বৈদেশিক-সম্পর্ক
দরিদ্রদের জীবনমান উন্নয়নে একত্রে কাজ করবে চীন-ইউএনডিপি
ঢাকা শহরের দরিদ্রদের জীবনমান উন্নয়নে একত্রে কাজ করবে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশ।
জীবিকার সুযোগ বাড়াতে এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সোমবার (১৩ নভেম্বর) বনানীর কড়াইল বেদে বস্তিতে সেলাই মেশিন হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে ১৪২৫টি অটোমেটিক সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।
এই উদ্যোগটি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) সম্পর্কিত উৎপাদন সক্ষমতা জোরদার করার বিষয়ে চীন-ইউএনডিপি সাউথ-সাউথ ও ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত।
সেলাই মেশিন বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত এইচ ই ইয়াও ওয়েন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি জনাব স্টেফান লিলার।
স্থানীয় জনগণের উদ্দেশে মেয়র আতিক বলেন, ‘শহরের দরিদ্র অধিবাসীদের; বিশেষ করে নারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা এমন একটি শহর তৈরি করতে পারি, যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না এবং সবার জীবনেই পরিবর্তন আসবে।’
তিনি বলেন, ‘ডিএনসিসি মেয়র হিসেবে আমি বলব, ইউএনডিপি ও চীন দরিদ্রদের দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে যে কাজ করছে তা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক।’
আরও পড়ুন: ইউএনডিপি-এসএমই ফাউন্ডেশনের সমঝোতা স্মারক সই
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন তার বক্তব্যে বলেন, ‘পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর নারীদের ক্ষমতায়নে চীন-ইউএনডিপি’র এই সহযোগিতামূলক সম্পর্কের ইতিবাচক প্রভাব প্রত্যক্ষ করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। অটোমেটিক সেলাই মেশিনের বিতরণ অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা সৃষ্টিতে এবং টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে আমাদের যৌথ অঙ্গীকারের একটি নিদর্শন এবং যা টেকসই পরিবর্তনের পেছনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্বকে আরও একবার জানান দেয়।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার তার বক্তব্যে বলেন ‘ইউএনডিপি’র বৈশ্বিক উদ্যোগসমূহকে সফল করার ক্ষেত্রে অনেকদিন ধরেই চীন আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমাদের শীর্ষ ২০টি সহায়তাকারী দেশের মধ্যে চীন অন্যতম। চীনসহ অপরাপর সহায়তা প্রদানকারী দেশগুলোর সমর্থনেই আমরা বিশ্বব্যাপী ১৭০টি দেশে আমাদের কার্যক্রমকে এগিয়ে নিচ্ছি। আমরা চীনের এই সমর্থনকে সাধুবাদ জানাই।’
তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র চীনের ভূখণ্ডেই নয়, বরং সাউথ-সাউথ সহযোগিতা বিনিময় প্রকল্পের আওতায়ও আমরা চীনের সহযোগিতায় বিভিন্ন দেশে, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় দক্ষতা প্রশিক্ষণ এবং নগদ অর্থ প্রদানের মত কাজ করছি। ঠিক যেমনটা আজ আমরা এই কড়াইল বস্তিতে নারীদের মধ্যে অটোমেটিক সেলাই মেশিন বিতরণ করলাম। আমরা চীনের এই অব্যহত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই।’
চীন থেকে প্রাপ্ত মোট ১৪২৫টি অটোমেটিক সেলাই মেশিন ১২৪৫ জন ব্যক্তি এবং ছয়টি সমবায়ের কাছে হস্তান্তর করেছে ইউএনডিপি।
এই মেশিনগুলো বিতরণের উদ্দেশ্য হলো সেলাইয়ের কাজে নিজেদের দক্ষতা বাড়ানোর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নারীরা যেন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারে এবং তৈরি পোশাক খাতের কর্মী হিসেবে নিজেদের প্রস্তুত করতে পারে।
অটোমেটিক সেলাই মেশিন পাওয়া শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর এই নারীরা মনে করেন, এখন তারা তাদের স্বপ্ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের তরুণদের দক্ষতা বাড়াতে ইউএনডিপি ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের সমঝোতা চুক্তি
বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস উপলক্ষে ইউএনডিপি’র ‘ক্লিক ফর ওয়াইল্ডলাইফ’ প্রচারাভিযান
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে ‘জড়িয়ে পড়া থেকে বিরত থাকবে’ যুক্তরাষ্ট্র: ম্যাথিউ মিলার
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ফের পুনর্ব্যক্ত করেছেন, বাংলাদেশে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচনকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি বাংলাদেশের সরকারের ভবিষ্যৎ সে দেশের জনগণের দ্বারাই নির্ধারিত হওয়া উচিত।’
সোমবার (১৩ নভেম্বর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে কেন মার্কিন সরকারকে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে একজন সাংবাদিকের করা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনে পক্ষ নিচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটি রাজনৈতিক দলকে বাদ দিয়ে আরেকটি দলকে সমর্থন করি না। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি।’
মিলার আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে আমাকে আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সাংবাদিকের প্রচেষ্টাকে আমি স্বাগত জানাই এবং আমি তা করা থেকে বিরত থাকব।’
আরও পড়ুন: সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে: শাহরিয়ার আলম
এর আগে, সোমবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম পুনর্ব্যক্ত করেছেন, ‘কে আয়োজন করছে’ তা ব্যাপার না, সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এটি সংবিধান ও সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি অব স্টেট ডোনাল্ড লু'র পক্ষ থেকে প্রধান তিন রাজনৈতিক দলকে পাঠানো চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট পক্ষের মুখপাত্ররা এ বিষয়ে জানতে পারবেন।
জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং শিগগিরই তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।
এর আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিরোধী দল বিএনপির দাবি ‘সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও অবৈধ।’
বাংলাদেশের স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনগণের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সরকার বদ্ধপরিকর।’
আরও পড়ুন: সংলাপের আহ্বান জানিয়ে লু’র চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়েছে বিএনপি
৩ প্রধান দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের একসঙ্গে বৈঠকের অনুরোধ পিটার হাসের
সংলাপের আহ্বান জানিয়ে লু’র চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়েছে বিএনপি
বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক সংকট নিরসনে আলোচনায় বসতে প্রধান তিনটি দলকে আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু’র চিঠি পেয়েছে বিএনপি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ইউএনবিকে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে এই পর্যায়ে তাদের দল যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার আহ্বান মেনে নেবে কি না সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি অব স্টেট ডোনাল্ড লু'র চিঠিটি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা চিঠিটি স্ক্যান করে তারেক রহমানের কাছে পাঠিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিনি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে ক্ষমতা থেকে সরকার সরে না দাঁড়ালে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি মেনে না নিলে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় যাবে না তারা।
অন্যদিকে, সরকারও বারবার বলেছে নিবার্চন হবে সংবিধান মেনে।
আরও পড়ুন: ৩ প্রধান দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের একসঙ্গে বৈঠকের অনুরোধ পিটার হাসের
এর আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বনানী কার্যালয়ে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে চিঠিটি হস্তান্তর করেন।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে একই চিঠি দেওয়া হবে।
চিঠি সম্পর্কে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র স্টিফেন ইবেলি ইউএনবিকে বলেছেন, তারা তাদের ‘দীর্ঘদিনের চর্চার’ অংশ হিসেবে তারা ব্যক্তিগতভাবে কূটনৈতিক যোগাযোগের বিষয়ে মন্তব্য করেন না।
অন্যদিকে, জানা গেছে রাষ্ট্রদূত হাস আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে মার্কিন অবস্থানের উপর জোর দিতে তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের অনুরোধ করেছেন।
মার্কিন দূতাবাসের জারি করা একটি মিডিয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যারা গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করে, তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ‘থ্রিসি নীতি’ কার্যকর করবে।
দূতাবাস জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় এবং সব পক্ষকে সহিংসতা পরিহার ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের পক্ষ নেয় না।
যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষকে পূর্বশর্ত ছাড়াই সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছে।
এর আগে, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করার জন্য মার্কিন অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের ধারা ২১২ (এ) (৩) (সি) বা ‘থ্রিসি’-এর অধীনে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছিল।
এই নীতির অধীনে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যেকোনো বাংলাদেশির জন্য ভিসা সীমিত করতে পারবে।
২৮ অক্টোবর থেকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষকে পূর্বশর্ত ছাড়াই সংলাপে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক, বেআইনি: জাতিসংঘকে আইনমন্ত্রী
সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে: শাহরিয়ার আলম
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক: জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলকে আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সোমবার (১৩ নভেম্বর) জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলকে জানিয়েছেন, বিরোধী দল বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি ‘সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও বেআইনি’।
বাংলাদেশের স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার জনগণের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ (ইউপিআর)-এ অংশ নিয়ে আইনমন্ত্রী ২৮-২৯ অক্টোবর বিএনপির সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞ তুলে ধরেন।
একজন পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা ছাড়াও তারা প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারকদের বাসভবনে হামলা চালায় এবং পুলিশ ফাঁড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যকে প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, নির্বিচারে কোনো গ্রেপ্তার করা হয়নি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দেশের আইন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় (বাংলাদেশ সময়) শুরু হওয়া পর্যালোচনা বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আইনমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: পুলিশ সদস্য হত্যার বিচার দ্রুত গতিতে করা হবে: আইনমন্ত্রী
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং জেনেভায় জাতিসংঘ কার্যালয়ে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ সুফিউর রহমানসহ অন্যরা অংশ নিচ্ছেন।
ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, মোট ১১১টি দেশ বৈঠকে যোগ দিয়েছে এবং ৯০ শতাংশ দেশ মানবাধিকার ফ্রন্টে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেছে।
তিনি বলেন, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার মতো দেশগুলোও বাংলাদেশের সমালোচনা করেনি, বরং তারা কিছু গঠনমূলক সুপারিশ নিয়ে এসেছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ মানবাধিকার সংক্রান্ত সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনো দেশ রাজনৈতিক সংলাপের বিষয়টি তুলেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংলাপের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
আইনমন্ত্রী বলেন, পরশু জানতে পারবেন বাংলাদেশ কতগুলো সুপারিশ পেয়েছে।
বাংলাদেশ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলকে জানাবে যে তারা কোন কোন সুপারিশ গ্রহণ করতে ইচ্ছুক।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া ব্রিফিংয়ে যোগ দিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, তারা ইউপিআরের আগে সব অংশীজনদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা আজ এটি দেখেছেন ও শুনেছেন। এবং আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে ইউপিআর একটি সুন্দর প্রক্রিয়া, যা প্রতিটি দেশকে একই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে নিয়ে আসে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গতকালের তুলনায় আগামীকাল বাংলাদেশকে আরও ভালো অবস্থানে দেখাই তাদের লক্ষ্য। ‘এটাই স্পিরিট। আমরা আমাদের অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েছি।’
পর্যালোচনা সভায় আইনমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, সরকার যে কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে জিরো-টলারেন্স নীতি বজায় রেখেছে এবং বিরোধী দলগুলোকে রাজনৈতিক স্থান দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছে।
তিনি রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়েও কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একা মিয়ানমারের চাপিয়ে দেওয়া সংকট সমাধান করতে পারবে না।
আরও পড়ুন: ইসির তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী বাংলাদেশের ধারাবাহিক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথাও তুলে ধরেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনকে আরও সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য করতে নির্বাচনী এলাকা সীমাবদ্ধকরণ আইন-২০২১, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগ আইন-২০২২ এবং সংসদ নির্বাচন (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) বিধিমালা-২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছিল এবং রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য আচরণ বিধিমালা-২০০৮ এবং নির্বাচন পরিচালনা বিধি-২০১৮ সাল থেকে সংশোধন করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)ও নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নিয়োগ আইন ২০২২ একটি নিরপেক্ষ ও সক্ষম ইসি নিশ্চিত করে এবং এটি দেশের পাশাপাশি উপমহাদেশে এই ধরনের প্রথম আইন।
বাংলাদেশের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ইউপিআরগুলো হয়েছিল যথাক্রমে ফেব্রুয়ারি ২০০৯, এপ্রিল ২০১৩ ও মে ২০১৮ সালে।
তার পেশ করা জাতীয় প্রতিবেদনে, বাংলাদেশ বলেছে এটি মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষার জন্য তার প্রতিষ্ঠান এবং পদক্ষেপগুলোকে শক্তিশালী করতে থাকবে।
ইউপিআর ওয়ার্কিং গ্রুপে মানবাধিকার কাউন্সিলের ৪৭টি সদস্য রাষ্ট্র রয়েছে। তবে, জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিটি দেশ পর্যালোচনায় অংশ নিতে পারে।
যে নথিগুলোর উপর ভিত্তি করে পর্যালোচনাগুলো করা হয় তা হলো:
১) জাতীয় প্রতিবেদন - পর্যালোচনাধীন রাষ্ট্র প্রদত্ত তথ্য
২) স্বাধীন মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ এবং গোষ্ঠীর প্রতিবেদনে থাকা তথ্য, বিশেষ প্রক্রিয়া, মানবাধিকার চুক্তি সংস্থা ও জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা হিসেবে পরিচিত
৩) জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল অনুসারে জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা, আঞ্চলিক সংস্থা এবং সুশীল সমাজের গোষ্ঠীগুলোসহ অন্যান্য অংশীজনদের দ্বারা প্রদত্ত তথ্য।
ইউপিআর হলো ১৯৩টি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রের মানবাধিকার রেকর্ডের সমকক্ষ পর্যালোচনা।
২০০৮ সালের এপ্রিলে এর প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের সবকটিকে নিয়ে তিনবার পর্যালোচনা করা হয়েছে।
ইউপিআর মানবাধিকার কাউন্সিলের একটি অনন্য প্রক্রিয়া। যা জাতিসংঘের প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রকে প্রতি সাড়ে ৪ বছরে তার মানবাধিকার রেকর্ডগুলো সমকক্ষ পর্যালোচনা করার আহ্বান জানায়।
২০০৬ সালের মার্চ মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬০/২৫১ রেজোলিউশনে প্রতিষ্ঠিত ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ (ইউপিআর) প্রতিটি দেশে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষাকে সমুন্নত, সমর্থন ও প্রসারিত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে পরামর্শ দেয়নি মার্কিন প্রতিনিধিদল, শুধু জানতে চেয়েছে: আইনমন্ত্রী
৩ প্রধান দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের একসঙ্গে বৈঠকের অনুরোধ পিটার হাসের
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরতে তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের অনুরোধ জানিয়েছেন।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) মার্কিন দূতাবাসের জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যারা গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করে, তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ‘থ্রিসি নীতি’ কার্যকর করবে।
দূতাবাস জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় এবং সব পক্ষকে সহিংসতা পরিহার ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের পক্ষ নেয় না।
আরও পড়ুন: সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস
যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষকে পূর্বশর্ত ছাড়াই সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছে।
এর আগে, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করার জন্য মার্কিন অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের ধারা ২১২ (এ) (৩) (সি) বা ‘থ্রিসি’-এর অধীনে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছিল।
এই নীতির অধীনে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যেকোনো বাংলাদেশির জন্য ভিসা সীমিত করতে পারবে।
আরও পড়ুন: কপ২৮: দুবাইয়ে পিটার হাসের সঙ্গে সাবের হোসেনের সাক্ষাৎ
বাংলাদেশে ‘অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ’ নির্বাচনে সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র: পিটার হাস
রোহিঙ্গা সংকটে ‘নিজেদের সমর্থন অব্যাহত রাখছে’ ইইউ: রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সফররত প্রতিনিধি দল সোমবার (১৩ নভেম্বর) ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে এবং তাদের সহায়তার অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেয়।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি সফররত প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সঙ্গে ছিলেন।
হোয়াইটলি বলেন, ‘ইউরোপিয়ান এক্সটারনাল অ্যাকশন সার্ভিস (ইইেএস) পাওলা পাম্পালোনির এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উপব্যবস্থাপনা পরিচালকের বাংলাদেশে আজকের কর্মসূচি ছিল রোহিঙ্গা শিবিরসহ নারী শরণার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়, স্কুল, রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক স্মৃতি কেন্দ্র ও খাদ্য কেন্দ্র পরিদর্শন।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ, রোহিঙ্গা রিফিউজি রেসপন্স সেন্টার, জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় কমিশনের (ইসিএইচও) মানবিক সহায়তা বিভাগকে ধন্যবাদ জানান।
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রোহিঙ্গা সংকটে ‘তার সমর্থন বজায় রাখছে’।
ইইএএস-এর উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পাওলা পাম্পালোনির নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি দেশের শ্রম খাতে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করতে রবিবার ঢাকায় এসেছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি ব্রাসেলস থেকে প্রতিনিধি দলের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, 'শ্রম অধিকার ও মানবাধিকার বিষয়ে বাংলাদেশের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য সদ্য ঢাকায় এসেছি।
তারা ঢাকার বাড্ডায় প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য একটি স্কুল পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: শ্রম পরিস্থিতি মূল্যায়নে ইইউ প্রতিনিধি দল ঢাকায়
ইউরোপিয়ান এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের (ইইএএস) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক পাওলা পাম্পালোনি বলেন, 'ঢাকায় আসতে পেরে আমি আনন্দিত।’
বুধবার তারা সরকারের শ্রম, বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র সচিবদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি ইউএনবিকে বলেন, শ্রম খাতের জন্য জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে 'অগ্রগতি পর্যালোচনা' করার লক্ষ্যে এই সফর।
বাংলাদেশ শ্রম খাতে একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০২১-২০২৬) গ্রহণ করেছে এবং এই পরিকল্পনাটি আইএলও গভর্নিং বডির কাছে বাংলাদেশ সরকারের জমা দেওয়া রোডম্যাপের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত।
রোডম্যাপের লক্ষ্য হলো সংগঠনের স্বাধীনতা এবং সম্মিলিত দরকষাকষির অধিকারসহ দেশের শ্রম অধিকারগুলো পালনের উন্নতি করা।
গত মাসে রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি বলেছিলেন, বাজারে প্রবেশাধিকার, জিএসপি প্লাসের জন্য বাংলাদেশের আবেদন বিবেচনায় ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এবং কমিশনের জন্য আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে শ্রম আইনকে একত্রিত করা একটি ‘অপরিহার্য উপাদান’ হবে।
ঢাকায় এক সেমিনারে তিনি বলেন, 'এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ) এর পর জিএসপি প্লাসে যোগদানের বিকল্প বাংলাদেশের রয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রম খাতে অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে রবিবার ঢাকায় আসছে ইইউ দল
শ্রম খাতের অগ্রগতি পর্যালোচনা: আগামী সপ্তাহে আসছে পাওলা পাম্পালোনির নেতৃত্বে ইইউ প্রতিনিধি দল
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক, বেআইনি: জাতিসংঘকে আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সোমবার (১৩ নভেম্বর) জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলকে জানিয়েছেন, বিরোধী দল বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি ‘সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও বেআইনি’।
বাংলাদেশের স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার জনগণের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ (ইউপিআর)-এ অংশ নিয়ে আইনমন্ত্রী ২৮-২৯ অক্টোবর বিএনপির সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞ তুলে ধরেন।
একজন পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা ছাড়াও তারা প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারকদের বাসভবনে হামলা চালায় এবং পুলিশ ফাঁড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যকে প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, নির্বিচারে কোনো গ্রেপ্তার করা হয়নি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দেশের আইন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় (বাংলাদেশ সময়) শুরু হওয়া পর্যালোচনা বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আইনমন্ত্রী।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং জেনেভায় জাতিসংঘ কার্যালয়ে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ সুফিউর রহমানসহ অন্যরা অংশ নিচ্ছেন।
আইনমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, সরকার যেকোনো মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে জিরো-টলারেন্স নীতি বজায় রেখেছে এবং বিরোধী দলগুলোকে দেওয়া রাজনৈতিক স্থান তুলে ধরেছে।
আরও পড়ুন: পুলিশ সদস্য হত্যার বিচার দ্রুত গতিতে করা হবে: আইনমন্ত্রী
তিনি রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়েও কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একা মিয়ানমারের চাপিয়ে দেওয়া সংকট সমাধান করতে পারবে না।
আইনমন্ত্রী বাংলাদেশের ধারাবাহিক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথাও তুলে ধরেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনকে আরও সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য করতে নির্বাচনী এলাকা সীমাবদ্ধকরণ আইন-২০২১, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগ আইন-২০২২ এবং সংসদ নির্বাচন (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) বিধিমালা-২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছিল এবং রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য আচরণ বিধিমালা-২০০৮ এবং নির্বাচন পরিচালনা বিধি-২০১৮ সাল থেকে সংশোধন করা হয়েছিল।
ঢাকায় জাতীয় গণ ঐক্য দিবস পালন করল রাশিয়ানরা
ঢাকায় জাতীয় ঐক্য দিবস পালন করেছে রাশিয়ানরা। দেশটিতে উদযাপিত দিবসগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সারা বিশ্বের সমস্ত রাশিয়ানরা এটি উদযাপন করে থাকে।
রবিবার(১২ নভেম্বর) ঢাকার জহুরা কামাল আইডিয়াল স্কুলের সঙ্গে দিবসটির আয়োজন করেছে ঢাকার রাশিয়ান হাউস।
ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউসের পরিচালক পাভেল দভয়চেনকভ সবাইকে স্বাগত জানিয়ে দিবসটির ঐতিহাসিক তাৎপর্য নিয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন যে ঐক্য দিবস, যা পিপলস ইউনিটি বা জাতীয় ঐক্য দিবস নামেও পরিচিত, রাশিয়ায় একটি জাতীয় ছুটির দিন যা ৪ নভেম্বরে পড়ে। এই দিনে, সমস্ত রাশিয়ান শহরে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান, কনসার্ট, স্কুল পারফরম্যান্স এবং আতশবাজি সহ দেশপ্রেমিকরা দিবসটি উদযাপন করে। আয়োজন করা হয় বেশ কিছু মেলা ও উৎসবের।
আরও পড়ুন: করোনার নতুন স্ট্রেন রাশিয়ান ভ্যাকসিনের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলবে না: বিশেষজ্ঞরা
সম্প্রতি এই দিনটি মাতৃভূমি রক্ষায় ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে দেশটিতে। এই দিনের ইতিহাস ৪০০ বছর পরেও এই তারিখটি স্মরণ করা হয়। ঐক্য মানে শক্তি ও বিজয়।
স্কুলের শিক্ষার্থীরা রাশিয়ার উপর একটি মাস্টার ক্লাসে অংশগ্রহণ করে। পরে অনেক শিক্ষার্থী এই বিষয়ের ওপর একটি অঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। বিজয়ীদের দেওয়া হয় পুরষ্কার। অনুষ্ঠানের শেষে, সবাই দিবসটির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের জন্য একটি বড় সাদা ক্যানভাসে বিভিন্ন রঙে তাদের হাতের ছাপ রাখে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকার জহুরা কামাল আইডিয়াল স্কুলের অধ্যক্ষ খায়রুন নেসা শ্যামলী, প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার ও অন্যান্য শিক্ষক-অভিভাবকরা।
আরও পড়ুন: রাশিয়ান মুদ্রায় বাণিজ্যের অনুমতিপ্রাপ্তদের তালিকায় বাংলাদেশ: রুশ দূতাবাস
শ্রম পরিস্থিতি মূল্যায়নে ইইউ প্রতিনিধি দল ঢাকায়
দেশের শ্রম খাত নিয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করতে রবিবার ঢাকায় পৌঁছেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি প্রতিনিধি দল।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি ব্রাসেলস থেকে প্রতিনিধি দলের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, 'শ্রম অধিকার ও মানবাধিকার বিষয়ে বাংলাদেশের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য সদ্য ঢাকায় এসেছি।
তারা ঢাকার বাড্ডায় প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য একটি স্কুল পরিদর্শন করেন।
ইউরোপিয়ান এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের (ইইএএস) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক পাওলা পাম্পালোনি বলেন, 'ঢাকায় আসতে পেরে আমি আনন্দিত।’
আরও পড়ুন: শ্রম খাতের অগ্রগতি পর্যালোচনা: আগামী সপ্তাহে আসছে পাওলা পাম্পালোনির নেতৃত্বে ইইউ প্রতিনিধি দল
বুধবার তারা সরকারের শ্রম, বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র সচিবদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি ইউএনবিকে বলেন, শ্রম খাতের জন্য জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে 'অগ্রগতি পর্যালোচনা' করার লক্ষ্যে এই সফর।
বাংলাদেশ শ্রম খাতে একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০২১-২০২৬) গ্রহণ করেছে এবং এই পরিকল্পনাটি আইএলও গভর্নিং বডির কাছে বাংলাদেশ সরকারের জমা দেওয়া রোডম্যাপের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত।
রোডম্যাপের লক্ষ্য হলো সংগঠনের স্বাধীনতা এবং সম্মিলিত দরকষাকষির অধিকার সহ দেশের শ্রম অধিকারগুলো পালনের উন্নতি করা।
গত মাসে রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি বলেছিলেন, বাজারে প্রবেশাধিকার, জিএসপি প্লাসের জন্য বাংলাদেশের আবেদন বিবেচনায় ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এবং কমিশনের জন্য আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে শ্রম আইনকে একত্রিত করা একটি ‘অপরিহার্য উপাদান’ হবে।
ঢাকায় এক সেমিনারে তিনি বলেন, 'এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ) এর পর জিএসপি প্লাসে যোগদানের বিকল্প বাংলাদেশের রয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রম খাতে অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে রবিবার ঢাকায় আসছে ইইউ দল
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের আয়োজনে শেখ রাসেল মেমোরিয়াল ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত
বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ছোট ছেলে শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিন উপলক্ষে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত শেখ রাসেল মেমোরিয়াল ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল ও ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (১২ নভেম্বর) বিকালে কুয়ালালামপুরে চ্যালেঞ্জার স্পোর্টস সেন্টারে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
ফাইনাল খেলায় ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি দল বিডি এফসি ক্লাবের বিরুদ্ধে ৪-২ গোলে জয়লাভ করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
‘শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’- প্রতিপাদ্যের আলোকে বিভিন্ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে হাইকমিশন মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটির ১২টি দলের অংশগ্রহণে এ টুর্নামেন্টের আয়োজন করে।
খেলা শেষে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের খেলোয়াড়দের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা কাপ: শেখ রাসেলকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান শেখ রাসেল মেমোরিয়াল ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্য খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানান এবং আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শিশু রাসেলসহ ১৫ আগস্টে শাহাদত বরণকারী সকলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও তাদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে বলেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের কালরাতে ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে শিশু রাসেলকেও নির্মমভাবে হত্যা করে। শিশু শেখ রাসেল ছিল সরলতা, নির্ভীকতা ও নির্মলতার প্রতীক এবং তার আদর্শ এবং চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সব শিশু-কিশোর-এর জন্য আদর্শ।
তিনি বলেন, ১০ বছর বয়সেই তার নেতৃত্বগুণ, সহনশীলতা ও ধৈর্যের প্রকাশ আমরা দেখতে পাই। শেখ রাসেলের বেড়ে ওঠা ও মানবিক গুণাবলী সমূহ বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশ কমিনিউটির বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ ও হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের আপ্যায়িত করা হয়।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের আয়োজনে শেখ রাসেল মেমোরিয়াল ফুটবল টুর্নামেন্ট
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে শেখ রাসেল দিবস ২০২৩ উদযাপন