মানবাধিকার
মানবপাচার মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার লঙ্ঘন: আন্তোনিও গুতেরেস
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মানবপাচার হলো মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, সংঘাত ও অস্থিতিশীলতার সময়ে দুর্বলতার সুযোগে মানুষ এর শিকারে পরিণত হয় এবং তখন এর মাত্রাও বৃদ্ধি পায়।
রবিবার (৩০ জুলাই) বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে জাতিসংঘ মহাসচিব এসব কথা বলেন। ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক প্রস্তাবের মাধ্যমে প্রতি বছর ৩০ জুলাই বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবস হিসেবে সারা বিশ্বে পালন করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর থেকে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালিত হয়।
গুতেরেস বলেন, অসমতা বাড়ছে, জলবায়ু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাস্তুচ্যূতির হার যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি। আর এসকল কারণে অনেক বেশি মানুষ মানব পাচারকারীদের শিকারে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
তিনি বলেন, ভুক্তভোগীদের সিংহভাগই নারী ও শিশু। যাদের অনেকেই নৃশংস সহিংসতা, জোরপূর্বক শ্রম এবং ভয়াবহ যৌন নিপীড়ন ও শোষণের শিকার হয়।
তিনি আরও বলেন, তা সত্ত্বেও মানব পাচারকারীরা এখনো মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে। তাদের অপরাধ দমনের বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না। এই বিষয়ে অবশ্যই পরিবর্তন আনতে হবে।
আরও পড়ুন: আসুন গর্ব করে ঘোষণা করি, আমরা নারীবাদী: গুতেরেস
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আমাদের অবশ্যই শনাক্তকরণ ও সুরক্ষায় আরও বিনিয়োগ করতে হবে। মানুষকে পণ্য বানানো অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ব্যবস্থাকে জোরদার করতে হবে এবং ভুক্তভোগীদের জীবন পুনর্গঠনে সহযোগিতা করতে আমাদের অবশ্যই আরও বেশি কিছু করতে হবে।
তিনি বলেন, এবারের এই বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবসে আসুন আমরা মানবপাচারের শিকার ভুক্তভোগীদের শনাক্ত, সুরক্ষা ও সহযোগিতা দিতে এবং পাচারের শিকার কোনো ভুক্তভোগী যেন পেছনে পড়ে না থাকে, তা নিশ্চিতে আমাদের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করি।
তিনি আরও বলেন, আসুন একসঙ্গে আমরা এমন বিশ্ব গড়ে তুলি, যেখানে কাউকে কখনো বেচা-কেনা কিংবা শোষণ করা হয় না।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক নির্যাতনের বিচারের আহ্বান গুতেরেসের
অভিবাসনের বৈশ্বিক চুক্তি ‘পথ দেখাচ্ছে’: গুতেরেস
মানবাধিকারের উন্নয়নে ঢাকার পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে ইইউ,বলছে সরকারি সূত্র
সরকারের একটি সূত্র বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মানবাধিকারের আরও উন্নয়নে বাংলাদেশের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধিদলের মধ্যে বৈঠকে এ মন্তব্য করা হয়।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এক ঘণ্টারও বেশি বৈঠকে গিলমোরও আওয়ামী লীগ সরকারের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং দেশের শ্রম আইন সংশোধনের পদক্ষেপ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
যোগাযোগ করা হলে প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি হাসান জাহিদ তুষার বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও তিনি এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি।
তবে সরকারি সূত্র জানায়, বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে বাংলাদেশে মানবাধিকার উন্নয়ন, আগামী সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইইউ পর্যবেক্ষক পাঠানো, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও শ্রম আইন প্রধানত আলোচনায় এসেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশসহ সব দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া উচিত: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বিশেষ প্রতিনিধিদের ইইউকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন।
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পর ইইউ সদস্য দেশগুলোতে বাংলাদেশের রপ্তানি আরও বাড়ানো নিশ্চিত করতে তিনি ইইউ’র প্রতি আহ্বান জানান।
ইউরোপীয় এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিস(ইইএএস) -এর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ভিক্টর ভেলেক, রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি এবং ফার্স্ট সেক্রেটারি (রাজনৈতিক) সেবাস্তিয়ান রিগার-ব্রাউন, অন্যদের মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গম ও ভোজ্য তেলের উৎপাদন বাড়াতে ইফাদের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ
ছয় দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় আসা গিলমোর মানবাধিকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে সরকারি কর্মকর্তা ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা করবেন এবং কক্সবাজারে শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করবেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
গিলমোর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: স্কুল ফিডিং কর্মসূচি সম্প্রসারণে ডব্লিউএফপি'র সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি
অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের আহ্বান জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের
জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৩তম অধিবেশনে শুক্রবার রোহিঙ্গাদের বিষয়ে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।
এতে মিয়ানমারের রাখাইনে প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে এবং নির্যাতিত মানুষদের জন্য ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) কর্তৃক ‘হিউম্যান রাইটস সিচুয়েশন অব রোহিঙ্গা মুসলিম অ্যান্ড আদার মাইনরিটিস অব মিয়ানমার’- শিরোনামের প্রস্তাবটি পেশ করা হয়েছে।
একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিস্তৃত আলোচনার পর কোনো ভোট ছাড়াই এটি গৃহীত হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
মিয়ানমারে বিরাজমান অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে রেজুলেশনের বিভিন্ন দিক নিয়ে মতপার্থক্য ছিল।
আরও পড়ুন: সেরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুশীলন অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভাগ করে নিতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জাতিসংঘের
মিয়ানমারে চলমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যাবাসন সম্ভব নয় এমন মতামতের বিপরীতে, অন্য দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে দীর্ঘস্থায়ী অনিশ্চয়তা এবং সংশ্লিষ্ট ঝুঁকির ভিত্তিতে প্রত্যাবাসন দ্রুত শুরু করা দরকার।
প্রস্তাবে প্রচুর চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সাময়িক আশ্রয় প্রদান অব্যাহত রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করা হয়।
তারা রোহিঙ্গাদের ক্রমবর্ধমান হতাশার মাত্রা এবং প্রত্যাবাসন নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী অনিশ্চয়তা থেকে উদ্ভূত স্পিল-ওভার প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং টেকসই ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়।
এতে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের একটি দল রাখাইনে ফিরে যাওয়ার পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে এবং তাদের মধ্যে আরও আস্থা তৈরির জন্য 'গো-এন্ড-সি ভিজিট’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার জন্য ক্রমান্বয়ে কমছে এবং অপর্যাপ্ত তহবিলের প্রেক্ষাপটে এই প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানোরও আহ্বান জানানো হয়েছে।
রেজুলেশনে রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত নৃশংসতার আন্তর্জাতিক জবাবদিহির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে।
এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে চলমান বিচারিক প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে যুক্ত কোনো বাহিনী তাদের সঙ্গে যুক্ত নয়: জাতিসংঘ
‘বাংলাদেশ থেকে আরও শান্তিরক্ষী নিয়োগে জাতিসংঘ বিশেষ বিবেচনা করবে’
আজরা জেয়ার সফর: রোহিঙ্গা, শ্রম, মানবাধিকার ও নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে
যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি এবং তিব্বত ইস্যু বিষয়ক মার্কিন বিশেষ সমন্বয়কারী আজরা জেয়া বাংলাদেশে তার আসন্ন সফরের ঘোষণা দিয়েছেন।
শনিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, আন্ডার সেক্রেটারি বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট, শ্রম সমস্যা, মানবাধিকার, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইসহ মানবিক উদ্বেগ সৃষ্টিকারী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
ঢাকায় আসার আগে তিনি ভারত সফর করবেন।
আরও পড়ুন: মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া জুলাইতে ঢাকা আসছেন
মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি বলেছেন, ‘বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভাগ করা সমাধান এগিয়ে নিতে আগামী সপ্তাহে ভারত ও বাংলাদেশে ভ্রমণের উদ্দেশ্য আরও মুক্ত, উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য অবদান এবং সমগ্র অঞ্চলজুড়ে উদ্বাস্তু ও স্বাগতিক সম্প্রদায়ের জন্য মানবিক সহায়তা জোরদার করা।’
ভারতে তিনি মার্কিন-ভারত অংশীদারিত্বকে গভীরতর ও স্থায়ী করার বিষয়ে আলোচনা করতে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করবেন। যার মধ্যে রয়েছে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ, গণতন্ত্র, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং মানবিক ত্রাণ বিষয়ে সহযোগিতার ভাগ করা সমাধানের অগ্রগতি।
আন্ডার সেক্রেটারি জেয়া উভয় দেশের নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলোর সঙ্গে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মেলামেশা এবং প্রান্তিক ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুসহ নারী ও মেয়ে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং দুর্বল সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে নিযুক্ত হবেন।
তিনি বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরানের সঙ্গে দেখা করেন এবং তারা একটি ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনা করেন।
তিনি এক টুইটে বলেছেন, ‘ধন্যবাদ, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায্য শ্রম চর্চা এবং মানবিক সহযোগিতার বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য। আমি আমাদের শক্তিশালী অংশীদারিত্ব আরও গভীর করার জন্য উন্মুখ।’
আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া ১১-১৪ জুলাই সফরে মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন।
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর জন্য মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এবং এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর উপ-সহকারী প্রশাসক, ইউএসএআইডি অঞ্জলি কৌর প্রতিনিধিদলের অংশ থাকবেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, জেয়া তুলনামূলকভাবে একজন উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তা এবং তার এলাকাও বেশ প্রশস্ত।
তিনি বলেন, উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধিদলের সফরে পারস্পরিক স্বার্থের অন্যান্য বিষয় ছাড়াও বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন আলোচনায় আসতে পারে।
ঢাকা সাম্প্রতিক অতীতে ওয়াশিংটন থেকে একাধিক সফরের সাক্ষী হয়েছে, যার মধ্যে ২০২২ সালের ১৯-২৩ মার্চ রাজনৈতিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ডের একটি সফরও রয়েছে।
চলতি বছরের শুরুতে ডোনাল্ড লুও বাংলাদেশ সফর করেন। লু সাম্প্রতিক অতীতে ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ নীতি নির্ধারণে ব্যাপকভাবে জড়িত ছিলেন।
২৫ মে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করার পর লু মার্কিন মুখপাত্র হিসেবে উপস্থিত হন এবং বাংলাদেশি মিডিয়াতে উপস্থিত হয়ে কীভাবে এটি (ভিসা নীতি) বাস্তবায়িত হবে তা ব্যাখ্যা করেন।
এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি উইংয়ের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, উজরা জেয়ার নেতৃত্বে মার্কিন প্রতিনিধি দলের এই সফর মূলত দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা এবং যোগাযোগ আরও শক্তিশালী করার।
মার্কিন প্রতিনিধিদল বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের ব্যস্ততার পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবে।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদূত ইমরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার 'ফলপ্রসূ' বৈঠক
মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া ও ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে আসছেন
মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে যুক্ত কোনো বাহিনী তাদের সঙ্গে যুক্ত নয়: জাতিসংঘ
জাতিসংঘ মহাসচিবের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে যুক্ত কোনো বাহিনী তাদের সঙ্গে যুক্ত নয়। সোমবার (২৬ জুন) নিউইয়র্কে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় হক বলেন, ‘মিস্টার ল্যাক্রোইক্স (জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল ফর পিস অপারেশনস জিন-পিয়েরে ল্যাক্রোইক্স) গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে (বাংলাদেশে) সাক্ষাৎ করেছেন, যাদের সঙ্গে শান্তিরক্ষা সংক্রান্ত উদ্বেগ মোকাবিলা করতে হবে।’
ল্যাক্রোইক্স ২৫-২৬ জুন ঢাকায় একটি ‘সফল ও সমৃদ্ধ’ বৈঠকের জন্য বাংলাদেশ, কানাড ও উরুগুয়েকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আরও বেশি নারীর যোগদান ও সাফল্য লাভের জন্য তারা কীভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারে সে বিষয়ে ঢাকায় গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেষ হলো ঢাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ের প্রস্তুতিমূলক সভা
শান্তিরক্ষায় নারী বিষয়ক প্রস্তুতিমূলক সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সময়, ল্যাক্রোইক্স শান্তিরক্ষা; বিশেষ করে মিশনে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রতিশ্রুতির জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পান।
তিনি বলেন, শান্তিরক্ষায় সবচেয়ে বেশি সৈন্য নিয়োজিত থাকায় বাংলাদেশের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞ।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল শান্তিরক্ষী যাতে নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশে উন্নতি করতে পারে তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কার্যকর কৌশল অন্বেষণের জন্য উন্মুখ।
ঢাকায় থাকাকালীন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল ফর পিস অপারেশনস জিন-পিয়ের ল্যাক্রোইক্স এবং ইউএন আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল ফর ম্যানেজমেন্ট স্ট্র্যাটেজি, পলিসি অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স ক্যাথরিন পোলার্ড নারী শান্তিরক্ষীদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা ও প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: ‘বাংলাদেশ থেকে আরও শান্তিরক্ষী নিয়োগে জাতিসংঘ বিশেষ বিবেচনা করবে’
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রশংসা জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের
মানবাধিকারের ওপর দারিদ্র্যের প্রভাব পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ সফর করবেন জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ
চরম দারিদ্র্য ও মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ওলিভিয়ার ডি শ্যুটার দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের উদ্যোগ পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ সফর করবেন। আগামী ১৭ থেকে ২৯ মে পর্যন্ত এই সফর করবেন তিনি।
দারিদ্র্য ও মানবাধিকার বিষয়ে পর্যবেক্ষণ, প্রতিবেদন ও পরামর্শ প্রদানের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল কর্তৃক নিয়োগকৃত স্বাধীন বিশেষজ্ঞ ডি শ্যুটার বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্জন রয়েছে, কিন্তু প্রশ্ন হলো কীভাবে এ অর্জন অক্ষুন্ন রাখা যায় এবং সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে সমানভাবে এর সুফল নিশ্চিত করা যায়।’
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের সামরিক সরকারের অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহ কমাতে পদক্ষেপের আহ্বান জাতিসংঘের
‘এ সফরের ফলে আমি উক্ত বিষয়ে আরও বেশি শুনতে ও জানতে পারব এবং অর্থনৈতিক ও জলবায়ুজনিত অভিঘাতের প্রেক্ষাপটে মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত রাখতে ও সকলের জন্য মানসম্পন্ন জীবনমান নিশ্চিতকরণে সরকার যাতে সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রাখতে পারে সেসব বিষয়ে কিছু দিকনির্দেশনা প্রদান করতে পারব।’
সফরকালে, জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ ঢাকা ও রংপুর বিভাগের কিছু স্থান এবং কক্সবাজার পরিদর্শন করবেন। তিনি এসব স্থানের স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, দারিদ্র্যপীড়িত সম্প্রদায় ও মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
এছাড়াও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির কার্যকারিতা নিরূপণে ডি শ্যুটার দারিদ্র্যের ওপর বাংলাদেশের শ্রম আইন, স্বাস্থ্যসেবা, গৃহায়ণ, এবং শিক্ষা ব্যবস্থার প্রভাবসমূহ পর্যবেক্ষণ করবেন। নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধ, তৈরি পোশাক কর্মী, এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীসহ যেসকল গোষ্ঠী দারিদ্র্য বৈষম্যের শিকার তাদের অবস্থাও পর্যবেক্ষণ করবেন তিনি।
আগামী ২৯ মে স্থানীয় সময় বিকাল ৩টায় ডি শ্যুটার তার প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শসমূহ ঢাকার হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁতে একটি সাংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পেশ করবেন। কেবল সাংবাদিকদের জন্য প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। সংবাদ সম্মেলনটি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতির 'নীরব সাক্ষী' জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ: রাষ্ট্রদূত মুহিত
সত্য ও সত্য বলা মানুষগুলোকে আক্রমণ করা বন্ধ করতে হবে: বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে জাতিসংঘের মহাসচিব
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য সমগ্র বিশ্ব বাংলাদেশের পাশে: বিএনপি
বিএনপির সিনিয়র নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সমগ্র গণতান্ত্রিক বিশ্ব এখন বাংলাদেশের পাশে রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, সমগ্র বিশ্বের বিবেক এখন বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে রয়েছে। গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাকামী সব দেশই মানবাধিকার, আইনের শাসন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নির্বাচন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।’
শুক্রবার এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেন একটি বার্তা দিয়েছেন যে নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সমগ্র বিশ্ব বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে আছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তাকে (মোমেন) গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত না রাখার এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে বাকস্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে সেদিকে কড়া নজর রাখার বার্তাও দেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ডা. জাফরুল্লাহ অত্যন্ত স্পষ্টবাদী, দুঃশাসন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন: বিএনপি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খসরু বলেন, যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশ সরকারকে মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে বলেছে।
ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশের পরিবর্তে বিশ্ব সম্প্রদায় ও গণতন্ত্রকামী দেশগুলো কেন শুধু বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সামনে আমরা কীভাবে অপমানিত হয়েছি তা প্রকাশ পেয়েছে।’
এর আগে সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যেখানে তারা বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, মানবাধিকার এবং রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
সিলেট বিভাগীয় জাতীয়তাবাদী ছাত্র ফোরাম ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর সন্ধান ও নিরাপদে ফেরার দাবিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে আবারও ক্ষমতা দখল করতে চায় সরকার: বিএনপি
সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী ও তার গাড়িচালক আনসার আলীকে ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে রাজধানীর মহাখালী রেলক্রসিং থেকে জোরপূর্বক গুম করা হয় বলে জানা গেছে।
খসরু বলেন, গুম, মিথ্যাচার ও মিথ্যা ও ভুতুড়ে মামলার রাজনীতি করে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে বর্তমান সরকার আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ তাদের (আওয়ামী লীগ সরকারকে) রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে… বাংলাদেশের জনগণ ফ্যাসিবাদও দূর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
আরও পড়ুন: পাঁচ সিটি নির্বাচনে সরকারের ফাঁদে পা দেবে না বিএনপি: ফখরুল
ওআইসি মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ওআইসি মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে।
এশিয়ার অন্য দেশগুলো হলো তুরস্ক ও ইরান।
বিশ্বের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর বৃহত্তম সংস্থা অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন বা ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। অন্য সহ-সভাপতি দেশ হলো ফিলিস্তিন ও নাইজেরিয়া।
আয়োজক দেশ মৌরিতানিয়া ৫৭ সদস্যের ওআইসির সভাপতি নির্বাচিত হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আগামী ১৬-১৭ মার্চ মৌরিতানিয়ার রাজধানী নোয়াকচটে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাউন্সিলের ৪৯ তম অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার পরিচালনায় ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ওআইসি মহাসচিবের
পরিবেশ, সুশাসন ও মানবাধিকার পুরস্কার বিজয়ী বাংলাদেশিদের সংবর্ধনা দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত
পুরস্কার বিজয়ী বাংলাদেশিদের মধ্যে রয়েছেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম, রোজিনা ইসলাম, মোহাম্মদ নূর খান ‘লিটন’ এবং মিনহাজ চৌধুরী।
বর্তমান সময়ের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো সমাধানের কাজের স্বীকৃতি হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের পুরস্কার বিজয়ী বাংলাদেশিদের আজ সংবর্ধনা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
আরও পড়ুন: রাতারগুল ঘুরে দেখলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মিলার
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, ‘ঠিক কাজটি করার জন্য সাহস ও নিষ্ঠার সঙ্গে লড়াই করেছেন এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে একত্রিতভাবে এই বিজয় উদযাপন করতে পারা আমার জন্য সম্মানের।’
পুরস্কার বিজয়ীরা হলেন-
রিজওয়ানা হাসান: পরিবেশ ও মানবাধিকারের সুরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণ ও আন্দোলনের জন্য ২০২২ সালের ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অফ কারেজ এওয়ার্ড বিজয়ী হয়েছেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি একজন পরিবেশ আইনজীবী যিনি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে পরিবেশ সুরক্ষায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকে বন উজাড়, দূষণ, অনিয়ন্ত্রিত জাহাজ ভাঙ্গা এবং অবৈধ ভূমি উন্নয়নের বিরুদ্ধে মামলা করে জিতেছেন।
মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম: ২০২২ সালের ট্রাফিকিং ইন পারসনস রিপোর্ট হিরো স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার -এর কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসাবে তরিকুল ইসলাম মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের পক্ষে কথা বলেন। তিনি মানব পাচারের ঘটনা তদন্ত করা ও পাচারকারীদের বিচার করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের সামর্থ্য বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
রোজিনা ইসলাম: ২০২২ সালের অ্যান্টি-করাপশন চ্যাম্পিয়ন নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। একজন সাংবাদিক হিসেবে রোজিনা ইসলাম বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতি বিষয়ে সংবাদপত্রে তার অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করার সাহস ও দৃঢ়তা দেখিয়েছেন।
মোহাম্মদ নূর খান ( লিটন): তিনি ২০২৩ সালের হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার অ্যাওয়ার্ড জয়ী হয়েছেন। লিটন বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা নথিভুক্ত করা ও জবাবদিহিতা তৈরিতে তার দশকব্যাপী লড়াইয়ে অতুলনীয় সাহসিকতা ও একাগ্রতা দেখিয়েছেন।
মিনহাজ চৌধুরী: ড্রিংকওয়েল নামের একটি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তিনি। কোম্পানিটি ২০২২ সালে জলবায়ু সহিষ্ণুতা বা অভিঘাতসহনশীলতা বিভাগে ইউএস সেক্রেটারি অব স্টেটের কর্পোরেট অ্যাক্সিলেন্স পুরস্কার জিতেছে। ড্রিংকওয়েল একটি আমেরিকান কোম্পানি যারা ভারত ও বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য নিরাপদ খাবার পানি তৈরির প্রযুক্তি সরবরাহ করে থাকে।
আরও পড়ুন: বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গাইবান্ধার চরাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত
মাঝে মাঝেই ‘ভয়ঙ্কর’ দুঃস্বপ্ন দেখেন সালমান রুশদি
মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি: আইনমন্ত্রী
ঢাকা, ১৮ জানুয়ারি (ইউএনবি)-আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিরুদ্ধে নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি।
তিনি বলেন, ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কারও সম্পর্কে ভালো কিছু লেখে না। তবে তারা তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে যে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ডোনাল্ড লু বলেছেন যে তারা র্যাবের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতেন, কিন্তু বাংলাদেশের হিসেবে তা করেনি। মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।’
বুধবার তিনি বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মো. হাশিমের সঙ্গে বৈঠকের পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুকে উদ্ধৃত করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা (মার্কিন) দেখেছি র্যাব অনেক ভালো করেছে। আমরাও র্যাবের প্রয়োজনীয়তা বুঝি। যেহেতু মানবাধিকার পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে, তাই আমরা নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করিনি। তিনি (লু) আমাকে খুব স্পষ্টভাবে বলেছেন।’
আরও পড়ুন: চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো শেষ করাই নতুন বছরের চ্যালেঞ্জ: আইনমন্ত্রী
সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেছেন লু।
এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, র্যাবের বিরুদ্ধে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য তিনি লুকে বলেননি কারণ এটি আইনি প্রক্রিয়া মেনেই করতে হবে।
‘আমরা সেই পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করছি’, তিনি যোগ করেন।
এলিট ফোর্সের সংস্কার সম্পর্কে আনিসুল হক বলেন, ‘র্যাব সদস্যরা অপরাধ করলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। সংস্কার প্রক্রিয়া চলমান; এটা সময় লাগে।’
তিনি আরও বলেন, লু’র সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর পলাতক দণ্ডিত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর দাবি জানান।
‘তিনি আমাকে তাদের বিচার বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন। আমি তাকে ফিরিয়ে আনতে দরজায় কড়া নাড়ব,’ বলেন মন্ত্রী।
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার উপায়, অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ এবং শ্রম ও মানবাধিকার বিষয়ে কথা শুনতে শনিবার সন্ধ্যায় লু ঢাকায় আসেন।
ঢাকায় তার সংক্ষিপ্ত অবস্থানের সময়, লু পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়ে আলোচনা করতে আইনমন্ত্রী এবং সুশীল সমাজের নেতারাসহ বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
আরও পড়ুন: যারাই মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে, তাদেরকেই আইনের আওতায় আনা হবে: আইনমন্ত্রী