������������������
লুটপাটের টাকা ভাগাভাগির দ্বন্দ্বে অভ্যন্তরীণ রক্তপাত করছে আ.লীগ: বিএনপি
সারাদেশে সামাজিক নৈরাজ্য এখন চরম আকার ধারণ করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, ক্ষমতাসীনরা এখন লুটপাটের অর্থ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি নিয়ে দলের অভ্যন্তরেই রক্তপাত করছে।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীতে লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সারা বাংলাদেশে সামন্ততন্ত্র প্রতিষ্ঠা করছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি ভুল রাজনীতির চোরাবালিতে আটকে গেছে: কাদের
রিজভী বলেন, দেশ গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে চলছে ভয়াবহ নৈরাজ্য। সামাজিক ক্ষেত্রে এখন কী ঘটছে? বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যৌন হয়রানির আস্তানায় পরিণত হয়েছে।
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, ‘কুষ্টিয়ায় ছাত্রলীগের ক্যাডাররা এক যুবককে কুপিয়ে ১০ টুকরো করে হত্যা করেছে। ছাত্রলীগের সজীব নিজেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তি... দিয়েছে। তারা এখন শুধু বিএনপির (অনুসারীদের) ওপর হামলা চালাচ্ছে না, বরং লুণ্ঠিত অর্থের ভাগ আদায়ে দলের মধ্যে একে অপরকে হত্যা করছে।’
ক্রমবর্ধমান সামাজিক নৈরাজ্যের ফলে দেশ এখন এক বিপজ্জনক ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল ও নতুন করে নির্বাচনের দাবিতে তাদের দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর গুলশান এলাকায় পথচারী, দোকান মালিক, পরিবহন শ্রমিক ও রিকশাচালকদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন রিজভী।
'সেভ দ্য কান্ট্রি, সেভ দ্য পিপল' শীর্ষক লিফলেটে ৭ জানুয়ারির একতরফা ডামি নির্বাচন বাতিল, শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দী নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানানো হয়।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমাতে সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ঢাকা ও সব মহানগরীতে লিফলেট বিতরণ করেছে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: বিএনপি হতাশা কাটিয়ে কোমর সোজা করে দাঁড়াক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
'একতরফা' দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতাসীনদের নেতারা ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘দখলদার সরকার মনে করছে, ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের পর তারা বাংলাদেশের মালিক হয়ে গেছে। এই সামন্ততন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই থেমে থাকবে না। জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।’
তিনি দাবি করেন, বিএনপি ও সমমনা দলগুলো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে এবং দেশের মালিক হিসেবে জনগণের ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের জন্য রাজপথে আন্দোলন করছে। তিনি বলেন, বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার জন্য এটা (আন্দোলন) নয়। এটা জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার লড়াই।
সরকারের নিষ্ক্রিয়তা ও আজ্ঞাবহ নীতির কারণে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব দুর্বল হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশিদের পাখির মতো গুলি করে মারা হচ্ছে। টেকনাফ-উখিয়া সীমান্তে নিয়মিত গোলাগুলি হচ্ছে। বাংলাদেশের কৃষকরা কাজ করতে পারছেন না, আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন, কিন্তু আমাদের সরকার নীরব। এ অবস্থা চলতে পারে না।’
আরও পড়ুন: নেতৃত্বের পরিবর্তন ছাড়া বিএনপির রাজনীতি আর কখনো সচল হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুরের মামলায় ফখরুল-খসরুর জামিন
প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সাল আতিক বিন কাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, যেহেতু তার মক্কেলরা তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলায় জামিন পেয়েছেন তাই জেল থেকে বের হতে আর কোনো বাধা নেই।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন মঞ্জুর
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহসমাবেশ চলাকালে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে রমনা থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।
ওই মামলায় মির্জা ফখরুল ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ৫৯ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় ফখরুলের বিরুদ্ধে ১১টি এবং খসরুর বিরুদ্ধে ১০টি মামলা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ৯ মামলায় মির্জা ফখরুলের জামিন, বিচারাধীন আরও ২ মামলা
ক্ষমতা দখল করে ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে আ.লীগ সরকার: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গত মাসে অনুষ্ঠিত ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা দখল করে ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করছে।
তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রহসনের ডামি নির্বাচনকে দেশের জনগণ প্রত্যাখ্যান করার পর তারা (সরকার) এখন তাদের ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করছে। তারা যে ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে সেটাও জনগণের কাছে প্রকাশ করার চেষ্টা করছে।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবিতে দলের নতুন কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় বিএনপির লিফলেট বিতরণের আগে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ভঙ্গুর গণতন্ত্র দেখতে চায় ভারত: রিজভী
বিএনপির এই নেতা বলেন, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন নিশ্চিত করতে দেশের মানুষ জেগে উঠেছে।
তিনি বলেন, ‘ডামি নির্বাচন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামতে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি শুরু করেছি।’
জিয়াউর রহমানের আমলে সেনাবাহিনীর ওপর অনেক দমনপীড়ন হয়েছে এবং অনেককে ফাঁসির মঞ্চে পাঠানো হয়েছে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, যারা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সবকিছু করেছেন তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা।
তিনি বলেন,‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) সেনা কর্মকর্তাদের গুম করে দিয়েছেন। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী কোথায়? আপনার সরকারের আমলে তাকে জোরপূর্বক গুম করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ‘যত্নের অভাবে বা নির্যাতনে’ পুলিশ হেফাজতে বিএনপির ১৫ নেতা-কর্মীর মৃত্যু হয়েছে: রিজভী
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭২-১৯৭৫ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ ও অন্যান্য বিরোধী দল ও ভিন্নমতাবলম্বীর প্রায় ২০ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। ‘একইভাবে এই সরকারের আমলে অসংখ্য বিরোধী দলের নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমসহ অনেককে জোরপূর্বক গুম করা হয়েছে।’
পরে রিজভীসহ দলীয় কয়েকজন নেতাকর্মী ওই এলাকার পথচারী, দোকান মালিক, পরিবহন শ্রমিক ও রিকশাচালকদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন।
'সেভ দ্য কান্ট্রি, সেভ দ্য পিপল' শীর্ষক লিফলেটে ৭ জানুয়ারির একতরফা ডামি নির্বাচন বাতিল, শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দী নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানানো হয়।
দেশব্যাপী দলের কর্মসূচির অংশ হিসেবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমাতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে মঙ্গলবারও সব মহানগর শহরে লিফলেট বিতরণ করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণসহ ছয় দিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
আরও পড়ুন: ক্ষমতাসীন দলের ব্যবসায়ী চক্র দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে লুটপাটে মরিয়া হয়ে উঠেছে: রিজভী
‘যত্নের অভাবে বা নির্যাতনে’ পুলিশ হেফাজতে বিএনপির ১৫ নেতা-কর্মীর মৃত্যু হয়েছে: রিজভী
গত ২৮ অক্টোবরের আগে ও পরে কারাগারে মারা যাওয়া ১৫ নেতা-কর্মীর তালিকা পেশ করেছে বিএনপি।
রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ তালিকা তুলে ধরেন।
রিজভী দাবি করেন, বিএনপির ১৫জন নেতা-কর্মী কারাগারে পর্যাপ্ত চিকিৎসা বা ওষুধ না পেয়ে এবং পুলিশ রিমান্ডে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন।
তিনি বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে মৃত্যুর পর কারা কর্তৃপক্ষ একই ধরনের ব্যাখ্যা দিয়েছে। ‘বাস্তবতা হলো, তারা কারাগারে মারা গেছেন, হাসপাতালে নয়।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপি নেতার বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধারের দাবি পুলিশের
কারাগারে বন্দি অবস্থায় মৃতরা হলেন- খুলনা জেলা যুবদল নেতা কামাল হোসেন মিজান, সাতক্ষীরা বিএনপি নেতা উকিল আবদুস সাত্তার, মহসিন-উল-মুলক, রংপুর বিএনপি নেতা মনোয়ারুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি নেতা ইদ্রিস আল বাশার, ইমতিয়াজ আহমেদ, গাজীপুরের বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান খান হীরা, মোহাম্মদ শফিউদ্দিন মাস্টার, পাবনা বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ।
এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি নেতা গোলামুর রহমান গোলাপ, নাটোর যুবদল নেতা আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী যুবদল নেতা মনিরুল ইসলাম, নওগাঁ বিএনপি নেতা মতিবুল মণ্ডল ও ঢাকা মহানগর শ্রমিক দল নেতা ফজলুর রহমান কাজল।
‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলতে চায়, তাদের বক্তব্যের পক্ষে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ দেখাতে হবে’-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘যারা অপরাধ করে তারা নিজেদের নির্দোষ মনে করে। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) নিজেই নির্বাচনে জালিয়াতির সবচেয়ে বড় প্রমাণ। কারণ আপনার নিযুক্ত নির্বাচন কমিশনের সচিব নিজেই বলেছেন, যারা জয়ী হবেন তাদের তালিকা ডিসিদের দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, এমনকি ক্ষমতাসীন দলের পরাজিত প্রার্থীরাও সংবাদ সম্মেলন করে ভোট জালিয়াতির তথ্য জাতির সামনে তুলে ধরেছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের মানুষের বর্জনের পাশাপাশি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও বিভিন্ন নির্বাচনি অনিয়ম ও ভোটকেন্দ্র ফাঁকা চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি বলেন, একতরফা ডামি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকার কীভাবে বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর চরম দমন-পীড়ন শুরু করে এবং শত শত বিরোধী নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠায় তা দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও জানে।
বিএনপি নেতা বলেন, এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদও স্বীকার করেছেন যে ভারত আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়ে ক্ষমতায় রেখেছে।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, আপনি মিথ্যা দিয়ে মানুষের মন জয় করতে পারবেন না।’
আরও পড়ুন: সরকারের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় বিপদাপন্ন হয়ে পড়েছে সীমান্ত : বিএনপি
মঙ্গলবার থেকে বিএনপির ৬ দিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
ক্ষমতাসীন দলের ব্যবসায়ী চক্র দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে লুটপাটে মরিয়া হয়ে উঠেছে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর থেকে ক্ষমতাসীন দলের ব্যবসায়ী চক্র দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে লুটপাটে আরও মরিয়া হয়ে উঠেছে।
রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের আকাশছোঁয়া দাম সামাল দিতে দেশের মানুষ চরম অগ্নিপরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে নয়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করেছে ভারত: রিজভী
রিজভী আরও বলেন, ‘জনগণের অর্থ লুটপাটে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ক্ষমতাসীন দলের সিন্ডিকেটগুলো। চাল, ডাল, তেল, চিনি, শাকসবজি, মাছ ও মাংসের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।’
তিনি আরও বলেন, শীতকালীন সবজির জন্য এই পিক মৌসুমে এখন ৮০ থেকে ১০০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না।
মাছ-মাংস সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে বলেও আক্ষেপ করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দরিদ্র মানুষ এখন মাংস ও অন্যান্য মাছকে মেন্যুর বাইরে রেখে বাজার থেকে কাটা পাঙ্গাস মাছের টুকরো কিনছেন। ‘নিম্ন আয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্তরা আজ কী ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তার একটি উদাহরণ দিয়েছি। মানুষ খাওয়ার জন্য মুরগির চামড়া ও পা কিনছে।’
রিজভী আরও বলেন, সরকার জনস্বার্থ বিবেচনা না করে অবৈধভাবে কয়েকবার গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির উপর শুল্ক বাড়িয়েছে।
তিনি বলেন, মধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষকে বেকায়দায় ফেলে বাড়িওয়ালারা জ্যামিতিক হারে বাড়ি ভাড়া বাড়াচ্ছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ভঙ্গুর গণতন্ত্র দেখতে চায় ভারত: রিজভী
বর্তমান সরকারের অধীনে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি: রিজভী
মঙ্গলবার থেকে বিএনপির ৬ দিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
ছয় দিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বাতিল ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণসহ এ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে দলটি।
রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দেশপ্রেমের অভাব আছে: নানক
তিনি বলেন, দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আগামী ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার ও বুধবার) ঢাকাসহ অন্যান্য মহানগরে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করবেন।
এদিকে ১৭ ফেব্রুয়ারি সব জেলা শহরে এবং ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশের সব উপজেলা, থানা, পৌরসভা ও ইউনিয়নে অনুরূপ কর্মসূচি পলন করা হবে।
এছাড়া সম্প্রতি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলিতে নিহত বাংলাদেশিদের স্মরণে ১৬ ফেব্রুয়ারি বাদ জুমা দেশের সব মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করবে দলটি।
রিজভী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ কারাবন্দি অন্যান্য নেতা-কর্মীদের মুক্তির জন্যই তাদের গণযোগাযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপি নেতার বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধারের দাবি পুলিশের
তিনি দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সম্ভাব্য সব বাধা ও প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে তাদের নতুন কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানান।
৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এটি বিএনপির তৃতীয় দফা রাজপথ কর্মসূচি।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বাতিলের দাবিতে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ঢাকাসহ সব মহানগর শহরে কালো পতাকা মিছিল করে বিএনপি।
পরে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের অধিবেশনের প্রথম দিন ৩০ জানুয়ারি রাজধানীসহ সারাদেশে কালো পতাকা নিয়ে মিছিল বের করার ঘোষণা দেয় বিএনপি।
তবে সেদিন রাজধানীর সাতটি পয়েন্টে বিএনপিকে মিছিল বের করতে দেয়নি পুলিশ। কারণ সেদিন সংসদের নতুন অধিবেশনের প্রথম দিন ছিল।
আরও পড়ুন: সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায়: বিএনপি
৭ জানুয়ারির নির্বাচনের খেসারত আ. লীগকে দিতে হবে: ফারুক
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ‘একতরফা’ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আওয়ামী লীগকে খেসারত দিতে হবে।
শনিবার এক মানববন্ধনে তিনি একথা জানান।
বিএনপিকে অবমূল্যায়ন না করতে ক্ষমতাসীন দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দলটি যেকোনো সময় রাজপথে ফিরে আসতে পারে। কারণ দেশের জনগণের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে বিএনপির।
আরও পড়ুন: পর্যটন শিল্পে ফিলিপাইনকে বিনিয়োগের আহ্বান জানালেন ফারুক খান
ফারুক বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব, আপনি কীভাবে বলেন যে- ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে না আসার জন্য বিএনপিকে অনেক খেসারত দিতে হবে? উল্টো আমি বলতে চাই, এর মূল্য আপনাদেরই দিতে হবে। যুগ যুগ ধরে আপনাদের মাশুল দিতে হবে, কারণ আপনারা জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়াই নির্বাচন করে সরকার গঠন করেছেন।’
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা দখল করে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে দেশে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ফারুক বলেন, ‘গণতন্ত্র ধ্বংস করে আপনারা বাংলাদেশের ইতিহাসে যে কলঙ্ক লেপন করেছেন তার দায়ভার আপনাদেরই নিতে হবে। সুতরাং আপনাদের এর জন্য খেসারত দিতে হবে।’
সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ফারুক বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতির মধ্যে সীমান্তে অব্যাহত গোলাগুলি চলছে এবং জনগণের সমর্থন ছাড়াই আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকায় দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে আওয়ামী লীগ যে কলঙ্ক লেপন করেছে তার জন্য জনগণের মুখোমুখি হওয়ার সময় খুবই নিকটে।
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকারই ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট তৈরি করেছে: বিএনপি নেতা ফারুক
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ দলের কারাবন্দি নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি আয়োজন করে জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরাম।
ফারুক অভিযোগ করেন, একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের’ অংশ হিসেবেই সরকার গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ বানচাল করে দেয় এবং ফখরুলসহ বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের গ্রেপ্তার করে সরকার।
তিনি সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। ‘অন্যথায় জনগণের ক্ষোভ উস্কে গেলে আপনারা শ্রীলঙ্কার চেয়েও ভয়ংকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হবেন।’
ফারুক বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও হারানো অধিকার ফিরে না আসা পর্যন্ত তাদের দল জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে থাকবে।
আরও পড়ুন: হুমকি সত্ত্বেও বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাবে: জয়নুল আবেদিন ফারুক
বাংলাদেশে ভঙ্গুর গণতন্ত্র দেখতে চায় ভারত: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশে ভঙ্গুর গণতন্ত্র চায় ভারত। সে কারণেই তারা গত মাসের (৭ জানুয়ারি) নির্বাচনে সমর্থন দিয়েছে।
তিনি দাবি করেন, জনগণ ও সবচেয়ে গণতান্ত্রিক দেশগুলো সেই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
রিজভী বলেন, 'পররাষ্ট্রমন্ত্রী (বৃহস্পতিবার) বলেছেন, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষায় (৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত) নির্বাচনকে ভারত সমর্থন করেছে।’
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
রিজভী প্রশ্ন তোলেন, ভারত কি তার প্রতিবেশী দেশগুলোতে দুর্বল গণতন্ত্র চায়?
তিনি দাবি করেন, এটা সারা বিশ্ব স্বীকার করেছে যে, বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পাতানো এবং কারচুপি করা হয়েছে। একইসঙ্গে দেশের জনগণ তা প্রত্যাখ্যান ও বর্জন করেছে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যদি সুষ্ঠু হয়... ওই নির্বাচন যদি গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষায় সহায়ক হয় এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী ভারত যদি ওই নির্বাচনকে সমর্থন করে, তাহলে আমাদের ভাবতে হবে যে, ভারত তার নিজের দেশে ইস্পাতের মতো শক্তিশালী গণতন্ত্র চায়, কিন্তু তারা বাংলাদেশে দুর্বল গণতন্ত্র চায়।’
আরও পড়ুন: বিকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় হাসপাতাল যাবেন খালেদা জিয়া
রিজভী বলেন, সরকার উচ্চ স্বরে বলছে কোন কোন দেশ তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছে, নির্বাচনকে সমর্থন করছে। ‘এতে প্রমাণিত হয়েছে যে, তারা জনসমর্থনহীন একটি বিচ্ছিন্ন সরকার।’
তিনি আরও বলেন, গত নির্বাচন জনগণ বর্জন করায় সরকারের মন্ত্রীরা ক্ষমতা হারানোর ভয়ে অন্য দেশের সমর্থন নিয়ে বড়াই করছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জনসমর্থন নিয়ে গঠিত হয়নি বলেই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারছে না। ‘এটা এখন দৃশ্যমান। প্রযুক্তির যুগে প্রতিটি মানুষ এখন দেখছে কীভাবে মর্টার শেল (মিয়ানমার থেকে) এসে বাংলাদেশের মানুষকে হত্যা করছে। কিন্তু সরকার নীরব। এমনকি তারা কোনো বিবৃতিও দিতে পারছে না (সীমান্তের ঘটনার প্রতিবাদ)।’
আরও পড়ুন: সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায়: বিএনপি
তিনি বলেন, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও জোরালো প্রতিবাদ করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখার নজির স্থাপন করতে পারেনি সরকার। ‘এর মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হলো যে, সরকারের জনসমর্থন না থাকায় বিশ্ব এমন একটি সরকারের তোয়াক্কা করে না।’
রিজভী অভিযোগ করেন, কারাগারে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নানা ধরনের নির্যাতন-নিপীড়ন ও হয়রানি করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের কারাগারগুলোতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপচে পড়া ভিড় এবং কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বন্দি রাখা হচ্ছে। কারাগারের সেলগুলো শ্বাসরুদ্ধকর কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে পরিণত হয়েছে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অভিযোগ করেন, অতি উৎসাহী কর্মকর্তারা কারাবন্দি বিএনপির নেতা-কর্মীদের জেলকোড অনুযায়ী প্রাপ্য সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে তাদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে রাতেই বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া
স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে রাতেই বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, সন্ধ্যা ৬টা ৪৮ মিনিটের দিকে তিনি গুলশানের বাসা থেকে হাসপাতালে আসেন এবং সেখানে প্রায় ৫ ঘণ্টা অবস্থান করেন।
তিনি বলেন, মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপার্সনের বেশ কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়েছে। পরে হাসপাতাল ছেড়ে রাত সোয়া ১২টার দিকে তিনি বাসায় পৌঁছান।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, এর আগে অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে গঠিত মেডিকেল বোর্ড তাকে হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বিকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় হাসপাতাল যাবেন খালেদা জিয়া
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে তার বিভিন্ন প্রয়োজনীয় মেডিকেল টেস্ট করানো হয়েছে।’
জাহিদ বলেন, রিপোর্ট পর্যালোচনা করে মেডিকেল বোর্ড তার চিকিৎসার পরবর্তী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
পাঁচ মাসেরও বেশি সময় শারীরিক নানা জটিলতায় চিকিৎসা শেষে ১১ জানুয়ারি এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন তিনি।
আরও পড়ুন: পাঁচ মাস পর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া
এরপর থেকে তিনি তার গুলশানের বাসায় এভারকেয়ার হাসপাতালে আগে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত বছরের ৯ আগস্ট হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে এভারকেয়ারের সিসিইউতে স্থানান্তর
সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায়: বিএনপি
মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি ও মর্টার শেলের আঘাতে মানুষ নিহত ও আহত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি মিয়ানমারের ছোড়া মর্টার শেলে এক বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যুর জন্য সরকারকে দায়ী করেন।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোনো নারী-পুরুষ নিরাপদ নয়। মর্টার শেলের আঘাতে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সার্বভৌমত্ব আরও শক্তিশালী করতে আমরা প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা ও কার্যক্রম দেখতে চাই।’
অন্য দেশের ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে কেন বাংলাদেশি নারীর মৃত্যু হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তিনি বলেন, 'এই ঘটনার উপযুক্ত জবাব কোথায়? জনসমর্থন না থাকায় বর্তমান সরকার একটি দুর্বল শাসন ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে। ফলে লিখিত প্রতিবাদও করতে পারছে না।’
আরও পড়ুন: ধর্ষকদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান গয়েশ্বরের
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে কিছুই করতে পারছে না। ‘তারা তাদের (বিদেশি) প্রভুদের ভয় পায়, কিন্তু তারা দেশের জনগণকে সন্ত্রস্ত করার জন্য বন্দুক ব্যবহার করে।’
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তার সশস্ত্র বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র লড়াই, সংঘর্ষ ও গোলাগুলির কারণে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সীমান্তে সংঘাতের আশঙ্কায় বুধবার দুপুর পর্যন্ত মিয়ানমারের তিন শতাধিক সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে, সোমবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপায়তলী গ্রামের একটি বাড়িতে মিয়ানমারের দিক থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা পুরুষ নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: সীমান্ত উত্তেজনায় ক্রসফায়ারের মুখে বাংলাদেশ: বিএনপি
রিজভী বলেন, বাংলাদেশের চারপাশের সীমান্ত এলাকায় রক্ত ঝরায় বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও ভূমি এখন অরক্ষিত। তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশ থেকে দলে দলে মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার নীরব। এমনকি বিএসএফের গুলিতে বিজিবির এক সদস্য নিহত হলেও সরকার প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংযম ও শান্তি বজায় রাখার আহ্বান এখন দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। ‘ফলে আমাদের সীমান্তরক্ষীরা প্রতিদিন পিছু হটছে, যা বাংলাদেশের মানুষকে বিপদে ফেলছে।’
রিজভী দাবি করেন, জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা ছিল সুরক্ষিত, দেশের মানুষ নিরাপদে ছিল।
তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে প্রহসনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতা দখল করেছে। যা দেশের ৯৫ শতাংশ জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, 'কেবল ডামি সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও তার দোসররা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু বলেছেন। কিন্তু এটা ছিল শতাব্দীর সবচেয়ে জঘন্যতম উপহাস।’
আরও পড়ুন: বিকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় হাসপাতাল যাবেন খালেদা জিয়া