পদ্মা সেতু
৭৩ বছর পর ট্রেন যাচ্ছে মোংলা সমুদ্র বন্দরে
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দ্রুত এগিয়ে চলেছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। এবার প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৭৩ বছর পর রেল যোগাযোগে যুক্ত হবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা।
এরইমধ্যে খুলনা-মোংলা রেলপথের কাজ ৯৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের জুনে বাকি কাজ শেষ হওয়ার কথা।
জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
১৯৫০ সালের ১লা ডিসেম্বর মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়। মোংলা বন্দর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত। এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে সেলফি তোলার সময় ট্রেন থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু
খুলনা শহর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণে পশুর নদী ও মোংলা নদীর সংযোগস্থলে এই বন্দরের অবস্থান।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পণ্য ও পর্যটন পরিবহনে মোংলা বন্দরকে রেলসেবার আওতায় আনা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে নির্মাণ করা হচ্ছে খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার রেলপথ।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা আরও জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে রেলপথের ৯৬ শতাংশ কাজ। চলতি বছরের জুনে পুরো কাজ শেষ হবে।
বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রেলসেবা চালু হলে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হবে। রেলপথ না থাকায় এতদিন বন্দরের বড় বড় কন্টেইনার পরিবহনে সমস্যা হতো।
এছাড়া সুন্দরবনে পর্যটক পরিবহন সহজ হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটবে।
মোংলা বন্দরের ব্যবসায়ী এইচ এম দুলাল, মশিউর রহমান ও ইকবাল হোসেন জানান, মোংলা দেশের অন্যতম সমুদ্রবন্দর হলেও এখানে এতদিন রেল সংযোগ ছিল না। ফলে বন্দরটিতে অন্য দেশের বড় মালবাহী জাহাজ ভিড়তে আগ্রহ দেখাচ্ছিল না। বরং বড় বড় জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আসছিল। এতে মোংলা বন্দরের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল।
তারা আরও জানান, মোংলা বন্দরকে রেলসেবার আওতায় আনতে ইতোপূর্বে একাধিক পরিকল্পনা নেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। বর্তমানে দেশের আর্থিক সমৃদ্ধির কথা বিবেচনা করে ভারত, নেপাল ও ভুটানসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ সম্প্রসারণে বন্দরকে রেলসেবার আওতায় আনা হচ্ছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি আসবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পটি ২০১০ সালের ২১শে ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। প্রকল্পটি তিনটি ভাগে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
এরমধ্যে:
প্যাকেজ ১-রেললাইন নির্মাণ,
প্যাকেজ ২-রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু,
প্যাকেজ ৩-টেলিযোগাযোগ ও সিগন্যালিং সিস্টেম।
আরও পড়ুন: যশোরে শিক্ষিকার নাক ফাটানো সেই ট্রেনপরিচালক বরখাস্ত
এসব প্রকল্পের আওতায় মূল লাইনসহ রেলওয়ে ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য ৮৬ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার।
তার মধ্যে ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ। আর রূপসা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে পাঁচ দশমিক ১৩ কিলোমিটার রেলসেতু।
ইতোমধ্যে ওই সেতুর কাজ প্রায় শতভাগ শেষ হয়েছে। এছাড়া ৩১টি ছোট সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর ১০৭টি কালভার্টের মধ্যে ১০৫টির কাজ শেষ হয়েছে। ৯টি ভিইউপি’র নির্মাণকাজ এবং ২৯ এলসি গেটের মধ্যে ২৬টির কাজ শেষ হয়েছে।
সাতটি স্টেশন বিল্ডিংয়ের মধ্যে ফুলতলা, আড়ংঘাটা ও মোহাম্মদ নগরের কাজও শেষ হয়েছে। বাকি পাঁচ স্টেশনের মধ্যে কাটাখালীর ৮০ শতাংশ, চুলকাঠির সাত শতাংশ, ভাগার ৭২ শতাংশ, দিগরাজের ৯৮ শতাংশ ও মোংলা স্টেশন নির্মাণের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
কাজের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। গত কয়েক মাসে আরও অগ্রগতি হয়েছে। ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে পুরো রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।
এছাড়া জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এরমধ্যে ভারতীয় লোন রয়েছে দুই হাজার ৯৪৮ কোটি এক লাখ ৮৪ হাজার টাকা। বাকি এক হাজার ৩১২ কোটি ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা সরকারি ফান্ড থেকে ব্যয় হবে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণের জেলাগুলোর ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটবে বলে জানালেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী।
তিনি বলেন, মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বন্দরের সঙ্গে রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল না। এখন খুলনা-মোংলা রেলপথ চালু হলে সড়কপথে পণ্য পরিবহনের চাপ কমবে। সেইসঙ্গে পণ্য পরিবহন ব্যয় ও সময় কমবে।
তিনি আরও বলেন, পাশাপাশি বন্দরের নৌ, সড়ক ও রেলপথের মাল্টিমোডাল যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। ফলে ভারত, নেপাল ও ভুটানের পণ্য পরিবহন সহজ হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। সেই সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি আসবে।
আরও পড়ুন: ঈদ যাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ৭ এপ্রিল
পদ্মা সেতু: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবন ও অবস্থার পরিবর্তন
ভ্যানচালক সাইফুল এখন পদ্মা সেতুর কাছে ‘ফুচকা’ বিক্রি করেন। তিনি এখন আগের তুলনায় বেশি উপার্জন করেন। ২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে স্থানীয় পর্যটনে যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে, তা তার জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, ‘আগে ভ্যান চালাতাম। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের তারিখ ধার্য হওয়ার পর থেকেই ভ্যান চালানো বাদ দিয়েছি। এখন ঘুরে ঘুরে ফুচকা বিক্রি করি। আগের চেয়ে রোজগারও ভালো হচ্ছে।’
সাইফুলের মতো অনেক দিনমজুর এই এলাকার ইতিবাচক পরিবর্তনের সুবিধা পাচ্ছেন।
উন্নত যোগাযোগের সুবিধার কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখতে পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি, শুধুমাত্র পদ্মা সেতু দেখতেও বিপুল সংখ্যক মানুষ এখানে ঘুরতে আসছেন।
সেতুর কাছে অনেক হোটেল, রেস্তোরাঁ, রিসোর্ট ও পার্ক তৈরি করা হয়েছে। বেশি রোজগারের আশায় অনেকেই তাই নিজেদের আগের পেশা পরিবর্তন করেছেন।
পদ্মা সেতু সংলগ্ন নাওডোবা এলাকায় গড়ে উঠেছে ‘ফুড এক্সপ্রেস’ নামে একটি রেস্তোরাঁ।
রেস্তোরাঁর স্বত্বাধিকারী মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, আমরাই প্রথম পদ্মা সেতু এলাকায় রেস্তোরাঁ দিয়েছি। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসছে পদ্মা সেতু দেখতে। পদ্মা সেতু দেখা শেষে ভ্রমণপিপাসু মানুষেরা আমার রেস্টুরেন্টে আসছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দূর-দূরান্ত থেকে সেতু দেখতে আসা মানুষের রাতে থাকার জন্য এখানে আবাসিক হোটেল নির্মাণের কাজও চলমান রয়েছে।’
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর সুবাদে প্রথমবার গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির সাক্ষী হলো মোংলা বন্দর
পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে করা রিট খারিজ
পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটটি উত্থাপিত হয়নি (নট প্রেস রিজেক্ট) মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রবিবার আবু হানিফ হৃদয় নামের যাত্রাবাড়ীর এক বাসিন্দার করা রিটটি বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ নট প্রেস রিজেক্ট আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইয়ারুল ইসলাম। আদেশের বিষয়টি এই আইনজীবী নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: পরীক্ষামূলক ভাবে পদ্মা সেতু দিয়ে রেল চলাচল শুরু
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ জুন সেতু উদ্বোধন করার পরদিন ২৬ জুন যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। তবে ২৭ জুন ভোর ৬টা থেকে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়।
গত ১২ জানুয়ারি ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। রিটে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। রিটে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয় বলেও জানা গেছে।
আরও পড়ুন: প্রথমবারের মতো পদ্মা সেতুতে রাষ্ট্রপতি
নিউইয়র্কে পদ্মা সেতুর আলোকচিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন প্রধানমন্ত্রীর
চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয়েছে রেলের ১৫টি বগি
চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয়েছে পদ্মা সেতুর জন্য চীন থেকে আনা রেলের ১৫টি বগি ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি। বন্দরের ১২ নম্বর জেটিতে রবিবার এ সকল বগিগুলোর খালাস কার্যক্রম চলে।
আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও ৮৫টি বগি ধারাবাহিকভাবে আসবে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার (১১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস করা হয় সাতটি। এর আগে শনিবার খালাস হয় আটটি ওয়াগন।
জাহাজ থেকে এসব ওয়াগন জেটিতে রেল ট্র্যাকে নামানো হয়। এরপর ইঞ্জিন লাগিয়ে বন্দর থেকে খালাস করা হয়।
সূত্রে জানা গেছে, পানামার পতাকাবাহী জাহাজ ‘টয়ো ওয়ার্ল্ড’ দু’দিন আগে চীন থেকে ১৫টি বগি নিয়ে প্রথম চালান চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। শনিবার থেকে শুরু হয় এসব পণ্য খালাস কার্যক্রম।
ক্রেনের সহায়তায় বগিগুলো জেটিতে নামানোর পর বিশেষ ওয়াগনে করে সিজিপিওয়াই ইয়ার্ডে নেয়া হচ্ছে।
সেখান থেকে যন্ত্রপাতি ফিটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে ঢাকার সৈয়দপুর রেল কারখানায়।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, জাহাজ ‘টয়ো ওয়ার্ল্ড’ নামে জাহাজে করে চীন থেকে আনা ১৫টি বগি চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। খালাসের কাজও শেষ হয়েছে।
আরও পড়ুন: টঙ্গীতে মালবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত
রবিবার থেকে ঢাকা-না’গঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজের জন্য ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ট্রেন চলাচল রবিবার (৪ ডিসেম্বর) থেকে সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। রেলপথ মন্ত্রণালয় গত বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে,‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে গেণ্ডারিয়া অংশে তিনটি পৃথক রেল লাইনে নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করতে ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী সকল ট্রেন রবিবার (৪ ডিসেম্বর) থেকে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।’
ওই কাজ শেষে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে আবার ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে রেলপথ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। তবে বিজ্ঞপ্তিতে কোনো সময় উল্লেখ করা হয়নি।
রেল কর্মকর্তাদের ধারণা, অন্তত সাড়ে তিন মাস সময় এ কাজে লাগতে পারে। যাত্রীদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: রানিং স্টাফরা ধর্মঘটে, সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ
প্রসঙ্গত, কমলাপুর স্টেশন থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লাইন এবং পদ্মা সেতু প্রকল্পের রেললাইন পাশাপাশি গেছে গেণ্ডারিয়া পর্যন্ত। সেখান থেকে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের লাইন কেরানীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর, মাওয়া, পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা জংশন দিয়ে যশোর পর্যন্ত যাবে। ১৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ডুয়েলগেজ লাইন নির্মাণে ব্যয় হবে ৪০ হাজার কোটি টাকা।
এদিকে, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লাইনও ডাবল লাইন ও ডুয়েল গেজে রূপান্তরের কাজ চলছে, সেজন্য সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
অর্থাৎ, কমলাপুর থেকে গেণ্ডারিয়া পর্যন্ত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ বিদ্যমান মিটারগেজ লাইনটি ডুয়েলগেজে উন্নীত হবে এবং পাশে আরেকটি নতুন ডুয়েলগেজ লাইন নির্মাণ করা হবে।
এখনকার লাইনের আরেকপাশে আরেকটি ডুয়েলগেজ লাইন হবে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে জন্য। ১২ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথে প্রতিদিন ২৬টি ট্রেন চলে। তাতে পাশাপাশি দুই নগরে যাতায়াত করেন ৩০ হাজারের মত যাত্রী। ট্রেন বন্ধ থাকলে সেই চাপ পড়বে সড়কে।
এদিকে, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় ক্ষোভ জানাচ্ছে যাত্রীরা। অনেকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দপ্তরে স্মারকলিপি দিতে চাইছেন। কেউ কেউ বলছেন নারায়ণগঞ্জ থেকে পাগলা পর্যন্ত চালু রাখার কথা। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে গেন্ডারিয়া অংশে তিনটি পৃথক রেল লাইনের নির্মাণ কাজ চলায় পথটি সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
একটি সূত্র বলছে, তিন থেকে সাড়ে তিন মাস বন্ধ থাকতে পারে এই রেলপথ। নারায়ণগঞ্জের এই পথে বর্তমানে প্রতিদিন ৯টি ট্রেনে ১৮ হাজারের বেশি যাত্রী আসা যাওয়া করে। এখন থেকে সেই যাত্রীদের চলাচলের রাস্তা হবে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড। কিন্তু সেই পথেও চলছে সংস্কার কাজ। এতে ভোগান্তি বাড়বে কয়েক গুণ, বাড়বে ব্যয়ও।
সুমন বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তি জানান, এই পথের অনেকেই বিনা টিকেটের যাত্রী ছিল। ট্রেনে ১৫ টাকা ভাড়া দিতে চায়নি, এখন তাদের ৫৫ টাকা টিকেট নিয়ে গাড়িতে উঠতে হবে। এছাড়া দুর্ভোগ তো থাকবেই।
সংবাদ মাধ্যমে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো.শরিফুল আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে গেন্ডারিয়া অংশে তিনটি পৃথক রেল লাইনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রটে চলাচলকারী সব ট্রেন ৪ ডিসেম্বর রবিবার থেকে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। দ্রুত কাজ শেষে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে পুনরায় ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
রাজ রাজ্জাক নামের এক যাত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা যারা ঢাকা টু নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেনে চলাচল করি, আমাদের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দপ্তরে স্মারকলিপি দেয়া উচিত। ঢাকা টু নারায়ণগঞ্জ এর কয়েক হাজার যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে ট্রেন চলাচল বন্ধ না করলে ভালো হয়।’
মোহাম্মদ আল মামুন নামের এক যাত্রী বলেছেন, পুরো রুট বন্ধ না রেখে নারায়ণগঞ্জ টু পাগলা বা শ্যামপুর পর্যন্ত চালাতে পারতো।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে ক্রেন উল্টে লাইনে: ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ
কুমিল্লায় বগি লাইনচ্যুত: ৩ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ
রাজশাহীতে পদ্মা সেতুর নামে গুজব ছড়ানোর দায়ে যুবকের কারাদণ্ড
পদ্মা সেতুতে মাথা লাগবে বলে গুজব ছড়ানোর দায়ে এক যুবকের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার রাজশাহী বিভাগীয় সাইবার ক্রাইম ট্রাইবুনাল আদালতের বিচারক জিয়াউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত রাজিব (১৯) রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বড়গাছি হাজীপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
রাজশাহী সাইবারক্রাইম আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ইসমত আরা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: ঘোড়াঘাট ইউএনও হত্যাচেষ্টা মামলায় বাগান মালির ১৩ বছরের কারাদণ্ড
তিনি বলেন, ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে আসামি রাজিব তার ফেসবুকে এক পোস্টে লেখেন, ‘বাংলাদেশের পদ্মা সেতুর নির্মাণ চলা পথে বাধা পড়েছে। তাই এক লাখ বা তারও বেশি মানুষের মাথা প্রয়োজন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারা দেশে বের হয়েছে ৪১টি দল। তারা এই মাথা সংরক্ষণ করার জন্য পথে ঘাটে, খেলার মাঠে, হাটে বাজারে ইত্যাদি জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদের কাছে রয়েছে ধারালো ছুরি ও গ্যাস স্প্রে। যা ১০-১৫ হাত দূর থেকে নিক্ষেপ করার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ হয়ে যাচ্ছে অজ্ঞান। আর তখন তারা কেটে নিয়ে যাচ্ছে মাথা। এদের প্রধান লক্ষ্য হলো নারী ও শিশু। ঘরে ঢুকেও এরা করছে এই জঘন্যতম কাজ। আজও কেটে নিয়েছে অনেক অনেক মানুষের মাথা। তাই পুরো এলাকায় মাইকে এলাউঞ্জ করে সতর্ক করে দেয়া উচিত।’
তিনি বলেন, আসামি রাজিব হোসাইনের বিরুদ্ধে আনা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৫(১)/৩১(১) ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৫(২) ধারায় দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ৩১(২) ধারায় তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং তিন লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে র্যাবের ওপর হামলার ঘটনায় ৫ জনের কারাদণ্ড
সুনামগঞ্জে ধর্ষণ মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
কালনা সেতুর নাম এখন মধুমতি সেতু: সেতুমন্ত্রী
কালনা সেতুর নাম এখন মধুমতি সেতু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই এই সেতুর নামকরণ করা হয়েছে ‘মধুমতী সেতু’ বলে জানিয়েছেন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কালনায় মধুমতি নদীর ওপর ৯৫৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৬৯০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি পরিদর্শনকালে এসব কথা জানান তিনি।
তিনি জানান, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে পদ্মা সেতুর সুফল পৌঁছে দিবে মধুমতি সেতু। এছাড়া গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কালনায় মধুমতি নদীর ওপর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের বহু প্রতীক্ষিত সেতু নির্মিত হয়েছে। সেতুটি নির্মাণের মধ্যেদিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা দিয়ে কথা রেখেছেন। এছাড়া সেতুর কাজ জুলাই মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। যথাসময়ই শেষ হয়েছে। কালনা সেতু যত ছোট হোক না কেন এর উল্লেখযোগ্য দিক রয়েছে। এটা হলো পদ্মা সেতুর মিসিং লিংক। কাজেই পদ্মা সেতুর সব সুফল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে পৌঁছাতে হলে এ সেতু নির্মাণের কোন বিকল্প ছিল না। একইসঙ্গে নড়াইলবাসীর জন্য সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নড়াইল থেকে যশোর, বেনাপোল, মাগুরা, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটের যোগাযোগ সহজ হবে। ফলে গোটা অঞ্চল উপকৃত হবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মেট্রোরেলের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করবে সরকার: সেতুমন্ত্রী
ওবায়দুর কাদের বলেন, ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে। এখনও বড় অঞ্চলটি আমরা কানেক্ট করতে পারিনি। এ সেতুটির উদ্বোধনের বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে প্রধামন্ত্রীকে একটি সামারি পাঠানো হয়েছে। আমি নিজেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি সেতুটির নামকরণ করেছেন ‘মধুমতি সেতু’। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে তিনি উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করবেন। তবে আক্টোবর মাসেই তিনি সেতুটি উদ্বোধন করবেন বলে ধারণা করা যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্যই-প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য। এ সরকারের আমলে এত বেশি সড়ক সংযোগ হয়েছে, যার নজির অন্য কোথাও নেই। সমতল থেকে পাহাড় পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন হয়েছে।
সম্প্রতি সীমান্তে উত্তেজনা ও আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টায় মিয়ানমারের কার্যকালাপ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্লের উত্তরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সতর্ক ও সংযমী হয়ে আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড, র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থা সবাই প্রস্তুত আছে। আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করব না। আক্রমণকারী হিসেবে চিহ্নিত হবো না। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাই লেটারাল কো-অপারেশন। টেবিলে বসে শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার মাধ্যমে আমরা সমস্যার সমাধান করব।
প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে তার বক্তব্যে বিষয়টি উত্থাপন করবেন।
মন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বে মূদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি সংকট ও জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। এর প্রভাব আমাদের ওপরও পড়েছে। আমাদের জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে হয়েছে। তাই এখন যুদ্ধ করার সময় নয়। আমরা শান্তির পক্ষে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সেনাবাহিনী, পুলিশ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় পরিচালিত হবে, সরকার কেবল রুটিন দ্বায়িত্ব পালন করবেন। বিএনপি তত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে পানি ঘোলা করলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না এসে কোন বিকল্প থাকবে না।
নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মতুর্জা, নড়াইল, লোহাগাড়া ও কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠন এবং যোগাযোগ ও সেতু বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তরা এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: অক্টোবর-নভেম্বরে দুই ভাগে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন: সেতুমন্ত্রী
রাজধানীর যানজট নিরসনে সাবওয়ে নির্মাণের বিকল্প নেই: সেতুমন্ত্রী
নিউইয়র্কে পদ্মা সেতুর আলোকচিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পদ্মা সেতু নিয়ে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি কে এম সাখাওয়াত মুন জানান, বিকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের লেভেল-১ এর আঁকাবাঁকা দেয়ালে আয়োজিত প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন তিনি।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জাতিসংঘের ইকোসক প্রেসিডেন্ট লাচেজারা স্টোভাসহ কয়েকজন বিদেশি অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকট কাটিয়ে উঠতে বিশ্বব্যাপী সংহতি প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বিদেশি অতিথিদের বলেন, ‘আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করেছি। এটি নির্মাণ করা আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ এনে আমাদের দোষারোপ করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পরে প্রমাণিত হয়েছে যে কোনো দুর্নীতি হয়নি।’
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সিনিয়র পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই প্রদর্শনী চলবে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এতে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর ২৫টি ছবি প্রদর্শিত হয়েছে।
পড়ুন: গৃহহীনতা একটি অভিশাপ: প্রধানমন্ত্রী
সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীদের আরও বেশি যুক্ত করুন: প্রধানমন্ত্রী
দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে ঢাকা-ভাঙা রেলপথের কাজ
ফরিদপুরের ভাঙা এক্সপ্রেসওয়ের পাশ দিয়ে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে পদ্মা সেতু লিংক রেলপথের (ফরিদপুরের ভাঙ্গা প্রান্ত রেলপথ) জংশন ও রেললাইনের কাজ। দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী সার্বক্ষণিক এ কাজে তদারকি করছে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে এখন রেল চলাচলের অপেক্ষায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষেরা। আর সেই লক্ষেই দ্রুত গতিতে এই রেল সংযোগের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়দের আশা পদ্মা সেতুতে রেল চলাচল এ অঞ্চলের যোগযোগের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করবে। পরিবর্তন হবে আর্থসামাজিক উন্নয়নের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রড সেট করে বসানো হচ্ছে বিশেষভাবে তৈরি কংক্রিট স্লিপার। আর দুই পাশে থাকছে স্টিলের রেলপাত। রড, স্লিপার ও পাত স্থাপনের পর দেয়া হচ্ছে ঢালাই।
আরও পড়ুন: খুলনা-মোংলা রেললাইনে ৯টি আন্ডারপাস নির্মাণ হচ্ছে
পদ্মা সেতু: দক্ষিণাঞ্চলমুখী নৌপথে যাত্রী কমায় ৩০টি লঞ্চ সার্ভিস বন্ধ
নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সোমবার সংসদে বলেছেন, পদ্মা সেতুর চালু হওয়ার কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলমুখী প্রায় সব নৌপথে যাত্রী সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা নদী বন্দর থেকে প্রতিদিন গড়ে ৮৫ থেকে ৯০টি লঞ্চ দক্ষিণাঞ্চলে (সেতু খোলার আগে) চলাচল করত। কিন্তু এখন ঢাকার সদরঘাট থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬০-৬৫টি লঞ্চ চলাচল করছে।’
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তারের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, স্বপ্নের সেতু নির্মাণের ফলে দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীরা দ্রুত সড়কপথে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হচ্ছে।
‘তবে, নৌপথে যাত্রী চলাচলে বেশি সময় লাগে বলে কয়েকটি ছাড়া প্রায় সব নৌপথে যাত্রীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে’, তিনি আরও যোগ করেন।
খালিদ মাহমুদ জানান, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও শিমুলিয়া-মাঝিকান্দি রুটে ৮৭টি লঞ্চ ও ১৫৫টি স্পিড বোট চলাচল বন্ধ রয়েছে।
তবে আগামী ছয় মাসের মধ্যে নৌপথে যাত্রী কিছুটা বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
সাশ্রয়ী মূল্যে যাত্রী ও কার্গো পরিবহনের জন্য নতুন নদী রুট তৈরির সম্ভাব্যতা সমীক্ষা অব্যাহত রয়েছে, তিনি যোগ করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে এমনকি ঢাকা-মোরেলগঞ্জ-ঢাকা অভ্যন্তরীণ নৌ-রুটে বিআইডব্লিউটিসি'র খ্যাতিমান স্টিমার 'দ্য রকেট'-এর যাত্রীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে। এখন সহজভাবে সড়কপথে যাত্রা করতে পারেন, সময় ও অর্থ উভয়ই বাঁচিয়ে।
একইভাবে, মাওয়া ও মাঝিরকান্দির মধ্যে চলাচলকারী ফেরি সার্ভিসও ব্যাপকভাবে হ্রাস পাওয়ার কারণে বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি রুটে নৌযান চলাচল উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
এসবই বিআইডব্লিউটিসি’র রাজস্বের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে দেশ এখনও মুক্ত হতে পারেনি: খালিদ মাহমুদ