পানিতে তারা ভেসে যায়।
নিহত শিশুরা হলো- স্থানীয় নুরুল আলমের মেয়ে তাহিদা বেগম (১০) ও ছেলে আমির হোছাইন (৭) এবং তাদের নিকটাত্মীয় ছাবের আহমদের মেয়ে হুমাইরা বেগম (৮)।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে পদ্মায় নিখোঁজ দুই শিশুর লাশ উদ্ধার
উজানটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল করিম নিহত শিশুদের পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, বুধবার বিকালে তিন শিশু পাশের সাহেবখালী খালে মাছ ধরতে যায়। সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফেরার পথে তারা সাহেবখালী খালে পড়ে নিখোঁজ হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে একই খালে তাদের লাশ ভেসে উঠে।
তিনি আরও বলেন, বন্যার কারণে খালে প্রবল বেগে প্রবাহিত পানিতে পড়ে গেলে এই তিন শিশু আর উঠতে পারেনি।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওমর হায়দার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লাশগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ৬ মাস বয়সী অজ্ঞাত শিশুর লাশ উদ্ধার
চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে নিখোঁজের ৩২ ঘণ্টা পর যুবকের লাশ উদ্ধার
চট্টগ্রামের রাউজানে বন্যার পানিতে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজের ৩২ ঘণ্টা পর এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (৯ আগস্ট) সকালে উপজেলার হালদা নদীর ছায়ারচর এলাকা থেকে তার লাশটি উদ্ধার করা হয়।
মৃত যুবক শাহেদ হোসেন বাবু (৩৭) একই উপজেলার উরকিচর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত সিআইপি এস এম ইউসুফের ছেলে। তিনি পেশায় একজন কৃষি ও মাছ চাষি ছিলেন।
আরও পড়ুন: নিখোঁজের ৩ দিন পর যুবকের ভাসমান লাশ উদ্ধার
নৌ পুলিশের হালদা ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুল হাছান বলেন, নিখোঁজের স্থান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে স্থানীয়রা লাশটি উদ্ধার করে। পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া শেষ করতে তাদের বাড়িতে এসেছি। লাশটির সুরতাহাল করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার (৭ আগস্ট) রাতে অতি বর্ষণে উরকিরচর গ্রামের শাহেদের গরুর খামার ডুবে যায়। খামারে থাকা কয়েকটি গরু পার্শ্ববর্তী খালে ভেসে যায়। গরুগুলো উদ্ধার করে শাহেদ আরও তিনজন সঙ্গীসহ সন্ধ্যায় নৌকায় করে ফেরার সময় নৌকা উল্টে হালদার শাখা খালপাড়ে পড়ে যান। অন্য তিনজন তীরে উঠতে পারলেও সাঁতার না জানার কারণে তীব্র স্রোতের টানে ভেসে যান শাহেদ।
উল্লেখ্য, নিখোঁজ শাহেদের খোঁজে 'ঘটনার পর থেকে সদরঘাট নৌ থানা থেকে একটি টিম হালদা নৌ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যদের নিয়ে স্পিডবোটে করে নদী ও শাখা খালে সন্ধানে তল্লাশি চালিয়েছিল।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে চিকিৎসকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
নিখোঁজের ৩ দিন পর যুবকের ভাসমান লাশ উদ্ধার
খুলনার পাইকগাছায় নিখোঁজের তিন দিন পর চিংড়ি ঘেরে ভাসমান অবস্থায় এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত যুবকের নাম বিশ্বজিৎ সানা।
বুধবার (৯ আগস্ট) সকাল ৭টার দিকে সোলাদানা আমুরকাটা দীঘা সীমানায় প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন চিংড়ি ঘের থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
এরপর সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহত বিশ্বজিৎ সানা সোলাদানা ইউনিয়নের আমুরকাটা গ্রামের মৃত মনোরঞ্জন সানার ছেলে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে পৃথক স্থান থেকে ২ ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
পারিবারিক সূত্রের উদ্বৃতি দিয়ে পুলিশ জানায়, গত রবিবার রাতে তিনি নিজ ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। তবে পরের দিন সকালে তাকে আর ঘরে দেখা যায়নি। সেই থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ঘটনার পর থেকে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজির পরও পরিবারের লোকজন তার কোনো সন্ধান পায়নি।
সর্বশেষ বুধবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দা সুশান্ত জানান, পঙ্কজ সরদারের চিংড়ি ঘেরে তার লাশ ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ দেখে বিশ্বজিতের বলে শনাক্ত করলে থানা পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাইকগাছা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনজির হোসেন জানান, বিশ্বজিৎ সানা গত রবিবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন।
পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, নিহত বিশ্বজিতের হত্যার মোটিভ উদঘাটনে চুরি ও পরকীয়ার সূত্র ধরে তদন্তকাজ চলছে।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে চিকিৎসকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে নৌকাডুবি, ব্যবসায়ী নিখোঁজ
চট্টগ্রামের রাউজানে নিজের খামার থেকে বাড়ি ফেরার পথে বন্যার পানিতে নৌকা ডুবে নিখোঁজ হয়েছেন এক ব্যবসায়ী।
সোমবার (৭ আগস্ট) রাতে উপজেলার উরকিরচর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হালদা নদীর একটি শাখা খালে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে বন্যায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
নিখোঁজ চট্টগ্রামের তরুণ ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা সাহেদ(৩৫) রাউজানের এস এম ইউসুফের ছেলে।
নৌকাডুবির সময় সঙ্গে থাকা ৪জন সাঁতার কেটে পাড়ে উঠতে পারলেও বাবু উঠতে পারেনি। তীব্র স্রোত তাকে টেনে নিয়ে যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. কাউসার-উল-আলম বলেন, নিজ বসতঘর থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নিজস্ব প্রজেক্ট খামার বাড়িতে (মাছের খামার, গরুর খামার) যান সাহেদ।
রাত ৮টার দিকে সেখান থেকে ফেরার পথে রাউজান হাটহাজারী মধ্যবর্তী বাড়িঘোনা ব্রিজ এলাকায় নৌকা উল্টে যায়। নৌকায় থাকা আরও ৪জনসহ সাঁতার কেটে উঠতে পারলেও সাহেদ পানির স্রোতে ভেসে যান।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ, রাউজান থানা ও হাটহাজারী থানা পুলিশসহ স্থানীয় লোকজন বাবুর খোঁজ পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল, জোয়ারের পানিতে উরকিরচরসহ আশপাশের গ্রামে বন্যা দেখা দিয়েছে।
সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম উল্লাহ জানান, উরকিরচরে সাহেদের গরু ও মুরগীর খামার আছে। যেখানে হালদা নদীর একটি শাখা খাল পেড়িয়ে যেতে হয়।
তিনি আরও বলেন, অতি বৃষ্টির কারণে সোমবার খামারে পানি উঠে যায়। তাই সাহেদ সহ আরও ৩ জন খামার দেখে ফেরার পথে নৌকা উল্টে পানিতে পড়ে যায়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ আবদুল জব্বার সোহেল জানান, রাত ১২টা পর্যন্ত সাহেদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। বন্যায় পানি বেশি থাকায় হালদা নদীতে ভেসে যেতে পারে। তার সন্ধানে হালদা নদী ও শাখা খালে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে বন্যা-ভূমিধস মোকাবিলায় সেনা মোতায়েন
চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে কলেজছাত্রীর মৃত্যু
হিমাচলে দেড় মাসের টানা বৃষ্টিতে ১৯৯ জনের মৃত্যু, ৩১ জন নিখোঁজ
ভারতের হিমাচল প্রদেশে বর্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে গত ৪১ দিনে বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা, ভূমিধস ও সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১৯৯ জন মানুষ মারা গেছেন এবং ৩১ জন নিখোঁজ হয়েছেন।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) ভারতের গণমাধ্যম এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্যটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, নিহত ১৯৯ জনের মধ্যে ৫৭ জন ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার কারণে এবং ১৪২ জন বর্ষাকালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘এখন পর্যন্ত বর্ষায় বিভিন্ন কারণে ১৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় ৫৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং সড়ক দুর্ঘটনা বা অন্যান্য কারণে ১৪২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়াও হিমাচল প্রদেশে ৩১ জন নিখোঁজ এবং ২২৯ জন আহত হয়েছে।’
রাজ্য সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মুখ্য সচিব অনিল খাচি বলেছেন, রাজ্যে বৃষ্টি ও বন্যায় প্রতিদিনই প্রাণহানি বাড়ছে।
আরও পড়ুন: চীনে ভয়াবহ বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২১
তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও দিন দিন বাড়ছে।
তথ্য অনুযায়ী, এ সময়ে অবকাঠামোর আনুমানিক ক্ষতি দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫৬৩ দশমিক ৫৮ কোটি টাকা।
বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় রাজ্যে ৭৭৪টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৭ হাজার ৩১৭টি বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৫৪টি দোকান ও ২ হাজার ৩৩৭টি গোয়ালঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এ সময় রাজ্যে ৭৯টি ভূমিধস এবং ৫৩টি আকস্মিক বন্যা হয়েছে। রাজ্যে প্রায় ৩০০টি রাস্তা বন্ধ রয়েছে। ২৭৪টি বিদ্যুৎ ও ৪২টি পানি সরবরাহ প্রকল্প ব্যাহত হয়েছে।
রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার আগামী দুই দিনের জন্য সতর্কতা জারি করেছে।
অন্যদিকে, সোলান জেলার কালকা-সিমলা চার লেন জাতীয় মহাসড়ক-৫ ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সিমলার পর্যটন শিল্প হুমকির মুখে পড়েছে। এই বিপর্যয় রাজ্যের রাজধানীর ব্যবসার ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
হিমাচল প্রদেশ ট্যুরিজম স্টেকহোল্ডারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মহিন্দর শেঠ বুধবার বলেছেন, সাম্প্রতিক বৃষ্টি ও বন্যা শেষে আগামী সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে পর্যটকদের ভ্রমণ শুরুর আশা ছিল। তবে মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের ভয়ে পর্যটকরা ভ্রমণ বন্ধ রেখেছেন।
আরও পড়ুন: চীনে বন্যায় নিহত ২০, নিখোঁজ ২৭
চীনে বন্যায় ১১ জন নিহত, ২৭ জন নিখোঁজ
চীনে বন্যায় নিহত ২০, নিখোঁজ ২৭
চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের আশেপাশের অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিতে অন্তত ২০ জন নিহত ও ২৭ জন নিখোঁজ হয়েছেন বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে দেশটির সরকার। প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে গেছে, গাছ উপড়ে পড়েছে এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
বেইজিং শহরতলির স্কুল ও অন্যান্য সরকারি ভবন এবং নিকটবর্তী তিয়ানজিন ও ঝুওঝৌ শহরে হাজার হাজার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বন্যার তীব্রতা চীনের রাজধানীকে অবাক করে দিয়েছে। বেইজিংয়ে সাধারণত শুষ্ক গ্রীষ্মকালই দেখা যায়। তাছাড়া এ বছর ছিল রেকর্ড পরিমাণ তাপ।
অন্যান্য অঞ্চল, বিশেষ করে চীনের দক্ষিণাঞ্চলে অস্বাভাবিকভাবে মারাত্মক গ্রীষ্মকালীন বন্যা দেখা দিয়েছে, যার ফলে বহু মানুষ মারা গেছে। এদিকে, দেশের অন্যান্য অংশ খরার সঙ্গে লড়াই করছে।
আরও পড়ুন: চীনে বন্যায় ১১ জন নিহত, ২৭ জন নিখোঁজ
বেইজিংয়ের পশ্চিম প্রান্তের মেনটুগু জেলার রাস্তায় জমে থাকা কাদা পানিতে দুর্ঘটনায় পড়ছে গাড়ি।
বেইজিংয়ে ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং কর্তৃপক্ষ নিখোঁজ ২৭ জনকে খুঁজছে বলে সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে। রাজধানীকে ঘিরে থাকা হেবেই প্রদেশে ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ফিনিক্স টিভি তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, রাজধানীর ফাংশান জেলার প্রায় ৬০ হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সিনহুয়া জানিয়েছে, বেইজিংয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ঝুওঝৌতে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারী বৃষ্টিতে বন্যায় ১৫ জনের মৃত্যু, নয়াদিল্লির স্কুল বন্ধ
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং স্থানীয় সরকারগুলোকে আটকা পড়াদের উদ্ধার এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে 'সর্বাত্মক প্রচেষ্টা' চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
বেইজিংয়ের পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর তিয়ানজিনের সরকার জানিয়েছে, ইয়ংডিং নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে ৩৫ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
হেবেই প্রদেশের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, শনিবার থেকে কোথাও কোথাও ৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। কিছু এলাকায় ঘণ্টায় ৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: ইতালির প্রাণঘাতী বন্যা জলবায়ু বিপর্যয়ের সর্বশেষ চরমতম উদাহরণ
নিম্নচাপে ভোলায় ৫ ট্রলারডুবি, ৬ জেলে নিখোঁজ
নিম্নচাপের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর মোহনায় প্রবল ঝড় ও ঢেউয়ের কবলে পড়ে ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরার ৫৮ জেলেসহ ৫টি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে।
এতে অর্ধশতাধিক জেলের মধ্যে ৫২ জেলে উদ্ধার হলেও ৬ জেলে নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে নোয়াখালীর হাতিয়ার উড়িরচরের পূর্বপাশে সাগর মোহনায় ও সাঙ্গু গ্যাসফিল্ড সংলগ্ন সাগর মোহনায় এই ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে।
ডুবে যাওয়া ট্রলারগুলো হলো- উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের মৎস্য আড়তদার মাইনুদ্দিনের ট্রলার এফবি মায়ের দোয়া, মনপুরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন হাওলাদারের মৎস্য আড়তের লতিফ মাঝির ট্রলার, দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের পঁচাকোড়ালিয়া ঘাটের ইউনুচ বলির ট্রলার, সূর্যমুখী ঘাটের জান্টু মাঝির ট্রলার, উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের মাষ্টারহাট খালের জামাল মাঝির ট্রলার।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে তিস্তায় নৌকাডুবি, ৩ কৃষক নিখোঁজ
চীনে বন্যায় ১১ জন নিহত, ২৭ জন নিখোঁজ
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রাজধানী বেইজিংয়ের আশেপাশের পাহাড়ে বন্যায় ১১ জন নিহত হয়েছেন এবং ২৭ জন নিখোঁজ রয়েছে।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দেশটির সিসিটিভি চ্যানেল জানিয়েছে, কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টির কারণে কর্তৃপক্ষ ট্রেন স্টেশনগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। দুর্বল সম্প্রদায়ের লোকদের স্কুলের জিমে সরিয়ে নিয়েছে। বাড়িঘর ডুবে গেছে এবং রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে।
মৌসুমী বন্যা প্রতি গ্রীষ্মে চীনের বড় অংশে আঘাত হানে, বিশেষ করে আধা-ক্রান্তীয় দক্ষিণে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে সমাবেশে বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহত, আহত প্রায় ২০০
তবে দেশটির উত্তরাঞ্চলে এই বছর ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার খবর পাওয়া গেছে।
জুলাইয়ের শুরুর দিকে চংকিং-এর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলে বন্যায় কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছিল এবং সুদূর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় লিয়াওনিং প্রদেশে প্রায় ৫ হাজার ৫৯০ জন লোককে সরিয়ে নিতে হয়েছিল।
হুবেই প্রদেশের মধ্যাঞ্চলে বৃষ্টি-ঝড়ে বাসিন্দারা বাড়িতে আটকে পড়ে।
সাম্প্রতিক ইতিহাসে চীনের সবচেয়ে মারাত্মক এবং সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক বন্যা ছিল ১৯৯৮ সালে। সেবার ৪ হাজার ১৫০ জন মারা গিয়েছিল।
২০২১ সালে হেনানের কেন্দ্রীয় প্রদেশে বন্যায় ৩০০ জনেরও বেশি লোক মারা গিয়েছিল। সেই বছরের ২০ জুলাই রেকর্ড বৃষ্টিপাতের ফলে প্রাদেশিক রাজধানী ঝেংঝো প্লাবিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে কারাগারে দাঙ্গায় নিহত ৫